বৃহস্পতিবার, ২ জানুয়ারি ২০২৫ | ১৮ পৌষ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আদর্শে উজ্জীবিত হোক তরুণ প্রজন্ম

আজ ১৪ ডিসেম্বর। শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। আমার ভাই শহীদ মুনীর চৌধুরীকে আমরা এদিন হারিয়েছি। ১৯৭১ এর এই দিনে তাকে ধরে নিয়ে নিয়ে যায় পাক হানাদার বাহিনী। আমি তখন ছিলাম দিল্লিতে। ঠিক তখনই আমি খবরটি পাই। নানা রকম উড়ো খবর আসে। দূরে থাকলে যেমনটি হয়, ব্যাপারটি সত্যি না মিথ্যা, বুঝতে পারি না। আমার তো ৮টি ভাই। কবির চৌধুরী, মুনীর চৌধুরীসহ এ রকম কয়েক জনকে ধরে নিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা আমরা করেছিলাম। যখন আমার কানে খবরটি পৌঁছায় যে, মুনীর চৌধুরীকে ধরে নিয়ে গেছে, ভাইতো ! আমি অস্থির হয়ে উঠি। এদিকে খবর আসছে দেশ স্বাধীন হয়ে আসছে!

সেদিনটির কথা মনে পড়ে। আমি খুব আনন্দিত যে, দেশে ফিরছি। আমি আমার স্বামী রামেন্দু মজুমদারকে খাবার দিব। উনি স্বাধারণত খাওয়া দাওয়ার পরে শুয়ে পড়েন। কিন্তু সেদিন ঘুমাচ্ছেন না। তখন আমি তাকে বললাম, তুমি খেয়ে শুয়ে পড়। আজ দেরি করছ কেন? তখন উনি আমাকে বললেন, আচ্ছা, তুমি এদিকে এসো। আমি বুঝতে পারছি, কিছু একটা হয়েছে ! আমি পাশে বসতেই তিনি বললেন, দেখো, তোমাদের পরিবারের সবাই খুব ধৈর্যশীল এবং সচেতন। তারা খুবই সংযত। সহজেই ভেঙ্গে পড়েন না। এসব কথার মাঝেই আমার বুকের ভেতর কিছু একটা হচ্ছে ! আমি বললাম, কি হয়েছে? তখন উনি বললেন, দেখো, মুনীর ভাইকে ধরে নিয়ে গেছে।

সেই মুহূর্তটি আমি বর্ণনা করতে পারি না। মুনীর ভাইকে ধরে নিয়ে গেছে, আরও অনেককেই ধরে নিয়ে গেছে। আমি সে রাতে ঘুমাতে পারি নাই। আমার কোন অনুভূতি ছিল না। আমি চুপচাপ হয়ে গিয়েছিলাম। আমার ফরাসী ভাষার শিক্ষক, মাদাম হুক, উনি আমাকে খুবই স্নেহ করতেন। সেদিন তার কথায় আমি একটি বিষয় উপলব্ধি করি যে, মানুষ কাউকে না কাউকে পাবেই তাকে ভালবাসার জন্য, স্বান্তনা দেওয়ার জন্য। উনি আমাকে বললেন যে, তুমি অস্থির হচ্ছ কেন? ভেঙ্গে পড়ো না।

মুনীর চৌধুরীকে কেন নিয়ে গেলেন? উনি আমাকে বললেন উনাকে, উনাদের মত মানুষদেরকেইতো নিয়ে যাবে, একটি দেশকে খোড়া করে দেওয়ার জন্য বুদ্ধিজীবীদেরকে তো নিতে হবেই। তিনি আমাকে ঘুমের ঔষধ দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিলেন।

মুনীর চৌধুরী অভ্যাসবশত গোসল করে এসে মা দুপুরের খাবার দিলে তখন খেতে বসতেন। মা খাবার বেড়ে না দিলে উনি বসতেন না। সেদিন মা বললেন যে, মুনীর তুমি একটু বসো। আমি যোহরের নামাজটি পড়ে নিই। তারপর ভাত দিব।তিনি ভাত খেতে পারেন নি।

মুনীর চৌধুরীর কাছে অনেকেই আসতেন। তিনি বাসায় এমনিতে বলে রেখেছিলেন যে, কেউ যদি বলে যে, স্যার আছেন? তাহলে দরোজা খুলে দিবে। কিন্তু যারা সেদিন এসেছিল ওরা ছিল আলবদর। স্যার আছেন? বলাতে আমার ইমিডিয়েট বড় যিনি তিনি দরোজা খুলে দিয়েছিলেন। মুনীর ভাই তখনও শার্ট পড়েননাই।

পাঞ্জাবি আর লুঙ্গি পরা। দরোজা খুলে দেওয়ার পরেই তাঁর পিঠে বন্দুক রাখা হল। আমার ভাই তখন বুঝতে পেরেছেন। উনি তখন বললেন যে, আমি শার্ট পরে আসি। উনি জামা পরে আসলেন। চোখ বন্ধ করে উনাকে নিয়ে যাওয়া হল। আরও একজন মোফাজ্জ্বল হায়দার চৌধুরী স্যার, উনি আমার সরাসরি শিক্ষক ছিলেন। স্যার, অত্যন্ত জ্ঞানী, শান্ত প্রকৃতির, অমায়িক, জীবনে এত লেখাপড়া, এত ভাল ফলাফল তার হয়েছে যে, যেটি না বললেই নয়। উনাকেও নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

এ রকম অনেক গুণি মানুষকে নিয়ে যাওয়া হল। যারা সমাজের মাথা ছিলেন তাদেরকে বেছে বেছে নিয়েছে এবং তাদের প্রতি অত্যাচারের মাত্রাও এমন নিসংশ ছিল যে, তা বর্ণনাতীত। যেমন ডাঃ রাব্বী হার্ট স্পেশালিষ্ট ছিলেন, উনার হার্ট কেটে নেওয়া হয়েছে। ডাঃ আলীম চোখের ডাক্তার ছিলেন, তার চোখ উপড়ে নেওয়া হয়েছে। এভাবে কস্ট দিয়ে, যন্ত্রণা দিয়ে উনাদের হত্যা করা হয়েছে। ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস ! তাঁরা এটি পাওয়ার মত লোক ছিলেন না! যাইহোক, আমরা অনেকদিন আশা করেছিলাম যে, উনাকে পাওয়া যাবে। আমরা তাঁর লাশও পাইনি। আমি শুধু উনার কথা বলব না, আরও বুদ্ধিজীবী যারা উনার সাথে ছিলেন, যাদেরকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, তাদের অনেকেরই কোনো খোঁজ মিলেনি।

বঙ্গবন্ধুর কারণে আমরা যেভাবে মাত্র ন’মাসে একটি স্বাধীন দেশ পেয়েছি। কিন্তু একটি দেশ পাওয়া যত কষ্টকর, সেটি রক্ষা করা আরও বেশি কষ্টকর। এই দেশটিকে আমাদের পরিচর্যা করা উচিত ছিল। আমরা সেটি করতে পারি এবং আমাদের সেটি করা উচিত। আমরা যদি দেশটিকে ভাল না বাসি, দেশ থেকে সাম্প্রদায়িকতা দূর করতে না পারি, আসলে সেরকম কিছুইতো আমরা কার্যত করতে পারি নি। ষড়যন্ত্র, সাম্প্রদায়িকতা, লুটপাট, নির্যাতন, সবই কিন্তু চলছে। আমার শংকা এটিই যে, আমরা যদি নিজেদের মন কে পরিশুদ্ধ না করি, তাহলে বোধয় এ দুক্ষ আর কখনও ঘুচবে না।

