টুঙ্গিপাড়ায় হচ্ছে ফোর লেন সড়ক
বঙ্গবন্ধুর সমাধি
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মস্থান হওয়ায় গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও ঐতিহাসিক স্থান। সেখানে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ভিভিআইপিদের অংশগ্রহণ থেকে শুরু করে শিক্ষা সফরেরও স্থাপনা হয়ে গেছে। কিন্তু সড়কের প্রশস্ততা অত্যন্ত সরু। মাত্র ২৪ ফুট চওড়া। তাই টুঙ্গিপাড়া থেকে ঘোনাপাড়া পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটার সড়ক সার্ভিস লেনসহ ফোর লেনে চওড়া করা হবে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৪৭ কোটি টাকা। ২০২২ সালের মার্চ থেকে ২০২৪ সালের জুনে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। এ ব্যাপারে একটি প্রকল্প সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর থেকে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। তা যাচাই-বাছাই করতে পিইসি সভা হয়েছে। খুব শিগগিরই একনেক সভায় প্রকল্পটি অনুমোদন পেতে যাচ্ছে বলে সূত্র জানায়।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় ও পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, পিরোজপুর-নাজিরপুর-মাটিভাঙ্গা-পাটগাতি-ঘোনাপাড়া সড়কটি পিরোজপুর, নাজিরপুর, টুঙ্গিপাড়া, জিয়ানগর ভান্ডারিয়া উপজেলা থেকে ঢাকা-গোপালগঞ্জ ও ফরিদপুর জেলায় যাতায়াতের সহজ রুট। এই সড়কটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মস্থান টুঙ্গিপাড়ায় যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম। একই সঙ্গে টুঙ্গিপাড়া উপজেলার প্রধান সড়ক। ইতোমধ্যে সড়কটির ঘোনাপাড়া থেকে টুঙ্গিপাড়া অংশটি রোড টু ফ্রিডমের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
এই সড়কটি ব্যবহার করে সারা বাংলাদেশের মানুষ, ভিভিআইপি থেকে শুরু করে শিক্ষার্থীরাও শিক্ষা সফরের জন্য আসছেন। এছাড়া সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এরমধ্যে শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব চক্ষু হাসপাতাল, শেখ লুৎফর রহমান ডেন্টাল কলেজ, ধান গবেষণা কেন্দ্র, কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, বিআরটিসি ট্রেনিং ইনস্টিটিউট ও বাস ডিপো, কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, টেকনিক্যাল কলেজ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারি শেখ মুজিবুর রহমান কলেজসহ আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা গড়ে উঠেছে।
এতো গুরুতাপূর্ণ হলেও এই সড়কটি মাত্র ২৪ ফুট চওড়া। যা চাহিদার তুলনাই অত্যন্ত নগণ্য। তাই দেরিতে হলেও সম্ভাব্যতা যাচাই করে সড়ক বিভাগ থেকে একটি প্রকল্প তৈরি করা হয়েছে। এতে সড়কের উভয় পাশে সার্ভিস লেনসহ যথাযথ মানে ও প্রস্থে উন্নীতকরণের লক্ষে ‘পিরোজপুর-নাজিরপুর-মাটিভাঙ্গা-ঘোনাপাড়া সড়কের টুঙ্গিপাড়া-ঘোনাপাড়া অংশ ধীরগতির লেনসহ যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ’ প্রকল্প তৈরি করে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। সম্পূর্ণ সরকারি অর্থে এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৪৭ কোটি টাকা। বাস্তবায়নকাল ধরা হয়েছে ২০২২ মালের মার্চ থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত।
প্রকল্পের প্রধান কাজ ধরা হয়েছে— বিদ্যমান পেভমেন্ট প্রশস্তকরণ ও মজবুতিকরণ করা হবে ৭ দশমিক ৩০ মিটার থেকে ১০ দশমিক ৩০ মিটার পর্যন্ত। বিদ্যমান আটটি কালভার্ট প্রশস্তকরণ, সড়ক বাঁধ প্রশস্তকরণ (মাটির কাজ) ৫ লাখ ঘনমিটার। ১০ হাজার মিটার আরসিসি রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণ। এছাড়া ১২টি বাস-বে তৈরি, তিনটি পার্কিং জোন, ১১ কিলোমিটার বৃক্ষরোপণ ও প্রায় ৭ হাজার বর্গমিটার রোড মার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তা যাচাই-বাছাই করতে সম্প্রতি পরিকল্পনা কমিশনে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সভায় জানানো হয়েছে প্রকল্পটি অত্যন্ত লাভজনক। এটি বাস্তবায়ন হলে উন্নত সড়ক হবে। এতে বছরে ৩১ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। আবার ঐতিহাসিক স্থানে নিরাপদে যাতায়াতেরও সুযোগ হবে। বিভিন্ন প্রকল্পে অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য বিদেশ ভ্রমণ ও পরামর্শক ব্যয় ধরা হলেও এ প্রকল্পে এই ব্যয় ধরা হয়নি। তাই সভায় কোনো ব্যাপারে তেমন কোনো ওজর আপত্তি করা হয়নি। অন্যান্য কাজ শেষ করে খুব শিগগিরই জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে প্রকল্পটি অনুমোদন পেতে যাচ্ছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর বলে সূত্র জানায়।
জেডএ/আরএ/