যুবকদের উপর যৌন নির্যাতনের প্রতিবাদে মানববন্ধন
গাজীপুরের ভাওয়াল মাদকাসক্ত পুনর্বাসন কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন চিত্রনায়ক অনিক রহমান অভিসহ একাধিক কিশোর ও যুবককে যৌন নির্যাতনের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে মানবাধিকার সংস্থা ‘এইড ফর মেন ফাউন্ডেশন’। মানববন্ধনে ভাওয়াল মাদকাসক্ত পুনর্বাসন কেন্দ্রের অন্যতম পরিচালক ফিরোজা নাজনীন বাঁধনের (৩৫) দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, আইনে ধর্ষণের লিঙ্গ-নিরপেক্ষ সংজ্ঞা এবং দন্ডবিধি ৩৭৫ ধারার লিঙ্গ-নিরপেক্ষ সংস্কার চান অংশগ্রহণকারীরা।
শনিবার (৮ জানুয়ারি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এ মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী এবং এইড ফর মেন ফাউন্ডেশনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা আহবায়ক মাহিন মুর্তজা অনিক।
মাহিন মুর্তজা অনিক বলেন, একাধিক গণমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে আমরা জানতে পারি যে, গাজীপুরের ‘ভাওয়াল মাদকাসক্ত পুনর্বাসন কেন্দ্রে’ আশ্রিত অপ্রাপ্তবয়স্ক কিশোরদের উপর পাশবিক যৌন নির্যাতন করেছে প্রতিষ্ঠানটির মালিক ফিরোজা নাজনীন ওরফে বাঁধন। এছাড়াও চিকিৎসা দেওয়ার নামে, পছন্দের পুরুষ রোগীদের ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালিয়ে তাদের সাথে জোরপূর্বক যৌন সম্পর্ক স্থাপন করতেন বলে গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। তার এই বিকৃত আচরণ ও জঘন্য অপরাধকে ‘ধর্ষণ’ ব্যতীত অন্যকিছু বলার সুযোগ নেই। একজন ধর্ষক, ধর্ষণের অপরাধের জন্য যেই শাস্তি পান, ফিরোজা নাজনীন বাঁধনকেও একই শাস্তি প্রদান করার দাবি জানাচ্ছি।
এইড ফর মেন ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম নাদিম বলেন, ফিরোজা নাজনীন বাঁধনের মত বিকৃত মানসিকতার নারী কর্তৃক অপ্রাপ্তবয়স্ক কিশোর ও পুরুষ রোগীদেরকে চিকিৎসা দেওয়ার নামে মাদকাসক্ত করে যৌন নিপীড়ন ও জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্ক করতে বাধ্য করার ঘটনা আমাদেরকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে যে নারীও ধর্ষণ করতে পারে এবং পুরুষও নারীর দ্বারা ধর্ষিত হতে পারে। এখন সময় এসেছে এই চরম সামাজিক অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার। নাজনীনের মত যৌন নিপীড়নকারী ধর্ষকদেরকে ধর্ষণের চূড়ান্ত শাস্তি প্রদান করতে হবে, আইনে ধর্ষণের লিঙ্গ-নিরপেক্ষ সংজ্ঞায়ন করতে হবে এবং দন্ডবিধি ৩৭৫ ধারার লিঙ্গনিরপেক্ষ সংস্কার করতে হবে।
এইড ফর মেন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য খালিদ মাহমুদ বলেন, চিত্রনায়ক অনিক রহমান অভিসহ বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগীর বক্তব্য ও র্যাবের তদন্তের মাধ্যমে সামনে এসেছে মাদক নিরাময় কেন্দ্রের আড়ালে ফিরোজা নাজনীন কর্তৃক কিশোর ও পুরুষদের উপর নারকীয় যৌন নিপীড়ন এবং জোরপূর্বক যৌন সম্পর্ক স্থাপনে পুরুষ ও অপ্রাপ্তবয়স্ক কিশোরদেরকে বাধ্য করার বর্ণনা, যা অবশ্যই ‘ধর্ষণ’ হিসেবে বিবেচ্য। কিন্তু পরিতাপের বিষয় এটাই যে, আমাদের দেশের আইন ও দন্ডবিধিতে নারী কর্তৃক পুরুষ ধর্ষণকে ‘ধর্ষণ’ হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয় না। ফলে ফিরোজা নাজনীন বাঁধনের মত একজন ধর্ষকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করা যাচ্ছে না, যা ধর্ষিত কিশোরদের প্রতি চরম অন্যায়। আমরা এর প্রতিবাদ জানাই।
এনএইচ/এএস