দুর্নীতিসহ অযৌক্তিক ব্যয় রোধ করতে হবে
নতুন বছরে আবারও গ্যাসের দাম বৃদ্ধি হলো। আমরা আমাদের পক্ষ থেকে সব সময় বলছি, অন্যায় ও অযৌক্তিক ব্যয় সংযোজিত হয়েছে। নানাভাবেই বেশি বেশি ব্যয় সংযোজিত হয়েছে। আমরা এগুলো বিভিন্নভাবে চিহ্নিত করেছি। আমরা সমন্বয় ও সমাধানের কথা বলছি। সেগুলোর সমন্বয় না করে, ঘাটতি পূরণ না করে, সরকার ভর্তুকি দিয়েছে, আবার সেই ভর্তুকি প্রত্যাহার করেছে। কাজেই সেই ভর্তুকি আমাদের কাজে লাগেনি। অযৌক্তিক অন্যায় ব্যয় সম্পৃক্ত হওয়ার কারণে যে ঘাটতি তৈরি হয়েছে, সে ঘাটতি সমন্বয় করা হয়েছে। এখন সেটি যদি তুলে নেওয়া হয়, সাশ্রয় হয় সরবরাহ করা গ্যাস ও বিদ্যুতের, তাহলে সরকারকেও ভর্তুকি দেওয়া লাগে না, আমাদেরও মূল্যবৃদ্ধি করা লাগে না। আমরা এমনিতেই অনেক বেশি পয়সা দিয়ে এসেছি। তা না হলে কী করে তেতাল্লিশ হাজার কোটি টাকা জ্বালানিতে সাশ্রয় হয়।
তা ছাড়া লক্ষ কোটি টাকা জমিয়ে, সরকার আইন করে কোষাগারে নিয়ে গেছে গ্যাস ও বিদ্যুৎ খাত থেকে। সরকারি কর্মকর্তারা সেখানে বসে ১০ হাজার টাকা সিটিং অ্যালাউন্স নেওয়া সেটি আবার ১২ হাজার টাকা হয়েছে। গ্যাস ও সঞ্চালন কোম্পানিতে এখনো ১৪ হাজার কোটি টাকা সারপ্লাস রয়ে গেছে তাদের। একইসঙ্গে বারে বারে দাম বাড়াচ্ছে, ভর্তুকি বাড়াচ্ছে। ২০১৯-২০২০ এবং ২০২০-২০২১ এ প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে। এবারও যে গ্যাস আমদানি করতে বলেছে, আমদানি করবে বলে ভর্তুকি অথবা মূল্যবৃদ্ধি করছে, এবারও আনা হয়নি।
আমরা মনে করি, এবারও সাশ্রয় হয়েছে। আমার কথা হচ্ছে, ব্যয়গুলো সামঞ্জস্য না করে ঢালাওভাবে ভর্তুকি দিবে না বলে ভর্তুকির টাকা মূল্যহারে সমন্বয় করতে হবে। এটি কখনো ন্যায্য হতে পারে না। এটি রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে জনগণের জন্য জুলুমমাত্র।
এ ছাড়া দুর্নীতি,অপচয়, আত্মসাৎ ইত্যাদি যে অযৌক্তিক ব্যয় সেগুলোকে সুরক্ষা দেওয়া। এটি একধরনের অজ্ঞতা ও অদক্ষতার সামিল। একইসঙ্গে আমি বলব, অস্বচ্ছতা তো বটেই, জ্বালানি খাতে এখন যে উন্নয়ন হচ্ছে, সেটি অসম ও সামঞ্জস্যহীন। কিন্তু আমরা বলেছি, টেকসই উন্নয়ন হতে হবে। টেকসই উন্নয়ন হলে ভোক্তা ও উৎপাদক উভয়ই লাভবান হবে। কাজেই আমি বলব, এক্ষেত্রে সমন্বয় ও একইসঙ্গে অপচয় রোধ করা জরুরি। তাহলে জনগণের উপরে এগুলো চাপিয়ে দেওয়ার দরকার পড়ে না এবং দাম বৃদ্ধিও বাতুলতা বলে আমি মনে করি।
এম শামসুল আলম: জ্বালানি উপদেষ্টা, ক্যাব
এসএন