বুধবার, ২ এপ্রিল ২০২৫ | ১৯ চৈত্র ১৪৩১
Dhaka Prokash

আদালতের সর্বস্তরে বাংলা ভাষা প্রচলন জরুরি

মানুষ হিসেবে কথা বলা বা মুখ খোলা একটি সহজাত প্রবৃত্তি। সত্যি কথা বলতে কী আমরা কেউই নির্বাক পৃথিবীর সদস্য হতে চাই না। আমাদের আশা-নিরাশা, আত্মার বিহ্বলিত ধ্বনি, সংশয়, বিশ্বাস, অনুমান, অনুসন্ধান কিংবা আবিষ্কার ইত্যাদি সবকিছুই ভাষার দখলে। মাতৃভাষা একটি জাতির আত্মপরিচয় এবং শ্রেষ্ঠতম সম্পদ। বাংলাদেশের মাতৃভাষা ও রাষ্ট্রভাষা উভয়ই বাংলা। বিধায় নাগরিক জীবনের সর্বক্ষেত্রে সার্থকভাবে প্রয়োগের একটি ভাষা।

রাষ্ট্রের আইন ও শাসন বিভাগের মতো বিচার বিভাগে আদালতের সর্বস্তরে বাংলা ভাষার প্রচলন আজও যথাযথভাবে হয়নি। অধঃস্তন আদালতে বাংলা ভাষার প্রচলন হলেও উচ্চ আদালতের ব্যবহারিক ভাষা এখনো ইংরেজি। জনগণ নিজ ভাষায় আইনি প্রতিকার রায় বা আদেশ পাওয়ার জন্যই মূলত আর্থিক ব্যয় ও দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করে। বাংলায় বিচারকাজ না হওয়ায় সাধারণ জনগণ মাতৃভাষায় বিচার প্রাপ্তির অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এতে একদিকে ভাষার জন্য আমাদের অর্জন লুণ্ঠিত হচ্ছে আর অপরদিকে বিচারিক ফলাফল বিচারপ্রার্থীদের মনে দুর্বোধ্যতার জাল ছড়িয়ে দিচ্ছে।

দেশের সকল আদালতই প্রজাতন্ত্রের আদালত। বিচার প্রার্থনা থেকে শুরু করে বিচার পরিচালনা, রায় দেওয়া, এমনকি রায় কার্যকর করা পর্যন্ত সকল কার্যক্রম ভাষার মাধ্যমে করতে হয়। আদালতের একটি রায় শুধুমাত্র কিছু প্রাণহীন অক্ষরের সমষ্টি নয়। ক্ষেত্র বিশেষে একটি রায় একটি জাতি ও রাষ্ট্রের সংঘবদ্ধ চিন্তার মহিমান্বিত রূপ। মাতৃভাষায় রায় দেওয়া হলে মামলার বাদী-বিবাদীকে রায়ের সারমর্ম বোঝা বা পরিকল্পিত পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে সহজ হয়।

অধঃস্তন আদালতে আরজি, জবাব, আপত্তি, নালিশ, আদেশ ও রায়সমূহ সাধারণত বাংলা ভাষাতেই পরিচালিত হচ্ছে। তবে বাংলা ভাষায় বিচারকাজ হলেও আরজিসমূহে মানসম্পন্ন বোধগম্য বাংলা ভাষার অভাব দেখা যায়। তবে উচ্চ আদালতে বাংলার পরিবর্তে ইংরেজির প্রাধান্য ও ব্যবহার চলছে। উচ্চ আদালতে যখন ইংরেজি ভাষায় রায় ঘোষণা করা হয় তখন প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে রায়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলের জন্য রায়ের বিষয়বস্তু, রায়ের কারণ উপলব্ধি করা কঠিন হয়ে পড়ে।

