বিশ্বকাপে ব্যবহৃত ফুটবলেও প্রযুক্তি!
বৈশ্বিক খেলাগুলোর খনি থেকে স্বর্ণাহরণ শুরু হয়ে গিয়েছে। কোটি কোটি মানুষ টিভি সেটের রিমোট ঘোরাচ্ছেন খেলাগুলোর সঙ্গে তাল মিলিয়ে, তাদের সবার জীবনযাপনই বদলে গিয়েছে।
যোদ্ধা দেশগুলো আয়োজক কাতারের রাজধানীতে একটি মনোযোগ আকর্ষণকে সঙ্গে নিয়ে এসেছেন-কদর্যতালিগুলোর বিষয়ে ভক্তরা অভিযোগ করবেন। স্টেডিয়ামগুলোর কর্মকতারা আরও আশা করছেন, কমিয়ে ফেলতে পারবেন চিৎকারগুলো।
সরকারি কর্মকর্তাদের মাথায় আছে সবার ওপরে জননিরাপত্তা প্রদান। কলঙ্কগুলো এবং মানবাধিকার লংঘন ছড়িয়ে ফেলার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রযুক্তি এর প্রতিটির সমাধান করে ফেলতে পারবে না। তবে এই সুবিধা উত্তরগুলোর অংশ হচ্ছে। কর্মকর্তারা অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও প্রযুক্তিব্যবস্থাগুলোর ওপর নির্ভর করছেন এই খেলাটির প্রায় সর্বক্ষেত্রে, মাঠে ফুটবলটি চালু করা থেকে হাজার, হাজার ক্যামেরাগুলো ভক্তদের অনুসরণও করে চলেছে।
খেলোয়াড়দেরও প্রায় প্রতিটি নাড়াচাড়া অনুসরণ করছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ‘সেন্সরযুক্ত ফুটবল’। ফিফা-কাতার বিশ্বকাপ ফুটবল টুনামেন্টের আনুষ্ঠানিক ম্যাচ বলগুলো তৈরি করেছে বিশ্বখ্যাত ক্রীড়া সামগ্রী প্রস্তুত প্রতিষ্ঠান ‘এডিডাস’। বলগুলোর প্রতিটির ভেতরেই ‘মোশন সেন্সর’ আছে। এই সেন্সরটি সুনির্দিষ্ট অবস্থানের তথ্যাদি প্রদান করছে প্রতি সেকেন্ডে ৫শ বার, জানিয়েছে অ্যাডিডাস।
ফলে তারা রেফারিদের সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্তগুলো প্রদানের ক্ষেত্রে অত্যন্ত সহযোগিতা করছে। এই সেন্সর ফাইলযুক্ত বল এর আগে কয়েকটি নামকরা ফুটবল প্রতিযোগিতায় পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে প্রধান প্রতিযোগিতাতে পৌঁছেছে। তারা ব্যবহার হয়েছে ২০২১ সালের ফিফা ক্লাব কাপ ওয়াল্র্ড কাপেও। কোনো বলই কোনো খেলোয়াড়ের পারফরমেন্সে কোনো ধরণের প্রতিবন্ধকতা করেনি, জানিয়েছে অ্যাডিডাস।
সেন্সরযুক্ত বলগুলো বিশ্বকাপের মোট ৬৪টি ম্যাচের প্রতিটিতে ব্যবহার করা হচ্ছে। প্রতিটি বল তথ্য প্রদান করছে নার্ভ সেন্টারে। সেগুলোর মাধ্যমে ফিফার কর্মকর্তারা তথ্যগুলোকে ট্র্যাক করতে পারছেন ও পুরো খেলাকে মনিটর করা সম্ভব হচ্ছে একটি বলের মাধ্যমে। তবে এই বিশ্বকাপে ‘ভিডিও অ্যাসিসট্যান্ট রেফারিস’ মাধ্যমে রেফারিদের সিদ্ধান্ত ও খেলোয়াড়দের সমস্যা এবং বিতর্কগুলোকে একেবারেই কমিয়ে ফেলতে চেষ্টা করছেন।
তারা অ্যালগারিদমগুলো ও ডাটা পয়েন্টগুলোর মাধ্যমে মাঠের রেফারিদের নির্দিষ্ট ও সঠিক সিদ্ধান্ত প্রদানে সাহায্য করছেন বলে জানিয়েছেন ফিফার কর্মকর্তারা। টেস্ট হিসেবে এর আগের রাশিয়া বিশ্বকাপে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। এই বছরের খেলাগুলোর জন্য তাদের এভাবেই প্রযুক্তিগত সহায়তা বাড়ানো হয়েছে। এই ব্যবস্থা ট্র্যাকিং ক্যামেরাগুলোকে রিলে করছে মাঠের মাটির নিচে স্থাপিত হয়ে।
ট্র্যাকিং ক্যামেরাগুলোই সেন্সর ফাইল বলটিকে অনুসরণ করে চলেছে। ই ডাটা পয়েন্ট ট্র্যাক করে চলেছে খেলোয়াড়দের অঙ্গপ্রত্যঙ্গগুলোকে এবং বলের অবস্থানকে, সেগুলো একটি আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স সিস্টেমসকে তথ্যগুলো প্রদান করছে। তাতে রেফারিদের সুনির্দিষ্টভাবে পেনাল্টিগুলো প্রদানে সাহায্য করা সম্ভব হচ্ছে। আরও প্রদান করা সম্ভব হচ্ছে কে অফসাইডে রয়েছেন।
এ ছাড়া, ভিডিও স্লোমোশনের মাধ্যমে স্থাপিত টিভিতে রেফারিরা যেতে পারছেন। তীক্ষ্ম একটি অ্যালার্ট ব্যবস্থা ম্যাচের কর্মকতাদের একটি ভিডিও অপারেশন রুমে স্থাপিত আছে। সেটিও যেকোনো অঘটনের জন্য প্রস্তুত। আবার রেফারিদের আগেই সমস্যাটি জানিয়ে দিচ্ছে। তারা আবার রেফারিকে জানাচ্ছেন প্রযুক্তিগতভাবে।
ওএফএস/