আজ 'টেডি ডে' - প্রিয়জনকে টেডি উপহার দেওয়ার দিন
![](https://admin.dhakaprokash24.com/logo/placeholder.jpg)
টেডি বিয়ার। ছবি: সংগৃহীত
বিশ্বজুড়ে 'ভ্যালেন্টাইন সপ্তাহ' পালিত হচ্ছে এবং এর মধ্যে ১০ ফেব্রুয়ারি দিনটি 'টেডি ডে' হিসেবে পরিচিত। এই দিনটি বিশেষভাবে প্রেম, আদর ও ভালবাসার প্রতীক টেডি বিয়ার উপহার দেওয়ার দিন হিসেবে উদযাপিত হয়।
ছোট্ট, আদুরে চেহারার এই টেডি বিয়ার যে কতো মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছে, তা বলা মুশকিল। প্রেমের প্রস্তাব থেকে শুরু করে মান-অভিমান ভাঙানোর জন্য, এমনকি শিশুদের প্রিয় খেলনা হিসেবেও টেডি বিয়ার অনন্য।
![](https://admin.dhakaprokash24.com/media/content/images/2025February/teddy-day1-dhakaprokash-20250210130159.jpg)
টেডি বিয়ারের ইতিহাস:
টেডি বিয়ারের পেছনে রয়েছে একটি হৃদয়স্পর্শী ইতিহাস, যা যুক্ত রয়েছে আমেরিকার ২৬তম প্রেসিডেন্ট থিওডোর রুজভেল্টের সঙ্গে। ১৯০২ সালের নভেম্বর মাসে মিসিসিপির গভর্নরের আমন্ত্রণে জঙ্গলে ভাল্লুক শিকার করতে যান প্রেসিডেন্ট থিওডোর রুজভেল্ট। সারাদিন চেষ্টা সত্ত্বেও, তিনি কোনো ভাল্লুক শিকার করতে সক্ষম হননি। কিন্তু তার সঙ্গীরা কিছু ভাল্লুক শিকার করতে সক্ষম হয় এবং পরবর্তীতে এক বাচ্চা কালো আমেরিকান ভাল্লুককে ধরতে সক্ষম হন।
সেখানে, প্রেসিডেন্ট রুজভেল্টকে বললে, ওই ভাল্লুকটিকে গুলি করে মেরে ফেলতে। কিন্তু রুজভেল্ট, পশুপ্রেমী হিসেবে, ছোট্ট বাচ্চা ভাল্লুকটিকে হত্যা করতে অস্বীকৃতি জানান। তার এই মানবিক সিদ্ধান্তটি আমেরিকান সমাজে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। সংবাদমাধ্যমগুলোতে ওই ঘটনার খবর এবং একটি কার্টুন ছাপানো হয়, যা খুব দ্রুতই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
এই কার্টুনটি দেখে আমেরিকার একটি খেলনা কোম্পানির মালিক, মরিস মিকটম এবং তার স্ত্রী, 'আইডিয়াল নভেলটি অ্যান্ড টয় কোম্পানি' প্রথম তৈরি করেন টেডি বিয়ার, যা খুব দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
টেডি বিয়ার এবং তার প্রতীকী গুরুত্ব:
টেডি বিয়ার শুধু একটি সাধারণ খেলনা নয়, এটি একটি প্রেম, মায়া ও যত্নের প্রতীক। প্রথম দিকে এই ছোট্ট ভাল্লুকটি ছিল শিশুদের প্রিয় খেলনা, কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এটি প্রেমিক-প্রেমিকার মধ্যে ভালোবাসার এক অমূল্য উপহার হয়ে ওঠে। ২০ শতকের শুরুতে জন্ম নেওয়া এই ছোট্ট পুতুলটি আজকের দিনে, শতাব্দী পরিক্রমা করেও মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছে।
প্রতিটি 'টেডি ডে' আমাদের মনে করিয়ে দেয় সেসব ছোট ছোট ভালবাসার মুহূর্তের কথা, যা রুজভেল্টের মানবিকতা ও তার শিকার না করার সিদ্ধান্তের মতো হৃদয়গ্রাহী। আজকের দিনে, বিশ্বের নানা প্রান্তে টেডি বিয়ার মিউজিয়াম গড়ে উঠেছে এবং বিভিন্ন সিনেমা, বই, ও নাটকে এটি বিশাল স্থান অধিকার করেছে।
বিভিন্ন রঙ ও আকারে আজকের টেডি বিয়ার:
আজকাল টেডি বিয়ারের রঙ ও আকারের ভিন্নতা দেখা যায়। বিভিন্ন ডিজাইন, আকার, রঙ এবং চেহারায় টেডি বিয়ারটি তৈরি করা হয়, যা মানুষের বিভিন্ন ইচ্ছা ও আবেগের প্রতিফলন। তবে, এর মূল সৌন্দর্য ও আবেদন হারায়নি। শিশুদের কাছে এটি একটি সঙ্গী, প্রেমিকাদের কাছে একটি ভালোবাসার নিদর্শন, এবং ভ্যালেন্টাইন ডে কিংবা টেডি ডে-তে এটি হয়ে ওঠে একটি বিশেষ উপহার, যা অনুভূতি ও সম্পর্কের গভীরতা তুলে ধরে।
বিশ্বজুড়ে এই টেডি বিয়ার এখন শুধু একটি খেলনা নয়, একটি ভালোবাসার চিরন্তন প্রতীক।
![Header Ad](https://admin.dhakaprokash24.com/images/single-post-anniversary.jpeg)