বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ৬ ফাল্গুন ১৪৩১
Dhaka Prokash

‘গরু-খাসি তো আগেই বাদ, এখন মুরগিও কিনতে পারব না’

‘দেশে কি দুর্ভিক্ষ লেগে গেছে। যে যার মতো দাম নিচ্ছে। কয়েক দিন আগে যে মুরগি ১৬০ টাকা কেজি কিনেছি। বর্তমানে তা ২৩০ টাকা। তাহলে আমরা খাব কী? গরু, খাসিতো ঈদ ছাড়া চোখে দেখি না। এখন তো দেখছি মুরগিও কিনতে পারব না।’

মোহাম্মদপুরের স্বপ্নধারা হাউজিংয়ের বাসিন্ধা রিকশাচালক আবুল কালাম বাজারে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির ব্যাপারে এমন করেই নিজের হতাশা প্রকাশ করছিলেন।

বাংলামটরের বাসিন্ধা এন্তাজ উদ্দিন। সদ্য অবসরে যাওয়া একজন। তার ভাষ্য অনুযায়ী, ১৪০ টাকার মুরগি আজকে (সোমবার, ২০ ফেব্রুয়ারি) ২২০ টাকা কেজি কিনতে হলো। খুবই খারাপ অবস্থা। দাম বেড়ে যাওয়ায় কেনাও কমিয়ে দিয়েছেন জানিয়ে এন্তাজ বলেন, ‘আগের মতো কিনতে পারি না। আগে প্রতি সপ্তাহে ৫/৬ কেজি কিনতাম। এখন অর্ধেক হয়ে গেছে। জীবনে কখনো এত দাম বৃদ্ধি দেখিনি। এই দাম থাকলে তো আমার মতো ক্রেতারা নিরুপায়। হাত পা বাঁধা। কী করব।’

শুধু এন্তাজ উদ্দিনিই নয়, এই অবস্থা তার মতো আরও বহু পরিবারের। ব্রয়লার মুরগির দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় এই আমিষও চলে যাচ্ছে সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে।

বিভিন্ন পর্যায়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, খামার পর্যায়ে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা। রাজধানীর কাপ্তান বাজারে পাইকারি পর্যায়ে এসে সেই মুরগির দাম কেজিতে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ২০০ থেকে ২০৫ টাকা। আর খুচরা পর্যায়ে রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৩০ টাকা। অর্থাৎ সাধারণ ক্রেতাদের হাতে যেতে যেতে প্রতি কেজি মুরগিতে দাম বেড়েছে ৬০ টাকা।

অপরদিকে, সোনালি মুরগি হিসেবে পরিচিত কক মুরগি খামার পর্যায়ে বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ২৭০ টাকা। পাইকারি পর্যায়ে ১০ টাকা বেড়ে ২৮০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু খুচরা পর্যায়ে ক্রেতাদেরকে কিনতে হচ্ছে ৩৪০ টাকায়। অর্থাৎ পাইকারি থেকে খুচরা পর্যায়ে ভোক্তাদের গুণতে হচ্ছে কেজিতে ৭০ টাকা বেশি।

ব্রয়লার ও সোনালী মুরগির দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের বাইরে চলে গেছে মুরগির মাংস। গরু ও খাসির মাংস তো আগেই সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে। এখন মধ্যবিত্তের শেষ অবলম্বন মুরগির মাংসও হাতছাড়া।

গত কয়েকদিন ধরেই ব্রয়লার মুরগির বাজার নিয়ন্ত্রণহীন। দাম বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। পাইকারি থেকে খুচরা সব পর্যায়ে বিক্রেতারা ইচ্ছামত দাম আদায় করছে। কিন্তু কেউ দায় নিতে চাচ্ছে না। খামার থেকে শুরু করে রাজধানীর আড়ত, পাইকারি ও খুচরা বাজার ঘুরে এবং সাধারণ ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে মুরগির বাজারের অস্থিরতার এমন চিত্র পাওয়া গেছে।

