বর্ষপূর্তি উৎসবে আনন্দে ভাসি আমরা, আনন্দে ভাসে ঢাকাপ্রকাশ
কুয়াশাচ্ছন্ন ভোরের ম্লান সূর্যের মতো আকাশে উঁকি দিচ্ছে ঢাকাপ্রকাশ-এর বর্ষপূর্তি উৎসব। এগিয়ে চলার প্রত্যয়ে ‘সততাই শক্তি, সুসাংবাদিকতায় মুক্তি’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে অনলাইন নিউজ পোর্টাল ‘ঢাকাপ্রকাশ’ সম্পাদক ও প্রতিষ্ঠানের সকল সাংবাদিক সংশ্লিষ্ট সবাইকে প্রথম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে নান্দনিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। পৃথিবীতে আধুনিক বিপ্লব ও সংগ্রামের ইতিহাসে সংবাদপত্রের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তার মধ্যে অনলাইন পোর্টালে প্রকাশিত প্রধান সংবাদপত্রের মধ্যে ‘ঢাকাপ্রকাশ’ অনেকটা এগিয়ে আছে। বর্তমানে আমাদের জীবন প্রযুক্তিনির্ভর। প্রযুক্তি ছাড়া অনেকটাই অচল। পৃথিবী এখন মানুষের হাতের মুঠোয়। তেমনই, প্রযুক্তির ছোঁয়ায় বদলে গেছে সংবাদমাধ্যমও। শুধু ছাপার কাগজে সংবাদের প্রতিক্ষায় পাঠক আর বসে থাকে না, অনলাইন পোর্টালের মাধ্যমে পাঠক পেয়ে যাচ্ছে জীবন্ত সংবাদ।
পত্রিকার সম্পাদক থাকাকালীন রবীন্দ্রনাথ বলেছেন, ‘আমি নিশ্চয় জানি সাধনা কভু না নিস্ফল হবে। ক্রমে ক্রমে অল্পে অল্পে আমি দেশের মন হরণ করে আনব-নিদেন আমার দু-চারটি কথা তার অন্তরে গিয়ে সঞ্চিত হয়ে থাকবে। এই কথা যখন মনে আসে তখন আবার সাধনার প্রতি আকর্ষণ আমার বেড়ে ওঠে। তখন মনে হয় সাধনা আমার হাতের কুঠারের মতো, আমাদের দেশের বৃহৎ সামাজিক অরণ্য ছেদন করবার যন্ত্রে একে আমি ফেলে রেখে মরচে পড়তে দেব না-একে আমি বরাবর হাতে রেখে দেব’। আবার, পূর্ব বাংলার দ্বিতীয় পত্রিকার সম্পাদক কাঙ্গাল হরিনাথ তার দিনলিপিতে লিখেছেন: ‘আমি সম্পাদক, আমি পত্রিকা বিলিকারক, আদায়কারি, পত্র লেখক ও সংসারের কর্তা। আমাদিগকে নিদ্রা হইতে জাগ্রত হইতে হইবে। নতুবা আমাদের জাতীয় কৃষ্টি ও সভ্যতা অতিসত্ত্বর চিরতরে বিলোপ হইয়া যাইবে’।
আমার মনে হয়, অনলাইন মাল্টিমিডিয়া নিউজ পোর্টালের শীর্ষে ‘ঢাকাপ্রকাশ’। সংবাদের পাতাগুলোর পাশাপাশি ঢাকাপ্রকাশ-এ রয়েছে জাতীয়, রাজনীতি, অর্থনীতি, সারাদেশ, সারাবিশ্ব, খেলা, বিনোদন, লাইফস্টাইল, স্বাস্থ্য, সাহিত্য, শিক্ষা, বিশেষ প্রতিবেদন, মতামত, ক্যারিয়ার, অপরাধ, গণমাধ্যম, হৃদয়ের জানালা, মোটিভেশন, ধর্ম, স্যোসাল মিডিয়া, ফিচার, শুভেচ্ছা বার্তা, ফটো গ্যালারি, শিল্প-সাহিত্য, পাঠকের কথা, কৃষি, বিশেষ নিবন্ধ, আর্কাইভ, তথ্যপ্রযুক্তি, প্রবাস, সাক্ষাৎকার, সরেজমিন, আইন আদালত, ক্যাম্পাস, করপোরেট, টিভি লাইভ, পর্যটন, রাজধানী, শিশু-কিশোর, প্রতিযোগিতা এবং