শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫ | ৫ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

বেগম রোকেয়া ও নারীর অধিকার

বাঙালি মুসলিম নারী সমাজের শিক্ষার কথা বলতে গেলে প্রথমেই যার নাম আসে তিনি হলেন বেগম রোকেয়া। আমাদের সমাজ ও সাহিত্যের ইতিহাসে বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন একটি বিশিষ্ট আসন অধিকার করে আছেন। স্ত্রীশিক্ষার বিস্তারে, বিশেষ করে, মুসলিম বালিকাদের শিক্ষাবিস্তারের ক্ষেত্রে, তার সাহসী ও অগ্রণী ভূমিকা চিরস্মরণীয়। নারীর অধিকার রক্ষার আন্দোলনেও তিনি অগ্রবর্তী।

বেগম রোকেয়ার হাতেই গড়া তাঁর অত্যন্ত প্রিয় ছাত্রী শামসুননাহার মাহমুদ তার রোকেয়া জীবনী গ্রন্থে উল্লেখ করেন ‘বোন, এই ইংরাজী ভাষাটা যদি শিখে নিতে পারিস, তবে পৃথিবীর এক রত্নভান্ডারের দ্বার তোর কাছে খুলে যাবে।’- পরম আদরের বালিকা ভগ্নির সম্মুখে একখানা বড় ছবিওয়ালা ইংরাজী বই খুলিয়া ধরিয়া এই কথা কয়টি উচ্চারণ করিয়াছিলেন, আজি হইতে প্রায় পঞ্চাশ বৎসর আগে এক কিশোর যুবক। কি ছিল কথাগুলির মধ্যে জানি না, কিন্তু কি এক যাদুমন্ত্রের প্রভাবে বালিকার হৃদয় মুগ্ধ হইল। সেদিন সেই মুহূর্তে জ্যেষ্ঠ ভ্রাতার কাছে জ্ঞানসাধনার যে মহামন্ত্রে তিনি দীক্ষিত হইলেন, তাহাই হইয়াছিল তাঁহার জীবনের মূলমন্ত্র। বালিকার নাম রোকেয়া। উত্তরকালে ইনিই মিসেস আর.এস. হোসাইন নামে বাংলা দেশে পরিচিত হন। বাংলার মুসলমান নারীপ্রগতির ইতিহাস-লেখক এই নামটিকে কখনো ভুলিতে পারিবেন না।’

বেগম রোকেয়া যে যুগে জন্মিয়াছিলেন এই বাংলার মাটিতে, সে ছিল মুসলিম ভারতের ইতিহাসে এক আঁধার যুগ। রাজ্য গিয়াছিল, সিংহাসন গিয়াছিল-সেটা তত বড় কথা নয়। ঊনবিংশ শতাদ্বীর শেষভাগে অশিক্ষা ও কুসংস্কারের ভেতর দিয়া আসিয়াছিল জাতির সবচেয়ে বড় অকল্যাণ। ইসলামের সত্যিকারের শিক্ষা ভুলিয়া হৃতসর্বস্ব মুসলমান সেদিন হাবুডুবু খাইতেছিল কুসংস্কার আর গোঁড়ামির পাঁকে।

যে সময় গোটা সমাজের ছিল এমন শোচনিয় অবস্থা, তখন কুলবালাদের দশা ছিল কি-আজ পঞ্চাশ বৎসর পরে তাহা কল্পনা করিতেও আমাদের দেহ কন্টকিত হয়। জন্ম হইতে মৃত্যু পর্যন্ত অন্ধকার পুরীর বিষাক্ত আবহাওয়ার মধ্যে বন্দিনী মুসলিম নারী। শিক্ষার আলোক তাহাদের জন্য হইয়াছিল হারাম; সত্য ও সুন্দর তাহাদের জীবন হইতে হইয়াছিল একেবারে নির্বাসিত।

সেই বীভৎস আঁধারে বেগম রোকেয়ার মনে কেমন করিয়া জ¦লিয়াছিল জ্ঞানের আলো, কেমন করিয়া জাগিয়াছিল মুক্তির পিপাসা-তাহা বাস্তবিকই ভাবিবার বিষয়। ভ্রান্ত মোল্লাদের প্রতিবাদ তুচ্ছ করিয়া, সমাজের তীব্র কটূক্তি অগ্রাহ্য করিয়া আপন হৃদয়মন তিনি আলোকিত করিয়াছিলেন শিক্ষার আলোকে, স্বাধীনচিন্তার আলোকে। শুধু তাহাই নয়। সেই আলোকের ক্ষীণ শিখায় ব্যথিত দৃষ্টি মেলিয়া তিনি দেখিয়াছিলেন তাঁর চারপাশের সমাজ,--অবরোধ-বন্দিনী নিগৃহীতা নারীসমাজ। শুধু দেখিয়া তিনি চুপ করিয়া থাকেন নাই। তাহার অজ্ঞানতা ও নির্জীবতার বেদনা তাঁহাকে অস্থির করিয়া তুলিয়াছিল। শত শত বন্দিনী নারীর মর্মের কথা অসহ্য বেদনায় রূপলাভ করিয়াছিল তাঁহার লেখায়, তাঁহার সাহিত্যে, তাঁহার জীবনের প্রত্যেকটি কাজে। কেমন করিয়া শত বাধা-নিষেধের নাগ পাশ হইতে তাহাদের মুক্তি দেওয়া যায়, কেমন করিয়া আলোকের পথে, কল্যাণের পথে, ধ্রুব ও সত্যের পথে তাহাদের তুলিয় দেওয়া যায়--এই-ই হইয়াছিল তাঁহার দিনের চিন্তা আর রাত্রির স্বপ্ন। সেই কাল রাত্রির অন্ধকারে জ্ঞানের দীপ না জ¦লিলে হতভাগিনী বন্দিনীদের মুক্তি নাই, তিনি বুঝিয়াছিলেন এই কথা। ভিতর হইতে সাড়া না আসিলে কারাগৃহের দ্বারের অর্গল খুলিবে না, তিনি উপলব্ধি করিয়াছিলেন এই সত্য। তাই ঘুমন্ত নারী-শক্তিকে নব জীবনের বোধন-মন্ত্রে উদ্বুদ্ধ করিয়া তুলিবার ভার লইয়াছিলেন তিনি আপন হাতে। তাদের প্রত্যেকটি জীবনকে উন্নত, আলোকিত ও সুন্দর করিয়া তুলিবার সাধনাই হইয়াছিল তাঁহার জীবন।

পঞ্চাশ বৎসর আগেকার মুসলমান নারীসমাজ আর আজিকার সমাজের অবস্থা তুলনা করিতে গেলেই চোখে পড়ে একটা বিরাট পরিবর্তন। যুগযুগান্তের স্বপ্নের কুহক ভাঙ্গিয়া আজ তাঁহারা জাগিয়াছেন। বন্ধন কাটিয়া একে একে দু’য়ে দু’য়ে তাঁহারা আজ সমবেত হইতেছেন মুক্ত বিশ্বের মুক্ত আকাশতলে। জগতের জাগর লোকে তাঁহাদের শূন্য আসন আজ সত্য সত্যই পূর্ণ হইতে চলিয়াছে। এই জাগরনের বিচিত্র ইতিহাসের সঙ্গে যে মহিমময়ী নারীর নাম আগাগোড়া ওতপ্রোতভাবে জড়িত, আপনার হৃদয়রক্তে যিনি লিখিয়া রাখিয়া গিয়াছেন যুগের জীবন-কাহিনী--তিনি আর কেহই নহেন, বেগম রোকেয়া সাখাওয়াৎ হোসায়ন।

লেখিকা এই সংক্ষিপ্ত লেখার মাধ্যমে বেগম রোকেয়ার নাম উচ্চারণ করার সাথে সাথে সে যুগের একটি প্রতিচ্ছবি চমৎকার করে তুলে ধরেছেন আমাদের সামনে।

শৈশব কাল বেগম রোকেয়া উনিশ শতকের শেষভাগে ১৮৮০ সালে রঙ্গপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার অন্তর্গত পায়রাবন্দ নামক গ্রামে জন্মগ্রহন করেন। ধনেমানে, শিক্ষার বংশগৌরবে সাবের পরিবারের তুলনা ছিল না। রোকেয়ার পিতার নাম জহিরুদ্দীন মোহাম্মদ আবু আলী সাবের। পূর্বপুরুষের বিস্তার জায়গাজমি ও সম্পত্তি তাঁহারই অপব্যয়িতা ও বিলাসিতার মুখে তাসের ঘরের মতো উড়ে যায়। তিনি আরবী ও ফারসীতে বিশেষ ব্যুৎপন্ন ছিলেন। কিন্তু সে যুগের কুসংস্কার ও গোঁড়ামি তাঁহার মধ্যে পূর্ণ মাত্রায় বাসা বেঁধে ছিল।

পায়রাবন্দ গ্রাম ও জমিদার বাড়ির পরিবেশ বর্ণনা করে বেগম রোকেয়া বলেছেন, ‘আমাদের এ নিবিড় অনণ্যবেষ্টিত বাড়ির তুলনা কোথায়? ...বাড়ির চতুর্দিকে গভীর বন, তাহাতে বাঘ, শূকর, শৃগাল-সবই আছে। আমাদের এখানে ঘড়ি নাই, সেজন্য আমাদের কোন কাজ আটকায় না। প্রভাতে আমরা ‘ঘু ঘু’, ‘বউ কথা কও’, ‘ওখুকি, ওখুকি’, ‘চোক গেল’ প্রভৃতি পাখির ভৈরবে আলাপে শয্যাত্যাগ করি। সন্ধাকালে শৃগালের ‘হুয়া হুয়া ক্যা হুয়া’ শব্দ শুনিয়া বুঝিতে পারি, মাগরেবের নামাজের সময় হইয়াছে। রাত্রিকালে কুরুয়া পাখির ‘কা-অ্যাক-কা-আক্-কু’ ডাক শুনিয়া বুঝিতে পারি, এখন রাত্রি তিনটা। আমাদের শৈশবজীবন পলীøগ্রামের নিবিড় অনণ্যে পরমসুখে অতিবাহিত হইয়াছে।’

পায়রাবন্দ রঙ্গপুর শহর থেকে বেশি দুরে অবস্থিত না হলেও শুধু যোগাযোগের অব্যবস্থার কারণে শিক্ষা-সংস্কৃতির দিক থেকে পশ্চাদপদ। ঊনবিংশ শতব্দীর শেষার্ধে আধূনিক জীবনের সকলপ্রকার সুযোগ-সুবিধা থেকে পায়রাবন্দ বি ত ছিল। সে সময় পায়রাবন্দ ছিল একটি অজ পাড়া-গাঁ। এই অজ পাড়া-গাঁয়ে বেগম রোকেয়ার শৈশব-কাল অতিবাহিত হয়েছে।

বেগম শামসুন নাহার তাঁর রোকেয়া- জীবনি গ্রন্থে বলেন--সাবের পরিবারের মেয়েরা ছিলেন ঘোর পর্দানশীন। আজ আমরা মনে করি আমাদের চলিবার পথে অনেক প্রতিবন্ধক, সমাজের অনেক কুসংস্কারের বিরুদ্ধে লড়াই করিয়া আমাদের পথ চলিতে হয়; কিন্তু তুচ্ছ মনে হয় এ যুগের কুসংস্কার, যখন মনে পড়ে চল্লিশ পঞ্চাশ বছর আগেকার--রোকেয়ার শৈশবের সেই আঁধার যুগের কথা। আজ আমরা হয়তো পুরুষের সামনে পর্দা করি। কিন্তু তখন কুলবালারা পর্দা করিতেন ঘনিষ্ঠ আত্মীয়া এবং বাড়ির চাকরাণী ছাড়া অন্য কোন মেয়ে মানুষের সামনে বাহির হইতেন না। যিনি যত বেশি পর্দা করিয়া গৃহকোণে যত বেশি পেচকের মতো লুকাইয়া থাকিতে পারিতেন তাঁহারই তত বেশি কুলগৌরবের পরিচয় পাওয়া যাইত।

সে যুগের মেয়েদের শুধু দেহই পর্দানশীন ছিল না-পাছে পর পুরুষের চোখে পড়িয়া তাঁহাদের হাতের লেখার বেপর্দা হয়, এই ভয়ে লেখাপড়া শেখাই ছিল তাঁহাদের পক্ষে একেবারে নিষিদ্ধ। নিজের জ্যেষ্ঠা ভগ্নির বাল্যশিক্ষার বিবরণ দিতে গিয়া রোকেয়া বলিয়াছেন- ‘চিরাচরিত প্রথা অনুসারে তাঁহাকে টিয়া পাখির মতো কোরান শরীফ ছাড়া আর কিছুই পড়িতে দেওয়া হয় না। কিন্তু তাহাতে তাঁহার আত্মার তৃপ্তি হইত না। ছোট ভাইয়েরা বাহিরে মুনশী সাহেবের কাছে ফারসী পড়িয়া আসিতেন-ভগ্নিকে শুনাইয়া ফারসী বয়েত আবৃত্তি করিতেন; তখন ভগ্নিও তাহাদের সঙ্গে সঙ্গে বয়েতগুলি মুখস্ত করিতেন। ভাইদের বাংলা পড়া শুনিয়া তিনিও মুখে মুখে বাংলা অক্ষর যোজনা করিতেন, প্রাঙ্গণে মাটিতে দাগ কাটিয়া বাংলা লিখিতেন। একদিন তিনি গোপনে একটা বটতলায় পুঁথি লইয়া অস্ফুটস্বরে পড়িতেছিলেন।
সেই সময় হঠাৎ পিতা আসিয়া পড়েন। কন্যা অত্যন্ত ভয় পাইয়া ভাবিলেন এই বুঝি সর্বনাশ! কিন্তু না, পিতা কন্যার হাতে পুঁথি দেখিয়া রাগ করিলেন না, বনং ভয়ে মূর্ছিতাপ্রায় বালিকাকে কোলে লইয়া আদর করিলেন এবং সেই দিন হইতে একটু একটু বাংলা সাধু ভাষা পড়াইতে লাগিলেন। বাস্ আর যায় কোথা? যত মোল্লা মুরুব্বির দল একযোগে চটিয়া উঠিলেন-তাঁহাদের নিন্দা ও বাক্যজ¦ালায় অধীর হইয়া পিতা তাঁহার পড়া বন্ধ করিয়া দিলেন।’

রোকেয়া যে আবেষ্টনের মধ্যে জন্মগ্রহণ করিয়াছিলেন, তাহা ছিল অশিক্ষা, কুশিক্ষা ও কুসংস্কারে এমনই পঙ্কিল, এমনই বিষাক্ত! আর এর ভেতরেই কাটে তার শৈশবকাল।

ড. মাহবুবা রহমান: সাবেক বিভাগীয় প্রধান, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ। লালমাটিয়া সরকারী মহিলা কলেজ, ঢাকা

Header Ad
Header Ad

ব্রাজিলের ভক্তদের ‘বানরের’ সঙ্গে তুলনা, নিষেধাজ্ঞার মুখে আর্জেন্টিনা

ছবি: সংগৃহীত

মনুমেন্টাল স্টেডিয়ামে সেদিন নাকানিচুবানি খেয়েছিল ব্রাজিল। বল দখল, গোলে শট কিংবা আক্রমণ—আর্জেন্টিনার বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচটিতে পেরে ওঠেনি সেলেসাওরা। ৪-১ ব্যবধানের বড় হারও এসেছিল। ওইদিনে ব্রাজিলের ভক্তদের সঙ্গে বিদ্বেষী ও বর্ণবাদমূলক আচরণ করেছিল আর্জেন্টাইনরা। সেই ঘটনার জল হয়ত গড়াতে যাচ্ছে বহুদূর!

মার্চের ২৫ তারিখের ওই ঘটনার জেরে নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে পারে আর্জেন্টিনার ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (এএফএ)। ব্রাজিলিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন (সিবিএফ) ফিফার মাধ্যমে এএফএকে শাস্তি দেওয়ার চেষ্টা করতে পারে। সিবিএফ ইতোমধ্যে প্রমাণসমূহ প্রস্তুত করেছে বলে জানিয়েছে আর্জেন্টাইন সংবাদ মাধ্যম টিওয়াইসি স্পোর্টস।

গণমাধ্যমটি সিবিএফ এর বরাতে জানিয়েছে, সেলেসাওদের একজন ভক্তকে একজন আর্জেন্টাইন দর্শক ‘বানরের’ সঙ্গে তুলনা করেছে। সেই ঘটনাটি ওই দর্শক রেকর্ড করেন। লিওনেল মেসিদের অ্যাসোসিয়েশনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে এটি হতে পারে বড় প্রমাণ। টিওয়াইসি জানিয়েছে, এমন ঘটনার মাঝ দিয়ে গেছে আরও বেশ কিছু ব্রাজিলিয়ান দর্শক।

জুনের প্রথম সপ্তাহে চিলি ও কলম্বিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে নামার আগেই ফিফার পক্ষ থেকে শাস্তি শুনতে পারে আর্জেন্টিনা। বারবার এমন বর্ণবাদী আচরণ হওয়ায় হয়ত ওই দুই ম্যাচে আর্জেন্টিনার দর্শকদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে। টিওয়াইসি জানিয়েছে, কলম্বিয়ার বিপক্ষে ঘরের মাঠের ম্যাচে দর্শকশূন্য রেখেই খেলতে হতে পারে মেসি-লাউতারোদের। যদিও এখনও আনুষ্ঠানিক কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি।

কদিন আগে ফিফার এমন শাস্তির মুখে পড়েছিল চিলি। ম্যাচ দেরিতে শুরু করার কারণে তাদের স্টেডিয়ামে দর্শকদের ৫০ শতাংশ ফাঁকা রাখতে নির্দেশ দিয়েছিল। দর্শকদের উগ্র আচরণের কারণে একই সমস্যায় পড়েছিল ব্রাজিল ও উরুগুয়ে।

তবে, ফিফা আপিল কমিটি শাস্তির মাত্রা ২৫ শতাংশে কমিয়ে এনেছে। একই সঙ্গে তারা জানিয়েছে, এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি হলে মাঠে দর্শকদের উপস্থিতির পরিমাণ আরও কমিয়ে আনা হবে।

Header Ad
Header Ad

নারীরা কেন বয়সে ছোট পুরুষের সঙ্গে প্রেমে জড়াচ্ছেন?

ছবি: সংগৃহীত

সম্পর্ক তৈরির বেলায় বয়স বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। তবে বর্তমান প্রজন্মের অনেকের কাছে বয়স বিশেষ গুরুত্ব বহন করে না। তাই আজকাল নিজের বয়সের চেয়ে কম বয়সের মানুষের সঙ্গে সম্পর্কে জড়াচ্ছেন তরুণ–তরুণীরা।

পুরুষের ক্ষেত্রে এমন সম্পর্ক সমাজে স্বাভাবিক হলেও নারীর ক্ষেত্রে নয়। তবে আজকাল অনেক নারীই সঙ্গী বাছাই করার সময় বয়সের ফারাককে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন না। তাই তাঁরা এখন প্রেমিক বা দাম্পত্যসঙ্গী হিসেবে বেছে নিচ্ছেন কম বয়সীদের। ডেটিং অ্যাপের ট্রেন্ড বলছে, নারীরা পছন্দের ক্ষেত্রে সুন্দর মন, ব্যক্তিগত সুরক্ষা, আত্মবিশ্বাসী সঙ্গীকে খুঁজে নিতে চান। যেকোনো সম্পর্কে ভারসাম্য ও গতিশীলতাকে গুরুত্ব দেন।

ডেটিং ট্রেন্ডে নারীরা

মনোবিদেরা মনে করেন, এখনকার নারীরা নিজেদের সম্পর্ক নিয়ে বেশ সচেতন। যেকোনো বিষয়কে সহজভাবে নিতে পারার মানসিকতা বেড়েছে, বিশেষত অগ্রসর বিশ্বে তাঁরা কোনো বিষয়ে ভীত নন। সম্পর্কে যুক্ত হওয়ার সময় আত্মবিশ্বাস ও আত্মসচেতনতায় গুরুত্ব দেন তাঁরা। ঐতিহ্যগতভাবে পুরুষকে একচেটিয়াভাবে সফল কিংবা শক্তিশালী হিসেবে মেনে নিতে তাঁরা নারাজ। সঙ্গীর প্রতি আনুগত্যের চেয়ে নারীরা নিজের সুখ ও সামগ্রিক মঙ্গলকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। এসব কারণেই অনেক নারী কম বয়সী পুরুষ সঙ্গীর সঙ্গে ডেটিং করছেন। অর্থাৎ ব্যক্তিগত পছন্দকেই গুরুত্ব দিচ্ছেন তাঁরা। কম বয়সী পুরুষ সঙ্গীর কাছ থেকে মানসিক, সামাজিক চাহিদাসহ অন্যান্য প্রয়োজনকে গুরুত্ব দিয়েই সম্পর্কে জড়াচ্ছেন।

নানা কারণে সম্পর্কে জড়ানোর সময় নারীরা কম বয়সীদের গুরুত্ব দেন

নিজের চেয়ে কম বয়সী পুরুষ সঙ্গীর সান্নিধ্যে আসায় নারীদের মধ্যে নিজেদের আরও তরুণ ভাবার একধরনের প্রবণতা তৈরি হয়েছে। কম বয়সী তরুণেরা নিজেদের সম্পর্কে সচেতন, নিজের স্বাস্থ্য ও রুচির বিষয়েও সজাগ। নতুন নতুন অভিজ্ঞতা কম বয়সীদের পৃথিবীকে নতুন করে জানার সুযোগ দেয়। এসব কারণে সম্পর্কে জড়ানোর সময় নারীরা কম বয়সীদের গুরুত্ব দেন। নারীরা এখন আগের চেয়ে বেশি অর্থনৈতিক ও সামাজিক স্বাধীনতার জন্য ছুটছেন। পারিবারিক বা সামাজিক নিরাপত্তার জন্য বয়স্ক সঙ্গী খোঁজার প্রথাগত নিয়মে তাঁরা আর বিশ্বাসী নন। ব্যক্তিগত পরিপূর্ণতা, মানসিক সংযোগ ও আকর্ষণকে অগ্রাধিকার দিতেই নিজের পছন্দের সঙ্গীকে বেছে নিচ্ছেন।

বয়স কোনো বিষয় না

বয়সের ব্যবধান সম্পর্কে এখন নারীদের সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি বেশ নমনীয়। তরুণদের তুলনায় নারীরা মধ্যবয়সীদের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ানোর আগে অনেক চিন্তা করছেন। মধ্যবয়সী বা সমবয়সীদের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ানোর ক্ষেত্রে সামাজিক রীতিনীতি বা লোকদেখানোর আচারকেই বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয় বলে মনে করেন নারীরা। সম্পর্ক নিয়ে পুরোনো সামাজিক নিয়মগুলোকে চ্যালেঞ্জ করতে চান তাঁরা।

Header Ad
Header Ad

জুলাই-মার্চ মাসে ৩০.২৫ বিলিয়ন ডলার পোশাক রফতানি করেছে বাংলাদেশ

ছবি: সংগৃহীত

চলতি অর্থবছরের (২৪-২৫) জুলাই-মার্চ মাসে তৈরি পোশাক রফতানি বেড়েছে ১০ দশমিক ৮৪ শতাংশ। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই-মার্চ মাসের দেশভিত্তিক রফতানি তথ্য থেকে বিষয়টি জানা গেছে।

জানা গেছে, এই সময়ে ৩০ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলার পোশাক রফতানি করেছে বাংলাদেশ। যা পোশাক খাতের স্থিতিস্থাপকতা এবং সম্ভাবনা তুলে ধরে বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।

তথ্য থেকে জানা যায়, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এখনো বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বাজার। বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের মোট রপ্তানির ৪৯ দশমিক ৮২ শতাংশই রফতানি হয় ইউরোপীয় ইউনিয়নে। যার মোট বাজার মূল্য ১৫ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার।

এরপরেই রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজার। এ বাজারে মোট রফতানি হয়েছে ৫ দশমিক ৭৪ বিলিয়ন ডলারের তৈরি পোশাক। যা মোট রফতানির ১৮ দশমিক ৯৭ শতাংশ। যেখানে কানাডার মোট বাজার অংশ ছিল ৯৬৩ দশমিক ৮৫ মিলিয়ন ডলার। যার বাজার অংশ ৩ দশমিক ১৯ শতাংশ। যুক্তরাজ্যের বাজারও গুরুত্বপূর্ণ ছিল, যার রফতানি মূল্য ৩ দশমিক ৩৬ বিলিয়ন ডলার। যা বাংলাদেশের মোট তৈরি পোশাক রফতানির ১১ দশমিক ১০ শতাংশ ।

প্রবৃদ্ধির দিক থেকে ইইউতে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রফতানি বছরের পর বছর ধরে উল্লেখযোগ্যভাবে ১১ দশমিক ৩১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। উল্লেখিত সময়ে যেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ১৭ দশমিক ২৩ শতাংশ এবং কানাডা ১৫ দশমিক ৬৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে, যুক্তরাজ্যে তৈরি পোশাক রফতানি ৪ দশমিক ১৪ শতাংশ এর একটি সামান্য প্রবৃদ্ধির হার প্রদর্শন করেছে।

ইইউর মধ্যে, জার্মানি একটি গুরুত্বপূর্ণ বাজার হিসেবে দাঁড়িয়েছে, যেখানে বাংলাদেশের রফতানির পরিমাণ ৩ দশমিক ৮০ বিলিয়ন ডলার, স্পেন ২ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলার, ফ্রান্স ১ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলার, ইতালি ১ দশমিক ১৭ বিলিয়ন ডলার, পোল্যান্ড ১ দশমিক ২৬ বিলিয়ন ডলার এবং নেদারল্যান্ডস ১ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলার।

প্রবৃদ্ধির হার বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য ছিল - জার্মানি (১০ দশমিক ৭২ শতাংশ), ফ্রান্স (১০ দশমিক ৭৫ শতাংশ), নেদারল্যান্ডস (২৩ দশমিক ১৫ শতাংশ), পোল্যান্ড (১০ দশমিক ৩২ শতাংশ), ডেনমার্ক (১২ দশমিক ৮০ শতাংশ) এবং সুইডেন (১৯ দশমিক ৯৬ শতাংশ) ।

বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতেও অপ্রচলিত বাজারে প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে, সামগ্রিকভাবে ৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। যেখানে মোট রফতানি ৫ দশমিক ১২ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, যা বাংলাদেশের মোট রফতানির ১৬ দশমিক ৯৩ শতাংশ দখল করেছে।

এই বাজারগুলোর মধ্যে, জাপান মোট ৯৬০ দশমিক ৪৫ মিলিয়ন ডলার আমদানি করে শীর্ষে রয়েছে, তারপরে অস্ট্রেলিয়া ৬৫৩ দশমিক ৬৪ মিলিয়ন ডলার এবং ভারত ৫৩৫ দশমিক ১৫ মিলিয়ন ডলার আমদানি করে।

তুরস্ক এবং মেক্সিকোর মতো দেশগুলোতেও উল্লেখযোগ্য রফতানি হয়েছে। তুরস্কে ৩৫৭ দশমিক ২২ মিলিয়ন ডলার এবং মেক্সিকোতে ২৫১ দশমিক ২২ মিলিয়ন ডলার, যা প্রশংসনীয়। উল্লেখিত সময়ে ভারতে ২০ দশমিক ৪৫ শতাংশ, জাপান ১০ দশমিক ০৬ শতাংশ, মেক্সিকো ২৩ দশমিক ৪৪ শতাংশ এবং তুরস্কের ৩২ দশমিক ৫৪ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

রিপোর্টে দেখা গেছে, এই সময়কালে জাপান, অস্ট্রেলিয়া, ভারত, তুরস্ক এবং মেক্সিকোতে প্রবৃদ্ধি ইতিবাচক থাকলেও রাশিয়া, কোরিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং মালয়েশিয়ায় রফতানি হ্রাস পেয়েছে।

সংযুক্ত আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া এবং কোরিয়ায় নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি এই বাজারগুলোতে আরও গুরুত্বসহকারে রফতানি বাজার দেখা দরকার।

নিটওয়্যার খাত মোট ১১ দশমিক ২২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি দেখিয়েছে। ওভেন সেক্টরেও ১০ দশমিক ৪০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে, যুক্তরাজ্যে প্রবৃদ্ধি ধীর হলেও অপ্রচলিত বাজারে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পয়েছে।

রফতানির চলমান প্রবৃদ্ধি উল্লেখযোগ্যভাবে ইইউ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপর নির্ভরশীল। যা বাংলাদেশের প্রধান বাজার হিসেবে অব্যাহত রয়েছে। যা এই ক্ষেত্রগুলির মধ্যে আরও সম্ভাবনার ইঙ্গিত দেয়।

বিজিএমইএ’র সাবেক পরিচালক, বাংলাদেশ অ্যাপারেল এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং ডেনিম এক্সপার্ট লিমিটেডের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, ‘এটি আমাদের মোট রপ্তানি প্রবৃদ্ধিতে প্রধান ঐতিহ্যবাহী বাজারের তাৎপর্য প্রদর্শন করে।’ তিনি আরও বলেন, অপ্রচলিত বাজারে মাঝারি প্রবৃদ্ধি এই বিভাগে আরও গবেষণা এবং মনোযোগের গুরুত্বকে তুলে ধরে, কারণ এর যথেষ্ট প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে, যা ঐতিহ্যবাহী বাজারের ওপর নির্ভরতা ভারসাম্য বজায় রাখতেও সাহায্য করবে।

রুবেল বলেন, স্থায়ী বৈশ্বিক বাণিজ্য উত্তেজনা ক্রমাগত বৈশ্বিক পরিবেশকে পুনর্গঠন করছে। এমন সুযোগ তৈরি করছে যা বাংলাদেশ সুবিধা নিতে পারে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

ব্রাজিলের ভক্তদের ‘বানরের’ সঙ্গে তুলনা, নিষেধাজ্ঞার মুখে আর্জেন্টিনা
নারীরা কেন বয়সে ছোট পুরুষের সঙ্গে প্রেমে জড়াচ্ছেন?
জুলাই-মার্চ মাসে ৩০.২৫ বিলিয়ন ডলার পোশাক রফতানি করেছে বাংলাদেশ
সংঘর্ষে উড়ে গেছে বাসের ছাদ, তবুও ১০ কিলোমিটার চালিয়ে ৬০ যাত্রীকে বাঁচালেন চালক
কোলের সন্তান বিক্রি করে অলংকার, মোবাইল কিনলেন মা
চুয়াডাঙ্গায় বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে দু’জন নিহত
ইয়েমেনের তেল বন্দরে মার্কিন বিমান হামলায় নিহত ৩৮
হবিগঞ্জে ট্রাক-পিকআপের মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত ৪
সৌদি আরব-মরক্কো থেকে ৪৬৬ কোটি টাকার সার কিনবে সরকার
গাইবান্ধায় মাদক মামলায় ৩ যুবকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের আহ্বান জানালেন প্রধান উপদেষ্টা
তোপের মুখে ওয়াক্‌ফ আইন স্থগিত করল ভারতের সুপ্রিম কোর্ট
নিজেকে বরিশাল সিটির মেয়র ঘোষণার দাবিতে মামলা করলেন ফয়জুল করীম
ভারতের সংখ্যালঘু মুসলিমদের ‘পূর্ণ নিরাপত্তা’ নিশ্চিতের আহ্বান বাংলাদেশের
টাঙ্গাইলে প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে কেন্দ্র সচিব ও পরীক্ষার্থীসহ আটক ৬
৭১ এর গণহত‍্যার জন‍্য ক্ষমা ও সম্পদ ফেরত দেয়া নিয়ে আলোচনায় সম্মত পাকিস্তান
এবার স্ত্রী রিয়া মনিকে তালাকের ঘোষণা দিলেন হিরো আলম
সাবেক এমপি বাহারের জমি-বাড়ি জব্দ, ২৯টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ
বাংলাদেশের সঙ্গে কোনো ধরণের বাণিজ্যযুদ্ধে জড়াতে চায় না ভারত
বিজ্ঞানীদের সফলতা: ইমপ্লান্ট নয়, নতুন করে গজাবে ক্ষয়ে যাওয়া দাঁত!