বুধবার, ২ এপ্রিল ২০২৫ | ১৯ চৈত্র ১৪৩১
Dhaka Prokash

পর্ব-২

শিক্ষকের মর্যাদায় বঙ্গবন্ধু

স্বাধীন বাংলাদেশে পথপরিক্রমায় এখনো বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণে অনেকখানি বাকি রয়ে গেছ। যে দুঃখী মানুষের ভাবনা, তার মৌলিক চিন্তার অংশ-সেই জায়গাটি পূরণ করা এখন পর্যন্ত সম্ভব হয়নি। বঙ্গবন্ধু জনগণের সেই নেতা, যিনি বারবার উল্লেখ করেছেন তাদের কথা। তিনি ১৯৭০ সালের ২৮ অক্টোবর পাকিস্তান টেলিভিশন সার্ভিস ও রেডিও পাকিস্তান থেকে প্রচারিত ভাষণে বলেছিলে, ‘অর্থনীতির সর্বত্র মজুরি কাঠামো ন্যায়বিচারের ভিত্তিতে পুনর্বিন্যাস করতে হবে। ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতির গ্রাস থেকে নিম্ন বেতনভুক কর্মচারী ও অল্প উপার্জনশীল ব্যক্তিদের বাঁচাবার জন্য দ্রব্যমূল্যে স্থিতিশীলতা আনতে হবে।’ আজকের দিনে তাই বলতে চাই, বঙ্গবন্ধু আর একবার এসে দাঁড়ান আপনার বাংলাদেশের দুঃখী মানুষের পাশে।

করাচি মিয়ানওয়ালী কারাগারে নারীদের সংরক্ষিত ওয়ার্ডে তাকে আটক করে রাখা হয়। ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরের দিন ছিল ৪ ডিসেম্বর। সেইদিন ইয়াহিয়া খান রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধে বঙ্গবন্ধুর বিচারকারী ট্রাইব্যুনাল সদস্যদের ডেকে পাঠান। তাদেরকে বঙ্গবন্ধুর ফাঁসির রায় লিপিবদ্ধ করার নির্দেশ দেন। কিন্তু পরে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই রায় স্থগিত করা হয়। এর মধ্যে তাকে ভয় দেখানোর জন্য তার সেলের পাশে কবর খোঁড়া হয়েছিল। তিনি তার দশ জানুয়ারির ভাষণে বলেছিলেন, ‘আপনারা জানেন যে, আমার ফাঁসির হুকুম হয়েছিল, আমার সেলের পাশে আমার জন্যে কবরও খোঁড়া হয়েছিল। আমি মুসলমান। আমি জানি, মুসলমান মাত্র একবারই মরে। তাই আমি ঠিক করেছিলাম, আমি তাদের নিকট নতি স্বীকার করব না। ফাঁসির মঞ্চে যাওয়ার সময় আমি বলব, আমি বাঙালি, বাংলা আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা। জয়বাংলা।’

বঙ্গবন্ধু তার অধিকাংশ ভাষণে নিজের জাতিসত্তা, নিজের দেশ, নিজের মাতৃভাষার বিষয়ে কথা বলেছেন। তিনিই সেই মানুষ, যিনি জাতিসংঘে দাঁড়িয়ে বক্তৃতা করেছিলেন নিজের মাতৃভাষায়। বাংলা ভাষাকে একটি স্বাধীন দেশের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তার আগে সংবিধানে বলা হয়েছে প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রভাষা বাংলা। ১৯৭১ সালের ২৪ জানুয়ারি ঢাকার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনিষ্টিটিউটে তাকে প্রদত্ত একটা সংবর্ধনা সভায় তিনি বলেন, ‘সাংস্কৃতিক স্বাধীনতা ছাড়া রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্বাধীনতা অর্থহীন। তাই মাটি ও মানুষকে কেন্দ্র করে গণমানুষের সুখ-শান্তি ও স্বপ্ন এবং আশা-আকাক্সক্ষাকে অবলম্বন করে গড়ে উঠবে বাংলার নিজস্ব সাহিত্য ও সংস্কৃতি।’ একটি জাতির জন্য তিনিই সেই নেতা যিনি বুঝেছিলেন যে, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্বাধীনতার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক স্বাধীনতা কতটা জরুরি। এটাতো সত্যিই যে সাংস্কৃতিক স্বাধীনতা একটি জাতিকে মননে চেতনায় শাণিত করে। যে জাতি নিজস্ব সাংস্কৃতিক বোধে দীপ্ত নয়, সে জাতি শিকড়হীন পরগাছা মাত্র। বাংলাদেশের অনেক অর্জনে নিজেদের সাংস্কৃতিক বোধকে সমুন্নত রাখতে পেরেছিল বলেই বাঙালি তার আত্মমর্যাদায় দরিদ্র নয়। প্রতিটি সংকটে-সংগ্রামে সাংস্কৃতিক বোধ দিয়ে এ জাতি তার সংকটের উত্তরণ ঘটিয়েছে।

