নওগাঁয় ডাকাতি শেষে গৃহবধূকে তুলে নিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, গ্রেপ্তার ৭
গ্রেপ্তার দুই আসামি। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ
নওগাঁর মহাদেবপুরে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুটের পর গৃহবধূকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে দলবদ্ধভাবে ধর্ষণ করে ডাকাত দল। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত অভিযোগে সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান নওগাঁর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাফিউল সারোয়ার।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- নওগাঁর মান্দা উপজেলার চকজামদই গ্রামের শরিফুল ইসলাম ওরফে পচা (২৯), একই গ্রামের তারেক হোসেন (২৬), বনসেতর গ্রামের সোলাইমান আলী (৩৮), জিনারপুর গ্রামের রিপন আলী (৩০), গৌড়রা বৌদ্দপুর গ্রামের ফারুক হোসেন (৩২), চককন্দর্পপুর গ্রামের সাগর হোসেন (১৯) ও বন্দীপুর গ্রামের রুবেল সরদার (২৮)।
গ্রেপ্তার সাত ব্যক্তির মধ্যে গতকাল সোমবার দিবাগত রাতে অভিযান চালিয়ে শরিফুল ইসলাম ও ফারুক হোসেনকে গ্রেপ্তার করে মহাদেবপুর থানা পুলিশ। অন্যদের পূর্বেই গ্রেপ্তার করা হয়। পূর্বে গ্রেপ্তার পাঁচ সদস্যের মধ্যে সাগর হোসেন, তারেক হোসেন ও রিপন আলী আদালতের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাফিউল সারোয়ার বলেন, সংঘবদ্ধ ডাকাতদের একটি দল গত ৯ ডিসেম্বর রাত ১১টার দিকে মহাদেবপুর উপজেলার খাজুর গ্রামের একটি বাড়িতে ডাকাতির উদ্দেশ্যে ঢোকেন। ওই বাড়িতে ঢুকে প্রথমে তাঁরা বাড়ির সদস্যদের মুখ, হাত-পা বেঁধে রেখে নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার ও একটি মোবাইল ফোন লুট করে। স্বর্ণালংকার ও টাকা লুট করে যাওয়ার সময় তাঁর ওই বাড়ির গৃহবধূকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। পরে একটি খোলা মাঠে গৃহবধূকে ডাকাতরা পর্যায়ক্রমে ধর্ষণ করে। থানা পুলিশ খবর পেয়ে ওই দিন রাতেই ভুক্তভোগী গৃহবধূকে উদ্ধার করে। এ ঘটনায় পর দিন মহাদেবপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৩৯৫ ও ৩৯৭ ধারায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, শুরুর দিকে এই ঘটনা পুলিশের কাছে ক্লুলেস একটি ঘটনা ছিল। ডাকাতদের গ্রেপ্তার ও লুট হওয়া মালামাল উদ্ধারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জয়ব্রত পালের নেতৃত্বে পুলিশের একটি তদন্ত দল গঠন করা হয়। তদন্তে নেমে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় প্রথমে তিনজনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় মহাদেবপুর থানা পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিদের তথ্যের ভিত্তিতে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত দুটি ধারালো হাসুয়া উদ্ধার করা হয়েছে। ওই তিনজন আদালতের কাছে ডাকাতি ও ধর্ষণের ঘটনায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন। পরে তাঁদের দেওয়া স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে আরও চারজনকে বিভিন্ন সময় গ্রেপ্তার করা হয়। সর্বশেষ গতকাল সোমবার দিবাগত দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গাজিউর রহমান, ফারজানা হোসেন ও জয়ব্রত পাল এবং মহাদেবপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসমত আলী উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে মহাদেবপুর থানার ওসি হাসমত আলী বলেন, সোমবার রাতে গ্রেপ্তার দুইজন আসামিকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। ইতোমধ্যে গৃহবধূর স্বাস্থ্য পরীক্ষার চূড়ান্ত প্রতিবেদন পাওয়া গেছে। প্রতিবেদনে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে।