শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ | ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

মুক্তিযুদ্ধের অস্ত্র থাকুক মানুষের চোখের সামনে

বিজয়ের একেবারে ঊষালগ্নে ১৮ ডিসেম্বর ১৯৭১ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় মুক্তিবাহিনীর সদস্যদের জাতীয় মিলিশিয়া বাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত বাস্তবতা শুধু নয়, বঙ্গবন্ধুর ছয় দফা এবং ছাত্রদের এগারো দফায় ছিল পূর্ব পাকিস্তানের জন্য এমন একটি বাহিনী গড়ে তোলার দাবি। ২৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে ১১ সদস্য বিশিষ্ট জাতীয় মিলিশিয়া বোর্ড গঠন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদকে বোর্ডের সভাপতি ও মওলানা ভাসানী, মণি সিংহ, অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ এবং ৭ জন সংসদ সদস্যকে বোর্ডের সদস্য করা হয়। আওয়ামী লীগ ছাড়াও সে সময়ের অন্যান্য রাজনৈতিক দলের প্রধানদের যুক্ত রাখা হয়েছিল এই জাতীয় মিলিশিয়া বোর্ডে। ১৯৭২ সালের ৬ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মিলিশিয়া বোর্ডের প্রথম সভায় বলা হয়, 'জাতি-ধর্ম-বর্ণ ও দলমত নির্বিশেষে যারা পাকিস্তান দখলদার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন, তাদের সবাইকে জাতীয় মিলিশিয়া বাহিনীতে নেওয়া হবে।'

প্রায় একই সময়ে সেনা সদরে সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান জেনারেল এম এ জি ওসমানীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেক্টর ও ফোর্স কমান্ডারদের এক সভায় মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে জাতীয় মিলিশিয়া বাহিনী গঠনের সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানানো হয়। এবং এই কাজে সহায়তার জন্য উইং কমান্ডার এমকে বাশার, লে. কর্নেল সি আর দত্ত, লে. কর্নেল কাজী নুরুজ্জামান, লে. কর্নেল ডি কে দাশ, লে. কর্নেল এম এ মঞ্জুর এবং মেজর রফিকুল ইসলামকে নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়।

১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশে ফিরে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণের পরপর চূড়ান্তভাবে সরকারি সিদ্ধান্ত হয় জাতীয় মিলিশিয়া বাহিনী গঠন করার। সেই মর্মে ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি এক সরকারি প্রেসনোটে 'জাতীয় মিলিশিয়া বাহিনী' গঠনের আট দফা নীতিমালা প্রকাশ করা হয়। পাঠকদের নজরে আনার জন্য তা নিচে তুলে ধরছি:

১. অবিলম্বে একটি জাতীয় মিলিশিয়া বাহিনী গঠন করা হইবে এবং তালিকাভুক্ত হউক বা না হউক, সমস্ত মুক্তিযোদ্ধাকে ইহার আওতায় আনা হইবে।

২. প্রত্যেক মহকুমায় সেই এলাকার গেরিলাবাহিনীর জন্য শিবির প্রতিষ্ঠা করা হইবে। শিবিরগুলির পরিচালনা ব্যবস্থা এমনিভাবে করা হইবে যেন এ সব যুবককে পুনর্গঠন কাজের উপযোগী করিয়া প্রয়োজনীয় ট্রেনিং দেওয়া সম্ভব হয়।

৩. মহকুমা-ভিত্তিক শিবিরগুলি সেই এলাকার সমস্ত গেরিলাবাহিনীর মিলন-কেন্দ্র হইবে।

৪. ঊর্ধপক্ষে এগারোজন সদস্য লইয়া জাতীয় মিলিশিয়ার জন্য একটি কেন্দ্রীয় বোর্ড গঠন করা হইবে। বোর্ডের সদস্যগণকে সরকার মনোনয়ন দান করিবেন।

