সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪ | ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

অগ্নিঝরা ৭ মার্চ স্বাধীনতার চূড়ান্ত দিকনির্দেশনা

বাঙালি জাতির স্বাধীনতার ইতিহাসে এমন কিছু ভিত্তিসূচক তারিখ ও মাস আছে, যা আলোকোজ্জ্বল। মার্চ এমনই এক মাস, যা ইতিহাসের উজ্জ্বল রশ্মি বিকিরণ করে। ঐতিহ্যগতভাবে এ মাসের শুরু থেকে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে দৈনিকগুলোতে লেখা পত্রস্থ হয়। এ শুধু প্রথা নয়, প্রয়োজন। কারণ, ইতিহসের চর্চা জরুরি। তবে এসব রচনা নতুন প্রজন্মের কতজন পড়ে, কতজন হৃদয়ঙ্গম করে, আমার তা জানা নেই। আমি নিজেও লিখি, বহুকাল ধরেই ইতিহাসের ঘটনাবলি লিখি। আমি ঐতিহাসিক নই, স্বাধীনতার জাতীয় ইতিহাসের একটি পর্যায়ের প্রত্যক্ষদর্শী ও অংশগ্রহণকারী মাত্র। সে কারণে চোখে দেখা সময়ের স্মৃতিচারণা করি এবং সেই সময়ের পূর্বাপর পরিপ্রেক্ষিত জানার চেষ্টা করি।

পাকিস্তান রাষ্ট্রের শুরু থেকেই সংখ্যাগরিষ্ঠ বাঙালি জনগোষ্ঠীর ওপর চলতে থাকে নতুন মাত্রার শোষণ। অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক, সামরিক ও ধর্মকেন্দ্রিক সেই শাসন-শোষণ পূর্ব বাংলা বা পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালিকে নতুন চেতনায় জাগরূক করে। বাংলা ভাষার প্রথম আত্মানুসন্ধান ঘটে ১৯৪৮ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি, যখন পাকিস্তান গণপরিষদের বৈঠকে ইংরেজি ও উর্দুকে দেশের রাষ্ট্রভাষা করার প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। পাকিস্তান সৃষ্টির মাত্র এক বছরেরও কম সময়ের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের বাংলা ভাষাকে বাদ দিয়ে সংখ্যালঘিষ্ঠ মানুষের ভাষা উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার এই জবরদস্তির বিরুদ্ধে প্রথম সরব প্রতিবাদ করেন বাঙালি গণপরিষদ সদস্য ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত।

তিনি উর্দুর পাশাপাশি বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দিতে জোরালো দাবি তোলেন। এই ঘটনা বাঙালি গণমানসে ব্যাপক সাড়া ফেলে। এরপর পাকিস্তানের রাষ্ট্রপিতা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ঢাকার মাটিতে এসে উর্দুকে দেশের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করার প্রস্তাব করলে বৃহত্তর আন্দোলনের সূত্রপাত ঘটে। বাঙালি ছাত্রসমাজ প্রতিবাদে ফেটে পড়ে। ঘটে ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারির রক্তপাত। এসব প্রতিবাদী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বাঙালির ভাষাভিত্তিক জাতীয়তার উন্মেষ ঘটে। সেই উন্মেষ বৃহত্তর গণবিক্ষোভের জন্ম দেয় এবং ক্রমান্বয়ে অপ্রতিরুদ্ধ জাতিসত্তার বিকাশ ঘটায়।

