ফুলবাড়ীয়ার ২৬৪ বছরের ঐতিহ্যবাহী হুমগুটি খেলা
পৌষ মাসের শেষ দিন ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলায়, একই সময়ে, একই স্থানে, আড়াই শতাধিক বছর ধরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে একটি খেলা। পিতলের তৈরি ৪০ কেজি ওজনের একটি বল নিয়ে কাড়াকাড়ি। ময়মনসিংহ অঞ্চলের জনপ্রিয় এই খেলার নাম 'হুমগুটি'।
ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়ায় ২৬৪ বছরের ঐতিহ্যবাহী হুমগুটি খেলাকে ঘিরে চলছে উৎসবের আমেজ। শুক্রবার (১৪ জানুয়ারি) পৌষের শেষ বিকেলে শুরু হবে ঐতিহ্যবাহী এ খেলা ।
হাজার হাজার গুটি খেলোয়াড়ের মুখে 'জিততই আবা দিয়া গুটি ধররে ... হেইও' স্লোগানে মুখরিত হবে এলাকা। খেলাকে ঘিরে ফুলবাড়ীয়া উপজেলার লক্ষীপুর গ্রামে উৎসবের আমেজ বিরাজ করেছে। হুমগুটি খেলার আয়োজক নেই বললেই চলে, নেই পুরস্কার। তারপরও খেলবে সবাই।
জানা যায়, মুক্তাগাছার জমিদার রাজা শশীকান্তের সাথে ত্রিশালের বৈলরের হেম চন্দ্র রায় জমিদারের জমির পরিমাপ নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হয়। জমিদার আমলের শুরু থেকেই তালুকের প্রতি কাঠা জমির পরিমাপ ছিল ১০ শতাংশে, পরগনার প্রতি কাঠা জমির পরিমাপ ছিল সাড়ে ৬ শতাংশে। একই জমিদারের ভূখণ্ড দুই নীতির বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ গড়ে ওঠে। জমির পরিমাপ নিয়ে সৃষ্ট বিরোধ মীমাংসার জন্য লক্ষীপুর গ্রামের বড়ইআটা নামক স্থানে প্রথমবারের মতো আয়োজন করা হয় এই গুটি খেলা। শর্ত ছিল, গুটি যে দিকে যাবে তা হবে তালুক, পরাজিত অংশের নাম হবে পরগনা। জমিদার আমলের গুটি খেলায় মুক্তাগাছা জমিদারের প্রজারা বিজয়ী হন। তালুক পরগনার সীমান্তে জিরো পয়েন্টে ব্রিটিশ আমলে জমিদারী খেলার গোড়াপত্তন। আমন ধান কাটা শেষ, বোরো ধান আবাদের আগে প্রজাদের শক্তি পরীক্ষার জন্য জমিদারদের এই পাতানো খেলা চলছে বছরের পর বছর ধরে।
কেএফ/