শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

আদালতের সর্বস্তরে বাংলা ভাষা প্রচলন জরুরি

মানুষ হিসেবে কথা বলা বা মুখ খোলা একটি সহজাত প্রবৃত্তি। সত্যি কথা বলতে কী আমরা কেউই নির্বাক পৃথিবীর সদস্য হতে চাই না। আমাদের আশা-নিরাশা, আত্মার বিহ্বলিত ধ্বনি, সংশয়, বিশ্বাস, অনুমান, অনুসন্ধান কিংবা আবিষ্কার ইত্যাদি সবকিছুই ভাষার দখলে। মাতৃভাষা একটি জাতির আত্মপরিচয় এবং শ্রেষ্ঠতম সম্পদ। বাংলাদেশের মাতৃভাষা ও রাষ্ট্রভাষা উভয়ই বাংলা। বিধায় নাগরিক জীবনের সর্বক্ষেত্রে সার্থকভাবে প্রয়োগের একটি ভাষা।

রাষ্ট্রের আইন ও শাসন বিভাগের মতো বিচার বিভাগে আদালতের সর্বস্তরে বাংলা ভাষার প্রচলন আজও যথাযথভাবে হয়নি। অধঃস্তন আদালতে বাংলা ভাষার প্রচলন হলেও উচ্চ আদালতের ব্যবহারিক ভাষা এখনো ইংরেজি। জনগণ নিজ ভাষায় আইনি প্রতিকার রায় বা আদেশ পাওয়ার জন্যই মূলত আর্থিক ব্যয় ও দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করে। বাংলায় বিচারকাজ না হওয়ায় সাধারণ জনগণ মাতৃভাষায় বিচার প্রাপ্তির অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এতে একদিকে ভাষার জন্য আমাদের অর্জন লুণ্ঠিত হচ্ছে আর অপরদিকে বিচারিক ফলাফল বিচারপ্রার্থীদের মনে দুর্বোধ্যতার জাল ছড়িয়ে দিচ্ছে।

দেশের সকল আদালতই প্রজাতন্ত্রের আদালত। বিচার প্রার্থনা থেকে শুরু করে বিচার পরিচালনা, রায় দেওয়া, এমনকি রায় কার্যকর করা পর্যন্ত সকল কার্যক্রম ভাষার মাধ্যমে করতে হয়। আদালতের একটি রায় শুধুমাত্র কিছু প্রাণহীন অক্ষরের সমষ্টি নয়। ক্ষেত্র বিশেষে একটি রায় একটি জাতি ও রাষ্ট্রের সংঘবদ্ধ চিন্তার মহিমান্বিত রূপ। মাতৃভাষায় রায় দেওয়া হলে মামলার বাদী-বিবাদীকে রায়ের সারমর্ম বোঝা বা পরিকল্পিত পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে সহজ হয়।

অধঃস্তন আদালতে আরজি, জবাব, আপত্তি, নালিশ, আদেশ ও রায়সমূহ সাধারণত বাংলা ভাষাতেই পরিচালিত হচ্ছে। তবে বাংলা ভাষায় বিচারকাজ হলেও আরজিসমূহে মানসম্পন্ন বোধগম্য বাংলা ভাষার অভাব দেখা যায়। তবে উচ্চ আদালতে বাংলার পরিবর্তে ইংরেজির প্রাধান্য ও ব্যবহার চলছে। উচ্চ আদালতে যখন ইংরেজি ভাষায় রায় ঘোষণা করা হয় তখন প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে রায়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলের জন্য রায়ের বিষয়বস্তু, রায়ের কারণ উপলব্ধি করা কঠিন হয়ে পড়ে।

বিচারপ্রার্থী সকলেই বাংলা ভাষাভাষী। আদালতের সিদ্ধান্ত ও রায় বাংলা ভাষা ব্যতীত ইংরেজি ভাষায় লেখা হলে তা বোধগম্যতার জন্য আইনজীবীগণকে অতিরিক্ত ফি দিয়ে অনুবাদ করাতে হয়। বিশেষ করে দেওয়ানি মামলার ক্ষেত্রে আদালতের রায় ও আদেশে কার জমি কে পেল, কেন পেল, কার অংশ কতটুকু হলো, নিষেধাজ্ঞা কোন কোন বিষয়ে বা কতদিন পর্যন্ত দেওয়া হলো-এ সকল বিষয়ে বাংলা প্রয়োগ না করলে রায়ের গুরুত্ব থাকে না।

অন্যদিকে, অনেক সময় ফৌজদারি মামলায় রায়ে পুলিশ প্রশাসনের জন্য নতুন নির্দেশনা থাকে যেমন-কোনো ব্যক্তিকে কখন ওয়ারেন্ট ছাড়া গ্রেপ্তার করা যাবে, কখন কাকে রিমান্ডে নেওয়া যাবে বা রিমান্ডে নির্যাতন করা আইনসঙ্গত কি না ইত্যাদি শুধুমাত্র ইংরেজিতে রায় হওয়ার কারণে মাঠ পর্যায়ের পুলিশ অফিসার জানতে পারে না। এভাবে প্রায় ক্ষেত্রেই বিচারপ্রার্থীরা আদালতের চিন্তা ও যুক্তির কোনোটাই বুঝতে পারে না।

বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রভাষা ‘বাংলা’ একমাত্র রাষ্ট্রভাষারূপে স্বীকৃত। সাংবিধানিক বিধানাবলী সম্পূর্ণরূপে কার্যকর এবং সর্বস্তরে বাংলা ভাষার ব্যবহার বাধ্যতামূলক করতে ১৯৮৭ সালে ‘বাংলা ভাষা প্রচলন আইন’ করা হলেও দেওয়ানি ও ফৌজদারি উভয় কার্যবিধিতে অধঃস্তন আদালতের ভাষা হিসেবে বাংলা ভাষা ব্যবহারের কোনো আইনি বাধ্যবাধকতা নেই।

উচ্চ আদালতে ২০১২ সালে হাইকোর্ট বিধিমালা, ১৯৭৩ সংশোধনের মাধ্যমে হাইকোর্টে এবং আপিল বিভাগে বাংলা ও ইংরেজি দুই ভাষা ব্যবহারে কোনো বাধা নেই। এই সংশোধনীর মাধ্যমে বাংলা ভাষায় মেমো অব আপিল, আবেদনপত্র ইত্যাদি দাখিল বা বিজ্ঞ বিচারপতিদের সাবলীলভাবে বাংলা ভাষায় তাদের রায় লেখার সব রকম বাধা অপসারিত হয়েছে। বর্তমানে ইংরেজির পাশাপাশি কিছুটা বাংলায় রায় লেখা শুরু হয়েছে, তবে এর সংখ্যা খুবই কম।

সুপ্রিম কোর্টসহ অনেক আদালতে আজও আদালতের একমাত্র ভাষা হিসেবে বাংলা ভাষা প্রতিষ্ঠা পায়নি। এর পেছনের ইতিহাস হচ্ছে, বাংলাদেশের আইন ও আদালত ব্যবস্থা প্রাচীন ভারতবর্ষের হিন্দু, মুসলিম, ব্রিটিশ ও পাকিস্তান শাসনামলের আদালত ব্যবস্থার উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। হিন্দু ও মুসলিম আমলে আদালতে সংস্কৃত ও ফার্সি ভাষার প্রচলন থাকলেও ব্রিটিশ ভারতে ইংরেজি ভাষার প্রচলন শুরু হয়। পরবর্তী সময়ে ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শাসনের অবসান হলেও বিচার ব্যবস্থার তেমন কোনো পরিবর্তন ঘটেনি। এই দীর্ঘ সময়ের ব্যবধানে ভৌগোলিক, রাজনৈতিক, আর্থ-সামাজিক, জনগণের চিন্তা-চেতনার পরিবর্তন হলেও বিচার ব্যবস্থায় আশানুরূপ ও সময়োপযোগী পরিবর্তন হয়নি।

দেশের অধঃস্তন আদালতে আরজি, জবাব, আপত্তি, নালিশ, বিভিন্ন দরখাস্তসমূহ সাধারনত বাংলা ভাষাতেই পরিচালিত হচ্ছে। তবে উচ্চ আদালতের অবস্থা ভিন্ন প্রকৃতির। ১৯৯০ সালের পূর্বে হাইকোর্ট বিভাগে কোনো মামলার রায় বাংলা ভাষায় প্রকাশিত হয়নি। ১৯৯০ সালে সুপ্রিম কোর্টের ইতিহাসে সর্বপ্রথম মরহুম বিচারপতি এ আর এম আমীরুল ইসলাম চৌধুরী আদালত কার্যক্রম বাংলা ভাষায় লেখা শুরু করেছিলেন। পরবর্তীকালে বিভিন্ন সময় বিচারপতি কাজী এবাদুল হক ও বিচারপতি হামিদুল হক বাংলা ভাষায় রায় দিয়েছেন।

এরপর বিচারপতি কাজী এবাদুল হক ও বিচারপতি হামিদুল হক ‘নজরুল ইসলাম বনাম রাষ্ট্র’ নামক ফৌজদারি রিভিশন মামলায় বাংলায় রায় প্রদান করে দেখিয়েছেন যে, উচ্চ আদালতে বাংলা ভাষা ব্যবহার সম্ভব। এটি ছিল একটি নজির সৃষ্টিকারী রায় এবং আইন সাময়িকী ঢাকা ল’ রিপোর্টস এ প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় এই যে, ১৯৯৮ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত হাইকোর্ট বিভাগে কোনো মামলার রায় বাংলা ভাষায় প্রদান করা হয়নি।

এভাবে সাবেক বিচারপতি কাজী এবাদুল হক, বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমানসহ বিচারপতি আমিরুল ইসলাম চৌধুরী, বিচারপতি ফজলুল করিম, বিচারপতি একে বদরুল হক, বিচারপতি মোয়াজ্জেম হোসেন, বিচারপতি আব্দুল কুদ্দুস প্রমূখ বাংলায় রায় লিখে প্রমান করেছেন উচ্চ আদালতে বাংলা ব্যবহার সম্ভব। পুনরায় ২০০৭ সাল থেকে স্বপ্রণোদিত হয়ে সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকসহ কয়েকজন বিচারপতি বাংলা ভাষায় রায় প্রদান করেছেন।

বিচারক হিসেবে তারা আইনের শাসন ও সাংবিধানিক শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করে গেছেন। যদিও ২০০৯ সালের পূর্বে আপিল বিভাগে কোনো মামলায় এ পর্যন্ত বাংলা ভাষার ব্যবহার হয়নি। উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে ভাষার মাস ফেব্রুয়ারির ১ তারিখে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম বিচার বিভাগের ইতিহাসে সর্বপ্রথম দেড়শ মামলায় বাংলায় আদেশ ও সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। একই দিনে বিচারপতি নায়মা হায়দার ও বিচারপতি মো. আক্কাস আলী বাংলায় রায় ঘোষণা করেছেন।

এটি সর্বজনস্বীকৃত যে, আন্তর্জাতিক ভাষা হিসেবে ইংরেজি ভাষা শেখা, জানা ও উপযুক্ত স্থানে চর্চার গুরুত্ব অনস্বীকার্য। জাতীয় উন্নতিকল্পে বিদেশি ভাষায় জ্ঞানার্জন ও সেই ভাষায় প্রকাশিত বিভিন্ন প্রকাশনা, আইন, বিধি-বিধান ও এর অধ্যয়ন, গবেষণা, অনুশীলন ও প্রয়োগের মাধ্যমে সুশাসন প্রতিষ্ঠার প্রয়াস সর্বদাই প্রশংসিত ও স্বাগত। তবে বিচার প্রার্থী বিশাল জনগোষ্ঠীর সহজে বোধগম্যতার কথা বিবেচনা করে আদালতের ভাষা বাংলা বা ইংরেজির পাশাপাশি বাংলা করা যেতে পারে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকলের সদিচ্ছা এ ভাষার যথার্থ প্রয়োগকে সহজ ও গতিশীল করবে।

আদালতে বাংলা ভাষা প্রচলনের প্রয়োজনীয়তা আদালত নাগরিকদের ন্যায়বিচার প্রাপ্তির একমাত্র আশ্রয়স্থল যেখানে দেশের আইনসমূহ সক্রিয় ভূমিকা রাখে এবং জনগণ আইনের সেবা ভোগ করে। আইনের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং আইনের ব্যাখ্যা দেওয়ার গুরুদায়িত্ব এই আদালতের। এই অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হলে আদালতে বিচার পরিচালনার ভাষা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষ প্রাত্যহিক জীবনে নিয়মিত প্রয়োজন হয় এমন কিছু বিশেষায়িত বিষয়সমূহের ভাষা বুঝতে অপারগ।

তাই মহামান্য আদালতের প্রদত্ত কোনো রায়ে যখন মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করা হয়, তখন ক্ষতিগ্রস্ত পক্ষ বা আসামি যেই হোন না কেন, তিনি ইংরেজি ভাষার কারণে প্রকাশিত রায় বুঝতে পারে না, জানতে পারে না কী কারণে এবং কিসের ভিত্তিতে তার দণ্ডাদেশ বহাল থাকলো বা খালাস হলো। দেশের মাটিতে প্রতিষ্ঠিত আদালতে বাংলাদেশ নাগরিক অবশ্যই মামলার ফলাফল জানার ও বোঝার অধিকারী। এ ছাড়া, সকলের পক্ষে ইংরেজি ভাষার শুদ্ধ ব্যবহার করা সম্ভব হয় না। ফলে অশুদ্ধ ইংরেজি শব্দ ও বাক্য অনেক ক্ষেত্রেই বিপত্তির কারণ ঘটায়। তাই দেশের বিচার আদালতের ভাষা বাংলা হওয়াটাই যৌক্তিক।

অধ্যাপক, আইন বিভাগ, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়

 

Header Ad
Header Ad

রাঙামাটিতে সিএনজি-পিকআপ সংঘর্ষে নিহত ৫

প্রতীকী ছবি

রাঙামাটির কাউখালীতে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন পাঁচজন। শনিবার (২৬ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার রাবারবাগান এলাকায় একটি পিকআপ ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

তাৎক্ষণিকভাবে নিহতদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কাউখালী উপজেলার বেতবুনিয়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এফ আই ইসহাক জানান, পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে এবং উদ্ধার কার্যক্রম চলছে। দুর্ঘটনার বিস্তারিত এখনও জানা যায়নি।

বিস্তারিত আসছে...

Header Ad
Header Ad

রেফারির বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছে রিয়াল, ফাইনাল ম্যাচ বয়কটের হুমকি

ছবি: সংগৃহীত

কোপা দেল রে ফাইনালের আগে মাঠের লড়াইয়ের আগেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে স্প্যানিশ ফুটবল অঙ্গন। হাইভোল্টেজ এই ম্যাচের রেফারিং নিয়ে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করে ম্যাচ-পূর্ব সকল আনুষ্ঠানিকতা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। ক্লাবটির ভাষ্য, রেফারিদের সাম্প্রতিক বক্তব্যে "স্পষ্ট বিদ্বেষ ও অসম্মান" ফুটে উঠেছে, যা তাদের পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব নয়।

শুক্রবার এক বিবৃতিতে রিয়াল জানায়, তারা ফাইনালের আগে প্রচলিত সকল প্রটোকল—ম্যাচ-পূর্ব প্রেস কনফারেন্স, মিডিয়ায় উন্মুক্ত অনুশীলন, প্রেসিডেন্টদের ডিনার এবং ঐতিহ্যবাহী ফটোসেশন—বর্জন করবে।

উত্তেজনার সূত্রপাত ক্লাবটির নিজস্ব চ্যানেল রিয়াল মাদ্রিদ টিভি-তে সম্প্রচারিত এক ভিডিও ঘিরে। সেখানে ফাইনালের রেফারি রিকার্দো দে বুরগোস বেংগোয়েচিয়ার প্রতি তীব্র সমালোচনা করা হয়। পরে এক সাংবাদিক সম্মেলনে আবেগপ্রবণ রেফারি জানান, এসব সমালোচনার প্রভাব তার ব্যক্তিগত জীবনেও পড়েছে। “যখন আপনার সন্তান স্কুলে গিয়ে শুনে—তার বাবা একজন চোর—তখন সেটা সত্যিই ভয়াবহ অভিজ্ঞতা,” বলেন তিনি, চোখের পানি মুছতে মুছতে।

তবে বিতর্ক এখানেই শেষ হয়নি। ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি (ভিএআর) পাবলো গনসালেস ফুয়ের্তেসের এক মন্তব্যে আরও জ্বালানি পড়ে আগুনে। তিনি বলেন, “রেফারিরা এক হচ্ছেন এবং রিয়াল মাদ্রিদ টিভির চাপ মোকাবেলায় গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।” এই বক্তব্যকেও হুমকি হিসেবে দেখছে রিয়াল।

স্প্যানিশ মিডিয়ায় জল্পনা ছিল—রিয়াল হয়তো ফাইনালেই অংশ নেবে না। তবে ক্লাবের পক্ষ থেকে পরে দ্বিতীয় বিবৃতিতে জানানো হয়, ম্যাচ বর্জনের কোনো পরিকল্পনা নেই। “রিয়াল মাদ্রিদ কখনও ফাইনালে না খেলার কথা বিবেচনা করেনি,” জানানো হয় স্পষ্ট ভাষায়।

এদিকে, লা লিগা প্রেসিডেন্ট হাভিয়ের তেবাস ক্লাবটির এই অবস্থানকে 'ক্ষমতার খেলা' বলে আখ্যায়িত করেছেন। রেফারিরাও ইঙ্গিত দিয়েছেন, রিয়াল মাদ্রিদ টিভির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।

উল্লেখ্য, এ ধরনের বর্জন রিয়ালের জন্য নতুন নয়। গত অক্টোবরে ব্যালন ডি’অর অনুষ্ঠানে ভিনিসিয়ুস জুনিয়রকে যথাযথ সম্মান না জানানোর প্রতিবাদে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান বর্জন করেছিল ক্লাবটি। তাদের ভাষায়, “যেখানে সম্মান নেই, সেখানে রিয়াল মাদ্রিদ যায় না।”

Header Ad
Header Ad

আইন উপদেষ্টাকে জড়িয়ে ভারতের গণমাধ্যমে মিথ্যা প্রতিবেদন, মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি

আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। ছবি: সংগৃহীত

ভারতের একটি অনলাইন পোর্টালে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলকে জড়িয়ে প্রকাশিত মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর প্রতিবেদন নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। এ ধরনের প্রতিবেদন সাংবাদিকতার নৈতিকতা ও সত্যের পরিপন্থী বলেও মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) রাতে ওই বিবৃতি গণমাধ্যমে পাঠানো হয়।

এতে বলা হয়, বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) নিউজ অ্যারেনা ইন্ডিয়া অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল সম্পর্কে একাধিক মিথ্যা, মানহানিকর ও দায়িত্বজ্ঞানহীন অভিযোগ উত্থাপন করেছে। প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিল, ‘বাংলাদেশ লিগ্যাল অ্যাডভাইজার মিটস টপ লস্কর–ই–তাইয়েবার অপারেটিভ পোস্ট জম্মু অ্যান্ড কাশ্মীর অ্যাটাক’।

প্রতিবেদনে অভিযোগ করা হয়, কাশ্মীরের পেহেলগামে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের পর লস্কর-ই-তাইয়েবার একজন শীর্ষ নেতার সঙ্গে উপদেষ্টা আসিফ নজরুল সাক্ষাৎ করেছেন, যা পুরোপুরি ভিত্তিহীন এবং কাল্পনিক।

প্রতিবেদনে হেফাজতে ইসলামের নেতাদের ভুল পরিচয়ে তুলে ধরা হয়েছে। হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশে বৈধভাবে পরিচালিত আলেম ও  ইসলামি সংগঠনগুলোর একটি প্ল্যাটফর্ম। প্রতিবেদনে যাদের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, তারা হেফাজতে ইসলামের নেতা, কোনো সন্ত্রাসী সংগঠনের সঙ্গে তারা যুক্ত নন। শেখ হাসিনার স্বৈরশাসনামলে হাজার হাজার হেফাজত সদস্য রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যা ও সাজানো মামলার শিকার হন। অন্তর্বর্তী সরকারের বিচার ও আইনি সংস্কারের অঙ্গীকারের অংশ হিসেবে আসিফ নজরুল তার দায়িত্বপূর্ণ পদে থেকে হেফাজতের এই ভুক্তভোগীদের ন্যায়বিচারের আবেদন শুনতে হেফাজতের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করেন।

হেফাজতের নেতাদের সঙ্গে আইন উপদেষ্টার বৈঠক যেদিন হয়েছে বলে নিউজ অ্যারেনা ইন্ডিয়া উল্লেখ করেছে, তার অন্তত তিন দিন আগেই ওই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনার বিষয় ছিল শুধু আইনি প্রক্রিয়া ও মামলার তালিকা হস্তান্তর। বৈঠকের শেষে প্রতিনিধিদলের অনুরোধে একটি ছবি তোলা হয়, যা এমন সভায় প্রচলিত ও স্বাভাবিক রীতি।

হেফাজতের বর্তমান নেতৃত্ব বাংলাদেশের জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের রাজনৈতিক সংলাপে অংশগ্রহণ করে। হেফাজতের নেতারা ঢাকায় পশ্চিমা দেশগুলোর দূতাবাসগুলোর সঙ্গেও নিয়মিত বৈঠক করে থাকেন, যা তাদের রাজনৈতিক বৈধতা ও আন্তর্জাতিক সম্পৃক্ততার বিষয়টিকে প্রতিফলিত করে।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ স্বাধীন মানবাধিকার সংগঠনগুলো পূর্ববর্তী সরকারের দমনমূলক কর্মকাণ্ড ও হেফাজতসহ বিরোধীদলীয় কর্মীদের ওপর নিপীড়নের ঘটনাগুলো নথিবদ্ধ করেছে, সমালোচনাও করেছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলোর সেই প্রতিবেদনগুলো প্রমাণ করে যে হেফাজতের নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে এসব মামলার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ছিল, যা বর্তমান সরকারের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার প্রচেষ্টাকে সমর্থন করে।

ভারতীয় গণমাধ্যমটির প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে যে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল তার ফেসবুক পেজে ভারতের নেতাদের বিরুদ্ধে উসকানিমূলক মন্তব্য করেছেন। এ বিষয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, আসলে বিষয়টি হলো ওই পোস্ট ছিল একজন ভারতীয়র লেখা, যিনি নিরাপত্তাব্যবস্থার ঘাটতি নিয়ে সমালোচনা করেন। সেই পোস্টটি শেয়ার করে পেহেলগামে হামলার নিন্দা জানান আসিফ নজরুল। পরে সম্ভাব্য বিভ্রান্তির আশঙ্কা করে তিনি স্বেচ্ছায় পোস্টটি কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মুছে ফেলেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা সকল গণমাধ্যমকে অনুরোধ করছি, যেন তারা সংবাদ প্রকাশের আগে যথাযথ যাচাই করে এবং দায়িত্বশীল সাংবাদিকতার নীতি অনুসরণ করে।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, পেহেলগাম হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়ে, নিহত ব্যক্তিদের প্রতি শ্রদ্ধা ও তাদের স্বজনদের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। একই সঙ্গে পেহেলগামের হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানান তিনি।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

রাঙামাটিতে সিএনজি-পিকআপ সংঘর্ষে নিহত ৫
রেফারির বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছে রিয়াল, ফাইনাল ম্যাচ বয়কটের হুমকি
আইন উপদেষ্টাকে জড়িয়ে ভারতের গণমাধ্যমে মিথ্যা প্রতিবেদন, মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি
নিজ দেশেই বিমান হামলা চালালো ভারত, ‘অসাবধানতা’ বলছে বিমান বাহিনী
গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত আরও ৮৪ ফিলিস্তিনি
আইনি নোটিশ প্রসঙ্গে যা বললেন ডা. তাসনিম জারা
ভারত-পাকিস্তান বিরোধে উত্তেজনা, শান্তির বার্তা নিয়ে এগিয়ে এলো ইরান
তারেক রহমানকে নিয়ে দ্য উইকের কাভার স্টোরি ‘নিয়তির সন্তান’
কুয়েটের ভিসি ও প্রো-ভিসিকে অব্যাহতি দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি
মেধাসম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহারে সবাইকে উদ্যোগী হতে হবে: প্রধান উপদেষ্টা
বেনাপোলে ৬ নারী ছিনতাইকারী গ্রেফতার
‘সংস্কার না নির্বাচন’ এই খেলা বাদ দিয়ে বিচার করুন: সারজিস আলম
যুদ্ধ বন্ধের আলোচনার মধ্যেই মস্কোয় গাড়িবোমা হামলায় রুশ জেনারেল নিহত
পোপ ফ্রান্সিসকে শেষ বিদায় জানাতে রোমে পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের 'বি' ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন
পাকিস্তানে বোমা বিস্ফোরণে নিরাপত্তা বাহিনীর ৪ সদস্য নিহত
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিলেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ
নওগাঁয় পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগে প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার ১
শিগগিরই স্থলভিত্তিক এলএনজি টার্মিনাল স্থাপন করবে সরকার: প্রেস সচিব
টাঙ্গাইলে ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে মাছ ব্যবসায়ী খুন