চুয়াডাঙ্গায় স্বামী-স্ত্রী হত্যা মামলায় ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড
মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত আসামিরা। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ
চুয়াডাঙ্গায় আলমডাঙ্গায় স্বামী ও স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা মামলায় ৩ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও ১ জনকে দুই বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত। এ ছাড়া আসামিদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) দুপুরে চুয়াডাঙ্গা অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মাসুদ আলী এই রায় দেন। রায়ের পর আসামিদের বিকালে চুয়াডাঙ্গা জেলা কারাগারে নেওয়া হয়েছে।
মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্তরা হলেন- চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার আসাননগর গ্রামের ক্লাবপাড়ার বজলুর রহমানের ছেলে সাহাবুল হক (২৪) একই গ্রামের শেষপাড়ার পিন্টু রহমানের ছেলে রাজিব হোসেন (২৫) এবং ওই গ্রামের মাঝেরপাড়ার মাসুদ আলীর ছেলে বিদ্যুৎ আলী (২৩)।
কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন- আসাননগর গ্রামের স্কুলপাড়ার তাহাজ উদ্দিনের ছেলে শাকিল আহমেদ (২৩)।
মামলার ও এজাহারের বিবরণে জানা যায়, চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গা পৌর এলাকার পুরাতন বাজারপাড়ায় বৃদ্ধ নজির মিয়া ও তার স্ত্রী ফরিদা খাতুন বসবাস করতেন। প্রতিদিনের ন্যায় ২০২২ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর রাতে খাওয়া শেষে তারা ঘুমিয়ে পড়েন। ওই দিন রাতে যে কোনো সময় অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা নজির মিয়ার বাড়িতে প্রবেশ করে চুরির উদ্দেশ্য। প্রথমে নজির মিয়াকে গোসলখানার ভেতর হাত-পা বেঁধে জবাই ও কুপিয়ে হত্যা করে। পরে তার স্ত্রীকে ঘরের ভেতর জবাই করে হত্যা করে।
এ ঘটনার পর নিহতের মেয়ে ডালিয়ারা পারভীন ২৪ সেপ্টেম্বর সকালে বাবা-মায়ের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে একাধিক বার কল দিলে সেটা বন্ধ পাওয়া যায়। পরে ঘটনাস্থলে পৌঁছে মেয়ে ও জামাই দুজনের রক্তাক্ত মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে। এরপর পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় নিহতের মেয়ে ডালিয়ারা পারভীন বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে আলমডাঙ্গা থানায় ২৫ সেপ্টেম্বর একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা নম্বর-১১।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর মোহাম্মদ শিহাব উদ্দীন তদন্ত শেষে হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত সাহাবুল হক, রাজিব হোসেন, বিদ্যুৎ আলী ও ভিকটিমের মোবাইল ফোন কেনার সঙ্গে জড়িত শাকিল হোসেনকে অভিযুক্ত করে ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।
৩৭ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য প্রমাণ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় বিজ্ঞ বিচারক মো. মাসুদ আলী আসামিদের উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন।
এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট গিয়াস উদ্দিন। আসামি পক্ষের কৌশলী ছিলেন অ্যাডভোকেট বজলুল রহমান, অ্যাডভোকেট নাজমুল হাসান লাভলু, অ্যাডভোকেট মোখলেছুর রহমান, অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান মিল্টন ও অ্যাডভোকেট আনারুল হক।