আমি আসবো ফিরে....
আমি আসবো ফিরে বারে বারে নানা রূপে, নানা জনে, নানান ক্ষণে, সময়ের দাবি মেটাতে। আমি রঙধনুর সাত রঙে নিজেরে রাঙাবো, তারপর সাতরঙার বিচ্ছুরণে সকলকেই ভোলাবো। আমি মেঘের ভেলায় ভাসতে ভাসতে বৃষ্টি হয়ে ঝরবো পৃথিবীর যমীনে অথবা দুখিনীর চোখের জল লুকাতে বৃষ্টিতে ভেজাবো তারে।
আমি প্রেমের সারথী হয়ে প্রেমের পসরা সাজিয়ে প্রেমহীনের দুয়ারে দুয়ারে গিয়ে বলবো, দুঃখ করোনা, দেখো তোমাদের জন্য প্রেম নিয়ে এসেছি। দুঃখিনী মায়ের দুঃখ মোছাতে আমি সুখ হয়ে ফিরবো তারি ঘরে। তপ্ত দুপুরে বটবৃক্ষের তলে রাখাল বালকের ক্লান্ত শরীর ছুঁয়ে দিতে আমি আসবো হিমেল হাওয়া হয়ে।নির্যাতিতা রমণীর দুঃখ ভোলাতে আমি আসবো ফিরে প্রতিবাদের ভাষা হয়ে, অধিকার ফিরায়ে যাবো চলে তার মুখে হাসি ফোটায়ে। আমি আসবো ফিরে সম্প্রীতির রুপ ধরে হিন্দু মুসলিম খ্রিস্টানকে একই সূতোয় বাঁধতে 'শ্রী মোহাম্মদ যীশু' হয়ে।
মানুষ যখন স্রষ্টাকে ভুলে, ছুটে পৃথিবীর পেছনে পেছনে, অর্থকে করে ধ্যান জ্ঞান আর ধর্ম, ভুলে যায় পারলৌকিক ঘরে ফেরার গল্প; তাদেরকে স্রষ্টা, উপাসনা আর ঘরে ফেরার গল্প মনে করাতে অথবা শোনাতে আমি আসবো ফিরে বজ্র আর ভূমিকম্প হয়ে।
তৃষ্ণার্ত পথিক কিংবা মুসাফির জলতেষ্টা মেটাতে এবং একটুখানি বিশ্রাম নিতে যখন মসজিদে এসে দেখে আল্লাহর ঘরে তালা ঝোলানো, হতাশ হৃদয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলে উর্ধ্বপানে চেয়ে যখন সে বলে, ‘হে প্রভু, তোমার ঘরে আত্মা নেই, তোমার ঘরতো মৃত’। তখন মনে হয় কোন মুজাহিদ হয়ে আবার আসি ফিরে, ভেঙে চুরমার করি মসজিদের প্রবেশদ্বারের তালা, ফিরিয়ে আনি মসজিদের আত্মা। নামাজীর মতোই মসজিদ হোক মুসাফির বা ক্লান্ত পথিকের ক্ষণিকের বিশ্রাম ও শুকরিয়াখানা।
আমি আসিবো ফিরে বারে বারে মানুষের মাঝে ভ্রাতৃত্ব আর ভালোবাসা নিয়ে। সেই ভালোবাসায় সৃষ্টি হোক প্রতিবেশীর প্রতি প্রতিবেশীর সহমর্মিতা, ভাইয়ের প্রতি ভাইয়ের আন্তরিকতা, বোনের প্রতি স্নেহশীলতা, বাবা-মায়ের প্রতি হৃদয়ের টান, শ্রদ্ধাশীলতা। পুরো সমাজটাই যেন হয়ে উঠুক এক একান্নবর্তী পরিবার।
লেখক: মাঈন উদ্দীন, কুষ্টিয়া।