বুধবার, ২২ জানুয়ারি ২০২৫ | ৮ মাঘ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

'বাংকারের ভেতর কত সোনা গহনা দামী দামী জিনিস পড়েছিল'

বীরাঙ্গনা ললিতা নমশুদ্রের দুর্বিষহ জীবন

ললিতাদের বাড়িতে যেতে হলে আগে সিলেট যেতে হবে। সিলেট থেকে যেতেই বারটা বেজে যায়। প্রথমে ঘন্টা দুই গড়িতে করে যাই। রাস্তা বেশ ভাল। রাস্তায় নেমে চা নাস্তা খেয়ে আবারও রওনা দিলাম। পিচ করা রাস্তা। কোথাও একটুও ভাঙ্গা নেই। বুঝাই যাচ্ছে, নতুন করেছে রাস্তা। রাস্তার দুই পাশে বড় বড় পুরনো গাছ ডালপালা ছড়িয়ে দাঁড়িয়ে আছে। সেইসব ডালপালা পাতার ছায়ায় ঝলমল আলোর মাঝে বেশ লাগছে সামনে দেখতে। গাড়িও চালাচ্ছে ভাল। আর রাস্তার দু’পাশে যত দূর চোখ যায় সবুজসহ নানান ধরনের সবজি ক্ষেত দেখা যাচ্ছে। সব মিলিয়ে একটা চমৎকার সময় পার করছি। ঘন্টা দুই দেখতে দেখতে চলে গিয়েছে। হঠাৎ গাড়ি থামিয়ে দিয়ে ড্রাইভার সাহেব বললেন, এখন নামতে হবে। কেন? গাড়ি আর যাবে না। আমরা গাড়ি থেকে নেমে মিনিট পাঁচেক হাটার পর দেখি নদী। এই নদী পার হতে হবে। নৌকা একটা ভিরে গিয়েছে। আর একটা নৌকা ঐপারে। আমরা ঘাটে দাঁড়িয়ে আছি। নদীর মৃদু বাতাসে শরীর জুড়িয়ে গিয়েছে। এমন সময় চোখ পড়েছে একটা চায়ের দোকানের দিকে। গেলাম সেই দোকানে। দোকানে আরও বেশ ক’জন দাঁড়িয়ে চা খাচ্ছে। বিস্কুট, কলাসহ টুকটাক আরও কিছু আছে দোকানে। কিন্তু চা’য়ের সঙ্গে বিস্কুট আর কলা চলছে বেশি। দোকানদারের কাছে আমরাও একটা চা চাইলাম। দোকানদার খুব দ্রুত কমপক্ষে আট দশ রকমের নাম বলে ফেলেছেন। অনেক রকমের চা প্রতিদিনই বানায়। আমরা খেতে খেতে নৌকা ঘাটে পৌঁছে গিয়েছে। আমরা নৌকায় উঠি। নদী পার হয়ে অটোতে করে আবার কিছুদূর যাওয়ার পর নেমে হাঁটতে থাকি। এবার হাঁটা ছাড়া আর কোন ব্যবস্থা নেই। ঘন্টাখানেক হাঁটার পর পৌঁছাই একটা ছোট বাজারের রাস্তার ওপর। সেখানে বসে আবার চা খেয়ে কিছুদূর হাটার পর ললিতাদের বাড়ি পৌঁছালাম। গিয়ে দেখি, যে ললিতার খোঁজে এসেছি এটা সেই ললিতা নয়। আমরা ভুল করে অন্য গ্রামে চলে এসেছি। তখন আবার ফিরে যাই ললিতার খোঁজে। অনেক খোঁজার পর আসল ললিতার খোঁজ পেলাম।

ললিতা থাকেন একটি বস্তিতে। বস্তিটা বেশ বড়, এক-দেড়শ পরিবার থাকে। বস্তির পরিবেশটা খুবই খারাপ। ঐ বস্তিতে ছোট মাঝারি সাইজের বাচ্চা ৮০/৯০ টিরও বেশি হবে। সব বাচ্চাই অপুষ্টিতে ভুগছে। তাদের জামা কাপড় খুবই নোংরা। প্রতিটি ঘরই নোংরা, ময়লায় ভর্তি। সেই ময়লা থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। এক কথায় বলা যায়, মানুষ থাকার মতন না। আমরা গিয়ে দেখি, ললিতা রান্না করছে। আমরা যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অন্য একজনকে বললেন তার রান্নাটা দেখার জন্য। ললিতা আমাদের সঙ্গে এসে কথা বলছেন। তিনি নিজে থেকেই বলছেন, এখানে বসে কথা বলা যাবে না। একে তো সবসময় বাচ্চাদের কান্নাকাটি লেগেই থাকে, অনেক বাচ্চা তো, তাই একটা বাচ্চা কান্না থামালে আরেকটা বাচ্চা কান্না শুরু করে দেয়। কেউ তো আর তাদেরকে আদর করে থামাতে আসবে না। একবার কান্না শুরু করে দিয়েছে তো কান্না করতেই থাকে, কে কাকে থামাবে সারাদিন। কান্না করতে করতে কাহিল হয়ে গেলে তখন সে নিজে থেকেই থামে। এরই মধ্যে ললিতা ইশারা দিলেন তার সঙ্গে যাওয়ার জন্য। কিছুদূর যাওয়ার পর একটা খালি জায়গা। সেখানে লোকজন নেই। কিন্তু একটু দূরেই শত শত কয়লার গাড়ি। কয়লা উঠানামা করছে। তাই ঐখানে বসে কথা বলা সম্ভব হ’ল না। ললিতা তখন অন্য একটা জায়গায় নিয়ে গেলেন। ঐখানের জায়গাটা ভাল, ভাল পরিবেশ আছে। কিন্তু যাকে বলে কাঠ ফাটা রোদ। নেই কোন বাতাস। কি আর করা, সুযোগ খুঁজতে খুঁজতে আমাদের সময় চলে যাচ্ছে। কড়া রোদ, সামনে-পিছনে, ডানে-বামে, কোন দিকে তাকানো যাচ্ছে না। ঝলমল রোদ এসে চোখে ধাক্কা দিচ্ছে আর ঘেমে, ভিজে চুপচুপ। তার পরও ললিতার সঙ্গে কথা শেষ করিনি__

আমার নাম ললিতা। মুক্তিযুদ্ধের সময় আমার বয়স আনুমানিক ১৩/১৪ বছর। আমার জীবনে খুব কম সময়ই কেটেছে সুখে। বিয়ের আগের দিনগুলোই ছিল আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ সময়। যখন ছোট ছিলাম তখন তো কিছুই বুঝতাম না। যখন থেকে বুঝতে শুরু করেছি, তখনকার দিনগুলো ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে আনন্দের। আমাদের তেমন ধনসম্পদ, অর্থ ছিল না। কিন্তু অনেক সুখের ও সুন্দর ছিল জীবনটা। আমাদের ছিল যৌথ পরিবার। আমার কাকা ছিল সাতজন আর পিসি ছিল আট/নয়জন, সঠিক মনে নেই। ঠামির ঘরে মোট ১৫ জন সন্তান জন্মেছিল। মরতে মরতে বড় হয়েছিল পাঁচজন। তার মধ্যে তিনজন ছিল পিসি আর ২ জন বাবা আর কাকা। ঠামি আমাদেরকে অনেক আদর করতেন। আমরা একটু বড় হতে না হতেই ঠামি আমাদের সবাইকে তার সঙ্গে রাখতেন। রাতে ঘুমানো থেকে শুরু করে ঠামি যখন যেখানে যেতেন তখন সেখানেই তাঁর সঙ্গে করে নিয়ে যেতেন। রাতে ঘুমানোর সময় ঠামি প্রতিদিনই কত সুন্দর গল্প শোনাতেন। শ্লোক দিয়ে দিয়ে কথা বলতেন। কত মজার মজার কথা বলতেন। মোট কথা ঠামির সঙ্গে থাকার সময়টা খুব উপভোগ করতাম। এমন করে ঠামি গল্প বলতেন যে, হাসির গল্প হলে হাসতে হাসতে পেট ব্যথা হয়ে যেতো। আর কষ্টের গল্প হলে নিজের অজান্তে চোখের জলে বালিশ ভিজে যেতো। শব্দ হবে দেখে ডুকরে ডুকরে কাঁদতাম। তারপরও শুনতে চাইতাম। যদি গল্প বলা বন্ধ করে দিতেন তাহলে কান্না কান্না কন্ঠে সবাই এক সঙ্গে চিৎকার করে না, না বলে উঠতাম। তখন ঠামি আস্তে আস্তে মধুর সুরে বলতেন, বাহিরে কারা যেন কান্না করছে তা শুনে আমি গল্প ভুলে গিয়েছি, এই জাতীয় কিছু বলে আমাদেরকে শান্ত করে দিতেন।

শুধু ঠামি না। আমাদের বাড়ির পরিবেশটাই ছিল খুব সুন্দর। বাড়ির সবার সঙ্গে সবার ভাল সম্পর্ক ছিল। সবাই সবাইকে সম্মান করতেন, ভাল কথাবার্তা বলতেন। গল্প, হাসি-ঠাট্টা করতো কাজের ফাঁকে ফাঁকে। এগুলো ছিল বলেই জীবনটা সুন্দর ও মধুময় ছিল। বাড়িতে যদি কারো বিয়ে বা পূঁজো হতো তখন যেন আনন্দের বন্যা বয়ে যেত। আমাদের বাড়ির এমন আনন্দ উল্লাস দেখে আশপাশের বাড়ি থেকেও লোকজন এসে যোগ দিতেন। আমাদের পুরো গ্রামেই ছিল হিন্দু। কোন মুসলমান ছিল না আমার জানামতে।

১৯৭১ সালের যুদ্ধের অনেক আগেই আমার বিয়ে হয়েছিল। আসলে তখন বা এখন কত বয়স তা বলতে পারবো না সঠিক করে। তখন কি বয়স হিসাব করে রেখেছি না-কি। আমার তো মনে হয় আমার মা-ও সঠিক করে বলতে পারবে না আমার সঠিক বয়স কত, দিন তারিখ মাস বলবে দূরের কথা। তবে এটা বলতে পারি, আমার যখন বিয়ে হয়েছে তখনও আমার মাসিক শুরু হয়নি। বিয়ের পাঁচ বছর পর স্বামীর বাড়িতে আসা যাওয়া শুরু হয়। তখন আস্তে আস্তে আমার শরীর ও মনের পরিবর্তন আসতে থাকে। যতদিন আমি নিজ থেকে সবকিছু বুঝতে পারিনি ততদিন আমাকে স্বামীর ঘরে দেয়নি। শ্বশুর বাড়িতে গেলে শ্বাশুড়ি-ননদের সঙ্গে রাখতেন।

যখন যুদ্ধ শুরু হয়েছে তখন বা তার কিছুদিন আগে বা পরে আমার পেটে বাচ্চা আসে। আগেই তো বলেছি, দিন তারিখ মাস আমি এত কিছুর হিসাব রাখিনি, রাখতেও পারতাম না। যখন আমি ধরা পড়ি তখন মনে হয় আমার পেটে বাচ্চা ছিল। যাই হোক, দেশে যখন তুমুল যুদ্ধ শুরু হয়ে গিয়েছে তখন তো সবকিছু এলোমেলো হয়ে গিয়েছে। তখন সকল মানুষের একটা মাত্র কাজ, আর তা হ’ল, নিজের জান মান বাঁচানো। তাই সব সময়ই আমাদেরকে প্রস্তুত থাকতে হতো। যখনই শুনি মিলিটারি আসছে তখনই সকল কাজকর্ম খাওয়া দাওয়া ফেলে, এমনকি গোসল করছি সেই ভেজা কাপড়েই দিতে হতো দৌড়। যার যার নিরাপদ জায়গায় গিয়ে আশ্রয় নিতে হতো।

আমি তো বাড়ির বউ, তাই আমাকে সবকিছু জিজ্ঞাসা করেই করতে হতো। তখন এটাই ছিল নিয়ম। আমি আমার স্বামীর বাড়ির কাউকে দোষ দেই না। যখনই শুনতাম গ্রামে মিলিটারি ঢুকেছে তখনই স্বামীর বাড়ির অন্যদের সঙ্গে গিয়ে লুকিয়ে পড়তাম। এভাবে কত দিন কত জায়গায় যে লুকিয়ে থাকতে হয়েছে তা বলে শেষ করতে পারবো না। এমন করে প্রায় দিনই লুকিয়ে থাকতে হতো। এরই মাঝে একদিন শুনি মিলিটারি এসেছে। সেই দিন স্বামীও বাড়িতে ছিল। যখনই শুনেছি মিলিটারি এসেছে, তখনই স্বামী শ্বাশুড়ি সহ বাড়ির সবাই তড়িঘড়ি করে যার যার নিরাপদ জায়গায় পালিয়ে যায়। আমাকে আমার স্বামী হাত ধরে নিয়ে গিয়েছে, সঙ্গে শ্বাশুড়ি ছিল। জঙ্গলের ভেতর পালিয়ে থাকি। কিছুক্ষণ পর স্বামী বা শ্বাশুড়ি বলছে, এখানে বেশি নিরাপদ না, অন্য জায়গায় যেতে হবে। এই বলে আমার স্বামী আমার হাতটা ধরে আর সঙ্গে শ্বাশুড়ি জঙ্গল থেকে বাহির হলাম অন্য জায়গায় পালাব বলে। যেই না জঙ্গল থেকে বাহির হলাম সঙ্গে সঙ্গে একদল মিলিটারি এসে আমাকে ধরে ফেলে। তখনই আমার শ্বাশুড়ি এক দিকে দৌড়ে যায়, আর আমার স্বামী আমার হাতটা ছেড়ে দৌড়ে পালিয়ে যায়। সেই যে স্বামী পালিয়ে গিয়েছে, সে আর ফিরে আসেনি। আজও গিয়েছে-কালও গিয়েছে। চিরকালের জন্য আমার স্বামী আমার কাছ থেকে পালিয়ে গিয়েছে। তারপর থেকে আমি আর কোন দিন আমার স্বামীকে দেখিনি। অনেক খুঁজেছি কিন্তু আর পাওয়া যায়নি।

আমাকে যখন ধরে নিয়ে যায়, তখন আমি মিলিটারিদের সঙ্গে খুব জোরাজুরি করি। তখন কেমন করে যেন আমার ডান হাতটা ভেঙ্গে যায়। তখন তো আর এসব বলতে পারবো না যে, কখন কিভাবে হাত ভেঙ্গেছে। তখন মাথায় একটাই চিন্তা ছিল যে, কিভাবে মান-ইজ্জত রক্ষা করা যায়। মরতে হলে মরবো তবুও মান দিব না।

এখনো ললিতার ডান হাতটা অনেকটা-ই বাঁকা এবং তাতে দাগ আছে।

তিনি বলতে থাকেন, তারপর হাত কিভাবে, কেমন করে ভাল হয়েছে তা তো আর বলতে পারবো না। আমার হাত ভাঙ্গার ব্যাথার চেয়ে আরও বেশি ব্যাথা ছিল শত শত মিলিটারিদের নির্যাতনের ব্যাথা। যতক্ষণ মিলিটারিরা আমার উপর নির্যাতন চালাত, ততক্ষণই আমার হাত ভাঙ্গার চেয়ে বেশি ব্যাথা পেতাম। শত শত বার নির্যাতনের শিকার হয়েছি। এই ছোট শরীর কিভাবে যে এত নির্যাতন সহ্য করেছে তা আমি জানি না, আমার শরীরই জানে। এখনও সেই দিনগুলো মনে হলে শরীর শিহরিত হয়ে উঠে, ভয়ে থর থর করে কাঁপতে থাকি। পা থেকে মাথা পর্যন্ত সমস্ত শরীরে তারা আঘাত করেছে। কি বলি আর এসব লজ্জা-শরমের কথা, মুখ দিয়ে আসে না। কিন্তু মনের ভেতর তো কথাগুলো দৌড়াদৌড়ি করে। তাদের নির্যাতনের কারণে সারা শরীর পেঁকে টসটসা হয়ে গিয়েছিল। একটু ধরলেই-ছুঁইলেই মনে হতো অনেক বড় আঘাত করছে। দল বেঁধে শত শত মিলিটারি মাসের পর মাস নির্যাতন করেছে। এগুলো কি আর বলা যায়? এগুলো মনে হলে এখনও মাথায় রক্ত উঠে যায়।

এই কথাগুলো বলার সময় বেশ উত্তেজিত হয়ে গেছেন ললিতা। তার চোখ, মুখ রাগে ফেটে যাচ্ছে। একটা সময় নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন ললিতা। তাকে শান্ত করতে আমার অনেক সময় লেগে যায়।

এরপর তিনি বলেন, আমাকে ধরে নিয়ে যায় স্থানীয় ক্যাম্পে। ঐ ক্যাম্পে শত শত মহিলাকে আটকে রেখে নির্যাতন করেছে। তাদের শরীরে যে কত শক্তি ছিল তা একমাত্র ভগবানই জানেন। একেকজন একই রাতে বার বার করেছে। সারা শরীরে অত্যাচার করত। একজনের এসব করা দেখলে অন্যদের তো আনন্দের শেষ নেই আর আমার জান যায় আর আসে। বাংকারের ভেতরের প্রতিটা মুহুর্ত ছিল একটা যুগের মতন।

তারা এত কষ্ট দিয়ে দিয়ে নির্যাতন করেছে যা বুঝানোর মতন ক্ষমতা আমার নেই। তার পরও ‘টু’ শব্দটা করতে দিত না। অতিরিক্ত কষ্ট হলে যদি নড়াচড়া করতাম, তখন মারত। এমন সব জায়গায় মারত যেখানে আঘাত করলে বেশি ব্যাথা পাব। আর যদি কান্নাকাটি করতাম, তাহলে মুখের ভেতরে কাপড় ঢুকিয়ে দিত, জল খেতে চাইলে মুখের ভেতর প্রস্রাব করে দিত।

আহা! কত বড় বড় ঘরের বউ ঝি ধরে ধরে এনেছে। আনার সময় তাদের পরনে কত দামী দামী পোষাক ছিল। সেই পোষাক খুলে উলঙ্গ করে রেখেছে। বাংকারের ভেতর কত মোটা মোটা বালা, গলার মালা, কানের দুল পড়েছিল, কে নেয়? তখন তো জান নিয়ে টানাটানি। এসব কে কারটা ধরে? যে কেউ ইচ্ছে করলে নিয়ে আসতে পারতো।

দেশ স্বাধীন হলে, মুক্তিবাহিনী গিয়ে আমাদেরকে উদ্ধার করে। বাংকার থেকে উদ্ধার করার পর স্বামীর বাড়িতে যাই। তারা আমাকে তাড়িয়ে দিয়েছে। বলেছে, এমন বউ আমরা বাড়িতে রাখবো না, আরও কত কথা। যাই বাবার বাড়িতে। গিয়ে দেখি, বাবার বাড়িতে কেউ নেই, সবাই ভারত চলে গিয়েছে। গ্রামেও থাকতে দেয়নি আমাকে। তখন আমি মুসলমানদের বাড়িতে গিয়ে থাকতাম আর ক্ষেতে খামারে কাজ করে চলতাম। আবার বেশি ভারি কাজও করতে পারি না, ডান হাতটা ভাঙ্গা। কোন চিকিৎসা ছাড়া এমনিতেই হাড় জোড়া লেগেছে। তাই ত্যাঁড়া ব্যাঁকা, শক্তি পাই কম। এভাবেই দিন পার হচ্ছে।

আমার জীবন আর দশজন নারীর মতন হ’ল না। না পেলাম স্বামীর আদর ভালবাসা, না থাকতে পারলাম স্বামীর সংসারে। রাস্তাঘাটে, যেখানে সেখানে কত কষ্ট করে জীবনের শেষ প্রান্তে এসে পৌঁছে গেলাম। জীবন থেমে থাকেনি, পার হয়েছে কিন্তু খুব কষ্টে।

লেখক: মুক্তিযুদ্ধ গবেষক ও প্রাবন্ধিক

/এএস

Header Ad
Header Ad

বোমা পাওয়া যায়নি বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইটে, নিরাপদে নামলো যাত্রীরা

ছবি: সংগৃহীত

ইতালির রোম থেকে ঢাকা আসা বাংলাদেশ বিমানের বিজি-৩৫৬ নম্বর ফ্লাইটে বোমা রয়েছে এমন আতঙ্কের পর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সতর্কতা জারি করা হয়। তবে, তল্লাশি শেষে কর্তৃপক্ষ জানায়, বিমানে কোনো বোমা বা ক্ষতিকর বস্তু পাওয়া যায়নি।

বিমানবন্দর সূত্রে জানা যায়, ফ্লাইটটি রোম থেকে ঢাকায় আসার পথে বোমা থাকার আশঙ্কা সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যায়। এ খবরে বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা দ্রুত জোরদার করা হয়। বিমানবাহিনী, সিভিল এভিয়েশন এবং এভসেকের দল নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তৎপর হয়।

বিজি-৩৫৬ ফ্লাইটটি মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) স্থানীয় সময় রাত ৮টায় রোমের লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি বিমানবন্দর থেকে রওনা হয়ে সকালে সকাল ৯টা ২৮ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নিরাপদে অবতরণ করে।

পরে, বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট বিমানটি তল্লাশি করে। সিট, করিডোর, টয়লেট ও ক্যাফে সহ বিমানটির সকল স্থানে চেকিং চালানো হয়। যাত্রীদের জরুরি ভিত্তিতে নামানো হলেও তাদের হ্যান্ড ব্যাগেজগুলোও তল্লাশি করা হয়, তবে সেগুলোর মধ্যে সন্দেহজনক কিছুই পাওয়া যায়নি।

শেষে, নিরাপদে বিমানটি তৃতীয় টার্মিনালে সরিয়ে যাত্রীদেরকে স্বস্তির সঙ্গে পৌঁছে দেওয়া হয়। ফ্লাইটটিতে মোট ১৩ জন ক্রু এবং ২৫৪ জন যাত্রী ছিল।

Header Ad
Header Ad

কারওয়ান বাজারে পুলিশের সাথে আন্দোলনকারীদের ধস্তাধস্তি

কারওয়ান বাজারে পুলিশের সাথে আন্দোলনকারীদের ধস্তাধস্তি। ছবি: সংগৃহীত

মালয়েশিয়া যেতে না পারা ১৮ হাজার কর্মীদের ‘মহাসমাবেশ ও অবস্থান কর্মসূচি’ শীর্ষক ব্যানারে সকাল থেকেই সড়কের ওপর অবস্থান করেন বিদেশগামী কর্মীরা। এতে মূল সড়কের উভয় পাশে যানবাহনের দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়।

টাকা দিয়েও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মালয়েশিয়া যেতে না পেরে আন্দোলনে নামা বিদেশগামী কর্মীদের কারওয়ান বাজার মোড় থেকে সরিয়ে দিয়েছে পুলিশ। এ সময় পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। আজ বুধবার (২২ জানুয়ারি) বেলা ১১টা দিকে রাস্তা থেকে উঠিয়ে দেয়া হয় তাদের।

তাদের দাবি- তারা এখনো রিক্রুটিং এজেন্টদের কাছ থেকে অর্থ ফেরত পাননি। তাই অর্থ ফেরতসহ বিভিন্ন দাবিতে রাজধানীর কারওয়ান বাজার এলাকায় অবস্থান নেন।

আবরোধকারীদের একজন বলেন, ৫ লাখ টাকা দিয়েও আমরা মালয়েশিয়া যেতে পারিনি। বর্তমানে ঋণ করে চলছি, পরিবার নিয়ে খুব কষ্টের মধ্যে আছি। জানুয়ারির মধ্যেই আমাদের মালয়েশিয়া যাওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। এ সময় বিষয়টি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাতের দাবিও জানান তিনি।

 

Header Ad
Header Ad

প্রথমবার ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে বিশ্বকাপের আশা বাঁচিয়ে রাখল বাংলাদেশ

ছবি: সংগৃহীত

প্রথমবারের মতো ওয়েস্ট ইন্ডিজ নারী দলকে হারিয়ে তাদের বিশ্বকাপের আশা বাঁচিয়ে রাখল বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। প্রথম ম্যাচে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে বড় ব্যবধানে হেরে যাওয়ার পর দ্বিতীয় ম্যাচে দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তন করেছে বাংলাদেশ। ৬০ রানে জয় লাভ করে সিরিজে ১-১ সমতা এনেছে নিগার সুলতানা জ্যোতির নেতৃত্বাধীন টাইগ্রেসরা।

দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশ প্রথমে ব্যাটিং করতে নেমে ১৮৪ রান সংগ্রহ করে। অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতির ৬৮ রানের ইনিংসের সাথে সোবহানা মোস্তারি এবং স্বর্ণা আক্তারের ২৩ ও ২১ রানের ইনিংসে বাংলাদেশ একটি শক্তপোক্ত সংগ্রহ দাঁড় করায়।

এরপর, উইন্ডিজদের লক্ষ্য ছিল ১৮৫ রান, তবে বাংলাদেশের বোলিং দলে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স ছিল। পেসার মারুফা আক্তার ২টি এবং স্পিনার নাহিদা আখতার, রাবেয়া খান, ফাহিমা খাতুন ৭টি উইকেট তুলে নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১২৪ রানে অলআউট করে দেয়।

এটি ছিল বাংলাদেশের প্রথম ওয়ানডে জয় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। সিরিজের শেষ ম্যাচে জয় লাভ করলে, বাংলাদেশের নারী দল প্রথমবারের মতো ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ জয় করবে এবং সরাসরি নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপে খেলার টিকিট পাবে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

বোমা পাওয়া যায়নি বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইটে, নিরাপদে নামলো যাত্রীরা
কারওয়ান বাজারে পুলিশের সাথে আন্দোলনকারীদের ধস্তাধস্তি
প্রথমবার ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে বিশ্বকাপের আশা বাঁচিয়ে রাখল বাংলাদেশ
৭ টেলিকম প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিল
বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইটে বোমা হামলার হুমকি, চলছে তল্লাশি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গাছ থেকে ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের দায়িত্ব ছাড়লেন সারজিস আলম
শিশুদেরও গোপন কারাগারে রেখেছিলেন হাসিনা, দেওয়া হতো না মায়ের দুধ!
অভিযানকালে জুয়াড়িদের হামলা, ডিবি পুলিশের ৭ সদস্য আহত
৯ গোলের রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে অবিশ্বাস্য জয়, নকআউট পর্বে বার্সেলোনা
চালের দাম বাড়ার আর সুযোগ দেব না, বরং কমবে: খাদ্য উপদেষ্টা
খালেদা জিয়ার লিভার প্রতিস্থাপন সম্ভব হচ্ছে না, চলছে বিকল্প চিকিৎসা
থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক
জার্মান চ্যান্সেলরের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বৈঠক
ব্যর্থতা স্বীকার করে ইসরায়েলি সেনাপ্রধানের পদত্যাগ
সুইজারল্যান্ডে পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস
তুরস্কে হোটেলে ভয়াবহ আগুন, নিহত ৬৬
ভোটের মাঠে ইসলামের পক্ষে একটিই বাক্স পাঠানোর প্রত্যয়
পুলিশের ঊর্ধ্বতন ২৩ কর্মকর্তাকে বদলি
এবার জার্সিতে ‘পাকিস্তান’ লেখা নিয়ে ভারতের আপত্তি, খেপেছে পিসিবি