আরেকটি বিষয় যেটি, বুদ্ধিজীবী দিবস আসছে। স্বাধীনতা দিবস আসছে। তখনই কেবল আমরা এসব কথা বলি অথবা স্মরণ করি। আমি বলব, যারা দেশের জন্য মূল্য দিয়ে গেছেন, আমরা যেন তাদের স্মরণ করি অন্য সময়েও। আমরা যেন তাদের প্রাপ্য সম্মানটুকু করতে পারি শ্রদ্ধার সাথে। তাহলে বাংলাদেশের মানুষ নিশংসতা ভুলে সুখে কালাতিপাত করতে পারে না। এর প্রতিদানতো আমাদের দিতেই হবে। আমি আর বেশি কিছু বলতে চাই না। শুধু এটুকুই বলব যে, আমার মত অনেক পরিবারই তাদের স্বজন হারিয়েছেন। স্বজন হারানোর বেদনাটুকু হয়তো তাঁরাও মাঝেমাঝে ভুলে যান। কারণ জীবনতো চলতে হবে। আমার মনে হয়, মনে করেই আমাদের তাদের স্মরণ করা উচিত। এই দুঃখগুলো আমাদের ভুলে যাওয়া উচিত না।

বঙ্গবন্ধুর ন’ মাসে তার চরিত্রের যে দৃঢ়তা এবং সংকল্পের জোরে বাংলাদেশকে আমরা লাভ করেছি। তা না হলে আমাদের আরও কী অবস্থা হতো, আরও কতটা খারাপ অবস্থা হতো, সেটা কল্পনা করাও কঠিন! আমি সকল শহীদদের সশ্রদ্ধ চিত্তে স্মরণ করি ও তাদের আত্মার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই।

লেখক: নাট্যব্যক্তিত্ব

Header Ad
Header Ad

বাড়তে পারে ৬৫ পণ্যের দাম, ভ্যাট বৃদ্ধির প্রস্তাব

ছবি: সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) চাপে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) ও সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকার ৬৫টি পণ্য ও সেবার ওপর ভ্যাট বাড়ানোর প্রস্তাব করছে। এর ফলে বাজেটের আগেই এসব পণ্যের মূল্য বাড়তে পারে।

এ তালিকায় রয়েছে জীবন রক্ষাকারী ওষুধ, গুঁড়া দুধ, বিস্কুট, জুস, ফলমূল, সাবান, সিগারেট, টিস্যু পেপার, মিষ্টি, এলপি গ্যাস, বিমান টিকিট এবং হোটেল-রেস্তোরাঁর খাবারের খরচসহ আরও অনেক পণ্য। বিশ্লেষকরা শঙ্কা প্রকাশ করেছেন, এ উদ্যোগ সাধারণ জনগণের ওপর আর্থিক চাপ বাড়াবে এবং মূল্যস্ফীতির বর্তমান পরিস্থিতিকে আরও সংকটময় করবে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) এক কর্মকর্তা জানান, বাজেটের সময় ভ্যাট পরিবর্তন করা হয়, তবে এবারের পরিস্থিতি আলাদা। অর্থ মন্ত্রণালয় আইএমএফের কাছ থেকে ঋণ পেতে কর-জিডিপি অনুপাত ০.২ শতাংশ বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সেই লক্ষ্যে অতিরিক্ত অর্থ সংগ্রহ করতে ভ্যাট বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।

তবে এ পদক্ষেপ মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতাকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে। চলমান পরিস্থিতিতে চাল, চিনি, ভোজ্য তেলসহ সাতটি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যে শুল্কছাড় দিলেও মাঝপথে ভ্যাট বৃদ্ধির এই উদ্যোগ সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন ব্যয়কে আরও কঠিন করে তুলতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সরকারের এ সিদ্ধান্ত মূল্যস্ফীতির চাপে থাকা সাধারণ মানুষের জন্য আর্থিক দুশ্চিন্তা বাড়াবে এবং জীবনযাত্রার মানে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

