বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫ | ২৭ ফাল্গুন ১৪৩১
Dhaka Prokash

মুক্তিযুদ্ধ আমাদের কী দিতে পারে

মুক্তিযুদ্ধের সফল সমাপ্তির পাঁচ দশকের পরও যদি এ রকম একটি প্রশ্ন তুলতে দেখি— এ সময়ের তরুণেরা মুক্তিযুদ্ধ থেকে আর কী গ্রহণ করতে পারে? তাহলে বুঝতে হবে এর প্রাসঙ্গিকতা এখন আর স্বতঃসিদ্ধ বলে বিবেচিত নয়, যেন এর যা দেওয়ার, তা অনেক আগেই নেওয়া হয়ে গেছে, এখন এই গৌরবের ইতিহাসটাকে জাদুঘরে রেখে দিলেই চলে। একাত্তর নিয়ে কথা বললে এখনো অনেক তরুণ শোনে, কিন্তু সেই শোনায় তেমন মনোযোগ থাকে না, অথবা থাকলেও অতীতচারী না হওয়ার একটা সিদ্ধান্ত থেকে তারা বলে, অতীত নিয়ে পড়ে না থেকে ভবিষ্যতের কথা ভাবা উচিত।

বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ, এর গত কুড়ি বছরের অর্থনৈতিক উন্নতি চমকপ্রদ। সেজন্যই কি না জানি না, সবাই ব্যস্ত ভবিষ্যতের দিকে চোখ মেলে রাখতে। যদি সত্যি সত্যি তা–ই হতো যে আমরা অতি দ্রুত ভবিষ্যতের রাস্তায় এগোচ্ছি এবং এক একটা বিশাল অর্জনের আর উল্লম্ফনের চিহ্নরেখা অতিক্রম করে যাচ্ছি, তাহলেও একটা কথা ছিল। কিন্তু ভবিষ্যৎবিহারী আমরাই তো সাম্প্রদায়িকতা আর ধর্মীয় উগ্রতার মধ্যযুগে একটা পা রাখতে চিন্তাভাবনায় অনগ্রসর অতীতেই পড়ে থাকতে ব্যগ্র। তাহলে? শুধু মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কথা বলাটাই যদি অতীতচারিতার উদাহরণ হয়ে পরিত্যাজ্য হয়, মনের মধ্যে মধ্যযুগীয় অন্ধকার নিয়ে চলা মানুষেরা কেন তাহলে পরিত্যাজ্য হন না? কেন তাদের দ্রুত বংশবৃদ্ধি ঘটে?

যারা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলেন, তাদের এক বিশাল অংশ এখন পরলোকে; আর ৩০ বছর পর মুক্তিযোদ্ধা বলতে কেউ বেঁচে থাকবেন না। ফলে এই ইতিহাসের প্রত্যক্ষ সাক্ষী বলে কাউকে পাওয়া যাবে না। কিন্তু যোদ্ধারা না থাকলেও যুদ্ধের স্মৃতি থাকে। এমনকি প্রথম বা দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের মতো মহা ধ্বংসযজ্ঞের স্মৃতিও আছে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের মনে। তাহলে মুক্তিযুদ্ধের মতো এক বিশাল সৃষ্টিযুদ্ধের স্মৃতি কেন হাতড়ে হাতড়ে খুঁজতে হবে? কেন তা বাংলাদেশের প্রত্যেক মানুষের মনে খোদাই হয়ে থাকবে না? আফ্রিকায় ১৯৬০–এর দশকে স্বাধীন হওয়া অনেক দেশে রাজনীতি হারিয়ে গেছে, গণতন্ত্র উধাও হয়েছে, কিন্তু স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছেন অথবা দেনদরবার করেছেন, সে রকম মানুষের কথা স্কুলের শিশুরাও জানে।

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান বাতিল করে নির্বাচনে তাকে জয়ী ঘোষণা করে ক্ষমতায় বসানোর দাবি তুলেছেন সাবেক হয়ে যাওয়া এক প্রেসিডেন্ট। অথচ তার দলের মানুষজনই তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছেন, ২৩৩ বছরের পুরোনো সংবিধান মাথায় তুলে রাখতে হবে। বাতিলের দাবি অরাজকতার নামান্তর, একে বরং আমাদের দেশের ৫১ বছরের পুরোনো মুক্তিযুদ্ধকে নিজের মতো করে লিখে ফেললেও কোনো শক্তিশালী দলনেতাকে আমরা প্রশ্নবিদ্ধ করি না, মাথায় তুলে রাখি বরং। আর কোনো শক্তিশালী নেতা সংবিধানকে কাটাছেঁড়া করে এর চরিত্র বদলে ফেললেও তাকে আমরা নায়কের আসনে বসাই।

মুক্তিযুদ্ধ একটা স্বাধীন দেশ দিয়েছে, একটি পতাকা দিয়েছে। এর সঙ্গে আরও দিয়েছে কিছু আদর্শ, কিছু মূল্যবোধ, কিছু শিক্ষা। এর সবই তো সব সময় সব প্রজন্মকে রক্ষা করতে হবে, প্রতিপালন করতে হবে, চর্চা করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধ থেকে আমরা কী নিতে পারি—প্রশ্নটি ৫১ বছর আগে করা হলে যেমন বলা যেত, ধর্ম, বর্ণ, বিত্ত, ক্ষুদ্র-বৃহৎ জাতিসত্তানির্বিশেষে সব মানুষের ঐক্য, মানবিক মূল্যবোধ, অসাম্প্রদায়িকতা, ন্যায্যতা, সব ধর্মের মানুষের ধর্ম পালনের সমান স্বাধীনতা, বৈষম্যহীনতা, সব মানুষের সমানাধিকার—এখনো সেই একই উত্তরই তো দেওয়া হবে। এর কোনোটিই তো পরিত্যাজ্য নয়। তাহলে কেন মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কথা উঠলে অতীতচারিতার প্রসঙ্গটি আসে, কেন তা ভবিষ্যতের পথনির্দেশক বলে অভিনন্দিত হয় না?

এই প্রশ্নের নিষ্পত্তি হওয়াটা জরুরি, তা না হলে এ সময়ে মুক্তিযুদ্ধ আমাদের কী দিতে পারে—এটি একটি রুটিন প্রশ্ন হয়েই থেকে যাবে, জরুরি কোনো জিজ্ঞাসা হয়ে আমাদের সক্রিয়তার মাঝখানে জায়গা করে নেবে না। মোটা দাগে বলা যায়, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে স্বাধীনতার পর কয়েক বছর যে আবেগ, উত্তেজনা, আকাঙ্ক্ষা আর স্বতঃস্ফূর্ততা ছিল, তা অনেকটা হারিয়ে যাওয়ার মূলে আছে রাজনীতি। মুক্তিযুদ্ধকে অনিবার্য করেছে বাঙালির আড়াই দশকের প্রতিবাদী, উপনিবেশবিরোধী, স্বাধিকারকামী ও জনমুখী রাজনীতি। এই রাজনীতির ভিত গড়ে দিয়েছিল গণমানুষের অধিকার আদায়ের ও রক্ষার অঙ্গীকার, অর্থনৈতিক মুক্তির সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য, সংস্কৃতি ও বাঙালির চিরকালের ঐতিহ্যচিন্তায় আস্থা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা আর গণমুখী শিক্ষার দাবি। এই রাজনীতিতে প্রায় সবাই আস্থা রেখেছিলেন।

এরা ছিলেন উদারপন্থী, ওদের বিশ্বাস ছিল সবার অন্তর্ভুক্তিতে। কিন্তু এর পাশাপাশি রাজনীতির আরেকটি ধারা ছিল, যার চরিত্র ছিল অনুদার ও রক্ষণশীল। দুঃখজনক হলেও সত্য, মুক্তিযুদ্ধের বিশাল ঐক্যের আড়ালে সেই বিভাজন কার্যকর ছিল। রক্ষণশীল অংশটি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে, স্বজাতি হত্যায় পাকিস্তানিদের সহায়তা করেছে। যুদ্ধটা আরও বছর তিনেক চললে এরা একটা বড় শক্তি হিসেবে দাঁড়িয়ে যেত।

মুক্তিযুদ্ধের পরও সেই মনোভাব হারিয়ে যায়নি, আড়ালে চলে গিয়েছিল শুধু। এই ৫১ বছরে তারা সংগঠিত হয়েছে, শক্তি সঞ্চয় করেছে, রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করছে। সবচেয়ে দুঃখজনক যা, অসংখ্য তরুণের মন তারা দখল করে নিয়েছে, যারা মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কোনো গর্ববোধ করে না, নিজেদের গৌরবের ইতিহাস যারা বিশ্বাস করে না, এই পক্ষটিতে এখন পেশাজীবী-বুদ্ধিজীবীও আছেন। ওদের বৃদ্ধি ঘটেছে উদারবাদী পক্ষটির নিষ্ক্রিয়তা, আত্মতুষ্টি আর নানান স্ববিরোধিতার জন্য।

এক পক্ষের সক্রিয়তা, অন্য পক্ষের আত্মতৃপ্তির ঘুমে যাওয়ার কারণে মুক্তিযুদ্ধ যেভাবে ইতিহাসে ঠাঁই নিতে যাচ্ছে, তার একটি উদাহরণ শুধু দিই। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বলে যে কথাটি একসময় আমরা বলতাম এবং ধরে নিতাম, এটি কোনো বিমূর্ত চিন্তা নয়, বরং কিছু নির্দিষ্ট ভাবাদর্শের প্রতিফলনে তৈরি উদ্দীপক একটি শক্তি, এখন এক বিতর্কিত শব্দ। একটি পক্ষ এর অতিব্যবহার করে একে একটা অতিশয়োক্তির পর্যায়ে নিয়ে গেল, অন্য পক্ষ একে মশকরার একটা হাতিয়ার হিসেবে নিল।

এখন রক্ষণশীলেরা ‘চেতনাপন্থী’ কথাটিকে একটা গালির মতো করে বলেন। অথচ এটি হওয়ার কথা ছিল এক ইতিবাচক, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে উজ্জীবিত এক ইচ্ছাশক্তি, যা দিয়ে দেশটাকে আমরা সব মানুষের জন্য তৈরি করে দেখতাম, যে দেশে আমাদের প্রত্যাশাগুলো বাস্তবে রূপ নিত। যেন এ দুই দলের মধ্যে ‘চেতনাপন্থী’ আর ‘চেতনাবিরোধী’ বলে চালাচালির গালি হিসেবে চেতনার অবস্থান।

মুক্তিযুদ্ধের পর আমরা এর আদর্শকে ধরে রাখিনি এবং কোনো কোনো সময় এর বিপরীতে হেঁটেছি বলে এই আদর্শকে অস্বীকার করা যায় না। এর চেতনাও তারিখসম্বলিত হয়ে বাতিল হয়ে যায় না। যা দরকার, তা হচ্ছে এদের পুনরুদ্ধার।

এই পুনরুদ্ধারের কাজ কে করবে, এটিই হবে বড় কথা। আমি আশাবাদী বলে বিশ্বাস করি, এটি সম্ভব। এক সময় মুক্তিযুদ্ধ আমাদের পুনরুদ্ধারের প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি জানাবে, আশাবাদী হওয়ার প্রেরণা দেবে। একাত্তরে কোনো কোনো দিন গেছে সবার জীবনেই যে দিনটিতে শুধু বেঁচে থাকাটাই যেন এক অবিশ্বাস্য ঘটনা বলে মনে হয়েছে। সেসব দিনও মুক্তিযুদ্ধ অর্থবহ করে দিয়েছে। এখন যে কঠিন সময় আমরা পার করছি, যে আত্মবিধ্বংসী আয়োজন দেখছি চারদিকে, যে আত্মঘাতী যুদ্ধের হুংকার শুনছি, সেসবও দীর্ঘস্থায়ী হবে না, যদি আমরা মুক্তিযুদ্ধে একবার ফিরে যাই।

অনেকেই হয়তো বলবেন, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আমাদের এ আশাবাদ সময়নির্দিষ্ট, এখন সেটি অচল। কিন্তু আমি এখনো বিশ্বাস করি,এই আশাবাদের ভিত্তি আছে, আর এ ভিত্তিটা কৃষক-শ্রমিক-মেহনতি মানুষ, যারা এর শক্তি জোগান দিয়ে চলেছেন। তারা রাজনীতি করেন না, তাঁরা শুধু একটা সহনীয় বর্তমান এবং সুন্দর আগামী চান। সেজন্য মুক্তিযুদ্ধ আমাদের কী দিতে পারে, এই প্রশ্ন করলে একটা উত্তর হতে পারে, এই পরিশ্রমী মানুষগুলোর সততা ও আশাবাদ।

মুক্তিযুদ্ধ পুরোনো হবে না, জাদুঘরেও যাবে না। এর যা দেওয়ার, তা–ও তারিখনির্দিষ্ট হয়ে গ্রহণযোগ্যতা হারাবে না। মুক্তিযুদ্ধের সময় পক্ষ-বিপক্ষ ছিল, এখনো রাজনৈতিক পক্ষ-বিপক্ষ আছে, কিন্তু বাংলাদেশ যতই এগোবে, মানুষ দেখবে, নিজেদের ইতিহাস সে আস্থা রেখে চললে চলাটা আমাদের সহজ হবে।

এ মুহূর্তে মুক্তিযুদ্ধ থেকে আমরা দেশপ্রেমের প্রয়োজনীয়তার কথাটা নিতে পারি, শহর-গ্রাম, এলিট-দলিত বিভাজনের অসারতার বিষয়টি শিখতে পারি। তরুণদের গড়ার শক্তিতে বিশ্বাস রাখতে পারি। ঐক্য ও উদার মানবিকতার পাঠগুলো নিতে পারি। কিন্তু প্রশ্ন হলো, মুক্তিযুদ্ধ আগেও দিয়েছে, এখনো দেওয়ার জন্য প্রস্তুত, আমরা কি নেওয়ার জন্য প্রস্তুত। নাকি বিভাজনের রাজনীতির চূড়ান্তটা দেখার জন্য আমরা দুই ভাগ হয়ে দুই দিকে বসে আছি? বিভাজনেই কি মুক্তি, নাকি ঐক্যে, যা একাত্তরে আমাদের এক কঠিন যুদ্ধে জয়ী হওয়ার প্রেরণা দিয়েছিল? উত্তরটাও খুব দূরে নেই: উত্তরটা আসে দেশপ্রেমের রাস্তা ধরে। সেটি থাকলে রাস্তাটা আর বন্ধুর থাকে না।

সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম: লেখক ও শিক্ষাবিদ।

এসএন

Header Ad
Header Ad

যুক্তরাষ্ট্রে হিন্দু মন্দিরে ভাঙচুর, ভারত ও মোদিকে গালি!

ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ার চিনো হিলসে অবস্থিত শ্রী স্বামীনারায়ণ মন্দিরে এই সপ্তাহে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়েছে। মন্দিরের দেয়ালে গ্রাফিতি করে লেখা হয় ভারত এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে ঘৃণাত্মক বার্তা।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, গত রোববার (৯ মার্চ) সকালে এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেছেন, ‘ক্যালিফোর্নিয়ার চিনো হিলসে হিন্দু মন্দিরে ভাঙচুরের এবং চরম বর্বরতার খবর পেয়েছি। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। নেপথ্যে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত যারা তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি স্থানীয় প্রশাসনকে। এই মন্দির চত্বরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও কঠোর করার আবেদন জানাচ্ছি।’

এক্স হ্যান্ডেলে একটি পোস্টের মাধ্যমে এদিন বিএপিএস পাবলিক অ্যাফেয়ারস জানায়, ‘আরেকটি মন্দিরে অপবিত্রতা ছড়ানো হলো। ক্যালিফোর্নিয়ার চিনো হিলসে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতি এই ঘৃণা প্রদর্শনের চরম বিরোধিতা করছি। চিনো হিলস এবং দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ার মাটিতে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতি এই ঘৃণাকে আমরা কখনোই শিকড়ে গাঁথতে দেব না।’

এতে আরও বলা হয়েছে, ‘আমাদের সাধারণ মানবিকতা, বিশ্বাস নিশ্চিত করবে যাতে শান্তি-করুণা বিরাজ করতে পারে সর্বত্র।’ যদিও এখনও পর্যন্ত চিনো হিলস পুলিশ প্রশাসন এই ঘটনার বিরুদ্ধে কোনো মন্তব্য করেননি।

 

এর আগে, গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে ক্যালিফোর্নিয়ার স্যাক্রেমেন্টোতেও একই ঘটনা ঘটেছিল। মন্দিরের গায়ে ঘৃণাসূচক মন্তব্য লিখে রাখা হয়েছিল। বার্তা লেখা ছিল, ‘হিন্দুজ গো ব্যাক’।

Header Ad
Header Ad

শুক্রবার এক লাখ রোহিঙ্গার সাথে ইফতার করবেন ড. ইউনূস ও গুতেরেস

শুক্রবার এক লাখ রোহিঙ্গার সাথে ইফতারে করবেন ড. ইউনূস ও গুতেরেস। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ সফরে আসছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) বিকেল ৫টায় তিনি বাংলাদেশে পৌঁছাবেন। শুক্রবার (১৪ মার্চ) প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে তিনি কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করবেন এবং সেখানে এক লাখ রোহিঙ্গার সাথে ইফতারে অংশ নেবেন।

বুধবার রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এ তথ্য জানান। তার বক্তব্য অনুযায়ী, জাতিসংঘ মহাসচিব তিন দিনের এই সফরে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক ও কর্মসূচিতে অংশ নেবেন।

১৪ মার্চ সকালে ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ও উচ্চ প্রতিনিধিদের সাথে বৈঠক করবেন গুতেরেস। পরে তিনি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে তার কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করবেন। উভয়ে একসঙ্গে কক্সবাজারের উদ্দেশে রওনা হবেন এবং সন্ধ্যায় ঢাকায় ফিরে আসবেন।

কক্সবাজার সফরের সময় ড. মুহাম্মদ ইউনূস মডেল মসজিদ উদ্বোধন করবেন। এছাড়া রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা বৃদ্ধি এবং রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য মিয়ানমারের রাখাইন অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতার বিষয়টি আলোচনা করবেন গুতেরেস ও ইউনূস।

প্রেস সচিব জানান, রোহিঙ্গা সংকটকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আরও গুরুত্বের সাথে তুলে ধরতে কাজ করছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস। গুতেরেসের সফরের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা বৃদ্ধির আশা প্রকাশ করেন তিনি।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে রোহিঙ্গা সংকটের সময়ও বাংলাদেশ সফর করেছিলেন আন্তোনিও গুতেরেস। এটি তার দ্বিতীয় সফর। সফরের অংশ হিসেবে জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের সাথে বৈঠক ও একটি প্রেস ব্রিফিংয়ের পরিকল্পনা রয়েছে।

Header Ad
Header Ad

কুবি শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ, পরীক্ষা স্থগিত

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (ইনসটে অধ্যাপক কাজী এম. আনিছুল ইসলাম)। ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০২০-২১ সেশনের ৩য় বর্ষ ২য় সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষার উত্তরসহ প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ উঠেছে বিভাগটির সহকারী অধ্যাপক কাজী এম. আনিছুল ইসলামের বিরুদ্ধে। অভিযোগের ভিত্তিতে আগামীকাল (১৩ মার্চ) অনুষ্ঠিতব্য উক্ত শিক্ষাবর্ষের সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে।

বুধবার (১২ মার্চ) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত বিভাগীয় প্রধান মাহমুদুল হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে মঙ্গলবার (১২ মার্চ) রাতে একটি বেনামি মেইল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ, প্রক্টর, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তর এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন সাংবাদিককে মেইলটি করা হয়।

মেইলে উল্লেখ করা হয়, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ১৫ ব্যাচের সেমিস্টার পরীক্ষা চলছে। এই সেমিস্টারের প্রতিটি কোর্সের প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে। এই কোর্স না শুধু প্রতিটি কোর্সের পরীক্ষারই প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে। বিভাগের শিক্ষক কাজী আনিছ এক নারী শিক্ষার্থীকে এগুলো দিয়েছেন। মেইলের সঙ্গে বিগত পরীক্ষার প্রশ্নের উত্তর সম্বলিত কিছু পিডিএফ সংযোজন করা হয়েছে। পাশাপাশি কয়েকটি পিডিএফের মেটাডাটা উল্লেখ করা হয়।

মেটাডেটা বিশ্লেষণে শিক্ষক কতৃক সরবরাহ করা পিডিএফ ফাইল তৈরির ডিভাইস, তারিখ উল্লেখ রয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত শিক্ষক কাজী এম. আনিছুল ইসলাম বলেন, 'এটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও বানোয়াট।'

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান (ভারপ্রাপ্ত) মাহমুদুল হাসান বলেন, 'আমরা উদ্ভুত পরিস্থিতির সৃষ্টি হওয়ায় পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করেছি। তবে এই বিষয়টি যেহেতু বেনামি মেইল থেকে আসা তাই আমরা সরাসরি কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছি না যদি শিক্ষার্থীরা লিখিত অভিযোগ না দেয়।'

২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের পরীক্ষা কমিটির সভাপতি ও প্রভাষক জাকিয়া জাহান মুক্তা বলেন, 'প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ উঠেছে, এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। আমরা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করবো। অভিযোগটি ভিত্তিহীন নাকি সত্য, তা তদন্তের পর নিশ্চিত হওয়া যাবে।'

পরীক্ষা স্থগিতের বিষয়ে তিনি বলেন, 'প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ ওঠার পর আমরা শিক্ষকরা মিলে এই ব্যাচের পরীক্ষা আপাতত স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।'

পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ নূরুল করিম চৌধুরী বলেন, 'প্রশ্নফাঁসের বিষয়ে এ সংক্রান্ত একটি মেইল পেয়েছি। আমরা ঐ বিভাগের চেয়ারম্যানসহ কথা বলেছি। আগে বিভাগের একাডেমিক কমিটি বিষয়টি দেখবে। তারপর এই বিষয়ে তদন্ত করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।'

উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাসুদা কামাল বলেন, 'আমাদের কাছে এখনো লিখিত অভিযোগ আসেনি। বিভাগ বা শিক্ষার্থীরা আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়ে সেই অনুযায়ী আমরা ব্যবস্থা নিব।'

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

যুক্তরাষ্ট্রে হিন্দু মন্দিরে ভাঙচুর, ভারত ও মোদিকে গালি!
শুক্রবার এক লাখ রোহিঙ্গার সাথে ইফতার করবেন ড. ইউনূস ও গুতেরেস
কুবি শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ, পরীক্ষা স্থগিত
লাকিকে গ্রেফতারসহ পাঁচ দাবিতে শাহবাগে ইনকিলাব মঞ্চের মানববন্ধন
দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার ডিক্লারেশন বাতিল
সারাদেশে বৃহস্পতিবার ২ ঘণ্টা বন্ধ থাকবে এনআইডি সেবা
আম্মার ভয়ে প্রেম করিনি, এখন আম্মাই বলে, তুমি খুঁজে আনো
টাঙ্গাইলে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী কিশোরী ধর্ষণ: ১ লাখ টাকায় সালিশের রায়, অভিযুক্ত গ্রেফতার
শেখ হাসিনা-ইমরান এইচ সরকারসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
১৯ দেশের মিশন প্রধানদের সঙ্গে বৈঠকে বসছে নির্বাচন কমিশন
ধর্ষণচেষ্টার কারণে হাবীবুল্লাহ বাহার কলেজের উপাধ্যক্ষকে খুন: পুলিশ
বাম্পার ফলনেও লোকসানের মুখে আলুচাষীরা
জাতীয় নাগরিক পার্টি নির্বাচন বিলম্ব করতে গোলমাল করছে: জয়নুল আবদিন ফারুক
যমুনায় যাওয়ার চেষ্টা, শিক্ষকদের ওপর পুলিশের জলকামান-লাঠিচার্জ
পাঁচ দফা দাবিতে দেশজুড়ে ধর্মঘটে চিকিৎসকরা, রোগীদের ভোগান্তি
৩ দিন পর গুলিতে নিহত যুবকের মরদেহ ফেরত দিলো বিএসএফ
নতুন মামলায় গ্রেপ্তার সালমান-আতিকুল-মহিবুল
আজ ১০ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না রাজধানীর অনেক এলাকায়
এমবিবিএস-বিডিএস ডিগ্রি ছাড়া নামের আগে 'ডাক্তার' লেখা যাবে না: হাইকোর্ট
মাগুরার শিশুটির অবস্থার আবারও অবনতি, দুবার বন্ধ হয়েছে হৃৎস্পন্দন