আবার ফিরে আসি বঙ্গবন্ধুর দশই জানুয়ারির ভাষণে। তিনি বলেছিলেন, ‘আমি ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধীকে শ্রদ্ধা করি...। আমি যখনই চাইব, ভারত বাংলাদেশ থেকে তার সৈন্য বাহিনী তখনই ফিরিয়ে নিবে।’ আমরা জানি কোনো দেশ থেকে সাহয্যকারী সেনাবাহিনী সরিয়ে নেওয়া কত কঠিন। বঙ্গবন্ধুর মত অসাধারণ ব্যক্তি সেদিন আমাদের সামনে ছিলেন বলেই বন্ধুরাষ্ট্র ভারতের সেনাবাহিনী ’৭২ সালের মার্চ মাসে বাংলাদেশ থেকে চলে গিয়েছিল। নিজেদের সার্বভৌমত্বের দিকে তাকিয়ে এ কথা বলতেই হয় যে, বঙ্গবন্ধুর এই নানামুখী চিন্তা এই দেশ ও জাতিকে মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত করে দিয়েছিল মাত্র সাড়ে তিন বছর সময়ে।

সে দিনের ভাষণে তিনি আর একটি প্রসঙ্গের কথা উল্লেখ করেছিলেন, সেটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তিনি বলেছিলেন, ‘যারা অন্যায়ভাবে আমাদের মানুষদের মেরেছে তাদের অবশ্যই বিচার হবে। বাংলাদেশে এমন পরিবার খুব কমই আছে, যে পরিবারের লোক মারা যায়নি। আজকে দেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কাজ শুরু হচ্ছে। আমাদের গভীর বিশ্বাস এ বছর বিচারকাজ সম্পন্ন হবে এবং রায়ও কার্যকর হবে। যতদিন একটি দেশে অপরাধ টিকে থাকে ততদিন সে দেশের মানুষের মাথা অবনত থাকে। মানুষ চায় ন্যায়ের পক্ষে, সত্যের পক্ষে নিজের মাথাকে সোজা করে রাখতে। আমাদের বিপুল অর্জন আছে। ব্যর্থতার জায়গাও কম নয়। তারপরও নিজেদের জন্য নিজেদেরকে বড় করে তোলার পক্ষে চেষ্টা নিরন্তর। আমরা এই নিরন্তর সাধনা থেকে বিচ্যুত হব না। এই প্রতিজ্ঞা আমাদের আগামী প্রজন্মের। এ প্রতিজ্ঞা নিয়ে এগোতে চাইলে পিছু হটে যাওয়ার কোনো সুযোগ নাই। মৌলবাদের উত্থান রহিত হলে যুদ্ধাপরাধী দেশ থেকে নির্মূল হবে।’ সেদিনের ভাষণে তিনি এ প্রসঙ্গ টেনে বলেছিলেন, ‘পাকিস্তানী সেনাবাহিনী বাংলাদেশে যে নির্বিচার গণহত্যা করেছে, তার অনুসন্ধান ও ব্যাপকতা নির্ধারণের জন্য আমি জাতিসংঘের নিকট একটা আন্তর্জাতিক ট্রাইবুনাল গঠনের আবেদন জানাচ্ছি। আমরা মনে করি যুদ্ধাপরাধীর দায় বহন করার মত গ্লানি থেকে মুক্ত হবে এই জাতি।’

বঙ্গবন্ধু ১০ই জানুয়ারির ভাষণে বলেছিলেন, ‘আমি স্পষ্ট ও দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলতে চাই যে, আমাদের দেশ হবে গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ ও সমাজতান্ত্রিক দেশ। এ দেশের কৃষক, শ্রমিক, হিন্দু, মুসলমান সবাই সুখে থাকবে, শান্তিতে থাকবে।’ প্রতিটি ব্যক্তির জীবনে এটি একটি বড় শিক্ষা। চেতনা সমৃদ্ধ করার দিকদর্শন। প্রত্যেক ব্যক্তি যদি এমন ভাবনায় আলোকিত থাকেন তবে দেশে দাঙ্গার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে না। মৌলবাদের উত্থান ঘটবে না। ধর্মকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করার দিন নিঃশেষ হবে। মানুষ নিজ নিজ ধর্ম পালনের পাশাপাশি অন্য ধর্মকে শ্রদ্ধা করবে। সব ধর্মের অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে প্রত্যেক ধর্মের মৌলিক সত্যকে নিজেরা বুঝবে। আমাদের সামনে এক অসাধারণ শিক্ষার বার্তা। আমি এই বার্তা ধারণ করে শিক্ষক বঙ্গবন্ধুর কাছে কৃতজ্ঞ থাকি।

বইপড়ার বিষয়টি বঙ্গবন্ধু যেভাবে দেখেছেন এটিও আমার জন্য শিক্ষার একটি দিক। সাধারণ মানুষ যদি কাজের অবসরে বই পড়েন তাহলে সামাজিক মূল্যবোধের একটি বড় জায়গা তৈরি হবে। পরিবারে বইপড়ার চর্চা থাকলে শিশুদের মাঝেও আগ্রহ তৈরি হবে। পড়ালেখার পাশাপাশি শিশুদের হাতে ওদের পছন্দের বই পড়তে দিলে ওদের মানসিক বিকাশ বড় পরিসরে গড়ে উঠবে। ও চাকরি, ব্যবসা ইত্যাদি যেভাবেই জীবন ধারণ করুক না কেন মানসিক বিকাশ গড়ে উঠবে ভিন্ন মাত্রায়। এর দ্বারা আমাদের সামাজিক অবক্ষয় রোধ হবে। মূল্যবোধের অভাব আমাদেরকে নিকৃষ্ট ধারণায় ফেলে দেবে না। বই পড়ার চিন্তা রেখে শিশুরা গড়ে উঠুক। আমরা সুন্দর সামাজিকতায় দিনযাপনের সুযোগ পাব। নারী ও শিশুদের প্রতি নানা ধরণের নির্যাতন আমাদের মর্মাহত করবে না। বঙ্গবন্ধুর এই শিক্ষা সামগ্রিকভাবে সমাজ বিনির্মানের বড় দিক।

বঙ্গবন্ধু নিজে লেখক ছিলেন। তিনটি বই রচনা করেছেন। এই তিনটি বইয়ে বঙ্গবন্ধুর লেখক সত্তার অসাধারণ পরিচয় পাওয়া যায়। ‘কারাগারের রোজনামচা’ বইয়ে লিখেছেন: ‘বন্ধু শহীদুল্লাহ কায়সারের ‘সংশপ্তক’ বইটি পড়তে শুরু করেছি। লাগছে ভালই, বাইরে পড়তে সময় পাই নাই।...রুমে বসে লেখাপড়া করা ছাড়া উপায় কি! তাই পড়লাম বইটা...।’ তিনি আর এক জায়গায় লিখছেন : ‘আজ আর খবরের কাগজ আসবে না। মিলাদুন্নবীর জন্য বন্ধ। দিন কাটানো খুবই কষ্টকর হবে। আমি তো একাকী আছি, বই আর কাগজই আমার বন্ধু। এর মধ্যেই আমি নিজকে ডুবাইয়া রাখি। পুরানা কয়েকটা ইত্তেফাক কাগজ বের করে পড়তে শুরু করলাম।’ এই বইয়ে বঙ্গবন্ধুর পড়া বিদেশি বইয়েরও উল্লেখ আছে। তিনি এমন বইপ্রিয় মানুষ ছিলেন। এখানেও তাকে আমি শিক্ষক হিসেবে পাই। রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক চেতনায় তিনি একজন প্রদীপ্ত মানুষ। তিনি আমাদের সামনে নেই, কিন্তু জীবন পরিচর্যা করার দিকদর্শন রেখে গেছেন। আমাদের দায়িত্ব স্বাধীন দেশের পঞ্চাশ বছর পূর্তিতে আমার যা করতে পারিনি, এই নৈরাজ্য যেন আমরা বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা থেকে ঝেড়ে ফেলতে পারি। আগামী পঞ্চাশ বছরে গড়ে উঠুক স্বাধীনতার স্থপতির স্বপ্নের বাংলাদেশ।

