বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ২২ মাঘ ১৪৩১
Dhaka Prokash

ভেজাল ওষুধ বন্ধ হবে কবে?

রাজধানীসহ দেশে ভেজাল ও নকল ওষুধের সরবরাহ দিনের পর দিন বেড়েই চলছে। নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না সংশ্লিষ্ট আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। এসব ভেজাল ও নকল ওষধু খেয়ে অসুস্থ হওয়া ব্যক্তিরা বলছেন, চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো প্রকার ওষুধ খাওয়া যাবে না। এর সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নকল ওষুধ প্রতিরোধের জন্য আপাতত দোকানদারকে ইনভয়েসের মাধ্যমে ওষুধ ক্রয়ের জন্য বলেছি এবং প্রেসক্রিপশন ছাড়া কাউকে কোনো প্রকার ওধুষ দেওয়া যাবে না।

এসব ভেজাল ওষুধের বিষয়ে সাধারণ ক্রেতারা বলছেন, মানুষ আর কতভাবে প্রতারিত হবে। কোনটা ভেজাল আর কোনটা ভেজাল না সেটা আমরা কীভাবে বুঝব। এসব ভেজাল ওষুধ বন্ধ হবে কবে।

রাজধানীর অলি গলিতে ও বড় বড় ওষুধ মার্কেটগুলোতে ভেজাল ও নকল ওষুধে সয়লাব! মানুষের রোগমুক্ত হয়ে বেঁচে থাকার অন্যতম অপরিহার্য উপাদান ওষুধ। সুস্থ জীবনযাপন করতে ওষুধের ব্যবহার কোনো না কোনো সময় করতেই হয়। জীবন রক্ষায় সহায়ক হিসেবে কার্যকরী সেই ওষুধই এখন জীবন ধ্বংসের কারণ! এমনটি কারো কাম্য না হলেও কিছু নৈতিকতা বর্জিত মানুষ মুনাফার লোভে উৎপাদন করছেন ভেজাল ও নকল ওষুধ। যা খেয়ে জীবন রক্ষা বা সুস্থ হওয়া তো দূরের কথা, উল্টো মানবদেহ চরম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

ভেজাল ওষুধ খেয়ে অসুস্থ ব্যক্তিরা যা বলছেন-

ভেজাল ও নকল ওষুধ সেবনের কারণে এক মাস ধরে অসুস্থ হয়ে ঢাকা কমিউনিটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন মুন্সিগঞ্জের স্বাধীন। স্বাধীন বলেন, 'একটি ভুল চিকিৎসা ও ওষুধের জন্য দিনের পর দিন আমাকে ভুগতে হচ্ছে।'

মিরপুরের শাপলা ফার্মেসির সহকারী নজরুলের দেওয়া ওষুধ খেয়ে অসুস্থ হয়ে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন রিকশাচালক আবুল মিয়া। এ সময় আবুল মিয়া অভিযোগ করে বলেন, 'আমাকে নজরুল কী ওষুধ দিল, সেটা খেয়ে আমার পেটে জ্বালা করে, ব্যথা করে, পরে আমি হাসপাতালে ১৫ দিন ধরে ভর্তি আছি। আর আমি কোনো দিন ডাক্তার না দেখিয়ে ওষুধ খাব না।'

নিয়ম-কানুন মেনে স্বাভাবিক জীবনযাপন করেও মানুষ ভেজাল, মানহীন ওষুধের প্রভাবে দূরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকেই। কেউ চরম কষ্টে জীবন পার করছেন, কেউবা অল্প বয়সেই মৃত্যুকে আলিঙ্গন করছেন।

যা বলছে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা-

ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, সক্ষমতা অনুযায়ী চাহিদার ৯৫ শতাংশ ওষুধের জোগান দিচ্ছে প্রস্তুতকারক দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলো। এ ছাড়া আমেরিকা, কানাডা, জাপানসহ বিশ্বের ১৫৬টি দেশে রপ্তানি হচ্ছে বাংলাদেশের ওষুধ। মানসম্পন্ন ওষুধ তৈরির জন্য আন্তর্জাতিক মহলে প্রশংসা কুড়ানোর পাশাপাশি ২০১৮ সালে ‘মেডিসিন প্রডাক্ট অব দ্য ইয়ার’ পদকে ভূষিত হয় ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। তবে এত সক্ষমতা অর্জন সত্ত্বেও বাজারে কেন ছড়াচ্ছে নকল ওষুধ, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন খোদ ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরও।

