বুধবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৪ | ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

বাঙালির নববর্ষ

বর্তমানে বিশ্বজুড়ে বাঙালির নববর্ষ ভিন্ন মাত্রা লাভ করেছে। বিশ্বের অনেক দেশের বিপুল সংখ্যক মানুষ বাঙালির এই উৎসব সম্পর্কে জানে এবং আগ্রহভরে প্রবাসী বাঙালিদের অনুষ্ঠানে আসে। বিশেষ করে এর সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য, অসাম্প্রদায়িক মানবিক বোধ, বাঙালি জাতিসত্তার অন্যতম উপাদান হিসেবে এর শেকড়সন্ধানী প্রেরণা মানুষকে আগ্রহী করে তোলে।

বাংলা নববর্ষ বাঙালির প্রাণের উৎসব। দেশজুড়ে এই উৎসবের আয়োজন হয় বিপুল উৎসাহ ও উদ্দীপনায়। মানুষের ঢল নামে রাস্তায়। মানুষ জড়ো হয় বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের প্রাঙ্গণে। নববর্ষের পোশাকের ভিন্নতাও দারুণভাবে দৃষ্টিনন্দন। লাল-সাদা রঙ স্নিগ্ধতার আবেশ ভরিয়ে তোলে। খাবারের বৈচিত্র্যও নববর্ষ অনুষ্ঠানের একটি দিক। জাতি খুঁজে নেয় যা কিছু তার নিজস্ব, তার সবটুকু। সেই সবটুকুর গৌরব প্রতিটি মানুষের বুকজুড়ে থাকে বলে বাঙালির আত্মপরিচয়ের সংকট নেই।

২০১২ সালে নববর্ষ উলক্ষে আমেরিকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারী ক্লিনটন বাংলাদেশের মানুষকে শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন। এটি বাঙালি সংস্কৃতির আন্তর্জাতিক পরিসরে গুরুত্ব লাভের নজির। অন্য দেশের সাধারণ মানুষের কাছে শুধু নয়, সরকারি পর্যায়েও বাংলা নববর্ষ দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। এটি একটি দিক। অপর আর একটি দিক আছে।

গত কয়েক বছর ধরে নববর্ষ উপলক্ষে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়ার দুপাশে মিলনমেলা আয়োজিত হয়। ২০১২ সালে পঞ্চগড় উপজেলা অমরখানা সীমান্তে বসেছিল এই মেলা। দুদেশে বাস করা আপনজনের সঙ্গে দেখা হয় নববর্ষের এই দিনে। স্বাধীনতার পরের এক দশকের বেশি সময় ধরে মানুষ বিনা বাধায় যাতায়াত করতে পারত। স্বজনদের সঙ্গে শুধু দেখাই হতো না, ভালো একটা সময় কাটিয়েও আসা হতো। কয়েক বছর আছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দিয়েছে। ফলে যাতায়াত বন্ধ হয়ে গেছে। গরিব মানুষেরা পাসপোর্ট ভিসা করে স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে পারে না। তাই নববর্ষে উৎসবের দিনের জন্য তারা অপেক্ষা করে। স্বজনদের জন্য পিঠাপুলি, মোয়ামুড়ি বানায়, নতুন কাপড় কেনে দেয়।
দুপুর ১২টায় সীমান্ত রক্ষীরা অনুমতি দিলে বাংরাদশের মানুষেরা কাঁটাতারের এ পাশে দাঁড়ায়। ভারতীয় নাগরিকরা তাদের সীমান্তে দাঁড়ায়। শুরু হয় হাসিকান্না, আনন্দ-খুশির বন্যা, উপহার বিনিময়। আবেগের উৎসবমুখ খুলে যায়। কথার তুবড়ি ছোটে। মিটে যায় অনেকদিন ধরে স্বজনদের না দেখার তৃষ্ণা। কাঁটাতারের উপর হাত রেখে কিংবা চিবুক ঠেকিয়ে কথা বলে মন ভরে না। বুকের মধ্যে হাহাকার জেগেই থাকে। আবার একটি নববর্ষের উৎসব দিনের জন্য অপেক্ষা করতে হয় তাদের।

একসময় ফুরোয় সময়। সীমান্তরক্ষীরা নিজ নিজ দেশের লোকদের সরিয়ে দেয় কাঁটাতারের সীমানা থেকে। জেগে থাকে সংস্কৃতির প্রবল শক্তি। কাঁটাতারের বেড়ার সাধ্য নেই সেই শক্তিকে উপেক্ষা করার। কাঁটাতারের গায়ে লেগে থাকে আশি বছরের নারী চুনিবালার চোখের জল। এভাবেই সংস্কৃতি বিশ্বজুড়ে মানবিকতার মৌলিক শর্ত।

কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর উৎসব বিষয়ে ‘উৎসবের দিন’ প্রবন্ধে বলেছেন, ‘‘মানুষের উৎসব কবে? মানুষ যেদিন আপনার মনুষ্যত্বের শক্তি বিশেষভাবে স্মরণ করে, বিশেষভাবে উপলব্ধি করে, সেইদিন। যেদিন আমরা অপনাদিগকে প্রাত্যহিক প্রয়োজনের দ্বারা চালিত করি, সেদিন না- যেদিন আমরা অপনাদিগকে সাংসারিক সুখদঃখ দ্বারা ক্ষুব্ধ করি, সেদিন না- যেদিন প্রাকৃতিক নিয়ম পরম্পরায় হস্তে আপনাদিগকে ক্রীড়াপুত্তলিত মতো ক্ষুদ্র ও জড়ভাবে অনুভব করি, সেদিন আমাদের উৎসবের দিন নহে; সেদিন তো আমরা জড়ের মতো উদ্ভিদের মতো সাধারণ জন্তুর মতো- সেদিন তো আমরা আমাদের নিজের মধ্যে সর্বজয়ী মানবশক্তি উপলব্ধি করি না- সেদিন আমাদের আনন্দ কিসের? সেদিন আরা গৃহে অবরুদ্ধ, সেদিন আমরা কর্মে ক্লিষ্ট- সেদিন আমরা উজ্জ্বলভাবে আপনাকে ভূষিত করি না- সেদিন আমরা উদারভাবে কাহাকেও আহ্বান করি না- সেদিন আমাদের ঘরে সংসারচক্রের ঘর্ঘরধ্বনি শোনা যায়, কিন্ত সঙ্গীত শোনা যায় না। প্রতিদিন মানুষ ক্ষুদ্র দীন একাকী- কিন্ত উৎসবের দিনে মানুষ বৃহৎ, সেদিন সে সমন্ত মানুষের সঙ্গে একত্র হইয়া বৃহৎ, সেদনি সে সমন্ত মানুষ্যত্বের শক্তি অনুভব করিয়া মহৎ।’’
উৎসবকে নিয়ে রবীন্দ্রনাথের এই মহৎ ব্যাখ্যার উদাহরণ বাংলা নববর্ষ। বাঙালির আত্মশক্তির উৎসব। মানুষ্যত্বের জাগরণের উৎসব। গ্রামীণ অর্থনীতি হালখাতার উৎসব। মানুষের বেঁচে থাকার স্বপ্ন।

এই দিনকে কেন্দ্র করে উচ্চারিত হয়েছে বহুমাত্রিক অর্থ। জীবনের গভীর অর্থ খোঁজার যে মৌল দর্শন একটি জাতির চিন্তা-চেতনায় বিরাজ করে সেই অর্থের সবটুকু ধারণ করে আছে বাংলা নববর্ষ দিন।

এই উৎসব বাঙালি জাতীয়তাবাদের মৌল অনুপ্রেরণা। অসাম্প্রদায়িক বাঙালির আকার আধার। মনুষ্যত্ব বিকাশের শুভ শক্তি। আত্মপরিচয় বৃদ্ধির মূল ক্ষেত্র। বিশ্বজোড়া মেলবন্ধনে মানবিকতার মৌলিক শর্ত।

বাংলা নববর্ষের উৎসব আছে বলেই বাঙালির পরাজয় নেই। জাগরণের ঘণ্টাধ্বনি বাজায় এই উৎসব। মানুষ জড়ো হয় আপন নিয়মে। এই উৎসব শহরের ইটকাঠ থেকে গ্রামের মেঠোপথ পর্যন্ত বিস্তৃত। অন্য অর্থে বলা যায়, এই উৎসব বয়ে এনেছে শস্যদানা। জলবতী মেঘ। রূপালি ইলিশ। বিনয় বাঁশির ঢোল। এখন এর সবটুকু শহরের প্রতিটি মানুষের প্রাণের স্পন্দন। নন্দিত হয় পুরো দেশ।

মনীষী অন্নদাশঙ্কর রায় তার ‘সংস্কৃতির বিবর্তন’ গ্রন্থের ভূমিকায় লিখেছেন, ‘আমরা ক্রমশ হৃদয়ঙ্গম করছি যে দেশকে স্বাধীন করাই যথেষ্ট নয়। দেশের মানুষকে স্বাধীনভাবে চিন্তা করতে, সৃষ্টি করতে, নির্মাণ করতে শেখাতে হবে। পশ্চিমের সঙ্গে, আধুনিকের সঙ্গে পা মিলিয়ে নিতে হবে। পশ্চাতের সঙ্গে, ঐতিহ্যের সঙ্গে সমন্বয় রক্ষা করতে হবে। জনগণের সঙ্গে লোক সংস্কৃতির সঙ্গে যোগসূত্র অবিচ্ছিন্ন রাখতে হবে। সার্থক সংস্কৃতির এই তিনটি ডাইমেনশন।’

বাংলা নববর্ষ সংস্কৃতির এই তিনটি ডাইমেনশনকে বাঙালির মর্মমূলে প্রবেশ করিয়ে দিয়েছে। বাঙালি বুঝতে পেরেছে এই গোড়াটুকু আছে বলেই কোনো অপশক্তি তাদের উপড়ে ফেলতে পারেনি। পাকিস্তান আমলের পুরো সময় ধরে চেষ্টা করেছে পাকিস্তানি সরকার। এই শক্ত বাঁধনটুকু ছিল বলেই দন্ত-নখর বিস্তৃত করেও কিছুই করতে পারেনি তারা। বরং বাঙালি আত্মশক্তি সঞ্চয় করেছে আরও প্রবলভাবে।

ঢোল বাঙালির প্রাচীনতম লোকবাদ্য-যন্ত্র। উৎসবে বেজেছে- আনন্দের ধ্বনি হয়ে দিগ্বিদিক ছড়িয়েছে। প্রয়োজনে বেজেছে- ঢোল পিটিয়ে মানুষকে জড়ো করা হয়েছে- মানুষের কাছে খবর পৌঁছানোর জন্য সংকেত দেওয়া হয়েছে। প্রাচীনকালে হাট-বাজারে ঢোলের বাড়ি পড়লে মানুষ দৌড়ে আসত, বুঝে নিত যে তাদের জন্য কোনো জরুরি বার্তা আছে।

বাংলা নববর্ষ মানুষকে সেই বার্তা দেয় যখন রমনার বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে মৌলবাদী জঙ্গিরা বোমা ফাটায়। যখন যশোরে উদীচীর অনুষ্ঠানে কিংবা নেত্রকোনার অনুষ্ঠানে বোমা ফাটে। অশুভ শক্তির বার্তায় মানুষ পুনরায় শক্তি সঞ্চয় করে আর একটি নববর্ষ উৎসব উদযাপন করে।

বাঙালির পথচলায় নববর্ষ বাতিঘর। বিভ্রান্তির যাঁতাকলে পিষ্ট হওয়ার সুযোগ নেই বাঙালির। অমোঘ শক্তির দীপ্তি তার মাথার উপর ছায়া হয়ে আছে।

কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার ‘নববর্ষ’ প্রবন্ধে বলেছেন, ‘এই মহামান্বিত জগতের অদ্যকার নববর্ষদিন আমাদের জীবনের মধ্যে যে গৌরব বহন করিয়া আনিল, এই পৃথিবীতে বাস করিবার গৌরব, আলোকে বিচরণ করিবার গৌরব, এই আকাশতলে আসীন হইবার গৌরব, তাহা যদি পরিপূর্ণভাবে চিত্তের মধ্যে গ্রহণ করি তবে আর বিষাদ নাই, নৈরাশ্য নাই, ভয় নাই, মৃত্যু নাই।’

সেলিনা হোসেন: সভাপতি, বাংলা একাডেমি

এসএন

Header Ad
Header Ad

বিদ্যুৎ খাতে ১৫ বছরে ৭২ হাজার কোটি টাকার লুটপাট

ছবি: সংগৃহীত

আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে বিদ্যুৎ খাতকে কেন্দ্র করে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। দ্রুত সরবরাহ আইন (কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্ট আইন) প্রণয়ন করে দায়মুক্তি দেওয়ার মাধ্যমে এই খাতে লুটপাটের মডেল তৈরি হয়। গত ১৫ বছরে বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন ও পরিচালনায় ঘুষ, কমিশন, এবং অপ্রয়োজনীয় সক্ষমতার কারণে জনগণের ওপর ৭২ হাজার কোটি টাকার বোঝা চাপানো হয়েছে।

২০০৯ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ৫,৭০০ মেগাওয়াট থেকে বৃদ্ধি পেয়ে প্রায় ৩২,০০০ মেগাওয়াটে পৌঁছেছে। এ সময়ে শতাধিক বিদ্যুৎকেন্দ্র অনুমোদন দেওয়া হয়। তবে বেশিরভাগ প্রকল্প দ্রুত সরবরাহ আইনের আওতায় অনুমোদন পাওয়ায় উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার সুযোগ বন্ধ ছিল।

বিশ্লেষণ থেকে জানা যায়, বিদ্যুৎ উৎপাদন খাতে ৩০ থেকে ৩৩ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ হয়েছে, যার মধ্যে প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলার দুর্নীতির মাধ্যমে লুট হয়েছে।

মহাপরিকল্পনায় ২০৩০ সালের মধ্যে বিদ্যুতের চাহিদা ৩০,০০০ মেগাওয়াট ধরা হলেও, পরে এই লক্ষ্যমাত্রা ৪০,০০০ মেগাওয়াটে উন্নীত করা হয়। চাহিদার চেয়ে বেশি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করায় অপ্রয়োজনীয় সক্ষমতা তৈরি হয়। এই অতিরিক্ত সক্ষমতার জন্য ক্যাপাসিটি পেমেন্ট বাবদ প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলার অপচয় হয়েছে।

বিশেষজ্ঞ ম. তামিম বলেছেন, “উচ্চমাত্রার লক্ষ্য নির্ধারণ করে নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা হয়। এর ফলে জনগণের কাঁধে ভাড়া ও অন্যান্য ব্যয়ের বোঝা চেপেছে।”

শতভাগ বিদ্যুতায়নের লক্ষ্যে সঞ্চালন ও বিতরণ লাইন নির্মাণ এবং মিটার কেনাকাটায় বিপুল অর্থ ব্যয় করা হয়েছে। তবে এসব খাতে দুর্নীতির বিস্তারিত চিত্র এখনও স্পষ্ট নয়।

বিশ্লেষকরা মনে করেন, বিদ্যুৎ খাতে এ ধরনের দুর্নীতি অর্থনীতিতে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। সরকারের উচ্চাভিলাষী প্রকল্পের ফলে জনগণকে অযৌক্তিকভাবে অতিরিক্ত ব্যয় বহন করতে হয়েছে।

প্রস্তাবিত সমাধান:

- বিদ্যুৎ খাতে দুর্নীতি কমাতে উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার ভিত্তিতে প্রকল্প অনুমোদন।
- দায়মুক্তি আইন বাতিল করে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা।
- শ্বেতপত্রে বিস্তারিত তদন্তের মাধ্যমে দুর্নীতির চিত্র প্রকাশ।
- অপ্রয়োজনীয় সক্ষমতা বন্ধ এবং বিদ্যুতের চাহিদা অনুযায়ী পরিকল্পনা গ্রহণ।

বিদ্যুৎ খাতের এই সংকট উত্তরণে জনসাধারণ, বিশেষজ্ঞ এবং গণমাধ্যমের সমন্বিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন।

Header Ad
Header Ad

সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশের অভিযোগে ভারতীয় নাগরিক আটক

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার গোমস্তাপুর সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশের অভিযোগে মো. নাজির উদ্দিন কার্তিক (২৫) আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) সকাল ৯টার দিকে নওগাঁ ব্যাটালিয়নের (১৬ বিজিবি) বিজিবি সদস্যরা গোমস্তাপুর উপজেলার কেতাব বাজার এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করেন।

আজ মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে ১৬ বিজিবির গণমাধ্যম শাখা থেকে পাঠানো এক হোয়াটসঅ্যাপ বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়।

নওগাঁ ব্যাটালিয়নের (১৬ বিজিবি) অধিনায়ক লে. কর্নেল মুহাম্মদ সাদিকুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার গোমস্তাপুর উপজেলার বাংগাবাড়ি বিজিবির নিয়মিত টহল দল মঙ্গলবার সকালে সীমান্ত পিলার ২০৪/এমপি হতে আনুমানিক ১ কিলোমিটার বাংলাদেশের অভ্যান্তরে কেতাব বাজার এলাকায় টহল পরিচালনা করছিলেন। টহল দেওয়ার সময় একজন ব্যক্তির গতিবিধি সন্দেহজনক মনে হলে বিজিবির সদস্যরা জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি অসংলগ্ন বক্তব্য দিতে থাকেন। পরে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদে ওই ব্যক্তি স্বীকার করেন তিনি ভারতীয় নাগরিক। ওই ব্যক্তির ভাষ্যমতে তাঁর নাম, নাজির উদ্দিন কার্তিক। তিনি ভারতের বিহার রাজ্যের কাঠিয়ার জেলার আবাদপুর থানার গাবিন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা। তল্লাশী করে ওই ব্যক্তির কাছ ভারতীয় ১০ রুপি এবং বাংলাদেশী ২৫০ টাকা পাওয়া গেছে। তাঁর কাছ থেকে কোনো পাসপোর্ট বা বৈধ ডকুমেন্ট পাওয়া যায়নি।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে ওই ব্যক্তিকে আটক পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জিজ্ঞাসাবাদ কার্যক্রম চলমান আছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাঁর বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Header Ad
Header Ad

ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশি জানলেই হয়রানি

ছবি: সংগৃহীত

ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলায় ভ্রমণ ও চিকিৎসার কাজে যাওয়া বাংলাদেশিরা সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাপক হয়রানির শিকার হচ্ছেন। চলমান উত্তেজনাকর পরিস্থিতি এবং বিজেপি সমর্থকদের লংমার্চ কর্মসূচি ঘিরে এই হয়রানির মাত্রা বেড়ে গেছে।

সোমবার (২ ডিসেম্বর) থেকে আগরতলায় হোটেল ভাড়া না পেয়ে বাংলাদেশি পর্যটকরা চরম বিপাকে পড়েছেন। কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার বাসিন্দা ফরিদ মিয়া জানান, হোটেল ভাড়া নেওয়ার পর মুসলিম এবং বাংলাদেশি হওয়ায় তাকে এক ঘণ্টার মধ্যেই হোটেল থেকে বের করে দেওয়া হয়। টাকা ফেরত না পেয়ে তিনি বাধ্য হয়ে শহরের বাইরে আত্মীয়ের বাড়িতে রাত কাটান এবং পরদিন দেশে ফিরে আসেন।

আগরতলা ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্টে বাঁশের বেড়া দিয়ে চলাচলে বাধা সৃষ্টি করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সীমান্ত পারাপারের সময় বাংলাদেশিদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করা হচ্ছে। আখাউড়া স্থলবন্দরে ফিরে আসা যাত্রীরা জানিয়েছেন, সীমান্তে বাংলাদেশিদের হুমকি ও হয়রানির মুখোমুখি হতে হচ্ছে।

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের ব্যবসায়ী মুজিবুর রহমান শিলচরে ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড ফেয়ারে জামদানি শাড়ির একটি স্টল দিয়েছিলেন। সেখানে একদল যুবক "জয় শ্রী রাম" স্লোগান দিয়ে তার দোকানে হামলা চালায়। হামলাকারীরা দোকান ভাঙচুর করে এবং সমস্ত টাকা-পয়সা লুটপাট করে নিয়ে যায়।

এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিজিবি অতিরিক্ত সতর্ক অবস্থান নিয়েছে। বিজিবি ৬০ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল জাবের বিন জব্বার জানিয়েছেন, সীমান্তে কোনো অপ্রত্যাশিত ঘটনা এড়াতে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশিরা এমন হয়রানি ও বৈষম্যমূলক আচরণের নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে এর সমাধানের জন্য দুই দেশের সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সীমান্ত এলাকায় উত্তেজনা নিরসনে কূটনৈতিক পদক্ষেপ অত্যন্ত জরুরি।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

বিদ্যুৎ খাতে ১৫ বছরে ৭২ হাজার কোটি টাকার লুটপাট
সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশের অভিযোগে ভারতীয় নাগরিক আটক
ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশি জানলেই হয়রানি
প্রতিবেশী রাষ্ট্রের গোলামি করতে স্বাধীনতা অর্জন করিনি: সোহেল তাজ
মাইক্রোসফটের সমীক্ষায় ভুয়া খবর ছড়ানোর শীর্ষে ভারত
আগরতলার বাংলাদেশ হাইকমিশনে কনস্যুলার সেবা বন্ধ
একটি ইস্যু দিয়ে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক মূল্যায়ন করা যাবে না : ভারতীয় হাইকমিশনার
জাতীয় ঐক্যের ডাক দেবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ
শান্তিরক্ষী বাহিনীর ভূমিকা মমতা বোঝেন কিনা, নিশ্চিত নই: শশী থারুর
যমুনার চর কেটে বালু উত্তোলনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ
২০২৩ সালে সর্বোচ্চ দুর্নীতি পাসপোর্ট, বিআরটিএ ও আইনশৃঙ্খলায়
শেখ হাসিনার পতন কোনোভাবেই মানতে পারছেন না ভারত : রিজভী
ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে জরুরি তলব
সেনাবাহিনীর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি, এসএসসি পাসেই আবেদনের সুযোগ
এস আলম পরিবারের ৩৫০ ব্যাংক হিসাবের সন্ধান
২৮ বিয়ে প্রসঙ্গে যা বললেন নায়িকা রোমানা
বাংলাদেশিদের সেবা দেবে না ত্রিপুরার কোনো হোটেল–রেস্তোরাঁ
ভারত সফরে আসছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন
‘বাংলাদেশি কনস্যুলেটে হামলা প্রতিবেশীদের মধ্যে বিবাদের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে’
বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলায় ৩ পুলিশ বরখাস্ত, গ্রেপ্তার ৭