শান্তির জন্য সুশিক্ষার বিকল্প নাই
আসন্ন ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ আমাদের জন্য নতুন আশা, শান্তি,সমৃদ্ধি বয়ে নিয়ে আসুক আজকের দিনে এটিই আমাদের কামনা। বর্তমান সময়টিতে যে সংকটের মাঝে দিয়ে আমরা অতিক্রম করছি, বিশেষ করে রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ, সারা পৃথিবীর মুদ্রাস্ফীতি, জলবায়ুর নানা পরিবর্তন কাটিয়ে উঠার জন্য সারা পৃথিবী জুড়ে নেতাদেরকে একযোগে কাজ করতে হবে এবং পৃথিবীবাসীর ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন প্রয়োজন।
বাংলাদেশের সরকার প্রধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের ২২তম সম্মেলন উদ্বোধনকালে এই বিষয়গুলো গুরুত্ব সহকারে তার নেতা-কর্মীদের বলেছেন। আজকের পৃথিবীকে শান্তির পৃথিবী হিসেবে আমরা দেখতে চাই। শান্তির জন্য সুশিক্ষার কোনো বিকল্প নাই। “Education breeds confidence. Confidence breeds hope. Hope breeds peace.”
আমাদের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু ২৫ সেপ্টেম্বর ১৯৭৫ তারিখে জাতিসংঘ সদস্যপদ গ্রহণ করতে যে ভাষণ দিয়েছিলেন, তাতেও তিনি বড় দেশগুলোকে অস্ত্রপাচার বন্ধ করে শান্তি প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়েছিলেন। আজকের পৃথিবীকে শান্তির পৃথিবী হিসেবে আমরা দেখতে চাই। শান্তির জন্য শিক্ষার কোনো বিকল্প নাই।
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ সারাজীবনই বিশ্বশান্তির জন্য কাজ করে গেছেন এবং সেখানে শিক্ষাকে প্রধান হাতিয়ার হিসেবে দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন। শান্তি নিকেতনের সার্বিক কার্যক্রম তারই প্রমাণ। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে স্মার্ট বাংলাদেশের রূপান্তরের যে ঘোষণা দিয়েছেন, সেই স্মার্ট বাংলাদেশ একজনের জন্য আমাদের অতিদ্রুত স্মার্ট এডুকেশন সিস্টেম প্রবর্তন করা জরুরি।
একটি স্মার্ট এডুকেশন সিস্টেমের মাঝে দিয়ে যে শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে উঠবে তারাই হবে ভবিষ্যতের স্মার্ট এডুকেশন সিস্টেম। একটি স্মার্ট এডুকেশন সিস্টেমের মাঝে দিয়ে যে শিক্ষার্থীরা গড়ে উঠবে তারাই হবে ভবিষ্যতের স্মার্ট সিটিজেন। এই স্মার্ট সিটিজেনের মাঝে থেকেই আমরা পাবো জনপ্রতিনিধি, আমলা বিভিন্ন পেশার মানুষ যারা স্মার্ট নাগরিক গড়ে তুলবেন। এই স্মার্ট নাগরিকদের থেকেই কেউ কেউ উদ্যোক্তা হবেন, শিক্ষক হবেন, শিল্পপতি হবেন এবং তারা স্মার্ট অর্থনীতি গড়ে তুলবেন।
কৃষিক্ষেত্রে কার্যক্রম যখন সুন্দরভাবে পরিচালিত হবে তখন আমাদের সমাজ আরও সুন্দর হবে, এতে কোনো সন্দেহ নাই। আমার মনে হয়, সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু যে সোনার মানুষের কথা বলেছিলেন, আমাদের আজ সেই সোনার মানুষ গড়ার প্রয়োজন। যারা সত্যিকার অর্থেই সৎ, দেশপ্রেমিক, স্মার্ট নাগরিক অর্থই হবে, তথ্য প্রযুক্তিতে দক্ষ একজন দেশপ্রেমিক এবং বাংলাদেশের সংস্কৃতিক ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক একজন নাগরিক। যিনি প্রকৃত অর্থে বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে জীবন যাপন করবেন এবং দেশবাসীর কল্যাণে নিয়োজিত থাকবেন। উৎসর্গচিত্তে কখনো পিছু পা হবেন না। সময়ের বিবর্তনে, সমাজের নানা পরিবর্তনে এটি অবশ্যম্ভাবী। কিন্তু পরিবর্তনকে মানবকল্যাণে যুক্ত করাই হচ্ছে, একজন স্মার্ট নাগরিকের দায়িত্ব।
মানুষ সবসময়ই সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে অভিযোজন প্রক্রিয়ায় নিজেকে যুক্ত করতে চায়। আজকের বাংলাদেশে নানামুখি চ্যালেঞ্জ আমরা লক্ষ্য করি। আমরা সাড়ে ষোল কোটি মানুষ ঐক্যবদ্ধ থাকলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা অসম্ভব কিছু হবে না। ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ শুধু বাংলাদেশের জনগণকে নয়, সারা পৃথিবীর মানুষকে একই পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ করবে এটিই হলো নতুন বছরে আমার প্রত্যয় ও বাসনা।
আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক: সাবেক উপাচার্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়