শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫ | ৫ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে যেসব ক্ষেত্রে সংস্কার আবশ্যক

সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রতিটি ধাপই সঠিক হওয়া আবশ্যক, তা না হলে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হয় না। আর প্রতিটি নির্বাচনী ধাপের গ্রহণযোগ্যতা নির্ভর করে কতগুলো সুনির্দিষ্ট মানদণ্ডের উপর।

সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের গুরুত্বপূর্ণ মানদণ্ডগুলো হলো— ১. সব রাজনৈতিক দলের জন্য সমসুযোগ সৃষ্টি করতে পারে, এমন একটি আইনি কাঠামো থাকা, ২. ভোটার তালিকা প্রস্তুতকরণ প্রক্রিয়ায় যারা ভোটার হওয়ার যোগ্য, তাদের ভোটার হতে পারা; ৩. যারা প্রার্থী হতে আগ্রহী, তাদের প্রার্থী হতে পারা; ৪. ভোটারদের সামনে বিশ্বাসযোগ্য বিকল্প প্রার্থী থাকা; ৫. নির্বাচনী এলাকার সীমানা কতগুলো মানদণ্ডের ভিত্তিতে সঠিকভাবে নির্ধারিত হওয়া; ৬. জেনে-শুনে-বুঝে সঠিকভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য প্রার্থীদের সম্পর্কে ভোটারদের সামনে যথাযথ তথ্য থাকা; ৭. ভোটারদের ভয়ভীতির ঊর্ধ্বে উঠে স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারা; ৮. অর্থ কিংবা সহিংসতার মাধ্যমে ভোটারদের প্রভাবিত করার অপচেষ্টা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকা; ৯. ভোট গণনা সঠিকভাবে হওয়া; ১০. নির্বাচনী বিরোধ দ্রুততার সঙ্গে নিরপেক্ষভাবে মীমাংসিত হওয়া; সর্বোপরি ১১. ভোট গ্রহণের প্রক্রিয়া স্বচ্ছ, কারসাজিমুক্ত ও বিশ্বাসযোগ্য হওয়া।

এ সব মানদণ্ড পূরণের জন্য গত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২ (আরপিও)-তে অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনা হয়। ড. এটিএম শামসুল হুদার নেতৃত্বে গঠিত নির্বাচন কমিশন একগুচ্ছ সংস্কার প্রস্তাব রাজনৈতিক দল ও অন্যান্য অংশীজনের মতামত নিয়ে আইনে পরিণত করে। কিছু শর্ত সাপেক্ষে নির্বাচন কমিশনের অধীনে রাজনৈতিক দলের বাধ্যতামূলক নিবন্ধন, সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের যোগ্যতার মাপকাঠিকে কঠোরতা আরোপ, প্রার্থীদের হলফনামার মাধ্যমে তথ্য প্রদানের বিধান, রাজনৈতিক দলের সর্বস্তরের কমিটিতে এক-তৃতীয়াংশ নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতকরণ ইত্যাদি ছিল উল্লেখযোগ্য সংস্কার।

গত এক দশকে নির্বাচনী আইনে আর কোনো উল্লেখযোগ্য সংস্কার হয়নি। তবে গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে নির্বাচন কমিশন আরপিওর ১৭টি ধারা সংশোধনের একটি প্রস্তাবনা আইন মন্ত্রণালয়ে ভেটিংয়ের জন্য পাঠায়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো রাজনৈতিক দলের সর্বস্তরের কমিটিতে এক-তৃতীয়াংশ নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার বিধানের নবায়ন; প্রার্থীর এজেন্টদের ভয়ভীতি দেখালে বা কেন্দ্রে যেতে বাধা দিলে শাস্তির বিধান রাখা; ভোট বন্ধে প্রিসাইডিং কর্মকর্তার ক্ষমতা বাড়ানো; ভোট বাতিলে নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা বৃদ্ধি; প্রার্থীদের টিন সার্টিফিকেট ও আয়কর প্রদানের প্রত্যয়নপত্র দেওয়া বাধ্যতামূলক করা; ভোট গণনার বিবরণ প্রার্থী ও প্রার্থীর এজেন্টদের দেওয়া বাধ্যতামূলক করা ইত্যাদি।