প্রতিষ্ঠানটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলছেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলো সমন্বয় করে অভিযান চালাচ্ছে। অধিদপ্তরও নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে। তবে জনবল ও লজিস্টিক সাপোর্ট কম থাকায় প্রত্যন্ত অঞ্চলে নিয়মিত নজরদারি ও অভিযান চালানো সম্ভব হচ্ছে না।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সূত্রে জানা যায়, কয়েক বছর আগে রাজধানীর মিটফোর্ড এলাকায় নকল ওষুধ তৈরির কারখানার সন্ধান মেলে। পরে প্রতিষ্ঠিত ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের অভিযোগের ভিত্তিতে এসব কারখানায় একাধিকবার অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানের পর ভেজাল ওষুধ তৈরির কার্যক্রম কিছুটা কমলেও নিয়মিত নজরদারি না থাকায় ফের তা শুরু হয়।

গোয়েন্দারা বলছে ভেজাল ওষুধ কারবারি চক্রের প্রধান টার্গেট ঢাকা

ঢাকা মেট্রোপলিটন গোয়েন্দা পুলিশ বলছে, ভেজাল ওষুধ ও নিম্নমানের ওষুধ কারবারি চক্রের প্রধান টার্গেট ঢাকা। এসব ওষুধ খেয়ে অনেক মানুষ অসুস্থ হচ্ছেন। রাজধানীর মিটফোর্ড ও এর আশপাশের এলাকায় এ চক্রের সদস্যরা কারখানা গড়ে তোলে। পরবর্তীকালে চাহিদা বাড়তে থাকায় কুমিল্লা ও বগুড়াসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় গড়ে ওঠে কারখানা। এসব কারখানার তৈরি নকল ওষুধ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ছে। যার কারণে সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

প্রশাসনের অভিযানের সময়, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার তথ্য ও বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধে সয়লাব। দেশে ওষুধ শিল্পের অভাবনীয় উন্নতি ঘটলেও ভেজাল ওষুধে ছেঁয়ে গেছে ফার্মেসিগুলো। ফলে ওষুধের মান নিয়ে প্রতিনিয়ত বিভ্রান্ত হচ্ছে মানুষ। ওষুধ বিক্রির ব্যবসা, ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করা; এভাবে ওষুধ সংশ্লিষ্ট কাজে দীর্ঘ বছর যুক্ত থাকার সূত্র ধরে অসাধু ব্যক্তিরা জড়িয়ে পড়ছে ভেজাল ওষুধ উৎপাদনের কাজে। এ ছাড়া এক শ্রেণির নাম না জানা ওষুধ কোম্পানি বেশি লাভের আশায় নামীদামী কোম্পানির ওষুধ নকল করে বাজারে ছাড়ছে। চাহিদা সম্পন্ন বেশ কিছু ওষুধ নকল করে কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে চক্রগুলো। অনেকে ইউনানী বা আয়ুর্বেদিক ওষুধের লাইসেন্স নিয়ে উৎপাদন করছে অ্যালোপ্যাথি ওষুধ। মেশাচ্ছে রং ও ঘনচিনি। এসব ওষুধই ছড়িয়ে যাচ্ছে অলিগলি ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের ফার্মেসিগুলোতে। যা স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়াচ্ছে ভোক্তাদের।

অনুমোদিত ওষুধ কোম্পানির মাত্র অর্ধশত প্রতিষ্ঠান সঠিক পদ্ধতিতে ওষুধ তৈরি করে-

সূত্রমতে, বর্তমানে দেশে অনুমোদিত ওষুধ কোম্পানির সংখ্যা ২৮০টির মতো। তবে দুর্ভাগ্যজনকভাবে এর মধ্যে মাত্র অর্ধশত প্রতিষ্ঠান পরিবেশ, উপাদানের মান ঠিক রেখে এবং সঠিক পদ্ধতিতে ওষুধ তৈরি করে থাকে। আর বেশিরভাগ কোম্পানি বাধাহীন চিত্তে ভেজাল উপাদান মিশিয়ে নকল ওষুধ তৈরি করে বাজারজাত করে যাচ্ছে। এ যেন মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলা। যা চরম শাস্তিযোগ্য অপরাধ। বিভিন্ন সময়ে রাজধানী ও আশপাশের জেলায় গড়ে ওঠা নকল ওষুধ তৈরির কারখানায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান চালালেও এ অবস্থা থেকে উত্তরণের পরিস্থিতি দেখা যাচ্ছে না।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিশ্ববাজারে ১৪৫টি দেশে রপ্তানি হচ্ছে বাংলাদেশের ওষুধ। ভেজাল ও নকল ওষুধ এই সুনাম ও আস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। মফস্বলের ওষুধ ফার্মেসিগুলোকে টার্গেট করে অসাধুচক্র সারাদেশে ভেজাল ও নকল ওষুধ ছড়িয়ে দিচ্ছে।

এদিকে সম্প্রতি অসাধু একটি চক্র ধরার পর পুলিশ বলছে, একমি ল্যাবরেটরিজ, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, জেনিথ ফার্মাসিউটিক্যালসসহ বিভিন্ন নামীদামী ব্র্যান্ডের ওষুধ নকল করে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে দিত তারা। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- তরিকুল ইসলাম, সৈয়দ আল মামুন, সাইদুল ইসলাম, মনোয়ার, আবদুল লতিফ, নাজমুল ঢালী ও সাগর আহমেদ মিলন। তাদের কাছ থেকে একমি কোম্পানির মোনাস-৭০০ বক্স, স্কয়ার কোম্পানির সেকলো-৫০ বক্স, জেনিথ কোম্পানির ন্যাপ্রোক্সেন প্লাস-৭৪৮ বক্সসহ বিভিন্ন কোম্পানির বিপুল পরিমাণ ভেজাল ওষুধ, ওষুধ তৈরির মেশিন, ডায়াস ও ওষুধের খালি বক্স উদ্ধার করা হয়।

এসব অপরাধের বিষয়ে জানতে চাইলে ডিবি পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, কদমতলী, ডেমরা, কাজলা, আরামবাগ, লালবাগ ও মিটফোর্ড এলাকা থেকে কয়েকজন নকল ওষুধ প্রস্তুতকারকদের গ্রেপ্তার করা হয়।

তিনি বলেন, এই চক্রটি সারাদেশে নকল ওষুধ ছড়িয়ে দিয়েছে। প্রত্যন্ত অঞ্চলকে টার্গেট করে বহুল বিক্রিত ওষুধগুলো নকল করে তারা বাজারজাত করছিল। আমরা আট প্রকার নকল ওষুধ উদ্ধার করেছি। যেসব ওষুধ সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়, সেগুলোই নকল করে বাজারজাত করছিল চক্রটি। আসল ওষুধের প্রকৃত দামের তুলনায় অনেক কমদামে নকল ওষুধগুলো বাজারে বিক্রি হচ্ছিল। এগুলো মাদকের থেকেও ভয়ংকর।

তিনি বলেন, মানুষ সুস্থ হওয়ার জন্য ওষুধ সেবন করে। আর নকল ওষুধ সেবন করে মানুষ বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ছে। এদের ধরতে আমরা গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করেছি।

এদিকে সম্প্রতি ঢাকা, সাভার ও পিরোজপুরে পৃথক অভিযান চালিয়ে এ চক্রের আট সদস্যকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এসময় সন্ধান মেলে নকল ওষুধ তৈরির কারখানার। নকল ওষুধ তৈরির যন্ত্র ও ছাঁচ উদ্ধার করে ডিবির লালবাগ বিভাগের কোতয়ালি জোন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিবির লালবাগ বিভাগের কোতয়ালি জোনের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার সাইফুর রহমান আজাদ ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, এ চক্রের সদস্যরা আয়ুর্বেদিক ওষুধ তৈরির ভুয়া লাইসেন্স বানান। এ লাইসেন্স ব্যবহার করে তারা প্রচলিত বিভিন্ন ব্র্যান্ডের নকল ওষুধ তৈরি করে বাজারজাত করে। এর মধ্যে সেকলো, মোনাস, মন্টিয়ার, সেফ-৩, নেপ্রোক্সেন প্লাসের মতো বহুল ব্যবহৃত ওষুধও রয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, আমরা নকল ওষুধ প্রতিরোধের জন্য আপাতত দোকানদারকে ইনভয়েসের মাধ্যমে ওষুধ ক্রয়ের জন্য বলেছি। সেই সঙ্গে বলা হয়েছে চিকিৎসকের অনুমতি ছাড়া কাউকে ওষুধ দেওয়া যাবে না।

তিনি বলেন, কোম্পানির অনুমোদিত প্রতিনিধির কাছ থেকেই ওষুধ নিতে হবে। এর বাইরে নকল ও ভেজাল ওষুধ ঠেকানো সম্ভব না। স্যাম্পল ওষুধ কোনো দোকানদার বিক্রি করতে পারবে না। এটা আইনগত নিষিদ্ধ। এটা করা হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি আরও বলেন, ড্রাগস আইনে নকল ও ভেজাল ওষুধ উৎপাদনকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান আছে ১০ বছর। তবে জরিমানার অঙ্ক নির্দিষ্ট না থাকলেও তা অনেক ক্ষেত্রে বাস্তবায়ন হয় না। বিশেষ ক্ষমতা আইনে মৃত্যুদণ্ডের বিধান রয়েছে। কিন্তু মামলা হওয়ার পর তদন্তের ক্ষেত্রে তদন্তকারী কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে ফেলে নকল ওষুধ উৎপাদনকারীরা। তাদের টাকার অভাব নেই। নকল ওষুধে পুরোটাই লাভ।

ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, সম্প্রতি নকল প্যারাসিটামল খেয়ে ৫০০ শিশুসহ অনেক মৃত্যুর খবরও গণমাধ্যমে এসেছে। এদিকে গত ১২ আগস্ট এবং ২ এপ্রিল রাতে পৃথক দুই অভিযানে বিপুল পরিমাণ নকল ওষুধসহ ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীরা। এরমধ্যে, ২ এপ্রিল রাতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে ক্যান্সার ও করোনা মহামারিতে বহুল ব্যবহৃত দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের নকল ওষুধ ও ওষুধ তৈরির সরঞ্জামসহ সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগ।

এ বিষয়ে জানতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার মো. নাজমুল হক ঢাকা প্রকাশকে বলেন, নকল ওষুধ সেবন করলে মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়ে ও বেশি অসুস্থ হয়ে যায় রোগীরা। এসব ওষুধ খেয়ে প্রতিনিয়তই মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। কিছু সুবিধাভোগী চিকিৎসক আছে, তারা বাড়তি কমিশনের আশায় প্রেসক্রিপশনে এসব নকল ওষুধের নাম লেখে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মুগদা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, ভেজাল ওষুধ বিপণন করা গণহত্যার সমান। এদের মৃত্যুদণ্ড হওয়া উচিত। এ ব্যাপারে সবাইকে সচেতন হওয়া জরুরি। ওষুধ দেখে চিনতে হবে। কোনটা আসল আর কোনটা নকল ওষুধ।

নকল ওষুধ চেনার উপায়:

ওষুধের প্যাকেটের গায়ে যে সিল থাকে সেটি ভালো করে দেখুন কোথাও কোনো গলদ আছে কি না। লেবেল একই আছে কি না। আগে যদি আপনি একই ওষুধ কিনে থাকেন তাহলে পরের বার কেনার সময় আগের প্যাকেটের সঙ্গে প্যাকেজিং, অক্ষরের ফন্ট, বানান, রং এগুলো মিলিয়ে দেখতে হবে। ওষুধ সেবনের আগে খেয়াল করুন ওষুধের রং, আকার, গঠন ঠিক আছে কি না। ওষুধের কোথাও কোনো ভাঙা অংশ আছে কি না। গুড়া ওষুধের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত পরিমাণে দেওয়া আছে কি না। এসব ভালো করে দেখুন। ওষুধ যদি ক্রিস্টালের মতো হয় তাহলে যথেষ্ট শক্ত কিংবা অতিরিক্ত নরম কি না দেখুন। আমরা বলতে পারি কিন্তু যারা ওষুধ সেবন করবেন তাদের বেশি করে খেয়াল রাখতে হবে আমরা সঠিক ওষুধ কিনছি কি না। সাধারণ মানুষকে ঠকাচ্ছে এসব ভেজাল ও নকল ওষুধ কোম্পানিরা।

জানতে চাইলে ঢাকা কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালের চিকিৎসক আব্দুল মালেক ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, যারা সাধারণ মানুষকে এসব নকল ওষুধ দিয়ে ক্ষতি করছে তাদের বিচার হওয়া উচিত।

তিনি বলেন, নকল ওষুধ ও ফার্মেসির দেওয়া ওষুধ খেয়ে অসুস্থ হয়ে আমার কাছে বেশ কিছু মানুষ চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাদের বিভিন্ন পরীক্ষা করে বেশ কিছু জটিল সমস্যা পাওয়া গেছে।

তিনি বলেন, এসব নকল ওষুধের আক্রমণে অনেক মানুষ শারীরিকভাবে পঙ্গু হচ্ছেন।

তিনি আরও বলেন, এসব বিষয়ে সরকার ও সাধারণ মানুষকে সর্তক হতে হবে। অন্যথায় সাধারণ মানুষ ক্ষতির মুখে পড়তে থাকবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের সহকারী অধ্যাপক তৌহিদুল হক বলেন, ভেজাল ওষুধ তো আমরা বা আমাদের সাধারণ মানুষ বোঝে না। যারা ভেজাল ওষুধ তৈরি করে অথবা বিক্রি করে তাদের আইনের আওতায় না আনলে, আমরা সাধারণ মানুষ বিভিন্ন ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হব।

তিনি বলেন, প্রশাসনকে বলতে চাই, যারা ভেজাল ওষুধ তৈরি করে তাদের গ্রেপ্তার করে কঠোর আইন প্রয়োগ করা হোক। তাহলে হয়তো এসব অপরাধ কমে আসবে।

কেএম/টিটি

Header Ad
Header Ad

বগুড়ায় ৫০ টাকা অফারে টি-শার্ট কিনতে গিয়ে হুলস্থুল কান্ড, নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী

বগুড়ায় ৫০ টাকা অফারে টি-শার্ট কিনতে গিয়ে হুলস্থুল কান্ড। ছবি: সংগৃহীত

বগুড়ার জলেশ্বরীতলায় ‘লাইফ ওকে’ নামের এক পোশাক বিক্রির শো-রুম উদ্বোধন উপলক্ষ্যে ৫০ টাকায় মিলবে টি-শার্ট এমন ঘোষণায় হুলস্থুল কান্ড ঘটেছে।

ছাড়ের খবরে আজ বুধবার সকালে শো-রুমটির সামনে এতো সংখ্যক মানুষ জড়ো হন যে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লাঠিচার্জে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। এছাড়াও শো-রুমটির বিক্রেতাদের মারপিটের শিকার হয়েছেন সস্তার ক্রেতারা।

জানা গেছে, চট্টগ্রামের প্রতিষ্ঠান ‘লাইফ ওকে’ বগুড়ায় প্রথমবারের মতো তাদের আউটলেট খুলতে যাচ্ছে। এ উপলক্ষ্যে প্রতিষ্ঠানটি তাদের ফেসবুক পেজে ঘোষণা দেয় ‘মাত্র ৫০ টাকায় টি-শার্ট, এক থেকে দেড়শ’ টাকার মধ্যে মিলবে শার্ট এবং আড়ইশ’ টাকায় পাওয়া যাবে এক্সপোর্ট ইউএসপোলো সোয়েটার।

এমন পরিস্থিতিতে সেখানে সেনাবাহিনীর সদস্যসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত হন।। ছবি: সংগৃহীত

এমন ঘোষণায় আজ সকাল থেকে অগণিত নারী-পুরুষ শো-রুমটির সামনে ভিড় করেন। জনসমাগম এমন ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি করে যে, পুরো জলেশ্বরীতলা এলাকা স্তব্ধ হয়ে যায়। বন্ধ হয়ে যায় রাস্তার যান চলাচল, লোকজনের চাপে আশেপাশের দোকানপাটও বন্ধ করতে বাধ্য হন ব্যবসায়ীরা, দেখা দেয় নিরাপত্তার শঙ্কা। এমন পরিস্থিতিতে সেখানে সেনাবাহিনীর সদস্যসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত হন।

সেনাবাহিনী আগত লোকজনকে রাস্তা থেকে সরে যেতে অনুরোধ করেন, এতে কাজ না হলে লাঠি চার্জ শুরু করেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। দুই দফা লাঠি চার্জের পর পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলে শো-রুমটি খুলে দেওয়া হয়। এর পরপরই আবারও লোকজন হুমড়ি খেয়ে পড়েন। এতে পরিস্থিতি আবারও নিয়ন্ত্রণের বাহিরে চলে যায়।

এমন পরিস্থিতিতে শো-রুমটির বিক্রেতারা ক্রেতাদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে মারপিট করেন। পড়ে সেনাবাহিনীর উপস্থিতিতে দ্রুত শো-রুমটি বন্ধ করে ভেতরে থাকা ক্রেতাদের বের করে দিয়ে আগামী সাতদিনের জন্য শো-রুমটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।

 

Header Ad
Header Ad

নওগাঁ সীমান্তে বাংলাদেশি যুবককে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ

ছবি: সংগৃহীত

নওগাঁর সাপাহার উপজেলার আদাতলা সীমান্ত এলাকা থেকে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) সদস্যরা এক বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই ব্যক্তির নাম সিরাজুল ইসলাম (৪২)। তিনি সাপাহার উপজেলার উত্তর পাতাড়ী গ্রামের ওসমান আলীর ছেলে।

গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে উপজেলার আদাতলা ভারত সীমান্তের ৪৪/১-এস পিলার এলাকা থেকে সিরাজুল ইসলামকে ধরে নেওয়া হয়। সিরাজুল ইসলামের স্ত্রী এজেলা খাতুন বিএসএফের বিরুদ্ধে তাঁর স্বামীকে ধরে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ করেছেন।

সিরাজুলের পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দা সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার দিবাগত রাতের কোনো এক সময় সিরাজুল আরও ছয়-সাতজনের সঙ্গে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতের অভ্যন্তরে গরু আনতে যায়। রাত ৩টার দিকে আদাতলা সীমান্তের ৪৪/১-এস পিলার সংলগ্ন এলাকা দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের সময় ভারতের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার তপন থানার নাইরকুড়ী বিএসএফ ক্যাম্পের টহল সদস্যরা তাঁদেরকে ধাওয়া করে। এ সময় অন্যরা বাংলাদেশের সীমান্তে আসতে সক্ষম হলেও সিরাজুল বিএসএফ সদস্যদের হাতে ধরা পড়েন।

এ বিষয়ে বুধবর (৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ব্যাটালিয়ান ১৬ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল সাদিকুর রহমানের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি অসুস্থ্য থাকায় সংশ্লিষ্ট আদাতলা সীমান্ত চৌকির (বিওপি) কমান্ডারের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন।

কিন্তু আদাতলা বিওপি ক্যাম্প কমান্ডারের সরকারি নাম্বারে একাধিকবার কল দিলেও কল রিসিফ না হওয়ায় তাঁর মন্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।

তবে বিএসএফের হাতে আটক সিরাজুল ইসলামের স্ত্রী এজেলা বলেন, সিরাজুল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। তবে কোথায় যাচ্ছে তা বাড়িতে বলে যায়নি। রাত ৪টার দিকে তাঁর স্বামীর সাথে ভারতে গিয়েছিলো দাবি করে এলাকার কিছু ব্যাক্তি তাঁকে বলেন, সিরাজুলকে সীমান্ত এলাকা থেকে বিএসএফ সদস্যরা ধরে নিয়ে গেছে।

Header Ad
Header Ad

মোহাম্মদপুরে বিড়াল হত্যার অভিযোগে আদালতে মামলা, তদন্তের নির্দেশ

মোহাম্মদপুরে বিড়াল হত্যার অভিযোগে আদালতে মামলা। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় মনসুর নামে এক ব্যক্তির পোষা বিড়াল হত্যার অভিযোগে মুক্তিযোদ্ধা টাওয়ারের বাসিন্দা আকবর হোসেন শিবলুর নামে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

আজ বুধবার ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জি এম ফারহান ইশতিয়াক মামলাটি গ্রহণ করে মোহাম্মদপুর থানাকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

আজ পিপলস ফর অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ারের পক্ষে নাফিসা নওরীন চৌধুরী এ মামলাটি দায়ের করেন। বাদীপক্ষের আইনজীবী জাকির হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

মামলার সূত্রে জানা গেছে, গত ১ ফেব্রুয়ারি দুপুরের দিকে মোহাম্মদপুরের মুক্তিযোদ্ধা টাওয়ারের ৯ম তলার বাসিন্দা মনসুর নামে এক ব্যক্তির বিড়াল হারিয়ে যায়।

পরে ভবনের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, আসামি আকবর হোসেন শিবলু বিড়ালটিকে এলোপাতাড়ি ফুটবলের মতো লাথি মারছেন। আসামির লাথির আঘাতে বিড়ালটির নিথর দেহ পড়ে থাকার পরও পা দিয়ে পিষ্ট করে মৃত্যু নিশ্চিত করেন।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

বগুড়ায় ৫০ টাকা অফারে টি-শার্ট কিনতে গিয়ে হুলস্থুল কান্ড, নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী
নওগাঁ সীমান্তে বাংলাদেশি যুবককে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ
মোহাম্মদপুরে বিড়াল হত্যার অভিযোগে আদালতে মামলা, তদন্তের নির্দেশ
চুয়াডাঙ্গায় সার কাণ্ডে বিএনপি ও যুবদলের ৫ নেতা বহিষ্কার
আজ বন্ধুর সাথে গোসল করার দিন
২ আলাদা বিভাগসহ দেশকে ৪ প্রদেশে ভাগ করার সুপারিশ
শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলায় হাইকোর্টের রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ৯ আসামিসহ সবাই খালাস
হাসিনার লাইভ প্রচারের আগেই নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের ফেসবুক পেজ উধাও
হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের ওপর বিএনপি নেতাকর্মীদের হামলা
বিচারবিভাগ ও জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন হস্তান্তর
গাজীপুরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সবজিবাহী পিকআপ খাদে, চালকসহ নিহত ৩
নতুন রাজনৈতিক দল গঠনে জনগনের মতামত চাইলো হাসনাত  
এই ফটো তোলোস কেন? আদালত চত্বরে শাহজাহান ওমর  
মনে হচ্ছে বিবিসি বাংলা গণহত্যাকারী শেখ হাসিনার ভক্ত : প্রেস সচিব  
পটুয়াখালীতে বাংলাভিশনের সাংবাদিককে কুপিয়ে জখম  
উত্তরবঙ্গে অনির্দিষ্টকালের জন্য তেল বিক্রি বন্ধ
বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় ধাপের আখেরি মোনাজাত আজ  
শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রচার নিয়ে কড়া বার্তা হাসনাত আবদুল্লাহর  
শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলার রায় আজ    
সুইডেনে স্কুলে বন্দুক হামলা নিহত ১০ জন