শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫ | ৫ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

বঙ্গবন্ধুর পথনকশায় বাংলাদেশের এগিয়ে চলা

এই মুজিববর্ষ আর স্বাধীনতার সূবর্ণজয়ন্তীর আনন্দ উদযাপনের মধ্যেই বাংলাদেশর স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে যুক্ত হওয়া, করোনা মহামারির পরও দ্রুত মাথাপিছু আয়-বৃদ্ধি এবং অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার গতিশীল হওয়ার মতো ঘটনা আমাদের সামনেই ঘটেছে। আজ দেখছি সরকারের ‘গ্রামেও শহরের মতো সব সুবিধা’ নিশ্চিত করার নীতি-কৌশলের ফলে গ্রাম-বাংলার মানুষের আয়েরও শতকরা ষাট ভাগ আসছে অ-কৃষি খাত থেকে। তাই বলা যায়, স্বাধীনতার পাঁচ দশকে আমরা সত্যিই আমূল পাল্টে দিতে পেরেছি এদেশের মেহনতি মানুষের জীবনচলার চিত্রটি। চ্যালেঞ্জ তো এখনও আছে। তবু যে বিপুল ইতিবাচক রূপান্তরের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ গেছে, বিশেষত গত এক যুগের কিছু বেশি সময় ধরে, তার স্বীকৃতি না দিয়ে তো উপায় নেই। এই অদম্য অগ্রযাত্রা শুরু করেছিলেন বঙ্গবন্ধু, স্বাধীন দেশে পা রেখেই। স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে লাখো জনতা যখন তাঁকে বরণ করে নিচ্ছিল তখনই তিনি জানিয়ে দিয়েছিলেন যদি এদেশের মানুষ খেতে না পায়, যদি কর্মসংস্থান না হয় তাহলে স্বাধীনতা পূর্ণতা পাবে না। মাত্র চার বছরেরও কম সময়ে বহু বিশেষজ্ঞের ধারণাকে ভুল প্রমাণ করে বঙ্গবন্ধু তাঁর বাংলাদেশকে অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের ‘এক্সপ্রেস ওয়ে’তে তুলে দিয়েছিলেন। ঐ অল্প সময়েই তিনি দেশের সামষ্টিক অর্থনীতিকে একটি শক্ত ভিত্তিই শুধু দিয়েছিলেন তাই নয়, বরং দ্রুত গতির এবং জনগণ-কেন্দ্রিক উন্নয়নের আগামীর পথনকশা জনগণের সামনে হাজির করে তিনি সকলকে আশাবাদিও করে তুলেছিলেন। সঙ্গত কারণেই তাই আমরা আফসোস করি, আর ভাবি-যদি বিশ্বাসঘাতকদের চক্রান্তে বঙ্গবন্ধু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে শারীরিকভাবে হারাতে না হতো, তাহলে আমরা এতো দিনে নিশ্চয়ই আরও অনেক বেশি এগুতে পারতাম। 

বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বে আমরা আবার ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছি। মেগা-অবকাঠামো নির্মাণ, কৃষি ও অ-কৃষি খাতের যুগল উন্নতির ফলে আমাদের প্রবৃদ্ধি, রিজার্ভ আর রপ্তানির পরিমাণ, মাথাপিছু আয়ের মতো সামষ্টিক অর্থনৈতিক সূচকে যেমন তেমনি ক্ষুধা সূচক, মানুষের গড় আয়ু, জেন্ডার প্যারিটি ইনডেক্সের মতো সামাজিক সূচকগুলোতেও বাংলাদেশের পাঁচ দশকের সাফল্য এবং বিশেষ করে গত বারো-তেরো বছরের অর্জন এখন সহজেই বোঝা যায়। ১৯৭৫-এর পর থেকে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের মাথাপিছু জিডিপি ৭ গুনেরও বেশি বেড়ে ২০২০ সালে দাঁড়ায় ১৬৬,৮৮৮ টাকায়। বেগবান এই অর্থনীতির গতিধারা থেকে এ কথা সহজেই বোঝা যায় যে, এর পেছনে কাজ করেছে সুবিবেচনাপ্রসূত নীতি প্রণয়ন ও তার বাস্তবায়নে ধারাবাহিকতা। এই সামষ্টিক অর্থনৈতিক রূপান্তরের ক্ষেত্রে অর্থনীতির স্বাভাবিক নিয়মেই জিডিপিতে কৃষির অবদান কমেছে। আর সে স্থান ক্রমান্বয়ে দখল করেছে শিল্প খাত। শিল্পখাতের প্রসার মানেই আনুষ্ঠানিক কর্মসংস্থানের প্রসার। বাংলাদেশে অপেক্ষাকৃত কম দক্ষ নারী কর্মীর ব্যাপক কর্মসংস্থান রপ্তানী-নির্ভর শিল্পায়নকেই শুধু প্রতিযোগী করেছে তাই নয়, দারিদ্র্য নিরসন এবং সামাজিক উন্নয়নেও তা নয়া মাত্রা যুক্ত করেছে। ফল স্বরূপ জিডিপিতে শিল্পের অবদান বেড়ে হয়েছে ৩৫ শতাংশ। 


তবে উল্লেখ্য যে, জিডিপিতে কৃষির অবদান কমে আসলেও কৃষি উৎপাদন কিন্তু বেড়েছে। তার মানে কৃষিতে আধুনিকায়ন ঘটেছে। বাংলাদেশের খাদ্য উৎপাদন সূচকের মান ২০১৬ সালের হিসাব অনুসারে ১৪৫.৩ (ভারতের ১৪৪, চীনের ১৩৯ এবং ভিয়েতনামের ১৩৬) । তবে কৃষি উৎপাদনের এমন নাটকিয় বৃদ্ধির পরও কিন্তু কৃষি মজুরি কমেনি বরং বেড়েছে। গ্রামীণ আয়ের বড় অংশটিই (৬০%) এখন আসছে অ-কৃষি খাত থেকে। দেশের গ্রামাঞ্চল এক দিকে বর্ধিষ্ণু শিল্প ও সেবা খাতের কাঁচা মাল ও মূল্য সংযোজিত পণ্য/সেবা সরবরাহ করছে, অন্য দিকে গ্রামাঞ্চলে মানুষের আয় বৃদ্ধির ফলে নতুন ভোক্তা হিসেবে তারা অভ্যন্তরীণ বাজারে চাহিদা বৃদ্ধিতেও রাখছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। মোট কথা গোটা অর্থনৈতিক কাঠামোর মধ্যে একটি বড় মাত্রার স্বনির্ভরতা তৈরি করা সম্ভব হয়েছে কৃষি ও শিল্পের যুগপৎ বিকাশের ফলে। 


বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ ধারাবাহিক উন্নয়নে সমর্থ হয়েছে। এক্ষেত্রেও বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিগত দশকে নাটকীয় অগ্রগতি অর্জনে সমর্থ হয়েছেন। আমাদের জিডিপির আকার বৃদ্ধি দ্রুত হয়েছে। বাহাত্তরের আট বিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি এখন ৫২ গুণ বেড়ে ২০২১ সালের শেষে ৪১৬ বিলিয়ন ডলার হয়েছে। তবে তারচেয়েও বেগবান রয়েছে বিনিয়োগের প্রবৃদ্ধির ধারা। তাই বিনিয়োগ জিডিপির অনুপাত ক্রমশ বেড়েছে। ২০০৯-১০ অর্থবছরে বিনিয়োগ-জিডিপি অনুপাত ছিল ২৬.৩, আর ২০১৮-১৯ তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩১.৬-এ। উল্লেখ্য যে, জিডিপির শতাংশ হিসেবে এই বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে সরকার ও ব্যক্তি খাত উভয়ই ভূমিকা রেখেছে। তবে ব্যক্তিখাতের বিনিয়োগ আরও দ্রুত হারে বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে। এসবের পাশাপাশি, গত ১০-১২ বছরে বাংলাদেশে আর্থিক অন্তর্ভুক্তির যে নীরব বিপ্লব ঘটে গেছে সেটিও বাংলাদেশের অর্থনীতিকে একই সঙ্গে বেগবান করেছে এবং এর ঝুঁকি সহনক্ষমতা বাড়িয়েছে। বিশেষ করে সামাজিক পিরামিডের পাটাতনে থাকা প্রান্তিক ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবাসকারি নাগরিকদের কাছে আর্থিক সেবা পৌঁছে দেয়ার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিজিটাল আর্থিক অন্তর্ভুক্তির উদ্ভাবনী নীতি উদ্যোগগুলো আশাতীত সুফল দিয়েছে। বিশ্ব ব্যাংকের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে দেখা গেছে যে, বাংলাদেশে ব্যাংক হিসাবধারিদের এক-তৃতীয়াংশই এখন ডিজিটাল লেনদেন করছেন। দক্ষিণ এশিয়ার জন্য গড়ে এ অনুপাত মাত্র ২৮ শতাংশ। 


বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক অর্জন ও সম্ভাবনাগুলোকে বিবেচনায় নিয়েই কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং বিশ্ব ব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ কৌশিক বসু বাংলাদেশের এমন সাফল্যের তিনটি প্রধানতম কারণ চিহ্নিত করেছেন। প্রথমত, তাঁর মতে বাংলাদেশের সরকার জাতীয় অগ্রযাত্রায় দেশের অ-সরকারি খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোকে (অর্থাৎ এনজিওগুলোকে) কাজে লাগাতে সক্ষম হয়েছে, ফলে সামাজিক পরিবর্তনে তারা সরকারের পরিপূরক ভূমিকা রাখতে পেরেছে কার্যকরভাবে। দ্বিতীয়ত, বাংলাদেশে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিগত এক দশকে আর্থিক অন্তর্ভুক্তির যে নীরব বিপ্লব ঘটিয়েছে সেটিও সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা অর্জনে বিশেষত অভ্যন্তরীণ চাহিদা বৃদ্ধিতে কার্যকর ভূমিকা রেখেছে বলে তিনি মনে করেন। তৃতীয়ত, কৌশিক বসু মনে করেন যে, বাংলাদেশের তুলনামূলক তরুণ জনশক্তি এবং সস্তা শ্রমের সহজলভ্যতা দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক শক্তি বৃদ্ধির প্রধানতম নিয়ামক হিসেবে কাজ করেছে। 

তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হলো বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রার সুফল সামাজিক পিরামিডের একেবারে পাটাতনে থাকা সবচেয়ে পিছিয়ে থাকা নাগরিকদের কাছে পৌঁছে দেয়ার ক্ষেত্রে সাফল্য। নীতি-নির্ধারকরা এদিকটিতে মনোনিবেশ করেছেন বলেই অতি-ধনীদের সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধির ফলে আয় বৈষম্য কিছুটা বাড়লেও ভোগ বৈষম্যকে নিয়ন্ত্রণে রাখা গেছে। আর এর ফলে দারিদ্র্য ও অতিদারিদ্র্য দ্রুত কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। এ শতাব্দির শুরুতে বাংলাদেশে দারিদ্র্য হার ছিল প্রায় ৪৯ শতাংশ এবং অতিদারিদ্র্য হার ছিল ৩৪ শতাংশ। দুই দশকের মধ্যে দারিদ্র্য হার অর্ধেকেরও বেশি কমিয়ে ২০ শতাংশের আশেপাশে এবং অতিদারিদ্র্য হার দুই-তৃতীয়াংশেরও বেশি কমিয়ে ১০ শতাংশের আশেপাশে আনা সম্ভব হয়েছে। তবে মহামারিজনিত অচলাবস্থার ফলে এ দুটি হার ইতোমধ্যে বেড়েছে। তবুও মহামারির আগে এ হারগুলো কমিয়ে আনার কৃতিত্ব সুবিচেনাপ্রসূত সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতিকেই দিতে হবে। এবং এর জোরেই দ্রুততম সময়ের মধ্যে দারিদ্র্য ও অতিদারিদ্র্য হ্রাসে আগের ধারাবাহিকতায় ফেরা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন নীতি নির্ধারক মহল। সমকালিন ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতা কতোটা দীর্ঘায়িত হয় তার ওপর এই আশাবাদের বাস্তবায়ন বহুলাংশে নির্ভরশীল। তবে পদ্মা সেতু, ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলসহ মেগা-অবকাঠামো প্রকল্পগুলো সময় মতো বাস্তবায়ন করা গেলে সামষ্টিক অর্থনৈতিক বিকাশ আরও গতিময় হবে। 

বাংলাদেশকে যে অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের পথেই হাঁটতে হবে তা আমাদের জাতির পিতা শুরুতেই স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন। ১৯৭২-এর ০৯ মে তিনি বলেছিলেন-“আমি কী চাই? আমি চাই বাংলার মানুষ পেট ভরে খাক। আমি কী চাই? আমার বাংলার বেকার কাজ পাক। আমি কী চাই? আমার বাংলার মানুষ সুখী হোক।” বঙ্গবন্ধুর মুখনিসৃত এ বাক্যগুলোর মাধ্যমে মুক্তির সংগ্রামে নিয়োজিত জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনের আকাক্সক্ষা যেভাবে প্রস্ফুটিত হয়েছে তা সম্ভবত আর কোথাও পাওয়া যাবে না। আজকে আমাদের সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। করোনা মহামারির ধাক্কা যখন সবে কাটিয়ে উঠতে শুরু করেছি, তখনই উদয় হয়েছে রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে মূল্য বৃদ্ধির চাপ। দেশের ভেতরেও কতিপয়তন্ত্র আর দূর্নীতি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়েছে। সর্বোপরি রয়েছে জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের পথনকশা বুকে ধারণ করে এ দেশবাসী বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বে এই চ্যালেঞ্জগুলোও মোকাবেলা করে দেশকে এগিয়ে নেবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

 

লেখক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু চেয়ার অধ্যাপক এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর।

Header Ad
Header Ad

ব্রাজিলের ভক্তদের ‘বানরের’ সঙ্গে তুলনা, নিষেধাজ্ঞার মুখে আর্জেন্টিনা

ছবি: সংগৃহীত

মনুমেন্টাল স্টেডিয়ামে সেদিন নাকানিচুবানি খেয়েছিল ব্রাজিল। বল দখল, গোলে শট কিংবা আক্রমণ—আর্জেন্টিনার বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচটিতে পেরে ওঠেনি সেলেসাওরা। ৪-১ ব্যবধানের বড় হারও এসেছিল। ওইদিনে ব্রাজিলের ভক্তদের সঙ্গে বিদ্বেষী ও বর্ণবাদমূলক আচরণ করেছিল আর্জেন্টাইনরা। সেই ঘটনার জল হয়ত গড়াতে যাচ্ছে বহুদূর!

মার্চের ২৫ তারিখের ওই ঘটনার জেরে নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে পারে আর্জেন্টিনার ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (এএফএ)। ব্রাজিলিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন (সিবিএফ) ফিফার মাধ্যমে এএফএকে শাস্তি দেওয়ার চেষ্টা করতে পারে। সিবিএফ ইতোমধ্যে প্রমাণসমূহ প্রস্তুত করেছে বলে জানিয়েছে আর্জেন্টাইন সংবাদ মাধ্যম টিওয়াইসি স্পোর্টস।

গণমাধ্যমটি সিবিএফ এর বরাতে জানিয়েছে, সেলেসাওদের একজন ভক্তকে একজন আর্জেন্টাইন দর্শক ‘বানরের’ সঙ্গে তুলনা করেছে। সেই ঘটনাটি ওই দর্শক রেকর্ড করেন। লিওনেল মেসিদের অ্যাসোসিয়েশনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে এটি হতে পারে বড় প্রমাণ। টিওয়াইসি জানিয়েছে, এমন ঘটনার মাঝ দিয়ে গেছে আরও বেশ কিছু ব্রাজিলিয়ান দর্শক।

জুনের প্রথম সপ্তাহে চিলি ও কলম্বিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে নামার আগেই ফিফার পক্ষ থেকে শাস্তি শুনতে পারে আর্জেন্টিনা। বারবার এমন বর্ণবাদী আচরণ হওয়ায় হয়ত ওই দুই ম্যাচে আর্জেন্টিনার দর্শকদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে। টিওয়াইসি জানিয়েছে, কলম্বিয়ার বিপক্ষে ঘরের মাঠের ম্যাচে দর্শকশূন্য রেখেই খেলতে হতে পারে মেসি-লাউতারোদের। যদিও এখনও আনুষ্ঠানিক কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি।

কদিন আগে ফিফার এমন শাস্তির মুখে পড়েছিল চিলি। ম্যাচ দেরিতে শুরু করার কারণে তাদের স্টেডিয়ামে দর্শকদের ৫০ শতাংশ ফাঁকা রাখতে নির্দেশ দিয়েছিল। দর্শকদের উগ্র আচরণের কারণে একই সমস্যায় পড়েছিল ব্রাজিল ও উরুগুয়ে।

তবে, ফিফা আপিল কমিটি শাস্তির মাত্রা ২৫ শতাংশে কমিয়ে এনেছে। একই সঙ্গে তারা জানিয়েছে, এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি হলে মাঠে দর্শকদের উপস্থিতির পরিমাণ আরও কমিয়ে আনা হবে।

Header Ad
Header Ad

নারীরা কেন বয়সে ছোট পুরুষের সঙ্গে প্রেমে জড়াচ্ছেন?

ছবি: সংগৃহীত

সম্পর্ক তৈরির বেলায় বয়স বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। তবে বর্তমান প্রজন্মের অনেকের কাছে বয়স বিশেষ গুরুত্ব বহন করে না। তাই আজকাল নিজের বয়সের চেয়ে কম বয়সের মানুষের সঙ্গে সম্পর্কে জড়াচ্ছেন তরুণ–তরুণীরা।

পুরুষের ক্ষেত্রে এমন সম্পর্ক সমাজে স্বাভাবিক হলেও নারীর ক্ষেত্রে নয়। তবে আজকাল অনেক নারীই সঙ্গী বাছাই করার সময় বয়সের ফারাককে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন না। তাই তাঁরা এখন প্রেমিক বা দাম্পত্যসঙ্গী হিসেবে বেছে নিচ্ছেন কম বয়সীদের। ডেটিং অ্যাপের ট্রেন্ড বলছে, নারীরা পছন্দের ক্ষেত্রে সুন্দর মন, ব্যক্তিগত সুরক্ষা, আত্মবিশ্বাসী সঙ্গীকে খুঁজে নিতে চান। যেকোনো সম্পর্কে ভারসাম্য ও গতিশীলতাকে গুরুত্ব দেন।

ডেটিং ট্রেন্ডে নারীরা

মনোবিদেরা মনে করেন, এখনকার নারীরা নিজেদের সম্পর্ক নিয়ে বেশ সচেতন। যেকোনো বিষয়কে সহজভাবে নিতে পারার মানসিকতা বেড়েছে, বিশেষত অগ্রসর বিশ্বে তাঁরা কোনো বিষয়ে ভীত নন। সম্পর্কে যুক্ত হওয়ার সময় আত্মবিশ্বাস ও আত্মসচেতনতায় গুরুত্ব দেন তাঁরা। ঐতিহ্যগতভাবে পুরুষকে একচেটিয়াভাবে সফল কিংবা শক্তিশালী হিসেবে মেনে নিতে তাঁরা নারাজ। সঙ্গীর প্রতি আনুগত্যের চেয়ে নারীরা নিজের সুখ ও সামগ্রিক মঙ্গলকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। এসব কারণেই অনেক নারী কম বয়সী পুরুষ সঙ্গীর সঙ্গে ডেটিং করছেন। অর্থাৎ ব্যক্তিগত পছন্দকেই গুরুত্ব দিচ্ছেন তাঁরা। কম বয়সী পুরুষ সঙ্গীর কাছ থেকে মানসিক, সামাজিক চাহিদাসহ অন্যান্য প্রয়োজনকে গুরুত্ব দিয়েই সম্পর্কে জড়াচ্ছেন।

নানা কারণে সম্পর্কে জড়ানোর সময় নারীরা কম বয়সীদের গুরুত্ব দেন

নিজের চেয়ে কম বয়সী পুরুষ সঙ্গীর সান্নিধ্যে আসায় নারীদের মধ্যে নিজেদের আরও তরুণ ভাবার একধরনের প্রবণতা তৈরি হয়েছে। কম বয়সী তরুণেরা নিজেদের সম্পর্কে সচেতন, নিজের স্বাস্থ্য ও রুচির বিষয়েও সজাগ। নতুন নতুন অভিজ্ঞতা কম বয়সীদের পৃথিবীকে নতুন করে জানার সুযোগ দেয়। এসব কারণে সম্পর্কে জড়ানোর সময় নারীরা কম বয়সীদের গুরুত্ব দেন। নারীরা এখন আগের চেয়ে বেশি অর্থনৈতিক ও সামাজিক স্বাধীনতার জন্য ছুটছেন। পারিবারিক বা সামাজিক নিরাপত্তার জন্য বয়স্ক সঙ্গী খোঁজার প্রথাগত নিয়মে তাঁরা আর বিশ্বাসী নন। ব্যক্তিগত পরিপূর্ণতা, মানসিক সংযোগ ও আকর্ষণকে অগ্রাধিকার দিতেই নিজের পছন্দের সঙ্গীকে বেছে নিচ্ছেন।

বয়স কোনো বিষয় না

বয়সের ব্যবধান সম্পর্কে এখন নারীদের সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি বেশ নমনীয়। তরুণদের তুলনায় নারীরা মধ্যবয়সীদের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ানোর আগে অনেক চিন্তা করছেন। মধ্যবয়সী বা সমবয়সীদের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ানোর ক্ষেত্রে সামাজিক রীতিনীতি বা লোকদেখানোর আচারকেই বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয় বলে মনে করেন নারীরা। সম্পর্ক নিয়ে পুরোনো সামাজিক নিয়মগুলোকে চ্যালেঞ্জ করতে চান তাঁরা।

Header Ad
Header Ad

জুলাই-মার্চ মাসে ৩০.২৫ বিলিয়ন ডলার পোশাক রফতানি করেছে বাংলাদেশ

ছবি: সংগৃহীত

চলতি অর্থবছরের (২৪-২৫) জুলাই-মার্চ মাসে তৈরি পোশাক রফতানি বেড়েছে ১০ দশমিক ৮৪ শতাংশ। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই-মার্চ মাসের দেশভিত্তিক রফতানি তথ্য থেকে বিষয়টি জানা গেছে।

জানা গেছে, এই সময়ে ৩০ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলার পোশাক রফতানি করেছে বাংলাদেশ। যা পোশাক খাতের স্থিতিস্থাপকতা এবং সম্ভাবনা তুলে ধরে বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।

তথ্য থেকে জানা যায়, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এখনো বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বাজার। বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের মোট রপ্তানির ৪৯ দশমিক ৮২ শতাংশই রফতানি হয় ইউরোপীয় ইউনিয়নে। যার মোট বাজার মূল্য ১৫ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার।

এরপরেই রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজার। এ বাজারে মোট রফতানি হয়েছে ৫ দশমিক ৭৪ বিলিয়ন ডলারের তৈরি পোশাক। যা মোট রফতানির ১৮ দশমিক ৯৭ শতাংশ। যেখানে কানাডার মোট বাজার অংশ ছিল ৯৬৩ দশমিক ৮৫ মিলিয়ন ডলার। যার বাজার অংশ ৩ দশমিক ১৯ শতাংশ। যুক্তরাজ্যের বাজারও গুরুত্বপূর্ণ ছিল, যার রফতানি মূল্য ৩ দশমিক ৩৬ বিলিয়ন ডলার। যা বাংলাদেশের মোট তৈরি পোশাক রফতানির ১১ দশমিক ১০ শতাংশ ।

প্রবৃদ্ধির দিক থেকে ইইউতে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রফতানি বছরের পর বছর ধরে উল্লেখযোগ্যভাবে ১১ দশমিক ৩১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। উল্লেখিত সময়ে যেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ১৭ দশমিক ২৩ শতাংশ এবং কানাডা ১৫ দশমিক ৬৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে, যুক্তরাজ্যে তৈরি পোশাক রফতানি ৪ দশমিক ১৪ শতাংশ এর একটি সামান্য প্রবৃদ্ধির হার প্রদর্শন করেছে।

ইইউর মধ্যে, জার্মানি একটি গুরুত্বপূর্ণ বাজার হিসেবে দাঁড়িয়েছে, যেখানে বাংলাদেশের রফতানির পরিমাণ ৩ দশমিক ৮০ বিলিয়ন ডলার, স্পেন ২ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলার, ফ্রান্স ১ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলার, ইতালি ১ দশমিক ১৭ বিলিয়ন ডলার, পোল্যান্ড ১ দশমিক ২৬ বিলিয়ন ডলার এবং নেদারল্যান্ডস ১ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলার।

প্রবৃদ্ধির হার বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য ছিল - জার্মানি (১০ দশমিক ৭২ শতাংশ), ফ্রান্স (১০ দশমিক ৭৫ শতাংশ), নেদারল্যান্ডস (২৩ দশমিক ১৫ শতাংশ), পোল্যান্ড (১০ দশমিক ৩২ শতাংশ), ডেনমার্ক (১২ দশমিক ৮০ শতাংশ) এবং সুইডেন (১৯ দশমিক ৯৬ শতাংশ) ।

বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতেও অপ্রচলিত বাজারে প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে, সামগ্রিকভাবে ৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। যেখানে মোট রফতানি ৫ দশমিক ১২ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, যা বাংলাদেশের মোট রফতানির ১৬ দশমিক ৯৩ শতাংশ দখল করেছে।

এই বাজারগুলোর মধ্যে, জাপান মোট ৯৬০ দশমিক ৪৫ মিলিয়ন ডলার আমদানি করে শীর্ষে রয়েছে, তারপরে অস্ট্রেলিয়া ৬৫৩ দশমিক ৬৪ মিলিয়ন ডলার এবং ভারত ৫৩৫ দশমিক ১৫ মিলিয়ন ডলার আমদানি করে।

তুরস্ক এবং মেক্সিকোর মতো দেশগুলোতেও উল্লেখযোগ্য রফতানি হয়েছে। তুরস্কে ৩৫৭ দশমিক ২২ মিলিয়ন ডলার এবং মেক্সিকোতে ২৫১ দশমিক ২২ মিলিয়ন ডলার, যা প্রশংসনীয়। উল্লেখিত সময়ে ভারতে ২০ দশমিক ৪৫ শতাংশ, জাপান ১০ দশমিক ০৬ শতাংশ, মেক্সিকো ২৩ দশমিক ৪৪ শতাংশ এবং তুরস্কের ৩২ দশমিক ৫৪ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

রিপোর্টে দেখা গেছে, এই সময়কালে জাপান, অস্ট্রেলিয়া, ভারত, তুরস্ক এবং মেক্সিকোতে প্রবৃদ্ধি ইতিবাচক থাকলেও রাশিয়া, কোরিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং মালয়েশিয়ায় রফতানি হ্রাস পেয়েছে।

সংযুক্ত আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া এবং কোরিয়ায় নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি এই বাজারগুলোতে আরও গুরুত্বসহকারে রফতানি বাজার দেখা দরকার।

নিটওয়্যার খাত মোট ১১ দশমিক ২২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি দেখিয়েছে। ওভেন সেক্টরেও ১০ দশমিক ৪০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে, যুক্তরাজ্যে প্রবৃদ্ধি ধীর হলেও অপ্রচলিত বাজারে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পয়েছে।

রফতানির চলমান প্রবৃদ্ধি উল্লেখযোগ্যভাবে ইইউ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপর নির্ভরশীল। যা বাংলাদেশের প্রধান বাজার হিসেবে অব্যাহত রয়েছে। যা এই ক্ষেত্রগুলির মধ্যে আরও সম্ভাবনার ইঙ্গিত দেয়।

বিজিএমইএ’র সাবেক পরিচালক, বাংলাদেশ অ্যাপারেল এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং ডেনিম এক্সপার্ট লিমিটেডের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, ‘এটি আমাদের মোট রপ্তানি প্রবৃদ্ধিতে প্রধান ঐতিহ্যবাহী বাজারের তাৎপর্য প্রদর্শন করে।’ তিনি আরও বলেন, অপ্রচলিত বাজারে মাঝারি প্রবৃদ্ধি এই বিভাগে আরও গবেষণা এবং মনোযোগের গুরুত্বকে তুলে ধরে, কারণ এর যথেষ্ট প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে, যা ঐতিহ্যবাহী বাজারের ওপর নির্ভরতা ভারসাম্য বজায় রাখতেও সাহায্য করবে।

রুবেল বলেন, স্থায়ী বৈশ্বিক বাণিজ্য উত্তেজনা ক্রমাগত বৈশ্বিক পরিবেশকে পুনর্গঠন করছে। এমন সুযোগ তৈরি করছে যা বাংলাদেশ সুবিধা নিতে পারে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

ব্রাজিলের ভক্তদের ‘বানরের’ সঙ্গে তুলনা, নিষেধাজ্ঞার মুখে আর্জেন্টিনা
নারীরা কেন বয়সে ছোট পুরুষের সঙ্গে প্রেমে জড়াচ্ছেন?
জুলাই-মার্চ মাসে ৩০.২৫ বিলিয়ন ডলার পোশাক রফতানি করেছে বাংলাদেশ
সংঘর্ষে উড়ে গেছে বাসের ছাদ, তবুও ১০ কিলোমিটার চালিয়ে ৬০ যাত্রীকে বাঁচালেন চালক
কোলের সন্তান বিক্রি করে অলংকার, মোবাইল কিনলেন মা
চুয়াডাঙ্গায় বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে দু’জন নিহত
ইয়েমেনের তেল বন্দরে মার্কিন বিমান হামলায় নিহত ৩৮
হবিগঞ্জে ট্রাক-পিকআপের মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত ৪
সৌদি আরব-মরক্কো থেকে ৪৬৬ কোটি টাকার সার কিনবে সরকার
গাইবান্ধায় মাদক মামলায় ৩ যুবকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের আহ্বান জানালেন প্রধান উপদেষ্টা
তোপের মুখে ওয়াক্‌ফ আইন স্থগিত করল ভারতের সুপ্রিম কোর্ট
নিজেকে বরিশাল সিটির মেয়র ঘোষণার দাবিতে মামলা করলেন ফয়জুল করীম
ভারতের সংখ্যালঘু মুসলিমদের ‘পূর্ণ নিরাপত্তা’ নিশ্চিতের আহ্বান বাংলাদেশের
টাঙ্গাইলে প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে কেন্দ্র সচিব ও পরীক্ষার্থীসহ আটক ৬
৭১ এর গণহত‍্যার জন‍্য ক্ষমা ও সম্পদ ফেরত দেয়া নিয়ে আলোচনায় সম্মত পাকিস্তান
এবার স্ত্রী রিয়া মনিকে তালাকের ঘোষণা দিলেন হিরো আলম
সাবেক এমপি বাহারের জমি-বাড়ি জব্দ, ২৯টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ
বাংলাদেশের সঙ্গে কোনো ধরণের বাণিজ্যযুদ্ধে জড়াতে চায় না ভারত
বিজ্ঞানীদের সফলতা: ইমপ্লান্ট নয়, নতুন করে গজাবে ক্ষয়ে যাওয়া দাঁত!