সোমবার, ৭ এপ্রিল ২০২৫ | ২৩ চৈত্র ১৪৩১
Dhaka Prokash

আদালতের সর্বস্তরে বাংলা ভাষা প্রচলন জরুরি

মানুষ হিসেবে কথা বলা বা মুখ খোলা একটি সহজাত প্রবৃত্তি। সত্যি কথা বলতে কী আমরা কেউই নির্বাক পৃথিবীর সদস্য হতে চাই না। আমাদের আশা-নিরাশা, আত্মার বিহ্বলিত ধ্বনি, সংশয়, বিশ্বাস, অনুমান, অনুসন্ধান কিংবা আবিষ্কার ইত্যাদি সবকিছুই ভাষার দখলে। মাতৃভাষা একটি জাতির আত্মপরিচয় এবং শ্রেষ্ঠতম সম্পদ। বাংলাদেশের মাতৃভাষা ও রাষ্ট্রভাষা উভয়ই বাংলা। বিধায় নাগরিক জীবনের সর্বক্ষেত্রে সার্থকভাবে প্রয়োগের একটি ভাষা।

রাষ্ট্রের আইন ও শাসন বিভাগের মতো বিচার বিভাগে আদালতের সর্বস্তরে বাংলা ভাষার প্রচলন আজও যথাযথভাবে হয়নি। অধঃস্তন আদালতে বাংলা ভাষার প্রচলন হলেও উচ্চ আদালতের ব্যবহারিক ভাষা এখনো ইংরেজি। জনগণ নিজ ভাষায় আইনি প্রতিকার রায় বা আদেশ পাওয়ার জন্যই মূলত আর্থিক ব্যয় ও দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করে। বাংলায় বিচারকাজ না হওয়ায় সাধারণ জনগণ মাতৃভাষায় বিচার প্রাপ্তির অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এতে একদিকে ভাষার জন্য আমাদের অর্জন লুণ্ঠিত হচ্ছে আর অপরদিকে বিচারিক ফলাফল বিচারপ্রার্থীদের মনে দুর্বোধ্যতার জাল ছড়িয়ে দিচ্ছে।

দেশের সকল আদালতই প্রজাতন্ত্রের আদালত। বিচার প্রার্থনা থেকে শুরু করে বিচার পরিচালনা, রায় দেওয়া, এমনকি রায় কার্যকর করা পর্যন্ত সকল কার্যক্রম ভাষার মাধ্যমে করতে হয়। আদালতের একটি রায় শুধুমাত্র কিছু প্রাণহীন অক্ষরের সমষ্টি নয়। ক্ষেত্র বিশেষে একটি রায় একটি জাতি ও রাষ্ট্রের সংঘবদ্ধ চিন্তার মহিমান্বিত রূপ। মাতৃভাষায় রায় দেওয়া হলে মামলার বাদী-বিবাদীকে রায়ের সারমর্ম বোঝা বা পরিকল্পিত পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে সহজ হয়।

অধঃস্তন আদালতে আরজি, জবাব, আপত্তি, নালিশ, আদেশ ও রায়সমূহ সাধারণত বাংলা ভাষাতেই পরিচালিত হচ্ছে। তবে বাংলা ভাষায় বিচারকাজ হলেও আরজিসমূহে মানসম্পন্ন বোধগম্য বাংলা ভাষার অভাব দেখা যায়। তবে উচ্চ আদালতে বাংলার পরিবর্তে ইংরেজির প্রাধান্য ও ব্যবহার চলছে। উচ্চ আদালতে যখন ইংরেজি ভাষায় রায় ঘোষণা করা হয় তখন প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে রায়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলের জন্য রায়ের বিষয়বস্তু, রায়ের কারণ উপলব্ধি করা কঠিন হয়ে পড়ে।

বিচারপ্রার্থী সকলেই বাংলা ভাষাভাষী। আদালতের সিদ্ধান্ত ও রায় বাংলা ভাষা ব্যতীত ইংরেজি ভাষায় লেখা হলে তা বোধগম্যতার জন্য আইনজীবীগণকে অতিরিক্ত ফি দিয়ে অনুবাদ করাতে হয়। বিশেষ করে দেওয়ানি মামলার ক্ষেত্রে আদালতের রায় ও আদেশে কার জমি কে পেল, কেন পেল, কার অংশ কতটুকু হলো, নিষেধাজ্ঞা কোন কোন বিষয়ে বা কতদিন পর্যন্ত দেওয়া হলো-এ সকল বিষয়ে বাংলা প্রয়োগ না করলে রায়ের গুরুত্ব থাকে না।

অন্যদিকে, অনেক সময় ফৌজদারি মামলায় রায়ে পুলিশ প্রশাসনের জন্য নতুন নির্দেশনা থাকে যেমন-কোনো ব্যক্তিকে কখন ওয়ারেন্ট ছাড়া গ্রেপ্তার করা যাবে, কখন কাকে রিমান্ডে নেওয়া যাবে বা রিমান্ডে নির্যাতন করা আইনসঙ্গত কি না ইত্যাদি শুধুমাত্র ইংরেজিতে রায় হওয়ার কারণে মাঠ পর্যায়ের পুলিশ অফিসার জানতে পারে না। এভাবে প্রায় ক্ষেত্রেই বিচারপ্রার্থীরা আদালতের চিন্তা ও যুক্তির কোনোটাই বুঝতে পারে না।

বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রভাষা ‘বাংলা’ একমাত্র রাষ্ট্রভাষারূপে স্বীকৃত। সাংবিধানিক বিধানাবলী সম্পূর্ণরূপে কার্যকর এবং সর্বস্তরে বাংলা ভাষার ব্যবহার বাধ্যতামূলক করতে ১৯৮৭ সালে ‘বাংলা ভাষা প্রচলন আইন’ করা হলেও দেওয়ানি ও ফৌজদারি উভয় কার্যবিধিতে অধঃস্তন আদালতের ভাষা হিসেবে বাংলা ভাষা ব্যবহারের কোনো আইনি বাধ্যবাধকতা নেই।

উচ্চ আদালতে ২০১২ সালে হাইকোর্ট বিধিমালা, ১৯৭৩ সংশোধনের মাধ্যমে হাইকোর্টে এবং আপিল বিভাগে বাংলা ও ইংরেজি দুই ভাষা ব্যবহারে কোনো বাধা নেই। এই সংশোধনীর মাধ্যমে বাংলা ভাষায় মেমো অব আপিল, আবেদনপত্র ইত্যাদি দাখিল বা বিজ্ঞ বিচারপতিদের সাবলীলভাবে বাংলা ভাষায় তাদের রায় লেখার সব রকম বাধা অপসারিত হয়েছে। বর্তমানে ইংরেজির পাশাপাশি কিছুটা বাংলায় রায় লেখা শুরু হয়েছে, তবে এর সংখ্যা খুবই কম।

সুপ্রিম কোর্টসহ অনেক আদালতে আজও আদালতের একমাত্র ভাষা হিসেবে বাংলা ভাষা প্রতিষ্ঠা পায়নি। এর পেছনের ইতিহাস হচ্ছে, বাংলাদেশের আইন ও আদালত ব্যবস্থা প্রাচীন ভারতবর্ষের হিন্দু, মুসলিম, ব্রিটিশ ও পাকিস্তান শাসনামলের আদালত ব্যবস্থার উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। হিন্দু ও মুসলিম আমলে আদালতে সংস্কৃত ও ফার্সি ভাষার প্রচলন থাকলেও ব্রিটিশ ভারতে ইংরেজি ভাষার প্রচলন শুরু হয়। পরবর্তী সময়ে ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শাসনের অবসান হলেও বিচার ব্যবস্থার তেমন কোনো পরিবর্তন ঘটেনি। এই দীর্ঘ সময়ের ব্যবধানে ভৌগোলিক, রাজনৈতিক, আর্থ-সামাজিক, জনগণের চিন্তা-চেতনার পরিবর্তন হলেও বিচার ব্যবস্থায় আশানুরূপ ও সময়োপযোগী পরিবর্তন হয়নি।

দেশের অধঃস্তন আদালতে আরজি, জবাব, আপত্তি, নালিশ, বিভিন্ন দরখাস্তসমূহ সাধারনত বাংলা ভাষাতেই পরিচালিত হচ্ছে। তবে উচ্চ আদালতের অবস্থা ভিন্ন প্রকৃতির। ১৯৯০ সালের পূর্বে হাইকোর্ট বিভাগে কোনো মামলার রায় বাংলা ভাষায় প্রকাশিত হয়নি। ১৯৯০ সালে সুপ্রিম কোর্টের ইতিহাসে সর্বপ্রথম মরহুম বিচারপতি এ আর এম আমীরুল ইসলাম চৌধুরী আদালত কার্যক্রম বাংলা ভাষায় লেখা শুরু করেছিলেন। পরবর্তীকালে বিভিন্ন সময় বিচারপতি কাজী এবাদুল হক ও বিচারপতি হামিদুল হক বাংলা ভাষায় রায় দিয়েছেন।

এরপর বিচারপতি কাজী এবাদুল হক ও বিচারপতি হামিদুল হক ‘নজরুল ইসলাম বনাম রাষ্ট্র’ নামক ফৌজদারি রিভিশন মামলায় বাংলায় রায় প্রদান করে দেখিয়েছেন যে, উচ্চ আদালতে বাংলা ভাষা ব্যবহার সম্ভব। এটি ছিল একটি নজির সৃষ্টিকারী রায় এবং আইন সাময়িকী ঢাকা ল’ রিপোর্টস এ প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় এই যে, ১৯৯৮ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত হাইকোর্ট বিভাগে কোনো মামলার রায় বাংলা ভাষায় প্রদান করা হয়নি।

এভাবে সাবেক বিচারপতি কাজী এবাদুল হক, বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমানসহ বিচারপতি আমিরুল ইসলাম চৌধুরী, বিচারপতি ফজলুল করিম, বিচারপতি একে বদরুল হক, বিচারপতি মোয়াজ্জেম হোসেন, বিচারপতি আব্দুল কুদ্দুস প্রমূখ বাংলায় রায় লিখে প্রমান করেছেন উচ্চ আদালতে বাংলা ব্যবহার সম্ভব। পুনরায় ২০০৭ সাল থেকে স্বপ্রণোদিত হয়ে সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকসহ কয়েকজন বিচারপতি বাংলা ভাষায় রায় প্রদান করেছেন।

বিচারক হিসেবে তারা আইনের শাসন ও সাংবিধানিক শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করে গেছেন। যদিও ২০০৯ সালের পূর্বে আপিল বিভাগে কোনো মামলায় এ পর্যন্ত বাংলা ভাষার ব্যবহার হয়নি। উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে ভাষার মাস ফেব্রুয়ারির ১ তারিখে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম বিচার বিভাগের ইতিহাসে সর্বপ্রথম দেড়শ মামলায় বাংলায় আদেশ ও সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। একই দিনে বিচারপতি নায়মা হায়দার ও বিচারপতি মো. আক্কাস আলী বাংলায় রায় ঘোষণা করেছেন।

এটি সর্বজনস্বীকৃত যে, আন্তর্জাতিক ভাষা হিসেবে ইংরেজি ভাষা শেখা, জানা ও উপযুক্ত স্থানে চর্চার গুরুত্ব অনস্বীকার্য। জাতীয় উন্নতিকল্পে বিদেশি ভাষায় জ্ঞানার্জন ও সেই ভাষায় প্রকাশিত বিভিন্ন প্রকাশনা, আইন, বিধি-বিধান ও এর অধ্যয়ন, গবেষণা, অনুশীলন ও প্রয়োগের মাধ্যমে সুশাসন প্রতিষ্ঠার প্রয়াস সর্বদাই প্রশংসিত ও স্বাগত। তবে বিচার প্রার্থী বিশাল জনগোষ্ঠীর সহজে বোধগম্যতার কথা বিবেচনা করে আদালতের ভাষা বাংলা বা ইংরেজির পাশাপাশি বাংলা করা যেতে পারে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকলের সদিচ্ছা এ ভাষার যথার্থ প্রয়োগকে সহজ ও গতিশীল করবে।

আদালতে বাংলা ভাষা প্রচলনের প্রয়োজনীয়তা আদালত নাগরিকদের ন্যায়বিচার প্রাপ্তির একমাত্র আশ্রয়স্থল যেখানে দেশের আইনসমূহ সক্রিয় ভূমিকা রাখে এবং জনগণ আইনের সেবা ভোগ করে। আইনের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং আইনের ব্যাখ্যা দেওয়ার গুরুদায়িত্ব এই আদালতের। এই অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হলে আদালতে বিচার পরিচালনার ভাষা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষ প্রাত্যহিক জীবনে নিয়মিত প্রয়োজন হয় এমন কিছু বিশেষায়িত বিষয়সমূহের ভাষা বুঝতে অপারগ।

তাই মহামান্য আদালতের প্রদত্ত কোনো রায়ে যখন মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করা হয়, তখন ক্ষতিগ্রস্ত পক্ষ বা আসামি যেই হোন না কেন, তিনি ইংরেজি ভাষার কারণে প্রকাশিত রায় বুঝতে পারে না, জানতে পারে না কী কারণে এবং কিসের ভিত্তিতে তার দণ্ডাদেশ বহাল থাকলো বা খালাস হলো। দেশের মাটিতে প্রতিষ্ঠিত আদালতে বাংলাদেশ নাগরিক অবশ্যই মামলার ফলাফল জানার ও বোঝার অধিকারী। এ ছাড়া, সকলের পক্ষে ইংরেজি ভাষার শুদ্ধ ব্যবহার করা সম্ভব হয় না। ফলে অশুদ্ধ ইংরেজি শব্দ ও বাক্য অনেক ক্ষেত্রেই বিপত্তির কারণ ঘটায়। তাই দেশের বিচার আদালতের ভাষা বাংলা হওয়াটাই যৌক্তিক।

অধ্যাপক, আইন বিভাগ, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়

 

Header Ad
Header Ad

নওগাঁয় আকাশ থেকে পড়ল বিরল আকৃতির শীলা, আতঙ্কিত এলাকাবাসী

নওগাঁয় আকাশ থেকে পড়ল বিরল আকৃতির শীলা। ছবি: সংগৃহীত

নওগাঁর আত্রাইয়ে সন্ধ্যার আকাশ থেকে বিরল আকৃতির শীলা এবং হালকা বৃষ্টি হয়েছে,যা এলাকাবাসীর মধ্যে ব্যাপক কৌতূহল ও আলোচনার সৃষ্টি করেছে।

রোববার (৬ এপ্রিল) সন্ধ্যায় হঠাৎ শুরু হওয়া শীলাবৃষ্টির সঙ্গে মিশে ছিল ছোট ছোট বরফখণ্ড (শীলা), যা প্রায় ১০ থেকে ১৫ মিনিট ধরে আত্রাইয়ের সাহেবগঞ্জ,পাঁচুপুর ও আহসানগঞ্জ এলাকায় পরিলক্ষিত হয়।

অনেকেই এই দৃশ্য দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন, বিশেষ করে শীলার আঘাতে টিনের ছাদে তীব্র শব্দে স্থানীয়রা ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে উঠেন। তবে এতে কোনো প্রাণহানি বা ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।

শীলাবৃষ্টি একটি প্রাকৃতিক ঘটনা, যা সাধারণত মৌসুম পরিবর্তনের সময় তীব্র গরমে বায়ুমণ্ডলের নিচের স্তরে জলীয় বাষ্প জমে বরফে পরিণত হয়ে ভারী হয়ে পড়ে। স্থানীয় কৃষকরা তাদের ফসলের সম্ভাব্য ক্ষতি নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

এদিকে,আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, আত্রাই ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় আগামী কয়েকদিনে আরও বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে,তবে শীলা আবার হবে কি না তা নিশ্চিত করে বলা যায়নি।এই পরিস্থিতিতে স্থানীয় প্রশাসন সতর্কতা জারি করেছে এবং জরুরি সহায়তার জন্য প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছে।

Header Ad
Header Ad

ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে সারাদেশে ‘নো ওয়ার্ক, নো স্কুল’ কর্মসূচির ডাক

ছবি: সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান নৃশংস গণহত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতারা সোমবার (৭ এপ্রিল) ‘নো ওয়ার্ক, নো স্কুল’ কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানিয়েছেন। তারা এই কর্মসূচির মাধ্যমে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে গড়ে ওঠা বিশ্বব্যাপী আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ এবং এ ঘটনার বিরুদ্ধে সমবেদনা জানাতে সবাইকে এগিয়ে আসার জন্য আবেদন জানিয়েছেন।

রোববার (৬ এপ্রিল) দুপুরে ‘গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধকরণ আন্দোলন’-এর দুই সংগঠক মুসাদ্দিক আলী ইবনে মোহাম্মদ এবং এ বি জোবায়ের দেশের প্রতিটি বিভাগে এই কর্মসূচি সফল করার জন্য আহ্বান জানান। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিবিরের সাবেক সভাপতি আবু সাদিক কায়েম নিজ ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের আহ্বান জানান। একইসঙ্গে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ‘MARCH For Palestine’ কর্মসূচি বাস্তবায়নের ঘোষণা দেওয়া হয়।

ঘোষণা অনুযায়ী, আগামীকাল বিকেল ৪টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে সংহতি ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। একইসঙ্গে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনেরও আহ্বান জানানো হয়েছে।

নিজের ফেসবুক পোস্টে ছাত্রনেতা এ বি জোবায়ের লিখেছেন, “আমাদের মজলুম গাজাবাসী ভাইবোনেরা আগামীকাল বিশ্বব্যাপী হরতালের ডাক দিয়েছেন। তারা গণহত্যা বন্ধের দাবিতে একযোগে বিশ্বের সব দেশে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, অফিস, আদালত বন্ধ রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। সেই ডাকে সাড়া দিয়ে বাংলাদেশেও আমরা ৭ এপ্রিল সারাদিনের জেনারেল স্ট্রাইক পালনের আহ্বান জানাচ্ছি। আগামীকাল সবাই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কলকারখানা, অফিস-আদালত বন্ধ রাখুন। ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করুন। আসুন, বৈশ্বিক প্রতিবাদের অংশ হই। আওয়াজ তুলুন—Free, Free Palestine।”

সাদিক কায়েম তাঁর পোস্টে বলেন, “ইয়া গামযাহ! তোমাদের শাহাদাত ও লড়াইয়ের প্রতি আমাদের গভীর সংহতি। ইনশাআল্লাহ, শিগগিরই আমরা তোমাদের সংগ্রামে সরাসরি অংশ নেবো। গাজার প্রতি বৈশ্বিক সংহতির অংশ হিসেবে ৭ এপ্রিল ‘নো ওয়ার্ক, নো স্কুল’ কর্মসূচি সফল করার আহ্বান জানাই।”

এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক রেজওয়ান আহমেদ রিফাত বলেন, “‘MARCH For Palestine’-এর আহ্বানে আগামীকাল দেশের প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সংহতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। ফিলিস্তিনে গণহত্যার বিরুদ্ধে এবং স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের দাবিতে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। ঢাকায় কেন্দ্রীয় কর্মসূচি হিসেবে রাজু ভাস্কর্যে বিকেল ৪টায় সংহতি ও বিক্ষোভ সমাবেশ হবে।”

তিনি আরও বলেন, “বিশ্বজুড়ে ৭ এপ্রিল ফিলিস্তিনের পক্ষে হরতাল পালিত হবে। নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরের সামনে ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ শহরে সংহতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। তাই সারা বিশ্বের মুক্তিকামী মানুষের সঙ্গে এক কাতারে দাঁড়িয়ে আমাদেরও রাজপথে নামতে হবে, প্রতিবাদ জানাতে হবে। একটিও জীবন যেন অবহেলায় হারিয়ে না যায়—এই চেতনাতেই আমাদের কর্মসূচি।”

Header Ad
Header Ad

বিয়ের গেটে পার্টি স্প্রে দেওয়া নিয়ে মারামারি, ভাঙল বিয়ে

বিয়ের গেটে পার্টি স্প্রে দেওয়া নিয়ে মারামারি। ছবি: সংগৃহীত

ফরিদপুরে একটি বিয়েবাড়ির গেটে বরপক্ষে প্রবেশের সময় পার্টি স্প্রে ছেটানো নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এনিয়ে কনে পক্ষের অনুরোধ সত্ত্বেও ফিরে গেছে বরপক্ষ।

শুক্রবার (৪ এপ্রিল) দুপুরের জেলার ভাঙ্গা উপজেলার কাউলিবেড়া ইউনিয়নের পুটিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় রোববার (৬ এপ্রিল) সকালে কনের বাবা সামেদ মাতুব্বর ভাঙ্গা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

জানা যায়, তিন মাস আগে মোবাইলে সামেদ মাতুব্বরের মেয়ে বর্ণা আক্তারের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী সদরপুর উপজেলার চরব্রহ্মনদী ভেন্নতুলী গ্রামের তৈয়ব মোল্লার ছেলে প্রবাসী নাঈম মোল্লার বিয়ে হয়। দুপক্ষ বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্য দিন ধার্য করে।

মেয়ের বাড়িতে ১৩০ জন মেহমানের খাবার আয়োজন করা হয়। ছেলে পক্ষ এলে মেয়ের বাড়ির লোকেরা ছেলেকে গেটে আটকায়। সেখানে পার্টি স্প্রে দেওয়া নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে সেটি সংঘর্ষে পরিণত হয়। এতে কনের বাবাসহ বেশ কয়েকজন আহত হন। পরে নববধূকে না নিয়েই ফিরে যান জামাই।

মেয়ের বাবা সামেদ আলী মাতুব্বর বলেন, গেটে দুপক্ষের ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা স্প্রে করছিল। এর মধ্যে দুপক্ষের ছোট ছেলেমেয়েদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি হয়। পরে বড়দের মধ্যে হাতাহাতি ও মারামারির ঘটনা ঘটে। এ সময় অনুষ্ঠানের চেয়ার টেবিল ও খাবার নষ্ট করা হয়। বরপক্ষের কাছে ক্ষমা চেয়েছি কিন্তু তারা মেয়েকে না নিয়ে চলে যায়।

বর নাঈম মোল্লা বলেন, ছয় বছর প্রবাস জীবন খেটে বিয়ে করার জন্য এসেছি বাংলাদেশে। কীভাবে কী হয়ে গেল বুঝতে পারলাম না। আমার এক চাচাকে কনেপক্ষরা মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে। পরিস্থিতি শান্ত হবে বলে আমাকে একটি ঘরের মধ্যে আটকে রাখে। পরে চেয়ারম্যানের প্রতিনিধি তাদের হেফাজতে আমাদেরকে পার করে দিয়েছে।

ভাঙ্গা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ইন্দ্রজিৎ মল্লিক বলেন, মেয়ের বাবা সামেদ আলী মাতুব্বর একটি অভিযোগ করেছেন। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

নওগাঁয় আকাশ থেকে পড়ল বিরল আকৃতির শীলা, আতঙ্কিত এলাকাবাসী
ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে সারাদেশে ‘নো ওয়ার্ক, নো স্কুল’ কর্মসূচির ডাক
বিয়ের গেটে পার্টি স্প্রে দেওয়া নিয়ে মারামারি, ভাঙল বিয়ে
গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যায় ছাত্রদলের নিন্দা ও কর্মসূচি ঘোষণা
দপ্তর হারালেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব নিজাম উদ্দিন
বাংলাদেশে ব্যবসা করার অনুমোদন পেল স্টারলিংক
শুল্ক নিয়ে ট্রাম্প ও মার্কিন প্রশাসনকে চিঠি দেবে বাংলাদেশ: প্রেস সচিব
দর্শনায় পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দর বাস্তবায়নে এডিবির উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদলের পরিদর্শন
ফেসবুকে নির্বাচনের কথা লিখলে সংঘবদ্ধ গালি শুরু হয়ে যাচ্ছে: ইশরাক
গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদ: ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ডাক
যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কের প্রভাব সামাল দেওয়া কঠিন হবে না: অর্থ উপদেষ্টা
বিদেশি শীর্ষ বিনিয়োগকারীদের নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক বুধবার
এসএসএফের সাবেক ডিজি ও তার স্ত্রীর ফ্ল্যাট-জমি জব্দ, ৩৪ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ
আওয়ামীপন্থি ৮৪ আইনজীবীকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ, ৯ জনের জামিন
গাজার গণহত্যার বিরুদ্ধে সোমবার দেশবাসীকে রাজপথে নামার আহ্বান সারজিসের
ইতিহাস সৃষ্টি করে মার্চে এলো ৩২৯ কোটি ডলার রেমিট্যান্স
দুদকের সাবেক অ্যাম্বাসেডর থেকে আসামি হতে যাচ্ছেন সাকিব!
গাজায় ইসরায়েলি মিসাইলের আঘাতে মরদেহ উড়ছে আকাশে! (ভিডিও)
মা হারালেন অভিনেত্রী জ্যাকুলিন ফার্নান্দেজ
‘দুর্নীতির অভিযোগ উড়িয়ে দিতে পারেননি বলেই টিউলিপ পদত্যাগ করেছেন’