রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে কুরআন পোড়ানোর ঘটনায় মূল সন্দেহভাজন আটক
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে কুরআন পোড়ানোর ঘটনায় সন্দেহভাজন আটক। ছবি: সংগৃহীত
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) পাঁচটি আবাসিক হলে রাতের আঁধারে পবিত্র ধর্মগ্রন্থ আল-কোরআনে অগ্নিসংযোগের ঘটনার মূল সন্দেহভাজন এখন পুলিশ হেফাজতে রয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর সালেহ হাসান নকীব বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে আটক ব্যক্তির নাম-পরিচয় ও কোন থানায় রাখা হয়েছে, তা এখনো প্রকাশ করা হয়নি, যা নিয়ে শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রশ্নের ঝড় উঠেছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে তিনি জানান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পবিত্র কুরআন শরীফে অগ্নিসংযোগ ঘটনার মূল সন্দেহভাজন এখন পুলিশ কাস্টোডিতে। আলহামদুলিল্লাহ। আমরা যথাসময়ে বিস্তারিত জানাতে পারব। আমাদের তদন্ত কমিটি অসাধারণ কাজ করেছে। অসংখ্য ধন্যবাদ আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থীদের, যাদের সহযোগিতা ছাড়া ঘটনা ঘটার ৪৮ ঘন্টার ভেতর আমাদের তদন্ত কমিটি সন্দেহভাজন সনাক্ত করতে পারত না। অসংখ্য ধন্যবাদ পুলিশ এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে যারা তাদের দায়িত্ব পালন করেছে।
Last but not the least, অসংখ্য ধন্যবাদ আমার প্রিয় ছাত্রছাত্রীদের যারা ঘোলাপানিতে অরাজকতা সৃস্টির সব অপচেষ্টা নস্যাৎ করেছে।
আলহামদুলিল্লাহ!
এরআগে, গত ১২ জানুয়ারি দিবাগত রাতে সৈয়দ আমীর আলী হল, শহীদ হবিবুর রহমান হল, মতিহার হল, মাদার বখ্শ হল ও শহীদ জিয়াউর রহমান হলে রাতের আঁধারে পবিত্র ধর্মগ্রন্থ আল-কোরআনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। পরে রোববার সকালে বিষয়টি জানাজানি হলে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয় শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সবার মধ্যে।
হলগুলোর আবাসিক শিক্ষার্থীদের সূত্রে জানা যায়, শহীদ জিয়াউর রহমান হলের মসজিদে ফজরের নামাজ আদায় করার পর প্রতিদিনের মতো বুক সেলফ থেকে কোরআন নিয়ে তেলাওয়াত করতে গিয়ে শিক্ষার্থীরা দেখেন, দুটি কোরআন শরীফের প্রথম দিকের দুটি সূরা এবং শেষের দিকের দুটির সূরা পোড়ানো। কোরআন দুটির হার্ড কভারসহ প্রথমে ও শেষের কিছু পৃষ্ঠা এবং মাঝখানের ৭০ শতাংশ মত পৃষ্ঠা অক্ষত রয়েছে। এছাড়া, হলের ৩য় ব্লকের প্রথম তলার সিঁড়ি বরাবর এবং ২য় ব্লকের ৪৩৪ নম্বর কক্ষের সামনের দেয়ালে পদ্মফুলের ছবি আঁকানো দেখা গিয়েছে। পদ্মফুল ইসকনের প্রতীক এবং ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) নির্বাচনী প্রতীক। তাছাড়া ওই কক্ষের জানালায় ইসকন ইয়ুথ ফেস্টিভালের লিফলেট সাটানো দেখা গেছে। অন্যদিকে সৈয়দ আমীর আলী হলে একটি কোরআনের প্রথম দুই-তিন পারার মতো পুড়িয়ে হলের মুক্তমঞ্চে রাখা ছিল। সকালে সেটা দেখতে পায় শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে মতিহার হল, হবিবুর রহমান হল ও মাদার বখশ্ হলে এমন ঘটনা ঘটে বলে জানা যায়। ঘটনা তদন্তে ৯ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কমিটিকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।