বুধবার, ২ এপ্রিল ২০২৫ | ১৯ চৈত্র ১৪৩১
Dhaka Prokash

কলকাতায় শহীদ মিনার নির্মাণ

১৯৪৭ সালে ভারত বর্ষ বিভক্ত হয়ে ভারত ও পাকিস্তান নামে দুটি আলাদা রাষ্ট্রের জন্ম হয়। এর মধ্যে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা নিয়ে বিতর্কের সূত্রপাত হয়। পাকিস্তানের অধিকাংশ জনগণের মাতৃভাষা বাংলাকে বাদ দিয়ে শুধুমাত্র উর্দু এবং ইংরেজিকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার উদ্যোগ নেওয়া হলে তৎকালীন পাকিস্তানে যে আন্দোলনের সূচনা হয়, তাই রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন নামে অভিহিত হয়। এ আন্দোলন হয় দুটি পর্যায়ে। প্রথম পর্যায় ১৯৪৭-৪৮ সাল। এ সময় রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ তৎকালীন পূর্ব-বাংলায় সাধারণ ধর্মঘট পালিত হয়। এ ধর্মঘটকে সফল করার জন্য পুলিশি নির্যাতনের শিকার হয়ে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন যুবনেতা শেখ মুজিবুর রহমানসহ আরো ৬৩ জন অগ্রগণ্য নেতা-কর্মী।

পরবর্তীকালে ১১ সেপ্টেম্বর ১৯৪৮ পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর মৃত্যু এবং ১৯৫১ সালের ১৬ই অক্টোবর রাউয়ালপিন্ডিতে এক জনসভায় বক্ততাকালে আততায়ীর গুলিতে প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খানের অপমৃত্যু হলে পাকিস্তানের সংবিধান প্রণয়ন এবং রাষ্ট্রভাষা নির্ধারণের বিষয়টি অমীমাংসিত থেকে যায়। লিয়াকত আলী খানের মৃত্যুর পর পূর্ব-বাংলার তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দীন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত হলে তিনি রাষ্ট্রভাষার বিষয়টি আবার সামনে নিয়ে আসেন। তার নেতৃত্বে তৎকালীন পাকিস্তান সরকার বাংলাকে বাদ দিয়ে উর্দু এবং ইংরেজিকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার উদ্যোগ নিলে পূর্ব-বাংলায় ব্যাপক ছাত্রবিক্ষোভ দেখা দেয়। ছাত্রদের সঙ্গে এ আন্দোলনে সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করে। বাংলা ভাষা-সংস্কৃতি ও বাঙালির অস্তিত্ব রক্ষার এ আন্দোলন ছিল খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। ১৯৫২ সালের ২১ ও ২২ ফেব্রুয়ারি পূর্ব-বাংলার ব্যবস্থাপক পরিষদের বাজেট অধিবেশনের দিন সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ সর্বাত্মক ধর্মঘটের ডাক দিলে সরকার ১৪৪ ধারা জারি করে। সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ছাত্ররা মিছিল বের করলে পুলিশ বিনা উস্কানিতে গুলিবর্ষণ করে। ২১ এবং ২২ ফেব্রুয়ারি পুলিশের গুলিতে নিহত হন বরকত, জব্বার, রফিক, সালাউদ্দিন, শফিউর, আউয়াল, অহিউল্লাহসহ নাম না জানা আরও অনেকে। আহত এবং গ্রেপ্তারের সংখ্যা অগণিত।

২৩ ফেব্রুয়ারি ১৯৫২ ঢাকা মেডিকেল কলেজের ১২ নং ব্যারাকের পূর্ব প্রান্তে আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী নেতা-কর্মীরা এক রাতের মধ্যেই নির্মাণ করেন 'শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ'। বদরুল আলম এবং সাঈদ হায়দারের নকশায় নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভের উচ্চতা ১০ ফুট এবং প্রস্থ ৬ ফুট। এই স্মৃতিস্তম্ভের উদ্বোধন করেন শহীদ শফিউর রহমানের পিতা মাহবুবুর রহমান। ২৬ ফেব্রুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে এটি উদ্বোধন করেন দৈনিক আজাদ পত্রিকার সম্পাদক এবং পুলিশের গুলিতে ছাত্রহত্যার প্রতিবাদে পূর্ব-বাংলা ব্যবস্থাপক পরিষদ থেকে পদত্যাগকারী আবুল কালাম শামসুদ্দিন। উদ্বোধনের পরপরই নুরুল আমিন সরকারের পুলিশবাহিনী এটি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়।

