শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫ | ৫ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

মুক্তিযুদ্ধ আমাদের কী দিতে পারে

মুক্তিযুদ্ধের সফল সমাপ্তির পাঁচ দশকের পরও যদি এ রকম একটি প্রশ্ন তুলতে দেখি— এ সময়ের তরুণেরা মুক্তিযুদ্ধ থেকে আর কী গ্রহণ করতে পারে? তাহলে বুঝতে হবে এর প্রাসঙ্গিকতা এখন আর স্বতঃসিদ্ধ বলে বিবেচিত নয়, যেন এর যা দেওয়ার, তা অনেক আগেই নেওয়া হয়ে গেছে, এখন এই গৌরবের ইতিহাসটাকে জাদুঘরে রেখে দিলেই চলে। একাত্তর নিয়ে কথা বললে এখনো অনেক তরুণ শোনে, কিন্তু সেই শোনায় তেমন মনোযোগ থাকে না, অথবা থাকলেও অতীতচারী না হওয়ার একটা সিদ্ধান্ত থেকে তারা বলে, অতীত নিয়ে পড়ে না থেকে ভবিষ্যতের কথা ভাবা উচিত।

বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ, এর গত কুড়ি বছরের অর্থনৈতিক উন্নতি চমকপ্রদ। সেজন্যই কি না জানি না, সবাই ব্যস্ত ভবিষ্যতের দিকে চোখ মেলে রাখতে। যদি সত্যি সত্যি তা–ই হতো যে আমরা অতি দ্রুত ভবিষ্যতের রাস্তায় এগোচ্ছি এবং এক একটা বিশাল অর্জনের আর উল্লম্ফনের চিহ্নরেখা অতিক্রম করে যাচ্ছি, তাহলেও একটা কথা ছিল। কিন্তু ভবিষ্যৎবিহারী আমরাই তো সাম্প্রদায়িকতা আর ধর্মীয় উগ্রতার মধ্যযুগে একটা পা রাখতে চিন্তাভাবনায় অনগ্রসর অতীতেই পড়ে থাকতে ব্যগ্র। তাহলে? শুধু মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কথা বলাটাই যদি অতীতচারিতার উদাহরণ হয়ে পরিত্যাজ্য হয়, মনের মধ্যে মধ্যযুগীয় অন্ধকার নিয়ে চলা মানুষেরা কেন তাহলে পরিত্যাজ্য হন না? কেন তাদের দ্রুত বংশবৃদ্ধি ঘটে?

যারা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলেন, তাদের এক বিশাল অংশ এখন পরলোকে; আর ৩০ বছর পর মুক্তিযোদ্ধা বলতে কেউ বেঁচে থাকবেন না। ফলে এই ইতিহাসের প্রত্যক্ষ সাক্ষী বলে কাউকে পাওয়া যাবে না। কিন্তু যোদ্ধারা না থাকলেও যুদ্ধের স্মৃতি থাকে। এমনকি প্রথম বা দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের মতো মহা ধ্বংসযজ্ঞের স্মৃতিও আছে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের মনে। তাহলে মুক্তিযুদ্ধের মতো এক বিশাল সৃষ্টিযুদ্ধের স্মৃতি কেন হাতড়ে হাতড়ে খুঁজতে হবে? কেন তা বাংলাদেশের প্রত্যেক মানুষের মনে খোদাই হয়ে থাকবে না? আফ্রিকায় ১৯৬০–এর দশকে স্বাধীন হওয়া অনেক দেশে রাজনীতি হারিয়ে গেছে, গণতন্ত্র উধাও হয়েছে, কিন্তু স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছেন অথবা দেনদরবার করেছেন, সে রকম মানুষের কথা স্কুলের শিশুরাও জানে।

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান বাতিল করে নির্বাচনে তাকে জয়ী ঘোষণা করে ক্ষমতায় বসানোর দাবি তুলেছেন সাবেক হয়ে যাওয়া এক প্রেসিডেন্ট। অথচ তার দলের মানুষজনই তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছেন, ২৩৩ বছরের পুরোনো সংবিধান মাথায় তুলে রাখতে হবে। বাতিলের দাবি অরাজকতার নামান্তর, একে বরং আমাদের দেশের ৫১ বছরের পুরোনো মুক্তিযুদ্ধকে নিজের মতো করে লিখে ফেললেও কোনো শক্তিশালী দলনেতাকে আমরা প্রশ্নবিদ্ধ করি না, মাথায় তুলে রাখি বরং। আর কোনো শক্তিশালী নেতা সংবিধানকে কাটাছেঁড়া করে এর চরিত্র বদলে ফেললেও তাকে আমরা নায়কের আসনে বসাই।

মুক্তিযুদ্ধ একটা স্বাধীন দেশ দিয়েছে, একটি পতাকা দিয়েছে। এর সঙ্গে আরও দিয়েছে কিছু আদর্শ, কিছু মূল্যবোধ, কিছু শিক্ষা। এর সবই তো সব সময় সব প্রজন্মকে রক্ষা করতে হবে, প্রতিপালন করতে হবে, চর্চা করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধ থেকে আমরা কী নিতে পারি—প্রশ্নটি ৫১ বছর আগে করা হলে যেমন বলা যেত, ধর্ম, বর্ণ, বিত্ত, ক্ষুদ্র-বৃহৎ জাতিসত্তানির্বিশেষে সব মানুষের ঐক্য, মানবিক মূল্যবোধ, অসাম্প্রদায়িকতা, ন্যায্যতা, সব ধর্মের মানুষের ধর্ম পালনের সমান স্বাধীনতা, বৈষম্যহীনতা, সব মানুষের সমানাধিকার—এখনো সেই একই উত্তরই তো দেওয়া হবে। এর কোনোটিই তো পরিত্যাজ্য নয়। তাহলে কেন মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কথা উঠলে অতীতচারিতার প্রসঙ্গটি আসে, কেন তা ভবিষ্যতের পথনির্দেশক বলে অভিনন্দিত হয় না?

এই প্রশ্নের নিষ্পত্তি হওয়াটা জরুরি, তা না হলে এ সময়ে মুক্তিযুদ্ধ আমাদের কী দিতে পারে—এটি একটি রুটিন প্রশ্ন হয়েই থেকে যাবে, জরুরি কোনো জিজ্ঞাসা হয়ে আমাদের সক্রিয়তার মাঝখানে জায়গা করে নেবে না। মোটা দাগে বলা যায়, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে স্বাধীনতার পর কয়েক বছর যে আবেগ, উত্তেজনা, আকাঙ্ক্ষা আর স্বতঃস্ফূর্ততা ছিল, তা অনেকটা হারিয়ে যাওয়ার মূলে আছে রাজনীতি। মুক্তিযুদ্ধকে অনিবার্য করেছে বাঙালির আড়াই দশকের প্রতিবাদী, উপনিবেশবিরোধী, স্বাধিকারকামী ও জনমুখী রাজনীতি। এই রাজনীতির ভিত গড়ে দিয়েছিল গণমানুষের অধিকার আদায়ের ও রক্ষার অঙ্গীকার, অর্থনৈতিক মুক্তির সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য, সংস্কৃতি ও বাঙালির চিরকালের ঐতিহ্যচিন্তায় আস্থা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা আর গণমুখী শিক্ষার দাবি। এই রাজনীতিতে প্রায় সবাই আস্থা রেখেছিলেন।

এরা ছিলেন উদারপন্থী, ওদের বিশ্বাস ছিল সবার অন্তর্ভুক্তিতে। কিন্তু এর পাশাপাশি রাজনীতির আরেকটি ধারা ছিল, যার চরিত্র ছিল অনুদার ও রক্ষণশীল। দুঃখজনক হলেও সত্য, মুক্তিযুদ্ধের বিশাল ঐক্যের আড়ালে সেই বিভাজন কার্যকর ছিল। রক্ষণশীল অংশটি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে, স্বজাতি হত্যায় পাকিস্তানিদের সহায়তা করেছে। যুদ্ধটা আরও বছর তিনেক চললে এরা একটা বড় শক্তি হিসেবে দাঁড়িয়ে যেত।

মুক্তিযুদ্ধের পরও সেই মনোভাব হারিয়ে যায়নি, আড়ালে চলে গিয়েছিল শুধু। এই ৫১ বছরে তারা সংগঠিত হয়েছে, শক্তি সঞ্চয় করেছে, রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করছে। সবচেয়ে দুঃখজনক যা, অসংখ্য তরুণের মন তারা দখল করে নিয়েছে, যারা মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কোনো গর্ববোধ করে না, নিজেদের গৌরবের ইতিহাস যারা বিশ্বাস করে না, এই পক্ষটিতে এখন পেশাজীবী-বুদ্ধিজীবীও আছেন। ওদের বৃদ্ধি ঘটেছে উদারবাদী পক্ষটির নিষ্ক্রিয়তা, আত্মতুষ্টি আর নানান স্ববিরোধিতার জন্য।

এক পক্ষের সক্রিয়তা, অন্য পক্ষের আত্মতৃপ্তির ঘুমে যাওয়ার কারণে মুক্তিযুদ্ধ যেভাবে ইতিহাসে ঠাঁই নিতে যাচ্ছে, তার একটি উদাহরণ শুধু দিই। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বলে যে কথাটি একসময় আমরা বলতাম এবং ধরে নিতাম, এটি কোনো বিমূর্ত চিন্তা নয়, বরং কিছু নির্দিষ্ট ভাবাদর্শের প্রতিফলনে তৈরি উদ্দীপক একটি শক্তি, এখন এক বিতর্কিত শব্দ। একটি পক্ষ এর অতিব্যবহার করে একে একটা অতিশয়োক্তির পর্যায়ে নিয়ে গেল, অন্য পক্ষ একে মশকরার একটা হাতিয়ার হিসেবে নিল।

এখন রক্ষণশীলেরা ‘চেতনাপন্থী’ কথাটিকে একটা গালির মতো করে বলেন। অথচ এটি হওয়ার কথা ছিল এক ইতিবাচক, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে উজ্জীবিত এক ইচ্ছাশক্তি, যা দিয়ে দেশটাকে আমরা সব মানুষের জন্য তৈরি করে দেখতাম, যে দেশে আমাদের প্রত্যাশাগুলো বাস্তবে রূপ নিত। যেন এ দুই দলের মধ্যে ‘চেতনাপন্থী’ আর ‘চেতনাবিরোধী’ বলে চালাচালির গালি হিসেবে চেতনার অবস্থান।

মুক্তিযুদ্ধের পর আমরা এর আদর্শকে ধরে রাখিনি এবং কোনো কোনো সময় এর বিপরীতে হেঁটেছি বলে এই আদর্শকে অস্বীকার করা যায় না। এর চেতনাও তারিখসম্বলিত হয়ে বাতিল হয়ে যায় না। যা দরকার, তা হচ্ছে এদের পুনরুদ্ধার।

এই পুনরুদ্ধারের কাজ কে করবে, এটিই হবে বড় কথা। আমি আশাবাদী বলে বিশ্বাস করি, এটি সম্ভব। এক সময় মুক্তিযুদ্ধ আমাদের পুনরুদ্ধারের প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি জানাবে, আশাবাদী হওয়ার প্রেরণা দেবে। একাত্তরে কোনো কোনো দিন গেছে সবার জীবনেই যে দিনটিতে শুধু বেঁচে থাকাটাই যেন এক অবিশ্বাস্য ঘটনা বলে মনে হয়েছে। সেসব দিনও মুক্তিযুদ্ধ অর্থবহ করে দিয়েছে। এখন যে কঠিন সময় আমরা পার করছি, যে আত্মবিধ্বংসী আয়োজন দেখছি চারদিকে, যে আত্মঘাতী যুদ্ধের হুংকার শুনছি, সেসবও দীর্ঘস্থায়ী হবে না, যদি আমরা মুক্তিযুদ্ধে একবার ফিরে যাই।

অনেকেই হয়তো বলবেন, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আমাদের এ আশাবাদ সময়নির্দিষ্ট, এখন সেটি অচল। কিন্তু আমি এখনো বিশ্বাস করি,এই আশাবাদের ভিত্তি আছে, আর এ ভিত্তিটা কৃষক-শ্রমিক-মেহনতি মানুষ, যারা এর শক্তি জোগান দিয়ে চলেছেন। তারা রাজনীতি করেন না, তাঁরা শুধু একটা সহনীয় বর্তমান এবং সুন্দর আগামী চান। সেজন্য মুক্তিযুদ্ধ আমাদের কী দিতে পারে, এই প্রশ্ন করলে একটা উত্তর হতে পারে, এই পরিশ্রমী মানুষগুলোর সততা ও আশাবাদ।

মুক্তিযুদ্ধ পুরোনো হবে না, জাদুঘরেও যাবে না। এর যা দেওয়ার, তা–ও তারিখনির্দিষ্ট হয়ে গ্রহণযোগ্যতা হারাবে না। মুক্তিযুদ্ধের সময় পক্ষ-বিপক্ষ ছিল, এখনো রাজনৈতিক পক্ষ-বিপক্ষ আছে, কিন্তু বাংলাদেশ যতই এগোবে, মানুষ দেখবে, নিজেদের ইতিহাস সে আস্থা রেখে চললে চলাটা আমাদের সহজ হবে।

এ মুহূর্তে মুক্তিযুদ্ধ থেকে আমরা দেশপ্রেমের প্রয়োজনীয়তার কথাটা নিতে পারি, শহর-গ্রাম, এলিট-দলিত বিভাজনের অসারতার বিষয়টি শিখতে পারি। তরুণদের গড়ার শক্তিতে বিশ্বাস রাখতে পারি। ঐক্য ও উদার মানবিকতার পাঠগুলো নিতে পারি। কিন্তু প্রশ্ন হলো, মুক্তিযুদ্ধ আগেও দিয়েছে, এখনো দেওয়ার জন্য প্রস্তুত, আমরা কি নেওয়ার জন্য প্রস্তুত। নাকি বিভাজনের রাজনীতির চূড়ান্তটা দেখার জন্য আমরা দুই ভাগ হয়ে দুই দিকে বসে আছি? বিভাজনেই কি মুক্তি, নাকি ঐক্যে, যা একাত্তরে আমাদের এক কঠিন যুদ্ধে জয়ী হওয়ার প্রেরণা দিয়েছিল? উত্তরটাও খুব দূরে নেই: উত্তরটা আসে দেশপ্রেমের রাস্তা ধরে। সেটি থাকলে রাস্তাটা আর বন্ধুর থাকে না।

সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম: লেখক ও শিক্ষাবিদ।

এসএন

Header Ad
Header Ad

ব্রাজিলের ভক্তদের ‘বানরের’ সঙ্গে তুলনা, নিষেধাজ্ঞার মুখে আর্জেন্টিনা

ছবি: সংগৃহীত

মনুমেন্টাল স্টেডিয়ামে সেদিন নাকানিচুবানি খেয়েছিল ব্রাজিল। বল দখল, গোলে শট কিংবা আক্রমণ—আর্জেন্টিনার বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচটিতে পেরে ওঠেনি সেলেসাওরা। ৪-১ ব্যবধানের বড় হারও এসেছিল। ওইদিনে ব্রাজিলের ভক্তদের সঙ্গে বিদ্বেষী ও বর্ণবাদমূলক আচরণ করেছিল আর্জেন্টাইনরা। সেই ঘটনার জল হয়ত গড়াতে যাচ্ছে বহুদূর!

মার্চের ২৫ তারিখের ওই ঘটনার জেরে নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে পারে আর্জেন্টিনার ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (এএফএ)। ব্রাজিলিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন (সিবিএফ) ফিফার মাধ্যমে এএফএকে শাস্তি দেওয়ার চেষ্টা করতে পারে। সিবিএফ ইতোমধ্যে প্রমাণসমূহ প্রস্তুত করেছে বলে জানিয়েছে আর্জেন্টাইন সংবাদ মাধ্যম টিওয়াইসি স্পোর্টস।

গণমাধ্যমটি সিবিএফ এর বরাতে জানিয়েছে, সেলেসাওদের একজন ভক্তকে একজন আর্জেন্টাইন দর্শক ‘বানরের’ সঙ্গে তুলনা করেছে। সেই ঘটনাটি ওই দর্শক রেকর্ড করেন। লিওনেল মেসিদের অ্যাসোসিয়েশনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে এটি হতে পারে বড় প্রমাণ। টিওয়াইসি জানিয়েছে, এমন ঘটনার মাঝ দিয়ে গেছে আরও বেশ কিছু ব্রাজিলিয়ান দর্শক।

জুনের প্রথম সপ্তাহে চিলি ও কলম্বিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে নামার আগেই ফিফার পক্ষ থেকে শাস্তি শুনতে পারে আর্জেন্টিনা। বারবার এমন বর্ণবাদী আচরণ হওয়ায় হয়ত ওই দুই ম্যাচে আর্জেন্টিনার দর্শকদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে। টিওয়াইসি জানিয়েছে, কলম্বিয়ার বিপক্ষে ঘরের মাঠের ম্যাচে দর্শকশূন্য রেখেই খেলতে হতে পারে মেসি-লাউতারোদের। যদিও এখনও আনুষ্ঠানিক কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি।

কদিন আগে ফিফার এমন শাস্তির মুখে পড়েছিল চিলি। ম্যাচ দেরিতে শুরু করার কারণে তাদের স্টেডিয়ামে দর্শকদের ৫০ শতাংশ ফাঁকা রাখতে নির্দেশ দিয়েছিল। দর্শকদের উগ্র আচরণের কারণে একই সমস্যায় পড়েছিল ব্রাজিল ও উরুগুয়ে।

তবে, ফিফা আপিল কমিটি শাস্তির মাত্রা ২৫ শতাংশে কমিয়ে এনেছে। একই সঙ্গে তারা জানিয়েছে, এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি হলে মাঠে দর্শকদের উপস্থিতির পরিমাণ আরও কমিয়ে আনা হবে।

Header Ad
Header Ad

নারীরা কেন বয়সে ছোট পুরুষের সঙ্গে প্রেমে জড়াচ্ছেন?

ছবি: সংগৃহীত

সম্পর্ক তৈরির বেলায় বয়স বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। তবে বর্তমান প্রজন্মের অনেকের কাছে বয়স বিশেষ গুরুত্ব বহন করে না। তাই আজকাল নিজের বয়সের চেয়ে কম বয়সের মানুষের সঙ্গে সম্পর্কে জড়াচ্ছেন তরুণ–তরুণীরা।

পুরুষের ক্ষেত্রে এমন সম্পর্ক সমাজে স্বাভাবিক হলেও নারীর ক্ষেত্রে নয়। তবে আজকাল অনেক নারীই সঙ্গী বাছাই করার সময় বয়সের ফারাককে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন না। তাই তাঁরা এখন প্রেমিক বা দাম্পত্যসঙ্গী হিসেবে বেছে নিচ্ছেন কম বয়সীদের। ডেটিং অ্যাপের ট্রেন্ড বলছে, নারীরা পছন্দের ক্ষেত্রে সুন্দর মন, ব্যক্তিগত সুরক্ষা, আত্মবিশ্বাসী সঙ্গীকে খুঁজে নিতে চান। যেকোনো সম্পর্কে ভারসাম্য ও গতিশীলতাকে গুরুত্ব দেন।

ডেটিং ট্রেন্ডে নারীরা

মনোবিদেরা মনে করেন, এখনকার নারীরা নিজেদের সম্পর্ক নিয়ে বেশ সচেতন। যেকোনো বিষয়কে সহজভাবে নিতে পারার মানসিকতা বেড়েছে, বিশেষত অগ্রসর বিশ্বে তাঁরা কোনো বিষয়ে ভীত নন। সম্পর্কে যুক্ত হওয়ার সময় আত্মবিশ্বাস ও আত্মসচেতনতায় গুরুত্ব দেন তাঁরা। ঐতিহ্যগতভাবে পুরুষকে একচেটিয়াভাবে সফল কিংবা শক্তিশালী হিসেবে মেনে নিতে তাঁরা নারাজ। সঙ্গীর প্রতি আনুগত্যের চেয়ে নারীরা নিজের সুখ ও সামগ্রিক মঙ্গলকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। এসব কারণেই অনেক নারী কম বয়সী পুরুষ সঙ্গীর সঙ্গে ডেটিং করছেন। অর্থাৎ ব্যক্তিগত পছন্দকেই গুরুত্ব দিচ্ছেন তাঁরা। কম বয়সী পুরুষ সঙ্গীর কাছ থেকে মানসিক, সামাজিক চাহিদাসহ অন্যান্য প্রয়োজনকে গুরুত্ব দিয়েই সম্পর্কে জড়াচ্ছেন।

নানা কারণে সম্পর্কে জড়ানোর সময় নারীরা কম বয়সীদের গুরুত্ব দেন

নিজের চেয়ে কম বয়সী পুরুষ সঙ্গীর সান্নিধ্যে আসায় নারীদের মধ্যে নিজেদের আরও তরুণ ভাবার একধরনের প্রবণতা তৈরি হয়েছে। কম বয়সী তরুণেরা নিজেদের সম্পর্কে সচেতন, নিজের স্বাস্থ্য ও রুচির বিষয়েও সজাগ। নতুন নতুন অভিজ্ঞতা কম বয়সীদের পৃথিবীকে নতুন করে জানার সুযোগ দেয়। এসব কারণে সম্পর্কে জড়ানোর সময় নারীরা কম বয়সীদের গুরুত্ব দেন। নারীরা এখন আগের চেয়ে বেশি অর্থনৈতিক ও সামাজিক স্বাধীনতার জন্য ছুটছেন। পারিবারিক বা সামাজিক নিরাপত্তার জন্য বয়স্ক সঙ্গী খোঁজার প্রথাগত নিয়মে তাঁরা আর বিশ্বাসী নন। ব্যক্তিগত পরিপূর্ণতা, মানসিক সংযোগ ও আকর্ষণকে অগ্রাধিকার দিতেই নিজের পছন্দের সঙ্গীকে বেছে নিচ্ছেন।

বয়স কোনো বিষয় না

বয়সের ব্যবধান সম্পর্কে এখন নারীদের সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি বেশ নমনীয়। তরুণদের তুলনায় নারীরা মধ্যবয়সীদের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ানোর আগে অনেক চিন্তা করছেন। মধ্যবয়সী বা সমবয়সীদের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ানোর ক্ষেত্রে সামাজিক রীতিনীতি বা লোকদেখানোর আচারকেই বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয় বলে মনে করেন নারীরা। সম্পর্ক নিয়ে পুরোনো সামাজিক নিয়মগুলোকে চ্যালেঞ্জ করতে চান তাঁরা।

Header Ad
Header Ad

জুলাই-মার্চ মাসে ৩০.২৫ বিলিয়ন ডলার পোশাক রফতানি করেছে বাংলাদেশ

ছবি: সংগৃহীত

চলতি অর্থবছরের (২৪-২৫) জুলাই-মার্চ মাসে তৈরি পোশাক রফতানি বেড়েছে ১০ দশমিক ৮৪ শতাংশ। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই-মার্চ মাসের দেশভিত্তিক রফতানি তথ্য থেকে বিষয়টি জানা গেছে।

জানা গেছে, এই সময়ে ৩০ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলার পোশাক রফতানি করেছে বাংলাদেশ। যা পোশাক খাতের স্থিতিস্থাপকতা এবং সম্ভাবনা তুলে ধরে বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।

তথ্য থেকে জানা যায়, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এখনো বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বাজার। বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের মোট রপ্তানির ৪৯ দশমিক ৮২ শতাংশই রফতানি হয় ইউরোপীয় ইউনিয়নে। যার মোট বাজার মূল্য ১৫ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার।

এরপরেই রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজার। এ বাজারে মোট রফতানি হয়েছে ৫ দশমিক ৭৪ বিলিয়ন ডলারের তৈরি পোশাক। যা মোট রফতানির ১৮ দশমিক ৯৭ শতাংশ। যেখানে কানাডার মোট বাজার অংশ ছিল ৯৬৩ দশমিক ৮৫ মিলিয়ন ডলার। যার বাজার অংশ ৩ দশমিক ১৯ শতাংশ। যুক্তরাজ্যের বাজারও গুরুত্বপূর্ণ ছিল, যার রফতানি মূল্য ৩ দশমিক ৩৬ বিলিয়ন ডলার। যা বাংলাদেশের মোট তৈরি পোশাক রফতানির ১১ দশমিক ১০ শতাংশ ।

প্রবৃদ্ধির দিক থেকে ইইউতে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রফতানি বছরের পর বছর ধরে উল্লেখযোগ্যভাবে ১১ দশমিক ৩১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। উল্লেখিত সময়ে যেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ১৭ দশমিক ২৩ শতাংশ এবং কানাডা ১৫ দশমিক ৬৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে, যুক্তরাজ্যে তৈরি পোশাক রফতানি ৪ দশমিক ১৪ শতাংশ এর একটি সামান্য প্রবৃদ্ধির হার প্রদর্শন করেছে।

ইইউর মধ্যে, জার্মানি একটি গুরুত্বপূর্ণ বাজার হিসেবে দাঁড়িয়েছে, যেখানে বাংলাদেশের রফতানির পরিমাণ ৩ দশমিক ৮০ বিলিয়ন ডলার, স্পেন ২ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলার, ফ্রান্স ১ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলার, ইতালি ১ দশমিক ১৭ বিলিয়ন ডলার, পোল্যান্ড ১ দশমিক ২৬ বিলিয়ন ডলার এবং নেদারল্যান্ডস ১ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলার।

প্রবৃদ্ধির হার বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য ছিল - জার্মানি (১০ দশমিক ৭২ শতাংশ), ফ্রান্স (১০ দশমিক ৭৫ শতাংশ), নেদারল্যান্ডস (২৩ দশমিক ১৫ শতাংশ), পোল্যান্ড (১০ দশমিক ৩২ শতাংশ), ডেনমার্ক (১২ দশমিক ৮০ শতাংশ) এবং সুইডেন (১৯ দশমিক ৯৬ শতাংশ) ।

বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতেও অপ্রচলিত বাজারে প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে, সামগ্রিকভাবে ৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। যেখানে মোট রফতানি ৫ দশমিক ১২ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, যা বাংলাদেশের মোট রফতানির ১৬ দশমিক ৯৩ শতাংশ দখল করেছে।

এই বাজারগুলোর মধ্যে, জাপান মোট ৯৬০ দশমিক ৪৫ মিলিয়ন ডলার আমদানি করে শীর্ষে রয়েছে, তারপরে অস্ট্রেলিয়া ৬৫৩ দশমিক ৬৪ মিলিয়ন ডলার এবং ভারত ৫৩৫ দশমিক ১৫ মিলিয়ন ডলার আমদানি করে।

তুরস্ক এবং মেক্সিকোর মতো দেশগুলোতেও উল্লেখযোগ্য রফতানি হয়েছে। তুরস্কে ৩৫৭ দশমিক ২২ মিলিয়ন ডলার এবং মেক্সিকোতে ২৫১ দশমিক ২২ মিলিয়ন ডলার, যা প্রশংসনীয়। উল্লেখিত সময়ে ভারতে ২০ দশমিক ৪৫ শতাংশ, জাপান ১০ দশমিক ০৬ শতাংশ, মেক্সিকো ২৩ দশমিক ৪৪ শতাংশ এবং তুরস্কের ৩২ দশমিক ৫৪ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

রিপোর্টে দেখা গেছে, এই সময়কালে জাপান, অস্ট্রেলিয়া, ভারত, তুরস্ক এবং মেক্সিকোতে প্রবৃদ্ধি ইতিবাচক থাকলেও রাশিয়া, কোরিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং মালয়েশিয়ায় রফতানি হ্রাস পেয়েছে।

সংযুক্ত আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া এবং কোরিয়ায় নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি এই বাজারগুলোতে আরও গুরুত্বসহকারে রফতানি বাজার দেখা দরকার।

নিটওয়্যার খাত মোট ১১ দশমিক ২২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি দেখিয়েছে। ওভেন সেক্টরেও ১০ দশমিক ৪০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে, যুক্তরাজ্যে প্রবৃদ্ধি ধীর হলেও অপ্রচলিত বাজারে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পয়েছে।

রফতানির চলমান প্রবৃদ্ধি উল্লেখযোগ্যভাবে ইইউ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপর নির্ভরশীল। যা বাংলাদেশের প্রধান বাজার হিসেবে অব্যাহত রয়েছে। যা এই ক্ষেত্রগুলির মধ্যে আরও সম্ভাবনার ইঙ্গিত দেয়।

বিজিএমইএ’র সাবেক পরিচালক, বাংলাদেশ অ্যাপারেল এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং ডেনিম এক্সপার্ট লিমিটেডের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, ‘এটি আমাদের মোট রপ্তানি প্রবৃদ্ধিতে প্রধান ঐতিহ্যবাহী বাজারের তাৎপর্য প্রদর্শন করে।’ তিনি আরও বলেন, অপ্রচলিত বাজারে মাঝারি প্রবৃদ্ধি এই বিভাগে আরও গবেষণা এবং মনোযোগের গুরুত্বকে তুলে ধরে, কারণ এর যথেষ্ট প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে, যা ঐতিহ্যবাহী বাজারের ওপর নির্ভরতা ভারসাম্য বজায় রাখতেও সাহায্য করবে।

রুবেল বলেন, স্থায়ী বৈশ্বিক বাণিজ্য উত্তেজনা ক্রমাগত বৈশ্বিক পরিবেশকে পুনর্গঠন করছে। এমন সুযোগ তৈরি করছে যা বাংলাদেশ সুবিধা নিতে পারে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

ব্রাজিলের ভক্তদের ‘বানরের’ সঙ্গে তুলনা, নিষেধাজ্ঞার মুখে আর্জেন্টিনা
নারীরা কেন বয়সে ছোট পুরুষের সঙ্গে প্রেমে জড়াচ্ছেন?
জুলাই-মার্চ মাসে ৩০.২৫ বিলিয়ন ডলার পোশাক রফতানি করেছে বাংলাদেশ
সংঘর্ষে উড়ে গেছে বাসের ছাদ, তবুও ১০ কিলোমিটার চালিয়ে ৬০ যাত্রীকে বাঁচালেন চালক
কোলের সন্তান বিক্রি করে অলংকার, মোবাইল কিনলেন মা
চুয়াডাঙ্গায় বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে দু’জন নিহত
ইয়েমেনের তেল বন্দরে মার্কিন বিমান হামলায় নিহত ৩৮
হবিগঞ্জে ট্রাক-পিকআপের মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত ৪
সৌদি আরব-মরক্কো থেকে ৪৬৬ কোটি টাকার সার কিনবে সরকার
গাইবান্ধায় মাদক মামলায় ৩ যুবকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের আহ্বান জানালেন প্রধান উপদেষ্টা
তোপের মুখে ওয়াক্‌ফ আইন স্থগিত করল ভারতের সুপ্রিম কোর্ট
নিজেকে বরিশাল সিটির মেয়র ঘোষণার দাবিতে মামলা করলেন ফয়জুল করীম
ভারতের সংখ্যালঘু মুসলিমদের ‘পূর্ণ নিরাপত্তা’ নিশ্চিতের আহ্বান বাংলাদেশের
টাঙ্গাইলে প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে কেন্দ্র সচিব ও পরীক্ষার্থীসহ আটক ৬
৭১ এর গণহত‍্যার জন‍্য ক্ষমা ও সম্পদ ফেরত দেয়া নিয়ে আলোচনায় সম্মত পাকিস্তান
এবার স্ত্রী রিয়া মনিকে তালাকের ঘোষণা দিলেন হিরো আলম
সাবেক এমপি বাহারের জমি-বাড়ি জব্দ, ২৯টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ
বাংলাদেশের সঙ্গে কোনো ধরণের বাণিজ্যযুদ্ধে জড়াতে চায় না ভারত
বিজ্ঞানীদের সফলতা: ইমপ্লান্ট নয়, নতুন করে গজাবে ক্ষয়ে যাওয়া দাঁত!