বাণিজ্যমেলার ক্রেতা-বিক্রেতাদের ভোগাবে সড়ক
রাজধানীর নতুন শহর পূর্বাচলের ৪নং সেক্টর হটাৎমার্কেটের পাশে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে (বিবিসিএফইসি) আগামী ১ জানুয়ারি শুরু হতে যাচ্ছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা। এখানে তেমনভাবে জনবসতি গড়ে না উঠায় সাধারণ মানুষের যাতায়াতের জন্য সচরাচর কোনো পরিবহন নেই। কুড়িল বিশ্বরোড মোড় থেকে প্রায় ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এই পথে সাধারণ মানুষের একমাত্র শেষ ভরসা বিআরটিসি (আর্টিকুলেটেড) বাস ও রিকশা। এসব বাহন পেতে ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে।
বিবিসিএফইসি-এ বাণিজ্যমেলা শুরু হলে দর্শনার্থী, ক্রেতা ও বিক্রেতাদেরও একই দশা হবে বলে জানান ভূক্তভোগিরা। রাজধানী থেকে মেলার নতুন জায়গায় যাওয়ার একমাত্র পথ হচ্ছে বিশ্বরোড-কাঞ্জনব্রিজ সড়ক। ১০০ ফুট চওড়া খাল খনন প্রকল্পের কাজ চলমান থাকায় সড়কে ব্যাপক যানজট হচ্ছে। সড়ক ভোগাবে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের।
সম্প্রতি মেলার প্রস্তুতি দেখতে সরেজমিনে গেলে এমনই চিত্র দেখা যায়।
নারায়নগঞ্জ জেলার রুপগঞ্জের কাঞ্চনব্রিজের কাছে হটাৎমার্কেটের পাশে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) ২৬তম এ মেলার আয়োজন করছে। মেলায় যাতায়াতের ব্যাপারে জানতে চাইলে ইপিবির পরিচালক ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, ইপিবি থেকে বিআরটিসিকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তারাও মেলায় দর্শনার্থী, ক্রেতা-বিক্রেতাদের কথা বিবেচনা করে ৩০টি বিআরটিসি বাস দিতে রাজি হয়েছে। এসব বাসেই সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ক্রেতা-বিক্রেতারা যাতায়াত করতে পারবেন।
তিনি আরও বলেন, ‘আগামী ১ জানুয়ারি থেকে পূর্বাচলে বাণিজ্য মেলার আয়োজন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ১ জানুয়ারি এর উদ্বোধন করবেন। সেভাবে চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। পূর্বাচলে নতুন জায়গায় এবার বাণিজ্য মেলা শুরু হতে যাচ্ছে। তাতে ২২৫টি প্যাভিলন ও স্টল অংশ নিচ্ছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নতুন জায়গায় মেলার আয়োজন হচ্ছে, ভালো লাগছে। তবে সেলসম্যানসহ ক্রেতা-বিক্রেতাদের যাতায়াতে খুবই সমস্যা হবে। কারণ সড়কের কাজ চলছে। অন্যদিকে রাজধানী থেকে পূর্বাচলে সরাসরি বাসও তেমন চলে না।
হঠাৎমার্কেটের স্থানীয় ব্যবসায়ী রফিকুল ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, নতুন জায়গায় নতুন পরিবেশে এবার বাণিজ্য মেলা হচ্ছে। ভালোই লাগছে। তবে সড়কের কারনে ভুগবেন ক্রেতা-বিক্রেতারা।
কাঠ ব্যবসায়ী আব্দুস সালামের দাবি, আগারগাঁয়ে যেভাবে মেলা জমে উঠত এখানে সেভাবে জমবে না। কারণ যাতায়াত ব্যবস্থা খুবই খারাপ। যাদের প্রাইভেট গাড়ি রয়েছে তারা ভাঙ্গা-চোরা সড়কে আসতে পারলেও সাধারণ মানুষ সহজে আসতে পারবে না। কারণ সচরাচর বাস নেই। অন্য পরিবহনও নেই।
উল্লেখ্য, ১৯৯৫ সাল থেকে ঢাকার শেরে বাংলা নগরে এ মেলার আয়োজন করে আসছে ইপিবি। প্রতিবছর জানুয়ারির ১ তারিখ প্রধানমন্ত্রী এ মেলার উদ্বোধন করেন। কিন্তু অনেক অর্থ ব্যয় করে নতুনভাবে মেলার অবকাঠমো গড়ার পর আবার ভাঙ্গতে হয়। এতে সময় ও অর্থের অপচয় হওয়ায় সরকার ২০১৫ সালে উদ্যোগ নেয় মেলার স্থায়ী জায়গার জন্য।
ইপিবি সূত্র জানায়, চীন ও বাংলাদেশের যৌথ অর্থায়নে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্প এলাকার ৪নং সেক্টরে বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশীপ এক্সিবিশন সেন্টার নির্মাণ করেছে। মেলার অবকাঠামো নির্মাণের কাজ গত বছরের ৩০ নভেম্বর সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশীপ এক্সিবিশন সেন্টার নামকরণ করে গত ২১ অক্টোবর ভবনটির উদ্বোধন করা হয়েছে। তারপর থেকেই ৩৫ একর বা ১০৫ বিঘা জমিতে গড়ে উঠা সেন্টার অপেক্ষা করছে ২৬ তম বাণিজ্যমেলার জন্য।
জেডএ/এএস