নির্বাচনকে ঘিরে আশাশুনির আনুলিয়া ইউনিয়নে হামলা-ভাংচুর
সাতক্ষীরায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের ৫ম দফা ভোটগ্রহণকে কেন্দ্র করে আশাশুনি উপজেলায় বেড়েছে সহিংসতা। প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে উপজেলার ৯নং আনুলিয়া ইউনিয়নে বেড়েছে সহিংসতা, ভাংচুর ও হামলার ঘটনা।
নির্বাচনে প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মো: রুহুল কুদ্দুসের নেতা কর্মীর উপর কয়েকবার হামলা হয়েছে। এতে আনারস প্রতীকের পক্ষের প্রায় ২০জন নেতা-কর্মী আহত হয়েছে। এছাড়াও বছরের প্রথম দিনে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে ৫টি বাড়ি, দুটি দোকান ভাংচুর করা হয়। এসময় ছিনিয়ে নেওয়া হয় একটি মোটরসাইকেল ও দুটি মোবাইল ফোন।
একই দিনে আনারস প্রতীকের ৪টি নির্বাচনী অফিস দখল করা হয়েছে। অফিসগুলো হলো- মধ্যম একসরা বৌ বাজার, নাংলা, রাজাপুর ও আমতলা। এসব হামলার অভিযোগ নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর কর্মী সমর্থকদের বিরুদ্ধে। হামলায় গুরুতর আহতরা হলেন-মধ্যেম একশারা গ্রামের ইনজাম গাজী, রহমত আলী, তার স্ত্রী, মেয়ে ও ছেলে, জামাত গাজীর স্ত্রী, বিলাল গাজীর স্ত্রী, আব্দুল গফ্ফার ও তার ছেলে, মাসুম গাজী, দক্ষিণ একশরা গ্রামের শাহিনুর ও রোকন মোল্লা, উত্তর একশরার গ্রামের ফারুক, রাজাপুর গ্রামের সাইফুল ইসলাম কদম, ইলাহী গাজী ও তার ছোট ভাই সালাম গাজী, খোকন ও সালাউদ্দীন গাজী এবং কাকবাসিয়া গ্রামের মারুফসহ আরও অনেকে। এদের মধ্যে থেকে অনেকেই বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, নির্বাচনে জয়লাভের আগেই সাধারণ ভোটারদের উপর হামলা, বাড়িঘর ভাংচুর ও মামলা দিয়ে গ্রাম ছাড়া করা হচ্ছে। গত ৩১ ডিসেম্বর নিজ দলের ইউনিয়নের সভাপতি ও বর্তমান চেয়ারম্যান আলমগীর আলম লিটন ও প্রতিদ্বন্দ্বি স্বতন্ত্র প্রার্থী রুহুল কুদ্দুসসহ ২৫ জন সাধারণ জনগণের নামে মিথ্যা মামলা দিয়েছেন নৌকার প্রার্থী মো. শাহাবুদ্দীন সানা। মামলা নং-১৫। এই মামলায় ভিকটিম হিসেবে দেখানো হয়েছে দক্ষিণ একশরা গ্রামের শাহিনুর গাজিকে। প্রতৃক পক্ষে শাহিনুর গাজী আনারস প্রতীকের কর্মী এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী রুহুল কুদ্দুসের ভাইজি জামাই। কিন্তু তাকে মিথ্যা নৌকার কর্মী দাবি করে অন্যেদের নামে মামলা দিয়েছে মো. শাহাবুদ্দীন সানা।
এসময় শাহিনুরের মোটরসাইকেল ছিনিয়ে নিয়েছে মো. শাহাবুদ্দীন সানা বাহিনী। যা এখানো ফেরত দেয়নি। আহত শাহিনুর সশরীরে পত্রিকা অফিসে এসে ঘটনার বিবরণ দিয়ে এসব কথা জানান।
এছাড়াও গত ৩০ ডিসেম্বর মধ্যেম একসরা গ্রামের এলাহী গাজীকে সন্ত্রাসী বাহিনী হামলা চালিয়ে মারাত্মকভাবে আহত করে। তিনি বর্তমানে আশাশুনি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি আছেন। আহতের বিষয়টি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
৯নং আনুলিয়া ইউনিয়নে চেয়ারম্যান তিনজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের মনোনিত প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন মো. শাহাবুদ্দীন সানা। তিনি ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং বর্তমান মেম্বার। এ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে মোটর সাইকেল প্রতীক নিয়ে লড়ছেন স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা মো: জাবেদুল মাওলা। এ ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আনারস প্রতীক নিয়ে লড়ছেন সাবেক চেয়ারম্যান মো: রুহুল কুদ্দুস।
আশাশুনি থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মাদ গোলাম কবির বলেন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সকল প্রকার সহিংসতা বন্ধ করতে প্রতিটি ইউনিয়নে আমাদের টিম কাজ করছে। কোথাও সহিংসতার খবর পেলে সাথে সাথে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া আছে। আমার দৃষ্টি এড়িয়ে কেউ যদি কোন প্রকার সহিংসতা করার চেষ্টা করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও তিনি জানান।