কুড়িগ্রামে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত অর্ধশতাধিক শিশু
কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের শিশু বিভাগ
কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে গত দুদিনে শিশু ও ডায়রিয়া ওর্য়াডে বেড়েছে রোগীর সংখ্যা। ডায়রিয়া,বমি, নিউমোনিয়াসহ শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে অর্ধশতের বেশি শিশু। অধিক রোগীর কারণে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পাচ্ছে না বলে রোগীর স্বজনদের অভিযোগ।
শীতের ঘন কুয়াশা আর কনকনে ঠান্ডায় বিপর্যস্ত উত্তরাঞ্চলের কুড়িগ্রামের মানুষ। সেইসঙ্গে বাড়ছে শীতজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব। তবে বয়স্কদের চেয়ে বেশি ভোগছে শিশুরা। কয়েকজন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলেও অনেকে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
শুক্রবার (১৭ ডিসেম্বর) রাতে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, ২ বছর বয়সী রাতুল, ৯ মাস বয়সী মায়াবী, ১১ মাস বয়সী আশরাফিয়া জান্নাতসহ আরও অনেক শিশু হাসপাতালের বেডে ও মেঝেতে শুয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে। রোগীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় হাসপাতাল থেকে ঠিকমতো ঔষধ ও ডাক্তার না পাওয়ার অভিযোগ করেন অনেক রোগীর স্বজনরা।
কুড়িগ্রাম সদরের মাঠের পাড় এলাকার বাসিন্দা শিশু মায়াবীর মা শাহনাজ খাতুন বলেন,'আজ ৩ দিন থেকে হাসপাতালে রয়েছি। আমার বাচ্চার বমি ও ডায়রিয়ার চিকিৎসা চলছে। হাসপাতাল থেকে স্যালাইন ছাড়া কিছু দেয়নি বাকি ঔষধ বাইরে থেকে কিনতে হয়েছে।'
আরেক অভিভাবক ঘরিয়ালডাঙ্গা রাজারহাটের বাসিন্দা শিশু আশরাফিয়া জান্নাতের মা স্বপ্না বেগম বলেন, 'গতকাল (বৃহস্পতিবার) দুপুরে আমি আমার বাচ্চাকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। নার্সরা বাচ্চাকে দেখছে। আজ এখনও পর্যন্ত কোনো ডাক্তার দেখতে আসেনি।'
হাসপাতালের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার (১৭ ডিসেম্বর) রাত ৮টা পর্যন্ত ডায়রিয়া ওর্য়াডে নতুন ১ জন ভর্তিসহ মোট ২০ জন শিশু এবং শিশু ওর্য়াডে নতুন ২ জন ভর্তিসহ ৬৪ জন শিশু চিকিৎসা নিচ্ছে। যাদের অধিকাংশ শীতজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত ।
এসব শিশুদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন কর্তব্যরত নার্স ও চিকিৎসকরা। হাসপাতালে বেডের অভাবে বারান্দায় থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছেন অনেকে।
ডায়রিয়া ওর্য়াডের কর্তব্যরত নার্স বৃষ্টি খাতুন বলেন, 'শুক্রবারে কাজের চাপ কিছুটা হালকা মনে হলেও আমাদের ব্যস্ততা কমেনি। গত কয়েকদিন ধরে যেসব শিশুরা ভর্তি আছে তাদের মধ্যে অনেক শিশু বমি ও ডায়রিয়া নিয়ে ভর্তি আছে। এজন্য সার্বক্ষণিক আমাদের সর্তক থাকতে হচ্ছে'।
শিশু ওর্য়াডের আরেক নার্স মোছা. ইভানা আক্তার বলেন,'গত ৩-৪ দিন ধরে আমরা অনেক রোগীকে চিকিৎসা দিচ্ছি। এর মধ্যে কয়েকজন সুস্থ হয়ে চলে গেছে। নতুন করে আরও রোগী আসছে, এতে আমাদের কাজের চাপ কিছুটা বেড়েছে ।'
কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের কর্তব্যরত শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. আল আমিন মাসুদ বলেন, 'শীতের এই সময়টাতে রোটা ভাইরাসের কারণে শিশুরা শীতজনিত রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। হাসপাতালে যারা ভর্তি আছে তাদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।'
যারা হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি যাচ্ছেন তাদের শিশুদের যাতে ঠান্ডা না লাগে এবং গরম পানি পান ও গোসলে গরম পানি ব্যবহার করারও পরামর্শ দেন এই শিশু বিশেষজ্ঞ।
টিটি/