সিলেটে এবার মাধ্যমিকে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা সোয়া লাখ
সারাদেশে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হচ্ছে রবিবার (৩০ এপ্রিল)। পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড সিলেট।
সিলেট বিভাগ থেকে এবার পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে ৯৩১টি প্রতিষ্ঠানের ১ লাখ ১০ হাজার ৩০৪ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে ৪৫ হাজার ৫৫২ জন ছাত্র এবং ৬৪ হাজার ৭৫২ জন ছাত্রী। মোট কেন্দ্র থাকবে ১৮৯টি। এবার পরীক্ষার্থীর সংখ্যা গতবারের চেয়ে ৬ হাজার ১৮৬ জন কমেছে।
গত বছর এসএসসি পরীক্ষায় ফরম পূরণ করেছিলেন ১ লাখ ১৬ হাজার ৪৯০ জন। এদের মধ্যে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন ১ লাখ ১৫ হাজার ৩৯১ জন। এবার বিভাগের ১৮৯টি কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হবে এসএসসি পরীক্ষা। যেখানে সিলেটে ৫৯, হবিগঞ্জে ৩১, মৌলভীবাজারে ২৬ এবং সুনামগঞ্জে ৩৩টি কেন্দ্র রয়েছে। বিভাগের ৯৩১টি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এবার পরীক্ষায় অংশ নেবেন।
এদিকে বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক অরুণ চন্দ্র পাল জানান, সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষার কাজ তদারকির জন্য ভিজিল্যান্স টিম ও স্পেশাল ভিজিল্যান্স টিম গঠন করা হয়েছে। এ ছাড়া খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম।
তা ছাড়া পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও জনসাধারণের সচেতনার লক্ষে আরও নয়টি নিদের্শনা দিয়েছে শিক্ষাবোর্ড। নিদের্শনার মধ্যে রয়েছে পরীক্ষা কেন্দ্রের ২০০ গজের মধ্যে ১৪৪ ধারা বলবৎ থাকবে। তাই পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট নয় এমন কেউ কেন্দ্রের আশপাশে ঘুরাফেরা করতে পারবেন না। পরীক্ষা শুরুর আধাঘণ্টা আগে পরীক্ষার্থীদের অবশ্যই পরীক্ষার হলে প্রবেশ করতে হবে। প্রশ্নপত্র ফাঁসের গুজব ছড়ানো ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এক্ষেত্রে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস সম্পর্কিত গুজব/রটনা, নকল/অসদুপায় অবলম্বনের কুফল এবং এ কাজে সংশ্লিষ্ট হওয়ার বিষয়ে পাবলিক পরীক্ষাসমূহ (অপরাধ) আইন ১৯৮০, তথ্য যোগাযোগ ও প্রযুক্তি আইন ২০০৬ এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ তে বর্ণিত শাস্তি সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টিতে সবার সহযোগিতা কামনা করা হয়েছে।
পরীক্ষা সুষ্ঠু, সুন্দর ও নকলমুক্ত পরিবেশে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে ২৩ মে মঙ্গলবার পর্যন্ত সবধরনের কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকবে। কেন্দ্র সচিব ব্যতীত পরীক্ষা কেন্দ্রে অন্য কেউ মোবাইল ফোন ও মোবাইল ফোনের সুবিধাসহ ঘড়ি, কলম বা অননুমোদিত ইলেট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করতে পারবেন না। কেন্দ্র সচিব ছবি তোলা ও ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধাবিহীন একটি সাধারণ ফোন ব্যবহার করতে পারবেন। অননুমোদিত ফোন/ইলেট্রনিক ডিভাইস ব্যবহারকারীর বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সিলেট শিক্ষাবোর্ড কর্তৃপক্ষ জানায়, করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে ২০২০ এবং ২০২১ সালে এসএসসি পরীক্ষা নির্ধারিত সময়ে অনুষ্ঠিত হতে পারেনি। পরিস্থতি যখন কিছুটা স্বাভাবিক হয় তখন সিলেবাস কমিয়ে এসব পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা হওয়ায় অধিকাংশ অনিয়মিত ও আগের বার অকৃতকার্য হওয়া পরীক্ষার্থী কৃতকার্য হয়। যার ফলে গতবারের তুলনায় এবার পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে।
সিলেট শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক অরুণ চন্দ্র পাল জানান, সিলেটে মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি। মানবিক বিভাগের পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৭৯ হাজার ৯৩৭ জন, বিজ্ঞান বিভাগে ২৩ হাজার ২২৬ জন এবং ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ৭ হাজার ১৪১ জন শিক্ষার্থী রয়েছেন। এবার সবকটি বিষয়ে তিন ঘণ্টা করে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি আরও জানান, গত দুই বছর সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা হওয়ায় সিলেটে পাসের হার বেশি ছিল, যেখান অনিয়মিত ও ফেল করা পরীক্ষার্থীর সংখ্যাও অনেক বেশি ছিল। তাই চলতি বছর অনিয়মিত-ফেল করা পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কম থাকায় সিলেটে এসএসসি পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে ৬ হাজার ১৮৬ জন। তবে এটা অস্বাভাবিক কিছু নয়।
এবার সিলেট জেলায় মোট এসএসসি পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৪১ হাজার ৩৯৪ জন যাদের মধ্যে ছেলে ১৭ হাজার ২৬৭ জন ও মেয়ে ২৪ হাজার ১২৭ জন, হবিগঞ্জে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ২০ হাজার ৫২৮ জন যাদের মধ্যে ছেলে ৮ হাজার ৩৭৫ জন ও মেয়ে ১২ হাজার ৬৫৩ জন, মৌলভীবাজারে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ২৪ হাজার ৭১১ জন যাদের মধ্যে ছেলে ৯ হাজার ৮৩০ জন ও মেয়ে ১৪ হাজার ৮৮১ জন এবং সুনামগঞ্জ জেলায় মোট এসএসসি পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ২৩ হাজার ৬৭১ জন যাদের মধ্যে ছেলে ১০ হাজার ৮০ জন ও মেয়ে ১৩ হাজার ৫৯১ জন রয়েছে। এবারের পরীক্ষার্থীদের মধ্যে অনিয়মিত পরীক্ষার্থী সংখ্যা ১৮ হাজার ৩৭৬ জন। যার মধ্যে ছেলে ৭ হাজার ৯৩২ জন এবং মেয়ে ১০ হাজার ৪৭৪ জন রয়েছেন।
এসএন