শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪ | ১২ পৌষ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও আর্থিক খাতের সুশাসন

বাংলাদেশ এখন অর্থনৈতিকভাবে এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। বৈদেশিক চ্যালেঞ্জ আছে। অভ্যন্তরীণ চ্যালেঞ্জগুলোও প্রতীয়মান হচ্ছে। ব্যাংকিং সেক্টরেরও কিছু চ্যালেঞ্জ আছে। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে ব্যাংকের একটা বিশেষ ভূমিকা আছে। কারণ ব্যাংক হলো যেকোনো অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের মূল চালিকাশক্তি। সেটা সুস্থ থাকলে সব অর্থনৈতিক খাত সুস্থ থাকে। আর্থিক কর্মকাণ্ডগুলো সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হয়। এই সময়ে আমরা যদি বাংলাদেশের অর্থনীতিকে আরও উজ্জীবিত করে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই, তাহলে ব্যাংকিং সেক্টরের দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে।

এখন যদি ব্যাংকিং সেক্টরে আমরা সুশাসন নিশ্চিত না করতে পারি, সংস্কার করে এটাকে আরো গতিশীল না করি, দক্ষতা বাড়াতে ব্যবস্থা গ্রহণ না করি, তাহলে আমাদের অসুবিধা হবে। সুতরাং ব্যাংকিং খাতে সুশাসন ও শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করতে হবে। শক্তিশালী ব্যাংকব্যবস্থা অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার পরিচয় বহন করে। রুগ্ণ ও দুর্বল ব্যাংকব্যবস্থা দুর্বল অর্থনীতির প্রমাণ দেয়। এ ক্ষেত্রে ব্যাংক বা ব্যাংকব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা ধরে রাখা দরকার। আস্থা যদি নষ্ট হয়, তাহলে কিন্তু ব্যাংকিংয়ের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। অর্থনৈতিক অন্যান্য ব্যবস্থায় ধস নামবে।

বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোকে যদি আমরা তিনটা পর্বে ভাগ করতে পারি-একটা পর্ব হলো ১৯৭২ থেকে ১৯৮০ সাল। দ্বিতীয় পর্ব হলো ১৯৮০ থেকে ২০০০ এবং তৃতীয় পর্ব হলো ২০০০ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত। ১৯৭২ থেকে ১৯৮০-এই সময়ে সব ব্যাংক ছিল রাষ্ট্রায়ত্ত। তখন তারা সীমাবদ্ধ ছিল সরকারের নির্দেশিত শর্তাবলি পালন করতে। ১৯৮০ সাল থেকে প্রাইভেট ব্যাংক কাজ শুরু করল। শিল্প, কৃষি ও ব্যবসার সঙ্গে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক ও প্রাইভেট ব্যাংকগুলো কাজ করে। আবার ২০০০ সাল থেকে এখন নানা রকম সংস্কার হচ্ছে। বিভিন্ন পর্বে নানা রকম সমস্যা ছিল। প্রতিটি সমস্যা সমাধান করার জন্য প্রয়োজন সংস্কার এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের উদ্যোগ ও সরকারি উদ্যোগের মাধ্যমে। সেখানে ব্যাংকগুলোর যথেষ্ট সহযোগিতা রয়েছে। ব্যাংকগুলো যথারীতি তাদের নিজস্ব কর্ম সঠিকভাবে পালন করেছে।

এখন বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে নানা রকম সমস্যা তৈরি হয়ে আছে। খেলাপি ঋণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে পরিচালনা ব্যবস্থাপনা সংকট এবং অনিয়ম দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। ব্যাংকের সুশৃঙ্খলা, সুশাসন তেমনভাবে হচ্ছে না। বাংলাদেশ ব্যাংক কাজ করছে কিন্তু খুব শক্তভাবে এগুলোর প্রতিকার করছে না। তারা যে পদক্ষেপ নিচ্ছে, সেটা দৃশ্যমান হচ্ছে না।

অনেক সময় অনিয়ম পাশ কাটিয়ে যাওয়া হয়। তদন্তের নামে দীর্ঘসূত্রতা করে অনেক কিছু দৃষ্টির আড়ালে নিয়ে যাওয়া হয়। তখন সমস্যার সমাধান হয় না, এতে সমস্যা বাড়ে। এই পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের দেখতে হবে, যেসব নিয়ম-নীতি আছে, ব্যাংকের আইন আছে, তার বাইরে বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলার আছে, সেগুলো কতটা মানা হচ্ছে। দেশের সাধারণ কতগুলো আইন আছে। আবার আন্তর্জাতিক কতগুলো মান আছে। এর বাইরে আবার বাংলাদেশের ভেতরে ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং অ্যাক্ট আছে। সব কিন্তু ব্যাংকিং, আর্থিক অবস্থা, ডিসক্লোজার, নানা খুঁটিনাটি বিষয় নির্দেশ করে। এগুলো আন্তর্জাতিক মানের। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, ব্যাংকগুলো এসব পরিপালন করছে কি না। এগুলো পরিপালন করার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের যে শক্ত অবস্থান নেওয়ার কথা, সেটা কি তারা নিচ্ছে? কোনো সমস্যা দেখা দিলে তারা কি দ্রুত যথাযথ সমাধান দিতে পারছে? এখন আইএমএফ এসেছে। তারা কিছু শর্ত দিয়েছে। সংস্কার করার কথা বলেছে। সংস্কারগুলো বেশির ভাগ ব্যাংকিং খাত নিয়ে। কর ব্যবস্থা কী করতে হবে, জ্বালানি খাতে কী করতে হবে-এসব বিষয়ে আইএমএফ কতগুলো পরামর্শ দিয়েছে। সেগুলো নিয়ে সরকারকে ভাবতে হবে। ফরেন এক্সচেঞ্জ মার্কেটটাকে আরও সুশৃঙ্খল করার কথা বলা হয়েছে।

মোটাদাগে ব্যাংকিং খাত, পুঁজিবাজার ও আর্থিক সংস্থার উপর বেশি নজর দিতে হবে। এখন যদি আমরা সংস্কার না করি, মানুষের আস্থা কিন্তু কমে যাবে। এবং এই যে অর্থনৈতিক সংকট বা অর্থনৈতিক গতির যে মন্থরতা, এই সংকটের সময়ে আমাদের জনগণের বিশ্বাস, আস্থা এবং অংশগ্রহণমূলক সহযোগিতা পাওয়া দরকার। কিন্তু আস্থা না থাকলে জনগণের সহযোগিতা পাওয়া যাবে না। বিশেষ করে ব্যাংকিং সেক্টরে এখন যারা আমানত রাখছে, তারা আমানত রাখবে না। একটা ব্যাংকে সমস্যা দেখা দিলে অন্য ব্যাংকেও সমস্যা দেখা দিতে পারে। অতএব জনগণের আস্থা বাড়াতে হবে। যারা ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়, তাদেরও আস্থা থাকতে হবে। এই বিশ্বাস তৈরি করতে হবে যে যদি আমরা ঋণ পরিশোধ করি, তাহলে ব্যাংক আমাদের ঋণ দেবে। যারা খেলাপি, তাদের কথা আলাদা। তারা সুযোগ নেয় এবং অসহযোগিতামূলক আচরণ করে। যারা দুর্নীতি বা নানা রকম বেআইনি কাজ করে তাদের কারণে ক্ষুদ্র, মাঝারি ব্যবসা এবং ভালো উদ্যোক্তাদের উপর চাপ সৃষ্টি হয়। নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। অতএব সার্বিকভাবে শৃঙ্খলা আনতে হলে এখনই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নজরদারি বাড়াতে হবে।

আমরা দেখছি যে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে কিন্তু নানা রকম আর্থিক বিপর্যয় হচ্ছে। আর্থিক প্রতিষ্ঠান ধসে যাচ্ছে। ২০০৭-০৮ সালে আমরা দেখেছি যে যুক্তরাষ্ট্রে বহু ভালো বাণিজ্যিক ব্যাংক এবং বহু ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক, মানে বিনিয়োগকারী ব্যাংকের পতন হয়েছে। মানে তারা বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে। এর ফলে ব্যাংকের বেল আউট করতে সরকারি টাকা ইনভেস্ট করতে হয়েছে। একই ঘটনা ইউরোপে ঘটেছে, অন্যান্য দেশে ঘটেছে; কিন্তু আমাদের দেশে এখন পর্যন্ত তেমন কিছু ঘটেনি। কারণ আমরা সেভাবে কোনো আর্থিক বিপর্যয়ের মধ্যে পড়িনি। এখন অনেক দিন পর সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে দুটি বড় ব্যাংক একবারে বসে গেছে। তাদের আইন অনুযায়ী এদের দায়িত্বভার নিচ্ছে ফেডারেল ডিপোজিট ইনস্যুরেন্স করপোরেশন (এফডিআইসি)। এই দুটি ব্যাংক কতগুলো লেনদেন করছিল এবং আইটি ও অন্যান্য বড় খাতে ইনভেস্টমেন্টও করেছিল। অনেক ক্ষেত্রে তাদের ব্যাংকিং ছিল আগ্রাসী। দুটি কারণে তারা এখন বন্ধ হয়ে গেছে। একটা হলো নিজস্ব ব্যবস্থাপনা ঠিকভাবে করতে পারেনি। দ্বিতীয়ত, তারা নিজস্ব ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে ভালোভাবে মনিটর করেনি বা তাদের তথ্য তারা ভালোভাবে পায়নি। অন্যদিকে বিনিয়োগ নেওয়া প্রতিষ্ঠানও কিন্তু অনেক সময় তথ্য লুকিয়ে রেখেছে বা তথ্য দেয়নি। ফলে ব্যাংকের ডিপোজিটে চাপ পড়েছে। বড় আমানতকারীরা টাকা তুলে নেওয়ায় ছোটখাটো আমানতকারীরাও টাকা উঠিয়ে নিয়ে যায়। তার মানে, এখানে ব্যাংকের উপর একটা আস্থা কমে গেছে।

এই দুটি ব্যাংক থেকে সরাসরি না হলেও পরোক্ষভাবে আমাদের কিছু শেখার আছে। আমি মনে করি যে এই ব্যাংকগুলো নিয়ে প্রচারণা করার প্রয়োজন নেই। কারণ তাদের পরিস্থিতি আলাদা এবং ওই দুটি ব্যাংকের ইকোনমির ছোট অংশ তারা কাভার করে। এটার প্রভাব অন্য সেক্টরে পড়বে না। অর্থাৎ অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় চাপ সৃষ্টি করবে না।
বাংলাদেশের মানুষ আবার অনেক সময় গুজবে বিশ্বাস করে। অন্যদের কথায় ভাবে যে আমাদের দু-একটা ব্যাংক খারাপ হয়ে যেতে পারে। মানে অন্য ব্যাংকের উপর চাপ সৃষ্টি করবে। দ্বিতীয়ত, বাংলাদেশে আগ্রাসী বিনিয়োগ বন্ধ করতে হবে। কারণ, আমাদের অর্থনীতির তুলনায় ব্যাংক অনেক বেশি। মোটামুটি দু-একটা ব্যাংক যদি ঝামেলা করে এটা কিন্তু অন্যান্য ব্যাংকের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। মানুষের আস্থায় টান পড়বে। এমনিতে মানুষ রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিয়ে অনেকটা সংশয়ের মধ্যে আছে।

অর্থনীতির ক্ষেত্রে নানা রকম অনিশ্চয়তা আছে, কোভিড আছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ আছে। তারপর নিজস্ব এই সমস্যাগুলো যদি থাকে, তাহলে কিন্তু সামনের দিকে যেতে পারব না। আমাদের উন্নয়ন পিছিয়ে পড়বে। অতএব মানুষের আস্থা রাখতে হবে এবং দৃষ্টি থাকতে হবে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একটা সুবিধা আছে, ডিপোজিট ইনস্যুরেন্স আড়াই লাখ ডলার। আমাদের আড়াই কোটি টাকার মতো। বাংলাদেশের ডিপোজিট ইনস্যুরেন্স মাত্র দুই লাখ টাকা। যেটা বাংলাদেশ ব্যাংক ম্যানেজ করে। বাংলাদেশের লোক যখন জানবে, তাদের আড়াই কোটি আর আমাদের দুই লাখ টাকা, তাহলে তো সবাই ভয় পাবে। এখনই বাংলাদেশ ডিপোজিট ইনস্যুরেন্সের টাকা আরো বাড়াতে হবে। ডিপোজিটটা ইনস্যুরেন্স করার চিন্তা-ভাবনা করতে হবে। ডিপোজিট ইনস্যুরেন্স করা একটা ভালো দিক। এর আগে ডিপোজিট যেন বিপদে না পড়ে সে জন্য ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা, ব্যাংকের সুশাসন ঠিক করতে হবে। সরকারকে ব্যাংকিং খাতে হস্তক্ষেপ করতে হবে। প্রয়োজনবোধে ডিপোজিট ইনস্যুরেন্সের জন্য জামানতকারী স্বেচ্ছায় তাদের একটি অংশ ইনস্যুরেন্স কোম্পানির কাছে বিমা করার বিষয়টি ভেবে দেখতে হবে।

আমাদের ছোট অনেক ব্যাংক আছে, যেগুলো নানা সমস্যায় জর্জরিত। এগুলো উঠিয়ে আনা কষ্টকর হবে। সরকার যতই কনসেশন দিক, বাংলাদেশ ব্যাংক যতই তাদের উদ্ধার করে আনার চেষ্টা করুক, কোনো লাভ হবে বলে মনে হয় না। এখন সময় এসেছে ব্যাংকের সংখ্যা কমিয়ে আনার। ছোটখাটো দু-একটা ব্যাংককে আরেকটা ব্যাংকের সঙ্গে মার্জ করে অথবা ভালো কিছু ফিন্যান্সিয়াল ব্যাংকের সঙ্গে কিংবা বড় ব্যাংকের সঙ্গে যদি মার্জ করা হয়, তাহলে সমস্যা অনেক কমে যাবে। তাহলে বাংলাদেশ ব্যাংকেরও সুপারভাইজ বা মনিটর করা সহজ হবে। শেষ কথা হচ্ছে, আমাদের আর্থিক খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা দরকার।

ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ: ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর

Header Ad
Header Ad

বাংলাদেশ জটিল রাজনৈতিক সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে : মির্জা ফখরুল

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশ বর্তমানে এক জটিল রাজনৈতিক সময় পার করছে। এই সময়ে বাংলাদেশের কাঙ্ক্ষিত স্বপ্ন পূরণে রাজনৈতিক কাঠামো এবং প্রতিষ্ঠানগুলোকে গণতন্ত্রের উপযোগী করতে হবে।

শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর খামারবাড়ি কৃষি ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ‘ঐক্য, সংস্কার, নির্বাচন, জাতীয় সংলাপ ২০২৪’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, “গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠায় আমাদের বারবার বলতে হচ্ছে, ‘এটা করতে হবে, ওটা করতে হবে।’ কারণ, গণতন্ত্র চর্চা ছাড়া গড়ে ওঠে না। ১৯৭১ সালের সংগ্রাম এবং পরবর্তী গণতান্ত্রিক লড়াইগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের এগোতে হবে।”

তিনি অভিযোগ করেন, “২০১২ সাল থেকে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই সংগ্রামে বিএনপি সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে। আমাদের হাজারো নেতাকর্মী মিথ্যা মামলায় হয়রানির শিকার হয়েছেন, গুম হয়েছেন এবং হত্যা করা হয়েছে। তবুও আমরা থেমে নেই। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় আমরা এখনও সোচ্চার।”

সংস্কার প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, “আমরা প্রথম থেকেই সংস্কারের পক্ষে। আমাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তোলা হয় যে ‘বিএনপি সংস্কার চায় না,’ তা সম্পূর্ণ ভুল। আমরা দ্রুত প্রয়োজনীয় সংস্কার চাই এবং একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে চাই।”

তিনি আরও বলেন, “গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় নির্বাচনই হচ্ছে মূল দরজা। ১৯৯৬ সালের কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত তিনটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন তারই উদাহরণ।”

তৃণমূল থেকে রাজনীতিতে উঠে আসার অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি বলেন, “আমি কোনো রাজনৈতিক তাত্ত্বিক নই। আমি মাঠ পর্যায়ে কাজ করে তৃণমূলের মানুষের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক তৈরি করেছি। জনগণকে বাদ দিয়ে কোনো উন্নয়ন বা পরিবর্তন সম্ভব নয়।”

অতীতের সংগ্রামের গুরুত্ব তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, “আমাদের ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ এবং তারপরে গণতান্ত্রিক লড়াইগুলোর আত্মত্যাগের কথা ভুলে গেলে চলবে না। সেই ঐতিহাসিক আন্দোলনের চেতনা ধারণ করেই আমাদের ভবিষ্যতের পথ রচনা করতে হবে।”

তিনি জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, “গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য জনগণের সঙ্গেই সম্পর্ক স্থাপন করতে হবে। জনগণই সব পরিবর্তনের মূল শক্তি।”

Header Ad
Header Ad

সংবিধান সংস্কারে রাজনৈতিক দলের সংকল্প জরুরি: অধ্যাপক আলী রীয়াজ

সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক আলী রীয়াজ। ছবি: সংগৃহীত

সংবিধান সংস্কার কাজ এগিয়ে নিতে রাজনৈতিক দলগুলোর অঙ্গীকার ও সংকল্প অপরিহার্য বলে মন্তব্য করেছেন সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক আলী রীয়াজ।

শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে ফোরাম ফর বাংলাদেশ স্টাডিজ আয়োজিত ‘ঐক্য, সংস্কার, নির্বাচন’ শীর্ষক সংলাপে তিনি এ কথা বলেন।

আলী রীয়াজ বলেন, "বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে হলে জনগণ এবং রাজনৈতিক দলগুলোর গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা, নাগরিক অধিকার এবং ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণের দাবি মেনে ঐক্যমত তৈরি করতে হবে।"

তিনি আরও বলেন, "শুধু আইন বা নিয়ম-কানুন সংস্কার যথেষ্ট নয়। ভালো সংবিধান প্রণয়ন করলেই সাংবিধানিক অধিকার নিশ্চিত হবে না। এজন্য রাজনৈতিক শক্তিগুলোর মধ্যে সংস্কারকাজ এগিয়ে নেয়ার দৃঢ় সংকল্প থাকতে হবে।"

এই সংলাপে তিনি রাজনৈতিক ঐক্যের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে বলেন, জনগণের চাহিদা অনুযায়ী গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও সংস্কার সাধনে দলগুলোর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

Header Ad
Header Ad

চলতি বছরের বিজিবি-বিএসএফ বৈঠক হচ্ছে না

ছবি: সংগৃহীত

চলতি বছরে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি ও ভারতের বিএসএফের মহাপরিচালক পর্যায়ের বৈঠকটি বাতিল হয়েছে। শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) বিষয়টির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিএসএফের এক কর্মকর্তা ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসকে এই তথ্য জানিয়েছেন।

প্রতি বছর দুইবার করে স্বরাষ্ট্র, প্রতিরক্ষা, মাদক বিরোধীসহ অন্যান্য সংস্থার কর্মকর্তাদের নিয়ে দুই বাহিনীর প্রধান বৈঠক করেন। বিএসএফ এবং বিজিবি (তৎকালীন বাংলাদেশ রাইফেলস) এর ডিজিদের মধ্যে ১৯৭৫ সালের ২ ডিসেম্বর প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এর ১৯৯৩ সালে দিল্লি ও ঢাকায় দ্বিবার্ষিক বৈঠক করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এবারের বৈঠকটি হওয়ার কথা ছিল দিল্লিতে।

বাতিল করা বৈঠকটি একটি রুটিন বৈঠক হলেও এবার তা অধিক গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কেননা, ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে চলে যাওয়ার পর বিজিবি-বিএসএফের মহাপরিচালক পর্যায়ে আর কোনও বৈঠক হয়নি।

নভেম্বরে এই বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। তবে বাংলাদেশ এটি পিছিয়ে দেওয়ার অনুরোধ জানালে নতুন করে আর কোনও তারিখ নির্ধারণ করা হয়নি। ডিসেম্বরে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হওয়ার আশা করা হচ্ছিলো। তবে এ মাসেও তা না হওয়ায় ২০২৪ সালে বৈঠক হওয়ার আর কোনও সম্ভাবনা নেই।

এ বিষয়ে বিএসএফের ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘নতুন তারিখ এখনও ঠিক করা হয়নি। তাই চলতি বছর বৈঠকটি আর হচ্ছে না। গত মাসে বৈঠক স্থগিতের পর ডিসেম্বরে এর আয়োজন নিয়ে আলোচনা হলেও তা ফলপ্রসু হয়নি।’

তিনি বলেন, ‘সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফের সদস্যদের মধ্যে কিছু বিষয় নিয়ে সমস্যা রয়েছে। তবে সেগুলো ছোট বিষয়। যে বিষয়গুলোর সমাধান করা সম্ভব নয় সেগুলো দুই বাহিনীর প্রধানের বৈঠকে তোলা হবে। তবে এই মুহূর্তে তাদের বৈঠক না হওয়াটাকে আমরা বড় করে দেখছি না। কেননা, মধ্যম সারির কর্মকর্তাদের মধ্যে নিয়মিত বৈঠক হচ্ছে।’

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

বাংলাদেশ জটিল রাজনৈতিক সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে : মির্জা ফখরুল
সংবিধান সংস্কারে রাজনৈতিক দলের সংকল্প জরুরি: অধ্যাপক আলী রীয়াজ
চলতি বছরের বিজিবি-বিএসএফ বৈঠক হচ্ছে না
ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে নিহত সবাই একই পরিবারের
ইউসুফ (আঃ)- এর সমাধিতে নিয়ে গেল ইসরায়েলি সেনারা
ইন্টারপোলের রেড নোটিশে ৬৩ বাংলাদেশি: অপরাধীদের ধরতে আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আজমীর বরখাস্তের আদেশ বাতিল
মাহফিলে আজহারী উঠবেন রাতে, দুপুরেই ভরে গেছে ময়দান
ইসরায়েলি হামলায় অল্পের জন্য প্রাণে বাঁচলেন ডব্লিউএইচও প্রধান
থাইল্যান্ডে নিখোঁজ হওয়া বাংলাদেশিকে পাওয়া গেল থাই নারীর সঙ্গে হোটেলে  
হাসিনার দোসররা সচিবালয়ে পরিকল্পিতভাবে অগ্নিকাণ্ড করেছে: শাকিল উজ্জামান
ভারতে ইসকন মন্দিরে চিন্ময়ের আইনজীবীর বৈঠক
ভোটার হওয়ার বয়স ১৭ বছর নির্ধারিত হওয়া উচিত: ড. মুহাম্মদ ইউনূস  
নির্বাচনে অংশ নিতে খালেদা জিয়ার আইনগত কোনো বাধা নাই
বাসের ধাক্কায় দুমড়েমুচড়ে গেল প্রাইভেটকার, নিহত ৫  
পাঁচ সাংবাদিক বরখাস্তের জন্য সরকার দায়ী নয়: প্রেস সচিব শফিকুল আলম
জাহাজে ছেলে খুন, পুত্রশোকে বাবার মৃত্যু
ক্রীড়া উপদেষ্টা আপাতত ক্রীড়া পরিষদে অস্থায়ী অফিস করবেন
সংস্কারবিহীন নির্বাচন সম্ভব নয়: ড. মুহাম্মদ ইউনূস
পানির ট্যাংকে লুকিয়েও রক্ষা পেলেন না আ’লীগ নেত্রী