শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

পর্ব-২

শিক্ষকের মর্যাদায় বঙ্গবন্ধু

স্বাধীন বাংলাদেশে পথপরিক্রমায় এখনো বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণে অনেকখানি বাকি রয়ে গেছ। যে দুঃখী মানুষের ভাবনা, তার মৌলিক চিন্তার অংশ-সেই জায়গাটি পূরণ করা এখন পর্যন্ত সম্ভব হয়নি। বঙ্গবন্ধু জনগণের সেই নেতা, যিনি বারবার উল্লেখ করেছেন তাদের কথা। তিনি ১৯৭০ সালের ২৮ অক্টোবর পাকিস্তান টেলিভিশন সার্ভিস ও রেডিও পাকিস্তান থেকে প্রচারিত ভাষণে বলেছিলে, ‘অর্থনীতির সর্বত্র মজুরি কাঠামো ন্যায়বিচারের ভিত্তিতে পুনর্বিন্যাস করতে হবে। ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতির গ্রাস থেকে নিম্ন বেতনভুক কর্মচারী ও অল্প উপার্জনশীল ব্যক্তিদের বাঁচাবার জন্য দ্রব্যমূল্যে স্থিতিশীলতা আনতে হবে।’ আজকের দিনে তাই বলতে চাই, বঙ্গবন্ধু আর একবার এসে দাঁড়ান আপনার বাংলাদেশের দুঃখী মানুষের পাশে।

করাচি মিয়ানওয়ালী কারাগারে নারীদের সংরক্ষিত ওয়ার্ডে তাকে আটক করে রাখা হয়। ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরের দিন ছিল ৪ ডিসেম্বর। সেইদিন ইয়াহিয়া খান রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধে বঙ্গবন্ধুর বিচারকারী ট্রাইব্যুনাল সদস্যদের ডেকে পাঠান। তাদেরকে বঙ্গবন্ধুর ফাঁসির রায় লিপিবদ্ধ করার নির্দেশ দেন। কিন্তু পরে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই রায় স্থগিত করা হয়। এর মধ্যে তাকে ভয় দেখানোর জন্য তার সেলের পাশে কবর খোঁড়া হয়েছিল। তিনি তার দশ জানুয়ারির ভাষণে বলেছিলেন, ‘আপনারা জানেন যে, আমার ফাঁসির হুকুম হয়েছিল, আমার সেলের পাশে আমার জন্যে কবরও খোঁড়া হয়েছিল। আমি মুসলমান। আমি জানি, মুসলমান মাত্র একবারই মরে। তাই আমি ঠিক করেছিলাম, আমি তাদের নিকট নতি স্বীকার করব না। ফাঁসির মঞ্চে যাওয়ার সময় আমি বলব, আমি বাঙালি, বাংলা আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা। জয়বাংলা।’

বঙ্গবন্ধু তার অধিকাংশ ভাষণে নিজের জাতিসত্তা, নিজের দেশ, নিজের মাতৃভাষার বিষয়ে কথা বলেছেন। তিনিই সেই মানুষ, যিনি জাতিসংঘে দাঁড়িয়ে বক্তৃতা করেছিলেন নিজের মাতৃভাষায়। বাংলা ভাষাকে একটি স্বাধীন দেশের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তার আগে সংবিধানে বলা হয়েছে প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রভাষা বাংলা। ১৯৭১ সালের ২৪ জানুয়ারি ঢাকার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনিষ্টিটিউটে তাকে প্রদত্ত একটা সংবর্ধনা সভায় তিনি বলেন, ‘সাংস্কৃতিক স্বাধীনতা ছাড়া রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্বাধীনতা অর্থহীন। তাই মাটি ও মানুষকে কেন্দ্র করে গণমানুষের সুখ-শান্তি ও স্বপ্ন এবং আশা-আকাক্সক্ষাকে অবলম্বন করে গড়ে উঠবে বাংলার নিজস্ব সাহিত্য ও সংস্কৃতি।’ একটি জাতির জন্য তিনিই সেই নেতা যিনি বুঝেছিলেন যে, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্বাধীনতার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক স্বাধীনতা কতটা জরুরি। এটাতো সত্যিই যে সাংস্কৃতিক স্বাধীনতা একটি জাতিকে মননে চেতনায় শাণিত করে। যে জাতি নিজস্ব সাংস্কৃতিক বোধে দীপ্ত নয়, সে জাতি শিকড়হীন পরগাছা মাত্র। বাংলাদেশের অনেক অর্জনে নিজেদের সাংস্কৃতিক বোধকে সমুন্নত রাখতে পেরেছিল বলেই বাঙালি তার আত্মমর্যাদায় দরিদ্র নয়। প্রতিটি সংকটে-সংগ্রামে সাংস্কৃতিক বোধ দিয়ে এ জাতি তার সংকটের উত্তরণ ঘটিয়েছে।