সারা দেশের খামারগুলোতে মুরগির বাচ্চা বিক্রি করে কাজী ফার্মস, প্যারাগন, নারিশসহ অসংখ্য কোম্পানি। খামারিরা সেই বাচ্চা বড় করে কেজি দরে বিক্রি করে। আগে ১৪০ থেকে ১৬০ টাকায় প্রতি কেজি মুরগি বিক্রি হলেও এখন সেই দামে আর পাওয়া যাচ্ছে না।

ব্রিডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-এর জেনারেল সেক্রেটারি মাহবুবুর রহমান ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, আমরা সারা দেশে ব্রয়লার মুরগির বাচ্চা বিক্রি করে থাকি। খামারিরা তা বড় করে বিক্রি করে। আগে ফার্মে ১৫০ থেকে ১৬০ কেজি ব্রয়লার বিক্রি করা হলেও বিভিন্ন কারণে দাম বেড়ে বর্তমানে ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। পাইকারিতে তা ১৯০ টাকা কেজি। তবে এলাকা ভেদে একটু হেরফের হতে পারে।

খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি মুরগি কেন ২৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা অন্যায্য, অযৌক্তিক। এটা হতে পারে না। সরকারকে তা দেখা দরকার। কারণ, একদিকে করোনার পর উৎপাদন কমে গেছে। অনেক খামার বন্ধ হয়ে গেছে। আগে প্রতিদিন এক কোটি ৬০ লাখ মুরগি উৎপাদন হলেও বর্তমানে সেই উৎপাদন কমে এসেছে এক কোটি ২০ লাখে। অন্যদিকে, খুচরা বিক্রেতারা অনেক বেশি দামে বিক্রি করছে। এভাবে চলতে থাকলে এই নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্য কেনা মানুষ বন্ধ করে দেবে। যেমনটা গরু ও খাসির মাংস বন্ধ হয়ে গেছে। তখন নতুন প্রজন্ম আমিষহীন হয়ে পড়বে।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সোনালি মুরগি আমাদের সংগঠনের বাইরের হিসেব। তারপরও সংগঠন থেকে একটা মূল্য তালিকা করা হয়। সেখানে দেখা যায় গাজীপুরসহ বিভিন্ন জেলাতে পাইকারি পর্যায়ে সোনালি মুরগি ২৭০ থেকে ২৮০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে।

রাজধানীর কারওয়ান বাজার কিচেন মার্কেটের আদর্শ চিকেন হাউজের ম্যানেজার সেরাজুল ইসলাম জানান, সোনালি মুরগি (পাকিস্তানি) ৩৩০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। এটা ১৫ দিন আগে ২৮০ টাকা কেজি বিক্রি করা হয়েছে। ১০-১৫ দিন থেকে দাম বেশি। বেশির ভাগ নরসিংদী থেকে আনা। তিনি জানান, সোনালি মুরগি ২৮০ টাকা কেজি দরে কেনা। কাপ্তান বাজারে নগদে কিনতে হয়, আবার দামও বেশি। তাই অন্য জায়গা থেকে বাকিতে আনা হয়। আর ব্রয়লার মুরগি কেনা হয় ২১০ থেকে ২১২ টাকা কেজি। বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৩০ টাকায়। পার্থক্য ৩০ থেকে ৫০ টাকা।

এতবেশি লাভ কেন জানতে চাইলে সেরাজুল বলেন, খরচ আছে না। বর্তমানে ব্রয়লারে ১০ টাকা, আর অন্যটাতে ২০ টাকা লাভ হয়। তারপরও আগের চেয়ে এই লাভ কম। কারণ আগে কেজিতে ২০ থেকে ২৫ টাকা লাভ হতো। মূল্য তালিকায় ব্রয়লার ২৩০ টাকা, পরিচিত হলে ১০ টাকা কমিয়ে ২২০ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে। যারা দাম করে না বা কম নেয় এমন ক্রেতাদের কাছে তালিকা অনুযায়ী দাম নেওয়া হয়।

কারওয়ানবাজারের ব্রাদার্স চিকেনের ম্যানেজার মো. হাসান ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, রহিম, আনোয়ার ও ব্রাদার্স পোল্ট্রি হাউজ বিভিন্ন জায়গা থেকে মুরগি নিয়ে আসে। পোল্ট্রি বিক্রি করা হচ্ছে ২৩০ টাকা কেজি। ১০ থেকে ১২ দিন থেকেই এই বাড়তি দাম।

কেনা কত করে জানতে চাইলে তিনি বলেন, জানি না। মহাজন কামাল জানে। আমার কেনা দাম জানা নেই। মহাজন শুধু বিক্রির কথা জানায়। বাড়তি দামের ব্যাপারে হাসান আরও বলেন, অর্ডার বেশি, কিন্তু মাল কম। তাই দাম বেশি।

একই বাজারের মুরগি ব্যবসায়ী সুমন বলেনমুরগির দাম বেড়ে যাওয়ায় বিক্রি কমে গেছে। আগে যে ৫ কেজি কিনত, এখন আড়াই কেজি কিনছে। বিক্রি অর্ধেকে নেমে গেছে।

দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, রমজান, শব-ই বরাত ঘনিয়ে আসছে। এ ছাড়া, বিয়ে শাদী, বিভিন্ন উৎসব বেশি হচ্ছে। চাহিদা বাড়ছে। তাই দাম আরও বাড়তে পারে। তবে ৫ থেকে ১০ রোজা পর্যন্ত দাম আবার কমবে। কারণ ওই সময়ে চাহিদা কমে যাবে।

কারওয়ানজাবারে কথা হয় একাধিক ক্রেতার সঙ্গে বিশ্বব্যাংকে কর্মরত রাফাত নামে এক ক্রেতা বলেন, আগে দেশি মুরগি কিনেছি ৫০০ টাকা কেজি। আজ কিনলাম ৫২০ টাকায়।

তিনি আরও বলেন, দাম বেড়ে যাওয়ায় কেনাও কমিয়ে দিয়েছি। আগে সপ্তাহে একসঙ্গে ১২টা কিনলেও এখন কিনছি অর্ধেক। তিনি আরও বলেন, বিক্রেতারা চালাকি করে পাকিস্তানিটা দেশি বলে চালিয়ে দিচ্ছে। ধরা খুব মুসকিল। এতে তারা আরও বেশি করে লাভ করছে।

দনিয়া থেকে আসা বাহাউদ্দিন নামে এক ক্রেতা বলেন, মুরগি কেনা অর্ধেকে নামিয়ে দিয়েছি। আগে ৭ থেকে ৮টা কিনতাম। এখন তিনটা কিনলাম। এত দাম কী করব। উপায় নেই। আয় বুঝে ব্যয় করতে হচ্ছে।

মোহাম্মদপুরের কৃষিমার্কেট ও টাউনহল বাজারেও দেখা গেছে একই চিত্র। বিক্রেতারা বেশি দামে কেনার কথা বললেও বাস্তবে দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। বিভিন্ন ফার্ম থেকে কম দামেই বিক্রি করা হচ্ছে পোল্ট্রি, সোনালি ও লাল এবং দেশি মুরগি।

মনির হোসেন নামে এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী বলেন, ‘মুরগির দাম তো বাড়ছেই। বেশি দাম হওয়ায় কেনা কঠিন হয়ে গেছে। এখন খাওয়া কমিয়ে দিতে হচ্ছে। কারণ, আয় তো আর বাড়েনি। তাই আগের আয়ে আগের মতো মুরগি কেনা সম্ভব না।’

ভোক্তা আইনে সব পণ্যের ক্রয় ও বিক্রয় মূল্য তালিকা দৃশ্যমান স্থানে টাঙিয়ে রাখার নিয়ম থাকলেও মুরগি ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। তারা শুধু বিক্রয় মুল্যের তালিকা দোকানে ঝুলিয়ে রেখেছেন। কিন্ত কতো দামে কেনা তা লিখেন না।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, সব জায়গায় পণ্যের ক্রয়-বিক্রয় মূল্য তালিকা প্রকাশ করতে হবে। পোল্ট্রি শিল্প প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতায়। তাই এটা নিয়ে অতো কাজ করা হয়নি। তবে ফার্ম থেকে পাইকারি ও খুচরা মূল্যের এত বেশি ফারাক হতে পারে না। এটা নিয়ে কাজ করতে হবে। এর আগে প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়কে এটা দেখা দরকার। কারণ, মুরগির এমআরপি তো দেওয়া হয় না। কে কত লাভ করতে পারবে এটা তাদের বলা ও দেখা দরকার। এরপর কেউ বেশি দাম নিলে আমরা তখন ধরতে পারব।

এনএইচবি/এমএমএ/

Header Ad
Header Ad

অবশেষে সরিয়ে দেওয়া হলো মাউশির বিতর্কিত ডিজিকে

অধ্যাপক ড. এহতেসাম উল হক ও মাউশির লোগো। ছবি: সংগৃহীত

শিক্ষক নেতাদের আন্দোলন ও গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক (ডিজি) পদ থেকে অধ্যাপক ড. এহতেসাম উল হককে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি শিক্ষা ক্যাডারের ১৪তম বিসিএসের কর্মকর্তা এবং পটুয়াখালী সরকারি কলেজের অধ্যাপক ছিলেন।

বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সম্প্রতি তার বিতর্কিত কার্যক্রম নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর তাকে ওএসডি (বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) করে মাউশিতে সংযুক্ত করা হয়েছে। এদিকে, নতুন মহাপরিচালক হিসেবে অধ্যাপক মুহাম্মদ আজাদ খানকে চলতি দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উপসচিব মো. মাহবুব আলম স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে, অধ্যাপক মুহাম্মদ আজাদ খানের এই দায়িত্ব কেবল সাময়িক, যা পদোন্নতি হিসেবে গণ্য হবে না। পরবর্তীতে নিয়মিত নিয়োগের মাধ্যমে মহাপরিচালক নিয়োগ হলে এই চলতি দায়িত্ব বাতিল হয়ে যাবে।

অধ্যাপক এহতেসাম উল হকের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। এর আগে তিনি বরিশাল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ থাকাকালীন শিক্ষার্থীদের ওপর নিপীড়ন চালানোর অভিযোগে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন। অভিযোগ রয়েছে, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের তথ্য তিনি পুলিশের কাছে সরবরাহ করেছিলেন।

২০২৩ সালের ৫ আগস্ট তার অপসারণের দাবিতে কলেজের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করে। দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার ও অসদাচরণের অভিযোগ তুলে তার অপসারণের দাবি জানায় শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ২০২১ সালের জুন মাসে বরিশাল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজে যোগদানের পর থেকে তিনি নানা অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতা চালিয়ে যান। তিনি বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের তৎকালীন মেয়র এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আত্মীয় সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর ঘনিষ্ঠ ছিলেন।

অভিযোগ রয়েছে, অধ্যক্ষ থাকাকালীন তিনি শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করতেন এবং আন্দোলনে অসহযোগিতা করতেন। এমনকি কলেজের গাড়ি ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করতেন, যা তার শ্বশুরবাড়ির লোকজনও ব্যবহার করতেন। তিনি কলেজের বিদ্যুৎ ব্যবহার করে নিজের বাসায় গ্রিল নির্মাণসহ অন্যান্য কাজ করিয়েছেন। কেউ প্রতিবাদ করলে চাকরি খেয়ে ফেলার হুমকি দিতেন এবং বার্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদন (এসিআর) খারাপ করে দেওয়ার ভয় দেখাতেন। এছাড়া, চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক ও কর্মচারীদের বেতন না দিয়ে বিদায় করে দেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

ডিজি পদ থেকে এহতেসাম উল হককে অপসারণের খবরে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তাদের মতে, একজন বিতর্কিত ব্যক্তি শিক্ষাখাতের এত বড় দায়িত্বে থাকতে পারেন না। তার অপসারণের মাধ্যমে প্রশাসনের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার প্রতি সরকারের সদিচ্ছার প্রতিফলন ঘটেছে।

Header Ad
Header Ad

২০১৮ সালের নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করা ৩৩ ডিসি ওএসডি

ছবি: সংগৃহীত

২০১৮ সালের বিতর্কিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করা ৩৩ জন জেলা প্রশাসককে (ডিসি) বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়েছে। বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত ছয়টি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বিতর্কিত নির্বাচনে জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালনের কারণে এই কর্মকর্তাদের ওএসডি করা হয়েছে। এর আগে একই কারণে আরও ১২ জন কর্মকর্তাকে ওএসডি করা হয়েছিল।

ওএসডি হওয়া কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের পরিচালক (যুগ্মসচিব) কবীর মাহমুদ, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পরিচালক (যুগ্মসচিব) মো. মাহমুদুল আলম, কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের আঞ্চলিক পরিচালক (যুগ্মসচিব) মো. আবুল ফজল মীর, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের সদস্য-পরিচালক (যুগ্মসচিব) মঈনউল ইসলাম, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য (যুগ্মসচিব) মো. ওয়াহিদুজ্জামান, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব (সংযুক্ত) এ কে এম মামুনুর রশিদ এবং বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (বাপবিবো) সদস্য (যুগ্মসচিব) ড. কে এম কামরুজ্জামান সেলিম।

এছাড়া তালিকায় রয়েছেন নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব কাজী আবু তাহের, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) সদস্য (যুগ্মসচিব) মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্মসচিব (সংযুক্ত) আনার কলি মাহবুব, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের সদস্য (যুগ্মসচিব) সৈয়দা ফারহানা কাউনাইন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের পরিচালক মো. মতিউল ইসলাম চৌধুরী, কৃষি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব সাবিনা ইয়াসমিন, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আতাউল গনি এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব (সংযুক্ত) আবু আলী মো. সাজ্জাদ হোসেন।

এছাড়া, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব এ জেড এম নুরুল হক, বাংলাদেশ রাবার বোর্ডের পরিচালক (যুগ্ম-সচিব) এস এম আজিয়র রহমান, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের সচিব (যুগ্ম-সচিব) মো. মাসুদ আলম সিদ্দিক এবং সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের যুগ্ম-সচিব গোপাল চন্দ্র দাশসহ আরও বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা রয়েছেন।

প্রসঙ্গত, বিতর্কিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকেই ওই সময়ের রিটার্নিং কর্মকর্তাদের ভূমিকা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়। এবার সেই নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করা কর্মকর্তাদের পর্যায়ক্রমে ওএসডি করা হচ্ছে বলে মনে করছেন প্রশাসনিক বিশ্লেষকরা।

Header Ad
Header Ad

ট্রাম্পের বিস্ফোরক দাবি: চলমান যুদ্ধের সূচনা ইউক্রেনই করেছিল

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য ইউক্রেনকেই দায়ী করে নতুন বিতর্ক উসকে দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন রাজনীতিতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠ সমর্থক হিসেবে পরিচিত ট্রাম্প এবার ইউক্রেনের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন। তিনি দাবি করেছেন, চলমান যুদ্ধের সূচনা ইউক্রেনই করেছিল।

মঙ্গলবার (স্থানীয় সময়) ফ্লোরিডার মার-আ-লাগোতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় ট্রাম্প ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির প্রতি কঠোর মনোভাব প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ইউক্রেনে একটি নতুন নির্বাচন হওয়া উচিত। বিশ্লেষকদের মতে, এটি জেলেনস্কিকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনারই ইঙ্গিত।

ট্রাম্প আরও বলেন, ইউক্রেনে দীর্ঘদিন ধরে কোনো নির্বাচন হয়নি এবং সেখানে সামরিক আইন চলছে। তার দাবি, জেলেনস্কির জনপ্রিয়তা মাত্র চার শতাংশে নেমে গেছে, আর দেশটি ধ্বংসের পথে। যদিও যুদ্ধকালীন সময়ে নির্ভরযোগ্য জনমত জরিপ পাওয়া কঠিন, তবে বিভিন্ন প্রতিবেদনে দেখা গেছে, জেলেনস্কির জনপ্রিয়তা ট্রাম্পের দাবির মতো এতটা কমেনি।

এছাড়া, ইউক্রেনের নির্বাচন প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেন, "তারা কি জনগণের মতামত নিয়েছে? তারা আলোচনার টেবিলে বসতে চায়, কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে সেখানে কোনো নির্বাচন হয়নি।"

প্রসঙ্গত, ইউক্রেনে ২০২৪ সালের এপ্রিলে নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও দেশটির সংবিধান অনুযায়ী, যুদ্ধকালীন সময়ে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন সম্ভব নয়। বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের এই মন্তব্য কৌতুকপূর্ণ, কারণ তিনি নিজেই ২০২০ সালের মার্কিন নির্বাচনের ফলাফল মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন।

ট্রাম্প আরও দাবি করেন, ইউক্রেন চাইলে যুদ্ধ বন্ধ করতে পারতো এবং তাদের উচিত ছিল রাশিয়ার সঙ্গে সমঝোতায় যাওয়া। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এর অর্থ হলো—ইউক্রেনকে হয় রাশিয়ার মিত্র সরকার গঠনের প্রস্তাবে রাজি হতে হতো, নয়তো প্রতিরোধ ছেড়ে দিয়ে আত্মসমর্পণ করতে হতো।

বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের সাম্প্রতিক অবস্থান ইঙ্গিত দেয় যে, তিনি পুনরায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে ইউক্রেনকে সমর্থন না দিয়ে বরং রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে একটি বিতর্কিত শান্তিচুক্তির দিকে এগোতে পারেন, যা পুতিনের জন্য বড় ধরনের কূটনৈতিক জয় হিসেবে বিবেচিত হবে।

সূত্র: সিএনএন

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

অবশেষে সরিয়ে দেওয়া হলো মাউশির বিতর্কিত ডিজিকে
২০১৮ সালের নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করা ৩৩ ডিসি ওএসডি
ট্রাম্পের বিস্ফোরক দাবি: চলমান যুদ্ধের সূচনা ইউক্রেনই করেছিল
ডিবির সাবেক প্রধান হারুনের ১০০ বিঘা জমি, ৫ ভবন ও ২ ফ্ল্যাট ক্রোকের নির্দেশ
দিল্লির নতুন মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন রেখা গুপ্তা, বিজেপির সিদ্ধান্তে চমক
একুশের প্রথম প্রহরে রাষ্ট্রপতির শহীদ মিনারে না যাওয়ার আহ্বান
নামাজি জীবনসঙ্গী খুঁজছেন আইশা খান
গাইবান্ধায় গাঁজাসহ আটক এএসআইকে কারাগারে প্রেরণ
উপদেষ্টাদের মিটিংয়ে কোন প্রটোকলে গিয়েছিলেন হাসনাত-পাটোয়ারী: ছাত্রদল সেক্রেটারি
সরকারে থেকে ‘নতুন দল’ গঠন করলে মেনে নেওয়া হবে না: মির্জা ফখরুল
হোস্টিং সামিট ২০২৫ অনুষ্ঠিত
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির উদ্বোধনী ম্যাচে পাকিস্তানকে ৩২১ রানের বড় লক্ষ্য দিলো নিউজিল্যান্ড
বৈষম্যবিরোধী নামধারী শীর্ষ নেতার নির্দেশে কুয়েটে ছাত্রদলের ওপর হামলা: রাকিব
যান্ত্রিক ত্রুটিতে আবারও বন্ধ বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র
কুবিতে ছাত্র সংসদের দাবিতে মানববন্ধন ও সন্ত্রাসবিরোধী বিক্ষোভ মিছিল
২২০ জনকে নিয়োগ দেবে সমরাস্ত্র কারখানা, এসএসসি পাসেও আবেদন
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে ২ দিনব্যাপি খামারি প্রশিক্ষণ
সবার সাত দিন কারাগারে থাকা উচিত: আদালতে পলক
বিপ্লবী সরকারের ডাক থেকে সরে এলেন কাফি  
নাঈম ভাই হেনা কোথায়?: ‘তুই অনেক দেরি করে ফেলেছিস বাপ্পা’