কিন্তু পাকিস্তান রাষ্ট্রের নিত্য শোষণ-বঞ্চনার পরও বাঙালি তার আত্মসম্মান ও মর্যাদার সংগ্রাম থেকে কখনো পিছপা হয়নি। তারা শুরু করে রাহুমুক্তির আন্দোলন। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৬২ সালের আইয়ুববিরোধী শিক্ষা আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের ছয় দফা আন্দোলন, ঐতিহাসিক আগরতলা মামলা, উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান এবং সব শেষে ছাত্রসমাজের ঐতিহাসিক ১১ দফা আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে বাঙালির জাতীয়তাবাদী চেতনার ব্যাপক উন্মেষ ঘটে। এই গণ-আন্দোলনের তীব্রতায় পাকিস্তানের ‘লৌহমানব’ বলে চিহ্নিত ফিল্ড মার্শাল আইয়ুব খানের পতন ঘটে। জাতীয় চেতনা ও মননের সর্বোত্তম প্রতিফলন ঘটে ১৯৭১ সালে ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ঘোষণায়-‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’, যা ছিল কার্যত স্বাধীনতার ঘোষণা। ১৯৭০ সালে যুক্ত পাকিস্তানের প্রথম ও শেষ সাধারণ নির্বাচনের পর থেকে পূর্ব পাকিস্তানের সার্বিক পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করতে থাকে। পাকিস্তানি স্বৈরশাসকরা গণরায় মেনে নিতে অস্বীকার করেন। ফলে গণমানুষের আন্দোলন দ্রুত সশস্ত্র আন্দোলনের পথে ধাবিত হয়। এরপর রক্তাক্ত নানা পথপরিক্রমায় সামরিক ও ধর্মকেন্দ্রিক শাসন-শোষণের পিঞ্জর ভেঙে স্বাধীনতার পথ উন্মুক্ত হয়।

১৯৭১ সালের মার্চ মাসের শুরু থেকেই বিস্ময়করভাবে জেগে ওঠে পূর্ব বাংলা বা পূর্ব পাকিস্তান। ১ মার্চ আকস্মিকভাবে পাকিস্তান জাতীয় সংসদের বৈঠক স্থগিত করেন সামরিক প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান। ফলে গোটা পূর্ব পাকিস্তান বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কলাভবনের সামনে ছাত্রসমাজ উত্তোলন করে বাংলাদেশের নতুন পতাকা। গোটা বাংলা মিছিলে মিছিলে ভরে ওঠে। ৩ মার্চ ঢাকার পল্টন ময়দানে বঙ্গবন্ধুর উপস্থিতিতে পাঠ করা হয় স্বাধীনতার ইশতেহার। এরপর আসে জাতীয় ইতিহাসের অগ্নিঝরা মার্চের ৭ তারিখ, যেদিন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, সেদিনের রমনা রেসকোর্স ময়দানে ঐতিহাসিক এক ভাষণে জাতির সামনে উপস্থাপন করেন স্বাধীনতার চূড়ান্ত দিকনির্দেশনা। সেই নির্দেশনা শুধু একজন সুদক্ষ রাজনীতিবিদের ছিল না, ছিল দূরদৃষ্টিসম্পন্ন সর্বাধিনায়ক ও রাষ্ট্রনায়কের। এই ভাষণের মধ্য দিয়ে বাঙালির অবিসংবাদী নেতা পাকিস্তানের সামরিক জান্তাকে শেষবারের মতো সতর্ক করেন, ঐতিহাসিক এক অসহযোগ আন্দোলনের সূত্রপাত করেন, এমনকি জাতিকে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে সর্বাত্মক প্রতিরোধ যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার ডাক দেন। এই মার্চেই পাকিস্তান সেনাবাহিনী বাঙালি বিক্ষোভকারীদের ওপর যত্রতত্র গুলি চালাতে থাকে। এরপরও গণতান্ত্রিক নেতা হিসেবে বঙ্গবন্ধু দেশের সামরিক প্রেসিডেন্ট ও পাকিস্তান পিপলস পার্টির নেতা জুলফিকার আলী ভুট্টোর সঙ্গে আলোচনা বন্ধ করেননি। মার্চের ১৫ তারিখ থেকে শুরু হওয়া সেই আলোচনা ছিল পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর একটি প্রতারণামূলক কৌশল।

বাঙালি নিধন পরিকল্পনার অংশ হিসেবে আলোচনা অসমাপ্ত রেখে ২৫ মার্চ গোপনে দেশের পশ্চিম অংশে চলে যান ইয়াহিয়া খান। ওই রাতেই ঢাকার বুকে নৃশংস গণহত্যা শুরু করে পাকিস্তান সেনাবাহিনী। শান্তিপূর্ণ পথে বাঙালির ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার সব পথ যখন বন্ধ হয়ে যায়, সামরিক শাসকরা যখন নির্বাচনী রায় সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করে রাতের অন্ধকারে বর্বরতম গণহত্যা শুরু করেন, বাঙালির অবিসংবাদী নেতাকে যখন তারা বন্দী করে পশ্চিম পাকিস্তানে নিয়ে যান, ঠিক তার আগে ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন।

এই মার্চ মাসেই শুরু হয় ইতিহাসের সর্ববৃহৎ গণদেশত্যাগ। পাকিস্তানি সেনাদের নির্বিচার-নিষ্ঠুরতা থেকে বাঁচতে মানুষ দলে দলে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, আসাম ও মেঘালয়ের মাটিতে পাড়ি দিতে থাকে। সেই গণদেশত্যাগ এমনই সুবিশাল হয় যে সর্বমোট এক কোটি মানুষ-হিন্দু-মুসলমান-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান-নির্বিশেষে ভারতের মাটিতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়। বাংলাদেশ রাষ্ট্র স্বাধীনতার পাঁচ দশক অতিক্রম করেছে। আমরা যাঁরা সেই ইতিহাসের প্রত্যক্ষদর্শী, একই সঙ্গে একাত্তরের সৈনিক, তারা সবাই বয়োজ্যেষ্ঠ হয়েছি। কিন্তু অগ্নিঝরা মার্চ তার গৌরব নিয়ে স্বমহিমায় দাঁড়িয়ে আছে। একের পর এক নতুন প্রজন্ম এসেছে। তারা তাদের জাতির স্বাধীনতা সংরক্ষণে ইতিহাসের দিকে তাকাক, শ্রদ্ধাভরে অগ্নিঝরা মার্চের দিকে তাকাক, তাকাক সেই মার্চের দিকে, যে মার্চ গোটা জাতিকে একত্র করে স্বাধীন-সার্বভৌম একটি রাষ্ট্রের জন্ম দিয়েছিল।

এ লেখায় আমি সশ্রদ্ধচিত্তে স্মরণ করি রাষ্ট্রপিতাকে, যিনি তাঁর জীবনের সবটুকু সামর্থ্য দিয়ে বাঙালির জাতীয় ইতিহাসে প্রথমবারের মতো একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের পত্তন করেছিলেন। প্রত্যাশা, নতুন প্রজন্ম তাদের জাতীয় ইতিহাসের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে আজ ও আগামীর বাংলাদেশকে সব শোষণ-অবিচারের অবসান করবে। ১৯৭৫-পরবর্তী দুর্ভাগ্যজনক সময়ে, বিশেষত সামরিক ও আধাসামরিক রাষ্ট্রযন্ত্রের জাঁতাকলে নতুন প্রজন্মের একটি অংশ বিকৃত ইতিহাস পাঠ করতে বাধ্য হয়েছে। কিন্তু ইতিহাস নিজেই তার আপন সত্তা খুঁজে নিতে সক্ষম। আমরা যাঁরা মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গনের মানুষ, তাঁদের জন্য সেই জাগরণ অতীব আনন্দের। নতুনের এই উপলব্ধি ৩০ লাখ শহীদের রক্তরঞ্জিত বাংলাদেশকে স্বমহিমায় এগিয়ে নেবে, তারা বাংলাদেশ রক্ষা করবে-এই আমাদের প্রত্যাশা।

আমরা যখন অগ্নিঝরা মার্চ ও স্বাধীনতার ইতিহাসের কথা বলি, তখন স্বাভাবিকভাবেই জাতীয় স্বাধীনতার শত্রু-মিত্রের চেহারাগুলো ভেসে ওঠে। বিশেষ করে ভেসে ওঠে সেসব ঘাতক, যুদ্ধাপরাধী ও ঘৃণ্য মানবতাবিরোধীদের মুখ, যারা পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর পক্ষ ধারণ করে সেদিন নির্বিচারে গণহত্যা, নারী নির্যাতন ও অগ্নিসংযোগ করেছিল আপন জনগোষ্ঠীর ওপর। ভাবতে বিস্মিত হতে হয় যে এসব ঘৃণ্য অপরাধ তারা করেছিল আবার পবিত্র ধর্মের নামে, পাকিস্তানের অখণ্ডতা রক্ষার নামে!

আমার বিশ্বাস, বাঙালির নতুন প্রজন্ম আজ যতটা জেগে উঠেছে, তার চেয়েও বেশি জেগে উঠবে আগামী দিনে। তারা স্বাধীনতা ও প্রগতিবিরোধী মহলের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে। নবতারুণ্যের এই জাগরণ আমাদের আশান্বিত করে। এক সময় এক আরোপিত মনোজাগতিক আধিপত্যের কাছে জাতি আত্মসমর্পণ করেছিল। হয়তো করতে বাধ্য হয়েছিল। কিন্তু মাঘের কনকনে শীত শেষে গাঝাড়া দিয়ে, মাথা তুলে নবতারুণ্য জাতিকে নববসন্তে রাঙিয়ে দিয়েছে। পিঞ্জর থেকে বেরিয়ে আসার দুয়ার খুলে দিয়েছে।

স্বাধীনতাবিরোধীদের বিরুদ্ধে নবতারুণ্য তাদের স্ফুলিঙ্গ ছড়িয়ে দিয়েছে গোটা বাংলাদেশে। এ তো ইতিহাসেরই ফিরে আসা। নবপ্রজন্মের হাতে বিকশিত হোক সত্য ও সুন্দর। যে বাংলাদেশ প্রবীণরা পাকিস্তানের পিঞ্জর থেকে ছিনিয়ে এনেছিল, সেই বাংলাদেশ আমাদের নবীনদের হাতে নিরাপদ হোক। এর চেয়ে বড় প্রশান্তি আর কী হতে পারে?

হারুন হাবীব, মুক্তিযোদ্ধা, লেখক ও কলামিস্ট

Header Ad

নিখোঁজের চারদিন পর নদী থেকে শিশুর মরদেহ উদ্ধার

ছবি: সংগৃহীত

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে নিখোঁজের চারদিন পর নদী থেকে মহিম বাবু নামে ছয় বছরের এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

রবিবার (১৭ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে মরদেহটি উদ্ধার করে গোবিন্দগঞ্জ থানা পুলিশ। মাহিম উপজেলার নাকাইহাট ইউনিয়নের গ্রামের খুকশিয়া গ্রামের মাজেদুল ইসলামের ছেলে। শিশুটি গত বৃহস্পতিবার দুপুরের পর থেকে নিখোঁজ ছিল।

স্বজনরা জানান, নিখোঁজের পর থেকে আত্মীয়-স্বজনের বাড়ীসহ বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও মাহিমের কোন সন্ধান পাওয়া যচ্ছিলো না। এরই এক পর্যায়ে রবিবার বিকেলে আনুমানিক ৪টার দিকে বাড়ীর পার্শ্ববর্তী নলেয়া নদীতে একটি শিশুর মরদেহ ভেসে ওঠার খবর পান তারা। মাহিমের পরিবারের লোকজন সেখানে গিয়ে লাশটি মাহিমের বলে শনাক্ত করে।

খবর পেয়ে গোবিন্দগঞ্জ থানার একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।

গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বুলবুল ইসলাম বলেন, পানিতে পড়ে শিশু মাহিমের মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় গোবিন্দগঞ্জ থানায় একটি ইউডি মামলা দায়ের হয়েছে।

Header Ad

নির্বাচনের ট্রেন যাত্রা শুরু করেছে: প্রধান উপদেষ্টা

ছবি: সংগৃহীত

নির্বাচনের ট্রেন যাত্রা শুরু করেছে, এটা আর থামবে না। কিন্তু যেতে যেতে আমাদের অনেকগুলো কাজ সেরে ফেলতে হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এই ট্রেন শেষ স্টেশনে কখন পৌঁছাবে সেটা নির্ভর করবে কত তাড়াতাড়ি আমরা রেল লাইনগুলো বসিয়ে দিতে পারি। আর তা হবে রাজনৈতিক দলসমূহের ঐক্যমত্যের মাধ্যমে।

অন্তর্বর্তী সরকারের ১০০ দিন পূর্তি উপলক্ষে রোববার (১৭ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাতটায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি একথা জানান।

নির্বাচন কবে হবে এই প্রশ্ন সবার মনেই আছে জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আপনারা লক্ষ্য করেছেন নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে আমরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছি। কয়েকদিনের মধ্যে নির্বাচন কমিশন গঠন হয়ে যাবে। তারপর থেকে নির্বাচন আয়োজন করার সমস্ত দায়িত্ব তাদের ওপর বর্তাবে।

তিনি বলেন, একটি নির্বাচন কমিশন গঠন করে দিলেই নির্বাচন আয়োজনে আমাদের দায়িত্ব শেষ। রাষ্ট্র ব্যবস্থায় সংস্কার আমাদের এই সরকারের অন্যতম অঙ্গীকার। আপনারাই আমাদেরকে এই ম্যান্ডেট দিয়েছেন। যে ছয়টি সংস্কার কমিশন আমরা শুরুতে গঠন করেছিলাম তারা ইতোমধ্যে তাদের কার্যক্রম অনেক দূর এগিয়ে নিয়েছে। যার মধ্যে একটি হলো নির্বাচন সংস্কার কমিশন। নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য এই কমিশনের সুপারিশমালা অত্যন্ত জরুরি। তাদের প্ল্যাটফর্মে যান। আপনার মতামত খোলাখুলিভাবে তুলে ধরুন। আপনি দেশের মালিক। আপনি বলে দিন আপনি কি চান। কীভাবে চান।

তিনি আরও বলেন, নির্বাচন নিয়ে আপনাদের সকল বক্তব্য বিনাদ্বিধায় বলতে থাকুন। সবার মনের কথা তুলে ধরুন। আমার অনুরোধ সংস্কারের কথাটাও একই সঙ্গে বলুন। সংস্কারকে পাশ কাটিয়ে যাবেন না। নির্বাচনের কথা বলার সঙ্গে নির্বাচন ও অন্যান্য ক্ষেত্রে সংস্কারের কথাটিও বলুন। সংস্কার হলো জাতির দীর্ঘ মেয়াদি জীবনী শক্তি। সংস্কার জাতিকে বিশেষ করে আমাদের তরুণ-তরুণীদের নতুন পৃথিবী সৃষ্টির সুযোগ দেবে। জাতিকে বঞ্চিত করবেন না।

নির্বাচন আয়োজনে যে সংস্কার কমিশনের সুপারিশমালায় রাজনৈতিক দলসমূহ এবং দেশের সব মানুষের মতামত অপরিহার্য সে কমিশন হলো সংবিধান সংস্কার কমিশন। এই সুপারিশমালার কোন অংশ সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে তার ভিত্তিতে নির্বাচনী আইন সংশোধন করতে হবে। সমান্তরালভাবে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার প্রক্রিয়া চলতে থাকবে, বলেন তিনি।

ড. ইউনূস বলেন, আমি নিশ্চিত নই, সংস্কার প্রস্তাবসমূহ বাস্তবায়নের সুযোগ আমরা কতটুকু পাবো। তবে আমি আপনাদের কথা দিচ্ছি, আপনারা সুযোগ দিলে প্রয়োজনীয় কিছু অত্যাবশ্যকীয় সংস্কার কাজ শেষ করেই আমরা আপনাদের কাঙ্ক্ষিত নির্বাচন আয়োজন করবো। ততদিন পর্যন্ত আমি আপনাদের ধৈর্য্য ধারণ করার অনুরোধ করবো। আমরা চাইবো, আমরা যেন এমন একটি নির্বাচন ব্যবস্থা সৃষ্টি করতে পারি যা যুগযুগ ধরে অনুসরণ করা হবে। এর ফলে সাংবাৎসরিক রাজনৈতিক সংকট থেকে আমাদের দেশ রক্ষা পাবে। এজন্য প্রয়োজনীয় সময়টুকু আমি আপনাদের কাছে চেয়ে নিচ্ছি। নির্বাচনী সংস্কারের সিদ্ধান্ত হয়ে গেলে খুব দ্রুত আপনারা নির্বাচনের রোডম্যাপও পেয়ে যাবেন।

তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার সৃষ্টি হয়েছে রাজনীতিকে নীতির কাঠামোয় আনার জন্য, এবং রাজনীতির জন্য নতুন পরিবেশ সৃষ্টির নিবিড় আকাঙ্ক্ষা থেকে। এই আকাঙ্ক্ষা পূরণ করা থেকে জাতিকে বঞ্চিত করবেন না।

Header Ad

ঢাবি ছাত্রদলের ৬ নেতাকে অব্যাহতি

ছবি: সংগৃহীত

সদ্যঘোষিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে থেকে ছয়জনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

রবিবার (১৭ নভেম্বর) সন্ধ্যায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক (সহ-সভাপতি পদমর্যাদা) মো. জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির ওই ছয়জনকে অব্যাহতি দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।

এতে আরো বলা হয়, গত ১৪ নভেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রকাশ করা হয়।

কমিটি ঘোষণার পর কিছু অভিযোগ উত্থাপিত হলে কেন্দ্রীয় সংসদের পক্ষ থেকে অভিযোগগুলো তদন্তের জন্য কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে ছয়জনকে পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

অব্যাহতিপ্রাপ্তরা হলেন- সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ পাওয়া সাইফুল ইসলাম রিমন ও মাহাদী ইসলাম নিয়ন, জেন্ডার ন্যায্যতা ও সমতাবিষয়ক সম্পাদক সৈয়দা সুকাইনা নাফিসা তরঙ্গ, সহ-পরিবেশ ও জলবায়ুবিষয়ক সম্পাদক ইমরান হোসেন এবং সদস্য আব্দুল্লাহ আল মামুন ও রায়হান হোসেন।

গত ১৪ নভেম্বর ২৪২ সদস্যবিশিষ্ট ঢাবি শাখা ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়।

এ কমিটিতে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের একাধিক কর্মী এবং বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে নিয়ে বিদ্রুপকারী এক শিক্ষার্থী পদ পেয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে।

ওই দিনই ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সভাপতি জহির রায়হান আহমেদ ও এবিএম ইজাজুল কবির রুয়েলের নেতৃত্বে দুই সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতেই এই ছয়জনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তদন্ত কমিটির কাজ চলমান থাকবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

নিখোঁজের চারদিন পর নদী থেকে শিশুর মরদেহ উদ্ধার
নির্বাচনের ট্রেন যাত্রা শুরু করেছে: প্রধান উপদেষ্টা
ঢাবি ছাত্রদলের ৬ নেতাকে অব্যাহতি
গাইবান্ধায় আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি কারাগারে
নখের পাশে চামড়া ওঠে কেন, করণীয় কী?
মেট্রোরেলের এমআরটি-৫ প্রকল্পে ব্যয় কমলো ৭ হাজার কোটি টাকা
সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস
সাবেক স্পিকার শিরীন শারমিন ও তাঁর স্বামীর পাসপোর্ট আবেদন স্থগিত
বন্ধু ছাঁটাই করার দিন আজ
বিমানবন্দর থেকে দেশ টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরিফ হাসান গ্রেফতার
মাওলানা ভাসানী সাম্রাজ্যবাদবিরোধী সংগ্রামের প্রেরণাদাতা: তারেক রহমান
ইসরায়েলের পাঁচ সামরিক ঘাঁটিতে হিজবুল্লাহর রকেট হামলা
পরীক্ষায় ফেলের হতাশা থেকে স্কুলে হামলা, নিহত ৮
মজলুম জননেতা মাওলানা ভাসানীর ৪৮তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ
উত্তরের জনপদে শীতের আমেজ, পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা নেমেছে ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস
নতুন প্রেমে মজেছেন অভিনেত্রী আশনা হাবিব ভাবনা
এক ম্যাচ হাতে রেখেই টি-টোয়েন্টি সিরিজ নিশ্চিত অস্ট্রেলিয়ার
ইলন মাস্কের সঙ্গে বৈঠকের কথা নাকচ করেছে ইরান
সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত ইসলামি বক্তা আব্দুল হাই সাইফুল্লাহ
পাকিস্তানে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হামলায় ৭ সেনা নিহত