আবার ফিরে আসি বঙ্গবন্ধুর দশই জানুয়ারির ভাষণে। তিনি বলেছিলেন, ‘আমি ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধীকে শ্রদ্ধা করি...। আমি যখনই চাইব, ভারত বাংলাদেশ থেকে তার সৈন্য বাহিনী তখনই ফিরিয়ে নিবে।’ আমরা জানি কোনো দেশ থেকে সাহয্যকারী সেনাবাহিনী সরিয়ে নেওয়া কত কঠিন। বঙ্গবন্ধুর মত অসাধারণ ব্যক্তি সেদিন আমাদের সামনে ছিলেন বলেই বন্ধুরাষ্ট্র ভারতের সেনাবাহিনী ’৭২ সালের মার্চ মাসে বাংলাদেশ থেকে চলে গিয়েছিল। নিজেদের সার্বভৌমত্বের দিকে তাকিয়ে এ কথা বলতেই হয় যে, বঙ্গবন্ধুর এই নানামুখী চিন্তা এই দেশ ও জাতিকে মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত করে দিয়েছিল মাত্র সাড়ে তিন বছর সময়ে।

সে দিনের ভাষণে তিনি আর একটি প্রসঙ্গের কথা উল্লেখ করেছিলেন, সেটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তিনি বলেছিলেন, ‘যারা অন্যায়ভাবে আমাদের মানুষদের মেরেছে তাদের অবশ্যই বিচার হবে। বাংলাদেশে এমন পরিবার খুব কমই আছে, যে পরিবারের লোক মারা যায়নি। আজকে দেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কাজ শুরু হচ্ছে। আমাদের গভীর বিশ্বাস এ বছর বিচারকাজ সম্পন্ন হবে এবং রায়ও কার্যকর হবে। যতদিন একটি দেশে অপরাধ টিকে থাকে ততদিন সে দেশের মানুষের মাথা অবনত থাকে। মানুষ চায় ন্যায়ের পক্ষে, সত্যের পক্ষে নিজের মাথাকে সোজা করে রাখতে। আমাদের বিপুল অর্জন আছে। ব্যর্থতার জায়গাও কম নয়। তারপরও নিজেদের জন্য নিজেদেরকে বড় করে তোলার পক্ষে চেষ্টা নিরন্তর। আমরা এই নিরন্তর সাধনা থেকে বিচ্যুত হব না। এই প্রতিজ্ঞা আমাদের আগামী প্রজন্মের। এ প্রতিজ্ঞা নিয়ে এগোতে চাইলে পিছু হটে যাওয়ার কোনো সুযোগ নাই। মৌলবাদের উত্থান রহিত হলে যুদ্ধাপরাধী দেশ থেকে নির্মূল হবে।’ সেদিনের ভাষণে তিনি এ প্রসঙ্গ টেনে বলেছিলেন, ‘পাকিস্তানী সেনাবাহিনী বাংলাদেশে যে নির্বিচার গণহত্যা করেছে, তার অনুসন্ধান ও ব্যাপকতা নির্ধারণের জন্য আমি জাতিসংঘের নিকট একটা আন্তর্জাতিক ট্রাইবুনাল গঠনের আবেদন জানাচ্ছি। আমরা মনে করি যুদ্ধাপরাধীর দায় বহন করার মত গ্লানি থেকে মুক্ত হবে এই জাতি।’

