শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

মুক্তি? ওরে, মুক্তি কোথায় পাবি, মুক্তি কোথায় আছে?

বঙ্গবন্ধুর ন্যায় মুক্তমনা, উদার ও স্বাধীনতার চেতনা ও স্বপ্নে প্রোজ্জ্বল একজন অবসংবাদিত নেতা বাঙালি জাতি পেয়েছিল বলেই পৃথিবীর মানচিত্রে আজ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের অবস্থান নিশ্চিত হয়েছে। বাঙালি জাতি পেয়েছে স্বতন্ত্র পরিচয়। বঙ্গবন্ধুর জীবনকৃতি র্পযালোচনা করলে বোঝা যায় সংক্ষিপ্ত ৫৫ বছরের জীবনে কতটা চিরস্থায়ী প্রভাব রেখে গেছেন। বাঙালির মুক্তির এই মহানায়কের মস্তিষ্ক ও শিরা-ধমনীতে প্রবাহিত হচ্ছে দীপ্তিমান দ্বীপশিখা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের শেষ প্রান্তে এসে বঙ্গবন্ধুর জীবনভর মুক্তি ও সত্যের আন্দোলন ও অনুসন্ধানের প্রতি আমাদের অন্তহীন বিনম্র শ্রদ্ধা ও ভালবাসা। শিরোনামে উদ্ধৃত একশত এগারো বছর পূর্বে রচিত রবীন্দ্র পঙক্তি বঙ্গবন্ধুর মুক্তি, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা অনুসন্ধান, আন্দোলন ও অর্জনের যথাযথ প্রতিফলন।

জীবনের শৈশব, কৈশোর, যৌবনের পুরোটা সময় সকল মানুষের সার্বিক মুক্তির জন্য বঙ্গবন্ধুর যে অতুলনীয় ঔদার্যময় চিন্তাশীলতা ও কর্মকুশলতা আমরা লক্ষ্য করি তাতে সহজেই উপলব্ধি করা যায় যে তিনি ছিলেন মানবমুক্তির অগ্রদূত।

মানবমুক্তির পথ পরিক্রমায় সদা ব্যাপৃত বঙ্গবন্ধুর ৩০৫৩ দিনের কারাজীবনের অতি অল্পই প্রকাশ পেয়েছে বঙ্গবন্ধু রচিত ‘কারাগারের রোজনামচা’ নামক ২০১৭ সালের মার্চ মাসে প্রকাশিত গ্রন্থে। কিন্তু পাকিস্তানের ঔপনিবেশিক আমলের পুরোটা সময় তিনি কীভাবে শাসকদের নজরবন্দীতে ছিলেন তার প্রমাণ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার নথিপত্র থেকে মূল্যবান দলিলের একটি সংস্করণ প্রকাশ করেছে। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা লন্ডনে অনুষ্ঠিত এ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে বলেছেন, বাংলা ভাষা আন্দোলনের প্রথম পর্যায় অর্থাৎ ১৯৪৮ সাল থেকে ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত পাকিস্তানিদের সংগৃহীত সকল তথ্য এ গ্রন্থে সন্নিবেশিত আছে।

বাঙালির প্রধান মিত্র হওয়ার কারণেই তরুণ ছাত্রনেতা শেখ মুজিবুর রহমানকে ঔপনিবেশিক শাসকরা পাকিস্তানের প্রধান শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করে ও মুক্ত মানুষ হিসেবে প্রাপ্য সকল মৌলিক অধিকার থেকেও দশকের পর দশক তাঁকে বঞ্চিত রাখে।

বঙ্গবন্ধুর জীবন থেকে শিক্ষাগ্রহণ করলে, বিশেষ করে বঙ্গবন্ধু রচিত, ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’, ‘কারাগারের রোজনামচা’ ও ‘আমার দেখা নয় চীন’ গ্রন্থত্রয় পাঠ করলে পাঠকরা নিশ্চয়ই উপলব্ধি করতে পারবেন— ১১১ বছর পূর্বে রবীন্দ্রনাথ কেন লিখেছিলেন ‘মুক্ত করো হে মুক্ত করো আমারে’।

স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথম রবীন্দ্র জন্মোৎসবে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘রক্ত দিয়ে আমরা রবীন্দ্র অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছি। বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে লক্ষ লক্ষ প্রাণ ও অপরিমেয় ত্যাগের বিনিময়ে। কিন্তু সত্য, শ্রেয়, ন্যায় ও স্বজাত্যের যে চেতনা বাঙালি কবিগুরুর কাছ থেকে লাভ করেছে আমাদের স্বাধিকার সংগ্রামে তারও অবদান অনেকখানি। বাঙালির সংগ্রাম আজ সার্থক হয়েছে বাঙালি তার বুকের রক্ত দিয়ে রবীন্দ্র অধিকারকে বাংলাদেশের পুন:প্রতিষ্ঠিত করেছে। (দৈনিক বাংলা, ৮ মে, ১৯৭২)

প্রধানমন্ত্রী হিসেবে জাতির উদ্দেশে বঙ্গবন্ধুর প্রথম বাণী ছিল—
‘উদয়ের পথে শুনি কার বাণী,
ভয় নাই, ওরে ভয় নাই-
নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান
ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই।’

১২ জানুয়ারি, ১৯৭২ অপরাহ্নে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রীরূপে শপথ গ্রহণের পরপরই বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার প্রতিনিধির প্রশ্ন স্যার, ‘আজকের দিনে জাতিকে আপনি কি বাণী শুনাবেন?’
জবাবে বঙ্গবন্ধু তার চোখে-মুখে স্বভাবসুলভ উদার হাসি মাখা সঙ্গে সঙ্গে আবৃত্তি করেন (ইত্তেফাক, ১৩ জানুয়ারি ১৯৭২) রবীন্দ্রনাথের ১১৪ বৎসর পূর্বে রচিত ‘সুপ্রভাত’ কবিতাটির একাংশ যা উপরে উদ্ধৃত। বাংলাদেশ প্রজাতন্ত্ররে প্রভাতক্ষণে ‘সুপ্রভাত’ কবিতার মাধ্যমে জাতির প্রতি বঙ্গবন্ধুর অভয় বাণী গভীর তাৎপর্যবহ। অধিকারহীন, বঞ্চিত ও দরিদ্র মানুষের মুক্তি ও স্বার্থরক্ষায় বঙ্গবন্ধু তরুণ বয়স থেকেই যে কীভাবে অদম্য প্রচেষ্টা চালিয়ে গেছেন তার বহু প্রমাণ পাওয়া যায় ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ ও ‘কারাগারের রোজনামচা’ গ্রন্থদ্বয়ের পাতায় পাতায়।

১৯৪৯ সালে ২৬শে র্মাচ তরুণ ছাত্রনতো শেখ মুজবিুর রহমানকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদ থেকে কতিপয় শর্তাধীনে বহষ্কিার করা হয় কিন্তু আপসহীনতার প্রতিজ্ঞায় সুদৃঢ় শেখ মুজিব সেদিন পেছনে ফিরে তাকাননি। ইতিহাসের কি অদ্ভুত মিল যে, বাংলাদেশ নামক প্রজাতন্ত্রের স্বাধীনতা ঘোষণা করেছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

ইউনেস্কো মহাপরিচালকরে ঘোষণা-সনদ

গত ১১ নভম্বের, ২০২১ তারিখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইউনেস্কোর প্যারিস সদর দপ্তরে ৪১তম সাধারণ অধিবেশনে বঙ্গবন্ধুর নামে গত বৎসর প্রর্বর্তিত ‘ইউনেস্কো বাংলাদেশ শেখ মুজিবুর রহমান আর্ন্তজাতিক সৃজনশীল অর্থনীতি পুরস্কার’ প্রদান অনুষ্ঠানে বিশ্বের র্আথ-সামজিক-বৈজ্ঞানিক উন্নয়নে বাংলাদেশের অবদান ও আগ্রহের কথা উল্লেখ করেন।

ভাষা হচ্ছে শিক্ষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি, বিজ্ঞান, বাণিজ্য, প্রতিরক্ষা, প্রশাসনসহ সকল ক্ষেত্রের মূল চালিকাশক্তি। মায়ের ভাষাতেই আমরা খুঁজে পাই জীবন জীবিকার প্রাণশক্তি। পাকিস্তান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পরপরই গর্ভনর জেনারেল জিন্নাহর অযৌক্তিক ঘোষণার কারণেই ভাষা আন্দোলন শুরু হয়ে যায়। পাকিস্তানিরা বাংলা ভাষার গুরুত্ব অস্বীকার করে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের অধ্যায়নরত তরুণ ছাত্রনেতা শেখ মুজিবুর রহমান রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের প্রথম পর্বে ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ গ্রেফতার হন। গ্রেফতারের পূর্বেই তিনি বলেছিলেন, ‘পাকিস্তানের এই অদ্ভুত কাঠামোতে আর যাই হোক বাঙালির মুক্তি সম্ভব নয়। বাঙালির মুক্তির জন্য প্রয়োজন তাদের স্বাধীন মাতৃভূমি।’

স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালের ৬ই মে তারিখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের আমন্ত্রণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘স্বাধীনতা আন্দোলনের সূচনা হয় ১৯৪৮ সালের ১১ই মার্চ।’’ (দৈনিক বাংলা, ৭ মে ১৯৭২)

পৃথিবীর প্রতিটি মাতৃভাষাই যে গুরুত্বপূর্ণ সেই বোধটি এসেছে আমাদের একুশে ফেব্রুয়ারি থেকে। ইউনেস্কোর সাধারণ অধিবেশনে ১৯৯৯ সালে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০০০ সাল থেকে সমগ্র বিশ্বে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে একুশে ফেব্রুয়ারি উদযাপিত হয়ে আসছে।

গত বছর ১১ ডিসেম্বর ইউনেস্কোর ২১০তম নির্বাহী বোর্ডের সভায় 'ইউনস্কেো-বাংলাদেশ বিজয়ের অগ্রদূত ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আর্ন্তজাতিক সৃজনশীল অর্থনীতি পুরস্কার' প্রবর্তনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। মুজিব শতবর্ষের এই সময়ে বিশ্ব সংস্থা কর্তৃক তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য এ পুরস্কার ঘোষণা বিশ্বের যুবসমাজকে দারুণভাবে উৎসাহিত ও অনুপ্রাণিত করবে।

লেখক: সাবেক উপাচার্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

আরএ/

Header Ad
Header Ad

রাঙামাটিতে সিএনজি-পিকআপ সংঘর্ষে নিহত ৫

প্রতীকী ছবি

রাঙামাটির কাউখালীতে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন পাঁচজন। শনিবার (২৬ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার রাবারবাগান এলাকায় একটি পিকআপ ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

তাৎক্ষণিকভাবে নিহতদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কাউখালী উপজেলার বেতবুনিয়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এফ আই ইসহাক জানান, পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে এবং উদ্ধার কার্যক্রম চলছে। দুর্ঘটনার বিস্তারিত এখনও জানা যায়নি।

বিস্তারিত আসছে...

Header Ad
Header Ad

রেফারির বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছে রিয়াল, ফাইনাল ম্যাচ বয়কটের হুমকি

ছবি: সংগৃহীত

কোপা দেল রে ফাইনালের আগে মাঠের লড়াইয়ের আগেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে স্প্যানিশ ফুটবল অঙ্গন। হাইভোল্টেজ এই ম্যাচের রেফারিং নিয়ে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করে ম্যাচ-পূর্ব সকল আনুষ্ঠানিকতা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। ক্লাবটির ভাষ্য, রেফারিদের সাম্প্রতিক বক্তব্যে "স্পষ্ট বিদ্বেষ ও অসম্মান" ফুটে উঠেছে, যা তাদের পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব নয়।

শুক্রবার এক বিবৃতিতে রিয়াল জানায়, তারা ফাইনালের আগে প্রচলিত সকল প্রটোকল—ম্যাচ-পূর্ব প্রেস কনফারেন্স, মিডিয়ায় উন্মুক্ত অনুশীলন, প্রেসিডেন্টদের ডিনার এবং ঐতিহ্যবাহী ফটোসেশন—বর্জন করবে।

উত্তেজনার সূত্রপাত ক্লাবটির নিজস্ব চ্যানেল রিয়াল মাদ্রিদ টিভি-তে সম্প্রচারিত এক ভিডিও ঘিরে। সেখানে ফাইনালের রেফারি রিকার্দো দে বুরগোস বেংগোয়েচিয়ার প্রতি তীব্র সমালোচনা করা হয়। পরে এক সাংবাদিক সম্মেলনে আবেগপ্রবণ রেফারি জানান, এসব সমালোচনার প্রভাব তার ব্যক্তিগত জীবনেও পড়েছে। “যখন আপনার সন্তান স্কুলে গিয়ে শুনে—তার বাবা একজন চোর—তখন সেটা সত্যিই ভয়াবহ অভিজ্ঞতা,” বলেন তিনি, চোখের পানি মুছতে মুছতে।

তবে বিতর্ক এখানেই শেষ হয়নি। ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি (ভিএআর) পাবলো গনসালেস ফুয়ের্তেসের এক মন্তব্যে আরও জ্বালানি পড়ে আগুনে। তিনি বলেন, “রেফারিরা এক হচ্ছেন এবং রিয়াল মাদ্রিদ টিভির চাপ মোকাবেলায় গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।” এই বক্তব্যকেও হুমকি হিসেবে দেখছে রিয়াল।

স্প্যানিশ মিডিয়ায় জল্পনা ছিল—রিয়াল হয়তো ফাইনালেই অংশ নেবে না। তবে ক্লাবের পক্ষ থেকে পরে দ্বিতীয় বিবৃতিতে জানানো হয়, ম্যাচ বর্জনের কোনো পরিকল্পনা নেই। “রিয়াল মাদ্রিদ কখনও ফাইনালে না খেলার কথা বিবেচনা করেনি,” জানানো হয় স্পষ্ট ভাষায়।

এদিকে, লা লিগা প্রেসিডেন্ট হাভিয়ের তেবাস ক্লাবটির এই অবস্থানকে 'ক্ষমতার খেলা' বলে আখ্যায়িত করেছেন। রেফারিরাও ইঙ্গিত দিয়েছেন, রিয়াল মাদ্রিদ টিভির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।

উল্লেখ্য, এ ধরনের বর্জন রিয়ালের জন্য নতুন নয়। গত অক্টোবরে ব্যালন ডি’অর অনুষ্ঠানে ভিনিসিয়ুস জুনিয়রকে যথাযথ সম্মান না জানানোর প্রতিবাদে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান বর্জন করেছিল ক্লাবটি। তাদের ভাষায়, “যেখানে সম্মান নেই, সেখানে রিয়াল মাদ্রিদ যায় না।”

Header Ad
Header Ad

আইন উপদেষ্টাকে জড়িয়ে ভারতের গণমাধ্যমে মিথ্যা প্রতিবেদন, মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি

আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। ছবি: সংগৃহীত

ভারতের একটি অনলাইন পোর্টালে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলকে জড়িয়ে প্রকাশিত মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর প্রতিবেদন নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। এ ধরনের প্রতিবেদন সাংবাদিকতার নৈতিকতা ও সত্যের পরিপন্থী বলেও মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) রাতে ওই বিবৃতি গণমাধ্যমে পাঠানো হয়।

এতে বলা হয়, বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) নিউজ অ্যারেনা ইন্ডিয়া অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল সম্পর্কে একাধিক মিথ্যা, মানহানিকর ও দায়িত্বজ্ঞানহীন অভিযোগ উত্থাপন করেছে। প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিল, ‘বাংলাদেশ লিগ্যাল অ্যাডভাইজার মিটস টপ লস্কর–ই–তাইয়েবার অপারেটিভ পোস্ট জম্মু অ্যান্ড কাশ্মীর অ্যাটাক’।

প্রতিবেদনে অভিযোগ করা হয়, কাশ্মীরের পেহেলগামে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের পর লস্কর-ই-তাইয়েবার একজন শীর্ষ নেতার সঙ্গে উপদেষ্টা আসিফ নজরুল সাক্ষাৎ করেছেন, যা পুরোপুরি ভিত্তিহীন এবং কাল্পনিক।

প্রতিবেদনে হেফাজতে ইসলামের নেতাদের ভুল পরিচয়ে তুলে ধরা হয়েছে। হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশে বৈধভাবে পরিচালিত আলেম ও  ইসলামি সংগঠনগুলোর একটি প্ল্যাটফর্ম। প্রতিবেদনে যাদের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, তারা হেফাজতে ইসলামের নেতা, কোনো সন্ত্রাসী সংগঠনের সঙ্গে তারা যুক্ত নন। শেখ হাসিনার স্বৈরশাসনামলে হাজার হাজার হেফাজত সদস্য রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যা ও সাজানো মামলার শিকার হন। অন্তর্বর্তী সরকারের বিচার ও আইনি সংস্কারের অঙ্গীকারের অংশ হিসেবে আসিফ নজরুল তার দায়িত্বপূর্ণ পদে থেকে হেফাজতের এই ভুক্তভোগীদের ন্যায়বিচারের আবেদন শুনতে হেফাজতের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করেন।

হেফাজতের নেতাদের সঙ্গে আইন উপদেষ্টার বৈঠক যেদিন হয়েছে বলে নিউজ অ্যারেনা ইন্ডিয়া উল্লেখ করেছে, তার অন্তত তিন দিন আগেই ওই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনার বিষয় ছিল শুধু আইনি প্রক্রিয়া ও মামলার তালিকা হস্তান্তর। বৈঠকের শেষে প্রতিনিধিদলের অনুরোধে একটি ছবি তোলা হয়, যা এমন সভায় প্রচলিত ও স্বাভাবিক রীতি।

হেফাজতের বর্তমান নেতৃত্ব বাংলাদেশের জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের রাজনৈতিক সংলাপে অংশগ্রহণ করে। হেফাজতের নেতারা ঢাকায় পশ্চিমা দেশগুলোর দূতাবাসগুলোর সঙ্গেও নিয়মিত বৈঠক করে থাকেন, যা তাদের রাজনৈতিক বৈধতা ও আন্তর্জাতিক সম্পৃক্ততার বিষয়টিকে প্রতিফলিত করে।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ স্বাধীন মানবাধিকার সংগঠনগুলো পূর্ববর্তী সরকারের দমনমূলক কর্মকাণ্ড ও হেফাজতসহ বিরোধীদলীয় কর্মীদের ওপর নিপীড়নের ঘটনাগুলো নথিবদ্ধ করেছে, সমালোচনাও করেছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলোর সেই প্রতিবেদনগুলো প্রমাণ করে যে হেফাজতের নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে এসব মামলার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ছিল, যা বর্তমান সরকারের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার প্রচেষ্টাকে সমর্থন করে।

ভারতীয় গণমাধ্যমটির প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে যে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল তার ফেসবুক পেজে ভারতের নেতাদের বিরুদ্ধে উসকানিমূলক মন্তব্য করেছেন। এ বিষয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, আসলে বিষয়টি হলো ওই পোস্ট ছিল একজন ভারতীয়র লেখা, যিনি নিরাপত্তাব্যবস্থার ঘাটতি নিয়ে সমালোচনা করেন। সেই পোস্টটি শেয়ার করে পেহেলগামে হামলার নিন্দা জানান আসিফ নজরুল। পরে সম্ভাব্য বিভ্রান্তির আশঙ্কা করে তিনি স্বেচ্ছায় পোস্টটি কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মুছে ফেলেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা সকল গণমাধ্যমকে অনুরোধ করছি, যেন তারা সংবাদ প্রকাশের আগে যথাযথ যাচাই করে এবং দায়িত্বশীল সাংবাদিকতার নীতি অনুসরণ করে।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, পেহেলগাম হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়ে, নিহত ব্যক্তিদের প্রতি শ্রদ্ধা ও তাদের স্বজনদের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। একই সঙ্গে পেহেলগামের হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানান তিনি।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

রাঙামাটিতে সিএনজি-পিকআপ সংঘর্ষে নিহত ৫
রেফারির বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছে রিয়াল, ফাইনাল ম্যাচ বয়কটের হুমকি
আইন উপদেষ্টাকে জড়িয়ে ভারতের গণমাধ্যমে মিথ্যা প্রতিবেদন, মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি
নিজ দেশেই বিমান হামলা চালালো ভারত, ‘অসাবধানতা’ বলছে বিমান বাহিনী
গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত আরও ৮৪ ফিলিস্তিনি
আইনি নোটিশ প্রসঙ্গে যা বললেন ডা. তাসনিম জারা
ভারত-পাকিস্তান বিরোধে উত্তেজনা, শান্তির বার্তা নিয়ে এগিয়ে এলো ইরান
তারেক রহমানকে নিয়ে দ্য উইকের কাভার স্টোরি ‘নিয়তির সন্তান’
কুয়েটের ভিসি ও প্রো-ভিসিকে অব্যাহতি দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি
মেধাসম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহারে সবাইকে উদ্যোগী হতে হবে: প্রধান উপদেষ্টা
বেনাপোলে ৬ নারী ছিনতাইকারী গ্রেফতার
‘সংস্কার না নির্বাচন’ এই খেলা বাদ দিয়ে বিচার করুন: সারজিস আলম
যুদ্ধ বন্ধের আলোচনার মধ্যেই মস্কোয় গাড়িবোমা হামলায় রুশ জেনারেল নিহত
পোপ ফ্রান্সিসকে শেষ বিদায় জানাতে রোমে পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের 'বি' ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন
পাকিস্তানে বোমা বিস্ফোরণে নিরাপত্তা বাহিনীর ৪ সদস্য নিহত
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিলেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ
নওগাঁয় পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগে প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার ১
শিগগিরই স্থলভিত্তিক এলএনজি টার্মিনাল স্থাপন করবে সরকার: প্রেস সচিব
টাঙ্গাইলে ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে মাছ ব্যবসায়ী খুন