পরাশক্তিগুলোর মেরুকরণে বিপাকে বাংলাদেশ
চীন-রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র-ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতো পরাশক্তিগুলোর মেরুকরণে ভারসাম্য বজায় রাখতে বেগ পেতে হচ্ছে বাংলাদশেকে। আগের অনেক ইস্যুর সঙ্গে নতুন করে যোগ হয়েছে ইউক্রেন ইস্যু। এক্ষেত্রে বাংলাদেশকে কোনো একপক্ষ নিলেও হয় না আবার নিরপেক্ষ থাকারও সুযোগ নেই।
সংশ্লিষ্টরা জাতিসংঘে ইউক্রেনের উপর ভোটাভুটির উদাহরণ টেনে বলছেন, এটা এমন একটা কঠিন পরিস্থিতি যে ভোট দিলেও বিপদ না দিলেও বিপদ। হয়েছেও তাই। প্রথমে ভোটদানে বিরত ছিল বাংলাদেশ। তখন এক ধরনের সমস্যা হলো। তারপর দ্বিতীয়বার যখন ইউক্রেনের পক্ষে ভোট দিল তখনও রাশিয়ার সঙ্গে একটা টানাপড়েনের আশঙ্কা তৈরি হলো।
এই যে পরাশক্তিগুলোর ‘নিজের পক্ষে টানার কূটনীতি’ এটি স্পষ্ট হয় সম্প্রতি ঢাকায় নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেক্সান্ডার ভি মানতিৎস্কির বক্তব্যে। তিনি ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযানের এক মাস পূর্তি উপলক্ষে ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, ভোটদানে বিরত থাকায় বাংলাদেশসহ রাশিয়ার সহযোগী দেশগুলোকে হুমকি দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এর কিছুদিন পরই দ্বিতীয় দফা ভোটাভুটিতে বাংলাদেশ ইউক্রেনের পক্ষে ভোট দেয়।
যদিও বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন যুক্তরাষ্ট্রের হুমকির বিষয়টি অস্বীকার করে বলেছেন, বাংলাদেশ শান্তির পক্ষে থেকেছে সবসময়। তাই ইউক্রেনে যে মানবিক সংকট তৈরি হয়েছে তার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ মনে করেছে যুদ্ধের অবসান হওয়ার দরকার।
এ ঘটনায় পর্যবেক্ষকরা বলছেন, রাশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের একটু টানাপড়েন তৈরি হয়েছে। কারণ রুশ রাষ্ট্রদূত যেদিন সংবাদ সম্মেলন করে সঙ্গে থাকার জন্য বাংলাদেশকে ধন্যবাদ দিচ্ছেন সেইদিনই জাতিসংঘে ভোটাভুটিতে ইউক্রেনের পক্ষে ভোট দিয়েছে ঢাকা।
ইউক্রেনের পক্ষে ভোট দেওয়ার পর রাশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক কেমন জিজ্ঞাসা করা হলে পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন যুক্তরাষ্ট্র সফর শেষে দেশে ফিরে মঙ্গলবার বলেন, রাশিয়ার সঙ্গে এখনও বাংলাদেশের সম্পর্ক যথেষ্ট ভাল। দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক ঐতিহাসিক। কারও প্ররোচনায় এই সম্পর্কে চিড় ধরবে না।
কোয়াড-আইপিএসে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্রের চাপ
কোয়াড মূলত একটি সামরিক জোট। কোয়াড শব্দের অর্থ চতুর্ভুজ। প্রাথমিকভাবে ৪টি দেশ এই সামরিক জোট গঠন করেছে। দেশগুলো হলো-যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, ভারত ও জাপান। যদিও সদস্যদেশগুলোর পক্ষ থেকে স্বীকার করা হয় না যে এটি সামরিক জোট। ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের পর এখন কোয়াডকে এশিয়ার ন্যাটো হিসেবে অভিহিত করা হচ্ছে।
আইপিএস হলো যুক্তরাষ্ট্রের ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চল বিষয়ক কৌশল (ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি সংক্ষেপে আইপিএস)। যুক্তরাষ্ট্র ২০১৮ সাল থেকে বাংলাদেশকে আইপিএসে যোগ দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশ এখনও যোগ দেয়নি।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউ নেতারা ক্রমাগত চাপ দিয়ে যাচ্ছেন বাংলাদেশকে কোয়াড-আইপিএসে যোগ দিতে। ইইউয়ের ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের বিশেষ দূত গ্যাব্রিয়েল ভিসেন্টিন সম্প্রতি ঢাকায় এসে আইপিএসে যোগ দিতে বাংলাদেশকে আহ্বান জানিয়েছেন। গত মাসে বাংলাদেশ সফর করা মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের আন্ডার সেক্রেটারি ভিক্টোরিয়া নুল্যান্ডও একই আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশকে। তিনি বলেছেন, হুমকি মোকাবিলায় বাংলাদেশকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র।
এছাড়া ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস দায়িত্ব নেওয়ার পরই আইপিএসে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশ কীভাবে কাজ করতে পারে সেই রূপরেখা দিয়েছেন।
কোয়াড-আইপিএসে যোগ দিতে চীনের বাধা
যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা দেশগুলো এবং অন্য মিত্ররা বাংলাদেশকে কোয়াড-আইপিএসে যোগ দিতে যেমন চাপ দিচ্ছে তেমনি বাংলাদেশ যেন এই জোটে যোগ না দেয় সেই চাপও দিয়ে যাচ্ছে চীন। বাংলাদেশ কোয়াড-আইপিসে যোগ দিচ্ছে এমন খবর পাওয়ার পর গতবছর তো ঢাকায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত লি জিমিং প্রকাশ্যে হুমকি দিয়েই বসলেন যে বাংলাদেশ যদি কোয়াডে যোগ দেয় তাহলে চড়া মূল্য দিতে হবে।
চীনের এমন হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে তখন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন কোয়াড বা আইপিএসে যোগ দেওয়ার বিষয়টি নাকচ করে দিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, চীন প্রকাশ্যে এমন কথা না বলে আমাদের সঙ্গে আলোচনা করলেই পারত।
এছাড়া চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ঢাকায় অনুষ্ঠিত ‘স্প্রিং ডায়লগ উইথ চায়না’ শীর্ষক ব্রিফিংয়ে লি জিমিং আবার সাংবাদিকদের এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, কোয়াডে যোগ দেওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশ বুদ্ধিবৃত্তিক সিদ্ধান্ত নেবে এমনটাই প্রত্যাশা করে চীন।
বাংলাদেশে চীনের ক্ষেপণাস্ত্র রক্ষণাবেক্ষণ কেন্দ্র করার খবরে উদ্বিগ্ন ভারত
জাপানের ‘নিক্কেই এশিয়া; সাময়িকীতে ভারতেরই একজন সাংবাদিক নীতা লাল রিপোর্টটি করেছেন। রিপোর্টে বলা হয়েছে, চীন বাংলাদেশে ক্ষেপণাস্ত্র রক্ষণাবেক্ষণ কেন্দ্র তৈরি করছে। এতে ভারত উদ্বিগ্ন।
রিপোর্টে নয়াদিল্লির উদ্বেগের বিষয়টি এভাবে লিখেছেন নীতা লাল-নয়াদিল্লির উদ্বেগের বড় জায়গা হলো বাংলাদেশের মতো ভারতের পুরনো মিত্রদের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সম্পর্ক জোরদার করে চীন ওইসব দেশের সঙ্গে বিশেষ ঘনিষ্ঠতা গড়ে তুলছে। এটাকে ‘বাড়াবাড়ি’ মনে করছে নয়াদিল্লি।
যদিও ‘স্প্রিং ডায়লগ উইথ চায়না’ অনুষ্ঠানে চীনা রাষ্ট্রদূত লি জিমিং এ ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করে বেইজিংকে চিঠি লিখবেন বলে জানান। লি জিমিং বলেন, বাংলাদেশ বা পৃথিবীর অন্য কোনো দেশে সামরিক কোনো সরাঞ্জম তৈরির কাজ করে না চীন। তবে কোনো দেশ চাইলে সামরিক সরঞ্জামের রক্ষণাবেক্ষণে সহযোগিতা করে চীন।
বাংলাদেশের পক্ষ থেকেও এমন অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, চীন-বাংলাদেশ ক্ষেপণাস্ত্র রক্ষণাবেক্ষণ কেন্দ্র বলে কিছু নেই এবং ভবিষ্যতে কিছু করার পরিকল্পনা নেই। সরকার লিখিতভাবে ওই সংবাদের প্রতিবাদ জানাবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
‘প্রিভেন্টিভ ডিপ্লোম্যাসি’র উপর গুরুত্ব কূটনীতিবিদদের
ভূরাজনীতির এই জটিল সমীকারণ নিয়ে ঢাকাপ্রকাশ এর সঙ্গে কথা হয় যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবির এবং আরেকজন সাবেক রাষ্ট্রদূত এ কে এম আতিকুর রহমানের সঙ্গে।
এম হুমায়ুন কবির বলেন, আগে আমরা কূটনীতিতে নরমেটিভ ফরেন পলিসি নিয়ে চলতাম। এটার মানে হলো আমরা নীতি নৈতিকতার কথা বলতাম। কোনো সমস্যার ভেতরে যেতাম না। উপর থেকে আমরা ভাল কথা বলে আমাদের অবস্থানটাকে আমরা জানান দিতাম।
প্রিভেন্টিভ ডিপ্লোম্যাসিতে অনেক বেশি জোর দিতে হবে মন্তব্য করে হুমায়ুন কবির বলেন, প্রচলিত কূটনীতি এখন আর নেই। আমরা তো ছোট দেশ। কাজেই আমাদের স্ট্র্যাটেজি হবে সংঘাত যেন আমাদের কাছে না আসে।
এতদিন ইউরোপে আমরা যে কোল্ড ওয়ার দেখেছি সেই কোল্ড ওয়ার কিন্তু ভিন্ন ফর্মে এশিয়ার দিকে স্থানান্তরিত হচ্ছে এমনটা জানিয়ে হুমায়ুন কবির বলেন, উদাহরণ হিসেবে চীন-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উত্তেজনা বলি অথবা সাম্প্রতিককালে ইউক্রেনের ঘটনাবলীর কথা বলা যায়। অর্থাৎ ভূরাজনীতিটা কিন্তু এখন আমাদের গায়ের উপর এসে পরেছে। যেটা আগে দূরে ছিল।
সাবেক এই রাষ্ট্রদূত বলেন, এখন বাংলাদেশের জন্য যেটা চ্যালেঞ্জ হয়ে এসেছে সেটা হলো এই ভূরাজনৈতিক ঘূর্ণাবর্তের মধ্যে বাংলাদেশ নিজেকে কীভাবে রক্ষা করবে। বাধ্য হয়েই ভূরাজনৈতিক কূটনীতির মধ্যে ঢুকে পড়তে হচ্ছে। আমরা চাই বা না চাই।
রাশিয়া-ইউক্রেন ইস্যুতে জাতিসংঘে ভোটাভুটিতে বাংলাদেশের অবস্থান নিয়ে হুমায়ুন কবির বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন ইস্যুতে ভোট দিলাম এটাও সমস্যা ভোট দিলাম না এটাও সমস্যা। ভূরাজনৈতিক জটিলতার মধ্যে কিন্তু বাংলাদেশ পড়ে যাচ্ছে। একটা বেসিক প্রিন্সিপল কিন্তু আমাদের মনে রাখতে হবে সেটি হলো, কোনো এক রাষ্ট্র আমার যা চাহিদা তার সবগুলো মিটাতে পারবে না।
হুমায়ুন কবির বলেন, আমাকে বুঝতে হবে যে কোন প্রায়োরিটিটা নিয়ে আামি কার সঙ্গে কাজ করব। ওই দেশের ভেতরে কীভাবে রাজনীতি বা কূটনীতিটা হয় সেটা আমাদের বুঝতে হবে। সেই জায়গাতে আমাদের দক্ষতাকে আরেকটু শান দিতে হবে।
এক্ষেত্রে শুধু পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বা কূটনীতিকদের দিয়ে হবে না মন্তব্য করে হুমায়ুন কবির বলেন, আমাদের রাজনৈতিক নেতাদেরও এ বিষয়টাতে সজাগ থাকতে হবে। দুই লেয়ারেই কাজ করতে হবে। পলিসি তো ঠিক করে দেয় রাজনীতিবিদরা। কূটনীতিকরা পারফর্ম করেন। এখন আমরা একটা জটিল অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। যেমন ইউক্রেন ইস্যু। রাজনৈতিক নেতাদেরও কিন্তু এটি হ্যান্ডেল করতে হবে।
এ ধরনের জটিলতা কিন্তু সবে শুরু হয়েছে মন্তব্য করে সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবির বলেন, সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশকে এটা প্রতিনিয়ত ফেস করতে হবে। সেজন্য যেটা করতে হবে তা হলো যেসব দেশ ভূরাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে সেই দেশগুলোকে বোঝার চেষ্টা গভীর করতে হবে। কাজেই আমদের আরও গভীরে যেতে হবে সেটা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হোক, চীন হোক, রাশিয়া হোক বা জাপান। তাহলে আমরা বুঝতে পারব তাদের চিন্তাটা কী বা তারা কী করতে চায়।
হুমায়ুন কবির বলেন, শুধু বাংলাদেশ নয় অনেক দেশই এই সমস্যায় পড়ছে। তাদের সঙ্গেও আমাদের সংযোগ বাড়াতে হবে। যাতে কোনো একটা ইস্যুতে তাদের অবস্থান বুঝে আমাদের সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ হয়।
আরেকজন সাবেক রাষ্ট্রদূত এ কে এম আতিকুর রহমান ঢাকাপ্রকাশ’কে বলেন, আমাদের স্বাধীনতা, ভৌগলিক অখণ্ডতা, আমাদের ইতিহাস ও সংস্কৃতি মাথায় রেখে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এক্ষেত্রে কোনোভাবে আপোষ করা যাবে না। সেই সঙ্গে এমন কিছু করব না যাতে আমেরিকার মানুষের সঙ্গে আমাদের ভুল বোঝাবুঝি হয়। কারণ এখনকার ডিপ্লোম্যাসির মূল কথা হলো পিপল টু পিপল কন্ট্রাক্ট।
চীনের সঙ্গেও আমাদের অনেক ব্যবসা বাণিজ্য আছে। এই বিষয়টিও লক্ষ্য রাখতে হবে। আঞ্চলিকতার একটা বিষয় আছে। চীনের সঙ্গে আমাদের যে বিনিয়োগের সম্পর্ক সেটা মাথায় রাখতে হবে। এগুলো মাথায় রেখে আমেরিকাকে হ্যান্ডল করতে হবে।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে সাবেক এই রাষ্ট্রদূত বলেন, এটা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী একটা ব্যাখ্যাও দিয়েছেন এর আগে। তিনি ব্যাখ্যায় যেটা বলেছেন সেটার সঙ্গে পুরোপুরি একমত যে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিলে আমরা হয়তো ভোটদানে বিরত থাকব। কিন্তু রাশিয়া ইউক্রেনে আক্রমণ করেছে এটাও আমরা সমর্থন করি না। যুদ্ধ আমরা কোনো সময় সমর্থন করি না। বঙ্গবন্ধু শান্তি চাইতেন। বাংলার মানুষও শান্তি চায়।
মানবিক কারণে ইউক্রেনের পক্ষে ভোট দিয়েছে বাংলাদেশ এমনটা জানিয়ে আতিকুর রহমান বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতের পাশাপাশি রাশিয়া আমাদের সহযোগিতা করেছে। সেই বিষয়টিও আমাদের মাথায় রাখতে হবে।
আরইউ/আরএ/কেএফ/