বঙ্গবন্ধু ১০ই জানুয়ারির ভাষণে বলেছিলেন, ‘আমি স্পষ্ট ও দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলতে চাই যে, আমাদের দেশ হবে গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ ও সমাজতান্ত্রিক দেশ। এ দেশের কৃষক, শ্রমিক, হিন্দু, মুসলমান সবাই সুখে থাকবে, শান্তিতে থাকবে।’ প্রতিটি ব্যক্তির জীবনে এটি একটি বড় শিক্ষা। চেতনা সমৃদ্ধ করার দিকদর্শন। প্রত্যেক ব্যক্তি যদি এমন ভাবনায় আলোকিত থাকেন তবে দেশে দাঙ্গার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে না। মৌলবাদের উত্থান ঘটবে না। ধর্মকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করার দিন নিঃশেষ হবে। মানুষ নিজ নিজ ধর্ম পালনের পাশাপাশি অন্য ধর্মকে শ্রদ্ধা করবে। সব ধর্মের অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে প্রত্যেক ধর্মের মৌলিক সত্যকে নিজেরা বুঝবে। আমাদের সামনে এক অসাধারণ শিক্ষার বার্তা। আমি এই বার্তা ধারণ করে শিক্ষক বঙ্গবন্ধুর কাছে কৃতজ্ঞ থাকি।

বইপড়ার বিষয়টি বঙ্গবন্ধু যেভাবে দেখেছেন এটিও আমার জন্য শিক্ষার একটি দিক। সাধারণ মানুষ যদি কাজের অবসরে বই পড়েন তাহলে সামাজিক মূল্যবোধের একটি বড় জায়গা তৈরি হবে। পরিবারে বইপড়ার চর্চা থাকলে শিশুদের মাঝেও আগ্রহ তৈরি হবে। পড়ালেখার পাশাপাশি শিশুদের হাতে ওদের পছন্দের বই পড়তে দিলে ওদের মানসিক বিকাশ বড় পরিসরে গড়ে উঠবে। ও চাকরি, ব্যবসা ইত্যাদি যেভাবেই জীবন ধারণ করুক না কেন মানসিক বিকাশ গড়ে উঠবে ভিন্ন মাত্রায়। এর দ্বারা আমাদের সামাজিক অবক্ষয় রোধ হবে। মূল্যবোধের অভাব আমাদেরকে নিকৃষ্ট ধারণায় ফেলে দেবে না। বই পড়ার চিন্তা রেখে শিশুরা গড়ে উঠুক। আমরা সুন্দর সামাজিকতায় দিনযাপনের সুযোগ পাব। নারী ও শিশুদের প্রতি নানা ধরণের নির্যাতন আমাদের মর্মাহত করবে না। বঙ্গবন্ধুর এই শিক্ষা সামগ্রিকভাবে সমাজ বিনির্মানের বড় দিক।

বঙ্গবন্ধু নিজে লেখক ছিলেন। তিনটি বই রচনা করেছেন। এই তিনটি বইয়ে বঙ্গবন্ধুর লেখক সত্তার অসাধারণ পরিচয় পাওয়া যায়। ‘কারাগারের রোজনামচা’ বইয়ে লিখেছেন: ‘বন্ধু শহীদুল্লাহ কায়সারের ‘সংশপ্তক’ বইটি পড়তে শুরু করেছি। লাগছে ভালই, বাইরে পড়তে সময় পাই নাই।...রুমে বসে লেখাপড়া করা ছাড়া উপায় কি! তাই পড়লাম বইটা...।’ তিনি আর এক জায়গায় লিখছেন : ‘আজ আর খবরের কাগজ আসবে না। মিলাদুন্নবীর জন্য বন্ধ। দিন কাটানো খুবই কষ্টকর হবে। আমি তো একাকী আছি, বই আর কাগজই আমার বন্ধু। এর মধ্যেই আমি নিজকে ডুবাইয়া রাখি। পুরানা কয়েকটা ইত্তেফাক কাগজ বের করে পড়তে শুরু করলাম।’ এই বইয়ে বঙ্গবন্ধুর পড়া বিদেশি বইয়েরও উল্লেখ আছে। তিনি এমন বইপ্রিয় মানুষ ছিলেন। এখানেও তাকে আমি শিক্ষক হিসেবে পাই। রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক চেতনায় তিনি একজন প্রদীপ্ত মানুষ। তিনি আমাদের সামনে নেই, কিন্তু জীবন পরিচর্যা করার দিকদর্শন রেখে গেছেন। আমাদের দায়িত্ব স্বাধীন দেশের পঞ্চাশ বছর পূর্তিতে আমার যা করতে পারিনি, এই নৈরাজ্য যেন আমরা বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা থেকে ঝেড়ে ফেলতে পারি। আগামী পঞ্চাশ বছরে গড়ে উঠুক স্বাধীনতার স্থপতির স্বপ্নের বাংলাদেশ।

বঙ্গবন্ধুর সব কথার মধ্যে শিক্ষার অন্তর্নিহিত বাণী গেঁথে আছে। শুধু রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে নয় ব্যক্তি মানুষের জন্যও এই কথাগুলো শিক্ষার বড় দিক। শিল্প-সাহিত্যে-সংস্কৃতিতে মানুষের প্রতি অনুভবের মাত্রা বাড়ানোর এটি একটি দিক। এ জন্য বঙ্গবন্ধুকে আমি জীবন-শিক্ষক মনে করি। বাংলা ভাষার একজন লেখক হিসেবে শিক্ষক বঙ্গবন্ধুকে গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণে রাখি। তিনি আমার সামনে গৌরব অর্জনের নীতি নির্ধারক। শিক্ষকতার মানদন্ডে তার বিপুল পরিসর চেতনায় রাখি।

লেখক: সভাপতি, বাংলা একাডেমি ও কথাসাহিত্যিক

 শিক্ষকের মর্যাদায় বঙ্গবন্ধু: পর্ব-১

Header Ad
Header Ad

রাঙামাটিতে সিএনজি-পিকআপ সংঘর্ষে নিহত ৫

প্রতীকী ছবি

রাঙামাটির কাউখালীতে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন পাঁচজন। শনিবার (২৬ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার রাবারবাগান এলাকায় একটি পিকআপ ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

তাৎক্ষণিকভাবে নিহতদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কাউখালী উপজেলার বেতবুনিয়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এফ আই ইসহাক জানান, পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে এবং উদ্ধার কার্যক্রম চলছে। দুর্ঘটনার বিস্তারিত এখনও জানা যায়নি।

বিস্তারিত আসছে...

Header Ad
Header Ad

রেফারির বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছে রিয়াল, ফাইনাল ম্যাচ বয়কটের হুমকি

ছবি: সংগৃহীত

কোপা দেল রে ফাইনালের আগে মাঠের লড়াইয়ের আগেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে স্প্যানিশ ফুটবল অঙ্গন। হাইভোল্টেজ এই ম্যাচের রেফারিং নিয়ে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করে ম্যাচ-পূর্ব সকল আনুষ্ঠানিকতা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। ক্লাবটির ভাষ্য, রেফারিদের সাম্প্রতিক বক্তব্যে "স্পষ্ট বিদ্বেষ ও অসম্মান" ফুটে উঠেছে, যা তাদের পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব নয়।

শুক্রবার এক বিবৃতিতে রিয়াল জানায়, তারা ফাইনালের আগে প্রচলিত সকল প্রটোকল—ম্যাচ-পূর্ব প্রেস কনফারেন্স, মিডিয়ায় উন্মুক্ত অনুশীলন, প্রেসিডেন্টদের ডিনার এবং ঐতিহ্যবাহী ফটোসেশন—বর্জন করবে।

উত্তেজনার সূত্রপাত ক্লাবটির নিজস্ব চ্যানেল রিয়াল মাদ্রিদ টিভি-তে সম্প্রচারিত এক ভিডিও ঘিরে। সেখানে ফাইনালের রেফারি রিকার্দো দে বুরগোস বেংগোয়েচিয়ার প্রতি তীব্র সমালোচনা করা হয়। পরে এক সাংবাদিক সম্মেলনে আবেগপ্রবণ রেফারি জানান, এসব সমালোচনার প্রভাব তার ব্যক্তিগত জীবনেও পড়েছে। “যখন আপনার সন্তান স্কুলে গিয়ে শুনে—তার বাবা একজন চোর—তখন সেটা সত্যিই ভয়াবহ অভিজ্ঞতা,” বলেন তিনি, চোখের পানি মুছতে মুছতে।

তবে বিতর্ক এখানেই শেষ হয়নি। ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি (ভিএআর) পাবলো গনসালেস ফুয়ের্তেসের এক মন্তব্যে আরও জ্বালানি পড়ে আগুনে। তিনি বলেন, “রেফারিরা এক হচ্ছেন এবং রিয়াল মাদ্রিদ টিভির চাপ মোকাবেলায় গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।” এই বক্তব্যকেও হুমকি হিসেবে দেখছে রিয়াল।

স্প্যানিশ মিডিয়ায় জল্পনা ছিল—রিয়াল হয়তো ফাইনালেই অংশ নেবে না। তবে ক্লাবের পক্ষ থেকে পরে দ্বিতীয় বিবৃতিতে জানানো হয়, ম্যাচ বর্জনের কোনো পরিকল্পনা নেই। “রিয়াল মাদ্রিদ কখনও ফাইনালে না খেলার কথা বিবেচনা করেনি,” জানানো হয় স্পষ্ট ভাষায়।

এদিকে, লা লিগা প্রেসিডেন্ট হাভিয়ের তেবাস ক্লাবটির এই অবস্থানকে 'ক্ষমতার খেলা' বলে আখ্যায়িত করেছেন। রেফারিরাও ইঙ্গিত দিয়েছেন, রিয়াল মাদ্রিদ টিভির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।

উল্লেখ্য, এ ধরনের বর্জন রিয়ালের জন্য নতুন নয়। গত অক্টোবরে ব্যালন ডি’অর অনুষ্ঠানে ভিনিসিয়ুস জুনিয়রকে যথাযথ সম্মান না জানানোর প্রতিবাদে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান বর্জন করেছিল ক্লাবটি। তাদের ভাষায়, “যেখানে সম্মান নেই, সেখানে রিয়াল মাদ্রিদ যায় না।”

Header Ad
Header Ad

আইন উপদেষ্টাকে জড়িয়ে ভারতের গণমাধ্যমে মিথ্যা প্রতিবেদন, মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি

আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। ছবি: সংগৃহীত

ভারতের একটি অনলাইন পোর্টালে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলকে জড়িয়ে প্রকাশিত মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর প্রতিবেদন নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। এ ধরনের প্রতিবেদন সাংবাদিকতার নৈতিকতা ও সত্যের পরিপন্থী বলেও মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) রাতে ওই বিবৃতি গণমাধ্যমে পাঠানো হয়।

এতে বলা হয়, বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) নিউজ অ্যারেনা ইন্ডিয়া অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল সম্পর্কে একাধিক মিথ্যা, মানহানিকর ও দায়িত্বজ্ঞানহীন অভিযোগ উত্থাপন করেছে। প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিল, ‘বাংলাদেশ লিগ্যাল অ্যাডভাইজার মিটস টপ লস্কর–ই–তাইয়েবার অপারেটিভ পোস্ট জম্মু অ্যান্ড কাশ্মীর অ্যাটাক’।

প্রতিবেদনে অভিযোগ করা হয়, কাশ্মীরের পেহেলগামে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের পর লস্কর-ই-তাইয়েবার একজন শীর্ষ নেতার সঙ্গে উপদেষ্টা আসিফ নজরুল সাক্ষাৎ করেছেন, যা পুরোপুরি ভিত্তিহীন এবং কাল্পনিক।

প্রতিবেদনে হেফাজতে ইসলামের নেতাদের ভুল পরিচয়ে তুলে ধরা হয়েছে। হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশে বৈধভাবে পরিচালিত আলেম ও  ইসলামি সংগঠনগুলোর একটি প্ল্যাটফর্ম। প্রতিবেদনে যাদের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, তারা হেফাজতে ইসলামের নেতা, কোনো সন্ত্রাসী সংগঠনের সঙ্গে তারা যুক্ত নন। শেখ হাসিনার স্বৈরশাসনামলে হাজার হাজার হেফাজত সদস্য রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যা ও সাজানো মামলার শিকার হন। অন্তর্বর্তী সরকারের বিচার ও আইনি সংস্কারের অঙ্গীকারের অংশ হিসেবে আসিফ নজরুল তার দায়িত্বপূর্ণ পদে থেকে হেফাজতের এই ভুক্তভোগীদের ন্যায়বিচারের আবেদন শুনতে হেফাজতের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করেন।

হেফাজতের নেতাদের সঙ্গে আইন উপদেষ্টার বৈঠক যেদিন হয়েছে বলে নিউজ অ্যারেনা ইন্ডিয়া উল্লেখ করেছে, তার অন্তত তিন দিন আগেই ওই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনার বিষয় ছিল শুধু আইনি প্রক্রিয়া ও মামলার তালিকা হস্তান্তর। বৈঠকের শেষে প্রতিনিধিদলের অনুরোধে একটি ছবি তোলা হয়, যা এমন সভায় প্রচলিত ও স্বাভাবিক রীতি।

হেফাজতের বর্তমান নেতৃত্ব বাংলাদেশের জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের রাজনৈতিক সংলাপে অংশগ্রহণ করে। হেফাজতের নেতারা ঢাকায় পশ্চিমা দেশগুলোর দূতাবাসগুলোর সঙ্গেও নিয়মিত বৈঠক করে থাকেন, যা তাদের রাজনৈতিক বৈধতা ও আন্তর্জাতিক সম্পৃক্ততার বিষয়টিকে প্রতিফলিত করে।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ স্বাধীন মানবাধিকার সংগঠনগুলো পূর্ববর্তী সরকারের দমনমূলক কর্মকাণ্ড ও হেফাজতসহ বিরোধীদলীয় কর্মীদের ওপর নিপীড়নের ঘটনাগুলো নথিবদ্ধ করেছে, সমালোচনাও করেছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলোর সেই প্রতিবেদনগুলো প্রমাণ করে যে হেফাজতের নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে এসব মামলার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ছিল, যা বর্তমান সরকারের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার প্রচেষ্টাকে সমর্থন করে।

ভারতীয় গণমাধ্যমটির প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে যে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল তার ফেসবুক পেজে ভারতের নেতাদের বিরুদ্ধে উসকানিমূলক মন্তব্য করেছেন। এ বিষয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, আসলে বিষয়টি হলো ওই পোস্ট ছিল একজন ভারতীয়র লেখা, যিনি নিরাপত্তাব্যবস্থার ঘাটতি নিয়ে সমালোচনা করেন। সেই পোস্টটি শেয়ার করে পেহেলগামে হামলার নিন্দা জানান আসিফ নজরুল। পরে সম্ভাব্য বিভ্রান্তির আশঙ্কা করে তিনি স্বেচ্ছায় পোস্টটি কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মুছে ফেলেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা সকল গণমাধ্যমকে অনুরোধ করছি, যেন তারা সংবাদ প্রকাশের আগে যথাযথ যাচাই করে এবং দায়িত্বশীল সাংবাদিকতার নীতি অনুসরণ করে।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, পেহেলগাম হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়ে, নিহত ব্যক্তিদের প্রতি শ্রদ্ধা ও তাদের স্বজনদের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। একই সঙ্গে পেহেলগামের হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানান তিনি।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

রাঙামাটিতে সিএনজি-পিকআপ সংঘর্ষে নিহত ৫
রেফারির বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছে রিয়াল, ফাইনাল ম্যাচ বয়কটের হুমকি
আইন উপদেষ্টাকে জড়িয়ে ভারতের গণমাধ্যমে মিথ্যা প্রতিবেদন, মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি
নিজ দেশেই বিমান হামলা চালালো ভারত, ‘অসাবধানতা’ বলছে বিমান বাহিনী
গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত আরও ৮৪ ফিলিস্তিনি
আইনি নোটিশ প্রসঙ্গে যা বললেন ডা. তাসনিম জারা
ভারত-পাকিস্তান বিরোধে উত্তেজনা, শান্তির বার্তা নিয়ে এগিয়ে এলো ইরান
তারেক রহমানকে নিয়ে দ্য উইকের কাভার স্টোরি ‘নিয়তির সন্তান’
কুয়েটের ভিসি ও প্রো-ভিসিকে অব্যাহতি দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি
মেধাসম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহারে সবাইকে উদ্যোগী হতে হবে: প্রধান উপদেষ্টা
বেনাপোলে ৬ নারী ছিনতাইকারী গ্রেফতার
‘সংস্কার না নির্বাচন’ এই খেলা বাদ দিয়ে বিচার করুন: সারজিস আলম
যুদ্ধ বন্ধের আলোচনার মধ্যেই মস্কোয় গাড়িবোমা হামলায় রুশ জেনারেল নিহত
পোপ ফ্রান্সিসকে শেষ বিদায় জানাতে রোমে পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের 'বি' ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন
পাকিস্তানে বোমা বিস্ফোরণে নিরাপত্তা বাহিনীর ৪ সদস্য নিহত
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিলেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ
নওগাঁয় পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগে প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার ১
শিগগিরই স্থলভিত্তিক এলএনজি টার্মিনাল স্থাপন করবে সরকার: প্রেস সচিব
টাঙ্গাইলে ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে মাছ ব্যবসায়ী খুন