এ সব প্রস্তাবের মধ্যে মাত্র একটি, রাজনৈতিক দলের সব কমিটিতে ২০৩০ সালের মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার প্রস্তাবটি গুরুত্বপূর্ণ বলে আমরা মনে করি। বাকিগুলোর বিধান আইনে বা আদালতের রায়ে রয়েছে এবং কমিশন এগুলো ব্যবহারও করে আসছে। তাই এগুলো আরপিওতে অন্তর্ভুক্ত করা আনুষ্ঠানিকতামাত্র।

স্বাধীনতার পর থেকেই নির্বাচন সুষ্ঠু করার ব্যাপারে আমাদের অপারগতা দূর করার লক্ষ্যে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী পাস করে যে ‘রাজনৈতিক বন্দোবস্ত’ প্রতিষ্ঠিত হয়, তা উচ্চ আদালতের রায়ের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে বাতিল করা হয়। এর পরিণতিতে দলীয় সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত আমাদের দশম ও একাদশ সংসদ নির্বাচন ছিল চরমভাবে বিতর্কিত।

উদাহরণস্বরূপ, বর্তমানে আরপিওর ৪৪ক(২) ধারায় আয়কর রিটার্ন প্রদানের বিধান রয়েছে। কোনো ব্যক্তি বলপূর্বক নির্বাচনী কর্মকর্তাদের স্বাভাবিক নির্বাচনী কর্মকাল পরিচালনার ক্ষেত্রে বাধা প্রদান করলে তাৎক্ষণিকভাবে নির্দিষ্ট কেন্দ্র, এমনকি পুরো নির্বাচনী এলাকার ভোট গ্রহণ বন্ধ করার ক্ষমতা নির্বাচনী কর্মকর্তাদের রয়েছে এবং তারা তা প্রয়োগও করে আসছেন।

অনিয়মের কারণে ভোট চলাকালে সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করা সম্ভব নয় বলে প্রতীয়মান হলে তদন্ত সাপেক্ষে পুরো নির্বাচনী এলাকার নির্বাচনী ফলাফলের গেজেট প্রকাশ স্থগিত, নির্বাচনী ফলাফল বাতিল ও পুনর্নির্বাচনের নির্দেশ প্রদানের ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের রয়েছে। নূর হোসেন বনাম মো. নজরুল ইসলাম মামলার [৫ বিএলসি (এডি) (২০০০)] রায়ে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ সুস্পষ্টভাবে কমিশনকে এ ক্ষমতা দিয়েছেন। এই রায়ে গেজেট প্রকাশের পরও নির্বাচন বাতিলের ক্ষমতা কমিশনকে দেওয়া হয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়।

গত বছরের অক্টোবরে গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনে কমিশন এ ক্ষমতা ব্যবহার করে প্রশংসিতও হয়েছে, যদিও কমিশন সুস্পষ্টভাবে বলেনি উপনির্বাচনটি বাতিল না স্থগিত ছিল। বাতিল হলে নতুন করে তফসিল ঘোষণা করা আবশ্যক ছিল আর স্থগিত হলে আগের নির্বাচনে বাতিল করা না হয়ে থাকলে কেন্দ্রগুলোতে পুনর্নির্বাচনের আয়োজন সমীচীন ছিল না।

নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও অর্থবহ করার লক্ষ্যে সাংবিধানিক সংস্কারের পাশাপাশি নিম্নের বিষয়গুলো আরপিওতে অন্তর্ভুক্ত করা গুরুত্বপূর্ণ বলে আমরা মনে করি: ১. ‘না-ভোটে’র পুনঃপ্রবর্তন করা; ২. হলফনামার ছকে পরিবর্তন এনে এটিকে যুগোপযোগী করা; ৩. হলফনামায় মিথ্যা তথ্য প্রদান বা তথ্য গোপনকারীদের মনোনয়নপত্র বাতিলের সুস্পষ্ট বিধান করা; ৪. হলফনামার তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের বিধান করা; ৫. প্রত্যেক প্রার্থীর নির্বাচনী ব্যয়ের হিসাব যাচাই-বাছাইয়ের বাধ্যবাধকতা সৃষ্টি করা; ৬. নির্বাচনী ব্যয় কমানোর লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক প্রার্থী ও ভোটারদের নিয়ে প্রতিটি সংসদীয় এলাকায় ‘জনগণের মুখোমুখি অনুষ্ঠান’ আয়োজন এবং হলফনামার তথ্য ছাপিয়ে তা ভোটারদের মধ্যে বিলির বিধান করা; ৭. সংরক্ষিত নারী আসনের ক্ষেত্রে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে হলফনামা ও আয়কর বিবরণী দাখিলের বিধান করা; ৮. রাজনৈতিক দলের প্রাথমিক সদস্যদের নাম ওয়েবসাইটে প্রকাশ ও নিয়মিত আপডেটের বাধ্যবাধকতা সৃষ্টি করা; ৯. নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া রাজনৈতিক দলের অডিট করা হিসাব যাচাই-বাছাইয়ের বিধান করা; ১০. বিদেশে বা নির্বাচনী এলাকার বাইরে অবস্থানরত বাংলাদেশের নাগরিকদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে পোস্টাল ব্যালটের ব্যবস্থা করা; ১১. সংসদ নির্বাচনে নির্বাচনী বিরোধ নিষ্পত্তির লক্ষ্যে, উচ্চ আদালতে আপিলের সুযোগ সাপেক্ষে, জেলা জজদের নিয়ে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল গঠন করা; ১২. রিটার্নিং কর্মকর্তার মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে দায়েরকৃত আপিল নিষ্পত্তি করার সময়সীমা তিন দিনের পরিবর্তে এক সপ্তাহ করা।

এই বিধানের কঠোর প্রয়োগ জরুরি। ২. মনোনয়নপত্র অনলাইনে জমাদানের যে পরিপত্র রয়েছে, তা পরিপূর্ণভাবে প্রয়োগ করা আবশ্যক। ৩. তৃণমূল পর্যায়ের দলীয় সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে প্রার্থী মনোনয়নের বিধান প্রয়োগে বাধ্যবাধকতা সৃষ্টি আবশ্যক। ৪. ‘বিরুদ্ধ হলফনামা’ বা কাউন্টার অ্যাফিডেভিট প্রদানের বিদ্যমান পরিপত্র কার্যকর করা আবশ্যক।

স্বাধীনতার পর থেকেই নির্বাচন সুষ্ঠু করার ব্যাপারে আমাদের অপারগতা দূর করার লক্ষ্যে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী পাস করে যে ‘রাজনৈতিক বন্দোবস্ত’ প্রতিষ্ঠিত হয়, তা উচ্চ আদালতের রায়ের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে বাতিল করা হয়। এর পরিণতিতে দলীয় সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত আমাদের দশম ও একাদশ সংসদ নির্বাচন ছিল চরমভাবে বিতর্কিত।

প্রসঙ্গত, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে আমাদের নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা প্রায় নিরঙ্কুশ এবং আইন যেখানে অসম্পূর্ণ, সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে কমিশন নির্দেশনা জারির মাধ্যমে সেই অসম্পূর্ণতাও দূর করতে পারে।

ড. বদিউল আলম মজুমদার: সম্পাদক সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)

আরএ/

Header Ad
Header Ad

নারীরা কেন বয়সে ছোট পুরুষের সঙ্গে প্রেমে জড়াচ্ছেন?

ছবি: সংগৃহীত

সম্পর্ক তৈরির বেলায় বয়স বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। তবে বর্তমান প্রজন্মের অনেকের কাছে বয়স বিশেষ গুরুত্ব বহন করে না। তাই আজকাল নিজের বয়সের চেয়ে কম বয়সের মানুষের সঙ্গে সম্পর্কে জড়াচ্ছেন তরুণ–তরুণীরা।