বিচারপ্রার্থী সকলেই বাংলা ভাষাভাষী। আদালতের সিদ্ধান্ত ও রায় বাংলা ভাষা ব্যতীত ইংরেজি ভাষায় লেখা হলে তা বোধগম্যতার জন্য আইনজীবীগণকে অতিরিক্ত ফি দিয়ে অনুবাদ করাতে হয়। বিশেষ করে দেওয়ানি মামলার ক্ষেত্রে আদালতের রায় ও আদেশে কার জমি কে পেল, কেন পেল, কার অংশ কতটুকু হলো, নিষেধাজ্ঞা কোন কোন বিষয়ে বা কতদিন পর্যন্ত দেওয়া হলো-এ সকল বিষয়ে বাংলা প্রয়োগ না করলে রায়ের গুরুত্ব থাকে না।

অন্যদিকে, অনেক সময় ফৌজদারি মামলায় রায়ে পুলিশ প্রশাসনের জন্য নতুন নির্দেশনা থাকে যেমন-কোনো ব্যক্তিকে কখন ওয়ারেন্ট ছাড়া গ্রেপ্তার করা যাবে, কখন কাকে রিমান্ডে নেওয়া যাবে বা রিমান্ডে নির্যাতন করা আইনসঙ্গত কি না ইত্যাদি শুধুমাত্র ইংরেজিতে রায় হওয়ার কারণে মাঠ পর্যায়ের পুলিশ অফিসার জানতে পারে না। এভাবে প্রায় ক্ষেত্রেই বিচারপ্রার্থীরা আদালতের চিন্তা ও যুক্তির কোনোটাই বুঝতে পারে না।

বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রভাষা ‘বাংলা’ একমাত্র রাষ্ট্রভাষারূপে স্বীকৃত। সাংবিধানিক বিধানাবলী সম্পূর্ণরূপে কার্যকর এবং সর্বস্তরে বাংলা ভাষার ব্যবহার বাধ্যতামূলক করতে ১৯৮৭ সালে ‘বাংলা ভাষা প্রচলন আইন’ করা হলেও দেওয়ানি ও ফৌজদারি উভয় কার্যবিধিতে অধঃস্তন আদালতের ভাষা হিসেবে বাংলা ভাষা ব্যবহারের কোনো আইনি বাধ্যবাধকতা নেই।

উচ্চ আদালতে ২০১২ সালে হাইকোর্ট বিধিমালা, ১৯৭৩ সংশোধনের মাধ্যমে হাইকোর্টে এবং আপিল বিভাগে বাংলা ও ইংরেজি দুই ভাষা ব্যবহারে কোনো বাধা নেই। এই সংশোধনীর মাধ্যমে বাংলা ভাষায় মেমো অব আপিল, আবেদনপত্র ইত্যাদি দাখিল বা বিজ্ঞ বিচারপতিদের সাবলীলভাবে বাংলা ভাষায় তাদের রায় লেখার সব রকম বাধা অপসারিত হয়েছে। বর্তমানে ইংরেজির পাশাপাশি কিছুটা বাংলায় রায় লেখা শুরু হয়েছে, তবে এর সংখ্যা খুবই কম।

সুপ্রিম কোর্টসহ অনেক আদালতে আজও আদালতের একমাত্র ভাষা হিসেবে বাংলা ভাষা প্রতিষ্ঠা পায়নি। এর পেছনের ইতিহাস হচ্ছে, বাংলাদেশের আইন ও আদালত ব্যবস্থা প্রাচীন ভারতবর্ষের হিন্দু, মুসলিম, ব্রিটিশ ও পাকিস্তান শাসনামলের আদালত ব্যবস্থার উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। হিন্দু ও মুসলিম আমলে আদালতে সংস্কৃত ও ফার্সি ভাষার প্রচলন থাকলেও ব্রিটিশ ভারতে ইংরেজি ভাষার প্রচলন শুরু হয়। পরবর্তী সময়ে ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শাসনের অবসান হলেও বিচার ব্যবস্থার তেমন কোনো পরিবর্তন ঘটেনি। এই দীর্ঘ সময়ের ব্যবধানে ভৌগোলিক, রাজনৈতিক, আর্থ-সামাজিক, জনগণের চিন্তা-চেতনার পরিবর্তন হলেও বিচার ব্যবস্থায় আশানুরূপ ও সময়োপযোগী পরিবর্তন হয়নি।

