ঈদের আগেই জেলা পরিষদ নির্বাচন ঘোষণা?
দেশের ৬১টি জেলা পরিষদের মেয়াদ পূর্ণ হওয়ায় চেয়ারম্যান পদ বিলুপ্ত ঘোষণা করেছে সরকার। ওই সকল জেলা পরিষদে এখন প্রশাসক নিয়োগের দিকে হাটছে সরকার। আইন অনুযায়ী জেলা পরিষদের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রতিটি জেলা পরিষদে একজন করে প্রশাসক বসবে। তবে নির্বাচন কমিশনও দ্রুততম সময়ে বসে কর্মপন্থা চূড়ান্ত করবে। কিভাবে নির্বাচন করা যায় সেসব বিষয়ে নিয়ে চলতি সপ্তাহে একটি বৈঠক হতে পারে। সেই বৈঠক থেকেই জেলা পরিষদের নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
এদিকে জেলা পরিষদের মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার পর চেয়ারম্যান পদ বিলুপ্ত সংক্রান্ত বিষয়ে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, ‘সারা বিশ্বে করোনার কারণে স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড ব্যহত হয়েছে। আমাদের ইউপি নির্বাচনসহ অনেক নির্বাচনই নির্বাচন কমিশন যথা সময়ে করতে পারে নাই। জেলা পরিষদের ভোটার হল ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বর, চেয়ারম্যান, পৌরসভার কাউন্সিলর, মেয়র। যেহেতু ওই নির্বাচনগুলো (ইউপি, পৌরসভা) সম্পূর্ণ করা যায়নি, যে কারণে জেলা পরিষদের নির্বাচন করাও চ্যালেঞ্জিং ছিল।’
‘আইনটা জনকল্যাণমুখি করার জন্য সংশোধনের প্রয়োজন ছিল। সেই সংশোধনীসহ আইনটি পাস ও অনুমোদিত হয়েছে। বর্তমান আইনের বিধান অনুযায়ী প্রশাসক নিয়োগ করার প্রয়োজনীয়তা আছে। প্রশাসক নিয়োগ করার জন্য ইতোমধ্যে পদক্ষেপ নিয়েছি। প্রশাসক নিয়োগের আগ পর্যন্ত অন্তবর্তী সময়ে জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহীরা (সিইও) দায়িত্ব পালন করবে।’
জেলা পরিষদের মেয়াদ পূর্ণ হওয়ায় বিলুপ্ত ঘোষণা বিষয়টি গণমাধ্যমের খবরে অবগত হয়েছে নির্বাচন কমিশন। ১৭ এপ্রিল প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে পরদিন অর্থাৎ ১৮ এপ্রিল জোষ্ঠ্য সাংবাদিকদের সঙ্গে পূর্ব নির্ধারিত মতবিনিময় ছিল নির্বাচন কমিশনের। ফলে বিষয়টির দিকে দৃষ্টি দেওয়ার সুযোগ হয়নি। কার্যত স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের কাছে নির্বাচনের জন্য অনুমতি চাইবে নির্বাচন কমিশন। আইনি বা অন্য কোন জটিলতা আছে কি না সেসব বিষয়ে মতামত নিয়ে নিজেদের কর্মপন্থা ঠিক করবে ইসি।
জেলা পরিষদ নির্বাচনের বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, “আমরা গণমাধ্যমের খবর মারফতে জানতে পেরেছি। আমরা পূর্ব নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী ব্যস্ত ছিলাম। দুই এক দিনের মধ্যে আমরা নিজেরা বসব। এরপর ঠিক করব কবে নির্বাচন করা যায়। হয়তো ঈদের আগেই তারিখ ঘোষণা হতে পারে। তবে সব কিছু চূড়ান্ত হবে বৈঠকে।”
প্রশাসক নিয়োগের সুযোগ রেখে গত ৬ এপ্রিল সংসদে জেলা পরিষদ সংশোধন আইন পাস হয়। আইন অনুযায়ী মেয়াদ উত্তীর্ণ জেলা পরিষদগুলোতে প্রশাসক নিয়োগ করতে পারবে সরকার। আইনে বলা আছে ‘কোন প্রশাসক একের অধিক সময় পদে থাকতে পারবেন না। তাছাড়া প্রশাসকের মেয়াদ কোনক্রমেই ১৮০ দিনের বেশি হবে না।’
আইন অনুযায়ী জেলার অন্তর্গত সিটি করপোরেশনের (যদি থাকে) মেয়র ও কাউন্সিলর, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র ও কাউন্সিলর এবং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যরা জেলা পরিষদের ভোটার। জেলার প্রত্যেক উপজেলায় একজন করে সদস্য এবং চেয়ারম্যানসহ সদস্যদের মোট সংখ্যার এক তৃতীয়াংশ (নিকটবর্তী পূর্ণসংখ্যা) নারী সদস্য নিয়ে জেলা পরিষদ গঠনের কথা বলা হয়েছে। জেলা পরিষদ গঠনের পর প্রথম সভার মেয়াদ থেকে পাঁচ বছর পূর্ণ হওয়ায় জেলা পরিষদ আইন ২০২২ এর ক্ষমতা বলে পরিষদকে বিলুপ্ত ঘোষণা করে সরকার।
এসএম/