শহীদ মিনার ইটপাথরের তৈরি শুধুমাত্র কতগুলো স্তম্ভ নয়। বাঙালির শৌর্য-বীর্যের প্রতীক এবং আত্মপরিচয়ের ঠিকানা। এখানে এসে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন এবং সাহস সঞ্জয় করি আমরা। বাঙালির প্রতিটি লড়াই-সংগ্রামে এই শহীদ মিনার আমাদেরকে প্রেরণা জুগিয়েছে, আত্মোৎসর্গে অনুপ্রাণিত করেছে। আর সেকারণেই আধিপত্যবাদী গণবিরোধী শক্তি শহীদ মিনারকে ভয় পায় এবং এর অস্তিত্ব ধুলায় মিশিয়ে দিতে চায়। কিন্তু ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, তারা প্রতিবারই ব্যর্থ হয়েছে এবং সত্য-ন্যায়ের সংগ্রাম বিজয়ী হয়েছে। শহীদ মিনার বাংলাদেশের সীমানা অতিক্রম করে তার অস্তিত্ব জানান দিচ্ছে দেশ থেকে দেশান্তরে।

ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের আদলে এখন সর্বত্র শহীদ মিনার নির্মিত হচ্ছে। সংক্ষেপে তার নকশা সম্পর্কে কিছুটা আলোকপাত করা বাঞ্ছনীয় বলে মনে করি। আমরা সকলে জানি যে, তৎকালীন পাকিস্তানের মুসলিম লীগ সরকারকে পরাজিত করে বাঙালির অধিকার আদায়ের জন্য হক-ভাসানী-সোহরাওয়ার্দীর নেতৃত্বে গঠিত হয়েছিল রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যবদ্ধ মোর্চা ‘যুক্তফ্রন্ট’। এই জোট তাদের একুশ দফার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে শহীদ মিনার প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছিল। সেই মোতাবেক ১৯৫৬ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি সকাল নয়টায় পূর্ববঙ্গ সরকারের মুখ্যমন্ত্রী আবু হোসেন সরকার ঢাকা মেডিকেল কলেজের ব্যারাকের সামনে শহীদ মিনার নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। আবু হোসেন সরকারের পতনের পর আতাউর রহমান খানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের একক সরকার গঠিত হয়। সরকার পূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রধান প্রকৌশলী এ. জব্বারকে শহীদ মিনার নির্মাণের সার্বিক দায়িত্ব প্রদান করে। এ সময় সরকার শহীদ মিনার নির্মাণের নকশা প্রণয়নের জন্য একটি কমিটি গঠন করে। কমিটির সদস্যরা হলেন গ্রিক স্থপতি ভক্সিয়াডেস, শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন এবং প্রকৌশলী এ. জব্বার।

কমিটি উচ্চ ডিগ্রিধারী শিল্পী হামিদুর রহমান প্রদত্ত নকশাকেই চূড়ান্তভাবে অনুমোদন করে। হামিদুর রহমানের ওই নকশার ভিত্তিতেই ১৯৫৭ সালের নভেম্বর মাসে শহীদ মিনার নির্মাণের কাজ শুরু হয় এবং ১৯৫৮ সালের ২১ ফেব্রুয়ারির মধ্যেই শহীদ মিনারের ভিত, মঞ্চ এবং তিনটি স্তম্ভ নির্মাণের কাজ সমাপ্ত হয়। পরিকল্পিত এই শহীদ মিনারের জন্য শিল্পী হামিদুর রহমান হাজার বর্গফুটের একটি ম্যুরাল এবং শিল্পী নভেরা আহমদের তিনটি ভাস্কর্যের কাজও ওই সময়ের মধ্যে সমাপ্ত হয়েছিল।

১৯৫৮ সালের অক্টোবর মাসে আইয়ুব-এর ক্ষমতা গ্রহণ, সামরিক শাসন জারি এবং পূর্ববঙ্গের আতাউর রহমান খান সরকার বাতিল ঘোষিত হলে শহীদ মিনার নির্মাণের কাজটিও বন্ধ হয়ে যায়। ১৯৬২ সালে জেনারেল আজম খান পূর্ববাংলার গভর্নর নিযুক্ত হলে তার ব্যক্তিগত আগ্রহে শহীদ মিনারের কাজ সমাপ্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য ড. মাহমুদ হোসেনকে সভাপতি করে ১৪ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেন। এই কমিটির সুপারিশ এবং শিল্পী হামিদুর রহমানের নকশা অনুযায়ী নির্মিত এই শহীদ মিনার উদ্বোধন হয় ১৯৬৩ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি। উদ্বোধন করেন শহীদ বরকতের মাতা হালিমা খাতুন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানী দখলদার বাহিনী বুলডোজার দিয়ে এই কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ভেঙে গুড়িয়ে দিলেও একই নকশায় বৃত্তের পরিসরে এটি পুনঃনির্মিত হয়।

১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর জাতিসংঘের ইউনেস্কো ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। এর মূল তাৎপর্য হলো, পৃথিবীর সকল ভাষার মানুষ যেন তাদের নিজ নিজ মাতৃভাষা চর্চা এবং লালন করে। কোনো ভাষা যাতে চর্চার অভাবে বিলুপ্ত হয়ে না যায়, সেটিও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের অন্যতম প্রতিপাদ্য বিষয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সর্বপ্রথম বাংলায় ভাষণ প্রদান করেন। এরপর ১৯৯৬ সাল থেকে বঙ্গবন্ধু-কন্যা শেখ হাসিনা যতবার জাতিসংঘে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করেছেন, ততবারই বাংলায় ভাষণ দিয়েছেন। জাতিসংঘে প্রদত্ত ভাষণে তিনি বিশ্বের প্রায় ৩৫ কোটি মানুষের ভাষা বাংলাকে জাতিসংঘের অন্যতম দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানান।

একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষিত হওয়ায় এর স্মারক এবং ইতিহাস সম্পর্কে জানবার আগ্রহ বিশ্বব্যাপী। একুশের অন্যতম অনুষঙ্গ হলো শহীদ মিনার। ভাষা আন্দোলনের রক্তাক্ত স্মৃতিবাহী এ শহীদ মিনার ইতিহাসের অংশ এবং আবেগ-শ্রদ্ধার পীঠস্থান। বাংলাদেশের সীমানা অতিক্রম করে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে একুশে ফেব্রুয়ারি উদযাপনের জন্য অস্থায়ী শহীদ মিনার নির্মিত হয়। যেখানে বাঙালি সেখানেই শহীদ মিনার। তবে অনেক দেশে বা স্থানে নিজ নিজ রীতি এবং নকশা অনুযায়ী শহীদ মিনার নির্মিত হতে দেখি। তবে সকলের প্রত্যাশা হলো, যেহেতু একুশে ফেব্রুয়ারি বিশ্বব্যাপী পালিত হচ্ছে, সুতরাং শহীদ মিনারের নকশা অভিন্ন হওয়া বাঞ্ছনীয়। পৃথিবীর বহু দেশে বাঙালিরা সেভাবে ২১ ফেব্রুয়ারি শহীদ মিনার নির্মাণ করছেন, শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন। ভারতের বাংলাভাষী প্রধান রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা এবং আসাম, মেঘালয়, ঝাড়খন্ডে বিভিন্ন আঙ্গিকের শহীদ মিনার বা স্মারক স্তম্ভ নির্মিত হতে দেখি। একুশে ফেব্রুয়ারিতে এখানে এসেই মানুষ শ্রদ্ধার্ঘ নিবেদন করে, শ্রদ্ধা জানায়। পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশন চত্বরে ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের অনুরূপ নকশায় একটি ছোট আকারের শহীদ মিনার রয়েছে এবং এটি নির্মাণও করেছে বাংলাদেশ হাই কমিশন।

বাংলাদেশের বাইরে বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগ ব্যতীত শিল্পী হামিদুর রহমানের নকশা অনুযায়ী ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের অনুরূপ সম্ভবত প্রথম শহীদ মিনার নির্মিত হয়েছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর কলকাতার বিটি রোডে। ১৫ ফুট উঁচু এই শহীদ মিনার নির্মাণের মূল উদ্যোক্তা 'সর্বভারতীয় বাংলাদেশ মঞ্চ'সহ তিনটি প্রতিষ্ঠান। তাদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও প্রচেষ্টা, বাংলাভাষার প্রতি মমত্ব এবং ২১ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে নিহত শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের আত্মিক প্রকাশ এই শহীদ মিনার নির্মাণ। ব্রিটিশ রাজশক্তি বাংলাকে ভাগ করেছে কিন্তু বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতিকে কখনো ভাগ করা যায় না। কলকাতা বিটি রোডের শহীদ মিনার সেই সত্যকেই নতুন করে জানান দিয়ে গেল। হাজার বছরের বাঙালি জাতিসত্তার বিকাশের মূল স্রোতকে কখনো বিভক্ত করা যায় না। রবীন্দ্রনাথ-নজরুল-সুকান্ত-জীবনানন্দ সকল বাঙালির। ভিসা পাসপোর্ট বা রাষ্ট্রীয় পরিচয়ের ভিন্নতা দিয়ে বাঙালির এ বন্ধনকে কখনো ছিন্ন করা যাবে না। আর সে কারণেই ঢাকায় যখন রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে রক্ত ঝরে ভারতের বাংলা ভাষাভাষী অঞ্চলে মানুষের হৃদয় হু-হু করে কেঁদে ওঠে। সঙ্গে থাকার প্রতিজ্ঞায় উদ্দীপ্ত হয় মানুষ। একইভাবে বরাক উপত্যকায় বা অন্য কোথাও যখন বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষার জন্য মানুষ প্রাণ দেয়, তখন সকল বাঙালির হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়।

কলকাতার বিটি রোডে স্থাপিত নান্দনিক স্থাপত্যের এই শহীদ মিনারটি উদ্বোধন হয় ২০১৭ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি। এ উপলক্ষে শহীদ মিনার চত্বর এক অনিন্দ্যসুন্দর সাজে সজ্জিত হয়েছিল। শহীদ মিনারের পাশে এক বিশাল উদ্বোধনী মঞ্চ নির্মাণ করা হয়। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী, কবি, লেখক, সংস্কৃতি-কর্মীসহ বিপুল-সংখ্যক মানুষের উপস্থিতি সেদিন এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি করে। গণমাধ্যমের ব্যাপক উপস্থিতি এ আয়োজনের গুরুত্বকে আরো বাড়িয়ে তোলে। অনুষ্ঠানের উদ্বোধক ছিলেন প্রবীণ কথাসাহিত্যিক সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি এবং ভাষা আন্দোলনের গবেষক হিসেবে আমাকে প্রধান অতিথি করা হয়েছিল। এ গৌরব বাংলাদেশের, এ সম্মান ভাষা শহীদদের।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের মাননীয় মন্ত্রী নাট্য ব্যক্তিত্ব ব্রাত্য বসু, লোকসভার সদস্য প্রবীণ নেতা সৌগত রায়, পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার ডেপুটি চিফ হুইপ তাপস রায় এবং আসামের শিলচরের ভাষা শহীদ স্মারক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ডাক্তার রাজীব কর। অনুষ্ঠানের শুরুতে "আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি" সম্মেলক কন্ঠে পরিবেশন করে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা। আমার সমস্ত শরীর...ফেব্রুয়ারি পালন করছি এখানকার মানুষের আবেগ এবং ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা দেখে কখন যে চোখ ভিজে গেল, তা টের পাইনি। উদ্বোধকসহ সকল বক্তাই অভিমত ব্যক্ত করেন যে, বাংলাভাষার মর্যাদা রক্ষার জন্য তৎকালীন পূর্ব-বাংলা বা আজকের বাংলাদেশের বাঙালিরা যে ত্যাগ স্বীকার করেছে, তা সারা পৃথিবীর বাঙালিদের মাথা উঁচু করে দিয়েছে। এখন আমাদের দায়িত্ব হলো, বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতির উন্নয়নের জন্য নিজেদের নিবেদন করা। উদ্বোধক সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, আপনি চাইলে পৃথিবীর সব ভাষা শিখুন, তাতে কোন আপত্তি নেই। তবে সবার আগে মাতৃভাষাকে শিখুন, পরিচর্যা করুন। বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি ছাড়া আমাদের কোনো অস্তিত্ব নেই।

আমি আমার বক্তব্যে কলকাতায় শহীদ মিনার নির্মাণ করায় উদ্যোক্তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। আমি আরও বলি যে, বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি চর্চা এবং রক্ষায় এই নবনির্মিত শহীদ মিনার নিশ্চয়ই তরুণদের উদ্বুদ্ধ করবে। আমি কলকাতার বড় বড় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনুরূপ শহীদ মিনার নির্মাণের আহ্বান জানাই। উদ্বোধনী আলোচনা শেষে আমরা সকলেই নবনির্মিত শহীদ মিনারে পুষ্পার্ঘ নিবেদন করি। একে একে অসংখ্য সংগঠন ও ব্যক্তি পর্যায়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। ফুলে ফুলে ভরে ওঠে পুরো শহীদ মিনার। এক অনিন্দ্য সুন্দর ভালোলাগা আর প্রশান্তি নিয়ে ফিরে আসি হোটেলে।

লেখক: লেখক, গবেষক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব

 

Header Ad
Header Ad

মিয়ানমারের ভূমিকম্পে এক ইমামের ১৭০ স্বজনের মৃত্যু

সাবেক ইমাম সোয়ে নেই ওও। ছবি: সংগৃহীত

পবিত্র ঈদুল ফিতর আসন্ন। বিদায় নিচ্ছে রহমত, বরকত ও মাগফিরাতের মাস রমজান। শেষ জুমার নামাজ আদায় করতে মুসলমানদের মধ্যে আগ্রহ ছিল চরমে। কিন্তু কে জানত, এই জুমাই শত শত মুসল্লির জীবনের শেষ জুমা হয়ে উঠবে!

গত ২৮ মার্চ, শুক্রবার স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা ৫১ মিনিটে মিয়ানমারের মধ্যাঞ্চলে ভয়াবহ ভূমিকম্প আঘাত হানে। সাগাইং অঞ্চলের পাঁচটি মসজিদে তখন নামাজ আদায় করছিলেন অসংখ্য মুসল্লি। শক্তিশালী ভূমিকম্পে তিনটি মসজিদ ধসে পড়ে, যার মধ্যে অন্যতম ছিল মায়োমা মসজিদ। এই মসজিদে নামাজরত প্রায় সবাই প্রাণ হারান।

মায়োমা মসজিদের সাবেক ইমাম সোয়ে নাই ওও তখন মিয়ানমার-থাইল্যান্ড সীমান্তবর্তী শহর মায়ে সোতে অবস্থান করছিলেন। সেখানেও তিনি ভূমিকম্প অনুভব করেন, তবে বুঝতে পারেননি কী পরিমাণ বিপর্যয় তার অপেক্ষায় রয়েছে।

সোয়ে নাই ওও একসময় মিয়ানমারের ইমাম ছিলেন, তবে ২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর দেশ ছেড়ে থাইল্যান্ডে পালিয়ে যান এবং বর্তমানে একটি মানবাধিকার সংস্থায় কাজ করছেন। ভূমিকম্পের পরের দিনগুলোতে একের পর এক শোকসংবাদ পেতে থাকেন তিনি। এখন পর্যন্ত তিনি জানতে পেরেছেন, তার প্রায় ১৭০ জন আত্মীয়, বন্ধু ও প্রাক্তন মুসল্লি মারা গেছেন। তাদের বেশিরভাগই মসজিদে অবস্থান করছিলেন, অনেকেই মুসলিম সম্প্রদায়ের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিত্ব ছিলেন।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে সোয়ে নাই ওও বিবিসিকে বলেন, ‘আমি প্রাণ হারানো সব মানুষের কথা ভাবছি। তাদের শিশুদের কথা ভাবছি... এই শোক সহ্য করা অসম্ভব।’

সাগাইং অঞ্চল মূলত বৌদ্ধ মন্দিরের জন্য পরিচিত হলেও এখানে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মুসলমান দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে আসছেন। নানা নিপীড়ন ও নির্যাতন সত্ত্বেও তারা এ অঞ্চলে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছেন।

মিয়ানমারের জান্তা সরকারের দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ভূমিকম্পের সময় মসজিদে নামাজরত অবস্থায় প্রায় ৫০০ মুসলমান মারা গেছেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মসজিদ সংলগ্ন মায়োমা স্ট্রিট ও শহরতলি। ভূমিকম্পে বহু ভবন ধসে পড়েছে, রাস্তাঘাট বিধ্বস্ত হয়েছে।

এই ভূমিকম্পে মিয়ানমারের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর সাগাইং ও মান্দালয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। উদ্ধারকর্মীরা এখনো ধ্বংসস্তূপ থেকে মৃতদেহ উদ্ধার করছেন। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

দেশটির জান্তা সরকার জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ২ হাজার ৭১৯ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন ৪৪১ জন এবং আহত হয়েছেন ৪ হাজার ৫২১ জন। জান্তা প্রধান মিন অং হ্লাইং এক টেলিভিশন ভাষণে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, নিহতের সংখ্যা ৩ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে।

মিয়ানমারের ভূমিকম্পটি ছিল ৭ দশমিক ৭ মাত্রার। এর কেন্দ্রস্থল ছিল মান্দালয় শহর থেকে ১৭.২ কিলোমিটার দূরে এবং ভূ-পৃষ্ঠ থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার গভীরে। প্রথম কম্পনের ১২ মিনিট পর ৬ দশমিক ৪ মাত্রার আফটারশক হয়, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তোলে।

এই বিধ্বংসী ভূমিকম্পে দেশজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। উদ্ধারকর্মীরা নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, তবে ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও অনেকের আটকে থাকার আশঙ্কা রয়েছে।

Header Ad
Header Ad

ঈদের আনন্দে যমুনার দুর্গম চরে গ্রাম-বাংলার ঘুড়ি উৎসব, আনন্দে মেতে উঠে বিনোদনপ্রেমীরা!

টাঙ্গাইলের গোপালপুর নলিন এলাকায় যমুনার দুর্গম চরে ঈদ উপলক্ষে ঘুড়ি উৎসব। ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

আবহমান গ্রাম-বাংলা থেকে হারাতে বসেছে শৈশবের চিরচেনা ঘুড়ি উড়ানো উৎসব। আর সেই হারানো ঐতিহ্যকে ফেরাতে ও বর্তমান প্রজন্মের সামনে ঘুড়ি উড়ানোর উৎসবকে তুলে ধরতে ‘এসো উড়াই ঘুড়ি, বাংলার ঐতিহ্য লালন করি’- এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে প্রতি বছরের মতো এবারও ঈদ উদযাপন উপলক্ষে টাঙ্গাইলের গোপালপুরে ঘুড়ি উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (০১ এপ্রিল) বিকালে উপজেলার নলিন বাজারের পাশে যমুনার ধূ-ধূ বালুচরে মুক্তিযোদ্ধা নয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উদ্যোগে এবং স্থানীয় সেচ্ছাসেবী আমরা গোপালপুরবাসী ফেসবুক গ্রুপ ও শুভশক্তি বাংলাদেশের সহযোগিতায় ঘুড়ি উৎসব পালন করা হয়।

এই ঘুড়ি উৎসবে নানা শ্রেণি পেশার মানুষসহ স্কুল পড়ুয়া শিশু শিক্ষার্থী নানা রঙয়ের, নানা বর্ণের রঙিন ঘুড়ি নিয়ে বালুময় চরে বিকাল বেলা সমবেত হয়। পরে একে একে ঘুড়ি উড়ানো ও ঘুড়ির সুতা কাটাকাটি খেলা শুরু হয়। তারপর সন্ধ্যায় বাদ্যযন্ত্রের তালে তালে বাউল গানের আড্ডায় মেতে ওঠে বিনোদনপ্রেমিরা।

 

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

ঘুড়ি উড়াতে আসা স্কুল শিক্ষার্থী আসফিয়া জান্নাত আদরিতা বলেন- ছোট বেলা শহরে থাকি, এবার পরিবার সঙ্গে ঈদের ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে এসেছি। এর আগে কখনো ঘুড়ি দেখেনি বা ঘুড়ি উড়ানো হয়নি। এবারই প্রথম ঘুড়ি উড়ানো উৎসবে এসেছি এবং উড়িয়েছি। এখানে এসে সত্যিই ভাল লাগছে।

মুক্তিযোদ্ধা নয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের
শিক্ষার্থীরা জানান, কয়েক বছর ধরে আমাদের স্কুল থেকে চরাঞ্চলে ঘুড়ি উৎসবের আয়োজন করছে আসছে। আমরা কয়েক দিন ধরে নানা রঙয়ের বিভিন্ন ঘুড়ি তৈরি করেছি। নদীর পাড়ে বিকাল বেলা এমন উৎসবে অনেক আমাদের অনেক সহপাঠিরা তাদের মা-বাবা নিয়ে আনন্দ উপভোগ করছেন।

ঘুড়ি উৎসবে অংশ নেওয়া স্কুল শিক্ষিকা শামীমা ইয়াসমিন বলেন, কর্ম ব্যবস্ততার কারণে যমুনা চরাঞ্চলে আসার সুযোগ হয় না। বসন্ত বরণ উপলক্ষে গতবারের ন্যায় এবারো ময়না আপার ডাকে ঘুড়ি উৎসব উদযাপনে পরিবার নিয়ে অংশ গ্রহণ করেছি। চরাঞ্চলের এমন উৎসবে আসতে পেরে খুব ভাল লাগছে।

 

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

মুক্তিযোদ্ধা নয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ঘুড়ি উৎসব আয়োজক আঞ্জু আনোয়ারা ময়না বলেন, গ্রাম-বাংলা ঐতিহ্য নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে ২০১৯ সাল থেকে স্কুলের শিশু শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের নিয়ে বিভিন্ন উৎসবকে কেন্দ্র করে ঘুড়ি উৎসব পালন করে আসছি। এরই ন্যায় এবার ঈদের পর এই আয়োজন করা হয়েছে। বিগত বছরের তুলনায় এ বছর লোকজনের উপস্থিত বেড়েছে। প্রতিবছরই এমন ঘুড়ি উৎসব উদযাপন করা হবে।

গোপালপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি অধ্যাপক জয়নাল আবেদীন বলেন, ছোট বেলা আমি নিজেও ঘুড়ি উড়িয়েছি, এটিতে আলাদা একটি আনন্দ আছে। আমি মনে করি বাঙালির এই ঘুড়ি উড়ানোর মধ্যে দিয়ে সংস্কৃতির যে একটা অতীত সম্বৃদ্ধির অতীতকে স্মরণ করে থাকে। এটি একটি বিশুদ্ধ প্রতিযোগিতা। এমন আয়োজনে অংশ নিতে পেরে ভালো লাগছে।

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. নাজমুল হাসান বলেন, ঘুড়ি উৎসব আমাদের প্রাণের একটি উৎসব। এমন পরিবেশে বর্ণিল এই রঙিন ঘুড়ি উৎসব কখনো দেখার সুযোগ হয়নি। দীর্ঘদিন পর এভ ঘুড়ি উৎসবে প্রাণ ফিরেছে সেই শৈশবে। ঈদ আনন্দের দ্বিতীয় দিনে বর্ণিল রঙিন রঙের ছটায় ঘুড়ি হাতে নিয়ে নীল আকাশে উড়িয়েছি। উৎসবে পরিবার নিয়ে অংশ নিতে পেরে আমি আনন্দিত।

Header Ad
Header Ad

ইমামকে ঘোড়ার গাড়িতে রাজকীয় বিদায়, দেওয়া হলো ৯ লাখ টাকার সংবর্ধনা

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

প্রায় তিন যুগ মসজিদে ইমামতি করার পর ঘোড়ার গাড়িতে করে অবসরকালীন রাজকীয় বিদায় দেওয়া হয়েছে মাওলানা মোহাম্মদ শাহজাহান খান নামে এক ইমামকে। এই ইমামের এমন বিদায়ী সফর সঙ্গী হয়ে ৩ শতাধিক মানুষ ৭ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে তার নিজ বাড়িতে পৌঁছে দেন।

এর আগে ইমামকে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান এবং এককালীন পেনশন হিসেবে দেওয়া হয় ৯ লাখ টাকা। গ্রামের মানুষ নানা ধরণের উপহারও প্রদান করে। ইমামকে সংবর্ধনার সম্মানিত এমন উদ্যোগের কারণে প্রশংসায় ভাসছেন ওই এলাকাবাসী।

গত মঙ্গলবার (০১ এপ্রিল) দুপুরে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার উয়ার্শী ইউনিয়নের নতুন কহেলা জামে মসজিদের ইমাম ও খতীবকে এই রাজকীয় বিদায় সংবর্ধনা দেওয়া হয়। ইমামের এই রাজকীয় বিদায় অনুষ্ঠান দেখতে এক নজর ভিড় করেন এলাকাবাসী।

 

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

নতুন কহেলা গ্রামের মুসুল্লি আবুল হাশেম খান বলেন, মাওলানা মোহাম্মদ শাজাহান খান তার চাকরি জীবনে গ্রামের মানুষের কাছে খুবই জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। এই ইমামের প্রতি গ্রামবাসীর ভালবাসা তা জনশ্রুতেই বুঝা যায়। আমরা তাকে ইমামকে বিদায় দিয়ে ব্যথিত।

বিদায়ী ঈমাম মাওলানা মোহাম্মদ শাজাহান খান বলেন, আমি গ্রামের প্রায় দেড় হাজার মানুষের জানাজা পড়িয়েছি। ৬শ’ জনকে কোরআন শিক্ষা দিয়েছি। আল্লাহর রহমতে আমি কাজগুলো করতে পেরে শুকরিয়া আদায় করছি। আমার বিদায় বেলায় এলাকার মানুষ এত বড় আয়োজন করেছে তার জন্য এলাকার মানুষের কাছে আমি কৃতজ্ঞ।

এ ব্যাপারে নতুন কহেলা জামে মসজিদ কমিটির সভাপতি সেলিম খান বলেন, এমন বিদায় সমাজে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। তিনি এলাকার মানুষের কাছে খুবই জনপ্রিয় ছিলেন। ইমামের পরবর্তী জীবন ভালো কাটতে সরকারি চাকরির মত পেনশন দেওয়া হয়েছে। তার সর্বদা মঙ্গল কামনা করছি।

১৯৯১ সালে ৬শ’ টাকা বেতনে নতুন কহেলা জামে মসজিদে ইমাম হিবেসে যোগদান করেন মাওলানা মোহাম্দ শাহজাহান খান। বিদায়ের প্রাক্কালো ইমামের বেতন হয় ১৭ হাজার ৫’শ টাকা। মাওলানা মোহাম্মদ শাহজাহান খান ঢাকার লালবাগের একটি মাদরাসা থেকে মাওলানা পাস করেন।

তার এই দীর্ঘ ইমামতি পেশায় থাকা কালীন এলাকায় ব্যাপক সুনাম কুড়িয়েছেন তিনি। দীর্ঘ চাকরি জীবনে তিনি অসংখ্য মানুষকে কুরআনের শিক্ষা দেওয়ার পাশাপাশি জানাজা পড়িয়েছেন হাজারের অধিক মানুষের।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

মিয়ানমারের ভূমিকম্পে এক ইমামের ১৭০ স্বজনের মৃত্যু
ঈদের আনন্দে যমুনার দুর্গম চরে গ্রাম-বাংলার ঘুড়ি উৎসব, আনন্দে মেতে উঠে বিনোদনপ্রেমীরা!
ইমামকে ঘোড়ার গাড়িতে রাজকীয় বিদায়, দেওয়া হলো ৯ লাখ টাকার সংবর্ধনা
লন্ডনে একসঙ্গে দেখা গেলো সাবেক চার আওয়ামী মন্ত্রীকে
ঢাকায় ফিরছে ঈদযাত্রীরা, অনেকে ছুটছেন শহরের বাইরে
চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় আবারও সড়ক দুর্ঘটনা, নিহত ৭
বিটিভিতে আজ প্রচারিত হবে ঈদের বিশেষ ‘ইত্যাদি’
ঈদের ছুটিতে ফাঁকা ঢাকা, নেই যানজটের চিরচেনা দৃশ্য
মাদারীপুরে তিন মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে নিহত ৪, আহত ২
থানায় জিডি করলেন ভোক্তা অধিকারের জব্বার মন্ডল
রাশিয়া আমাদের চিরকালের বন্ধু, কখনো শত্রু নয়: চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী
গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান খালেদা জিয়ার
দ্বিতীয় দফায় মিয়ানমারে ত্রাণ সহায়তা পাঠালো বাংলাদেশ
ভারতে প্রশিক্ষণ প্লেন বিধ্বস্ত, পাইলট আহত
এপ্রিলে ঢাকায় আসছে আইএমএফ প্রতিনিধি দল
জাপানে মেগা ভূমিকম্পের শঙ্কা, প্রাণহানি হতে পারে ৩ লাখ
জুলাই কন্যাদের সম্মানজনক পুরস্কার নিয়ে যা জানাল যুক্তরাষ্ট্র
দুপুরের মধ্যে ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের সম্ভাবনা
শান্তিপূর্ণ ঈদ উদযাপনে সেনাবাহিনীর কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়াল