বঙ্গবন্ধুর সব কথার মধ্যে শিক্ষার অন্তর্নিহিত বাণী গেঁথে আছে। শুধু রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে নয় ব্যক্তি মানুষের জন্যও এই কথাগুলো শিক্ষার বড় দিক। শিল্প-সাহিত্যে-সংস্কৃতিতে মানুষের প্রতি অনুভবের মাত্রা বাড়ানোর এটি একটি দিক। এ জন্য বঙ্গবন্ধুকে আমি জীবন-শিক্ষক মনে করি। বাংলা ভাষার একজন লেখক হিসেবে শিক্ষক বঙ্গবন্ধুকে গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণে রাখি। তিনি আমার সামনে গৌরব অর্জনের নীতি নির্ধারক। শিক্ষকতার মানদন্ডে তার বিপুল পরিসর চেতনায় রাখি।

লেখক: সভাপতি, বাংলা একাডেমি ও কথাসাহিত্যিক

 শিক্ষকের মর্যাদায় বঙ্গবন্ধু: পর্ব-১

Header Ad
Header Ad

বিরামপুরে জমি নিয়ে বিরোধ, চাঁদা দাবি ও হামলার ঘটনায় আটক ৫

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

দিনাজপুরের বিরামপুরে জমি-সংক্রান্ত বিরোধের জেরে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে। চাঁদা না পেয়ে বাড়িঘর ভাঙচুর ও ফলের গাছ কেটে ফেলার ঘটনায় ছাত্রদল নেতাসহ পাঁচজনকে আটক করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিরামপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মমতাজুল হক। জানা গেছে, উপজেলার পলিপ্রয়াগপুর ইউনিয়নের চন্ডিপুর (চায়না অফিস) এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

আটক ব্যক্তিরা হলেন— ৭নং পলিপ্রয়াগপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি মো. সানোয়ার হোসেন (২৬), মো. শাহ আলম (৩৬), মো. আবু বক্কর সিদ্দিক (২৯), মো. মোস্তাফিজুর রহমান (২৬) ও মো. রতন রানা (২৫)। গত ৩০ মার্চ যৌথ বাহিনীর অভিযানে তাদের আটক করা হয়।

মামলার তথ্য অনুযায়ী, বিরামপুর পৌরশহরের ঘাটপাড় এলাকার অধ্যাপক ডা. মোখলেছুর রহমানের সঙ্গে ছাত্রদল নেতা সানোয়ার হোসেনের দীর্ঘদিন ধরে জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। ডা. মোখলেছুর রহমান তার জমির দেখাশোনার জন্য ফারুক হোসেন নামে একজনকে নিয়োগ দেন। ফারুক সেখানে একটি দোকান নির্মাণের পাশাপাশি বিভিন্ন ফলের গাছ লাগান। গাছগুলোতে পর্যাপ্ত ফল ধরার পর আসামিরা জমি দখলের পরিকল্পনা করে এবং চাঁদা দাবি করে।

গত রবিবার (৩০ মার্চ) দুপুর দেড়টার দিকে সানোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে ২০-২৫ জন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বাগানে হামলা চালায়। তারা ১৫৭টি বড়ই গাছ, ৮৪টি কমলা গাছ ও ২৩টি আম গাছ কেটে ফেলে, যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ১৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা।

ফারুক হোসেন ও তার পরিবারের সদস্যরা বাধা দিলে তাদের ওপর হামলা চালানো হয়। মারধরের একপর্যায়ে লোহার শাবল দিয়ে দেলোয়ার হোসেনকে গুরুতর জখম করা হয়। ফারুক হোসেন অভিযোগ করেন, হামলাকারীরা তার বাড়ির আসবাবপত্র ভাঙচুর করে, প্রায় ১২ লাখ টাকার ক্ষতি করে এবং ব্যবসার নগদ ২ লাখ ৩৫ হাজার টাকা লুট করে নেয়।

হামলার পর ফারুক হোসেন জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল করলে প্রশাসন দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পুলিশ, সেনাবাহিনী ও স্থানীয়দের সহায়তায় পাঁচজনকে আটক করা হয়।

বিরামপুর থানার ওসি মমতাজুল হক জানান, ফারুক হোসেনের দায়ের করা মামলায় ৫ জনকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। পলাতক আসামিদের ধরতে অভিযান চলছে।

Header Ad
Header Ad

হলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা ভ্যাল কিলমার আর নেই

অভিনেতা ভ্যাল কিলমার। ছবি: সংগৃহীত

হলিউডের বিখ্যাত অভিনেতা ভ্যাল কিলমার আর নেই। ‘টপ গান’ এবং ‘ব্যাটম্যান ফরএভার’ খ্যাত এই তারকা ১ এপ্রিল (মঙ্গলবার) লস অ্যাঞ্জেলেসে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৫ বছর। দীর্ঘদিন ধরে কণ্ঠনালীতে ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন তিনি। এছাড়া শেষ সময়ে নিউমোনিয়ায় ভুগছিলেন, যা তার শারীরিক অবস্থাকে আরও জটিল করে তোলে।

নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে জানানো হয়, ভ্যাল কিলমার দীর্ঘদিন ধরে ক্যানসারের চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। তবে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার পর তার শারীরিক অবস্থা দ্রুত অবনতির দিকে যায়। অভিনেতার মেয়ে মার্সিডিজ কিলমার জানান, শেষ সময়ে তার বাবা লড়াই চালিয়ে যেতে পারছিলেন না।

আশির ও নব্বই দশকে হলিউডে জনপ্রিয়তার শীর্ষে ছিলেন ভ্যাল কিলমার। তার সোনালি চুল, আকর্ষণীয় চেহারা এবং অনবদ্য অভিনয়ের কারণে তিনি হয়ে উঠেছিলেন দর্শকদের প্রিয় তারকা। ‘টপ গান’, ‘রিয়াল জিনিয়াস’, ‘উইলো’, ‘হিট’ এবং ‘দ্য সেন্ট’-এর মতো ছবিতে তার অসাধারণ অভিনয় এখনো দর্শকদের মনে অমলিন।

বিশেষ করে ১৯৯১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘দ্য ডোর্স’ সিনেমায় কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী জিম মরিসনের চরিত্রে তার অভিনয় ব্যাপক প্রশংসিত হয়। ১৯৯৫ সালে ‘ব্যাটম্যান ফরএভার’ ছবিতে তিনি ব্যাটম্যান চরিত্রে অভিনয় করেন, যা তাকে সুপারহিরো সিনেমার জগতে ব্যাপক জনপ্রিয়তা এনে দেয়। যদিও ১৯৯৭ সালের ‘ব্যাটম্যান অ্যান্ড রবিন’ সিনেমায় এই চরিত্রে জর্জ ক্লুনি অভিনয় করেন, কিন্তু ভক্তদের মনে ব্যাটম্যান হিসেবে গেঁথে ছিলেন ভ্যাল কিলমারই।

ক্যান্সারের কারণে বহু বছর অভিনয় থেকে দূরে ছিলেন কিলমার। তবে ২০২১ সালে ‘টপ গান: ম্যাভেরিক’ সিনেমার মাধ্যমে তিনি বড় পর্দায় ফিরে আসেন। যদিও শারীরিক অসুস্থতার কারণে স্বাভাবিকভাবে কথা বলতে পারতেন না, তবুও তার প্রত্যাবর্তন দর্শকদের মনে নস্টালজিয়ার ঝড় তোলে।

ভ্যাল কিলমারের মৃত্যুতে চলচ্চিত্র জগতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। হলিউডে তার অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।

Header Ad
Header Ad

ময়মনসিংহে সিনেমা হলে যান্ত্রিক ত্রুটির জেরে দর্শকদের ভাঙচুর

ছবি: সংগৃহীত

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে একটি সিনেমা হলে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে প্রচার বন্ধ হয়ে গেলে ক্ষুব্ধ দর্শকেরা ব্যাপক ভাঙচুর চালান। গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ঈশ্বরগঞ্জ পৌর বাজারের মাছ মহালে অবস্থিত সোনালি টকিজ সিনেমা হলে এই ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে জানা যায়, ঈদ উপলক্ষে চলমান ‘বরবাদ’ সিনেমার সন্ধ্যার শো দেখতে বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রচুর দর্শক সমাগম ঘটে। ডিসি, বেলকনি এবং প্রথম শ্রেণির টিকিট বিক্রি হয়ে যায়। কিন্তু সিনেমার মাঝপথে সাউন্ড সিস্টেমে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়, ফলে সিনেমা প্রদর্শন বন্ধ হয়ে যায়। কর্তৃপক্ষ অনেক চেষ্টা করেও সমস্যার সমাধান করতে পারেনি। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর কোনো আশার আলো দেখতে না পেয়ে ক্ষুব্ধ দর্শকেরা হলে ভাঙচুর শুরু করেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, রাত সাড়ে ৮টা থেকে প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে চলা এই তাণ্ডবে সিনেমা হলের বসার বেঞ্চ, চেয়ার ও টিকিট কাউন্টার ভাঙচুর করা হয়। পাশাপাশি হলের দেয়ালে লাগানো পোস্টার ছিঁড়ে ফেলে নিচতলায় আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। স্থানীয় একদল যুবক বিক্ষুব্ধ দর্শকদের ধাওয়া করলে তারা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান।

কিছু দর্শক অভিযোগ করেন, যান্ত্রিক ত্রুটির সময় হল কর্তৃপক্ষ কোনো আশ্বস্ত না করে কলাপসিবল গেটে তালা মেরে চলে যান। এতে দর্শকেরা আরও বেশি ক্ষুব্ধ হয়ে পড়েন এবং হলের বিভিন্ন অংশ ভাঙচুর করেন।

ঘটনার সময় হলে উপস্থিত থাকা একজন কর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, উত্তেজিত দর্শকেরা তাকে মারধর করতে উদ্যত হন। তবে তিনি দ্রুত নিয়ন্ত্রণ কক্ষের লাইট বন্ধ করে দরজায় তালা লাগিয়ে ভেতরে বসে থাকায় অল্পের জন্য রক্ষা পান।

ঈশ্বরগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) প্রজিত কুমার দাস জানান, সিনেমা চলার সময় সাউন্ড সিস্টেমে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। সেটি ঠিক করতে না পেরে কর্তৃপক্ষ বাইরে থেকে সাউন্ড সিস্টেম ভাড়া আনতে যান। কিন্তু দর্শকেরা কলাপসিবল গেটে তালা লাগানো দেখে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন এবং পরবর্তীতে ভাঙচুর চালান।

এদিকে, ঘটনার পর সিনেমা হলের দায়িত্বে থাকা হারুনুর রশিদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে জানা যায়, তিনি অসুস্থ হয়ে বিশ্রামে আছেন। হলের অন্যান্য কর্মীরাও ভয়ে কথা বলতে অনীহা প্রকাশ করেন। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই ঘটনায় তদন্ত চলছে এবং দোষীদের চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

বিরামপুরে জমি নিয়ে বিরোধ, চাঁদা দাবি ও হামলার ঘটনায় আটক ৫
হলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা ভ্যাল কিলমার আর নেই
ময়মনসিংহে সিনেমা হলে যান্ত্রিক ত্রুটির জেরে দর্শকদের ভাঙচুর
সেভেন সিস্টার্স নিয়ে ড. ইউনূসের মন্তব্যে ভারতীয় রাজনীতিবিদদের তীব্র প্রতিক্রিয়া
মিয়ানমারের ভূমিকম্পে এক ইমামের ১৭০ স্বজনের মৃত্যু
ঈদের আনন্দে যমুনার দুর্গম চরে গ্রাম-বাংলার ঘুড়ি উৎসব, আনন্দে মেতে উঠে বিনোদনপ্রেমীরা!
ইমামকে ঘোড়ার গাড়িতে রাজকীয় বিদায়, দেওয়া হলো ৯ লাখ টাকার সংবর্ধনা
লন্ডনে একসঙ্গে দেখা গেলো সাবেক চার আওয়ামী মন্ত্রীকে
ঢাকায় ফিরছে ঈদযাত্রীরা, অনেকে ছুটছেন শহরের বাইরে
চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় আবারও সড়ক দুর্ঘটনা, নিহত ৭
বিটিভিতে আজ প্রচারিত হবে ঈদের বিশেষ ‘ইত্যাদি’
ঈদের ছুটিতে ফাঁকা ঢাকা, নেই যানজটের চিরচেনা দৃশ্য
মাদারীপুরে তিন মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে নিহত ৪, আহত ২
থানায় জিডি করলেন ভোক্তা অধিকারের জব্বার মন্ডল
রাশিয়া আমাদের চিরকালের বন্ধু, কখনো শত্রু নয়: চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী
গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান খালেদা জিয়ার
দ্বিতীয় দফায় মিয়ানমারে ত্রাণ সহায়তা পাঠালো বাংলাদেশ
ভারতে প্রশিক্ষণ প্লেন বিধ্বস্ত, পাইলট আহত
এপ্রিলে ঢাকায় আসছে আইএমএফ প্রতিনিধি দল
জাপানে মেগা ভূমিকম্পের শঙ্কা, প্রাণহানি হতে পারে ৩ লাখ