রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪ | ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

প্রিয় প্রতারণা

 

‘আ্যই রিশান, ঘুড়ির সুতোটি ঠিকভাবে ধরো, উড়ে যাবে তো!’ নাদিয়ার কথায় যেনো হুঁশ ফিরে পায় রিশান। সুতোর প্রান্তটি শক্ত করে হাতে নেয়, যেনো সুতোটি ছুটে গেলে হারিয়ে যাবে তাদের স্বপ্নটিও।

সময়টি অগ্নিঝরা একাত্তর সালের শুরুর দিকের কথা। রিশান ও নাদিয়া- স্নাতকোত্তর পড়ুয়া রিশান ও স্নাতক শেষ বর্ষে পড়ুয়া নাদিয়া। তারা আকাশে ঐ ঘুড়িটি ওড়ানোর মতই স্বপ্ন ওড়ায়- সে স্বপ্ন সারাজীবন ধরে একে অপরের পাশে চলার স্বপ্ন, বিশ্বস্ততার সারথী হিসেবে একে অপরের হাতটি ধরে রাখার স্বপ্ন। সামাজিক মিথষ্ক্রিয়া, সীমাবদ্ধতার গন্ডি, অনিশ্চয়তার দোলাচলে থাকা আগামী এবং দেশের বিরাজমান সংকটময় পরিস্থিতি কোনো কিছুই তাদের অনিন্দ্যসুন্দর স্বপ্ন দেখায় প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে পারে না।

একাত্তরের মার্চের শেষ সপ্তাহ- বাংলার মাটিতে প্রবেশ করলো পাকিস্তানি সেনাদের সমন্বয়ে গঠিত দখলদার বাহিনী। শুরু হলো তাদের অত্যাচারের আগুনে তৈরি হওয়া লেলিহান শিখার দাবদাহ। রাজধানী ঢাকার অন্যান্য এলাকার মত রিশান ও নাদিয়ার এলাকাতেও বিরাজ করছিলো চাপা উৎকন্ঠা ও উত্তেজনা। রিশানের বাবা স্থানীয় কলেজের দর্শন বিভাগের খ্যাতনামা অধ্যাপক ড. আজগর আলী। তিনি নিজে যেমন দেশপ্রেমে বলীয়ান তেমনি তার নিজ পুত্র রিশানকেও মানুষ করেছেন দেশপ্রেমের মন্ত্রে দীক্ষিত করে। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের দেওয়া ঐতিহাসিক ভাষণটি তিনি তার বাবার থেকে উপহার পাওয়া টেপরেকর্ডারে বারবার নিজে শুনেন এবং তার পুত্র রিশানকে শোনান। তার মনে হয় স্বাধীনতা নামক সোনালী স্বপ্নটির যে বীজ বাঙালি বপন করে চলছিলো, বঙ্গবন্ধুর মোহনীয় কন্ঠে যেনো সেই বীজ পরিণত বৃক্ষের দিকেই ধাবিত হচ্ছে। মুদ্রার ঠিক বিপরীত চিত্রটিই যেনো নাদিয়াদের বাড়িতে। নাদিয়ার বাবা জনাব করীম খান পাকিস্তান সরকারের অধীনস্থ একজন সরকারি কর্মকর্তা। তিনি যেনো তৎকালীন পাকিস্তানি জান্তার আস্থা ও বিশ্বাসের একজন প্রতিমূর্তিসরুপ। তার কাছে বাঙালির মুক্তির স্বপ্নপূরণের মুক্তিসংগ্রাম এক নিতান্ত অভ্যন্তরীন কলহ বা গন্ডগোল হিসেবেই প্রতীয়মান হয় এবং তার বিশ্বাস পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় তৎকালীন সরকার দ্রুতই এই বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে জনজীবন স্বাভাবিক করবে। কিছুদিন এভাবেই গড়িয়ে যায়….

হঠাৎ এক সন্ধ্যায় নাদিয়াকে রিশানের জরুরি তলব।

রিশান নাদিয়ার হাত দুটি ধরে বললো, ‘ধরো আমি যদি চলে যাই দূরে তোমার দৃষ্টির অন্তরালে, তবে তুমি কি আমায় রাখবে মনে?’ নাদিয়া বিস্ময় চোখে ধারণ করে বলে, ‘এই মুখ, এই চোখ জম্ম-জম্মান্তরে শুধুই আমার, আমি তোমাকে আমার করে পাওয়ার জন্য প্রয়োজনে অনন্তকাল ধরে অপেক্ষা করতে পারবো। কিন্তু আজ হঠাৎ করে তুমি এ কথা কেনো বলছো?’ রিশান একটি দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললো,’তুমি তো জানো দেশের এখন কি অবস্থা! পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বাঙালির ওপর তাদের অত্যাচারের চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। দেশমাতৃকার মুক্তির পানে গঠিত হয়েছে মুক্তিযোদ্ধা বাহিনী। আচ্ছা নাদিয়া, তুমি কি আমাদের পাশের বাসার শিপন ভাইকে চিনতে?’ নাদিয়া উত্তর দিলো, ‘হ্যাঁ, চিনতাম তো, শুনেছি সে নাকি ভারতে অনেকদিন ছিলো।‘ রিশান বললো, ‘হ্যাঁ, সে ভারতে মুক্তিবাহিনীর প্রশিক্ষণ শেষে গতকাল রাতেই ফিরেছে। সে এখন আমাদের সবাইকে নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের একটি গেরিলা বাহিনী গঠন করতে চায়। আমার বাবার এ ব্যাপারে সম্পূর্ণ সম্মতি আছে। কিন্তু আমি তোমাকে ছেড়ে যেতে পারবো না।

‘ নাদিয়া মুচকি হেসে বললো, ‘কেনো আমাকে হারানোর তোমার এত ভয়! তুমি অবশ্যই যাবে এই মা, মাটি ও মানুষকে রক্ষার জন্য। আমি চাই আমাদের স্বপ্নের পৃথিবী আমরা গড়ে তুলবো স্বাধীন বাংলার মাটিতে।‘ অশ্রুসজল দৃষ্টিতে রিশান বিদায় নিলো নাদিয়ার নিকট থেকে। রিশান ছুটে চললো এক নতুন সম্ভাবনার দুয়ার উম্মোচন করতে।

পাকিস্তানি বাহিনীর একটি বহর ঐ দিকে অবস্থান নিয়েছে নাদিয়াদের বাড়ির পাশে। একদিন ঐ বহরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন জামশেদ এলো নাদিয়াদের বাড়িতে তার বাবা করীম খানের সাথে দেখা করতে। হঠাৎ নাদিয়া ক্যাপ্টেনের সামনে পড়ে যায় এবং নাদিয়াকে দেখে মুগ্ধ হয়ে ইতোমধ্যেই একবার বিয়ে করা ক্যাপ্টেন জামশেদ নাদিয়ার বাবার কাছে পেড়ে বসে নাদিয়াকে বিয়ের প্রস্তাব। বাবা যখন নাদিয়াকে প্রস্তাবের কথা বলে তখন নাদিয়া ঘৃণাভরে এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। নাদিয়ার বাবা তখন ক্ষুব্ধ কন্ঠে বলেন, ‘আমি তোমার ও রিশানের কথা জানি। কিন্তু আমি তা কখনোই মেনে নেবো না। রিশান একজন বিদ্রোহী। তুমি যদি এ বিয়ের প্রস্তাব মেনে না নাও তবে আমি রিশানের ব্যক্তিগত ও পারিবারিক সংবাদ পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে তুলে দিবো এবং বুঝতেই পারছো তারা রিশানকে খুঁজে বের করে সপরিবারে হত্যা করবে। এখন সিদ্ধান্ত তোমার-তুমি কী চাও? রিশানের জীবন নাকি তোমার গোয়ার্তুমি?’ নাদিয়ার মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়লো। সে জানে যদি এখন বাবাকে না বলে দেয় তবে রিশানের জীবনই শুধু বিপন্ন হবে না, তার সাথে পুরো মুক্তিবাহিনীর বৃত্তান্ত চলে যাবে পাকিস্তানি বাহিনীর করায়ত্তে, যার ফলে স্বাধীনতার দুর্বার স্বপ্নটি হয়তো থমকেই যাবে। মনের সাথে সকল যুদ্ধ সম্পন্ন করে এক আকাশ আবেগকে পাশে ঠেলে নাদিয়া বাবার প্রস্তাবে সম্মতি দেয়। ক্যাপ্টেন জামশেদ নাদিয়াকে বিয়ে করে সেদিনই তাকে নিয়ে পাকিস্তানের ক্যান্টনমেন্টে চলে আসে।

গভীর রাত, সুনসান নীরবতা, সেই নীরবতাকে ভেঙ্গে ক্যাপ্টেন জামশেদ অট্টহাসি নিয়ে এগিয়ে আসে নাদিয়ার দিকে। কিন্তু তার সেই অট্টহাসি মিলিয়ে যেতে সময় লাগে না। নাদিয়া তার পোশাকের আড়ালে লুকিয়ে রেখেছিলো ধারালো এক ছুরি। ক্যাপ্টেন জামশেদ তার সামনে এলে নিজের দেহের সমস্তশক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে ক্যাপ্টেনের উপর, তার বুকে বিঁধে দেয় ধারালো ছুরি। মুহুর্তেই ক্যাপ্টেনের দেহ লুটিয়ে পড়ে মাটিতে। ক্যাপ্টেনের আর্তচিৎকারে পাশের কক্ষ থেকে দরজা ভেঙ্গে ঢুকে পড়ে অস্ত্রধারী দুই জন সেনা। তারা চোখের নিমিষেই গুলি বর্ষণ করে নাদিয়ার দিকে। চোখের পলকেই স্বপ্নভঙ্গের যন্ত্রণা ও রিশানের মায়াময় মুখটি কল্পনা করে নাদিয়ার অসাড় দেহটি মাটি স্পর্শ করে।

রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম শেষ হয়, জয় বাংলার মুহুর্মুহু ধ্বনিতে মেতে বীর মুক্তিযোদ্ধারা স্বাধীন দেশের পতাকা মাথায় তুলে ফিরে আসে নিজ ভূমে। সবার সাথেই বীরবেশে ফিরে আসে রিশান এবং সাথে ফিরে স্বাধীন দেশের মাটিতে নাদিয়াকে নিয়ে ঘর বাঁধার সেই স্বপ্ন। কিন্তু রিশানের মোহভঙ্গ হতে বেশি সময় লাগে না, নাদিয়াদের বাড়ি থেকে রিশানকে জানানো হয় যুদ্ধকালীন নাদিয়ার নিজ ইচ্ছাতেই পাকিস্তানি ক্যাপ্টেন জামশেদের বিয়ে হয় এবং তারা এখান থেকে চলে যায়।

রিশানের পুরো পৃথিবীটি থমকে যায় স্বপনভঙ্গের বেদনায়। বাকি জীবনটি রিশানের চিন্তা ও মননে নাদিয়ার রুপটি আঁকা হয়ে থাকে এক ছলনাময়ী, প্রতারক ও স্বার্থপরতার এক নিষ্ঠুর দৃষ্টান্ত হিসেবে।

আর নাদিয়ার কথা ভাবছেন- সে তো হেরে গিয়েও জিতে যায়। তার কালজয়ী আত্মত্যাগ রিশান হয়তো জানে না বা জানবেও না কোন দিন, কিন্তু নিজ ভালোবাসার মানুষ ও দেশমাতৃকাকে বাঁচানোর জন্য তার আত্মবিসর্জন পাঠক মনে সব সময়ের জন্যই দোলা দিবে……….

 

ডিএসএস/ 

 

 

Header Ad

গোপনে দুইজনকে বিয়ে, কাউকেই অধিকার বঞ্চিত করেননি জান্নাতুল

ছবি: সংগৃহীত

একইসঙ্গে দুই স্বামীর সঙ্গেই সংসার করছেন জান্নাতুল ফেরদৌস নামের এক নারী। স্ত্রীর অধিকার থেকে বঞ্চিত করেননি দুই স্বামীর কাউকেই। গোপনে মন জয় করে চলছিলেন দুই স্বামীর। প্রায় দুই বছর দুই স্বামীর সংসার করার পর অবশেষে বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

চার বছরের প্রেমের সম্পর্কের পর ২০২২ সালের ২৭ অক্টোবর নোটারি পাবলিকের কার্যালয়ে হলফনামার মাধ্যমে গোপনে বিয়ে করেন রাজবাড়ী সদরের আলীপুর ইউনিয়নের ইন্দ্রনারায়ণপুর গ্রামের আবু হানিফ শেখের ছেলে ইউটিউবার সাগর শেখ ও আলীপুর গ্রামের নুরুল ইসলাম ভূঁইয়ার মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস।

বাবা, মা ও ভাই প্রবাসে থাকায় বাবার বাড়িতে একাই বসবাস করতেন জান্নাতুল। সেখানে যাতায়াত করতেন স্বামী সাগর শেখ। সংসার জীবন ভালোই চলছিল এ দম্পতির। হঠাৎ জান্নাতুলের বাবা প্রবাস থেকে দেশে ফেরায় শ্বশুরবাড়ি যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায় সাগরের। এরই মধ্যে প্রথম বিয়ের কথা গোপন রেখে পরিবারের সিদ্ধান্তে অন্য এক যুবককে দ্বিতীয় বিয়ে করেন জান্নাতুল।

এদিকে স্ত্রীকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিজের বাড়িতে তুলে না নেয়ায় শ্বশুরবাড়ি গিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে নিয়মিত সময় কাটান জান্নাতুলের দ্বিতীয় স্বামী। প্রথম স্বামী সাগরের দাবি, প্রায় দুই বছর ধরে তার সঙ্গেও স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক ঠিক রেখে চলছিলেন জান্নাতুল।

স্ত্রীর পরিবার তাকে মেনে না নেয়ায় তার বোনের বাসাসহ বিভিন্ন স্থানে একান্তে সময় কাটাতেন স্বামী-স্ত্রী। চলতি মাসের ২ নভেম্বর তারা একসঙ্গে নিজেদের দ্বিতীয় বিবাহবার্ষিকী পালন করেছেন বলেও দাবি করেন সাগর।

তবে দুই সপ্তাহ আগে স্ত্রীর সঙ্গে দ্বিতীয় স্বামীর ঘনিষ্ঠতার বিষয়ে জানতে পারেন সাগর। আর এতেই বাঁধে বিপত্তি। তার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন জান্নাতুল। এখন দ্বিতীয় স্বামী নিয়েই সংসার করতে আগ্রহী তিনি। বাধ্য হয়ে স্ত্রীকে ফিরে পেতে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ দায়েরের পাশাপাশি আদালতে মামলা করেছেন সাগর।

সাগর শেখ বলেন, জান্নাতুল ও আমার বিয়ের বিষয়টি জান্নাতুলের মা ও বোন জানতো। বিয়ের পর আমাদের সংসার জীবন ভালোই কাটছিল। তবে হঠাৎ করে জান্নাতুলের বাবা প্রবাস থেকে দেশে ফেরায় তাদের বাড়িতে আমার যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায়। আমাদের বিয়ের চার মাসের মাথায় আমি ভিডিও কন্টেন্ট তৈরির কাজে কয়েকদিনের জন্য রাজবাড়ীর বাইরে যাই।

কাজ থেকে এসে শুনি আমার স্ত্রী জান্নাতুল অন্য এক ছেলেকে বিয়ে করেছে। আমি আমার স্ত্রীকে প্রশ্ন করলে সে বলে, ‘পরিবারের চাপে বিয়ে করেছি। ওই ছেলের সঙ্গে আমার কোন সম্পর্ক হয়নি। আমি তোমার স্ত্রী আছি, তোমারই থাকবো। আমার আম্মু দেশে আসলে আমি তোমার কাছে চলে আসবো।’

সাগর বলেন, ‘আমি জান্নাতুলদের বাড়ি যাতায়াত করতে না পারার কারণে বিভিন্ন সময় আমরা রাজবাড়ী শহরে আমার বোনের বাসায় ঘনিষ্ঠ সময় কাটাতাম। ওর কলেজে আনা-নেয়াসহ সবকিছু আমিই করতাম। এমনকি গত ২ নভেম্বরও আমরা আমার বোনের বাসায় আমাদের দ্বিতীয় বিবাহ বার্ষিকী পালন করেছি।

তবে বিবাহ বার্ষিকী পালনের দুদিন পরে আমি জানতে পারি জান্নাতুলের সঙ্গে ওই ছেলের (দ্বিতীয় স্বামীর) ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক চলছে। ওই ছেলে নিয়মিত জান্নাতুলের বাবার বাড়িতে এসে তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সময় কাটাচ্ছে। এ বিষয়ে আমি জান্নাতুলকে প্রশ্ন করলে সে আমাকে গালাগালি করে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। এক পর্যায়ে সে আমার সঙ্গে সংসার করবে না বলেও জানায়।’

তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি জান্নাতুলের মা প্রবাস থেকে দেশে ফিরেছে। তিনিও এখন আমাকে মেয়ের জামাই হিসেবে অস্বীকার করছেন। অথচ তার মেয়ের সঙ্গে আমার প্রেম থেকে শুরু করে বিয়ে পর্যন্ত সবকিছুই তিনি জানতেন।

এখন বাধ্য হয়ে আমি আমার স্ত্রীকে ফিরে পেতে আলীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছে গত ১১ নভেম্বর লিখিত অভিযোগ করেছি। এছাড়া ১৭ নভেম্বর রাজবাড়ীর বিজ্ঞ ১নং আমলি আদালতে মামলা করেছি।’

সাগর আরও বলেন, ‘আমাকে ডিভোর্স না দিয়ে আমার স্ত্রী অন্য আরেকজনকে বিয়ে করে আমার সঙ্গে প্রতারণা করেছে। সে আমাকেও ম্যানেজ করে চলেছে, একইভাবে তার দ্বিতীয় স্বামীকেও ম্যানেজ করে চলেছে।

এটা আইন ও ধর্মীয় দুই দিক থেকেই অপরাধ। এছাড়া আমি এ পর্যন্ত আমার স্ত্রীর পেছনে ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকা ব্যয় করেছি। তারপরও আমি আমার স্ত্রীকে ফেরত চাই। তাকে আমি আমার জীবনের চেয়েও বেশি ভালোবাসি।’

এদিকে, বিষয়টি নিয়ে ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজী হননি জান্নাতুলের দ্বিতীয় স্বামী। তবে তার দাবি, জান্নাতুলের সঙ্গে সাগরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে তিনি জানতেন। সাগরের সঙ্গে বিয়ের বিষয়টি তিনি জানতেন না।

জান্নতুলের দ্বিতীয় স্বামীর বাবা বলেন, ‘কোন এক সূত্রে আমার শ্বশুর জান্নাতুলদের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে তাকে পছন্দ করে। পরে আমি গিয়ে তার বাবার কাছে বিয়ের প্রস্তাব দিলে বিয়ের দিন ধার্য হয়। বিয়ের আগের দিন সাগর নামে এক ছেলে আমার ছেলেকে ফোন করে বলে জান্নাতুলের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক আছে।

সে জান্নাতুলের সঙ্গে নিজের একটি ছবিও আমার ছেলেকে পাঠায়। এরপর আমি ওই এলাকায় আমার আত্মীয়দের কাছে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি জান্নাতুলের সঙ্গে সাগরের কোন সম্পর্ক ছিল না। এছাড়া জান্নাতুলকেও আমি সরাসরি প্রশ্ন করলে সেও সম্পর্কের বিষয়টি অস্বীকার করে।

পরে ঘরোয়া আয়োজনে জান্নাতুলের সঙ্গে আমার ছেলের বিয়ে হয়। এখন সাগর নামে ছেলেটি জান্নাতুলকে তার স্ত্রী হিসেবে দাবি করছে। আমি যতদূর জেনেছি সাগরের স্ত্রী ও সন্তান আছে। এখন বিষয়টি আইনগতভাবেই সমাধান হবে।

আর জান্নাতুল ফেরদৌসের সঙ্গে কথা বলতে তার বাবার বাড়িতে গেলে ভেতরে ঢোকার অনুমতি মেলেনি।’

বাইরে দাঁড় করিয়ে রেখে তার মা হাচিনা বেগম বলেন, ‘সাগরের সঙ্গে আমার মেয়ের বিয়ে হয়েছিল৷ তবে বিয়ের দুই মাসের মাথায় তাদের ডিভোর্স হয়ে যায়। আমার মেয়ে তো ছোট বুঝে নাই, যে কারণে সেসময় ওরা ডিভোর্সের কাগজ ছিঁড়ে ফেলেছে। এর ৪/৫ মাস পরে আমার মেয়ের আবার বিয়ে হয়েছে। সাগর আমার মেয়েকে চাপে ফেলে এতোদিন তার সঙ্গে সময় কাটাতে বাধ্য করেছে।’

আলীপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিক জানান, ‘সাগর ও জান্নাতুলের বিবাহ বিচ্ছেদ হলে তার নোটিশের একটি কপি ইউনিয়ন পরিষদে আসার কথা। এরকম কোন কপি কখনো পাননি তারা।’

তিনি বলেন, ‘সাগর আমার ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ করেছে। আমিও খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি সাগর জান্নাতুলের প্রথম স্বামী। সে সাগরকে তালাক না দিয়েই বিয়ের চার মাসের মাথায় অন্য এক ছেলেকে বিয়ে করে। প্রায় দুই বছর সে চালাকি করে দুই স্বামীর সঙ্গেই সংসার করেছে। সাগরের কাছ থেকে জান্নাতুল অনেক টাকা-পয়সা খেয়েছে বলেও আমি জানতে পেরেছি।’

আবু বক্কার বলেন, ‘সাগরের অভিযোগের ভিত্তিতে আমি জান্নাতুলের বাবাকে নোটিশের মাধ্যমে ইউনিয়ন পরিষদে ডাকি। তবে নোটিশ পেয়ে তিনি তার ছোটভাই ও তাদের এলাকার ইউপি সদস্য আবুল কালামকে সঙ্গে নিয়ে আমার বাড়িতে এসে বলেন, আমি যেন পরিষদে বসে বিষয়টি সমাধান করে দেই। তবে এর ১/২ দিন পরে তিনি জানান, এ বিষয়ে তারা বসতে চান না।

আইনগতভাবে তারা বিষয়টি সমাধান করতে চান। পরে আবার তারা বসতে সম্মত হলে জান্নাতুল ও তার বাবা এবং তাদের এলাকার ইউপি সদস্য আবুল কালামসহ পরিষদের অন্য সদস্যদের নিয়ে বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ইউনিয়ন পরিষদে বসেছিলাম। সাগরও সেখানে ছিল। তবে সেখানে জান্নাতুল বলে দিয়েছে সে কোনভাবেই সাগরের সঙ্গে ঘর সংসার করবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের পুরুষ শাসিত সমাজে নারীরা নির্যাতিত হয়। কিন্তু ছেলেরা যে কতোটুকু নির্যাতিত হয় তা এই সম্পর্কের জের দেখলে বোঝা যায়। আমাদের সমাজে ছেলেরা আরও বেশি নির্যাতিত হচ্ছে। সেটা নীরবে নিভৃতে ছেলেরা সহ্য করে যাচ্ছে। আমি আশা করবো আপনারা সাংবাদিক ভাইয়েরা বিষয়টি তুলে ধরবেন।

আপনাদের সংবাদের মাধ্যমে মানুষ যাতে সচেতন হতে পারে। আজকে আমার ইউনিয়নে এমন ঘটনা ঘটেছে। আর কোন ইউনিয়নে যেন এমন ঘটনা কোনদিন না ঘটে।’

Header Ad

শহীদ আব্দুল্লাহর বাড়িতে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন

ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

২৪ এর গনঅভূ্থানে ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম যোদ্ধা, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের মেধাবী শিক্ষার্থী, শহীদ আব্দুল্লাহর বাড়িতে যান বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন।

এ সময় মোবাইল ফোনে লাউডস্পিকারে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা.শফিকুর রহমান বলেন, আব্দুল্লাহ দেশের জন্য মানুষের জন্য মানবতার কল্যাণের জন্য জীবনকে উৎস্বর্গ করে আল্লাহর দরবারে চলে গেছেন, আল্লাহ তাকে শহীদ হিসাবে কবুল করুন। শহীদরা মরে না। তারা আল্লাহর জীম্মায় জীবন্ত থাকে। এ সময় শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন তিনি।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) দুপুর ১২ টার দিকে যশোরের বেনাপোল পোর্ট থানার বড় আঁচড়া গ্রামে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন আব্দুল্লাহর বাড়িতে গিয়ে শোকসন্তপ্ত পরিবারের খোঁজ খবর নেন,কবর জিয়ারত করেন এবং তার রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করেন।

এর আগে তিনি নাভারণ দারুল আমান ট্রাষ্টে ওলামা সম্মেলনে যোগদান করেন। পরে ২০১৬ সালে গুম হওয়া ইসলামি ছাত্র শিবিরে নেতা রেজোয়ানের বাড়িতে যান এবং খোঁজ খবর ও সমবেদনা জানান।

এসময় তিনি জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে মৃত্যু বরনকারী সকলে ন্যায় বিচার পাবেন বলে পরিবারের সদস্যদের সান্তনা দেন। এবং গনঅভূ্থানে নিহত সকল পরিবারের সাথে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলাম আছে থাকবে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য মাওলানা আজিজুর রহমান, যশোরের জেলা আমীর অধ্যক্ষ মাওলানা গোলাম রসূল, সাবেক জেলা আমীর মাওলানা হাবীবুর রহমান, জেলা জামায়াতের নেতা মাওলানা আবু জাফর, মাওঃ শিহাব উদ্দিন শার্শা থানা আমীর রেজাউল ইসলাম, সেক্রেটারী মাওলানা ইউসুফ আলী ও ঝিকরগাছা থানা আমীর মাওলানা আসাদুল আলম প্রমূখ।

Header Ad

বিরামপুরে আদিবাসী নারীর লাশ উদ্ধার

ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

দিনাজপুরের বিরামপুরে বিশনি পাহান (৫৫) নামের এক আদিবাসী নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় উপজেলার কাটলা ইউনিয়নের ময়না মোড় এলাকার ধানক্ষেত থেকে ওই নারীর হাতবাঁধা লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত বিশনি পাহান উপজেলার কাটলা ইউনিয়নের বেণুপুর গ্রামের সাধন পাহানের মেয়ে।

নিহতের ভাই চরকা পাহান বলেন, আমার ছোট বোনের স্বামী বিশনি পাহানকে ছেড়ে চলে গেছেন। সে প্রতিরাতেই নেশা করতো। বাবা মারা যাওয়ার পর থেকেই আমার বাড়িতে থাকতো আমার বোন। আমার বোন এলাকায় মানুষের জমিতে কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতো। শুক্রবার বিকেলে এলাকার এক ব্যক্তির জমিতে ধান কাটার কাজ শেষ করে আর বাড়িতে ফেরেননি। রাতে অনেক খোঁজাখুঁজির পরও তাকে কোথাও পাওয়া যায়নি। শনিবার সকালে ধানক্ষেতে হাতবাঁধা অবস্থায় তার লাশ পাওয়া যায়।

বিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমতাজুল হক জানান, এলাকাবাসীর দেওয়া খবরে ঘটনাস্থল থেকে আদিবাসী এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা যাচ্ছে তাকে কে বা কাহারা হত্যা করেছে। তদন্ত করলেই প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

গোপনে দুইজনকে বিয়ে, কাউকেই অধিকার বঞ্চিত করেননি জান্নাতুল
শহীদ আব্দুল্লাহর বাড়িতে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন
বিরামপুরে আদিবাসী নারীর লাশ উদ্ধার
বিএনপির কাঁধে অনেক দ্বায়িত্ব: তারেক রহমান
'জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন হওয়া উচিত'- তোফায়েল আহমেদ
৩ মাসে জ্বালানি খাতে সাশ্রয় হয়েছে ৩৭০ কোটি টাকা : জ্বালানি উপদেষ্টা
জুটি বাধলেন মিঠুন চক্রবর্তী-আফসানা মিমি
দেশ ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দ্রুত নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই : তারেক রহমান
২৪ ঘণ্টার মধ্যে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের আশঙ্কা
অক্টোবরে সড়কে প্রাণ গেছে ৪৭৫ জনের
গায়ানায় দলের সঙ্গে যোগ দিলেন সাকিব
আইপিএল নিলামের আগেই নিষিদ্ধ হলেন ভারতের ২ ক্রিকেটার
গাজীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু
কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া
পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...
অ্যান্টিগায় প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে টাইগাররা
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন পরীমণির প্রথম স্বামী
বিচারের আগে আ.লীগের মাঠে থাকার সুযোগ নেই: উপদেষ্টা নাহিদ
মাকে হত্যার পর থানায় হাজির ছেলে
৮ ক্রিকেটারসহ ৯ জনকে নিষিদ্ধ করলো বিসিবি