আইএমএফের ঋণ জনকল্যাণে কাজে লাগাতে হবে
আইএমএফের কাছ থেকে ঋণ গ্রহণের জন্য সংস্থাটির সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের সমঝোতা হয়েছে। আমি এই বিষয়কে ইতিবাচকভাবে দেখছি। আমাদের রাজস্ব বাড়ানো এবং যৌক্তিক ব্যয় ব্যবস্থা চালু করা বিশেষ করে প্রবৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখার বিষয়টি বিবেচনায় রেখে ব্যয় নির্ধারণ করতে হবে। যেসব খাত নাজুক অবস্থায় থাকবে, সেসব খাত লক্ষ্য করে সুনির্দিষ্ট সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি নিতে হবে।
এক্ষেত্রে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং আধুনিক মুদ্রানীতি তৈরি করা, সেই সঙ্গে মুদ্রা বিনিময় হার আরও নমনীয় করে তোলা এবং মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে আধুনিক মুদ্রানীতি। আর্থিক খাতের দুর্বলতা দূর করে নজরদারি বাড়ানো, সরকার ও নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের আওতা বৃদ্ধির পাশাপাশি পুঁজিবাজারের উন্নয়ন করতে হবে। বাণিজ্য ও বৈদেশিক বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে পরিবেশে তৈরি, মানব দক্ষতা বৃদ্ধি, আর্থিক খাতে সুশাসন নিশ্চিত করে ব্যবসায়িক পরিবেশ উন্নত করতে হবে।
জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি কাটাতে প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করে তোলা, পরিবেশের উন্নতির পদক্ষেপ নেওয়া এবং জলবায়ু সংক্রান্তখাতে আরও বিনিয়োগসহ আর্থিক সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।
আইএমএফ যেসব শর্ত দিয়েছে, যেমন রেভিনিউ বাড়ানো, সরকারও অনেকদিন ধরেই এসব নিয়ে কাজ করছে। যন্ত্র ও পণ্যের কাঁচামালের দাম বেড়ে যাওয়ায় দেশের রিজার্ভের উপর বড় ধরনের চাপ তৈরি করেছে। সেই চাপ সামলাতেই আইএমএফ এর দ্বারস্থ হয়েছে বাংলাদেশ।
তা ছাড়া গত কয়েক মাসে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ গত বছরের তুলনায় অনেক নিচে নেমে এসেছে। ফলে ব্যালেন্স অব পেমেন্ট নিয়ে ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেল, গ্যাস, খাদ্য পণ্যের দাম বৃদ্ধির পাশাপাশি আমদানি অনেক বেড়েছে। ফলে দেশীয় বাজারে ডলারের চরম সংকট তৈরি হয়েছে।
বাণিজ্য ও বৈদেশিক বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে পরিবেশে তৈরি, মানব দক্ষতা বৃদ্ধি, আর্থিক খাতে সুশাসন নিশ্চিত করে ব্যবসায়িক পরিবেশ উন্নত করা। জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি কাটাতে প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করে তোলা, পরিবেশের উন্নতির পদক্ষেপ নেওয়া এবং জলবায়ু সংক্রান্ত খাতে আরও বিনিয়োগ ও আর্থিক সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।
করোনা মহামারির পর বাংলাদেশ অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে অগ্রসর হচ্ছিল কিন্তু যুদ্ধের কারণে সেটি বাধাগ্রস্ত হয়েছে। এর ফলে বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ কমেছে, মূল্যস্ফীতির হার বেড়েছে এবং প্রবৃদ্ধির গতি কমেছে।
কাজেই আমার মতে, একটি সুসমন্বয়ের মাধ্যমে বিশেষ করে প্রশাসনকে দুর্নীতিমুক্ত রেখে শতভাগ দক্ষতার সঙ্গে ব্যবহারের মাধ্যমে এই ঋণকে জনকল্যাণে কাজে লাগাতে হবে।
এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম: তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা।
এসএন