ভিডিওক্লিপে উপস্থাপন-যা পাঠক চাওয়াকে সমৃদ্ধ করেছে। পাঠক মহল পেয়েছে প্লাটফর্ম সেখানে পাঠকরাও লিখতে পারেন। একটি গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ সবার আগে সঠিক তথ্যে প্রকাশ করার প্রতিযোগিতায় সবার আগে অনলাইন পোর্টালেই থাকে। আমি দেখেছি, ফেসবুক সহ স্যোসাল মিডিয়ায় ঢাকাপ্রকাশের সংবাদগুলো ব্যাপক শেয়ার হতে। এখন সকল বাধা অতিক্রম করে এগিয়ে যাবে পাঠকের হৃদয়ে। সুধী সমাজের পাঠক মহলই মূল্যায়ন করবে কোনটা থাকবে, আর কোনটা থাকবে না।
বাঙালি সংস্কৃতির বিকাশ ও গণতন্ত্রের জয়যাত্রায় অবদান রেখে পথচলা সমাজ ও রাষ্ট্রের উন্নয়নে জনসচেতনতা তৈরিতে ঢাকাপ্রকাশ-এর দুর্বার গতি লক্ষ্যনীয়। তাই পত্রিকা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং মানব উন্নয়ন, নারী অধিকার, বৈষম্য দূরীকরণ, দুর্নীতির মুখোশ উন্মোচনে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। নানান অসত্য পোর্টালের মাঝে সত্য প্রকাশে অবিচল ঢাকাপ্রকাশ প্রান্তিক পর্যায়ে মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে যাক, মানুষের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় বেগবান হোক, তাদের হৃদয়ের ব্যাথা বেদনা তুলে আনুক, দুর্নীতির শেকড় ছিন্নভিন্ন করে তুলে ফেলুক-জাতির সামনে প্রকাশিত হোক, এই প্রত্যয়ে।
সাংবাদিককে হতে হবে আয়নার মতো এবং সার্বজনীন অর্থাৎ এই দেশ-বিদেশের ঘটনাপ্রবাহ সবকিছু তার সৃষ্টিতে তুলে আনতে হবে। তবেই তিনি হবেন সাংবাদিকযোদ্ধা। একজন সাংবাদিক পারেন দেশ সমাজকে সুন্দর করে উপস্থাপন করতে। তেমনই আমি দেখেছি ঢাকাপ্রকাশ-এর প্রধান সম্পাদক মোস্তফা কামাল’ যিনি এক্ষেত্রে একজন উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
ঢাকাপ্রকাশ ইতিমধ্যে জাতীয় বেশকিছু বিষয়ে সাহসী রিপোর্ট প্রকাশ করেছে- যা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই দেখা যায় ঢাকাপ্রকাশ বস্তুনিষ্ঠ ও নিরপেক্ষ সংবাদ পরিবেশন করায় সুধী সমাজে প্রশংসিত হয়েছে। ‘গণমাধ্যম কখনও সরকারের প্রতিপক্ষ নয়, বরং সহযোগী’ এই কথাটিকে সামনে রেখে আগামী দিনেও ঢাকাপ্রকাশ দেশ ও জাতির সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় সহায়ক ভূমিকা রাখবে- এমনই প্রত্যাশা। প্রধান সম্পাদক ও প্রকাশক কথাসাহিত্যিক মোস্তফা কামাল এর ঢাকাপ্রকাশ, অনলাইন নিউজ পোর্টালের মর্যাদা বৃদ্ধি করেছে। তাঁকে আমি আন্তরিক শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা নিবেদন করি। আমি ঢাকাপ্রকাশ-এর উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করছি।
লেখক: ইতিহাস গবেষক ও প্রকাশক