Header Ad
Header Ad

জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের তথ্য সংরক্ষণের আহ্বান

ছবি: সংগৃহীত

জুলাই-আগস্টে অনুষ্ঠিত ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান সম্পর্কিত স্থিরচিত্র, ভিডিও ফুটেজ, ডকুমেন্টারি ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংরক্ষণে একটি বিশেষ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে গণঅভ্যুত্থান সংক্রান্ত বিশেষ সেল। এসব তথ্য আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সংরক্ষণের আহ্বান জানানো হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) তথ্য অধিদপ্তর থেকে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, জনসাধারণের কাছে থাকা এসব তথ্য গুগল ড্রাইভে (muspecialcell36@gmail.com) আপলোড করার অনুরোধ করা হয়েছে।

এছাড়া, একই সময়ের মধ্যে এসব তথ্য পেনড্রাইভে ধারণ করে সরাসরি গণঅভ্যুত্থান সংক্রান্ত বিশেষ সেলের কার্যালয়ে (২য় তলা, ভবন নং-২, বিএসএল অফিস কমপ্লেক্স, হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল, ১ মিন্টু রোড, ঢাকা-১০০০) হস্তান্তর করারও সুযোগ রয়েছে।

গণবিজ্ঞপ্তিতে উল্লিখিত এই উদ্যোগের মাধ্যমে গণঅভ্যুত্থানের গুরুত্বপূর্ণ দলিলপত্র সংরক্ষণ করা হবে, যা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য ঐতিহাসিকভাবে মূল্যবান হবে।

Header Ad
Header Ad

স্ত্রীসহ খালেদা জিয়ার বাসভবনে সেনাপ্রধান

স্ত্রীসহ খালেদা জিয়ার বাসভবনে সেনাপ্রধান। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে তার বাসভবনে গিয়েছেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।

বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) রাত ৮টা ৩০ মিনিটে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের বাসভবনে প্রবেশ করেন তিনি।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী যেন দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠেন সেই দোয়া করেছেন সেনাপ্রধান। এ সময় সেনাপ্রধানের সাথে ছিলেন তার স্ত্রী। খালেদা জিয়ার বাসভবনে সেনাপ্রধান ও তার স্ত্রী প্রায় ৪০ মিনিটের মতো ছিলেন।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

বাড়তে পারে ৬৫ পণ্যের দাম, ভ্যাট বৃদ্ধির প্রস্তাব
জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের তথ্য সংরক্ষণের আহ্বান
স্ত্রীসহ খালেদা জিয়ার বাসভবনে সেনাপ্রধান
রংপুরের টানা তৃতীয় জয়, বরিশালের বিপক্ষে সহজ জয়
ভারতে সিগারেট খাওয়া নিষিদ্ধ চান বলিউড কিং
ইসরায়েলি হামলায় গাজার পুলিশ প্রধানসহ নিহত ১১
নওগাঁয় একবছরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৬৫
অবশেষে কাজী নজরুল ইসলামকে জাতীয় কবির রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি
বাংলাদেশ আমাদের হারানো ভাই: পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী
৪৩তম বিসিএস: বাদ পড়া ২২৭ প্রার্থীদের পুনর্বিবেচনার সুযোগ
জানুয়ারিতে বোতলজাত এলপিজি’র দাম অপরিবর্তিত, অটো গ্যাসের দাম সামান্য কম
বছরের শুরুতেই বিয়ে করলেন গায়ক আরমান মালিক
টানা দুই ম্যাচে পরাজয়ের স্বাদ পেল ঢাকা, রাজশাহীর প্রথম জয়
গোয়েন্দা সংস্থার সুপারিশে ৪৩তম বিসিএসে ২২৭ জন বাদ
ভারতে তুলনামূলক হারে কমেছে বাংলাদেশী পর্যটক
ভ্যাট বাড়ানোর সিদ্ধান্তে নিত্যপণ্যে প্রভাব পড়বে না: অর্থ উপদেষ্টা
কেন খাবেন সারা রাত ভেজানো কিশমিশ-পানি
বছরের শুরুতেই উত্তাল ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নারীসহ আহত ১৫!
বিপিএলে এক ম্যাচেই ৭ উইকেট নিয়ে তাসকিনের রেকর্ড
সাংবাদিক মুন্নী সাহা ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করবে দুদক