পুরুষের ক্ষেত্রে এমন সম্পর্ক সমাজে স্বাভাবিক হলেও নারীর ক্ষেত্রে নয়। তবে আজকাল অনেক নারীই সঙ্গী বাছাই করার সময় বয়সের ফারাককে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন না। তাই তাঁরা এখন প্রেমিক বা দাম্পত্যসঙ্গী হিসেবে বেছে নিচ্ছেন কম বয়সীদের। ডেটিং অ্যাপের ট্রেন্ড বলছে, নারীরা পছন্দের ক্ষেত্রে সুন্দর মন, ব্যক্তিগত সুরক্ষা, আত্মবিশ্বাসী সঙ্গীকে খুঁজে নিতে চান। যেকোনো সম্পর্কে ভারসাম্য ও গতিশীলতাকে গুরুত্ব দেন।

ডেটিং ট্রেন্ডে নারীরা

মনোবিদেরা মনে করেন, এখনকার নারীরা নিজেদের সম্পর্ক নিয়ে বেশ সচেতন। যেকোনো বিষয়কে সহজভাবে নিতে পারার মানসিকতা বেড়েছে, বিশেষত অগ্রসর বিশ্বে তাঁরা কোনো বিষয়ে ভীত নন। সম্পর্কে যুক্ত হওয়ার সময় আত্মবিশ্বাস ও আত্মসচেতনতায় গুরুত্ব দেন তাঁরা। ঐতিহ্যগতভাবে পুরুষকে একচেটিয়াভাবে সফল কিংবা শক্তিশালী হিসেবে মেনে নিতে তাঁরা নারাজ। সঙ্গীর প্রতি আনুগত্যের চেয়ে নারীরা নিজের সুখ ও সামগ্রিক মঙ্গলকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। এসব কারণেই অনেক নারী কম বয়সী পুরুষ সঙ্গীর সঙ্গে ডেটিং করছেন। অর্থাৎ ব্যক্তিগত পছন্দকেই গুরুত্ব দিচ্ছেন তাঁরা। কম বয়সী পুরুষ সঙ্গীর কাছ থেকে মানসিক, সামাজিক চাহিদাসহ অন্যান্য প্রয়োজনকে গুরুত্ব দিয়েই সম্পর্কে জড়াচ্ছেন।

নানা কারণে সম্পর্কে জড়ানোর সময় নারীরা কম বয়সীদের গুরুত্ব দেন

নিজের চেয়ে কম বয়সী পুরুষ সঙ্গীর সান্নিধ্যে আসায় নারীদের মধ্যে নিজেদের আরও তরুণ ভাবার একধরনের প্রবণতা তৈরি হয়েছে। কম বয়সী তরুণেরা নিজেদের সম্পর্কে সচেতন, নিজের স্বাস্থ্য ও রুচির বিষয়েও সজাগ। নতুন নতুন অভিজ্ঞতা কম বয়সীদের পৃথিবীকে নতুন করে জানার সুযোগ দেয়। এসব কারণে সম্পর্কে জড়ানোর সময় নারীরা কম বয়সীদের গুরুত্ব দেন। নারীরা এখন আগের চেয়ে বেশি অর্থনৈতিক ও সামাজিক স্বাধীনতার জন্য ছুটছেন। পারিবারিক বা সামাজিক নিরাপত্তার জন্য বয়স্ক সঙ্গী খোঁজার প্রথাগত নিয়মে তাঁরা আর বিশ্বাসী নন। ব্যক্তিগত পরিপূর্ণতা, মানসিক সংযোগ ও আকর্ষণকে অগ্রাধিকার দিতেই নিজের পছন্দের সঙ্গীকে বেছে নিচ্ছেন।

বয়স কোনো বিষয় না

বয়সের ব্যবধান সম্পর্কে এখন নারীদের সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি বেশ নমনীয়। তরুণদের তুলনায় নারীরা মধ্যবয়সীদের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ানোর আগে অনেক চিন্তা করছেন। মধ্যবয়সী বা সমবয়সীদের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ানোর ক্ষেত্রে সামাজিক রীতিনীতি বা লোকদেখানোর আচারকেই বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয় বলে মনে করেন নারীরা। সম্পর্ক নিয়ে পুরোনো সামাজিক নিয়মগুলোকে চ্যালেঞ্জ করতে চান তাঁরা।

