শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫ | ২৯ চৈত্র ১৪৩১
Dhaka Prokash

১৪ বছরে ১৪৮৬ কোটি টাকা ব্যয়েও কাটেনি সিলেটের জলাবদ্ধতা

সিলেট নগরবাসীর অন্যতম প্রধান সমস্যা জলাবদ্ধতা। অল্প বৃষ্টিতেই এই সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করে। এর কারণে ময়লা-অবর্জনার স্তুপ থেকে দুর্গন্ধ ছড়ায়। বাসা-বাড়ি ও রাস্তাঘাটে যত্রতত্র ভেসে উঠে আবর্জনার স্তুপ। সামনেই বর্ষার মৌসুম। অথচ বর্ষার আগেই জলাবদ্ধতার আতঙ্কে নগরবাসী। গ্রীস্মকালীন অল্প বৃষ্টিতেও এমন রূপ এখন ভীতি চড়াচ্ছে নগরজুড়ে। প্রাপ্ত তথ্য বলছে, জলাবদ্ধতা নিরসনে গেল ১৪ বছরে ১ হাজার ৪৮৫ কোটি ৪০ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। তবে সুফল পায়নি নগরবাসী। এর জন্য সিসিককে কাঠগড়ায় দাঁড় করাচ্ছেন তারা। তাদের দাবি, সিসিকের সুস্পষ্ট পরিকল্পনা না থাকায় সরকারি টাকায় অপচয় আর লোটপাট হয়েছে কিন্তু জলাবদ্ধতার নিরসন হয়নি। এত টাকা খরচের পরও নগরের জলাবদ্ধতামুক্ত না হওয়ায় এসব প্রকল্পের অনিয়ম নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

নগরবিদরা বলছেন, যেকোনো নগরের অবকাঠামোগত উন্নয়নের পিছনে থাকে একটি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা। আর পরিকল্পনা হতে হবে সেই নগরের ভূ-প্রকৃতি, জলবায়ু, নগর জীবন ও সংস্কৃতি নির্ভর। আর নগর পরিকল্পনাবিদরা সেই কাজটিই করে থাকেন। তাদের সুপারিশ কিংবা পরামর্শ গ্রহণ করা হলে নগরীর জলাবদ্ধতা স্থায়ীভাবে সমাধান করা সম্ভব হতো। তবে সিসিকের প্রতি ক্ষোভ নাগরিকদের। তাদের বক্তব্য, কোনো প্রকল্প বাস্তবায়নে সিসিক কখনো সংশ্লিষ্ট অভিজ্ঞদের পরামর্শ গ্রহণ করে না।

জলাবদ্ধতা নিরসনে যত প্রকল্প
নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে গেল ১৪ বছরে প্রকল্প হয়েছে ৪ টি। এর মধ্যে তিন প্রকল্পে সরকার বরাদ্ধ দেয় ১১ কোটি টাকা। ২০০৯ সালে এই প্রকল্পের আওতায় নগরীর ছড়াগুলো উদ্ধার কার্যক্রম চালায় সিটি করপোরেশন। এরপর ২০১৩ সালে একই লক্ষ্যে গ্রহণ করা হয় ২০ কোটি টাকার আরেকটি প্রকল্প। এরপর ২০১৬ সালে নেওয়া হয় ২৩৬ কোটি ৪০ লাখ টাকার প্রকল্প। এর মধ্যে এই ৩টি প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে। তবে অভিজ্ঞরা বলছেন, সিসিকের নির্ধারিত অ্যাকশন প্ল্যান না থাকায় প্রকল্পগুলো থেকে দৃশ্যমান অগ্রগতি চোখে পরেনি। যার ফলে দুর্ভোগ আরও বেড়েছে বরং কমেনি।

সর্বশেষ ২০২০ সালের ডিসেম্বেরে জলাবদ্ধতা নিরসন, বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ ও অবকাঠামো নির্মাণের জন্য ১ হাজার ২২৮ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয় সরকার। প্রশ্ন উঠেছে গেল একযুগ ধরে এত প্রকল্প, এত বরাদ্ধ স্বত্বেও কি পেল নগরবাসী? তারা না জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পেয়েছে, না বন্যার গ্রাস থেকে মুক্তির সম্ভাবনা দেখতে পেরেছে। সব মিলিয়ে আসন্ন বর্ষার আগেই শঙ্কায় সিলেট নগরবাসী।

নগরীতে যতো নদী, খাল ও ছড়া
বাপা’র দেওয়া তথ্য মতে, সিলেট নগরীর ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে সুরমা ও কুশী নদী। তাছাড়া গাভীয়ার খাল (নবাব রোড, কানিশাইল), জৈন্তার খাল ( ২৫ নং ওয়ার্ড বারখলা) রত্নারখাল ( ২৫ নং ওয়ার্ড বারখলা) ও বসুর খাল (কুয়ারপাড়) নিয়ে মোট ৪টি খাল রয়েছে । আর ছড়া রয়েছে প্রায় ২৫টি। ছড়াগুলো হলো- বারুতখানা ছড়া, জল্লার ছড়া, মির্জাজাঙ্গাল ছড়া, কেওয়া ছড়া, বৈঠা ছড়া, মালনী ছড়া (চৌকিদেখি-হাউজিং এস্টেত-মিরেরময়দান-সাগরদিঘি-বাঘবাড়ি),মংলী ছড়া (রিকাবীবাজার),মঙ্গলী ছড়া (লোহারপাড়া-দরগাগেইট),মোগলী ছড়া,মুগনী ছড়া (কাজিরবাজার), গোয়ালী ছড়া (তেররতন-উপশহর-ছড়ারপাড়), কালীবাড়ী ছড়া, হলদি ছড়া (শাপলাবাগ, ব্রাম্মণপাড়া, সাদীপুর), যুগনী ছড়া, ধোপা ছড়া, বুবি ছড়া,বাবু ছড়া (দক্ষিণ সুরমা) বলরাম ছড়া (জিন্দাবাজার-জামতলা-তালতলা)।

সিটি করপোরেশন সূত্র জানায়, সিলেট নগরীর ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে ছোট-বড় প্রায় ২৫টি ছড়া। তবে দখল-দূষণে এখন অনেক স্থানে ছড়ার অস্তিত্বই হারিয়ে গেছে। নগরের ভেতর দিয়ে বয়ে যাওয়া ১৩টি বড় ছড়ার দৈর্ঘ্য প্রায় ৭৩ কিলোমিটার। দীর্ঘদিন ধরে এসব ছড়ার দুই পাশ দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করেছেন অবৈধ দখলদাররা। এই ছড়াগুলো উদ্ধারে এই ৩টি প্রকল্পে এখন পর্যন্ত প্রায় ৪০০ কোটি টাকা ব্যয় করেছে সিলেট সিটি করপোরেশন । সর্বশেষ ২০১৬ সালে ছড়া-খাল দখলমুক্ত করতে ২৩৬.৪০ কোটি টাকার বৃহৎ একটি প্রকল্প নেওয়া হয়। তবে এসব বৃহৎ প্রকল্পের পরও ছড়া দখলমুক্ত করা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।

যে কারণে জলাবদ্ধতা
প্রথমত, সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে ছড়া-খাল দখলদারদের একটি তালিকা করা হয় ২০১৬ সালে। এতে ২৬৮ জনকে দখলদার হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। দখলদারদের বেশিরভাগই প্রভাবশালী। এ ছাড়াও কয়েকটি সরকারি প্রতিষ্ঠানও রয়েছে। ছড়া-খাল দখল করে এরা গড়ে তুলেছেন বহুতল ভবন। অনেকে পরিবর্তন করে ফেলেছেন ছড়ার গতি। ফলে বন্ধ হয়ে গেছে পানি নিষ্কাশনের পথ। এতে বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এ ছাড়াও এই সময়ে নগরের জলাবদ্ধতা নিরসনে আরও কয়েকটি ছোট ছোট প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়। তবে এত প্রকল্প, এত অর্থব্যয় সত্বেও প্রভাবশালী দখলদারদের উচ্ছেদ করতে না পারায় এসব প্রকল্পে তেমন সাফল্য আসেনি। মুক্তি মেলেনি জলাবদ্ধতা থেকে।

দ্বিতীয়ত, পানির অবাধ প্রবাহ রক্ষায় ছড়া-খালকে অবৈধ দখলবাজদের কবল থেকে রক্ষা করতে হবে। প্রাকৃতিক ছড়ার বৈশিষ্ট্য নষ্ট করে দুই পাশে গার্ডওয়াল নির্মাণ করে পাহাড় থেকে নেমে আসা ‘ছড়া’ নামের পানির এই প্রবাহকে ড্রেনে রূপান্তরিত বন্ধ করতে হবে। এতে ছড়াগুলো তাদের প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য হারায়। ঢাকা ব্যতীত বাংলাদেশের আর কোনো বিভাগীয় শহরে সিলেটের মতো এতগুলো প্রাকৃতিক ছড়া বা খাল নেই। প্রতিটি ছড়ার ছিল নিজস্ব বাস্তুতন্ত্র। বিভিন্ন পণ্য প্রাণী ও জলজ প্রাণের উপস্থিতি ছিল এই ছড়াগুলোতে। গার্ডওয়ালের জন্য ছড়ার এই বৈশিষ্ট্য নষ্ট হয়ে গেছে। তা ছাড়াও পয়: নিষ্কাশনের পানি ও নাগরিক বর্জ্য ছড়া বা খালে নিক্ষেপ অব্যাহত আছে। এর কারণ যে পরিমাণ অর্থ দখল-দূষণ থেকে বাঁচানোর জন্য ছড়ার পেছনে ব্যয় হয়েছে এর সামান্য অংশ দূষণবিরোধী সচেতনতামূলক কার্যক্রমে ব্যয় করা হয়নি। দখলদারদের বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ে একটি বড় অংকের অর্থ বরাদ্দ রাখাও প্রাসঙ্গিক।

যেভাবে করতে হবে সমাধান
ভূ-প্রকৃতিগত বা অবস্থানগত কারণে যেমন সব নগর সমান নয়, একইভাবে সব নগরের জীবনধারণ প্রণালীও এক নয়। যেমন সিলেট অঞ্চল অনেকটা সমতল ও পাহাড়ি অঞ্চলে অবস্থিত। এর আশেপাশে প্রচুর টিলা এবং চা বাগান রয়েছে। ফলে বর্ষাকালে নেমে আসা ঢল সেগুলো শহরের বিভিন্ন ছড়া, নালা ও খাল দিয়ে প্রবাহিত হয়। এই পানির অবাধ প্রবাহ রক্ষায় ড্রেনেজ ব্যবস্থা এমন হতে হবে যেন সবটুকু পানি গিয়ে মিলিত হয় নদীর সাথে। কিন্তু সিলেটের ক্ষেত্রে সেটি হচ্ছে না। এর ফলে অল্প বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতার কবলে পরে সিলেট। একই সাথে ড্রেনগুলোতে ঢাকনা না থাকায় কিছু সংখ্যক মানুষ ময়লা-আবর্জনা ফেলার জন্য খোলা ড্রেনগুলোকে ব্যবহার করেন। সুরমা নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে গেছে। এর কারণে নগরের পানি নিষ্কাশন হতে পারে না। নগরকে জলাবদ্ধতামুক্ত করতে হলে সুরমা নদী খনন করতে হবে। তা না হলে কেবল ছড়া উদ্ধার করে কোনো সুফল মিলবে না।

এ ছাড়াও ময়লা-আবর্জনা ফেলার জন্য যত সম্ভব নগরীতে বাস্কেট ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। মাইকিং ব্যবস্থার মাধ্যমে বাড়াতে হবে সচেতনতা। তদারকি টিম গঠন করে মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে। একই সঙ্গে ধর্ম প্রচারকদের ব্যবহার করে নোঙড়া আবর্জনার কুফল সম্পর্কে সম্যক ধারণা প্রদানসহ ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের সম্পৃক্ত করতে হবে।

যা বলছে সিসিক
এ ব্যাপারে সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নুর আজিজুর রহমান বলেন, নগরীতে আগের মতো আর জলাবদ্ধতা হয় না। অধিক বৃষ্টিতে নগরীর কিছু এলাকায় পানি জমলেও অল্প সময়ের মধ্যে তা নেমে যায়।

তিনি বলেন, অনেক ক্ষেত্রে আমরা দখলদারদের উচ্ছেদ করার পর ফের ছড়া দখল হয়ে যায়। এ ছাড়াও ময়লা-আবর্জনা ফেলেও ছড়ার পানি নিষ্কাশনে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করা হয়। এজন্য সমন্বিত উদ্যোগ দরকার। এটা কোনোভাবেই সিটি করপোরেশনের একার পক্ষে সম্ভব নয়।

অভিজ্ঞজনদের মতামত
সিলেট নগরের উন্নয়নের মহাপরিকল্পনা প্রণয়নের সঙ্গে যুক্ত শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ ও পুর প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. জহির বিন আলম বলেন, সুরমা নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে গেছে। এর কারণে নগরের পানি নিষ্কাশন হতে পারে না। নগরকে জলাবদ্ধতামুক্ত করতে হলে সুরমা নদী খনন করতে হবে। তা না হলে কেবল ছড়া উদ্ধার করে কোন সুফল মিলবে না।

শিক্ষাবিদ মো. তাজুল ইসলাম বলেন, নাগরিক সেবা সুনিশ্চিত করার জন্য সুপরিকল্পিত নগরায়নের পূর্বশর্ত। এক্ষেত্রে জরুরি, সেবা প্রদানকারী বিভিন্ন সংস্থার সমন্বিত অংশগ্রহণ ও সময়ের প্রয়োজনে একই ছাতার নিচে নিয়ে আসা। গুরুত্ব বিবেচনায় সময়ানুগ প্রকল্প গ্রহণ এবং বরাদ্দ সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন।

তিনি আরও বলেন, নদীর নাব্যতা রক্ষার জন্য নদী শাসনের পাশাপাশি ড্রেনেজ সিস্টেমের আধুনিকিকরণ। সর্বোপরি বিশেষজ্ঞ নগরবিদদের মতামতকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়ার মধ্য দিয়ে সরকারি অর্থের যথাযথ ব্যবহারে নাগরিক জীবনে সেবা নিশ্চিত করা যাবে বলে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি।

সিলেটের নাগরিক আন্দোলনের অন্যতম নেতা ও বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেট শাখার সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম কিম বলেন, সিলেট নগরীর ছড়া বা খাল দখলদারদের থেকে উদ্ধার ও সংরক্ষণের জন্য বিভিন্ন মেয়াদে সরকারের কাছ থেকে বিরাট অংকের অর্থ বরাদ্দ পেয়েছে সিলেট সিটি করপোরেশন। কিন্তু দখলদারদের থেকে এখনও মুক্ত হয়নি অনেক ছড়া। উপরন্তু ছড়া রক্ষা করতে যেয়ে প্রাকৃতিক ছড়ার বৈশিষ্ট্য নষ্ট করে দুই পাশে গার্ডওয়াল নির্মাণ করে পাহাড় থেকে নেমে আসা 'ছড়া' নামের পানির এই প্রবাহকে ড্রেনে রূপান্তরিত করা হয়েছে। এর ফলে ছড়াগুলো তাদের প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য হারিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, এই অপকর্মের জন্য এককভাবে সিটি করপোরেশনকে দায়ী করা ঠিক হবে না। এর দায় পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের উপরেই বর্তায়।

বাপার এই নেতা বলেন, যে পরিমাণ সরকারি অর্থ দখল-দূষণ থেকে বাঁচানোর জন্য ছড়ার পেছনে ব্যয় হয়েছে এর সামান্য অংশ দূষণবিরোধী সচেতনতামূলক কার্যক্রমে ব্যয় করা হয়নি। উচিত ছিল দখলদারদের বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ে একটি বড় অংকের অর্থ বরাদ্দ রাখা। তা করা হয়নি। তাই সামগ্রিকভাবে বলতে হবে, সিলেট নগরীর ছড়া বা খাল দখল ও দূষণমুক্ত করতে সরকারের বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যয় হয়েছে ঠিকই কিন্তু সেই ব্যয় রয়েছে দূরদর্শিতার অভাব। সেই ব্যয় কোনোভাবেই প্রকৃতি বান্ধব নয়।

এসআইএইচ

 

Header Ad
Header Ad

কুল-বিএসপিএ স্পোর্টস অ্যাওয়ার্ডে বর্ষসেরা ক্রীড়াবিদ মিরাজ, দর্শক পছন্দে সেরা ঋতুপর্ণা

ছবি: সংগৃহীত

২০২৪ সালের কুল-বিএসপিএ স্পোর্টস অ্যাওয়ার্ডে বর্ষসেরা ক্রীড়াবিদ নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ। শুক্রবার (১১ এপ্রিল) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে আয়োজিত জমকালো অনুষ্ঠানে তার হাতে এই পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।

অন্যদিকে, দর্শক ভোটে সর্বাধিক পছন্দের ক্রীড়াবিদ হিসেবে ‘পপুলার চয়েজ অ্যাওয়ার্ড’ অর্জন করেন নারী সাফ জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা জাতীয় নারী ফুটবল দলের মিডফিল্ডার ঋতুপর্ণা চাকমা।

এ বছর ‘স্পোর্টস পারসন অব দ্য ইয়ার’ পুরস্কার জয়ের দৌড়ে মিরাজ পেছনে ফেলেছেন ঋতুপর্ণা এবং ২০২৪ প্যারিস অলিম্পিকে কোয়ালিফাই করা আর্চার সাগর ইসলামকে। অপরদিকে, ‘পপুলার চয়েজ’ বিভাগে ঋতুপর্ণা এগিয়ে যান মিরাজ ও উদীয়মান পেসার নাহিদ রানাকে ছাড়িয়ে।

 

ছবি: সংগৃহীত

১৯৬৪ সাল থেকে ক্রীড়াবিদদের স্বীকৃতি জানিয়ে আসা দেশের সবচেয়ে প্রাচীন ক্রীড়া সাংবাদিকদের সংগঠন বাংলাদেশ স্পোর্টস প্রেস অ্যাসোসিয়েশন (বিএসপিএ) এবছর ১৫টি বিভাগে মোট ১৩ ব্যক্তি, দল ও সংস্থাকে সম্মাননা দেয়। সংগঠনের সভাপতি রেজওয়ান উজ জামান রাজিবের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং স্কয়ার টয়লেট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অঞ্জন চৌধুরী।

পুরস্কার গ্রহণ করে মিরাজ বলেন, “বিএসপিএকে ধন্যবাদ প্রতি বছর এমন আয়োজনের জন্য। এটা আমাদের খেলোয়াড়দের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস।” ভুটানে লিগ খেলায় ব্যস্ত থাকায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে না পারলেও ভিডিও বার্তায় ঋতুপর্ণা জানান, “এই সম্মান আমাকে আরও ভালো করার অনুপ্রেরণা দেবে।”

Header Ad
Header Ad

রাজধানীর ওয়াসার পানিতে কিলবিল করছে পোকা, মগবাজার-মধুবাগে তীব্র ভোগান্তি

রাজধানীর ওয়াসার পানিতে কিলবিল করছে পোকা। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর মগবাজার ও মধুবাগসহ বিভিন্ন এলাকায় ওয়াসার পানিতে পোকা ও ময়লার উপস্থিতি নিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন বাসিন্দারা। ট্যাপের পানি দুর্গন্ধযুক্ত ও অস্বচ্ছ হওয়ায় তা রান্না, গোসল ও দৈনন্দিন কাজে ব্যবহার করতে গিয়ে নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, বাসার পানির ট্যাঙ্ক একাধিকবার পরিষ্কার করেও মিলছে না সমাধান। ওয়াসার সাপ্লাই পাইপ থেকেই এই সমস্যার উৎপত্তি বলে মনে করছেন তারা।

মধুবাগ এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, “এই পানি দিয়ে রান্না ও গোসল সম্ভব না। আমাদের বাসার শিশুরা পানি খেতেই চায় না। বাধ্য হয়ে পাম্প থেকে পানি এনে ব্যবহার করতে হচ্ছে।” আরেকজন জানান, “ট্যাঙ্ক পরিস্কার করলে প্রথমে কিছুদিন ভালো থাকে, তারপর আবার পোকা দেখা দেয়।”

বিকল্প না থাকায়, অনেকেই ট্যাপের মুখে কাপড় বেঁধে পানি ব্যবহার করছেন। কিন্তু তারপরও পেটের অসুখ ও চর্মরোগের প্রকোপ বাড়ছে বলেও জানান স্থানীয়রা।

এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঢাকা ওয়াসার তিনজন কর্মকর্তা মধুবাগ এলাকায় পরিদর্শনে যান এবং কয়েকটি বাসা থেকে পানি সংগ্রহ করে পরীক্ষায় পোকা পাওয়ার কথা স্বীকার করেন। তবে দায় চাপান ট্যাঙ্ক ঠিকমতো পরিষ্কার না করাকে। ওয়াসার উপসহকারী প্রকৌশলী তৌফিক আহমেদ চৌধুরী বলেন, “লাইনের পানি পরিষ্কার। ট্যাঙ্ক যদি নিয়মিত পরিষ্কার করা হয়, তাহলে এ সমস্যার স্থায়ী সমাধান হবে।”

তবে এই ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট নন এলাকাবাসী। তারা বলছেন, নিয়মিত ট্যাঙ্ক পরিষ্কারের পরও পানি দূষিত হচ্ছে, যা পাইপলাইনের সমস্যার ইঙ্গিত দেয়। এ অবস্থায় ওয়াসার কর্মকর্তারা পাইপের মান যাচাইয়ের আশ্বাস দিয়েছেন। এলাকাবাসী দ্রুত সমস্যার স্থায়ী সমাধান চেয়ে কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

Header Ad
Header Ad

বিদেশি আইনের আওতায় পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার উদ্যোগ: গভর্নর

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর জানিয়েছেন, পাচার হওয়া অর্থ দেশে ফেরাতে হবে বিদেশি আইনের মাধ্যমে এবং এ উদ্যোগ সম্পূর্ণ নতুন। শুক্রবার (১১ এপ্রিল) বিকেলে বাংলাদেশ ব্যাংকের চট্টগ্রাম কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়াটি দেশের নয়, বরং বিদেশের আইনের সঙ্গে সংযোগ রেখে করতে হবে। এর জন্য আগে সংশ্লিষ্ট তথ্য সংগ্রহ করতে হবে এবং এস্টেট (সম্পদ) ফ্রিজ করে আদালতের মাধ্যমে বাকি প্রক্রিয়া চালাতে হবে।”

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “প্রথমে এস্টেটগুলো ফ্রিজ করার চেষ্টা করছি। বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আলোচনা চলছে, চিঠি পাঠানো হচ্ছে। আইন পরামর্শক নিয়োগে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। এস্টেট ট্রেসিং ফার্মের সঙ্গেও আলোচনা চলছে। আগামী ছয় মাসের মধ্যে এস্টেট ফ্রিজ করা গেলে এটিই হবে প্রথম সাফল্য।”

এক প্রশ্নের উত্তরে গভর্নর বলেন, “আমার ধারণা, প্রায় আড়াই থেকে তিন লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে। শুধু বেক্সিমকো গ্রুপেরই প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকার মতো অর্থ পাচার হয়েছে। এগুলো বড় গ্রুপের হিসাব, ছোট গ্রুপগুলো এখনো বিবেচনায় আনা হয়নি। ভবিষ্যতে যেন এমন না ঘটে, সে জন্য আমরা প্রয়োজনীয় নিয়ম-কানুন সংশোধনের উদ্যোগ নিচ্ছি।”

তিনি আরও বলেন, “সব সময় আদালতের মাধ্যমে সমাধান না করে, কিছু ক্ষেত্রে সমঝোতার ভিত্তিতেও (আউট অব কোর্ট সেটেলমেন্ট) টাকা ফেরত আনার চিন্তা করছি। তবে সেটার আগে সুনির্দিষ্ট তথ্য থাকা জরুরি, না হলে আমরা ঠকে যাব।”

মুদ্রাস্ফীতি সংক্রান্ত এক প্রশ্নে গভর্নর বলেন, “অতীতে খাদ্য মুদ্রাস্ফীতি ৯-১০ শতাংশ দেখানো হলেও বাস্তবে তা ছিল ১৩-১৪ শতাংশ। তবে এখন সেটি ৮-৯ শতাংশে নেমেছে। সামগ্রিকভাবে মুদ্রাস্ফীতি কমতির দিকেই। আগামী বছরে তা ৫ শতাংশ বা তার নিচে নামিয়ে আনা সম্ভব হবে বলে আশা করছি।”

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মো. জামাল উদ্দিন, ফাইন্যান্স ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের পরিচালক মো. আনিসুর রহমানসহ চট্টগ্রাম কার্যালয়ের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সঞ্চালনায় ছিলেন উপপরিচালক মো. জোবাইর হোসেন।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

কুল-বিএসপিএ স্পোর্টস অ্যাওয়ার্ডে বর্ষসেরা ক্রীড়াবিদ মিরাজ, দর্শক পছন্দে সেরা ঋতুপর্ণা
রাজধানীর ওয়াসার পানিতে কিলবিল করছে পোকা, মগবাজার-মধুবাগে তীব্র ভোগান্তি
বিদেশি আইনের আওতায় পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার উদ্যোগ: গভর্নর
মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম বদল নয়, বরং ঐতিহ্যে ফেরত: ঢাবি উপাচার্য
তৃতীয় বিয়ের ইতি, রোশন সিংয়ের সঙ্গে আইনিভাবে বিচ্ছিন্ন শ্রাবন্তী
৬৪ জেলা নিয়ে তৃণমূল ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজনের ঘোষণা ক্রীড়া উপদেষ্টার
আগামীকাল শনিবার রাজধানীতে “মার্চ ফর গাজা”, পাঁচটি স্থান থেকে শোভাযাত্রা শুরু
অবশেষে নতুন চুক্তি সালাহর, লিভারপুলে থাকছেন ২০২৭ পর্যন্ত
পহেলা বৈশাখের শোভাযাত্রায় হাসিনার মুখাবয়ব
ইলন মাস্কের বিরুদ্ধে মামলা করল ওপেনএআই
রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় মৃদু ভূমিকম্প
অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে নাগরিক কমিটির নেত্রী দিলশাদ আফরিন আটক
বাণিজ্য যুদ্ধের আশঙ্কায় ডলারের বড় পতন, রেকর্ড ছুঁয়েছে স্বর্ণের দাম
ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে ১৪৭ দেশ, বাড়ছে বিশ্বজনমত
মার্কিন পণ্যে ১২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে চীনের পাল্টা জবাব
নারায়ণগঞ্জে দুই নারী ও এক শিশুর বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার
ফুটবল মাঠ পেরিয়ে হলিউডে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো
পুলিশের চাকরি পেতে সমন্বয়কদের পেছনে দৌড়ানো বন্ধ করুন: সারজিস
ড. ইউনূসের ৫ বছর ক্ষমতায় থাকার কোনও অধিকার নেই: সেলিমা রহমান
সিটি কর্পোরেশন হচ্ছে বগুড়া, গণশুনানির প্রস্তুতি শুরু