সাতক্ষীরায় চলছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জায়গা দখলের প্রতিযোগিতা
সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনি উপজেলার বুধহাটা ইউনিয়নে পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধিগ্রহনকৃত সরকারি জায়গা জবর দখলের প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের অবহেলা ও উদাসীনতার কারণে বুধহাটা ও বাহাদুরপুর এলাকার কিছু স্বার্থান্বেষী লোকজন বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বসতঘর এবং মৎস্য ঘের গড়ে তুলেছে। এতে করে সরকারি খাস জমি বেহাত হচ্ছে।
স্থানীয় আবুল হোসেন বলেন, ‘মৃতপ্রায় বেতনা নদীটি তার নব্যতা হারিয়ে চারণভূমিতে পরিণত হওয়ার অবস্থায় চলে গেছে। একে তো নদী খনন হচ্ছে না, তাতে আবার এভাবে চর দখল চললে আগামী বর্ষা মৌসুমে পানি সরবরাহের পথ বন্ধ হয়ে উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামঞ্চলে বন্যার রূপ ধারন করবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘অতিদ্রুত অবৈধ জবর দখলকারীদের উচ্ছেদপূর্বক আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হলে রাতারাতি বাকি নদীর চর দখল হয়ে যাওয়ার আশংকা রয়েছে।’
জানা গেছে, বুধহাটা ইউনিয়নের শেষ সীমানা অর্থাৎ চাপড়া থেকে শুরু করে গুনাকরকাটি ব্রীজ সংলগ্ন সীমান্তের মধ্যে বেতনা নদী দিয়ে অতীতে লঞ্চ, ইস্টিমার ট্রলারসহ বড় বড় নৌকা চলাচল করতো। কিন্তু কালক্রমে বিশাল নদীটি মরে গিয়ে বড় চর জেগেছে। সেই চরের জায়গা পানি উন্নয়ন বোর্ড অধিগ্রহণ করে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, ‘পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিপুল পরিমাণ সরকারি খাস জমি বেড়া দিয়ে ঘিরে ও নদীর পলি মাটি কেটে তা ভরাট করে সেখানে ইট ভাটা, বসতঘর দোকানপাট ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান, মৎস্যঘের করে তা জবর দখলের প্রতিযোগিতা অব্যাহত রয়েছে।’
তারা আরও বলেন, ‘এলাকার একটি মহল দীর্ঘকাল ধরে সরকারি বিপুল পরিমাণে জায়গা কোনো প্রকার বন্দোবস্ত ছাড়াই দখল করে ফেলেছেন। বাহাদুরপুর পাড়ে জমি দখল করে চাষযোগ্য জমি ও মৎস্যঘের তৈরি করা হচ্ছে। এদের উচ্ছেদ করা না হলে নদীটি যখন পুনঃখনন করা হবে তখন বড় ধরনের সমস্যার মুখে পড়তে হবে। কিন্তু এ ব্যাপারে কারো যেন মাথা ব্যাথা নেই।’
পরিবেশবিদরা বলছেন, অবিলম্বে এর প্রতিকার হওয়া জরুরি। না হলে সামনে ভয়াবহ দিন অপেক্ষা করছে। তারা এ ব্যাপারে প্রযোজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহণের জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
আশাশুনি উপজেলার নির্বাহী অফিসার নাজমুল হোসাইন খান বলেন, ‘গুনাকরকাটি ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় সরকারি জমি দখলের খবর শুনেছি। এটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের জায়গা। এজন্য আমি পানি উন্নয়ন বোর্ড ও এসিল্যান্ডকে রিপোর্ট করার জন্য বলেছি। তাদের রিপোর্ট পেলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
/এএন