Header Ad
Header Ad

জুলাই-মার্চ মাসে ৩০.২৫ বিলিয়ন ডলার পোশাক রফতানি করেছে বাংলাদেশ

ছবি: সংগৃহীত

চলতি অর্থবছরের (২৪-২৫) জুলাই-মার্চ মাসে তৈরি পোশাক রফতানি বেড়েছে ১০ দশমিক ৮৪ শতাংশ। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই-মার্চ মাসের দেশভিত্তিক রফতানি তথ্য থেকে বিষয়টি জানা গেছে।

জানা গেছে, এই সময়ে ৩০ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলার পোশাক রফতানি করেছে বাংলাদেশ। যা পোশাক খাতের স্থিতিস্থাপকতা এবং সম্ভাবনা তুলে ধরে বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।

তথ্য থেকে জানা যায়, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এখনো বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বাজার। বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের মোট রপ্তানির ৪৯ দশমিক ৮২ শতাংশই রফতানি হয় ইউরোপীয় ইউনিয়নে। যার মোট বাজার মূল্য ১৫ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার।

এরপরেই রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজার। এ বাজারে মোট রফতানি হয়েছে ৫ দশমিক ৭৪ বিলিয়ন ডলারের তৈরি পোশাক। যা মোট রফতানির ১৮ দশমিক ৯৭ শতাংশ। যেখানে কানাডার মোট বাজার অংশ ছিল ৯৬৩ দশমিক ৮৫ মিলিয়ন ডলার। যার বাজার অংশ ৩ দশমিক ১৯ শতাংশ। যুক্তরাজ্যের বাজারও গুরুত্বপূর্ণ ছিল, যার রফতানি মূল্য ৩ দশমিক ৩৬ বিলিয়ন ডলার। যা বাংলাদেশের মোট তৈরি পোশাক রফতানির ১১ দশমিক ১০ শতাংশ ।

প্রবৃদ্ধির দিক থেকে ইইউতে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রফতানি বছরের পর বছর ধরে উল্লেখযোগ্যভাবে ১১ দশমিক ৩১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। উল্লেখিত সময়ে যেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ১৭ দশমিক ২৩ শতাংশ এবং কানাডা ১৫ দশমিক ৬৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে, যুক্তরাজ্যে তৈরি পোশাক রফতানি ৪ দশমিক ১৪ শতাংশ এর একটি সামান্য প্রবৃদ্ধির হার প্রদর্শন করেছে।

ইইউর মধ্যে, জার্মানি একটি গুরুত্বপূর্ণ বাজার হিসেবে দাঁড়িয়েছে, যেখানে বাংলাদেশের রফতানির পরিমাণ ৩ দশমিক ৮০ বিলিয়ন ডলার, স্পেন ২ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলার, ফ্রান্স ১ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলার, ইতালি ১ দশমিক ১৭ বিলিয়ন ডলার, পোল্যান্ড ১ দশমিক ২৬ বিলিয়ন ডলার এবং নেদারল্যান্ডস ১ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলার।

প্রবৃদ্ধির হার বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য ছিল - জার্মানি (১০ দশমিক ৭২ শতাংশ), ফ্রান্স (১০ দশমিক ৭৫ শতাংশ), নেদারল্যান্ডস (২৩ দশমিক ১৫ শতাংশ), পোল্যান্ড (১০ দশমিক ৩২ শতাংশ), ডেনমার্ক (১২ দশমিক ৮০ শতাংশ) এবং সুইডেন (১৯ দশমিক ৯৬ শতাংশ) ।

বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতেও অপ্রচলিত বাজারে প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে, সামগ্রিকভাবে ৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। যেখানে মোট রফতানি ৫ দশমিক ১২ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, যা বাংলাদেশের মোট রফতানির ১৬ দশমিক ৯৩ শতাংশ দখল করেছে।

এই বাজারগুলোর মধ্যে, জাপান মোট ৯৬০ দশমিক ৪৫ মিলিয়ন ডলার আমদানি করে শীর্ষে রয়েছে, তারপরে অস্ট্রেলিয়া ৬৫৩ দশমিক ৬৪ মিলিয়ন ডলার এবং ভারত ৫৩৫ দশমিক ১৫ মিলিয়ন ডলার আমদানি করে।

তুরস্ক এবং মেক্সিকোর মতো দেশগুলোতেও উল্লেখযোগ্য রফতানি হয়েছে। তুরস্কে ৩৫৭ দশমিক ২২ মিলিয়ন ডলার এবং মেক্সিকোতে ২৫১ দশমিক ২২ মিলিয়ন ডলার, যা প্রশংসনীয়। উল্লেখিত সময়ে ভারতে ২০ দশমিক ৪৫ শতাংশ, জাপান ১০ দশমিক ০৬ শতাংশ, মেক্সিকো ২৩ দশমিক ৪৪ শতাংশ এবং তুরস্কের ৩২ দশমিক ৫৪ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

রিপোর্টে দেখা গেছে, এই সময়কালে জাপান, অস্ট্রেলিয়া, ভারত, তুরস্ক এবং মেক্সিকোতে প্রবৃদ্ধি ইতিবাচক থাকলেও রাশিয়া, কোরিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং মালয়েশিয়ায় রফতানি হ্রাস পেয়েছে।

সংযুক্ত আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া এবং কোরিয়ায় নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি এই বাজারগুলোতে আরও গুরুত্বসহকারে রফতানি বাজার দেখা দরকার।

নিটওয়্যার খাত মোট ১১ দশমিক ২২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি দেখিয়েছে। ওভেন সেক্টরেও ১০ দশমিক ৪০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে, যুক্তরাজ্যে প্রবৃদ্ধি ধীর হলেও অপ্রচলিত বাজারে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পয়েছে।

রফতানির চলমান প্রবৃদ্ধি উল্লেখযোগ্যভাবে ইইউ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপর নির্ভরশীল। যা বাংলাদেশের প্রধান বাজার হিসেবে অব্যাহত রয়েছে। যা এই ক্ষেত্রগুলির মধ্যে আরও সম্ভাবনার ইঙ্গিত দেয়।

বিজিএমইএ’র সাবেক পরিচালক, বাংলাদেশ অ্যাপারেল এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং ডেনিম এক্সপার্ট লিমিটেডের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, ‘এটি আমাদের মোট রপ্তানি প্রবৃদ্ধিতে প্রধান ঐতিহ্যবাহী বাজারের তাৎপর্য প্রদর্শন করে।’ তিনি আরও বলেন, অপ্রচলিত বাজারে মাঝারি প্রবৃদ্ধি এই বিভাগে আরও গবেষণা এবং মনোযোগের গুরুত্বকে তুলে ধরে, কারণ এর যথেষ্ট প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে, যা ঐতিহ্যবাহী বাজারের ওপর নির্ভরতা ভারসাম্য বজায় রাখতেও সাহায্য করবে।

রুবেল বলেন, স্থায়ী বৈশ্বিক বাণিজ্য উত্তেজনা ক্রমাগত বৈশ্বিক পরিবেশকে পুনর্গঠন করছে। এমন সুযোগ তৈরি করছে যা বাংলাদেশ সুবিধা নিতে পারে।

Header Ad
Header Ad

মুন্সীগঞ্জে মাইক্রোবাসের সঙ্গে ধাক্কা

সংঘর্ষে উড়ে গেছে বাসের ছাদ, তবুও ১০ কিলোমিটার চালিয়ে ৬০ যাত্রীকে বাঁচালেন চালক

ছবি: সংগৃহীত

মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে মাইক্রোবাসের সঙ্গে ধাক্কা লাগার পর কাভার্ডভ্যান ও একটি কন্টেইনারের সঙ্গে সংঘর্ষে উড়ে গেছে বরিশাল এক্সপ্রেস নামের যাত্রীবাহী একটি বাসের ছাদ। পরপর তিন দফা দুর্ঘটনায় পড়ে আহত হন বাসের অন্তত ২০ যাত্রী।

তবু বাস না থামিয়ে ছাদবিহীন গাড়িটি ১০ কিলোমিটার পথ চালিয়ে নিয়ে যান চালক। পরে জনরোষে গাড়ি থামাতে বাধ্য হন।

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের শ্রীনগরের সমষপুরে এ দুর্ঘটনা ঘটে। বাসটিতে ৬০ যাত্রী ছিলেন।

বাসের যাত্রীরা জানান, ঢাকা থেকে বরিশাল এক্সপ্রেস লিমিটেডের বাসটি দ্রুতগতিতে চালাচ্ছিলেন চালক। রাত সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের শ্রীনগরের কামারখোলা এলাকায় পৌঁছেলে একটি কাভার্ডভ্যানের সঙ্গে ধাক্কা লাগে বাসটির। এতে বাসটির সামনের অংশ দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এ সময় চালক বাসটি না থামিয়ে আরও বেপরোয়া গতিতে চালাতে থাকে। সমষপুর এলাকায় পৌঁছে অপর একটি প্রাইভেটকারকে পেছন থেকে ধাক্কা দিলে বাসটির ছাদ বডি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে রাস্তায় পড়ে যায়। যাত্রীরা চালককে থামাতে অনুরোধ করলেও সে তা উপেক্ষা করে।

যাত্রীরা বলেন, চালক দুর্ঘটনাস্থলের অদূরে হাইওয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর গাড়ি দেখে ছাদবিহীন চলন্ত বাস চালিয়ে ১০ কিলোমিটার দূরের পদ্মা সেতু উত্তর থানার লৌহজংয়ের কুমারভোগ এলাকায় নিয়ে আসে। এ সময় আহত যাত্রীদের ‘বাঁচাও বাঁচাও’ চিৎকার শুনে বাসটি আটক করে জনতা।

পদ্মা সেতু উত্তর থানার ওসি মো. জাকির হোসেন জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় থানা, হাইওয়ে পুলিশ ও শ্রীনগর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। আহত যাত্রীদের উদ্ধার করে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এর মধ্যে গুরুতর আহত শাহিন নামের এক যাত্রীকে শ্রীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

চালক ও হেলপার বাস রেখে পালিয়েছেন বলেও জানান তিনি।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

নারীরা কেন বয়সে ছোট পুরুষের সঙ্গে প্রেমে জড়াচ্ছেন?
জুলাই-মার্চ মাসে ৩০.২৫ বিলিয়ন ডলার পোশাক রফতানি করেছে বাংলাদেশ
সংঘর্ষে উড়ে গেছে বাসের ছাদ, তবুও ১০ কিলোমিটার চালিয়ে ৬০ যাত্রীকে বাঁচালেন চালক
কোলের সন্তান বিক্রি করে অলংকার, মোবাইল কিনলেন মা
চুয়াডাঙ্গায় বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে দু’জন নিহত
ইয়েমেনের তেল বন্দরে মার্কিন বিমান হামলায় নিহত ৩৮
হবিগঞ্জে ট্রাক-পিকআপের মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত ৪
সৌদি আরব-মরক্কো থেকে ৪৬৬ কোটি টাকার সার কিনবে সরকার
গাইবান্ধায় মাদক মামলায় ৩ যুবকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের আহ্বান জানালেন প্রধান উপদেষ্টা
তোপের মুখে ওয়াক্‌ফ আইন স্থগিত করল ভারতের সুপ্রিম কোর্ট
নিজেকে বরিশাল সিটির মেয়র ঘোষণার দাবিতে মামলা করলেন ফয়জুল করীম
ভারতের সংখ্যালঘু মুসলিমদের ‘পূর্ণ নিরাপত্তা’ নিশ্চিতের আহ্বান বাংলাদেশের
টাঙ্গাইলে প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে কেন্দ্র সচিব ও পরীক্ষার্থীসহ আটক ৬
৭১ এর গণহত‍্যার জন‍্য ক্ষমা ও সম্পদ ফেরত দেয়া নিয়ে আলোচনায় সম্মত পাকিস্তান
এবার স্ত্রী রিয়া মনিকে তালাকের ঘোষণা দিলেন হিরো আলম
সাবেক এমপি বাহারের জমি-বাড়ি জব্দ, ২৯টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ
বাংলাদেশের সঙ্গে কোনো ধরণের বাণিজ্যযুদ্ধে জড়াতে চায় না ভারত
বিজ্ঞানীদের সফলতা: ইমপ্লান্ট নয়, নতুন করে গজাবে ক্ষয়ে যাওয়া দাঁত!
নওগাঁয় বাসায় ঢুকে তরুণকে কুপিয়ে জখমের ঘটনায় ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা