আগামীকাল বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়াবে, প্রত্যয় হেরাথের
মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে বাংলাদেশের পেসাররা যে এতোটা ভালো করবেন তা খেলার আগে কেউ ভুলেও ভাবেননি। সবার ভাবনাকে মিথ্যে প্রমান করে দিয়ে বাংলাদেশ টেস্ট জিতেছিল ৮ উইকেটে। এই জয়ে সবার আশার বেলুন অনেক ফুলে-ফেপে উঠে। ক্রাইস্টচার্চে দ্বিতীয় টেস্টেও নিউ জিল্যান্ডকে উড়িয়ে দেওয়ার স্বপ্ন দেখা শুরু হয়। কিন্তু এবারও সবার ধারনা ভুল প্রমাণ করলেন পেসাররা।
এবার তারা কোনো কিছুই করতে পারেননি। প্রথম টেস্টের প্রথম দিন যেখানে ৫ উইকেট নিয়ে রান দিয়েছিলেন ২৫৮, সেখানে ক্রাইস্টর্চাচ টেস্টে প্রথম দিন উইকেট নিতে পেরেছেন মাত্র একটি। আর নিউ জিল্যান্ড রান তুলেছে ৩৪৯। ডাবল সেঞ্চুরি করার পথে দলপতি টম লাথাম। সেঞ্চুরি করা থেকে ১ রান কম আছেন আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান ডেভন কনওয়ে। উইকেটে আসা অপর ব্যাটার ওপেনার উইল ইয়াংও (৫৪) করেছেন হাফ সেঞ্চুরি।
ব্যাটিংয়ে এ রকম দৃশ্য যখন প্রদর্শীত হয়, তখন বুঝাই যায় বলাদের ওপর দিকে কী ঝড়ই বয়ে গেছে। প্রথম টেস্টের জয়ের নায়ক এবাদত হোসেন, রান দেয়ার সেঞ্চুরি করেছেন। ২১ ওভারে ১১৪ রান দিয়েছেন তিনি। নেই কোনো উইকেট। ওভার প্রতি রান ৫.৪২। টেস্ট ক্রিকেটের হিসেবে অনেক বেহিসেবি বোালিং। সেঞ্চুরি ছুঁই ছুঁই করছেন মেহেদী হাসান মিরাজও। ২৫ ওভারে ৯৫ রান দিয়ে তিনিও উইকেট শুন্য। তাসকিন আহমেদ কোনো উইকেট না পেলেও কিছুটা সমীহ আদায় করে নিতে পেরেছেন। ৩.০৯ গড়ে ২২ ওভারে রান দিয়েছেন ৬৮। সব দিক দিয়ে সফল ছিলেন শরিফুল। তা যেমন উইকেট পাওয়ার দিকে, তেমনি ওভার প্রতি রান দেওয়ার ক্ষেত্রেও। ১৮ ওভারে ৫০ রান দিয়ে তিনি দিনের একমাত্র উইকেট উইল ইয়াংকে সাজ ঘরে পাঠান। পয়েন্টে দাঁড়িয়ে তার অভিষেকে ক্যাচ ধরে নাম লেখান মোহাম্মদ নাঈম শেখ।
প্রথম টেস্টে দলপতি মুমিনুল হাত ঘুরিয়ে এক উইকেট তুলে নিয়েছিলেন। আজ আর তিনি বোলিং করেননি। তবে নাজমুল হোসেন শান্তকে দিয়ে জুয়া খেলতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সফল হতে পারেননি। শান্ত ৪ ওভারে ১৫ রান দেন।
সবুজ ঘাসের উইকেটে বাংলাদেশের বোলারদের এমন নখদন্তহীন বোলিং ছিল বিষ্ময় জাগানো! দেখে মনে হয়েছে খুবই সাধারণ মানের বোলিং। প্রথম টেস্টের সাথে দ্বিতীয় টেস্টের বিস্তার ফারাক। দ্বিতীয় টেস্টে যেখানে টস জয়টা ছিল পরম আরাধ্য। সেখানে বোলারদের হাতে বল তুলে দিয়ে কী সাজাই না পাচ্ছে দল। কিন্তু দলের স্পিন বোলিং কোচ রঙ্গাণা হেরাথ বোলারদের পক্ষেই অবস্থান নিয়েছেন। তার মতে নিউ জিল্যান্ডের ব্যাটসম্যানরা অতিমাত্রায় ভালো ব্যাটিং করেছেন। যে কারণে বাংলাদেশের বোলাররা কিছুই করতে পারেননি। তিনি বলেন, 'আজকের দিনটি আমাদের ছিল না। নিউ জিল্যান্ডের ব্যাটসম্যানরা দারুণ ব্যাটিং করেছেন। বিশেষ করে লাথাম ও কনওয়ে। তাদের কৃতিত্ব দিতেই হবে।’
আজ বোলাররা ভালো করতে না পারলেও আগামীকাল ঠিকই ঘুরে দাঁড়াবে বলে বিশ্বাস হেরাথের। তিনি বলেন, 'না পেসার, না স্পিনার, বাংলাদেশের বোলারদের কোনো ঘাটতি ছিল না। পেসাররা শতভাগ নিজেদের সেরাটা দিয়েই বোলিং করেছে। স্পিনাররাও তাই করেছে। আমি মনে করে আগামীকাল বাংলাদেশের বোলাররা ঠিকই ঘুরে দাঁড়াবে। নিজেদের সেরাটা মেলে ধরবে।'
এমপি/কেএফ/