শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫ | ৫ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

মাতৃমৃত্যু রোধে অগ্রগতি যেখানে থমকে গেছে

মাতৃমৃত্যু রোধে বাংলাদেশ বেশ এগিয়েছে এবং এ ক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ শীর্ষে। কিন্তু প্রত্যাশার জায়গা থেকে আমরা অনেক দূরে অবস্থান করছি। বর্তমানে মাতৃমৃত্যু হার হ্রাস পেয়ে লাখে ৫০০ থেকে ১৬৩ জনে নেমে এলেও এটি শূন্যতে নেমে আসাই প্রত্যাশিত। যদিও এসডিজিতে ২০৩০ সালের মধ্যে অন্তত ৭০-এর নিচে মাতৃমৃত্যু হার নামিয়ে আনার কথা বলা হয়েছে।

মাতৃমৃত্যু হার কমানো আমাদের 'থ্রি জিরো এজেন্ডা'র অন্যতম। যেখানে আমরা একই সঙ্গে পরিবার পরিকল্পনার ক্ষেত্রে অপূর্ণ চাহিদা শূন্যতে আনা, শূন্য মাতৃমৃত্যু হার, যৌন ও জেন্ডারভিত্তিক নির্যাতন প্রতিরোধে কাজ করছি। সম্প্রতি জাতিসংঘের জনসংখ্যা তহবিল-ইউএনএফপির সঙ্গে যৌথভাবে পিপিআরসি 'থ্রি জিরো অ্যাকশন নেটওয়ার্ক' উদ্বোধন করে। আমরা তিনটি বিষয়ে একত্রে যেমন কাজ করছি, তেমনি প্রতিটি বিষয় নিয়েও আলাদা ফোকাস করে ঢাকায় এবং ঢাকার বাইরেও আমরা কর্মসূচি পালন করছি। তারই আলোকে গত ১৩ ডিসেম্বর সিলেটে আমরা মাতৃমৃত্যু হার নিয়ে একটি গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করি।

মাতৃমৃত্যু রোধে আমরা সমন্বিত পদক্ষেপের কথা বারবার বলেছি। স্বাভাবিকভাবেই এখনো গ্রামে মাতৃমৃত্যু হার বেশি। বাংলাদেশে মাতৃমৃত্যু ও স্বাস্থ্যসেবা জরিপের তথ্য অনুযায়ী রাজশাহী, রংপুর, বরিশাল ও সিলেট বিভাগে এ হার তুলনামূলক বেশি। বিষয়টি নিয়ে যারা কাজ করেন তাদের তথ্য অনুসারে— দেশে রক্তক্ষরণ ও খিঁচুনির কারণেই অধিকাংশ প্রসূতি মারা যান। অথচ এটি প্রতিরোধযোগ্য। বাড়িতে অদক্ষ ধাত্রীর মাধ্যমে প্রসব অনেক সময় ঝুঁকিপূর্ণ হয়। এ ক্ষেত্রে জনসচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অন্তঃসত্ত্বার কয়েকটি বিপদ চিহ্ন রয়েছে। হঠাৎ রক্তপাত, খিঁচুনি, চোখে ঝাপসা দেখা, ভীষণ জ্বর ও বিলম্বিত প্রসবের ক্ষেত্রে নাজুক মাকে যে হাসপাতাল বা নিকটস্থ স্বাস্থ্যসেবাকেন্দ্রে নিতে হ— সে বিষয়ে সচেতনতার কাজটি গুরুত্ব দিয়ে করা দরকার। তাদের দ্রুত হাসপাতালে আনতে পারলে মাতৃমৃত্যু সমস্যার বহুলাংশে সমাধান হতে পারে।

তবে এটাও বলা প্রয়োজন, স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে আমাদের যথেষ্ট উদ্বেগ রয়ে গেছে। এমনও আছে, হাসপাতালে নিলেও অন্তঃসত্ত্বার জটিল চিকিৎসায় অগ্রগতি যথেষ্ট হয়নি। মাতৃস্বাস্থ্য ক্ষেত্রে মানসম্মত সেবা নিশ্চিত করা না গেলে অবস্থার কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে উন্নতি ঘটবে না। আমরা যদি মাতৃমৃত্যু কমাতে চাই, তবে সেবা প্রদানের নিশ্চয়তা ও ব্যবস্থা উন্নত করতে হবে। যে পরিবেশ আছে তাতে আরও যত্নবান হতে হবে। কোনো প্রসূতি যদি হাসপাতালে আসার পরও মারা যান, সেটি নিঃসন্দেহে বেদনাদায়ক। তাদের চিকিৎসা সরকারি হাসপাতাল কিংবা বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় যে চিকিৎসালয় রয়েছে, উভয় ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও প্রশিক্ষিত সেবাদানকারী সেবা নিশ্চিত করা চাই।

অন্তঃসত্ত্বাদের সেবা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে মাঠ পর্যায়ে কোথায় ফাঁকফোকর আছে, তা খুঁজে বের করতে হবে। নিরাপদ ডেলিভারি নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্য খাতে নানা অসংগতি দূর করতে হবে। চিকিৎসক, সমাজকর্মী, এনজিও, রাজনীতিকসহ সবার অংশগ্রহণ মাতৃমৃত্যু হার হ্রাসে সহায়তা করে। সে জন্য সবার মধ্যেই সচেতনতা তৈরি করতে হবে। বলার অপেক্ষা রাখে না, মহামারি করোনা বিশ্বকে অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে চরম বিপর্যয়ের মুখে ফেলেছে। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। এর প্রভাবে সমাজে বাল্যবিয়ে বেড়েছে। অনেক ক্ষেত্রে বেড়েছে লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা। কোভিড স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে আমাদের যে নাজুক পরিস্থিতি দেখা গেছে, অন্তঃসত্ত্বার সুরক্ষায় তার প্রভাবও পড়েছে।

থ্রি জিরো এজেন্ডায় মাতৃমৃত্যুহার কমানো নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বলাবাহুল্য, থ্রি জিরো এজেন্ডার উৎস হলো, ১৯৯৪ সালে মিসরের কায়রোয় জনসংখ্যা ও উন্নয়নবিষয়ক ঐতিহাসিক আন্তর্জাতিক সম্মেলন (আইসিপিডি)। ওই সম্মেলনে প্রথমবারের মতো জনসংখ্যার অধিকারের বিষয়গুলো গুরুত্ব পায়। সেই সম্মেলনের ২৫ বছরপূর্তিতে ২০১৯ সালে কেনিয়ার নাইরোবিতে অনুষ্ঠিত হয় আইসিপিডি সম্মেলন। নাইরোবি সম্মেলনেই মূলত 'তিন শূন্য লক্ষ্যমাত্রা'কে ২০৩০ সালের মধ্যে অর্জনে এজেন্ডাভিত্তিক সুনির্দিষ্ট প্রতিশ্রুতি প্রদান করা হয়। কায়রো সম্মেলনের ২৫ বছরপূর্তিতে ওই সম্মেলনে নারী ও মেয়েদের সমধিকার, যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য এবং অধিকার, ব্যক্তির মানবাধিকার ও মর্যাদা নিশ্চিতকরণ যে টেকসই উন্নয়নের পূর্বশর্ত, সেটি পুনর্ব্যক্ত করা হয়।

বলার অপেক্ষা রাখে না, উন্নয়নের লক্ষ্য হলো সব মানুষের জীবনের গুণগত মানের উন্নয়ন। জনসংখ্যার পরিমাণগত আকারের পাশাপাশি গুণগত উন্নয়নও অত্যাবশ্যক। এ লক্ষ্যে আইসিপিডি এক মাইলফলক। সেখানে তিন শূন্য লক্ষ্যমাত্রাকে গুরুত্ব দিয়ে এজেন্ডাভিত্তিক প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। ২০৩০ সালের মধ্যে আমাদের এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি প্রয়োজন। অথচ অন্যান্য বিষয়ের মতোই মাতৃমৃত্যুর ক্ষেত্রে অগ্রগতি
সন্তোষজনক নয়।

এ ক্ষেত্রে কতটা কাজ হলো, তা নিরূপণ এবং এ কাজের ক্ষেত্রে সমন্বিত প্রচেষ্টার জন্যই আমরা থ্রি জিরো অ্যাকশন নেটওয়ার্ক গুরুত্বপূর্ণ মনে করছি। শুরুতেই বলেছি, মাতৃমৃত্যুহার রোধে আমরা বেশ এগিয়েছি। আরও দুটি ক্ষেত্রেও উন্নয়ন দৃশ্যমান। কিন্তু উন্নয়ন এক জায়গায় এসে আবার যেন থমকে গেছে। যেমন ২০৩০ সালের মধ্যে আমরা মাতৃমৃত্যু ৭০-এ নামাতে চাই। অথচ আমরা আছি এখন ১৬৩তে। কিন্তু আমাদের হাতে সময় বেশি নেই; মাত্র ৮ বছর। আমাদের অগ্রগতি ধীরগতিতে হচ্ছে। এ পর্যায়ে এসে আমরা যদি লক্ষ্যে পৌঁছাতে চাই, তবে আমাদের দ্বিগুণ প্রচেষ্টা লাগবে। তবে ধীরগতির ক্ষেত্রে কোভিড-১৯ বড় কারণ নিঃসন্দেহে। মহামারি অনেক ক্ষেত্রে অগ্রগতি ধীর করেছে, কোথাও আরও পেছনে ঠেলেছে। সে জন্যই মাতৃমৃত্যুহার রোধসহ অন্য ক্ষেত্রে আমাদের একটা ধাক্কা লাগবে। থ্রি জিরো অ্যাকশন নেটওয়ার্ক সেই ধাক্কার কাজটি করবে বলে আমাদের বিশ্বাস।

আমাদের সার্বিক উন্নয়নেই মাতৃমৃত্যু রোধ করা জরুরি। আবার আমরা সত্যিকার অর্থেই কতটা এগোলাম, তার অন্যতম নিরূপক মাতৃমৃত্যু হার। মাতৃমৃত্যু হার রোধসহ তিনটি ক্ষেত্রের কোনোটিতেই সরকার কিংবা নাগরিক সমাজের সদিচ্ছার অভাব নেই। তবে অনেক কিছু আছে কাগজ-কলমে। এ ক্ষেত্রে সফল হতে গেলে আমাদের 'কমিউনিটি'কে কাজে লাগাতে হবে। যেমন বাল্যবিয়ে রোধে আমাদের উপজেলা কমিটি আছে। কিন্তু কমিটি আদৌ কাজ করছে কি না; তাদের তহবিল আছে কি না, তা দেখতে হবে। মাতৃমৃত্যু হার রোধেও সমাজের দায়িত্ব রয়েছে। সামাজিক সচেতনতা ও জাগরণ তৈরি হলে সামাজিক নর্মস কিংবা দায়িত্ববোধ থেকেই নাজুক মায়েদের চিকিৎসায় মানুষ এগিয়ে আসবে। তাকে হাসপাতালে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করবে। আমরা এই সামষ্টিক প্রচেষ্টার কথাই বলছি এবং লক্ষ্যে পৌঁছাতে সেটা এখনই জরুরি।

ড. হোসেন জিল্লুর রহমান: অর্থনীতিবিদ ও এক্সিকিউটিভ চেয়ারম্যান, পিপিআরসি

আরএ/

Header Ad
Header Ad

নারীরা কেন বয়সে ছোট পুরুষের সঙ্গে প্রেমে জড়াচ্ছেন?

ছবি: সংগৃহীত

সম্পর্ক তৈরির বেলায় বয়স বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। তবে বর্তমান প্রজন্মের অনেকের কাছে বয়স বিশেষ গুরুত্ব বহন করে না। তাই আজকাল নিজের বয়সের চেয়ে কম বয়সের মানুষের সঙ্গে সম্পর্কে জড়াচ্ছেন তরুণ–তরুণীরা।

পুরুষের ক্ষেত্রে এমন সম্পর্ক সমাজে স্বাভাবিক হলেও নারীর ক্ষেত্রে নয়। তবে আজকাল অনেক নারীই সঙ্গী বাছাই করার সময় বয়সের ফারাককে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন না। তাই তাঁরা এখন প্রেমিক বা দাম্পত্যসঙ্গী হিসেবে বেছে নিচ্ছেন কম বয়সীদের। ডেটিং অ্যাপের ট্রেন্ড বলছে, নারীরা পছন্দের ক্ষেত্রে সুন্দর মন, ব্যক্তিগত সুরক্ষা, আত্মবিশ্বাসী সঙ্গীকে খুঁজে নিতে চান। যেকোনো সম্পর্কে ভারসাম্য ও গতিশীলতাকে গুরুত্ব দেন।

ডেটিং ট্রেন্ডে নারীরা

মনোবিদেরা মনে করেন, এখনকার নারীরা নিজেদের সম্পর্ক নিয়ে বেশ সচেতন। যেকোনো বিষয়কে সহজভাবে নিতে পারার মানসিকতা বেড়েছে, বিশেষত অগ্রসর বিশ্বে তাঁরা কোনো বিষয়ে ভীত নন। সম্পর্কে যুক্ত হওয়ার সময় আত্মবিশ্বাস ও আত্মসচেতনতায় গুরুত্ব দেন তাঁরা। ঐতিহ্যগতভাবে পুরুষকে একচেটিয়াভাবে সফল কিংবা শক্তিশালী হিসেবে মেনে নিতে তাঁরা নারাজ। সঙ্গীর প্রতি আনুগত্যের চেয়ে নারীরা নিজের সুখ ও সামগ্রিক মঙ্গলকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। এসব কারণেই অনেক নারী কম বয়সী পুরুষ সঙ্গীর সঙ্গে ডেটিং করছেন। অর্থাৎ ব্যক্তিগত পছন্দকেই গুরুত্ব দিচ্ছেন তাঁরা। কম বয়সী পুরুষ সঙ্গীর কাছ থেকে মানসিক, সামাজিক চাহিদাসহ অন্যান্য প্রয়োজনকে গুরুত্ব দিয়েই সম্পর্কে জড়াচ্ছেন।

নানা কারণে সম্পর্কে জড়ানোর সময় নারীরা কম বয়সীদের গুরুত্ব দেন

নিজের চেয়ে কম বয়সী পুরুষ সঙ্গীর সান্নিধ্যে আসায় নারীদের মধ্যে নিজেদের আরও তরুণ ভাবার একধরনের প্রবণতা তৈরি হয়েছে। কম বয়সী তরুণেরা নিজেদের সম্পর্কে সচেতন, নিজের স্বাস্থ্য ও রুচির বিষয়েও সজাগ। নতুন নতুন অভিজ্ঞতা কম বয়সীদের পৃথিবীকে নতুন করে জানার সুযোগ দেয়। এসব কারণে সম্পর্কে জড়ানোর সময় নারীরা কম বয়সীদের গুরুত্ব দেন। নারীরা এখন আগের চেয়ে বেশি অর্থনৈতিক ও সামাজিক স্বাধীনতার জন্য ছুটছেন। পারিবারিক বা সামাজিক নিরাপত্তার জন্য বয়স্ক সঙ্গী খোঁজার প্রথাগত নিয়মে তাঁরা আর বিশ্বাসী নন। ব্যক্তিগত পরিপূর্ণতা, মানসিক সংযোগ ও আকর্ষণকে অগ্রাধিকার দিতেই নিজের পছন্দের সঙ্গীকে বেছে নিচ্ছেন।

বয়স কোনো বিষয় না

বয়সের ব্যবধান সম্পর্কে এখন নারীদের সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি বেশ নমনীয়। তরুণদের তুলনায় নারীরা মধ্যবয়সীদের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ানোর আগে অনেক চিন্তা করছেন। মধ্যবয়সী বা সমবয়সীদের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ানোর ক্ষেত্রে সামাজিক রীতিনীতি বা লোকদেখানোর আচারকেই বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয় বলে মনে করেন নারীরা। সম্পর্ক নিয়ে পুরোনো সামাজিক নিয়মগুলোকে চ্যালেঞ্জ করতে চান তাঁরা।

Header Ad
Header Ad

জুলাই-মার্চ মাসে ৩০.২৫ বিলিয়ন ডলার পোশাক রফতানি করেছে বাংলাদেশ

ছবি: সংগৃহীত

চলতি অর্থবছরের (২৪-২৫) জুলাই-মার্চ মাসে তৈরি পোশাক রফতানি বেড়েছে ১০ দশমিক ৮৪ শতাংশ। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই-মার্চ মাসের দেশভিত্তিক রফতানি তথ্য থেকে বিষয়টি জানা গেছে।

জানা গেছে, এই সময়ে ৩০ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলার পোশাক রফতানি করেছে বাংলাদেশ। যা পোশাক খাতের স্থিতিস্থাপকতা এবং সম্ভাবনা তুলে ধরে বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।

তথ্য থেকে জানা যায়, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এখনো বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বাজার। বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের মোট রপ্তানির ৪৯ দশমিক ৮২ শতাংশই রফতানি হয় ইউরোপীয় ইউনিয়নে। যার মোট বাজার মূল্য ১৫ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার।

এরপরেই রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজার। এ বাজারে মোট রফতানি হয়েছে ৫ দশমিক ৭৪ বিলিয়ন ডলারের তৈরি পোশাক। যা মোট রফতানির ১৮ দশমিক ৯৭ শতাংশ। যেখানে কানাডার মোট বাজার অংশ ছিল ৯৬৩ দশমিক ৮৫ মিলিয়ন ডলার। যার বাজার অংশ ৩ দশমিক ১৯ শতাংশ। যুক্তরাজ্যের বাজারও গুরুত্বপূর্ণ ছিল, যার রফতানি মূল্য ৩ দশমিক ৩৬ বিলিয়ন ডলার। যা বাংলাদেশের মোট তৈরি পোশাক রফতানির ১১ দশমিক ১০ শতাংশ ।

প্রবৃদ্ধির দিক থেকে ইইউতে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রফতানি বছরের পর বছর ধরে উল্লেখযোগ্যভাবে ১১ দশমিক ৩১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। উল্লেখিত সময়ে যেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ১৭ দশমিক ২৩ শতাংশ এবং কানাডা ১৫ দশমিক ৬৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে, যুক্তরাজ্যে তৈরি পোশাক রফতানি ৪ দশমিক ১৪ শতাংশ এর একটি সামান্য প্রবৃদ্ধির হার প্রদর্শন করেছে।

ইইউর মধ্যে, জার্মানি একটি গুরুত্বপূর্ণ বাজার হিসেবে দাঁড়িয়েছে, যেখানে বাংলাদেশের রফতানির পরিমাণ ৩ দশমিক ৮০ বিলিয়ন ডলার, স্পেন ২ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলার, ফ্রান্স ১ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলার, ইতালি ১ দশমিক ১৭ বিলিয়ন ডলার, পোল্যান্ড ১ দশমিক ২৬ বিলিয়ন ডলার এবং নেদারল্যান্ডস ১ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলার।

প্রবৃদ্ধির হার বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য ছিল - জার্মানি (১০ দশমিক ৭২ শতাংশ), ফ্রান্স (১০ দশমিক ৭৫ শতাংশ), নেদারল্যান্ডস (২৩ দশমিক ১৫ শতাংশ), পোল্যান্ড (১০ দশমিক ৩২ শতাংশ), ডেনমার্ক (১২ দশমিক ৮০ শতাংশ) এবং সুইডেন (১৯ দশমিক ৯৬ শতাংশ) ।

বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতেও অপ্রচলিত বাজারে প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে, সামগ্রিকভাবে ৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। যেখানে মোট রফতানি ৫ দশমিক ১২ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, যা বাংলাদেশের মোট রফতানির ১৬ দশমিক ৯৩ শতাংশ দখল করেছে।

এই বাজারগুলোর মধ্যে, জাপান মোট ৯৬০ দশমিক ৪৫ মিলিয়ন ডলার আমদানি করে শীর্ষে রয়েছে, তারপরে অস্ট্রেলিয়া ৬৫৩ দশমিক ৬৪ মিলিয়ন ডলার এবং ভারত ৫৩৫ দশমিক ১৫ মিলিয়ন ডলার আমদানি করে।

তুরস্ক এবং মেক্সিকোর মতো দেশগুলোতেও উল্লেখযোগ্য রফতানি হয়েছে। তুরস্কে ৩৫৭ দশমিক ২২ মিলিয়ন ডলার এবং মেক্সিকোতে ২৫১ দশমিক ২২ মিলিয়ন ডলার, যা প্রশংসনীয়। উল্লেখিত সময়ে ভারতে ২০ দশমিক ৪৫ শতাংশ, জাপান ১০ দশমিক ০৬ শতাংশ, মেক্সিকো ২৩ দশমিক ৪৪ শতাংশ এবং তুরস্কের ৩২ দশমিক ৫৪ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

রিপোর্টে দেখা গেছে, এই সময়কালে জাপান, অস্ট্রেলিয়া, ভারত, তুরস্ক এবং মেক্সিকোতে প্রবৃদ্ধি ইতিবাচক থাকলেও রাশিয়া, কোরিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং মালয়েশিয়ায় রফতানি হ্রাস পেয়েছে।

সংযুক্ত আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া এবং কোরিয়ায় নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি এই বাজারগুলোতে আরও গুরুত্বসহকারে রফতানি বাজার দেখা দরকার।

নিটওয়্যার খাত মোট ১১ দশমিক ২২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি দেখিয়েছে। ওভেন সেক্টরেও ১০ দশমিক ৪০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে, যুক্তরাজ্যে প্রবৃদ্ধি ধীর হলেও অপ্রচলিত বাজারে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পয়েছে।

রফতানির চলমান প্রবৃদ্ধি উল্লেখযোগ্যভাবে ইইউ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপর নির্ভরশীল। যা বাংলাদেশের প্রধান বাজার হিসেবে অব্যাহত রয়েছে। যা এই ক্ষেত্রগুলির মধ্যে আরও সম্ভাবনার ইঙ্গিত দেয়।

বিজিএমইএ’র সাবেক পরিচালক, বাংলাদেশ অ্যাপারেল এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং ডেনিম এক্সপার্ট লিমিটেডের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, ‘এটি আমাদের মোট রপ্তানি প্রবৃদ্ধিতে প্রধান ঐতিহ্যবাহী বাজারের তাৎপর্য প্রদর্শন করে।’ তিনি আরও বলেন, অপ্রচলিত বাজারে মাঝারি প্রবৃদ্ধি এই বিভাগে আরও গবেষণা এবং মনোযোগের গুরুত্বকে তুলে ধরে, কারণ এর যথেষ্ট প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে, যা ঐতিহ্যবাহী বাজারের ওপর নির্ভরতা ভারসাম্য বজায় রাখতেও সাহায্য করবে।

রুবেল বলেন, স্থায়ী বৈশ্বিক বাণিজ্য উত্তেজনা ক্রমাগত বৈশ্বিক পরিবেশকে পুনর্গঠন করছে। এমন সুযোগ তৈরি করছে যা বাংলাদেশ সুবিধা নিতে পারে।

Header Ad
Header Ad

মুন্সীগঞ্জে মাইক্রোবাসের সঙ্গে ধাক্কা

সংঘর্ষে উড়ে গেছে বাসের ছাদ, তবুও ১০ কিলোমিটার চালিয়ে ৬০ যাত্রীকে বাঁচালেন চালক

ছবি: সংগৃহীত

মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে মাইক্রোবাসের সঙ্গে ধাক্কা লাগার পর কাভার্ডভ্যান ও একটি কন্টেইনারের সঙ্গে সংঘর্ষে উড়ে গেছে বরিশাল এক্সপ্রেস নামের যাত্রীবাহী একটি বাসের ছাদ। পরপর তিন দফা দুর্ঘটনায় পড়ে আহত হন বাসের অন্তত ২০ যাত্রী।

তবু বাস না থামিয়ে ছাদবিহীন গাড়িটি ১০ কিলোমিটার পথ চালিয়ে নিয়ে যান চালক। পরে জনরোষে গাড়ি থামাতে বাধ্য হন।

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের শ্রীনগরের সমষপুরে এ দুর্ঘটনা ঘটে। বাসটিতে ৬০ যাত্রী ছিলেন।

বাসের যাত্রীরা জানান, ঢাকা থেকে বরিশাল এক্সপ্রেস লিমিটেডের বাসটি দ্রুতগতিতে চালাচ্ছিলেন চালক। রাত সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের শ্রীনগরের কামারখোলা এলাকায় পৌঁছেলে একটি কাভার্ডভ্যানের সঙ্গে ধাক্কা লাগে বাসটির। এতে বাসটির সামনের অংশ দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এ সময় চালক বাসটি না থামিয়ে আরও বেপরোয়া গতিতে চালাতে থাকে। সমষপুর এলাকায় পৌঁছে অপর একটি প্রাইভেটকারকে পেছন থেকে ধাক্কা দিলে বাসটির ছাদ বডি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে রাস্তায় পড়ে যায়। যাত্রীরা চালককে থামাতে অনুরোধ করলেও সে তা উপেক্ষা করে।

যাত্রীরা বলেন, চালক দুর্ঘটনাস্থলের অদূরে হাইওয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর গাড়ি দেখে ছাদবিহীন চলন্ত বাস চালিয়ে ১০ কিলোমিটার দূরের পদ্মা সেতু উত্তর থানার লৌহজংয়ের কুমারভোগ এলাকায় নিয়ে আসে। এ সময় আহত যাত্রীদের ‘বাঁচাও বাঁচাও’ চিৎকার শুনে বাসটি আটক করে জনতা।

পদ্মা সেতু উত্তর থানার ওসি মো. জাকির হোসেন জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় থানা, হাইওয়ে পুলিশ ও শ্রীনগর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। আহত যাত্রীদের উদ্ধার করে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এর মধ্যে গুরুতর আহত শাহিন নামের এক যাত্রীকে শ্রীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

চালক ও হেলপার বাস রেখে পালিয়েছেন বলেও জানান তিনি।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

নারীরা কেন বয়সে ছোট পুরুষের সঙ্গে প্রেমে জড়াচ্ছেন?
জুলাই-মার্চ মাসে ৩০.২৫ বিলিয়ন ডলার পোশাক রফতানি করেছে বাংলাদেশ
সংঘর্ষে উড়ে গেছে বাসের ছাদ, তবুও ১০ কিলোমিটার চালিয়ে ৬০ যাত্রীকে বাঁচালেন চালক
কোলের সন্তান বিক্রি করে অলংকার, মোবাইল কিনলেন মা
চুয়াডাঙ্গায় বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে দু’জন নিহত
ইয়েমেনের তেল বন্দরে মার্কিন বিমান হামলায় নিহত ৩৮
হবিগঞ্জে ট্রাক-পিকআপের মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত ৪
সৌদি আরব-মরক্কো থেকে ৪৬৬ কোটি টাকার সার কিনবে সরকার
গাইবান্ধায় মাদক মামলায় ৩ যুবকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের আহ্বান জানালেন প্রধান উপদেষ্টা
তোপের মুখে ওয়াক্‌ফ আইন স্থগিত করল ভারতের সুপ্রিম কোর্ট
নিজেকে বরিশাল সিটির মেয়র ঘোষণার দাবিতে মামলা করলেন ফয়জুল করীম
ভারতের সংখ্যালঘু মুসলিমদের ‘পূর্ণ নিরাপত্তা’ নিশ্চিতের আহ্বান বাংলাদেশের
টাঙ্গাইলে প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে কেন্দ্র সচিব ও পরীক্ষার্থীসহ আটক ৬
৭১ এর গণহত‍্যার জন‍্য ক্ষমা ও সম্পদ ফেরত দেয়া নিয়ে আলোচনায় সম্মত পাকিস্তান
এবার স্ত্রী রিয়া মনিকে তালাকের ঘোষণা দিলেন হিরো আলম
সাবেক এমপি বাহারের জমি-বাড়ি জব্দ, ২৯টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ
বাংলাদেশের সঙ্গে কোনো ধরণের বাণিজ্যযুদ্ধে জড়াতে চায় না ভারত
বিজ্ঞানীদের সফলতা: ইমপ্লান্ট নয়, নতুন করে গজাবে ক্ষয়ে যাওয়া দাঁত!
নওগাঁয় বাসায় ঢুকে তরুণকে কুপিয়ে জখমের ঘটনায় ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা