মঙ্গলবার, ৮ এপ্রিল ২০২৫ | ২৪ চৈত্র ১৪৩১
Dhaka Prokash

প্রাচীন বঙ্গের স্থাপত্যকলা ইতিহাস: গোপীনাথ দেব বিগ্রহ মন্দির

কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী উপজেলার অন্তর্গত নির্মল ছায়াঘেরা অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যমণ্ডিত খোরশেদপুর গ্রামটি শিলাইদহ কুঠিবাড়ি থেকে মাত্র ১ কিলোমিটার পূর্ব-দক্ষিণে অবস্থিত। বিখ্যাত পীরদরবেশ ও হযরত খানজাহান আলী (র.) এর প্রেরিত শিষ্য হযরত খোরশেদ-উল-মূল্ক (র.) এর নামানুসারে এই গ্রামের নামকরণ করা হয়।

এখানেই আছে এই পীরের আস্তানা ও মাজার। মাজারের পাশে নাটোরের রাণী ভবানী খনিত বিশাল দুইটি দিঘির একটি অবস্থিত। খোরশেদপুর হাটের কাছে দক্ষিণ দিকে প্রাচীরবেষ্টিত অঙ্গনে একটি পোড়ামাটির ভাস্কর্য মণ্ডিত বাংলা চালারীতির চারচালা রাধারমণ মন্দির ভগ্ন, বিধ্বস্ত ও পরিত্যক্ত হওয়ায় ভবনটি ভেঙে ফেলে নতুন দূর্গামন্দির ২০০৪ সালে স্থাপিত হয়েছে। মন্দির চালা এক বিশাল বটগাছের শাখাপ্রশাখায় ও জঙ্গলে আবৃত ছিল। মন্দিরটির আকার দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ ২০ ফুট এবং উচ্চতায় প্রায় ৩০ ফুট। মন্দিরে প্রবেশদ্বারের উপরে বাঁকানো কার্ণিশের নিচে দুই সারিতে ও দুই পাশে দুই সারিতে মোট ৬২টি কুলুঙ্গিতে পোড়ামাটির মূর্তি-ভাস্কর্য ছিল, যার অধিকাংশই কৃষ্ণলীলা বিষয়ক। এছাড়া, তিনদিকে নানা অলঙ্করণ। মূর্তি-ভাস্কর্য অধিকাংশই বিনষ্ট। অবশিষ্ট ফুলকারি ও জ্যামিতিক নক্শার ভাস্কর্যগুলি প্রাচীর বেষ্টনীর প্রবেশদ্বারের দুই পাশে কিছুদিন আগে নিবদ্ধ করা হয়েছে। এই প্রবেশপথটি প্রায় ১৫ হাত উঁচু কপাট শোভিত। চারিদিকে টেরাকোটা ইটে সন্যাল পদ্ম, চক্র, লতা, পশু, পাখি, ফুল, পাতা ও দেবদেবীর মূর্তি শোভিত বিভিন্ন নক্শার কারুকার্য বেষ্টিত। এর মধ্যে হাতি, ঘোড়া, গরু, পাখি, গোল আকৃতির বিভিন্ন নক্শা ফুলসহ নানা কারুকার্য দৃষ্টি কাড়ে। মূল ভবনের প্রবেশদ্বারেই রয়েছে একটি বিশাল মঠ। মঠটি সীতারামের। মঠের সামনে ঐসময়ের কীর্তন পরিবেশন ভবনটি এখন জঙ্গলে পরিপূর্ণ ও পরিত্যক্ত। কথিত আছে, ভবনটি অতিথিশালা ও বিশ্রামাগার হিসেবে ব্যবহার হতো। প্রধান ফটক দিয়ে প্রবেশ শেষে ডান পার্শ্বে ঘুরে ডানদিকে রয়েছে অতিথিশালা।

মঠ মন্দিরে প্রতিষ্ঠিত ছিলেন গোপীনাথ বিগ্রহ। এই মন্দিরটি কালের কবলে বিধ্বস্ত হলে পাশেই পাঁচটি ফুলকাটা খিলানের দুইটি সারি সংযুক্ত প্রশস্ত পঙ্খ-অলঙ্কৃত পাশদুইটিতে পরীর ভাস্কর্য স্থাপিত ঐতিহ্যবাহী শ্রী শ্রী গোপীনাথ দেব বিগ্রহ (দেবপ্রতিমা) দালান মন্দির নাটোরের রাণী ভবানী কর্তৃক নির্মিত হয়। নির্মাণ আর স্থাপত্য নিদর্শনের এক অপূর্ব সৃষ্টি গোপীনাথ মন্দিরের স্থাপত্য কারুকার্য কাছ থেকে না দেখলে বোঝার উপায় নেই এর শিল্পনৈপূণ্য কত মাধুর্যময়! মাঝে নবনির্মিত লোহার গ্রীল; গ্রীল পেরুলে বাম পাশে কাঠের রথ রয়েছে, আর ডান পাশে রয়েছে কাঠের সিংহাসন। ভিতরে রয়েছে গোপীনাথের মূল বিগ্রহটি। এই মন্দিরে চারশত বছরের পুরাতন শ্রীকৃষ্ণ মূর্তি ছিল যা ভগ্ন হওয়ায় পূজা করা হয় না। নতুন স্থাপিত রাধা-কৃষ্ণের মূর্তি আছে যার নিত্যপূজা হয়।



এই মন্দিরে কষ্টি পাথরের রাধারমণের বিগ্রহ ছিল। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধকালে পাকসেনারা বিগ্রহটি ধ্বংস করার পর বর্তমান পর্যন্ত নতুন কোন বিগ্রহ নেওয়া হয়নি। চালা মন্দিরের পোড়ামাটির কিছু ভাস্কর্য দালানমন্দিরে সংযুক্ত আছে। বাংলা হরফে পোড়ামাটির সংস্কৃত প্রতিষ্ঠালিপিফলক দালানমন্দিরে নিবদ্ধ। লম্বা ১৩ সেন্টিমিটার ও প্রশস্ত ১৯ সেন্টিমিটার আকারের প্রতিষ্ঠালিপির পাঠ:

...যে সাগরশায়ক ঋতু
শীতাংশু চাত: শকে...গতেষু
শ্রীহরে গৃহং শয়ন প্রথাং
কীর্ত্তি: স্থিতৌ। ত্রিনেত্রপতি: রাম
কান্ত নৃপতি না নির্ম্মমে সংস্থপত্যগ্রণী
শ্রী...নাথ জগত: পতে: স্থপতিভি:
...মাদায় নির্ম্মমে...নাথ
... ... ... ... ... ... ...

 

এই প্রতিষ্ঠাফলক অনুযায়ী ১৬৫৭ শকে (সাগর ৭, শায়ক ৫, ঋতু ৬ ও শীতাংশু ১, অঙ্কের বামাগতি অনুযায়ী ১৬৫৭) অর্থাৎ ১৭৩৫ খ্রিষ্টাব্দে রাণী ভবানীর পতি রামকান্ত রায় এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠাফলকের শেষাংশে মন্দিরনির্মাতা স্থপতির নামধাম উল্লেখ আছে। অক্ষরগুলি ভেঙে যাওয়ায় এবং বারবার প্রতিষ্ঠাফলকে রঙ করায় পাঠোদ্বার এখন অসম্ভব। এই মন্দিরলিপির সম্পূর্ণ পাঠোদ্ধার হলে মন্দির নির্মাতা শিল্পীর পরিচয় উদ্ঘাটিত হত। শচীন্দ্রনাথ অধিকারী তাঁর ‘শিলাইদহ ও রবীন্দ্রনাথ’ গ্রন্থে লিখেছেন: ‘...ভগিনী নিবেদিতা গেলেন শিলাইদহের বিখ্যাত গোপীনাথ ঠাকুর মন্দির ও দেবদর্শন করতে। ...গোপীনাথের প্রাচীন মন্দির দুটি রাজা সীতারাম রায়ের তৈরি, নতুন মন্দিরটি রাণী ভবানীর তৈরি। ...সেকালের নানা শিল্পকলার নিদর্শন রয়েছে সেই মন্দিরের পাতলা ইটগুলোতে। কয়েকখানা পুরোনো ভেঙেপড়া ইটও সযত্নে সংগ্রহ করে সঙ্গে নিলেন।’ প্রাসঙ্গিক উল্লেখ্য যে ভগিনী নিবেদিতা ১৯১০ খ্রিষ্টাব্দে শিলাইদহ কুঠিবাড়িতে রবীন্দ্রনাথের কাছে গিয়ে পক্ষকাল ছিলেন।



দালানমন্দিরে গোপীনাথের স্নানযাত্রা ও দোলের অষ্টকোণাকৃতি কারুকার্যমণ্ডিত মঞ্চ আছে, দারুতক্ষণশিল্পের নিদর্শন। দালানমন্দিরে এখন শালগ্রাম শিলা নিত্যপূজিত। দালানমন্দিরের সামনে অসমাপ্ত নাটমন্দির, ১৩৭৭ বঙ্গাব্দে নির্মিত হয়। প্রাচীনবেষ্টনীর প্রবেশদ্বারও অলঙ্কৃত। বাইরে দুটি দোলমঞ্চ, একটি সংলগ্ন, অপরটি একটু দূরে মূল মন্দিরের বাহিরে পশ্চিম দিকে। মঞ্চ দুইটি অষ্টকোণাকৃতি ইটের তৈরি। স্থাপত্যটির বেদীতে মাথাসহ হাতির শুঁঁড়ের আদলে তৈরি সাতধাপের সিঁড়িঁসহ রেলিং আছে। ‘তাঁতী কল্যাণ রায়’ ছিলেন ধর্মপ্রাণ জমিদার। তাঁর আরাধ্য গোপীনাথ বিগ্রহ রাজা সীতারাম রায় চারচালা মন্দির নির্মাণ করে প্রতিষ্ঠা করেন। এই মন্দির ধ্বংস হলে রাণী ভবানী দালানমন্দির নির্মাণ করেন ১৭৩৫ খ্রিষ্টাব্দে। নতুন প্রজন্মের স্থানীয় রঞ্জু আহমেদ বলেন, ‘আষাঢ় মাসে এখানে এ পূজাকে কেন্দ্র করে মেলা বসে। শত শত নারী-পুরুষেরা ঘট ভর্তি ঘোল আর নানা রকম প্রসাদ নিয়ে হাজির হয় এখানে।’ মন্দিরের পূর্ব দিকে রয়েছে দূর্গা মন্দির যা ২০০৪ সালে তৎকালীন কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মো. সৈয়দ আহসানুল হক নির্মাণের জন্য ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। পাশ্ববর্তী আড়পাড়া নিবাসী মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুল জব্বার এবং মো. বিল্লাল বিশ্বাস বলেন, গোপীনাথ মন্দিরের বাইরে একটি বাইজি খানা ছিল যা সখিপুর নামে পরিচিত। এই মন্দির যে, তাঁতী কল্যাণ রায় কর্তৃক দানকৃত জমির উপর রাণী ভবানী উদ্যোগী হয়ে প্রতিষ্ঠা করেন সেই বিষয়ে তিনিও একমত হন। শিলাইদহে বিশ্বকবির কুঠিবাড়ি পরিদর্শনে এসে শ্রী শ্রী গোপীনাথ দেব বিগ্রহ মন্দির দর্শন না করলে পর্যটকগণের আত্মতৃপ্তি অপূর্ণই থেকে যায় বটে!

 

বিস্তারিত জানতে: ড. মুহম্মদ এমদাদ হাসনায়েন ও ড. সারিয়া সুলতানা, ‘ধর্মীয় ইতিহাস স্থাপত্যে কুষ্টিয়া’, প্রথম প্রকাশ, কণ্ঠধ্বনি প্রকাশনী, কুষ্টিয়া, একুশে গ্রন্থমেলা ২০২০


খুজতে হলে: https://www.rokomari.com/search?term=কণ্ঠধ্বনি+প্রকাশনী

 


লেখক: ইতিহাস গবেষক ও প্রাবন্ধিক  

Header Ad
Header Ad

সীমান্ত এলাকার পরিস্থিতি নিয়ে চুয়াডাঙ্গায় বিজিবির মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

সীমান্ত এলাকার পরিস্থিতি নিয়ে চুয়াডাঙ্গায় বিজিবির মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত। ছবি: সংগৃহীত

চুয়াডাঙ্গায় সীমান্ত এলাকার বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে বিজিবির আয়োজনে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (৭ এপ্রিল) বেলা ১১ টায় দর্শনা আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভার শুরুতে বিজিবি চুয়াডাঙ্গা ৬ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল নাজমুল হাসান উপস্থিত সকলের সাথে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
সীমান্ত এলাকায় বসবাস কারী জনসাধারণের জীবনযাত্রা মান উন্নয়ন, অবৈধ কর্মকাণ্ড ও সীমান্ত অতিক্রম রোধ, আন্ত সীমান্ত অপরাধ দমন এবং আঞ্চলিক উন্নয়নে অবদান রাখার বিষয়ে মতবিনিময় সভা আরম্ভ করেন।

পরবর্তীতে সীমান্তে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবি এর ভূমিকা, চোরাচালান প্রতিরোধ কর্মকাণ্ডে সম্মিলিত প্রয়াস, সীমান্ত এলাকার মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা, সীমান্ত উন্নয়ন ও নিরাপত্তায় সম্মিলিত প্রয়াস, অর্থ সামাজিক উন্নয়নের সম্মিলিত প্রয়াস, সমস্যা চিহ্নিতকরণ, সম্ভাব্য সমাধান ও সম্মিলিত প্রচেষ্টা, কারিগরি ও কর্মমুক্তি প্রশিক্ষণ, কৃষি ও পশু পালন খাতে সহায়তা, নারী উন্নয়ন কর্মসূচি, বেসরকারি সংস্থা ও কর্পোরেটর সংযোগ ইত্যাদি বিষয়ের উপর আলোকপাত করেন। শেষে উপস্থিত- দামুড়হুদা ইউএনও, এসিল্যান্ড, ওসি সহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও সাংবাদিকদের মাঝে পয়েন্ট আহ্বান করেন।

সীমান্ত এলাকায় বাল্যবিবাহ সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দমন করা, মহিলা বিষয়ক বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করা, ইভটিজিংয়ের পরিমাণ বর্তমানে একটু কম যাতে না বাড়তে পারে সেদিকে সর্বপ্রকার সম্মিলিত প্রচেষ্টা, মাদক নিয়ন্ত্রণের জন্য সর্বপ্রকার তথ্য দিয়ে সকল প্রশাসনকে সহযোগিতা করা, এছাড়াও যেকোনো প্রকার অসঙ্গতিপূর্ণ কাজের তথ্য দিয়ে প্রশাসনকে সহায়তা করা। সীমান্তবর্তী এলাকায় সকল প্রকার অটো বাইক, অটো ভ্যান পৌরসভার মাধ্যমে লাইসেন্স কার্ড করা যাতে তার নাম ঠিকানা সকল তথ্য থাকে এবং যে কোন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তল্লাশির জন্য ডাকলে সহজে তারা এগিয়ে আসে এবং নাম পরিচয় সহজে যাতে পাওয়া যায়।

মাদক ব্যবসায়ীদের ধর্মীয় ভয়-ভীতি দেখানো, মাদক ব্যবসায়ীরা অভিনব কায়দায় ছোট ছেলেমেয়েদের বাহক হিসেবে ব্যবহার করছেন, শিক্ষকদের মাধ্যমে জনশ্বাসনতা বৃদ্ধি করা, জনসংযোগ বৃদ্ধি করা, মাদক ব্যবসায়ীদের মূল গডফাদারকে ধরার ব্যবস্থা গ্রহণ করা, সচেতন ব্যক্তিবর্গ এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাধ্যমে সম্মিলিত প্রচেষ্টায় মাদক প্রতিরোধ করা, প্রতিপক্ষ ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর বিএসএফ কর্তৃক বাংলাদেশি পাসপোর্টধারী নাগরিকদের সাথে কি ধরনের আচরণ করেন সেই সম্পর্কে ধারণা গ্রহণ করা, কুরআন ও হাদিসের আলোকে সীমান্ত পাহারায় সুফল সম্পর্কে, মাদক ব্যবসায়ী ও সেবনকারী পরকালে তাদের অবস্থান সম্পর্কে জানানো, ১৬ বছরের নিচে প্রকাশ্যে বিড়ি-সিগারেট সেবনকারীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা, মাদকসহ বিভিন্ন চোরাকারবারিদের অন্য কোন কর্মসংস্থানের মাধ্যমে ফিরিয়ে আনা, চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়ন (৬ বিজিবি) দর্শনা চেকপোস্ট এবং মহেশপুর ব্যাটালিয়ন (৫৮ বিজিবি) এর নিমতলা বিওপির মধ্যবর্তী স্থানে বিজিবি চেক পোস্ট বসানো, দর্শনা কেউ কোম্পানি হতে মদ চোরাকারবারিরা যাহাতে নিতে না পারে তার ব্যবস্থা গ্রহণ করা, ধর্মীয় শিক্ষার মাধ্যমে মাদক এর কুফল সম্পর্কে জনসাধারণ এর মাঝে জানানো, মাদক ব্যবসায়ীদের চিহ্নিত করে তাদের বাড়িতে গিয়ে ভয়-ভীতি দেখানো, ১৫ হতে ১৬ বছরের ছেলে মেয়ে মাদক ব্যবসায়ী এবং ইভটিজিং এর সাথে জড়িত হচ্ছে তাদের প্রতি নজরদারি বৃদ্ধি করা, বাল্য বিবাহের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

এছাড়াও দৃশ্যমান শাস্তি প্রদান করা, স্বর্ণ এবং রূপ্য চোরাকারবারিদের গডফাদার দের চিহ্নিত করা, দারিদ্র বিমোচনের জন্য প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সাধারণ জনগণকে দক্ষ করে গড়ে তোলা, সীমান্তবর্তী এলাকায় বিভিন্ন গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে মাদকসহ বিভিন্ন চোরাকারবারি নির্মূলে কমিটি গঠন করা, মাঝে মাঝে এ ধরনের সেমিনার মত বিনিময় সবার আয়োজন করা, সীমান্ত এলাকায় এনজিওদের মাধ্যমে উন্নয়নমূলক প্রোগ্রাম ও সেমিনারের ব্যবস্থা গ্রহণ করা, বিভিন্ন চোরাকারবারিদের ব্যবসা পরিচালনাকারীদের চিহ্নিত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা, সীমান্ত এলাকায় দেড়শো গজের মধ্যে তিন ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট ফসল আবাদ না করা এবং ভারতের ১৫০ গজ সীমান্ত এলাকায় কলাগাছের বাগান তৈরিতে বাধা দেওয়া যাতে চোরাকারবারিরা ব্যবহার করতে না পারে- এই বিষয়গুলো মতবিনিময় সভায় উপস্থিত সুধীজনের আলোচনায় উঠে আসে।

মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দামুড়হুদা ইউএনও তিথী মিত্র, চুয়াডাঙ্গা সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আজিজুর রহমান, এসি ল্যান্ড তাসফিকুর রহমান, বিজিবি ৬ ব্যাটালিয়নের সহকারী পরিচালক হায়দার আলী, দর্শনা থানার ওসি শহীদ তিতুমীর, বিজিবির দর্শনা আইসিপি কমান্ডার জাকির হোসেন প্রমুখ।

এ ছাড়াও মসজিদের ইমাম, জনপ্রতিনিধি, গণমাধ্যমকর্মী, শিক্ষক, এনজিও কর্মী এ সভায় উপস্থিত ছিলেন।

Header Ad
Header Ad

গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর গণহত্যার তীব্র নিন্দা জানালো বাংলাদেশ

ছবি: সংগৃহীত

গাজা উপত্যকায় দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর অব্যাহত গণহত্যা ও মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘনের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ। সোমবার (৭ এপ্রিল) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘বাংলাদেশ সরকার ইসরায়েলকে অবিলম্বে সব সামরিক অভিযান বন্ধ ও সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শন করতে এবং আন্তর্জাতিক মানবিক আইন মেনে চলার দাবি জানিয়েছে।’’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে,নিরস্ত্র ফিলিস্তিনি জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ‘‘জাতিগত নির্মূল’’ অভিযান চালানোর জন্য গাজার ঘনবসতিপূর্ণ বেসামরিক এলাকায় ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর বিমান থেকে নির্বিচার বোমাবর্ষণের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে বাংলাদেশ।

গত মাসে একতরফা যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের পর থেকে ইসরায়েলের চলমান হামলায় বহু ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু। এছাড়া গাজায় মানবিক সহায়তা ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়েছে, যা ওই অঞ্চলটিকে মানবিক বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আন্তর্জাতিকভাবে ইসরায়েলের প্রতি বারবার আহ্বান জানানো হলেও তারা এতে কোনো গুরুত্বই দেয়নি; বরং তারা ক্রমবর্ধমান হত্যাযজ্ঞে লিপ্ত হয়েছে।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, বিশেষ করে জাতিসংঘের কাছে নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়নের জন্য তাৎক্ষণিক ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে তাদের নৈতিক ও আইনি দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ।

বেসামরিক নাগরিকদের জীবন রক্ষা ও অবরুদ্ধ গাজায় মানবিক ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার জন্য সেখানে সব ধরনের যুদ্ধবিরতি বন্ধের আহ্বান জানানো হয়েছে বিবৃতিতে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ফিলিস্তিনি জনগণের সব ন্যায্য অধিকার, আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার এবং পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে ১৯৬৭ সালের আগের সীমান্তের ভিত্তিতে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রতি বাংলাদেশ সরকারের দৃঢ় সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছে।

বাংলাদেশ সরকার মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠায় আলোচনার প্রয়োজনীয়তার বিষয় পুনর্ব্যক্ত করে বিবৃতিতে বলেছে, এটা আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক স্থিতিশীলতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ফিলিস্তিনিদের ওপর সহিংসতা ও তাদের দুর্ভোগের অবসান ঘটাতে কূটনীতি ও সংলাপের পথে নিজেদের প্রতিশ্রুতিবদ্ধ করার জন্য সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক আইন, জাতিসংঘের প্রস্তাব এবং শান্তি, মর্যাদা ও ন্যায়বিচারের জন্য ফিলিস্তিনিদের আকাঙ্ক্ষার ভিত্তিতে ফিলিস্তিনের সমস্যার দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধানের লক্ষ্যে কাজ করার জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি বাংলাদেশ তার আহ্বানে অবিচল ও দ্ব্যর্থহীন।

Header Ad
Header Ad

সতর্কতার মাত্রা বাড়াল ইরান, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলকে প্রকাশ্য হুমকি

ছবি: সংগৃহীত

ইরান তার নিরাপত্তা সতর্কতার স্তর সর্বোচ্চ পর্যায়ে উন্নীত করেছে এবং যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলকে প্রকাশ্যে হুমকি দিয়েছে। ইসরায়েলি সংবাদপত্র ইয়েদিওথ আহরোনোথ এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি নিশ্চিত করেছেন, দেশটির সেনাবাহিনীকে উচ্চ সতর্কতায় রাখা হয়েছে।

এক বিবৃতিতে, পরিস্থিতির গুরুত্বের ওপর জোর দিয়ে ‘বহিরাগত হুমকির’ সম্ভাব্য পরিণতি সম্পর্কেও সতর্ক করেছেন খামেনি।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরায়েলের প্রতি হুমকির পাশাপাশি ইরাক, কুয়েত, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, তুরস্ক এবং বাহরাইনের মতো নিজের প্রতিবেশী দেশগুলোর প্রতিও সরাসরি সতর্কবার্তা জারি করেছে ইরান।

তেহরানের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, আকাশসীমা বা আঞ্চলিক ক্ষেত্র ব্যবহারসহ ইরানের মাটিতে আক্রমণ শুরু করতে যুক্তরাষ্ট্রকে যেকোনো সহায়তা দেয়া হলে তা একটি ‘শত্রুতাপূর্ণ কাজ’ হিসেবে বিবেচিত হবে এবং সেই দেশগুলোকে ‘আক্রমণের তালিকায়’ রাখবে ইরান।

অঞ্চলটিতে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যেই এমন বার্তা দিলো তেহরান, যেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইরানের মধ্যে সম্ভাব্য যেকোনো সংঘাতে প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলির ভূ-রাজনৈতিক প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

সীমান্ত এলাকার পরিস্থিতি নিয়ে চুয়াডাঙ্গায় বিজিবির মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত
গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর গণহত্যার তীব্র নিন্দা জানালো বাংলাদেশ
সতর্কতার মাত্রা বাড়াল ইরান, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলকে প্রকাশ্য হুমকি
সাবেক নৌপ্রতিমন্ত্রী খালিদের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
ভারত থেকে ৪০টি রেফ্রিজারেটেড মিল্ক ভ্যান আমদানি করছে সেনাবাহিনী
ফিলিস্তিনের পক্ষে মিছিল: ৫ বাংলাদেশিসহ ৪ শতাধিক শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করলো যুক্তরাষ্ট্র
গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদ: পাঁচ জেলায় বাটা-কেএফসিতে হামলা-ভাঙচুর
ঈদের ছুটি শেষে দর্শনা বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি শুরু
নওগাঁয় ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সর্বস্তরের মানুষের বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ
লাঠিপেটা না করে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ, রাষ্ট্রপতি পদক পাচ্ছেন সেই পুলিশ কনস্টেবল
ইন্ডিয়ান আইডলের শিরোপা জিতলেন কলকাতার মানসী ঘোষ
প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদা পেলেন বিডা’র নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী
নতুন শুল্ক প্রস্তাব স্থগিত করতে ট্রাম্পকে প্রধান উপদেষ্টার চিঠি
ঢাকায় মার্কিন নাগরিকদের জন্য চলাচলে সতর্কতা জারি
ইসরায়েলি বর্বরতা ও গণহত্যার নিন্দা জানালো কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়
প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে অন্নপূর্ণা–১ জয় করলেন বাবর আলী
বৈশাখে যারা ইলিশ কিনে খাবেন তারা আইনের লঙ্ঘন করবেন: উপদেষ্টা ফরিদা
ঢাকা-রংপুর ৪ লেন প্রকল্পে পলাশবাড়ীতে এক জমি দুইবার বিক্রি, গাইবান্ধা ডিসি অফিসের কর্মকর্তাদের যোগসাজশে ১৫ কোটি টাকার অধিক লুটপাটের চেষ্টা
ফিলিস্তিনের পতাকা ওড়ানোয় ভারতে বিদ্যুৎ বিভাগের 'মুসলিম কর্মী' বরখাস্ত
ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে বেনাপোল ও শার্শায় বিক্ষোভ মিছিল