শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫ | ২৯ চৈত্র ১৪৩১
Dhaka Prokash

আসন ভাগাভাগিতে বাড়ছে ক্ষোভ, দীর্ঘ হচ্ছে ভোট বর্জনের তালিকা

ফাইল ছবি

নানা নাটকীয়তার পর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। আর মাত্র তিন দিন পরেই আগামী ৭ জানুয়ারি হবে ভোট গ্রহন। আর এর আগেই একে একে ঘোষণা দিয়ে ভোটের মাঠ থেকে সরে যাচ্ছেন বর্তমান সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি (জাপা) মনোনীত ‘লাঙ্গল’ প্রতীকের প্রার্থীরা। গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত অন্তত ১৬টি আসনে জাপার প্রার্থীরা ভোটের লড়াই থেকে সরে গেছেন। আরও অনেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতার মাঠ থেকে উঠে যাওয়ার প্রস্তুতিও নিচ্ছেন বলে জানা গেছে । ভোটের আগে মাঠ থেকে প্রার্থীদের সরে দাঁড়ানোয় আসন্ন নির্বাচনের ফলাফল প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ার সম্ভবনাও বেড়ে যাচ্ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

দর কষাকষির পর এবারের নির্বাচনেও গতবারের সমপরিমাণ ২৬টি আসনে জাতীয় পার্টিকে ছাড় দেয় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। তবে এর মধ্যে শক্তিশালী স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন অন্তত ১৬টি আসনে, যারা আওয়ামী লীগের নেতা। ক্ষমতাসীন দল নৌকা প্রতীকের প্রার্থীদের ভোটের মাঠ থেকে সরালেও তাদের ব্যাপারে কোনো দায়িত্ব নেবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে দলটি। এতে জাতীয় পার্টির প্রার্থীদের নির্বাচনী বৈতরণী পার হয়ে আসা অনেক কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। ২৬টি আসনের মধ্যে কতটিতে শেষ পর্যন্ত বিজয়ের মুখ দেখা সম্ভব হবে সেটা নিয়ে পার্টির মধ্যে রয়েছে সংশয়।

এদিকে ২৬টি আসনে সমঝোতা হলেও বাকি আসনে কোনো সমঝোতা হয়নি। কয়েকটি বাদে দেশের প্রায় সব আসনেই লাঙ্গল প্রতীকে মনোনয়নও দিয়েছে জাতীয় পার্টি। তবে অন্য প্রার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। তাদের দাবি, ২৬টিতে সমঝোতা হলে আমাদের কী দোষ। আমরা এই তালিকায় নেই কেন। এছাড়া দলীয় কোনো নির্দেশনা না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা। তারা বলছেন, শীর্ষ নেতারা নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত, তারা যোগাযোগ করতে পারছেন না।

ঘোষণা দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানো জাপার প্রার্থীদের বেশির ভাগেরই অভিযোগ, নির্বাচন কমিশন (ইসি) সরকার কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত।

নির্বাচন সুষ্ঠু না হওয়ার শঙ্কাও ব্যক্ত করেছেন তারা। কারো অভিযোগ, আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমঝোতা হওয়া ২৬টি আসনের বাইরে জাপার যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বা করছিলেন—দল তাদের খোঁজ রাখেনি, দলীয়ভাবে আর্থিক সহযোগিতাও করা হয়নি। এতে তারা আর্থিক সংকটে পড়েছেন। নিজ নিজ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত ‘নৌকা’ প্রতীকের এবং আওয়ামী লীগের পদধারী ‘স্বতন্ত্র’ প্রার্থী ও তাদের কর্মীদের কাছ থেকে হুমকি পাওয়ার অভিযোগ এনে তারা বলেছেন, এতে ভোটের মাঠে থাকাকে তারা ঝুঁকিপূর্ণ মনে করছেন। এমনকি, নির্বাচনে নিজেদের থাকা না থাকার মধ্যে কোনো তফাতও দেখছেন না সরে যাওয়া এই প্রার্থীরা।

প্রতিদ্বন্দ্বিতার মাঠের বাইরে চলে যাওয়া জাপার প্রার্থীদের অনেকে এমনও বলেছেন, আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমঝোতার ২৬টি আসনে ‘লাঙ্গল’ প্রতীকের প্রার্থীদের অনেকেই নিজেদের পোস্টার-লিফলেটে ‘জাতীয় পার্টি মনোনীত ও আওয়ামী লীগ সমর্থিত’ বলে উল্লেখ করেছেন, কেউ কেউ পোস্টার-লিফলেটে নিজেদেরকে ‘আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সমর্থিত’ প্রার্থী হিসেবে উল্লেখ করেছেন। আবার ঐ ২৬টি আসনে জাপার প্রার্থীদের কেউ কেউ পোস্টার-লিফলেটে দলীয় প্রধান জিএম কাদের ছাড়াও আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবিও ব্যবহার করেছেন। এমন অভিযোগ তুলে তারা বলেছেন, ‘তাহলে আমরা কারা? আমরা আমাদের পোস্টারে কী লিখব?’

নির্বাচনের মাঠ থেকে সরে দাঁড়ালেন যারা

রোববার (৩১ ডিসেম্বর) দুপুরে বরিশাল নগরীর একটি কমিউনিটি সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন জাতীয় পার্টির মনোনিত বরিশাল জেলার দুই আসন এবং বরগুনার একটি আসনের প্রার্থীরা। প্রার্থিতা প্রত্যাহার করা প্রার্থীরা হলেন- বরিশাল-২ (বানারীপাড়া-উজিরপুর) ও বরিশাল-৫ (সদর) আসনের প্রার্থী জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা প্রকৌশলী ইকবাল হোসেন তাপস এবং বরগুনা-১ (আমতলী-তালতলী) আসনের প্রার্থী খলিলুর রহমান।

ভোটের মাঠ থেকে সরে যাওযার ঘোষণা দেন বরিশাল জেলার দুই আসন এবং বরগুনার একটি আসনের প্রার্থীরা। ছবি: সংগৃহীত

সংবাদ সম্মেলনে ইকবাল হোসেন তাপস বলেন, নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে বদ্ধপরিকর মুখে বললেও তাদের আচরণে মনে হচ্ছে তারা সরকার কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত। সরকার কিছু রাজনৈতিক দলকে দিয়ে নির্বাচনী বৈতরণি পার হতে চাচ্ছে। সবকিছু মিলিয়ে আমার কাছে মনে হচ্ছে ৭ জানুয়ারি প্রহসনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, যে নির্বাচনে সাধারণ মানুষের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। নির্বাচনে রয়েছে একটি দল আর সেই দলের লেজুড়ভিত্তিক কিছু মানুষ, তারাই এ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। তাই সার্বিক বিবেচনায় আগামী ৭ জানুয়ারির নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

একই অভিযোগ এনে একই মঞ্চে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন বরগুনা-১ আসনের জাতীয় পার্টির প্রার্থী লিলুর রহমান।

 

১ জানুয়ারি (সোমবার) নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান জাতীয় পার্টির আরও দুইজন প্রার্থী। তারা হলেন চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের প্রার্থী সোহরাব হোসেন এবং হবিগঞ্জ-২ আসনের প্রার্থী শংকর পাল।

সোহরাব হোসেন বলেন, ‘চুয়াডাঙ্গা-১ আসনে তিন প্রার্থী কোটি কোটি টাকা নিয়ে মাঠে নেমেছেন। তারা ভোটের মাঠে কোটি কোটি টাকা ছড়াচ্ছেন। তাদের সঙ্গে আামি পেরে দিচ্ছি না। প্রতিদিন নির্বাচনী এলাকায় যখন প্রচারে নামি আমার কমপক্ষে ৬০ হাজার টাকা খরচ হয়। আমি কোথায় পাব এত টাকা। আমাদের নেতারা কোনো খোঁজখবর রাখেন না। মজিবুল হক চুন্নু ও জিএম কাদের মোবাইল বন্ধ করে রাখেন। তারা তাদের নিজ নিজ স্বার্থে বিভোর। আমাদের বা দলের কথা তারা ভাবছেন না। তাই নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালাম। একই সঙ্গে রাজনীতিও আর করব না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

জাপার মনোনিত চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের প্রার্থী সোহরাব হোসেন । ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় পার্টির প্রার্থী বলেন, প্রয়াত রাষ্ট্রপতি এইচএম এরশাদ ও তার গড়া জাতীয় পার্টিকে ভালোবাসি বলে এখনও দল করি। জাতীয় পার্টির মনোনয়ন নিয়ে আওয়ামী লীগের সমর্থিত পোস্টার ছাপিয়ে ভোট চাওয়ার লোক আমি নই। তাহলে দলের অবস্থান কোথায় থাকলো? আওয়ামী লীগের সমর্থন নিয়ে সাধারণ মানুষের ভোট পাওয়া যাবে না।

জাপার নেতা বলেন, গত নির্বাচনে আমার এজেন্টকে নানাভাবে নাজেহাল করা হয়েছে। কোনো কারণ ছাড়াই দোকান থেকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে। এর জবাব আজও পাইনি। এবারের নির্বাচনেও যে তা হবে না এর নিশ্চিয়তা কোথায়?

গাজীপুর-৪ (কাপাসিয়া) আসনে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়ে জাপার প্রার্থী সামসুদ্দিন খান গতকাল কাপাসিয়া প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘আমি শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্বাচনে প্রচার চালিয়ে যাওয়ার মতো অবস্থাতে নেই। তাছাড়া আমি অর্থনৈতিকভাবে সমস্যায় পড়েছি।’

ছয় দিন আগে গত রবিবার নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন গাজীপুর-১ (কালিয়াকৈর ও সিটির একাংশ) ও গাজীপুর-৫ (কালীগঞ্জ ও সদর একাংশ) আসনে জাপার প্রার্থী এম এম নিয়াজ উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘সরকারের একতরফা নির্বাচন, সামগ্রিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং ব্যক্তিগত কারণে সরে দাঁড়িয়েছি। মূলত আমি আর পারছি না, যার কারণে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছি।’

সর্বশেষ গতকাল নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করার ঘোষণা দিয়েছেন গাজীপুর-৪ (কাপাসিয়া) আসনের জাপার প্রার্থী মো. সামসুদ্দিন খান এবং দিনাজপুর-২ (বিরল-বোচাগঞ্জ) আসনের মাহবুব আলম। হবিগঞ্জ-২ আসনের (বানিয়াচং-আজমিরীগঞ্জ) জাপার প্রার্থী শংকর পাল এবং চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের ‘লাঙ্গল’ প্রতীকের প্রার্থী অ্যাডভোকেট সোহরাব হোসেন। ৩১ ডিসেম্বর নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন গাজীপুর-১ (কালিয়াকৈর ও সিটির একাংশ) ও গাজীপুর-৫ (কালীগঞ্জ ও সদর একাংশ) আসনে জাপার প্রার্থী ও সাবেক সচিব এমএম নিয়াজ উদ্দিন। একই দিন সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান বরিশাল ৫ (সদর) ও বরিশাল-২ (বানারীপাড়া-উজিরপুর) আসনের ‘লাঙ্গল’ প্রতীকের প্রার্থী প্রকৌশলী ইকবাল হোসেন তাপস এবং বরগুনা-১ (তালতলী-আমতলী) আসনের খলিলুর রহমান। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ একরামুজ্জামানকে সমর্থন দিয়ে ২৪ ডিসেম্বর নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান জাপার মো. শাহানুল করিম। এর আগে ১৭ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জ-৪ (ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনে জাপার প্রার্থী ছালাউদ্দিন খোকা সরে দাঁড়ান।

 

ভোট থেকে সরে দাঁড়ানোর বিষয়ে যা বললেন জিএম কাদের

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের । ছবি: সংগৃহীত

জাপার প্রার্থীদের সরে দাঁড়ানোর বিষয়ে দলটির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, ‘কয়েকটি আসনে জাপার কয়েকজন প্রার্থীর নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়া ঠিক হয়নি। এতে দলের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের কাছে ভুল বার্তা যাবে। তবে, আমাদের দলের প্রার্থীদের আর্থিক সমস্যা দেখা দিয়েছে। আমরা দলীয়ভাবে প্রার্থীদের আর্থিক সহায়তা দেবো, সে সামর্থ্য আমাদের নেই। তাছাড়াও প্রার্থীদের নানান হুমকি-ধমকিসহ আরও অনেক সমস্যা আছে।’

বহু নাটকীয়তা শেষে গত ১৭ ডিসেম্বর নির্বাচনে থাকার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়ে জাপা মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু জানিয়েছিলেন—২৮৩টি আসনে দলের প্রার্থীরা ‘লাঙ্গল’ প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। তবে, ঢাকা-৬ আসনে দলটির কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদ এবং ঢাকা-১৩ ও ১৪ আসনে প্রেসিডিয়াম সদস্য শফিকুল ইসলাম সেন্টুসহ ২৬ জন ঐদিনই নিজেদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। ফলে দেশের ৩০০টি সংসদীয় আসনের মধ্যে বাস্তবে জাপার প্রার্থী ছিল ২৫৭টিতে। এই ২৫৭ জনের মধ্যে আওয়ামী লীগের সঙ্গে আসন-সমঝোতায় জাপার যেই ২৬ জন প্রার্থীর আসনে ‘নৌকা’র প্রার্থী নেই—তারা নিজ এলাকায় ভোটের মাঠে পুরোদমে সক্রিয়। অবশিষ্ট ২৩১ জনের মধ্যে আট-দশ জন নিজ আসনে ‘নৌকা’র বিপরীতে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়তে জোর প্রচারণায় নামলেও বাকিরা আছেন নামেমাত্র।

Header Ad
Header Ad

কোরআন তেলাওয়াতে ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচি শুরু

ছবি: সংগৃহীত

পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি প্রকাশের কর্মসূচি ‘মার্চ ফর গাজা’-এর আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। শনিবার (১২ এপ্রিল) বিকেল সোয়া তিনটার দিকে বিখ্যাত ক্বারি আহমদ বিন ইউসুফের আবেগঘন তেলাওয়াতে শুরু হয় এই বহুল আলোচিত আয়োজন।

‘প্যালেস্টাইন সলিডারিটি মুভমেন্ট বাংলাদেশ’ এর আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতিব মুফতি আব্দুল মালেক। জনসমাগম উপেক্ষা করে মঞ্চে ওঠেন ড. মিজানুর রহমান আজহারী, শায়খ আহমাদুল্লাহ ও হাসনাত আব্দুল্লাহ। বিশাল জনতার ভিড় পেরিয়ে মঞ্চে উঠতে গিয়ে নেতৃবৃন্দকে বেশ বেগ পোহাতে হয়।

জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে জোহরের নামাজ আদায় শেষে বক্তারা সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অভিমুখে মিছিলে অংশ নেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে ড. মিজানুর রহমান আজহারী ও শায়খ আহমাদুল্লাহ উপস্থিত জনতাকে শৃঙ্খলার সঙ্গে অনুষ্ঠান উপভোগের আহ্বান জানান। এরপর আজহারীর কণ্ঠে স্লোগান ধ্বনিত হলে লাখো জনতা ফিলিস্তিনের পতাকা ওড়িয়ে তার জবাব দেন।

আয়োজনের আগে থেকেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মানুষের ঢল নামে। দুপুর ২টার মধ্যেই পুরো উদ্যান কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। সমাবেশ ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের এলাকা—শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা, দোয়েল চত্বর, গুলিস্তান, মৎস্য ভবন মোড়, রমনা পার্ক, নিউমার্কেট ও হাইকোর্ট চত্বর পর্যন্ত।

জনতার মুখে একই বার্তা—"স্বাধীন হবে ফিলিস্তিন, বন্ধ হবে গণহত্যা"। দল-মত নির্বিশেষে সাধারণ মানুষের এই স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গড়ে উঠেছে এক ঐক্যবদ্ধ প্রতিবাদের মঞ্চ।

Header Ad
Header Ad

সাকিবের বিচার এই দেশের মাটিতেই হবে: আমিনুল হক

সাকিব আল হাসান (বামে) এবং আমিনুল হক। ছবি: সংগৃহীত

ক্রিকেটার থেকে সংসদ সদস্য—সাকিব আল হাসানের রাজনৈতিক যাত্রা নিয়ে বিতর্ক যেন থামছেই না। আর এবার সেই বিতর্কে নতুন আগুন ঢেলেছেন জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক ও বিএনপির ক্রীড়া-বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল হক।

সম্প্রতি এক রাজনৈতিক সভায় দেওয়া বক্তব্যে আমিনুল বলেন, “সাকিব গত ১৭ বছরের স্বৈরাচার সরকারের একজন এমপি হিসেবে জাতির সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। নিজের স্বার্থে অবৈধ সংসদে যোগ দিয়েছেন। এটা খেলোয়াড়সুলভ মানসিকতা নয়।”

গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর দেশে ফেরেননি সাকিব। এরপর থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পরিবারের সঙ্গেই থাকছেন তিনি। সাকিবকে দেশে আসতে দেওয়া হবে কি না এমন প্রশ্নে আমিনুল আরও বলেন, 'এ ধরনের একজন খেলোয়াড়কে দেশে আসতে দেওয়া হবে কি না, সেটা রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত। তবে আমার প্রশ্ন হচ্ছে—স্বৈরাচার সরকারের সঙ্গে থাকা ব্যক্তিদের অবশ্যই বাংলাদেশের মাটিতে বিচার হবে, ইনশাআল্লাহ।'

সাকিব আল হাসান ২০২৪ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে মাগুরা-১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তবে সেই নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন থাকায়, অনেকের কাছেই এই পদক্ষেপ বিতর্কিত। আমিনুলের মতে, একজন আন্তর্জাতিক ক্রীড়াবিদের উচিত ছিল নিরপেক্ষতা রক্ষা করা। কিন্তু সাকিবের রাজনৈতিক অংশগ্রহণ, বিশেষ করে একটি বিতর্কিত সরকারের পক্ষ নেওয়া, তার অবস্থানকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।

তবে আমিনুলের এমন বক্তব্যের বিষয়ে সাকিবের আল হাসানের ঘনিষ্ঠ মহল থেকে এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। তবে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অনেকেই সামাজিক মাধ্যমে এই বক্তব্যের নিন্দা জানিয়েছেন এবং একজন জাতীয় গৌরবের খেলোয়াড়কে এভাবে হেয় করার চেষ্টা রাজনৈতিক শিষ্টাচারের বাইরে বলে অভিহিত করেছেন।

কেউ কেউ আমিনুল হকের বক্তব্যকে ‘হীন রাজনৈতিক কৌশল’ বলে আখ্যা দিয়েছেন, আবার কেউ কেউ সাকিবের রাজনৈতিক ভূমিকা নিয়ে খোলামেলা বিতর্কের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করেছেন। এই বক্তব্য ঘিরে রাজনৈতিক উত্তেজনা আরও বাড়বে কি না, তা সময়ই বলে দেবে। তবে ক্রীড়া ও রাজনীতির দ্বৈত ভূমিকা নিয়ে বাংলাদেশে বিতর্ক আরও যে গভীর হচ্ছে, সেটা আর না বললেও চলে।

Header Ad
Header Ad

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মামলায় আসামি গ্রেফতারে লাগবে ঊর্ধ্বতনের অনুমতি: ডিএমপি

ফাইল ছবি

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে সারাদেশে দায়ের হওয়া একের পর এক মামলায় এজাহারভুক্ত আসামিদের গ্রেফতার নিয়ে বিতর্ক ও অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে নতুন নির্দেশনা দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। এখন থেকে এসব মামলায় কাউকে গ্রেফতারের আগে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে, এবং গ্রেফতারের জন্য উপযুক্ত ও পর্যাপ্ত প্রমাণ পেশ করাও হবে বাধ্যতামূলক।

গত বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার ফারুক হোসেন স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এসব নির্দেশনা দেওয়া হয়।

অফিস আদেশে বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকে কেন্দ্র করে রুজু করা মামলাগুলোর অধিকাংশেই এজাহারভুক্ত আসামির সংখ্যা অত্যাধিক। এসব মামলায় আসামি গ্রেফতারের আগে তদন্তে প্রাপ্ত প্রমাণ যেমন—ভিকটিম, বাদী, প্রত্যক্ষদর্শী, ভিডিও, অডিও, স্থিরচিত্র, মোবাইল কললিস্ট (সিডিআর) ইত্যাদি সংগ্রহ করে, তা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে উপস্থাপন করতে হবে। অনুমোদন ছাড়া কাউকে গ্রেফতার করা যাবে না।

শনিবার (১২ এপ্রিল) গণমাধ্যমে এই বিষয়ে জানতে চাইলে যুগ্ম কমিশনার ফারুক হোসেন বলেন, “কোনো নিরাপরাধ ব্যক্তি যেন হয়রানির শিকার না হন এবং প্রকৃত অপরাধীরা যেন ছাড়া না পান—সে লক্ষ্যেই আমরা কাজ করছি।”

শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর শুরু হওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘিরে দেশের বিভিন্ন জেলায় ব্যাপক হারে মামলা দায়ের করা হয়। অনেক ক্ষেত্রেই একেকটি মামলায় হাজারের বেশি লোককে আসামি করা হয়েছে, যাদের অনেকের বিরুদ্ধে কোনো সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া যায়নি—এমন তথ্য উঠে এসেছে প্রাথমিক অনুসন্ধানে।

এই ধরনের মামলায় শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নয়, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতৃবৃন্দ, এমনকি ব্যক্তি বিরোধ বা প্রতিপক্ষতার জেরে নাম জুড়ে দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে। আসামি করার বিনিময়ে আর্থিক লেনদেন বা “মামলা বাণিজ্য”-এর কথাও উঠে এসেছে বিভিন্ন মহলের বক্তব্যে।

এর আগেও, পুলিশ সদরদপ্তর থেকে গত বছরের ১০ সেপ্টেম্বর একটি সার্কুলারে বলা হয়েছিল, সঠিক তথ্য-প্রমাণ ছাড়া কোনো সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীকেও গ্রেফতার করা যাবে না। এমনকি প্রাথমিক তদন্তে কোনো ব্যক্তির সম্পৃক্ততা না থাকলে, তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার কথাও বলা হয়।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীসহ সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকেও বারবার জানানো হয়েছে—“মামলা হলেই গ্রেফতার করতে হবে—এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।”

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

কোরআন তেলাওয়াতে ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচি শুরু
সাকিবের বিচার এই দেশের মাটিতেই হবে: আমিনুল হক
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মামলায় আসামি গ্রেফতারে লাগবে ঊর্ধ্বতনের অনুমতি: ডিএমপি
‘মার্চ ফর গাজা’ নিছক কোনো পদযাত্রা নয়, এটি মুসলিমদের ঐক্যের সেতু: আজহারি
ড. ইউনূসকে ৫ বছর ক্ষমতায় চেয়ে পাগলা মসজিদের দানবাক্সে চিঠি
আল-আকসার ইমামকে ৭ দিনের নিষেধাজ্ঞা দিলো ইসরায়েল
হাসিনার দোসররা ফ্যাসিবাদের মুখাবয়ব পুড়িয়ে দিয়েছে: উপদেষ্টা ফারুকী
১০ জনের পরিবারের সবাইকে হত্যা করল ইসরায়েল
পিএসএল না খেলেই দেশে ফিরছেন লিটন
পাগলা মসজিদের অ্যাকাউন্টে জমেছে ৮০ কোটি ৭৫ লাখ টাকা
ভারী বর্ষণ-বজ্রপাতে ভারত ও নেপালে প্রায় ১০০ জনের প্রাণহানি
পাগলা মসজিদের দানবাক্সে মিলল ২৮ বস্তা টাকা, গণনা চলছে
অবশেষে জানা গেল কলকাতার কোথায় আছেন ওবায়দুল কাদের
স্বাধীন ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখবে বাংলাদেশ
মার্চ ফর গাজা: প্রস্তুত সোহরাওয়ার্দী, আসছে মানুষ-জনসমুদ্রের অপেক্ষা
চারুকলায় আগুন, নববর্ষের দুদিন আগে পুড়ে গেল ‘ফ্যাসিবাদের মোটিফ’
কুল-বিএসপিএ স্পোর্টস অ্যাওয়ার্ডে বর্ষসেরা ক্রীড়াবিদ মিরাজ, দর্শক পছন্দে সেরা ঋতুপর্ণা
রাজধানীর ওয়াসার পানিতে কিলবিল করছে পোকা, মগবাজার-মধুবাগে তীব্র ভোগান্তি
বিদেশি আইনের আওতায় পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার উদ্যোগ: গভর্নর
মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম বদল নয়, বরং ঐতিহ্যে ফেরত: ঢাবি উপাচার্য