খুলনায় স্বাস্থ্যবিধি মানছে না কেউ
অমিক্রন সংক্রমণরোধে বিধিনিষেধের আজ প্রথম দিন। বেঁধে দেওয়া কোনো নিয়ম মানছেন না সাধারণ মানুষ। স্বাস্থ্যবিধি মানতে দেখা যায়নি গণপরিবহনেও। নগরীর মার্কেটগুলোতেও একই অবস্থা।
সকাল সাড়ে ১১টার দিকে নগরীর ব্যস্ততম এলাকা ডাকবাংলার কয়েকটি মার্কেট ঘুরে অমিক্রনের ব্যাপারে উদাসীনতা দেখা গেছে। অনেকে মাস্ক মুখে না লাগিয়ে থুতনিতে ঝুলিয়ে ঘুরছে। সোনাডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে গিয়েও একই দৃশ্যের দেখা মেলে। কাউন্টারগুলোতে যাত্রীদের জটলা। কারো মুখে মাস্ক নেই। ছবি তুলতে গেলে অনেকে তড়িঘড়ি করে মুখাবরণ পরে নিচ্ছে। হোটেলগুলোতে বাস্তবতার ভিন্ন চিত্র পরিলক্ষিত হয়। একে অপরের গায়ের সঙ্গে লাগোয়াভাবে বসে খাওয়া দাওয়া করতে দেখা গেছে। স্বাস্থ্যবিধি মানতে আগ্রহ দেখা যায়নি নগরীর খেয়া ঘাটগুলোতেও।
ডাকবাংলা মোড় শহীদ সোহরাওয়ার্দী মার্কেটে কথা হয় রূপসা উপজেলার রামনগর এলাকার জিহাদের সঙ্গে। সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ার পর তাকে তড়িঘড়ি করে মুখে মাস্ক পরতে দেখা যায়। অমিক্রনের ভয়াবহতা সম্পর্কে জানতে চাইলে উত্তরে তিনি জানান, ‘আল্লাহ যা করবেন সেটি সকলের মেনে নিতে হবে।’ মার্কেটে আসার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, শুক্রবার বোনের বিয়ে উপলক্ষে সকলকে নিয়ে এখানে এসেছেন।
সোনাডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে পাইকগাছাগামী একটি বাস অর্ধেক যাত্রী নিয়ে স্ট্যান্ড ত্যাগ করে। কিন্তু রাস্তা থেকে যাত্রী তুলতে তুলতে গল্লামারী স্ট্যান্ডে গিয়ে পরিপূর্ণ যাত্রী নিয়ে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। এ সময় বাসের যাত্রীসহ বাসের ছবি তুলতে গেলে ওই পরিবহনের চালক ও হেলপার রুঢ় আচারণ করেন।
চালানাগামী ‘মাতা পিতার দোয়া’ নামে একটি বাস সোনাডাঙ্গা থেকে রওনা হয়। গল্লামারী এসে দেখা যায় একই অবস্থা। চালক হালিম বলেন, ‘সরকার ভাড়া বাড়ায়নি। কিন্তু যাত্রী অর্ধেক নিয়ে চলতে বলেছে। কিন্তু রাষ্ট্রপ্রধানের কথা মানলে পেট মানবে না, সাথে মালিকও বাঁচবে না।’
পত্রিকাবাহী একটি মাইক্রোবাস সোনাডাঙ্গা থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে দুপুর ১টার দিকে ছেড়ে যায়। সেখানে ১৪টি আসনেই যাত্রী ছিল তাও আবার গাদাগাদি করে। বসাকে কেন্দ্র করে দুই যাত্রীর মধ্যে বচসা শুরু হয়। পরে চালকের হস্তক্ষেপে মীমাংসা হয়।
অধিক যাত্রী নিয়ে গাড়ি ছাড়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে চালক বলেন, বেতন যা পাই তা দিয়ে সংসার চলে না। তাই ফিরতি পথে বাড়তি আয়ের জন্য এ উপায় অবলম্বন করা।
অপরদিকে রূপসা খেয়া ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, অধিক যাত্রী নিয়ে নৌকা পারাপার করছেন মাঝিরা। সরকার যে আজ থেকে বিধিনিষেধ জারি করেছে তা অনেকে জানে না।
অধিক যাত্রী নিয়ে নগরীতে চলাচল করছে ইজিবাইকও। মালিকের পরিবহন ভাড়া বৃদ্ধির কারণে তারা অধিক যাত্রী বহন করছে বলে আরিফ নামের এক চালক জানান। তাছাড়া আজ থেকে যে বিধি নিষেধ আরোপ করা হয়েছে তা তিনি জানেন না।
এসআই/এএন