দেশের অধঃস্তন আদালতে আরজি, জবাব, আপত্তি, নালিশ, বিভিন্ন দরখাস্তসমূহ সাধারনত বাংলা ভাষাতেই পরিচালিত হচ্ছে। তবে উচ্চ আদালতের অবস্থা ভিন্ন প্রকৃতির। ১৯৯০ সালের পূর্বে হাইকোর্ট বিভাগে কোনো মামলার রায় বাংলা ভাষায় প্রকাশিত হয়নি। ১৯৯০ সালে সুপ্রিম কোর্টের ইতিহাসে সর্বপ্রথম মরহুম বিচারপতি এ আর এম আমীরুল ইসলাম চৌধুরী আদালত কার্যক্রম বাংলা ভাষায় লেখা শুরু করেছিলেন। পরবর্তীকালে বিভিন্ন সময় বিচারপতি কাজী এবাদুল হক ও বিচারপতি হামিদুল হক বাংলা ভাষায় রায় দিয়েছেন।

এরপর বিচারপতি কাজী এবাদুল হক ও বিচারপতি হামিদুল হক ‘নজরুল ইসলাম বনাম রাষ্ট্র’ নামক ফৌজদারি রিভিশন মামলায় বাংলায় রায় প্রদান করে দেখিয়েছেন যে, উচ্চ আদালতে বাংলা ভাষা ব্যবহার সম্ভব। এটি ছিল একটি নজির সৃষ্টিকারী রায় এবং আইন সাময়িকী ঢাকা ল’ রিপোর্টস এ প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় এই যে, ১৯৯৮ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত হাইকোর্ট বিভাগে কোনো মামলার রায় বাংলা ভাষায় প্রদান করা হয়নি।

এভাবে সাবেক বিচারপতি কাজী এবাদুল হক, বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমানসহ বিচারপতি আমিরুল ইসলাম চৌধুরী, বিচারপতি ফজলুল করিম, বিচারপতি একে বদরুল হক, বিচারপতি মোয়াজ্জেম হোসেন, বিচারপতি আব্দুল কুদ্দুস প্রমূখ বাংলায় রায় লিখে প্রমান করেছেন উচ্চ আদালতে বাংলা ব্যবহার সম্ভব। পুনরায় ২০০৭ সাল থেকে স্বপ্রণোদিত হয়ে সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকসহ কয়েকজন বিচারপতি বাংলা ভাষায় রায় প্রদান করেছেন।

বিচারক হিসেবে তারা আইনের শাসন ও সাংবিধানিক শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করে গেছেন। যদিও ২০০৯ সালের পূর্বে আপিল বিভাগে কোনো মামলায় এ পর্যন্ত বাংলা ভাষার ব্যবহার হয়নি। উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে ভাষার মাস ফেব্রুয়ারির ১ তারিখে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম বিচার বিভাগের ইতিহাসে সর্বপ্রথম দেড়শ মামলায় বাংলায় আদেশ ও সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। একই দিনে বিচারপতি নায়মা হায়দার ও বিচারপতি মো. আক্কাস আলী বাংলায় রায় ঘোষণা করেছেন।

এটি সর্বজনস্বীকৃত যে, আন্তর্জাতিক ভাষা হিসেবে ইংরেজি ভাষা শেখা, জানা ও উপযুক্ত স্থানে চর্চার গুরুত্ব অনস্বীকার্য। জাতীয় উন্নতিকল্পে বিদেশি ভাষায় জ্ঞানার্জন ও সেই ভাষায় প্রকাশিত বিভিন্ন প্রকাশনা, আইন, বিধি-বিধান ও এর অধ্যয়ন, গবেষণা, অনুশীলন ও প্রয়োগের মাধ্যমে সুশাসন প্রতিষ্ঠার প্রয়াস সর্বদাই প্রশংসিত ও স্বাগত। তবে বিচার প্রার্থী বিশাল জনগোষ্ঠীর সহজে বোধগম্যতার কথা বিবেচনা করে আদালতের ভাষা বাংলা বা ইংরেজির পাশাপাশি বাংলা করা যেতে পারে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকলের সদিচ্ছা এ ভাষার যথার্থ প্রয়োগকে সহজ ও গতিশীল করবে।

আদালতে বাংলা ভাষা প্রচলনের প্রয়োজনীয়তা আদালত নাগরিকদের ন্যায়বিচার প্রাপ্তির একমাত্র আশ্রয়স্থল যেখানে দেশের আইনসমূহ সক্রিয় ভূমিকা রাখে এবং জনগণ আইনের সেবা ভোগ করে। আইনের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং আইনের ব্যাখ্যা দেওয়ার গুরুদায়িত্ব এই আদালতের। এই অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হলে আদালতে বিচার পরিচালনার ভাষা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষ প্রাত্যহিক জীবনে নিয়মিত প্রয়োজন হয় এমন কিছু বিশেষায়িত বিষয়সমূহের ভাষা বুঝতে অপারগ।

তাই মহামান্য আদালতের প্রদত্ত কোনো রায়ে যখন মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করা হয়, তখন ক্ষতিগ্রস্ত পক্ষ বা আসামি যেই হোন না কেন, তিনি ইংরেজি ভাষার কারণে প্রকাশিত রায় বুঝতে পারে না, জানতে পারে না কী কারণে এবং কিসের ভিত্তিতে তার দণ্ডাদেশ বহাল থাকলো বা খালাস হলো। দেশের মাটিতে প্রতিষ্ঠিত আদালতে বাংলাদেশ নাগরিক অবশ্যই মামলার ফলাফল জানার ও বোঝার অধিকারী। এ ছাড়া, সকলের পক্ষে ইংরেজি ভাষার শুদ্ধ ব্যবহার করা সম্ভব হয় না। ফলে অশুদ্ধ ইংরেজি শব্দ ও বাক্য অনেক ক্ষেত্রেই বিপত্তির কারণ ঘটায়। তাই দেশের বিচার আদালতের ভাষা বাংলা হওয়াটাই যৌক্তিক।

অধ্যাপক, আইন বিভাগ, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়

 

Header Ad
Header Ad

সাতক্ষীরায় মদপানে দুই যুবকের মৃত্যু, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৯

ছবি: সংগৃহীত

সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলায় মদপানের ফলে দুই যুবকের মৃত্যু হয়েছে। একই ঘটনায় আরও ৯ জন গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।

মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) দিবাগত রাত ১২টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই দুই যুবকের মৃত্যু হয়। এর আগে, ঈদের সন্ধ্যায় তারা মদপান করেন এবং রাতের মধ্যে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন।

মৃতদের মধ্যে রয়েছেন আশাশুনি উপজেলার তেতুলিয়া গ্রামের জাফর আলী খাঁর ছেলে জাকির হোসেন টিটু (৪০) ও সোহরাব গাজীর ছেলে নাজমুল গাজী (২৬)।

এ ঘটনায় অসুস্থদের মধ্যে রয়েছেন ব্রাহ্মণ তেতুলিয়া গ্রামের সাইদ সরদারের ছেলে ফারুক হোসেন, মোকামখালী গ্রামের কুদ্দুস সরদারের ছেলে ইমরান, মিত্র তেতুলিয়ার মর্জিনা খাতুনের ছেলে ইকবাল, কামরুলের ছেলে লিফটন, আজিবার সরদারের ছেলে রবিউল, শহীদ গাজীর ছেলে তুহিন, আনিসের ছেলে নাজমুলসহ আরও কয়েকজন।

গুরুতর অসুস্থদের মধ্যে ফারুক হোসেনকে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং ইমরানকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ঈদের দিন সন্ধ্যায় আশাশুনির তেতুলিয়া শ্মশানঘাট মাঠে বসে জাকির হোসেন টিটু, নাজমুল গাজীসহ মোট ১১ জন একসঙ্গে মদপান করেন। মদপানের পর তারা বাড়ি ফিরে যান এবং ঘুমিয়ে পড়েন।

এরপর রাত ১২টার দিকে একে একে সবাই মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের আশাশুনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জাকির হোসেন টিটু ও নাজমুল গাজী মারা যান। বাকি ৯ জনের চিকিৎসা চলছে।

আশাশুনি থানার ডিউটি অফিসার এসআই ফিরোজ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, "অতিরিক্ত মদ্যপানের কারণে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। তবে মৃত্যু অন্য কোনো কারণে হয়েছে কিনা, তা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে।"

নিহতদের মধ্যে একজনের মরদেহ উদ্ধার করে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় বিস্তারিত তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

Header Ad
Header Ad

ইরানের ড্রোন-ক্ষেপণাস্ত্র নেটওয়ার্কের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা

ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইরান, চীন এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) একাধিক ব্যক্তি ও সংস্থার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। ইরানের অস্ত্র সংগ্রহ নেটওয়ার্কের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ এই নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দেয়।

এই পদক্ষেপকে ইরানের ওপর আরও চাপ সৃষ্টির একটি অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে। এর আগে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানকে সতর্ক করে বলেছিলেন, নতুন পারমাণবিক চুক্তিতে রাজি না হলে দেশটির ওপর বোমা হামলা চালানো বা নতুন শুল্ক আরোপ করা হতে পারে।

মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ ও বিচার বিভাগ যৌথভাবে জানিয়েছে, ইরানের ড্রোন কর্মসূচির অন্যতম প্রধান নির্মাতার জন্য মানববিহীন এয়ার ভেহিকল (ইউএভি)–এর উপকরণ সংগ্রহের সঙ্গে যুক্ত ছয়টি সংস্থা ও দুই ব্যক্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট এক বিবৃতিতে বলেন, "ইরান তাদের ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র রাশিয়াসহ তাদের প্রক্সিদের সরবরাহ করছে। রুশ বাহিনী এগুলো ইউক্রেনের বিরুদ্ধে ব্যবহার করছে, যা বেসামরিক নাগরিক, মার্কিন বাহিনী ও মিত্রদের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।"

তিনি আরও বলেন, "আমরা ইরানের সামরিক-শিল্প কমপ্লেক্স এবং তাদের ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র ও প্রচলিত অস্ত্রের বিস্তার ব্যাহত করতে কাজ চালিয়ে যাব।"

মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ জানিয়েছে, নতুন নিষেধাজ্ঞার আওতায় এসেছে একটি ইরান-ভিত্তিক সংস্থা, দুইজন ইরানি নাগরিক, একটি চীন-ভিত্তিক সংস্থা এবং চারটি সংযুক্ত আরব আমিরাত-ভিত্তিক সংস্থা।

এ বিষয়ে জাতিসংঘে ইরানের মিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তারা তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।

Header Ad
Header Ad

বিশ্বব্যাপী অপপ্রচার ছড়াচ্ছে আওয়ামী লীগের দোসররা: রিজভী

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেছেন, আওয়ামী লীগের দোসররা বিশ্বব্যাপী অপপ্রচার চালিয়ে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, "পরাজিত শক্তি নিউইয়র্ক টাইমসে মিথ্যা তথ্য দিয়ে রিপোর্ট করিয়েছে। ফ্যাসিবাদের দোসররা হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক হয়ে গেছে। তারা এই অবৈধ টাকা ব্যবহার করে বাংলাদেশকে কলঙ্কিত করতে চায়।"

বুধবার (২ এপ্রিল) সকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব মন্তব্য করেন।

রিজভী আহমেদ অভিযোগ করেন, "শেখ হাসিনা জঙ্গি দমনের নামে একটি নাটক সাজিয়ে বিশ্ববাসীকে বিভ্রান্ত করেছেন। এটি মূলত ক্ষমতায় টিকে থাকার একটি রাজনৈতিক কৌশল ছিল। এমনকি একজন সাবেক আইজিপির বইয়েও এটি উঠে এসেছে।"

তিনি আরও বলেন, "বাংলাদেশে উগ্রবাদের কোনো উত্থান ঘটেনি। বরং বর্তমানে দেশে ফ্যাসিবাদের কোনো ছোবল নেই, মানুষ নির্বিঘ্নে ধর্মপালন করতে পারছে, কথা বলতে পারছে। এবার মানুষ নির্ভয়ে ঈদ উদযাপন করেছে, যা অতীতে সম্ভব হয়নি।"

আওয়ামী লীগ সরকারের কঠোর সমালোচনা করে বিএনপির এই নেতা বলেন, "আওয়ামী লীগ বসে নেই, তারা কালো টাকা ব্যবহার করে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। তারা অন্তর্ঘাতমূলক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। বিদেশে পালিয়ে থাকা আওয়ামী লীগের নেতারাই দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে।"

তিনি আরও বলেন, "শেখ হাসিনার নির্দেশে মুগ্ধ ফাইয়াজদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, কিন্তু এ নিয়ে তার কোনো অনুশোচনা নেই। প্রশাসনের চারপাশে আওয়ামী লীগের দোসররা বসে আছে, যার ফলে দেশে গণতন্ত্র ও সুশাসন ভূলুণ্ঠিত হয়েছে।"

রিজভী আহমেদ দ্রুত প্রয়োজনীয় সংস্কার করে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানান। তিনি বলেন, "নির্বাচনী সরকারই হচ্ছে বৈধ সরকার। নির্বাচন নিয়ে গড়িমসি সাধারণ জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হলে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হবে।"

তিনি নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে দ্রুত নির্বাচনের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

সাতক্ষীরায় মদপানে দুই যুবকের মৃত্যু, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৯
ইরানের ড্রোন-ক্ষেপণাস্ত্র নেটওয়ার্কের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা
বিশ্বব্যাপী অপপ্রচার ছড়াচ্ছে আওয়ামী লীগের দোসররা: রিজভী
দায়িত্ব নেওয়ার পর দেশে জঙ্গিবাদের উত্থানের ঘটনা ঘটেনি: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
আখাউড়ায় ট্রেনের ছাদে টিকটক বানাতে গিয়ে দুর্ঘটনা, নিহত ২
বাংলাদেশকে ভেঙে ফেলার আহ্বান ভারতের ত্রিপুরার রাজপরিবার প্রধানের
বিএনপি কখনোই নির্বাচনের পরে সংস্কারের কথা বলেনি: মির্জা ফখরুল
বিরামপুরে জমি নিয়ে বিরোধ, চাঁদা দাবি ও হামলার ঘটনায় আটক ৫
হলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা ভ্যাল কিলমার আর নেই
ময়মনসিংহে সিনেমা হলে যান্ত্রিক ত্রুটির জেরে দর্শকদের ভাঙচুর
সেভেন সিস্টার্স নিয়ে ড. ইউনূসের মন্তব্যে ভারতীয় রাজনীতিবিদদের তীব্র প্রতিক্রিয়া
মিয়ানমারের ভূমিকম্পে এক ইমামের ১৭০ স্বজনের মৃত্যু
ঈদের আনন্দে যমুনার দুর্গম চরে গ্রাম-বাংলার ঘুড়ি উৎসব, আনন্দে মেতে উঠে বিনোদনপ্রেমীরা!
ইমামকে ঘোড়ার গাড়িতে রাজকীয় বিদায়, দেওয়া হলো ৯ লাখ টাকার সংবর্ধনা
লন্ডনে একসঙ্গে দেখা গেলো সাবেক চার আওয়ামী মন্ত্রীকে
ঢাকায় ফিরছে ঈদযাত্রীরা, অনেকে ছুটছেন শহরের বাইরে
চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় আবারও সড়ক দুর্ঘটনা, নিহত ৭
বিটিভিতে আজ প্রচারিত হবে ঈদের বিশেষ ‘ইত্যাদি’
ঈদের ছুটিতে ফাঁকা ঢাকা, নেই যানজটের চিরচেনা দৃশ্য
মাদারীপুরে তিন মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে নিহত ৪, আহত ২