শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪ | ১১ পৌষ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

পঞ্চাশবর্ষ উত্তর বাংলাদেশ

আজ সর্বজনবিদিত একটি ঐতিহাসিক ঘটনা বিশ্ববাসী অত্যন্ত সম্ভ্রম ও শ্রদ্ধার সাথে মেনে নিয়েছে। বাংলাদেশের উদ্ভব এবং বিশ্ব মানচিত্রে স্বাধীন ও সার্বভৌম জাতি-রাষ্ট্র হিসেবে উৎকীর্ণ হওয়াটা বিংশ শতাব্দীর একটি অত্যাশ্চর্য ঘটনা হিসেবে আজ সর্বজনবিদিত। বাংলাদেশের মত ঘন বসতিপূর্ণ এবং আয়তনের দিক দিয়ে ছোট একটি দেশ সমগ্র বিশ্বের বিস্ময় হয়ে বিশ্ব মানচিত্রে স্থান করে নিয়েছে। দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে ভারত ছেড়ে বিলেতি শাসকেরা চলে যাবার পূর্বে কেবল মাত্র ধর্মের ভিত্তিতে আমাদেরকে জুড়ে দেয়া হয়েছিল হাজার মাইল দূরে অবস্থিত ভারত উপমহাদেশের পাকিস্তানের সাথে। আমরা হয়ে গেলাম পূর্ব পাকিস্তানের বাসিন্দা। আমাদের জীবনে নেমে এসেছিলে তখন ঘোর অনামিশা। যার প্রত্যক্ষ স্বাক্ষী হয়ে আছে আমাদের মত জীবন্ত বর্ষীয়ানেরা।

এই দাসত্ব শৃঙ্খল আফ্রিকার কালো মানুষদের উপর নেমে আসা উপনিবেশিক ও সাম্রাজ্যবাদী প্রভুদের শৃঙ্খলের চেয়েও কঠিন ছিল। আমাদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ শুরু হলো। ভাষার অধিকার থেকে শুরু জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আমরা আমাদের ন্যায্য অধিকার হারালাম। এক কথায়, আমরা পশ্চিম পাকিস্তানী প্রভুদের দাসে পরিণত হলাম; শিক্ষা ও পেশায় সকল ক্ষেত্রে আমরা বঞ্চিত হলাম। ১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দ; এক দীর্ঘ ২৪- বৎসর আমাদের দেহ ও হৃদয়ের রক্তক্ষরণের পরেও আমরা আশা ছাড়িনি। আমরা আমাদের বাঙালীত্ব অর্জনের সংগ্রাম চালিয়ে গেছি। আমাদের জীবন সংগ্রামের অগ্রভাবে এসে দাঁড়ালেন বাংলাদেশের অনেক ত্যাগী পরুষেরা এবং তাঁদের অগ্রভাগে এসে বিজয় পতাকা হাতে তুলে নিলেন আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সম্পূর্ণ বাংলার মাটি থেকে উৎসারিত, বাংলার মাটিতে শিকড় প্রোথিত মানুষটিই আমাদের ভয়ঙ্কর কালো গুহার মধ্য দিয়ে আমাদের সবাইকে নিয়ে পথচলা শুরু করলেন। ১৯৫২ সালে আমরা রাষ্ট্র ভাষা উর্দুর পাশাপাশি বাংলা ভাষার অধিকার ছিনিয়ে আনলাম পাকিস্তানী শাসকদের বজ্র-নিষ্ঠুর মুঠো থেকে। সেই সংগ্রামেও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভূমিকা ছিল অনন্য। তারপর একের পর এক আমরা আমাদের জাতীয় জীবনের ভয়ঙ্কর ও জটিল গ্রন্থির পার হয়ে, আমরা 'নব প্রভাতের শিখর চূড়ায়' এসে দাঁড়ালাম। ১৯৭১ সালের ২৬-মার্চ বাংলাদেশ পৃথিবীর মানচিত্রে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম জাতি-রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হল।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭- মার্চের বক্তৃতা মানব ইতিহাসে একটি অবিস্মরণীয় ভাষণ হিসেবে স্বীকৃতি পেল। এই বক্তৃতা ছিল দেশ পরিচালনার ব্যবস্থা-পত্র এবং যুগপৎ স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তি সংগ্রামের সর্বকালের এবং বিশ্বের সর্বজন গ্রাহ্য সেরা বক্তৃতা। গণ-নায়কদের কণ্ঠে উচ্চারিত বিশ্বের সকল মুক্তি সংগ্রামের নায়কদের মধ্যে আমাদের জাতির পিতার বক্তৃতাই বিশ্বের সেরা স্বাধীনতা ও মুক্তি অর্জনের বক্তৃতা হিসেবে মানব ইতিহাসে উৎকীর্ণ হয়ে থাকবে। পাশাপাশি আমি জাতীয় সকল নেতাদের অবদানের কথা, মুক্তিযুদ্ধে ত্রিশ লক্ষ মানুষের জীবন উৎসর্গ এবং দুই লক্ষ মা-বোনদের সম্ভ্রম হানির রক্তাক্ত ইতিহাসের প্রতি অবনত চিত্তে দাঁড়িয়ে বলতে চাই যে, বাংলাদেশ ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সমার্থক। তিনিই আলোকবর্তিকা হাতে আমাদের তথা বাঙলীদের মুক্তিদাতা হিসেবে ইতিহাসে চিরঞ্জীব হয়ে থাকবেন।
২৬ মার্চ ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীরা "অপারেশন সার্চলাইট" নাম এক বিধ্বংসী সেনা অভিযান চালিয়ে দেশের অগণিত মানুষকে নিধন ও নির্যাতন করে এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে তাঁর ধানমন্ডি ৩২ নম্বর বাড়ী থেকে বন্দী করে পশ্চিম পাকিস্তনের কারাগারে আবদ্ধ করে তাঁর উপর নানাভাবে মানসিক নির্যাতন চালানো হয়েছিল। কারাগারের পাশে তাঁর কবরও খোঁড়া হয়। অকুতোভয় জাতির পিতার বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, আমি মুসলমান, আমি বাঙালী এবং আমি মানুষ, আমি একবারই মরব।

১৯৭২ সালের জানুয়ারীতে পাকিস্তানী শাসককুল আন্তর্জাতিক চাপের মুখে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রাহমানকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছিল। উনি মুক্ত হয়ে সংক্ষিপ্ত সফর শেষে বিলেত এবং ভারত হয়ে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন। উনি পুরোনো তেজগাঁও বিমানবন্দর অবতরণ করে তাঁর প্রিয় সহকর্মী তাজউদ্দীন আহমেদ সহ অন্যান্য নেতাদের সাথে মিলিত হন এবং কান্নায় ভেঙে পড়েন এবং মাথা তুলে তাঁর প্রিয় কবি রবীন্দ্রনাথের 'দুই বিঘা জমি' কবিতা থেকে আবৃত্তি করলেন -"নমো নমো মম, সুন্দরী মম জননী বঙ্গভূমি। গঙ্গার তীর, স্নিগ্ধ সমীর জীবন জুড়ালে তুমি”। বঙ্গবন্ধু বিলেত ও ভারত হয়ে নিজের প্রাণ-প্রিয় স্বাধীন সার্বভৌম দেশের মাটিতে পা দেবার আগেই উনি রবীন্দ্রনাথের গান --"আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি-" কে আমাদের জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে চূড়ান্ত করেছিলেন। পুরোনো তেজগাঁও বিমানবন্দর নেমেই উনি নিজ গৃহে না গিয়ে দেশের মানুষদের সাথে মিলিত হবার জন্যে সেদিনের রেসকোর্সে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে) ফিরে গেলেন। নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পরে ত্রিশ লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে এবং প্রায় দুই লক্ষ মা বোনের সম্ভ্রম বিসর্জনের বিনিময়ে আমাদের দেশের স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছিল। আমি আমাদের আলোর দিশারী বঙ্গবন্ধু, তাঁর সহকর্মী ও তাঁর স্বজন, জাতীয় নেতৃবৃন্দ এবং সকল বীর মুক্তিযোদ্ধা সহ-আমাদের সাহায্যকারী দেশ, ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধীর ভূমিকাকে স্মরণ করে আমাদের স্বাধীনতা অর্জনের অকল্পনীয় হিরণ্ময় ক্ষণকে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি।

দেশে ফিরে এসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পার্লামেন্টারী প্রথায় স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করলেন। তাঁর নির্দেশে নতুন করে স্বাধীন বাংলাদেশের গঠনতন্ত্র প্রস্তুত করা হলো যার প্রধান স্তম্ভগুলো ছিল জাতীয়তাবাদ, অসম্প্রদায়িকতা, গঠনতন্ত্র এবং সমাজতন্ত্র। উনি পাকিস্তানীদের পরিত্যক্ত একটি শ্মশান ভূমিকে দেহ-প্রাণ ঢেলে দিয়ে দেশ গড়ার কাজে নেমে পড়লেন এবং যুদ্ধ বিধ্বস্ত ভঙ্গুর দেশকে নব চেতনায় উদ্ভুদ্ধ করে খুব কম সময়ের মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য সাফল্য অর্জন করলেন। কিন্তু বাঙালীর ভাগ্যে সুখ চিরজীবি হল না। আবার শকুন পড়ল এই বাংলায়। সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালী বঙ্গবন্ধুকে ১৯৭৫ সালের আগষ্ট মাসে তথাকথিত কতিপয় বিপথগামী মিলিটারী অফিসারদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত সামরিক অভ্যুত্থানে সপরিবারে নিহত হতে হয়েছিল। পৃথিবীর ইতিহাসে বাংলাদেশের অভ্যুত্থান যেমন ছিল যুগান্তকারী ঘটনা তেমনি একইভাবে পরিবারের ১৭-জনকে নৃশংসভাবে নিধন করার ইতিহাস বিশ্বে নজীরবিহীন।

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রনায়কের এর আগেও আততায়ীর হাতে নিহত হয়েছেন কিন্তু তা ছিল ব্যক্তির হাতে ব্যক্তির নিধন কিন্তু স্ব-পরিবারে নিষ্ঠুরতম হত্যাযজ্ঞ ইতোপূর্বে পৃথিবীর ইতিহাসে কখনও সংঘটিত হয়নি। বিদেশে অবস্থান করার কারণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দু'ই আদরের কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা বেঁচে গিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ কন্যা, আমাদের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনেক দুঃখ কষ্ট সাধনার মধ্য দিয়ে পিতার হাতের আলোক বর্তিকাটি তুলে নিয়ে বর্তমানে আমাদেরকে উন্নতির মহাসড়কে নিয়ে যাচ্ছেন। উনি রবীন্দ্রনাথের কথায়- ‘অজস্র মৃত্যুজয়ে পার হয়ে আজ নব প্রভাতের চূড়ায়’ দাড়িয়েছেন । বর্তমানে দেশের সকল ক্ষেত্রে অবকাঠামোগত উন্নতি ও সাফল্য ঈর্ষণীয়। আমরা উন্নয়নশীল দেশ থেকে উন্নত দেশে পরিণত হব আজ হতে বিশ বছর সময় কালের মধ্যে। আজ অতিমারীর দুঃসময়েও আমাদের দেশের অগ্রযাত্রা অব্যাহত আছে ।

তারপরেও কথা থেকে যায়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর হত্যার মূল নায়কেরা কে বা কোন চক্র, আমরা আজও তা সঠিকভাবে জানিনা । দেশী ও বিদেশী সেই চক্রটি কি নিশ্চিহ্ন হয়েছে ? আমরা জানি না । তারা কি সুযোগ পেলেই আমাদের বাঙালীত্বকে নিধন করবেনা। আমরা কি সম্পূর্ণ নিষ্কন্টক হতে পেরেছি ? এই প্রশ্ন আজও আমাদেরকে তাড়িত করে। অসা¤প্রদায়িক ও বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সাধারণ কর্মজীবি মানুষদের বাংলাদেশ আজ কি পাকা পোক্ত ভিতের উপর দাঁড়িয়ে আছে ? আমরা যারা সাধারণ নাগরিক, তাদেরকে জাগরণে ও নিদ্রায় আজও এই প্রশ্ন তাড়িত করে।

বঙ্গবন্ধু প্রবর্তিত জাতীয় চার নিতীমালা কি সুস্থ ও অবিকল আছে ? মৌলবাদ কি এদেশ থেকে সম্পূর্ণ দূরীভূত হয়েছে ? আমরা বাংলাদেশের সাধারণ মানুষেরা চাই বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে মানুষে মানুষে কোন বিভেদ থাকবেনা, মৌলবাদ চিরতরে দূরীভূত হবে। বঙ্গবন্ধুর অনেক কষ্টে অর্জিত আমাদের প্রিয় বাংলাদেশে নব্য রাজাকার ও আলবদরদের উত্থান দেখতে চাইনা। দেশী ও বিদেশী শত্রু যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব আজও মানতে পারেনি, তারা কি সমাজ হতে সম্পূর্ণ বিতাড়িত ? আমি জানি আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু-কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা এ সব ব্যাপারে সজাগ আছেন। আমরা বঙ্গবন্ধুর নারকীয় হত্যাযজ্ঞের পরে যে নিষ্ফলা ও নিষ্ঠুর শাসকেরা দেশ পরিচালনা করেছিলেন,তাদের লৌহ আলিঙ্গণে আর আমরা আবদ্ধ হতে চাইনা। সুস্থ গণতন্ত্র চর্চা আমাদের দেশে অব্যাহত থাক। এটাই আমাদের কামনা। আমার বিশ্বাস, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সভ্যতার সংকটে বর্ণিত উচ্চারণ আমাদের জীবনে ধ্রæব হোক যে; একদিন সভ্যতা, সৌহার্দ্দ্য, সম্প্রীতি ও মানবতার সূর্য পূর্ব দিগন্ত থেকেই উদিত হবে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জন্ম-শতবর্ষে এবং স্বাধীনতা অর্জনের পঞ্চাশ বছরের প্রান্ত এই হোক আমাদের প্রত্যাশা।

ইংরেজিতে একটি প্রবাদ বাক্য আছে -টাকা নষ্ট হলে কিছুই নষ্ট হয় না, স্বাস্থ্য নষ্ট হলে কিছু নষ্ট হয় কিন্তু চরিত্র নষ্ট হলে সবই নষ্ট হয়। যে নীতিমালা, প্রত্যয়, সংগ্রাম ও ভালবাসার জোরে বাংলাদেশের জন্ম হয়েছিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে, সমগ্র দেশবাসীকে সজাগ থাকতে হবে তার যেন ব্যত্যয় না ঘটে। লখিন্দরের জতুগৃহ দিয়ে কখন আবার সাপ ঢুকে পড়বে; তার নিশ্চয়তা আছে কি? সেই সাপের বংশধর ও জাতকেরা দেশ থেকে নিশ্চিহ্ন হয়েছে কি? সুতরাং, আমাদের গা-ছেড়ে দেয়ার কোন অবকাশ নেই। সম্প্রতি দুর্গা পূজাকে কেন্দ্র করে সে চক্রান্ত আবার মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে চাইছে। বাংলাদেশের মানুষদেরকে সজাগ থাকার পরামর্শ দিয়ে আমি আমার সামান্য মতামতের ইতি টানছি। জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু। দেশের জয় হোক, কল্যাণ হোক দেশের মানুষের।

আতাউর রহমান: অভিনেতা, নাট্য নির্দেশক, লেখক একুশে পদক ও স্বাধীনতা পুরষ্কার প্রাপ্ত

Header Ad
Header Ad

ইয়েমেনের বিমানবন্দর-বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ইসরায়েলি বিমান হামলা  

ছবি: সংগৃহীত

ইয়েমেনের রাজধানী সানার বিমানবন্দর, সেনাবাহিনীর ঘাঁটি ও অন্য একটি শহরের বিদ্যুৎ কেন্দ্রে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী। সানা ছাড়াও দেশটির বন্দরনগরী হুদাইদাহতেও বিমান হামলা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার ইয়েমেনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হুথিদের ও ইসরায়েলি গণমাধ্যমের খবরে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

বিদ্রোহী গোষ্ঠী হুথি পরিচালিত আল-মাসিরাহ টেলিভিশন চ্যানেলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সানা বিমানবন্দর ও এর পার্শ্ববর্তী আল-দাইলামি সেনা ঘাঁটি এবং হুদাইদাহর একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রকে লক্ষ্যবস্তু করেছে ইহুদিবাদী ইসরায়েল। ইসরায়েলি এই হামলার জবাব দেওয়ার হুমকি দিয়েছে হুথি বিদ্রোহীরা।

ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি বলেছে, রাজধানী সানা ও হুদাইদাহ শহরে হামলার ঘটনাকে ‘‘ইসরায়েলি আগ্রাসন’’ বলে অভিহিত করেছে আল-মাসিরাহ টেলিভিশন। এই হামলার বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি ইসরায়েল।

প্রত্যক্ষদর্শী ও হুথি বিদ্রোহীরা বলেছেন, রাজধানী সানার একটি বিমানবন্দর ও সামরিক ঘাঁটি লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। এছাড়া পশ্চিমাঞ্চলীয় বন্দরনগরী হুদাইদাহর একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রেও হামলা করা হয়েছে।

তবে ইসরায়েলি হামলায় ইয়েমেনে কোনও হতাহত কিংবা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে কি না, তাৎক্ষণিকভাবে তা জানা যায়নি। কয়েকদিন আগে ইসরায়েলি ভূখণ্ডের বিভিন্ন স্থাপনায় ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা। এরপর থেকেই ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী ইয়েমেনে হুথি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে বড় ধরনের অভিযানের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে হুঁশিয়ারি দিয়ে আসছে।

গত বছরের অক্টোবরে শুরু হওয়া গাজা যুদ্ধের প্রথম মাস থেকেই ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে ইসরায়েলে হামলা চালিয়ে আসছে ইরান-সমর্থিত ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা। গত সপ্তাহে হুথিদের চালানো ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলে এক ডজনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। প্রতিশোধ হিসেবে ইসরায়েলও হুথিদের বিরুদ্ধে দফায় দফায় হামলা করছে।

চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বলেছিলেন, হুথিদের বিরুদ্ধে ‘‘কঠোর আঘাত’’ হানার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। এই গোষ্ঠীর শীর্ষ নেতৃত্বকে নির্মুল করা হবে বলে হুমকি দিয়েছেন তিনি।

Header Ad
Header Ad

সুপ্রিম কোর্টসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ

ছবি: সংগৃহীত

 

সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ, প্রধান বিচারপতির বাসভবন, জাজেস কমপ্লেক্স, বিচারপতি ভবন, সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারপতিদের বাসভবন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল, অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়, সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশন ভবন ও তৎসংলগ্ন এলাকায় সার্বিক নিরাপত্তা এবং অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা জোরদারের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ।

বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল ড. আজিজ আহমেদের সই করা একটি সার্কুলারে এ তথ্য জানানো হয়।

সার্কুলারে বলা হয়, উপর্যুক্ত বিষয়ে নির্দেশিত হয়ে জানানো যাচ্ছে যে, প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র বাংলাদেশ সচিবালয়ে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট দেশের বিচার অঙ্গনের সর্বোচ্চ স্থান। বাংলাদেশের মাননীয় প্রধান বিচারপতি মহোদয় এবং সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের মাননীয় বিচারপতি মহোদয়গণ বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টে বিচারকার্য পরিচালনা করে থাকেন। এ ছাড়া দেশের বহুল আলোচিত ও গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন মামলার নথিসহ কয়েক লাখ মামলার নথি অত্র কোর্টে রক্ষিত আছে।

আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা এবং দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে বিচারপ্রার্থী জনগণকে বিচারিকসেবা প্রদান করা এবং বিভিন্ন মামলার নথি সংরক্ষণের নিশ্চয়তা প্রদানের নিমিত্ত বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট কম্পাউন্ড, বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতির বাসভবন, জাজেস কমপ্লেক্স, বিচারপতি ভবন, সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের মাননীয় বিচারপতি মহোদয়গণের বাসভবন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল, অ্যাটর্নি জেনারেরের কার্যালয়, সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশন ভবন ও তৎসংলগ্ন এলাকায় সার্বিক নিরাপত্তা জোরদার করা অতীব জরুরি।

এ অবস্থায় বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট কম্পাউন্ড, বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতির বাসভবন, জাজেস কমপ্লেক্স, বিচারপতি ভবন, সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের মাননীয় বিচারপতি মহোদয়গণের বাসভবন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল, অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়, সু্প্রিম কোর্ট বার এসোসিয়েশন ভবন ও তৎসংলগ্ন এলাকায় সার্বিক নিরাপত্তা জোরদারকরণের নিমিত্ত জরুরি ভিত্তিতে পর্যাপ্তসংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েনপূর্বক সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করাসহ এ বিষয়ে আনুষঙ্গিক কার্য সম্পন্ন করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।

Header Ad
Header Ad

তিব্বতে ‘বিশ্বের বৃহত্তম’ জলবিদ্যুৎ বাঁধ তৈরি করবে চীন  

ছবি: সংগৃহীত

তিব্বতে বিশ্বের বৃহত্তম জলবিদ্যুৎ বাঁধ নির্মাণের অনুমোদন দিয়েছে চীন। তিব্বত মালভূমির পূর্ব পাশে এই প্রকল্প শুরু হতে যাচ্ছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে নিম্নপ্রবাহে ভারত ও বাংলাদেশের লাখ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, ইয়ারলুং জাংপো নদীর নিম্নপ্রবাহে এই বাঁধ তৈরি হবে বলে। চীনের পাওয়ার কনস্ট্রাকশন কর্পোরেশনের ২০২০ সালের হিসাব অনুযায়ী, এ প্রকল্প থেকে বার্ষিক ৩০ হাজার কোটি কিলোওয়াট-ঘণ্টা বিদ্যুৎ উৎপাদিত হবে।

বর্তমানে বিশ্বের বৃহত্তম জলবিদ্যুৎ প্রকল্প চীনের মধ্যাঞ্চলীয় থ্রি গর্জেস বাঁধ। এই প্রকল্পের উৎপাদন ক্ষমতা বার্ষিক ৮ হাজার ৮২০ কিলোওয়াট-ঘণ্টা।

চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ সংস্থা সিনহুয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়, এই প্রকল্পটি চীনের শূন্য কার্বন লক্ষ্য পূরণে বড় ধরনের ভূমিকা রাখবে। আর প্রকৌশল সংশ্লিষ্ট শিল্পগুলোকে উজ্জীবিত করবে এবং তিব্বতে কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র প্রসারিত হবে।

প্রকৌশলগত খরচসহ এই বাঁধ নির্মাণের সার্বিক ব্যয় থ্রি গর্জেস বাঁধ প্রকল্পকে ছাড়িয়ে যেতে পারে। থ্রি গর্জেস বাঁধ প্রকল্পে ব্যয় হয়েছিল ৩ হাজার ৪৮৩ কোটি ডলার। এই প্রকল্পের কারণে বাস্তুচ্যুত ১৪ লাখ মানুষকে পুনর্বাসন করা হয়েছিল। ফলে এই প্রকল্পের মোট ব্যয় বাজেটের চারগুণের বেশি ছিল।

তিব্বতের প্রকল্পের কারণে কত মানুষ বাস্তুচ্যুত হবে আর এটি স্থানীয় আবাসনকে কতটা ক্ষতিগ্রস্ত করবে কর্তৃপক্ষ তার কোনো ইঙ্গিত দেয়নি। তবে চীনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তিব্বতে জলবিদ্যুৎ প্রকল্পগুলো পরিবেশের ওপর বা নিম্নপ্রবাহে পানি সরবরাহের ক্ষেত্রে বড় ধরনের কোনো প্রভাব ফেলবে না।

চীন এমন দাবি করলেও ভারত ও বাংলাদেশ এ বাঁধ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এই প্রকল্পের সম্ভাব্য প্রভাবে স্থানীয় আবাসনের পাশাপাশি নিম্নপ্রবাহের নদীগুলোর পানি প্রবাহ ও গতিপথকেও প্রভাবিত করবে। এতে দুই দেশের লাখ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

ইয়েমেনের বিমানবন্দর-বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ইসরায়েলি বিমান হামলা  
সুপ্রিম কোর্টসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
তিব্বতে ‘বিশ্বের বৃহত্তম’ জলবিদ্যুৎ বাঁধ তৈরি করবে চীন  
ফায়ার ফাইটার নয়ন এর বাড়ীতে শোকের মাতম চলছে
চট্টগ্রামের এক ইঞ্চি মাটিতে হাত দিলে কারও চোখ থাকবে না: ব্যারিস্টার ফুয়াদ  
সেন্টমার্টিন থেকে ফেরার পথে নষ্ট জাহাজ, মাঝপথে আটকা ৭১ যাত্রী
তিতাসের ১৬ হাজার অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন
দর্শনা চেকপোস্টে ভারতীয় মদসহ এক ভুয়া পুলিশ আটক
আগুনে পুড়ল ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, যেখানে অফিস করবেন আসিফ মাহমুদ
অবৈধ বালু ঘাটে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান, পালিয়ে গেল বালুখেকোরা  
নসরুল হামিদের ৯৮ ব্যাংক হিসাবে অস্বাভাবিক লেনদেন: দুদকের মামলা
ত্রিপুরা পল্লীতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় চারজন গ্রেপ্তার
সচিবালয় কিভাবে আওয়ামী মুক্ত করতে হয় সেটা ছাত্র জনতা জানে: হাসনাত আব্দুল্লাহ
অবৈধ বসবাসকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা ৩১ জানুয়ারির পর
সচিবালয়ের অগ্নিকাণ্ড তদন্তে উচ্চ পর্যায়ের নতুন কমিটি
টাঙ্গাইলে ২৭ মামলার আসামিসহ ডাকাতচক্রের ৪ সদস্য গ্রেফতার  
তাবলিগ জামাতের কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে সাদ অনুসারীদের অনুরোধ
দেশের অবস্থা ভালো না, শেখ হাসিনা আবারও আসবে: সোলায়মান সেলিম
রেলের পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক হলেন মোঃ সুবক্তগীন
সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্তের দাবি মির্জা ফখরুলের