৫. প্রত্যেক মহকুমা-শহরে জাতীয় মিলিশিয়ার জন্য মহকুমা বোর্ড থাকিবে। মহকুমা বোর্ডের সদস্য সংখ্যা অনধিক এগারোজন হইবেন।

৬. প্রতিটি শিবিরে অস্ত্রশস্ত্র কার্যোপযোগী অবস্থায় রাখা, গুদামজাত করা ও হিসাবপত্র রাখার জন্য একটি করিয়া অস্ত্রাগার থাকিবে।

৭. ট্রেনিং-এর কার্যসূচি এমনভাবে প্রস্তুত করা হইবে যেন এ সব যুবককে নিম্নে বর্ণিত ভূমিকা পালনের উপযোগী করিয়া তোলা যায়—(ক) যেন তাহারা দেশের দ্বিতীয় রক্ষাব্যুহ হইতে পারেন; (খ) যখনই নির্দিষ্টভাবে প্রয়োজন হইবে তখনই যেন তাহারা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা ও পুনর্বহালে উপযোগী হইতে পারেন; (গ) দেশের পুনর্গঠন কার্যে সরাসরি সহায়তা হয় এমন বিভিন্ন কাজের উপযোগী হন।

৮. অস্বাস্থ্যকর বাসস্থান, অপুষ্টিকর খাদ্য এবং অপর্যাপ্ত বেতন ও ভাতার জন্য মুক্তিযুদ্ধের সময় এই গেরিলাদের এক বিরাট অংশ কষ্ট ভোগ করিয়াছেন। সেজন্যই তাহাদের খাদ্য, বাসস্থান, ও ভাতার প্রতি বিশেষ নজর দেওয়া হইবে।

এখানে থেমে গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতায় স্মরণ করছি হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াইয়ে রত বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার উল আলম শহীদকে, যিনি রক্ষীবাহিনীর উপ-পরিচালক ছিলেন। তার রচিত ‘রক্ষীবাহিনীর সত্য মিথ্যা’ বইটি থেকে উপরের তথ্যগুলো সংগ্রহ করেছি। কায়োমনবাক্যে প্রার্থনা করছি এই লড়াইয়ে যেন তিনি জয়ী হন।

এবারে বিশেষভাবে উল্লেখ করছি যে, যখন জাতীয় মিলিশিয়া বাহিনীতে সব মুক্তিযোদ্ধাদের অন্তর্ভুক্ত করার উপরের সরকারি নীতিমালা ঘোষণা করা হচ্ছে, তখন প্রায় একই সময়ে মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্র সমর্পন করার আহ্বান জানানো হয়। ১৯৭২ সালের ১৭ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু গণবাহিনীকে অস্ত্র জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন। বাসসের সংবাদে বলা হয়েছিল, ‘এক বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রী জানান, এই বীর মুক্তিযোদ্ধাদের পুলিশ বাহিনী ও জাতীয় মিলিশিয়া বাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী দেশ গড়তে গণবাহিনীর প্রচেষ্টা এবং পরবর্তী উদ্যোগগুলো নিয়ে কথা বলেন।’ ২৪ জানুয়ারি, ১৯৭২ তারিখ যে দিন জাতীয় মিলিশিয়া বাহিনীর প্রজ্ঞাপন জারি হয়, সেই একই দিনে মুক্তিবাহিনীর অস্ত্র গ্রহণের জন্য বঙ্গবন্ধু টাঙ্গাইলে যান। সারা দেশে মুক্তিযোদ্ধারা অস্ত্র সমর্পন করেন বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে।

এর পরপর দ্রুতলয়ে কিছু ঘটনা ঘটে যায়। রাষ্ট্র প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে পরাজিত পাকিস্তান রাষ্ট্রের সেই সব বাঙালি আমলাদের বসানো হয়, যারা ১৯৭১-এর ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর হয়ে বিশ্বস্ততার সাথে কাজ করে গেছে। যেমন, পুরো মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বাংলাদেশ সরকারের স্বরাষ্ট্র সচিব পদে অত্যন্ত যোগ্যতার সাথে দায়িত্ব পালন করেছিলেন পুলিশ অফিসার আবদুল খালেক। তাকে না নিয়ে হানাদার বাহিনীর পক্ষে সুচারুভাবে কাজ করে যাওয়া তসলিম আহমদকে বসানো হয় অতি গুরুত্বপূর্ণ স্বরাষ্ট্র সচিব পদে। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়েও একই অবস্থা। মুজিবনগর সরকারের সচিব নুরুল কাদের খানকে বাদ দিয়ে পাকিস্তান সরকারের সিএসপি কর্মকর্তা মো. জামানকে দেওয়া হয় গুরুত্বপূর্ণ সংস্থাপন সচিবের দায়িত্ব। আনোয়ার উল আলম শহীদ তার উপরে উল্লেখিত বইয়ে দুঃখ করে বলছেন, 'এদিকে জাতীয় মিলিশিয়া গঠনের প্রজ্ঞাপন জারি হলেও অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে কোনো অর্থ বরাদ্দ হয় না। … অর্থ মন্ত্রণালয়ে কোনো ফাইল নড়ে না। অর্থ বরাদ্দ না হলে পিলখানায় জমায়েত হওয়া জাতীয় মিলিশিয়া সদস্যদের খাওয়া-দাওয়া করার ব্যবস্থা করা যাচ্ছে না। আবার সুব্যবস্থা না হলে দূর-দুরান্ত থেকে আসা মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠিত করে একটা শৃঙ্খলার মধ্যে নিয়ে আসাও প্রায় অসম্ভব।'

এর মধ্যে ১৬ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭২ তারিখে ঢাকার পিলখানায় বিডিআর ও মিলিশিয়া বাহিনীতে যোগ দেওয়ার জন্য আসা মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে ব্যাপক গোলযোগ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। বঙ্গবন্ধুর হস্তক্ষেপে তা থামে বটে কিন্তু জাতীয় মিলিশিয়া বাহিনী গঠন আর হয় না। স্বাধীনতার ঊষালগ্নে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় যে জাতীয় মিলিশিয়া বাহিনী গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, মাত্র দু'মাসের ব্যবধানে তার করুণ অপমৃত্যু ঘটে। তার জায়গায় ১৯৭২ সালের ৮ মার্চ তারিখে 'জাতীয় রক্ষীবাহিনী অর্ডার ১৯৭২' জারি হয়। ইতোমধ্যে অস্ত্র জমা দেওয়া নিঃস্ব, প্রতারিত মুক্তিযোদ্ধারা গভীর হতাশায় ফিরে গেছে ঠিকানাহীন জীবনে। স্বাধীন বাংলাদেশের একেবারে শুরুতেই পাকিস্তান রাষ্ট্রের প্রেতাত্মারা তাদের প্রথম এবং নির্ধারক জয়টি ছিনিয়ে নেয়।

নরওয়ের অসলো বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণারত আমাদের পুত্র ড. সানজীব হোসেন কয়েকদিন আগে ইউটিউবে সংরক্ষিত বঙ্গবন্ধুর একটি ভাষণের ভিডিও পাঠিয়েছে। ১৯৭৫ সালের ১১ জানুয়ারি তারিখে কুমিল্লা সেনানিবাসে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি প্রাঙ্গণে অফিসার ক্যাডেটদের কুচকাওয়াজে বঙ্গবন্ধু এই অমর ভাষণটি দিয়েছিলেন।

বঙ্গবন্ধু বলছেন নবীন অফিসারদের উদ্দেশে, সিপাহীদের উদ্দেশে। বলছেন, 'তোমরা হচ্ছো আমার পিপলস আর্মি, আমার গণবাহিনীর সদস্য'। পরম মমতায় উপস্থিত সেনা সদস্যদের বোঝাচ্ছেন স্বাধীন বাংলাদেশে অফিসার-সিপাহীদের মধ্যকার সম্পর্ক, সেনাবাহিনীর সাথে জনগণের সম্পর্ক বিষয়ে। বলছেন, 'তোমরা আমার প্রোডাক্টিভ আর্মি'। গভীর বিস্ময়ে স্মরণ করলাম এই কুমিল্লা সেনানিবাসে ১৯৭২ সালের জুলাই, অগাস্ট, সেপ্টেম্বর মাসে এ সব কথাই তো বলেছিলেন তৎকালীন স্টেশন কমান্ডার ও ৪৪তম ব্রিগেডের অধিনায়ক মুক্তিযুদ্ধে এক পা হারানো লে. কর্নেল আবু তাহের বীর উত্তম। শুধু বলা নয়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় জনগণের বাহিনী গড়ে তোলার প্রাথমিক কাজগুলো শুরু করে দিয়েছিলেন কুমিল্লা সেনানিবাসে। আরও মনে পড়ল কীভাবে বঙ্গবন্ধুর কান ভারী করা হয়েছিল তাহেরের 'সন্দেহজনক অপতৎপরতা' নিয়ে। যার কারণে সক্রিয় কমান্ড থেকে তাহেরকে সরিয়ে দেওয়া হয় এবং তার প্রতিবাদে ১৯৭২ সালের ২০ সেপ্টেম্বর তারিখে বঙ্গবন্ধুকে লেখা ঐতিহাসিক পদত্যাগপত্রে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে ধেয়ে আসা বিপদ সম্পর্কে গভীর শঙ্কা ব্যক্ত করে তাহেরের সেনাবাহিনী ছেড়ে দেওয়া।

ভিডিওতে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ দেখে ও শুনে মনে হচ্ছিল আহা এই কথাগুলো যদি তিনি ৭২ সালে বলতেন! এখন তো ১৯৭৫ সাল। সেনাবাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থা, রাষ্ট্রের সকল কেন্দ্রে মুক্তিযুদ্ধবিরোধীরা গেঁড়ে বসেছে। মঞ্চে বঙ্গবন্ধুর পাশে আছে পুরনো ষড়যন্ত্রকারী খোন্দকার মোশতাক। সশস্ত্র বাহিনীর প্রধানরা মঞ্চ আলো করে আছেন– এরা সবাই ষড়যন্ত্রের গুটি চালছেন বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে। আচ্ছা, কেমন হতো যদি স্বাধীন বাংলাদেশে রাষ্ট্র প্রশাসন ও সশস্ত্র বাহিনী গড়ে উঠত মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে; মুক্তিযুদ্ধের গণবাহিনীর সদস্যদের নিরস্ত্র করার বদলে তাদের নিয়ে গড়ে তোলা হতো জাতীয় মিলিশিয়া বাহিনী; যদি কর্নেল তাহেরের মতো মানুষদের যথাযোগ্য স্থানে নিয়োগ করা হতো। পাঠক একবার ভেবে দেখুন, তাহলে কি পাকিস্তানের প্রেতাত্মাদের পক্ষে সম্ভব হতো বাংলাদেশ রাষ্ট্রের ভেতরে থেকেই বাংলাদেশের বিরুদ্ধে, জাতির জনকের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করবার? তাদের কি সাধ্য ছিল সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে, জাতীয় চার নেতা ও কর্নেল তাহেরকে হত্যা করার?

মুক্তিযুদ্ধের অস্ত্রের কথায় আবার ফিরে আসি। এই অস্ত্রগুলো থাকুক বাংলাদেশের মানুষের চোখের সামনে। যেমনটা বলা হয়েছিল জাতীয় মিলিশিয়া বাহিনীর প্রজ্ঞাপনে। প্রতিটি উপজেলায় প্রতিটি থানার সামনে দৃষ্টিনন্দন সুরক্ষিত কাঠামোতে সাজানো থাকুক অস্ত্রগুলো। মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে এখনো যারা বেঁচে আছেন, তাদের এই সান্ত্বনাটুকু থাকুক, যে অস্ত্র তাদের কাছ থেকে নিয়ে নেওয়া হয়েছিল, সেগুলো আবার ফিরে এসেছে তাদের চোখের সামনে। নতুন প্রজন্ম পরম মমতায় চোখ মেলে দেখুক হাজার বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মত গণমানুষের হাতে আসা অস্ত্রগুলো। আর মুক্তিযুদ্ধবিরোধী কীটেরা গর্তের ভেতরেই থাকুক। কারণ মাথা বের করলেই তাদের চোখে পড়বে গ্রাম বাংলার মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে উদ্যত এই সব অস্ত্রের ছবি। মনে পড়বে তাদের পরাজয়ের গ্লানির কথা।

ড. মো. আনোয়ার হোসেন: সাবেক উপাচার্য, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

আরএ/

Header Ad

গাজীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু

ছবি: সংগৃহীত

গাজীপুরের শ্রীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজি বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের উদয়খালী গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

মৃত তিন শিক্ষার্থী হলেন- মোজাম্মেল হোসেন নাঈম (২৪), মোস্তাকিম রহমান মাহিন (২২) ও জোবায়ের আলম সাকিব (২২)।

জানা গেছে, শনিবার সকালে গাজীপুর মহানগরের বোর্ড বাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজির মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের প্রায় ৪৬০ জন শিক্ষার্থী বিআরটিসির ৬টি ডাবল ডেকার বাস ও ৩টি মাইক্রোবাসে করে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের উত্তর পেলাইদ গ্রামের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামীণ আঞ্চলিক সড়ক ধরে রিসোর্টের উদ্দেশ্যে যাওয়ার সময় উত্তর পেলাইদ গ্রামের উদয়খালী বাজারে পৌঁছালে বিআরটিসির ডাবল ডেকার একটি বাস পল্লী বিদ্যুতের তারের স্পর্শে আসে। এ সময় বাসটি বিদ্যুতায়িত হলে কয়েকজন শিক্ষার্থী বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। তাদের উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক জাকিউল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, তিনজনকেই মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে। আহত সংখ্যা এখনও নিশ্চিত হতে পারিনি। আমরা জরুরি বিভাগে যাচ্ছি।

Header Ad

কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া

ছবি: সংগৃহীত

মিল্ক বিউটিখ্যাত দক্ষিনি অভিনেত্রী তামান্না ভাটিয়া নতুন বছরে তার জীবনের একটি বিশেষ অধ্যায়ে পা রাখতে যাচ্ছেন। খলচরিত্র করে আলোড়ন তোলা অভিনেতা বিজয় ভার্মার সঙ্গে তার প্রেমের গুঞ্জন চলছিল অনেক দিন ধরেই। তবে এ নিয়ে কেউই মুখ খোলেননি। এবার তাদের সম্পর্ক নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন তামান্না। এমনকি ২০২৫ সালে সাতপাকে বাঁধা পড়ার সম্ভাবনা আছে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন।

সম্প্রতি ভারতীয় গণমাধ্যমের এক প্রোমোশনাল ইন্টারভিউতে তামান্না তার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে জানান, প্রেমের সম্পর্কের জন্য জীবনে দুবার হৃদয় ভেঙেছে তার। সেই সময়টা তামান্নার জন্য খুবই ভয়াবহ ছিল।

তিনি আরও জানান, তিনি খুব কম বয়সে একজন ছেলের সঙ্গে প্রথম ভালোবাসায় জড়িয়েছিলেন এবং তার দ্বিতীয় সম্পর্কটি ছিল তার অভিনয় ক্যারিয়ারের শিখরে থাকা অবস্থায়। তবে সে সময় তিনি অনুভব করেন যে, সেই ছেলে তার সঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্কের জন্য সঠিক ব্যক্তি নয়।

তবে এত কিছুর পরও বাহুবলিখ্যাত তামান্না প্রেমিকের নাম প্রকাশ করেননি। এর আগে গুঞ্জন ছিল যে, তিনি ভারতীয় অভিনেতা বিজয় ভার্মার সঙ্গে ডেট করছেন। পাপারাজ্জিদের ক্যামেরায় বহুবার ফ্রেমবন্দি হয়েছেন তারা। যদিও নিজেদের এ সম্পর্ক আড়ালে রাখতে বদ্ধপরিকর দুজনই। এখন দেখার অপেক্ষা তামান্না জীবনসঙ্গী হিসেবে কাকে বেছে নেন।

সবশেষ তামান্না ভাটিয়াকে আইটেম গার্ল হিসেবে দেখা যায় অমর কৌশিক পরিচালিত ‘স্ত্রী ২’ সিনেমায়। এ সিনেমায় আরও অভিনয় করেন রাজকুমার রাও, শ্রদ্ধা কাপুর, পঙ্ক ত্রিপাঠিসহ আরও অনেকে।

Header Ad

পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...

ছবি: সংগৃহীত

পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকার বিনিময়ে নয় মাসের শিশু সন্তানকে দত্তক দেন শরীফা খাতুন নামে মানসিক ভারস্যমহীন এক মা। বিষয়টি জানতে পেরে গতকাল শুক্রবার (২২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ওই নবজাতককে উদ্ধার করে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিয়েছেন সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন বিষয়টি জানতে পেরে পুলিশের সহায়তায় ওই শিশুটিকে তার মায়ের কোলে ফেরত দেন।
মানসিক ভারসাম্যহীন নারী শরীফা খাতুন বোদা উপজেলার ময়দানদিঘী ইউনিয়নের জেমজুট মুসলিমবাগ এলাকায় তিন সন্তানকে নিয়ে ভাড়া বাড়িতে থাকেন। তিনি ভিক্ষাবৃত্তি করে সংসার চালান।

প্রতিবেশী ও পরিবারের সদস্যরা জানান, গত এক বছর আগে স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয় শরীফা খাতুনের। এর পর সন্তানদের নিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করে চলত তার পরিবার।

গত মঙ্গলবার নিজের ৯ মাসের কন্যা সন্তানকে পঞ্চগড় পৌরসভার দক্ষিণ তেলিপাড়া এলাকায় একটি হলুদ খেতে রেখে ভিক্ষা করতে যান শরীফা খাতুন। এ সময় শিশুটিকে দেখতে পেয়ে উদ্ধার করে স্থানীয় রুনা আক্তার নামে এক নারী; একইসঙ্গে শরীফাকেও নিজ বাড়িতে নেন তিনি। রুনা নামে ওই নারীর নিজ সন্তান না থাকায় শিশুটিকে দত্তক নিতে চাইলে, ৫০০ টাকার বিনিময়ে রেখে চলে যান শরীফা।

এরপর চার দিন পর অবশেষে পুলিশ প্রশাসনের সহায়তায় নিজ পরিবারের কাছে ফিরেছে শিশুটি। বর্তমানে শিশুটিকে দেখভাল করছেন মানসিক ভারসামহীন শরীফার ১৬ বছরের বড় ছেলে নয়ন।

এ বিষয়ে শরীফার ছেলে নয়ন ইসলাম বলেন, গত চার দিন আগে মা বোনকে নিয়ে হঠাৎ পঞ্চগড়ে যান। পরে একসময় বাড়িতে একাই এসে ঘরে তালা লাগিয়ে বন্দি অবস্থায় থাকতে শুরু করেন। বোন কোথায় তা জানতে চাইলে কোনো কিছুই জানাচ্ছিলেন না।

পরে অনেক কৈশলে বোনের অবস্থান জানতে পারি। এরপর সেই বাড়িতে গিয়ে বোনকে ফেরত চাইলে তারা দিতে অস্বীকার করেন। আরও জানতে পারি মা বোনকে নেবেন না বললে তারা ৫০০ টাকা মাকে খেতে দিয়ে একটা কাগজে স্বাক্ষর করে নেন। শুক্রবার সাংবাদিক ও পুলিশ এসে তদন্ত করে আমার বোনকে আনতে নির্দেশ দিলে মাকে সঙ্গে নিয়ে বোনকে বাড়িতে নিয়ে আসি।

স্থানীয় মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, অনেক আগে থেকে ওই নারীকে দেখছি। তিনি ভিক্ষাবৃত্তি করে পরিবার চালান। তবে কয়েকদিন আগে নিজের সন্তানকে মানুষের কাছে দিয়ে প্রায় পাগল হয়ে বেড়াচ্ছিলেন।

কাজলা নামে স্থানীয় এক নারী বলেন, সকালে শরিফা আমার কাছে এসে আমার পা জড়িয়ে ধরেছেন আর বলেছেন আপু যেভাবেই পারো আমার মেয়েকে এনে দাও।

প্রতিবেশীরা বলেন, স্বামী না থাকায় পরিবারটা চালাতে শরীফা খাতুন ভিক্ষা করতেন। এর মাঝে এমন কাণ্ড ঘটে তিনি পাগল হয়ে গেছেন। তার তিনটা সন্তান। একটা ছেলে ও দুটি মেয়ে। এদের কি হবে আমরা জানি না। তবে সরকারি সহায়তা পেলে তাদের গতি হতো।

এ বিষয়ে পঞ্চগড় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, আগের বিষয়টি আমাদের কেউ জানায়নি। খবর পাওয়ার পর পঞ্চগড় সদর থানার ওসিকে জানানো হয়। বিষয়টি পুলিশের হস্তক্ষেপে সুষ্ঠু সমাধান করে ভারসাম্যহীন নারীর কাছে তার বাচ্চা ফেরত দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও জানান, যেহেতু ওই নারীর বাড়ি বোদা উপজেলায়, সেখানকার ইউএনওকে জানিয়ে সরকারি সহায়তার ব্যবস্থা করা হবে।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

গাজীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু
কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া
পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...
অ্যান্টিগায় প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে টাইগাররা
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন পরীমণির প্রথম স্বামী
বিচারের আগে আ.লীগের মাঠে থাকার সুযোগ নেই: উপদেষ্টা নাহিদ
মাকে হত্যার পর থানায় হাজির ছেলে
৮ ক্রিকেটারসহ ৯ জনকে নিষিদ্ধ করলো বিসিবি
উপদেষ্টাদের যাচ্ছেতাই কর্মকাণ্ড মেনে নেওয়া হবে না: রিজভী
ভিসা কবে উন্মুক্ত করবে সেটা ভারতের নিজস্ব ব্যাপার: হাসান আরিফ
জুরাইন রেলক্রসিং ছাড়লেন রিকশাচালকরা, ৪ ঘণ্টা পর ট্রেন চলাচল শুরু
পাঁচ দেশে যাওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশিদের জন্য সতর্কতা
সাফজয়ী নারী ফুটবলার আইরিনকে নওগাঁয় সংবর্ধনা
বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের স্কলারশিপ দেবে পাকিস্তান
বেনাপোলে সীমান্ত থেকে বিপুল পরিমাণ ফেনসিডিল উদ্ধার
পুলিশ-অটোরিকশা চালক সংঘর্ষ, ঢাকা-পদ্মা সেতু ট্রেন চলাচল বন্ধ
ভারতীয় সাবমেরিনের সঙ্গে মাছ ধরা নৌকার সংঘর্ষ, নিখোঁজ ২
সংসার ভাঙার দুদিন পরই সুখবর দিলেন এ আর রহমান
ঢাকায় পৌঁছেছেন বাইডেনের বিশেষ প্রতিনিধি
আ.লীগকে নির্বাচনের সুযোগ দেওয়ার বিষয়ে যা বললেন হাসনাত আব্দুল্লাহ