শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫ | ৫ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও আর্থিক খাতের সুশাসন

বাংলাদেশ এখন অর্থনৈতিকভাবে এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। বৈদেশিক চ্যালেঞ্জ আছে। অভ্যন্তরীণ চ্যালেঞ্জগুলোও প্রতীয়মান হচ্ছে। ব্যাংকিং সেক্টরেরও কিছু চ্যালেঞ্জ আছে। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে ব্যাংকের একটা বিশেষ ভূমিকা আছে। কারণ ব্যাংক হলো যেকোনো অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের মূল চালিকাশক্তি। সেটা সুস্থ থাকলে সব অর্থনৈতিক খাত সুস্থ থাকে। আর্থিক কর্মকাণ্ডগুলো সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হয়। এই সময়ে আমরা যদি বাংলাদেশের অর্থনীতিকে আরও উজ্জীবিত করে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই, তাহলে ব্যাংকিং সেক্টরের দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে।

এখন যদি ব্যাংকিং সেক্টরে আমরা সুশাসন নিশ্চিত না করতে পারি, সংস্কার করে এটাকে আরো গতিশীল না করি, দক্ষতা বাড়াতে ব্যবস্থা গ্রহণ না করি, তাহলে আমাদের অসুবিধা হবে। সুতরাং ব্যাংকিং খাতে সুশাসন ও শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করতে হবে। শক্তিশালী ব্যাংকব্যবস্থা অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার পরিচয় বহন করে। রুগ্ণ ও দুর্বল ব্যাংকব্যবস্থা দুর্বল অর্থনীতির প্রমাণ দেয়। এ ক্ষেত্রে ব্যাংক বা ব্যাংকব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা ধরে রাখা দরকার। আস্থা যদি নষ্ট হয়, তাহলে কিন্তু ব্যাংকিংয়ের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। অর্থনৈতিক অন্যান্য ব্যবস্থায় ধস নামবে।

বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোকে যদি আমরা তিনটা পর্বে ভাগ করতে পারি-একটা পর্ব হলো ১৯৭২ থেকে ১৯৮০ সাল। দ্বিতীয় পর্ব হলো ১৯৮০ থেকে ২০০০ এবং তৃতীয় পর্ব হলো ২০০০ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত। ১৯৭২ থেকে ১৯৮০-এই সময়ে সব ব্যাংক ছিল রাষ্ট্রায়ত্ত। তখন তারা সীমাবদ্ধ ছিল সরকারের নির্দেশিত শর্তাবলি পালন করতে। ১৯৮০ সাল থেকে প্রাইভেট ব্যাংক কাজ শুরু করল। শিল্প, কৃষি ও ব্যবসার সঙ্গে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক ও প্রাইভেট ব্যাংকগুলো কাজ করে। আবার ২০০০ সাল থেকে এখন নানা রকম সংস্কার হচ্ছে। বিভিন্ন পর্বে নানা রকম সমস্যা ছিল। প্রতিটি সমস্যা সমাধান করার জন্য প্রয়োজন সংস্কার এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের উদ্যোগ ও সরকারি উদ্যোগের মাধ্যমে। সেখানে ব্যাংকগুলোর যথেষ্ট সহযোগিতা রয়েছে। ব্যাংকগুলো যথারীতি তাদের নিজস্ব কর্ম সঠিকভাবে পালন করেছে।

এখন বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে নানা রকম সমস্যা তৈরি হয়ে আছে। খেলাপি ঋণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে পরিচালনা ব্যবস্থাপনা সংকট এবং অনিয়ম দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। ব্যাংকের সুশৃঙ্খলা, সুশাসন তেমনভাবে হচ্ছে না। বাংলাদেশ ব্যাংক কাজ করছে কিন্তু খুব শক্তভাবে এগুলোর প্রতিকার করছে না। তারা যে পদক্ষেপ নিচ্ছে, সেটা দৃশ্যমান হচ্ছে না।

অনেক সময় অনিয়ম পাশ কাটিয়ে যাওয়া হয়। তদন্তের নামে দীর্ঘসূত্রতা করে অনেক কিছু দৃষ্টির আড়ালে নিয়ে যাওয়া হয়। তখন সমস্যার সমাধান হয় না, এতে সমস্যা বাড়ে। এই পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের দেখতে হবে, যেসব নিয়ম-নীতি আছে, ব্যাংকের আইন আছে, তার বাইরে বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলার আছে, সেগুলো কতটা মানা হচ্ছে। দেশের সাধারণ কতগুলো আইন আছে। আবার আন্তর্জাতিক কতগুলো মান আছে। এর বাইরে আবার বাংলাদেশের ভেতরে ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং অ্যাক্ট আছে। সব কিন্তু ব্যাংকিং, আর্থিক অবস্থা, ডিসক্লোজার, নানা খুঁটিনাটি বিষয় নির্দেশ করে। এগুলো আন্তর্জাতিক মানের। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, ব্যাংকগুলো এসব পরিপালন করছে কি না। এগুলো পরিপালন করার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের যে শক্ত অবস্থান নেওয়ার কথা, সেটা কি তারা নিচ্ছে? কোনো সমস্যা দেখা দিলে তারা কি দ্রুত যথাযথ সমাধান দিতে পারছে? এখন আইএমএফ এসেছে। তারা কিছু শর্ত দিয়েছে। সংস্কার করার কথা বলেছে। সংস্কারগুলো বেশির ভাগ ব্যাংকিং খাত নিয়ে। কর ব্যবস্থা কী করতে হবে, জ্বালানি খাতে কী করতে হবে-এসব বিষয়ে আইএমএফ কতগুলো পরামর্শ দিয়েছে। সেগুলো নিয়ে সরকারকে ভাবতে হবে। ফরেন এক্সচেঞ্জ মার্কেটটাকে আরও সুশৃঙ্খল করার কথা বলা হয়েছে।

মোটাদাগে ব্যাংকিং খাত, পুঁজিবাজার ও আর্থিক সংস্থার উপর বেশি নজর দিতে হবে। এখন যদি আমরা সংস্কার না করি, মানুষের আস্থা কিন্তু কমে যাবে। এবং এই যে অর্থনৈতিক সংকট বা অর্থনৈতিক গতির যে মন্থরতা, এই সংকটের সময়ে আমাদের জনগণের বিশ্বাস, আস্থা এবং অংশগ্রহণমূলক সহযোগিতা পাওয়া দরকার। কিন্তু আস্থা না থাকলে জনগণের সহযোগিতা পাওয়া যাবে না। বিশেষ করে ব্যাংকিং সেক্টরে এখন যারা আমানত রাখছে, তারা আমানত রাখবে না। একটা ব্যাংকে সমস্যা দেখা দিলে অন্য ব্যাংকেও সমস্যা দেখা দিতে পারে। অতএব জনগণের আস্থা বাড়াতে হবে। যারা ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়, তাদেরও আস্থা থাকতে হবে। এই বিশ্বাস তৈরি করতে হবে যে যদি আমরা ঋণ পরিশোধ করি, তাহলে ব্যাংক আমাদের ঋণ দেবে। যারা খেলাপি, তাদের কথা আলাদা। তারা সুযোগ নেয় এবং অসহযোগিতামূলক আচরণ করে। যারা দুর্নীতি বা নানা রকম বেআইনি কাজ করে তাদের কারণে ক্ষুদ্র, মাঝারি ব্যবসা এবং ভালো উদ্যোক্তাদের উপর চাপ সৃষ্টি হয়। নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। অতএব সার্বিকভাবে শৃঙ্খলা আনতে হলে এখনই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নজরদারি বাড়াতে হবে।

আমরা দেখছি যে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে কিন্তু নানা রকম আর্থিক বিপর্যয় হচ্ছে। আর্থিক প্রতিষ্ঠান ধসে যাচ্ছে। ২০০৭-০৮ সালে আমরা দেখেছি যে যুক্তরাষ্ট্রে বহু ভালো বাণিজ্যিক ব্যাংক এবং বহু ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক, মানে বিনিয়োগকারী ব্যাংকের পতন হয়েছে। মানে তারা বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে। এর ফলে ব্যাংকের বেল আউট করতে সরকারি টাকা ইনভেস্ট করতে হয়েছে। একই ঘটনা ইউরোপে ঘটেছে, অন্যান্য দেশে ঘটেছে; কিন্তু আমাদের দেশে এখন পর্যন্ত তেমন কিছু ঘটেনি। কারণ আমরা সেভাবে কোনো আর্থিক বিপর্যয়ের মধ্যে পড়িনি। এখন অনেক দিন পর সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে দুটি বড় ব্যাংক একবারে বসে গেছে। তাদের আইন অনুযায়ী এদের দায়িত্বভার নিচ্ছে ফেডারেল ডিপোজিট ইনস্যুরেন্স করপোরেশন (এফডিআইসি)। এই দুটি ব্যাংক কতগুলো লেনদেন করছিল এবং আইটি ও অন্যান্য বড় খাতে ইনভেস্টমেন্টও করেছিল। অনেক ক্ষেত্রে তাদের ব্যাংকিং ছিল আগ্রাসী। দুটি কারণে তারা এখন বন্ধ হয়ে গেছে। একটা হলো নিজস্ব ব্যবস্থাপনা ঠিকভাবে করতে পারেনি। দ্বিতীয়ত, তারা নিজস্ব ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে ভালোভাবে মনিটর করেনি বা তাদের তথ্য তারা ভালোভাবে পায়নি। অন্যদিকে বিনিয়োগ নেওয়া প্রতিষ্ঠানও কিন্তু অনেক সময় তথ্য লুকিয়ে রেখেছে বা তথ্য দেয়নি। ফলে ব্যাংকের ডিপোজিটে চাপ পড়েছে। বড় আমানতকারীরা টাকা তুলে নেওয়ায় ছোটখাটো আমানতকারীরাও টাকা উঠিয়ে নিয়ে যায়। তার মানে, এখানে ব্যাংকের উপর একটা আস্থা কমে গেছে।

এই দুটি ব্যাংক থেকে সরাসরি না হলেও পরোক্ষভাবে আমাদের কিছু শেখার আছে। আমি মনে করি যে এই ব্যাংকগুলো নিয়ে প্রচারণা করার প্রয়োজন নেই। কারণ তাদের পরিস্থিতি আলাদা এবং ওই দুটি ব্যাংকের ইকোনমির ছোট অংশ তারা কাভার করে। এটার প্রভাব অন্য সেক্টরে পড়বে না। অর্থাৎ অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় চাপ সৃষ্টি করবে না।
বাংলাদেশের মানুষ আবার অনেক সময় গুজবে বিশ্বাস করে। অন্যদের কথায় ভাবে যে আমাদের দু-একটা ব্যাংক খারাপ হয়ে যেতে পারে। মানে অন্য ব্যাংকের উপর চাপ সৃষ্টি করবে। দ্বিতীয়ত, বাংলাদেশে আগ্রাসী বিনিয়োগ বন্ধ করতে হবে। কারণ, আমাদের অর্থনীতির তুলনায় ব্যাংক অনেক বেশি। মোটামুটি দু-একটা ব্যাংক যদি ঝামেলা করে এটা কিন্তু অন্যান্য ব্যাংকের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। মানুষের আস্থায় টান পড়বে। এমনিতে মানুষ রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিয়ে অনেকটা সংশয়ের মধ্যে আছে।

অর্থনীতির ক্ষেত্রে নানা রকম অনিশ্চয়তা আছে, কোভিড আছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ আছে। তারপর নিজস্ব এই সমস্যাগুলো যদি থাকে, তাহলে কিন্তু সামনের দিকে যেতে পারব না। আমাদের উন্নয়ন পিছিয়ে পড়বে। অতএব মানুষের আস্থা রাখতে হবে এবং দৃষ্টি থাকতে হবে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একটা সুবিধা আছে, ডিপোজিট ইনস্যুরেন্স আড়াই লাখ ডলার। আমাদের আড়াই কোটি টাকার মতো। বাংলাদেশের ডিপোজিট ইনস্যুরেন্স মাত্র দুই লাখ টাকা। যেটা বাংলাদেশ ব্যাংক ম্যানেজ করে। বাংলাদেশের লোক যখন জানবে, তাদের আড়াই কোটি আর আমাদের দুই লাখ টাকা, তাহলে তো সবাই ভয় পাবে। এখনই বাংলাদেশ ডিপোজিট ইনস্যুরেন্সের টাকা আরো বাড়াতে হবে। ডিপোজিটটা ইনস্যুরেন্স করার চিন্তা-ভাবনা করতে হবে। ডিপোজিট ইনস্যুরেন্স করা একটা ভালো দিক। এর আগে ডিপোজিট যেন বিপদে না পড়ে সে জন্য ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা, ব্যাংকের সুশাসন ঠিক করতে হবে। সরকারকে ব্যাংকিং খাতে হস্তক্ষেপ করতে হবে। প্রয়োজনবোধে ডিপোজিট ইনস্যুরেন্সের জন্য জামানতকারী স্বেচ্ছায় তাদের একটি অংশ ইনস্যুরেন্স কোম্পানির কাছে বিমা করার বিষয়টি ভেবে দেখতে হবে।

আমাদের ছোট অনেক ব্যাংক আছে, যেগুলো নানা সমস্যায় জর্জরিত। এগুলো উঠিয়ে আনা কষ্টকর হবে। সরকার যতই কনসেশন দিক, বাংলাদেশ ব্যাংক যতই তাদের উদ্ধার করে আনার চেষ্টা করুক, কোনো লাভ হবে বলে মনে হয় না। এখন সময় এসেছে ব্যাংকের সংখ্যা কমিয়ে আনার। ছোটখাটো দু-একটা ব্যাংককে আরেকটা ব্যাংকের সঙ্গে মার্জ করে অথবা ভালো কিছু ফিন্যান্সিয়াল ব্যাংকের সঙ্গে কিংবা বড় ব্যাংকের সঙ্গে যদি মার্জ করা হয়, তাহলে সমস্যা অনেক কমে যাবে। তাহলে বাংলাদেশ ব্যাংকেরও সুপারভাইজ বা মনিটর করা সহজ হবে। শেষ কথা হচ্ছে, আমাদের আর্থিক খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা দরকার।

ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ: ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর

Header Ad
Header Ad

নারীরা কেন বয়সে ছোট পুরুষের সঙ্গে প্রেমে জড়াচ্ছেন?

ছবি: সংগৃহীত

সম্পর্ক তৈরির বেলায় বয়স বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। তবে বর্তমান প্রজন্মের অনেকের কাছে বয়স বিশেষ গুরুত্ব বহন করে না। তাই আজকাল নিজের বয়সের চেয়ে কম বয়সের মানুষের সঙ্গে সম্পর্কে জড়াচ্ছেন তরুণ–তরুণীরা।

পুরুষের ক্ষেত্রে এমন সম্পর্ক সমাজে স্বাভাবিক হলেও নারীর ক্ষেত্রে নয়। তবে আজকাল অনেক নারীই সঙ্গী বাছাই করার সময় বয়সের ফারাককে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন না। তাই তাঁরা এখন প্রেমিক বা দাম্পত্যসঙ্গী হিসেবে বেছে নিচ্ছেন কম বয়সীদের। ডেটিং অ্যাপের ট্রেন্ড বলছে, নারীরা পছন্দের ক্ষেত্রে সুন্দর মন, ব্যক্তিগত সুরক্ষা, আত্মবিশ্বাসী সঙ্গীকে খুঁজে নিতে চান। যেকোনো সম্পর্কে ভারসাম্য ও গতিশীলতাকে গুরুত্ব দেন।

ডেটিং ট্রেন্ডে নারীরা

মনোবিদেরা মনে করেন, এখনকার নারীরা নিজেদের সম্পর্ক নিয়ে বেশ সচেতন। যেকোনো বিষয়কে সহজভাবে নিতে পারার মানসিকতা বেড়েছে, বিশেষত অগ্রসর বিশ্বে তাঁরা কোনো বিষয়ে ভীত নন। সম্পর্কে যুক্ত হওয়ার সময় আত্মবিশ্বাস ও আত্মসচেতনতায় গুরুত্ব দেন তাঁরা। ঐতিহ্যগতভাবে পুরুষকে একচেটিয়াভাবে সফল কিংবা শক্তিশালী হিসেবে মেনে নিতে তাঁরা নারাজ। সঙ্গীর প্রতি আনুগত্যের চেয়ে নারীরা নিজের সুখ ও সামগ্রিক মঙ্গলকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। এসব কারণেই অনেক নারী কম বয়সী পুরুষ সঙ্গীর সঙ্গে ডেটিং করছেন। অর্থাৎ ব্যক্তিগত পছন্দকেই গুরুত্ব দিচ্ছেন তাঁরা। কম বয়সী পুরুষ সঙ্গীর কাছ থেকে মানসিক, সামাজিক চাহিদাসহ অন্যান্য প্রয়োজনকে গুরুত্ব দিয়েই সম্পর্কে জড়াচ্ছেন।

নানা কারণে সম্পর্কে জড়ানোর সময় নারীরা কম বয়সীদের গুরুত্ব দেন

নিজের চেয়ে কম বয়সী পুরুষ সঙ্গীর সান্নিধ্যে আসায় নারীদের মধ্যে নিজেদের আরও তরুণ ভাবার একধরনের প্রবণতা তৈরি হয়েছে। কম বয়সী তরুণেরা নিজেদের সম্পর্কে সচেতন, নিজের স্বাস্থ্য ও রুচির বিষয়েও সজাগ। নতুন নতুন অভিজ্ঞতা কম বয়সীদের পৃথিবীকে নতুন করে জানার সুযোগ দেয়। এসব কারণে সম্পর্কে জড়ানোর সময় নারীরা কম বয়সীদের গুরুত্ব দেন। নারীরা এখন আগের চেয়ে বেশি অর্থনৈতিক ও সামাজিক স্বাধীনতার জন্য ছুটছেন। পারিবারিক বা সামাজিক নিরাপত্তার জন্য বয়স্ক সঙ্গী খোঁজার প্রথাগত নিয়মে তাঁরা আর বিশ্বাসী নন। ব্যক্তিগত পরিপূর্ণতা, মানসিক সংযোগ ও আকর্ষণকে অগ্রাধিকার দিতেই নিজের পছন্দের সঙ্গীকে বেছে নিচ্ছেন।

বয়স কোনো বিষয় না

বয়সের ব্যবধান সম্পর্কে এখন নারীদের সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি বেশ নমনীয়। তরুণদের তুলনায় নারীরা মধ্যবয়সীদের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ানোর আগে অনেক চিন্তা করছেন। মধ্যবয়সী বা সমবয়সীদের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ানোর ক্ষেত্রে সামাজিক রীতিনীতি বা লোকদেখানোর আচারকেই বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয় বলে মনে করেন নারীরা। সম্পর্ক নিয়ে পুরোনো সামাজিক নিয়মগুলোকে চ্যালেঞ্জ করতে চান তাঁরা।

Header Ad
Header Ad

জুলাই-মার্চ মাসে ৩০.২৫ বিলিয়ন ডলার পোশাক রফতানি করেছে বাংলাদেশ

ছবি: সংগৃহীত

চলতি অর্থবছরের (২৪-২৫) জুলাই-মার্চ মাসে তৈরি পোশাক রফতানি বেড়েছে ১০ দশমিক ৮৪ শতাংশ। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই-মার্চ মাসের দেশভিত্তিক রফতানি তথ্য থেকে বিষয়টি জানা গেছে।

জানা গেছে, এই সময়ে ৩০ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলার পোশাক রফতানি করেছে বাংলাদেশ। যা পোশাক খাতের স্থিতিস্থাপকতা এবং সম্ভাবনা তুলে ধরে বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।

তথ্য থেকে জানা যায়, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এখনো বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বাজার। বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের মোট রপ্তানির ৪৯ দশমিক ৮২ শতাংশই রফতানি হয় ইউরোপীয় ইউনিয়নে। যার মোট বাজার মূল্য ১৫ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার।

এরপরেই রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজার। এ বাজারে মোট রফতানি হয়েছে ৫ দশমিক ৭৪ বিলিয়ন ডলারের তৈরি পোশাক। যা মোট রফতানির ১৮ দশমিক ৯৭ শতাংশ। যেখানে কানাডার মোট বাজার অংশ ছিল ৯৬৩ দশমিক ৮৫ মিলিয়ন ডলার। যার বাজার অংশ ৩ দশমিক ১৯ শতাংশ। যুক্তরাজ্যের বাজারও গুরুত্বপূর্ণ ছিল, যার রফতানি মূল্য ৩ দশমিক ৩৬ বিলিয়ন ডলার। যা বাংলাদেশের মোট তৈরি পোশাক রফতানির ১১ দশমিক ১০ শতাংশ ।

প্রবৃদ্ধির দিক থেকে ইইউতে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রফতানি বছরের পর বছর ধরে উল্লেখযোগ্যভাবে ১১ দশমিক ৩১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। উল্লেখিত সময়ে যেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ১৭ দশমিক ২৩ শতাংশ এবং কানাডা ১৫ দশমিক ৬৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে, যুক্তরাজ্যে তৈরি পোশাক রফতানি ৪ দশমিক ১৪ শতাংশ এর একটি সামান্য প্রবৃদ্ধির হার প্রদর্শন করেছে।

ইইউর মধ্যে, জার্মানি একটি গুরুত্বপূর্ণ বাজার হিসেবে দাঁড়িয়েছে, যেখানে বাংলাদেশের রফতানির পরিমাণ ৩ দশমিক ৮০ বিলিয়ন ডলার, স্পেন ২ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলার, ফ্রান্স ১ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলার, ইতালি ১ দশমিক ১৭ বিলিয়ন ডলার, পোল্যান্ড ১ দশমিক ২৬ বিলিয়ন ডলার এবং নেদারল্যান্ডস ১ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলার।

প্রবৃদ্ধির হার বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য ছিল - জার্মানি (১০ দশমিক ৭২ শতাংশ), ফ্রান্স (১০ দশমিক ৭৫ শতাংশ), নেদারল্যান্ডস (২৩ দশমিক ১৫ শতাংশ), পোল্যান্ড (১০ দশমিক ৩২ শতাংশ), ডেনমার্ক (১২ দশমিক ৮০ শতাংশ) এবং সুইডেন (১৯ দশমিক ৯৬ শতাংশ) ।

বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতেও অপ্রচলিত বাজারে প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে, সামগ্রিকভাবে ৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। যেখানে মোট রফতানি ৫ দশমিক ১২ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, যা বাংলাদেশের মোট রফতানির ১৬ দশমিক ৯৩ শতাংশ দখল করেছে।

এই বাজারগুলোর মধ্যে, জাপান মোট ৯৬০ দশমিক ৪৫ মিলিয়ন ডলার আমদানি করে শীর্ষে রয়েছে, তারপরে অস্ট্রেলিয়া ৬৫৩ দশমিক ৬৪ মিলিয়ন ডলার এবং ভারত ৫৩৫ দশমিক ১৫ মিলিয়ন ডলার আমদানি করে।

তুরস্ক এবং মেক্সিকোর মতো দেশগুলোতেও উল্লেখযোগ্য রফতানি হয়েছে। তুরস্কে ৩৫৭ দশমিক ২২ মিলিয়ন ডলার এবং মেক্সিকোতে ২৫১ দশমিক ২২ মিলিয়ন ডলার, যা প্রশংসনীয়। উল্লেখিত সময়ে ভারতে ২০ দশমিক ৪৫ শতাংশ, জাপান ১০ দশমিক ০৬ শতাংশ, মেক্সিকো ২৩ দশমিক ৪৪ শতাংশ এবং তুরস্কের ৩২ দশমিক ৫৪ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

রিপোর্টে দেখা গেছে, এই সময়কালে জাপান, অস্ট্রেলিয়া, ভারত, তুরস্ক এবং মেক্সিকোতে প্রবৃদ্ধি ইতিবাচক থাকলেও রাশিয়া, কোরিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং মালয়েশিয়ায় রফতানি হ্রাস পেয়েছে।

সংযুক্ত আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া এবং কোরিয়ায় নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি এই বাজারগুলোতে আরও গুরুত্বসহকারে রফতানি বাজার দেখা দরকার।

নিটওয়্যার খাত মোট ১১ দশমিক ২২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি দেখিয়েছে। ওভেন সেক্টরেও ১০ দশমিক ৪০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে, যুক্তরাজ্যে প্রবৃদ্ধি ধীর হলেও অপ্রচলিত বাজারে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পয়েছে।

রফতানির চলমান প্রবৃদ্ধি উল্লেখযোগ্যভাবে ইইউ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপর নির্ভরশীল। যা বাংলাদেশের প্রধান বাজার হিসেবে অব্যাহত রয়েছে। যা এই ক্ষেত্রগুলির মধ্যে আরও সম্ভাবনার ইঙ্গিত দেয়।

বিজিএমইএ’র সাবেক পরিচালক, বাংলাদেশ অ্যাপারেল এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং ডেনিম এক্সপার্ট লিমিটেডের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, ‘এটি আমাদের মোট রপ্তানি প্রবৃদ্ধিতে প্রধান ঐতিহ্যবাহী বাজারের তাৎপর্য প্রদর্শন করে।’ তিনি আরও বলেন, অপ্রচলিত বাজারে মাঝারি প্রবৃদ্ধি এই বিভাগে আরও গবেষণা এবং মনোযোগের গুরুত্বকে তুলে ধরে, কারণ এর যথেষ্ট প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে, যা ঐতিহ্যবাহী বাজারের ওপর নির্ভরতা ভারসাম্য বজায় রাখতেও সাহায্য করবে।

রুবেল বলেন, স্থায়ী বৈশ্বিক বাণিজ্য উত্তেজনা ক্রমাগত বৈশ্বিক পরিবেশকে পুনর্গঠন করছে। এমন সুযোগ তৈরি করছে যা বাংলাদেশ সুবিধা নিতে পারে।

Header Ad
Header Ad

মুন্সীগঞ্জে মাইক্রোবাসের সঙ্গে ধাক্কা

সংঘর্ষে উড়ে গেছে বাসের ছাদ, তবুও ১০ কিলোমিটার চালিয়ে ৬০ যাত্রীকে বাঁচালেন চালক

ছবি: সংগৃহীত

মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে মাইক্রোবাসের সঙ্গে ধাক্কা লাগার পর কাভার্ডভ্যান ও একটি কন্টেইনারের সঙ্গে সংঘর্ষে উড়ে গেছে বরিশাল এক্সপ্রেস নামের যাত্রীবাহী একটি বাসের ছাদ। পরপর তিন দফা দুর্ঘটনায় পড়ে আহত হন বাসের অন্তত ২০ যাত্রী।

তবু বাস না থামিয়ে ছাদবিহীন গাড়িটি ১০ কিলোমিটার পথ চালিয়ে নিয়ে যান চালক। পরে জনরোষে গাড়ি থামাতে বাধ্য হন।

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের শ্রীনগরের সমষপুরে এ দুর্ঘটনা ঘটে। বাসটিতে ৬০ যাত্রী ছিলেন।

বাসের যাত্রীরা জানান, ঢাকা থেকে বরিশাল এক্সপ্রেস লিমিটেডের বাসটি দ্রুতগতিতে চালাচ্ছিলেন চালক। রাত সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের শ্রীনগরের কামারখোলা এলাকায় পৌঁছেলে একটি কাভার্ডভ্যানের সঙ্গে ধাক্কা লাগে বাসটির। এতে বাসটির সামনের অংশ দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এ সময় চালক বাসটি না থামিয়ে আরও বেপরোয়া গতিতে চালাতে থাকে। সমষপুর এলাকায় পৌঁছে অপর একটি প্রাইভেটকারকে পেছন থেকে ধাক্কা দিলে বাসটির ছাদ বডি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে রাস্তায় পড়ে যায়। যাত্রীরা চালককে থামাতে অনুরোধ করলেও সে তা উপেক্ষা করে।

যাত্রীরা বলেন, চালক দুর্ঘটনাস্থলের অদূরে হাইওয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর গাড়ি দেখে ছাদবিহীন চলন্ত বাস চালিয়ে ১০ কিলোমিটার দূরের পদ্মা সেতু উত্তর থানার লৌহজংয়ের কুমারভোগ এলাকায় নিয়ে আসে। এ সময় আহত যাত্রীদের ‘বাঁচাও বাঁচাও’ চিৎকার শুনে বাসটি আটক করে জনতা।

পদ্মা সেতু উত্তর থানার ওসি মো. জাকির হোসেন জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় থানা, হাইওয়ে পুলিশ ও শ্রীনগর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। আহত যাত্রীদের উদ্ধার করে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এর মধ্যে গুরুতর আহত শাহিন নামের এক যাত্রীকে শ্রীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

চালক ও হেলপার বাস রেখে পালিয়েছেন বলেও জানান তিনি।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

নারীরা কেন বয়সে ছোট পুরুষের সঙ্গে প্রেমে জড়াচ্ছেন?
জুলাই-মার্চ মাসে ৩০.২৫ বিলিয়ন ডলার পোশাক রফতানি করেছে বাংলাদেশ
সংঘর্ষে উড়ে গেছে বাসের ছাদ, তবুও ১০ কিলোমিটার চালিয়ে ৬০ যাত্রীকে বাঁচালেন চালক
কোলের সন্তান বিক্রি করে অলংকার, মোবাইল কিনলেন মা
চুয়াডাঙ্গায় বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে দু’জন নিহত
ইয়েমেনের তেল বন্দরে মার্কিন বিমান হামলায় নিহত ৩৮
হবিগঞ্জে ট্রাক-পিকআপের মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত ৪
সৌদি আরব-মরক্কো থেকে ৪৬৬ কোটি টাকার সার কিনবে সরকার
গাইবান্ধায় মাদক মামলায় ৩ যুবকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের আহ্বান জানালেন প্রধান উপদেষ্টা
তোপের মুখে ওয়াক্‌ফ আইন স্থগিত করল ভারতের সুপ্রিম কোর্ট
নিজেকে বরিশাল সিটির মেয়র ঘোষণার দাবিতে মামলা করলেন ফয়জুল করীম
ভারতের সংখ্যালঘু মুসলিমদের ‘পূর্ণ নিরাপত্তা’ নিশ্চিতের আহ্বান বাংলাদেশের
টাঙ্গাইলে প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে কেন্দ্র সচিব ও পরীক্ষার্থীসহ আটক ৬
৭১ এর গণহত‍্যার জন‍্য ক্ষমা ও সম্পদ ফেরত দেয়া নিয়ে আলোচনায় সম্মত পাকিস্তান
এবার স্ত্রী রিয়া মনিকে তালাকের ঘোষণা দিলেন হিরো আলম
সাবেক এমপি বাহারের জমি-বাড়ি জব্দ, ২৯টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ
বাংলাদেশের সঙ্গে কোনো ধরণের বাণিজ্যযুদ্ধে জড়াতে চায় না ভারত
বিজ্ঞানীদের সফলতা: ইমপ্লান্ট নয়, নতুন করে গজাবে ক্ষয়ে যাওয়া দাঁত!
নওগাঁয় বাসায় ঢুকে তরুণকে কুপিয়ে জখমের ঘটনায় ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা