মঙ্গলবার, ৫ নভেম্বর ২০২৪ | ২০ কার্তিক ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

একসঙ্গে এত শিক্ষক নিয়োগ ঐতিহাসিক ও ইতিবাচক

আমাদের শিক্ষার দৈন্যদশার মধ্যেও মাঝে মাঝে কিছু ইতিবাচক ঘটনা ঘটে, যেগুলো সেভাবে মিডিয়া কাভারেজ পায় না। অথচ শিক্ষার বৃহত্তর স্বার্থে এবং এর গুরুত্ব তুলে ধরতে বিষয়গুলো সবার দৃষ্টিতে আনা প্রয়োজন। কয়েকদিন আগে আমরা দেখলাম যে, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৩৬ হাজারের বেশি শিক্ষক পদে প্রার্থীরা আনুষ্ঠানিকভাবে নিয়োগ পেয়েছেন। যদিও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সুপারিশ পাওয়া প্রার্থীরা আগেই সুপারিশপত্র পেয়েছিলেন।

অনুষ্ঠানে বিভিন্ন সরকারি স্কুলের শিক্ষক পদে সরকারি কর্মকমিশনের মাধ্যমে সুপারিশ পাওয়া ২ হাজার ৬৫ জন প্রার্থীকে ও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এনটিআরসির মাধ্যমে সুপারিশ পাওয়া ৩৪ হাজার ৭৩টি পদে সুপারিশ পাওয়া প্রার্থীদের নিয়োগপত্র ও সুপারিশপত্র আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। দেশের সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মিলিয়ে মোট ৩৬ হাজার শিক্ষক নিয়োগ পেয়েছেন। এর মধ্যে সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ২ হাজার ৬৫ জন ও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৩৪ হাজার ৭৩ জন।

বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে বেসরকারি স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় শিক্ষক নিয়োগ দিতে গত বছরের ৩০ মার্চ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এর মধ্যে এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৪৮ হাজার ১৯৯ জন ও নন-এমপিও প্রতিষ্ঠানে ৬ হাজার ১০৫ জন নিয়োগের পরিকল্পনা ছিল। পরে ৩৮ হাজার ২৮৩ জন প্রাথমিকভাবে নির্বচিত হন, যাদের ৩৪ হাজার ৭৩ জন নিয়োগ পেয়েছেন। বেসরকারিদের মধ্যে এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৩০ হাজার ৯০৪ জন ও নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৩ হাজার ১৬৯ জন নিয়োগ পেয়েছেন। সরকারি মাধ্যমিক স্কুলে ২হাজার ১৫৫ জন সহকারী শিক্ষক নিয়োগের জন্য গত বছরের ২৪জানুয়ারি সরকারি কর্ম কমিশন সুপারিশ করে। স্বাস্থ্য প্রতিবেদন পাওয়ার পর ২ হাজার ৬৫ জনকে নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে। শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে এই ধরনের আনুষ্ঠানিকতা একটি নতুন উদ্যোগ। এটি নিশ্চয়ই একটি উৎসাহব্যঞ্জক এবং কার্যকরী পদক্ষেপ। তবে মিডিয়ায় বিষয়টি সেভাবে আসেনি।

২৪ জানুয়ারি (২০২২) আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে সরকারি স্কুলে নিয়োগ পাওয়া দুই হাজারের বেশি প্রার্থীর নিয়োগপত্র ও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সুপারিশ পাওয়া ৩৪ হাজার প্রার্থীর সুপারিশপত্র আনুষ্ঠানিকভাবে বিতরণ অনুষ্ঠানে ভার্চুয়াল মাধ্যমে যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথি হিসেব বক্তব্য রাখেন শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, “শিক্ষক সংকট থাকায় ‘পুলিশ ভেরিফিকেশন’ প্রতিবেদন না নিয়েই নতুন শিক্ষকদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এই প্রতিবেদন চলমান রয়েছে। যেহেতু প্রয়োজনীয়তা আছে, শূন্যপদ পূরণ করা প্রয়োজন–সেজন্য ভেরিফিকেশন প্রতিবেদন না পাওয়া সত্ত্বেও তাদের নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদনে বিরূপ কিছু থাকলে তাদের বাদ দেওয়া হবে।” তিনি আরও বলেন, ‘শিক্ষকদের মানসম্মত শিক্ষা দেওয়ার মতো দক্ষতা ও যোগ্যতা থাকতে হবে। আমরা শিক্ষার মানে যে পরিবর্তন আনতে চাচিছ তার জন্য নতুন কারিকুলাম প্রণয়ন করা হয়েছে, পাঠ্যপুস্তকে পরিবর্তন আনা হয়েছে; কিন্তু এ কারিকুলাম বাস্তবায়নের সব থেকে বড় ভূমিকা শিক্ষকদের। শিক্ষকদের মানসম্মত হতে হবে, যোগ্যতা সম্পন্ন হতে হবে। মানসম্মত শিক্ষা দেওয়ার জন্য যোগ্যতা ও দক্ষতা শিক্ষকদের থাকতে হবে। তাই বিভিন্ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শিক্ষকদের আরও দক্ষতা অর্জন করতে হবে। এখন আমাদের দেশ প্রযুক্তিতে অনেক এগিয়েছে। আমাদের শিক্ষকদের প্রযুক্তিকে কাজের হাতিয়ার করে নিতে হবে, তাহলে আরও ভাল হবে।’ এখানকার অনেকগুলো বিষয়ের সঙ্গে আমরা একমত পোষণ করছি। সবচেয়ে মূল্যবান কথাটি হচ্ছে, ‘শিক্ষকদের মানসম্মত হতে হবে, যোগ্যতা সম্পন্ন হতে হবে।’

শিক্ষকদের এখন শুধু দাবি-দাওয়া নিয়ে আলোচনা মিছিল করলে চলবে না। নিজেদের উন্নয়নের জন্য, নিজেদেরকে এই যুগের উপযোগী শিক্ষক হিসেবে প্রমাণ করার জন্য প্রস্তুত করতে হবে। বিভিন্ন সোর্স থেকে জ্ঞান আহরণ করতে হবে, শিক্ষা সংক্রান্ত সর্বশেষ তথ্যাবলী সংগ্রহ করতে হবে। রাষ্ট্রের আশায় শুধু তাকিয়ে থাকলে হবেনা, রাষ্ট্র কখন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করবে তখন প্রশিক্ষন নিয়ে কিছু নতুন বিষয় তারা জানবেন। এই যুগে শিক্ষা উন্নয়নের, পেশাগত উন্নয়নের বহু প্লাটফর্ম আছে, শিক্ষকদের সেগুলোর সাথে যুক্ত হতে হবে। শিক্ষক সংগঠনগুলোকেও শুধুমাত্র দাবি-দাওয়া আদায়ের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার না করে, পেশাগত উন্নয়নের প্ল্যাটফর্মেও কাজ করতে হবে।

শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে আরও জানা যায় যে, প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত হলেও যে ৪ হাজার ১৯৮ জনের স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রতিবেদন পাওয়া যায়নি, তাদের প্রতিবেদন ৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে পাওয়া গেলে নিয়োগের সুপারিশ করা হবে। এ ছাড়া নিয়োগ পাওয়া কোনো শিক্ষক চাকরিতে যোগ না দিলে সেই পদে মেধাক্রমের পরবর্তী ব্যক্তিকে নিয়োগ দেওয়া হবে। বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ১৫ হাজার ২২৫টি পদে কোনো আবেদন পাওয়া যায়নি। এসব শূন্য পদে নিয়োগ দিতে আবার বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে। যেখানে আবেদন পাওয়া যায়নি, সেখানে প্রার্থী নিয়োগ দেওয়া সম্ভব হয়নি। আবার কিছু ভুল তথ্য ছিল। যেমন–নারীদের প্রতিষ্ঠানে শরীরচর্চা পদে পুরুষ প্রার্থী এসেছিল, তাদের সুপারিশ করা হয়নি। কিছু প্রতিষ্ঠান সরকারি হয়ে গেছে, সেখানেও নিয়োগ দেওয়া হয়নি। অনুষ্ঠানে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই অর্থনীতিতে একটা বিরূপ প্রভাব পড়েছে। বিদ্যালয়ে স্বশরীরে পাঠদান ব্যাহত হয়েছে। তবে ডিজিটাল বাংলাদেশের মাধ্যমে আমরা কার্যক্রম পরিচালনা করেছি। আজ যেসব শিক্ষক নিয়োগের সুপারিশ পাচ্ছেন, এই যোগ্য শিক্ষকদের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার ন্যূনতম মান নির্ধারিত হবে বলে আমি মনে করি।

এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের শুধুমাত্র পাঠক্রমের মধ্যে আটকে রাখলে হবে না; বরং গতানুগতিকতার বাইরে এসে শিক্ষার্থীদের শেখাতে হবে। ‘তাদের উন্নত মানসিকতার দর্শন শেখাতে হবে। দক্ষ হতে হবে এবং টেকসইভাবে গড়ে তুলতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য, শারীরিক স্বাস্থ্যকে গুরুত্ব দেওয়া, তাদের প্রয়োজনীয় কাউন্সিলিং করা, তাদের আগামী জীবনের জন্য তাদের পরামর্শ দেওযার দায়িত্ব শিক্ষকদের। আজ যারা নিয়োগ পাবেন তারা সবাই এসব বিষয় মাথায় রাখবেন বলে আমি আশা করি।’ তবে করোনাকালীন সময়ে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে শর্তসাপেক্ষে এই শিক্ষকদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে।

তবে অবশ্যই প্রত্যেককে নিরাপত্তা ছাড়পত্র দিতে হবে। নিরাপত্তা ছাড়পত্র নেওয়ার ক্ষেত্রে স্বচছতা ও নিরপেক্ষতা যাতে পালন করা হয়, মন্ত্রণালয় থেকে এ ধরনের স্পষ্ট নির্দেশনা থাকতে হবে। আমরা শুনেছি এবং অনেকেই জানি যে, ‘পুলিশ ফেরিকেশনের’ নামে অবৈধ অর্থের লেনদেন হয়, রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার কথা সামনে এনে প্রার্থীদের হয়রানি করা হয়। সেটি যাতে না হয়। এদেশের নাগরিক হিসেবে উপযুক্ত প্রার্থীরা যাতে তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরি পায সে ব্যবস্থা রাষ্ট্রকে নিতে হবে। সরকারীকরন হয়ে যাওয়া, মেয়েদের প্রতিষ্ঠানে শরীরচর্চা শিক্ষক পদে কয়েকজন নিয়োগ পাওয়ায় কয়েকজন প্রার্থী নিয়োগের চূড়ান্ত সুপারিশ করা হয়নি। তাদেরও অন্য পদে নিয়োগ সুপারিশ করা হবে। এটিও একটি চমৎকার সিদ্ধান্ত।

একসঙ্গে এত সংখ্যক শিক্ষকদের নিয়োগ দেওয়া, সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষক, এমপিও ও নন-এমপিওভুক্ত বিদ্যালয়ে একত্রে নিয়োগ দেওয়া, নিয়োগপত্র শিক্ষামন্ত্রী কর্তৃক প্রদান এবং একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা–এই চারটি বিষয়ই নতুন, চারটি বিষয়ই অত্যন্ত প্রশংসনীয় এবং শিক্ষকদের জন্য একটি বিরাট অরিয়েন্টেশন। এসব বিষয় আমি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে এবং অত্যন্ত মূল্যবান বিষয় হিসেবে দেখছি। শিক্ষকদের জন্য এটি দরকার। কোথায় কিভাবে নিয়োগ হয়, কেউ কোনো খবর রাখে না। নিরানন্দভাবে নিয়োগ; কিন্তু এভাবে একত্রে শিক্ষক নিয়োগদানে একটি নতুন ধরনের অধ্যায় সৃষ্টি করলো। অত্যন্ত ইতিবাচক একটি বিষয়। নতুন শিক্ষকগন দুই শিক্ষামন্ত্রী ও সচিবের সাথে অন্তত ছবিতে, অনলাইনে যুক্ত হতে পেরেছেন এটি সত্যিই একটি আনন্দের বিষয় এবং শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে একটি নতুন দিক। আরও এক দুজন শিক্ষাবিদকে এখানে যুক্ত করে তাদের কিছু মতামত প্রদান করার সুযোগ দিলে হয়তো আরও ভালো হতো। তারপরও যা হয়েছে এটি আমি বলব একটি ঐতিহাসিক বিষয়। ধন্যবাদ শিক্ষামন্ত্রণালয়কে, ধন্যবাদ শিক্ষামন্ত্রীকে।

লেখক: শিক্ষা বিশেষজ্ঞ ও গবেষক

এসএ/

Header Ad

গুম কমিশনে জমা পড়েছে ১৬০০ অভিযোগ, সবচেয়ে বেশি র‌্যাবের বিরুদ্ধে

ছবি: সংগৃহীত

গুম সংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারির সভাপতি বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী বলেছেন, গুম সংক্রান্ত কমিশনে অভিযোগ জমা দেওয়ার সময় শেষ হয়েছে গত ৩১ অক্টোবর। এই সময়ের মধ্যে ১ হাজার ৬০০-এর বেশি অভিযোগ জমা পড়েছে। ১৪০ জনের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৪০০ অভিযোগ খতিয়ে দেখা হয়েছে।

মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর গুলশানে কমিশন কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান গুম সংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারির সভাপতি বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী।

৪০০ অভিযোগের মধ্যে ১৭২টি অভিযোগের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা রয়েছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব)। কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে ৩৭টি অভিযোগের সঙ্গে। ডিবির (গোয়েন্দা পুলিশ) সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে ৫৫টির সঙ্গে। প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা পরিদফতরের (ডিজিএফআই) সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে ২৬টির সঙ্গে। পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে ২৫টি অভিযোগের সঙ্গে।

অন্যান্য ক্যাটাগরির মধ্যে ফেলা হয়েছে বাকি অভিযোগ গুলো। যেগুলোর ক্ষেত্রে পরিচয় দেয়নি। শুধু বলেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নেওয়া হয়েছে।

কমিশনের সভাপতি জানিয়েছেন, গুমের সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ৭ সদস্যকে ডাকা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। পর্যায়ক্রমে অভিযুক্ত অন্যদেরও ডাকা হবে।

গুম হওয়া ব্যক্তিদের যেসব গোপন বন্দিশালায় রেখে নির্যাতন করা হতো সেগুলো ভেঙে ফেলা হয়েছে। আলামত নষ্ট করা হয়েছে। তবে যারা আলামত নষ্ট করছেন, তাদের সতর্ক করেছে কমিশন৷ যারা আালমত ধ্বংস করছেন, তারা গুমের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের সহযোগী হিসেবে বিবেচিত হবেন বলেও সতর্ক করা হয়েছে। আলামত ধ্বংস না করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।

কমিশনের সদস্য নূর খান লিটন বলেন, কতো নিষ্ঠুরভাবে মানুষের ওপর নির্যাতন চালানো হয়েছে, বোঝানো যাবে না।

কমিশন সদস্য ড. নাবিলা ইদ্রিস বলেন, এখন পর্যন্ত গুমের চারটি কারণ খুঁজে পাওয়া গেছে। রাজনৈতিক কারণে বিশাল সংখ্যক মানুষকে নেওয়া হয়েছে। প্রমাণিত না হলেও জঙ্গি সন্দেহে বড় একটা সংখ্যক নেওয়া হয়েছে। এছাড়া ব্যবসায়িক এবং পারিবারিক কারণেও গুম করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে গুমের ঘটনা তদন্তে গঠিত কমিশনের অন্য সদস্যরা হলেন হাইকোর্ট বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত বিচারপতি মো. ফরিদ আহমেদ শিবলী, মানবাধিকারকর্মী নূর খান, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নাবিলা ইদ্রিস ও মানবাধিকারকর্মী সাজ্জাদ হোসেন স্বাধীন।

গত ২৭ আগস্ট ওই গুম কমিশন গঠন করে সরকার। এই কমিশনের কাছে ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময়ে গুমের ঘটনার অভিযোগ জানানোর সুযোগ রয়েছে।

Header Ad

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে হত্যার হুমকি, থানায় জিডি

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম আমানুল্লাহ। ছবি: সংগৃহীত

হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম আমানুল্লাহ। সোমবার (৪ নভেম্বর) নিজের ফেসবুক ওয়ালে এ তথ্য জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সমাজবিজ্ঞান বিভাগের এই অধ্যাপক।

ফেসবুক পোস্টে তিনি বলেন, আজ সকাল ১০ টার দিকে আমাকে দেশে ব্যবহৃত একটি বিদেশি নাম্বার থেকে হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কারের উদ্দেশ্যে গতকালের সিন্ডিকেটে কিছু অপ্রিয় সিদ্ধান্ত গ্রহণই এই হুমকির মূল কারণ বলে মনে হচ্ছে। আমরা ইতোমধ্যে সারাদেশের কলেজগুলোকে নিয়ন্ত্রণের ভিতর নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছি। দেশের এলোমেলো হয়ে যাওয়া শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নেও ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নিয়েছি। দিনরাত মিলে ১৮ ঘণ্টা কাজ চলছে এখন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে। এতে অনেকেরই সহজ রোজগারের পথ বন্ধ হতে যাচ্ছে।

তিনি আরও লেখেন, মাত্র দুইমাসে আমরা প্রায় দুই হাজারের অধিক কলেজে ‘পরিচালনা কমিটি’ সফলভাবে করতে সক্ষম হয়েছি। আমার অফিসের কোন কর্মকর্তা কর্মচারী এ কমিটি করতে গিয়ে কারো কাছ থেকে এক কাপ চাও খায় নাই এটি আমি বিশ্বাস করি। এ ব্যাপারে কোন প্রমাণ কেউ হাজির করতে পারলে তাকে সরিয়ে দিয়ে বিভাগীয় তদন্ত করা হবে।

হত্যার হুমকি দিলেও কোন লাভ নেই জানিয়ে এই অধ্যাপক লেখেন, অতএব এসব হত্যার হুমকি, পত্রিকায়, সোশ্যাল মিডিয়ায় বাজে কিচ্ছা কাহিনি লিখে আমার এবং আমার সহকর্মীদের সম্মান নষ্ট করার হুমকি দিয়ে কোন লাভ হবে না।

অধ্যাপক আমানুল্লাহ লেখেন, হত্যার হুমকি দেওয়ায় তিনি জিডি করেছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি লেখেন, হত্যার হুমকি নিয়ে জিডি করছি, সম্মানিত উপদেষ্টাদেরকে বিষয়টি জানিয়েছি, মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার সচিবকেও বিষয়টা জানিয়েছি। এজেন্সিগুলোও জানে ব্যাপারটা। বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার সংস্কারের ৮০ শতাংশই হলো প্রাথমিক শিক্ষা এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কার। দেখি আমরা এর কোন একটা বিহিত করতে পারি কিনা। আপনাদের দোয়া এবং সমর্থন চাই।

তবে এ বিষয়ে কথা বলতে উপাচার্য ড. এ এস এম আমানুল্লাহর সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কোন সাড়া দেননি।

এদিকে এ ঘটনার নিন্দা প্রকাশ করেছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী, শিক্ষার্থীসহ দেশের অনেক শিক্ষাবিদ। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মো. মোস্তাফিজুর রহমান স্বাক্ষরিত বার্তায় এ নিন্দা জানানো হয়।

বার্তায় বলা হয়, উপাচার্য যখন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সংস্কার কার্যক্রমের উদ্যোগ গ্রহণ, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সব বৈষম্য দূরীকরণের পদক্ষেপ, বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ দুর্নীতিরোধ, বিগত সময়ের দুর্নীতির শ্বেতপত্র প্রকাশের সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজের গভর্নিং বডি গঠনসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন এবং অধিভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যখন সুফল পেতে শুরু করেছে ঠিক সেই সময় একটি স্বার্থান্বেষী মহল এ সংস্কার ও সার্বিক উন্নয়ন কার্যক্রমকে ব্যর্থ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

এই ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে হুমকি দিয়ে দুর্নীতি প্রতিরোধের কার্যক্রমকে নানাভাবে বাধাগ্রস্ত করার অপচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

Header Ad

মালয়েশিয়ায় বন্দিশিবির থেকে ছয় বাংলাদেশিকে উদ্ধার, মানবপাচার চক্র আটক

ছবি: সংগৃহীত

মালয়েশিয়ার সেলাঙ্গর রাজ্যের ক্লাং সেন্ট্রালে একটি বিশেষ অভিযানে মানবপাচার চক্রের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে ছয় বাংলাদেশিকে উদ্ধার করেছে মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন ডিপার্টমেন্ট (JIM)। রবিবার পরিচালিত এই অভিযানে অংশ নেয় গোয়েন্দা ও বিশেষ অভিযান বিভাগ এবং ইমিগ্রেশন হেডকোয়ার্টার পুত্রজায়ার কর্মকর্তারা।

দুই সপ্তাহের গোয়েন্দা নজরদারির ভিত্তিতে পরিচালিত অভিযানে এক বাংলাদেশিকে আটক করা হয়, যিনি বন্দিশিবিরের কেয়ারটেকার বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। ৩০ বছর বয়সি এই ব্যক্তি মালয়েশিয়ায় অবস্থানের জন্য কোনো বৈধ নথি বা পাসপোর্ট দেখাতে ব্যর্থ হন। অভিযানে ১৮ থেকে ৪১ বছর বয়সী ছয় বাংলাদেশিকে বন্দিশিবির থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।

অভিযান চলাকালে, কেয়ারটেকার একটি জানালা দিয়ে পালানোর চেষ্টা করলেও সফল হননি। অভিযানে অংশগ্রহণকারী দল ঘটনাস্থল থেকে বেশ কয়েকটি বাংলাদেশি পাসপোর্ট এবং সাতটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করেছে।

ইমিগ্রেশন বিভাগ জানায়, এই মানবপাচার চক্র ভিকটিমদের কাছ থেকে ১৫ হাজার রিঙ্গিত (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় সাড়ে ৪ লাখ টাকা) গ্রহণ করে তাদের ভ্রমণ ভিসায় মালয়েশিয়ায় নিয়ে যায়। পরে, অতিরিক্ত ৫ হাজার রিঙ্গিত দাবি করে তাদের বন্দিশিবিরে আটকে রাখা হয়।

এই অভিযান মালয়েশিয়ায় মানবপাচারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে, যেখানে পাচারকারীদের দৌরাত্ম্যে অনেক বাংলাদেশি ফাঁদে পড়ে অবর্ণনীয় কষ্ট সহ্য করছেন।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

গুম কমিশনে জমা পড়েছে ১৬০০ অভিযোগ, সবচেয়ে বেশি র‌্যাবের বিরুদ্ধে
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে হত্যার হুমকি, থানায় জিডি
মালয়েশিয়ায় বন্দিশিবির থেকে ছয় বাংলাদেশিকে উদ্ধার, মানবপাচার চক্র আটক
১২ কেজি এলপি গ্যাসের দাম কমলো ১ টাকা
বিডিআর হত্যাকাণ্ড পুনঃতদন্তে হাইকোর্টের জাতীয় কমিশন গঠনের নির্দেশ কেন নয়
বাংলাদেশে ইজতেমা একবারই হবে, দুবার নয়: মহাসম্মেলনে বক্তারা
এক মাস পর খাগড়াছড়ি ও সাজেক পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত
মার্কিন নির্বাচনে লড়ছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ৬ প্রার্থী
শাকিব খানের সঙ্গে প্রেমের গুঞ্জন, মুখ খুললেন পূজা চেরি
মুক্তিযোদ্ধার নাতি-নাতনি কোটা রেখেই ঢাবির ভর্তি কার্যক্রম শুরু
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বাংলায় ব্যালট পেপার
প্রশ্নবিদ্ধ সাকিবের বোলিং অ্যাকশন, দিতে হবে পরীক্ষা
যেভাবে নির্বাচিত হন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট
এলপি গ্যাসের দাম বাড়বে না কমবে, জানা যাবে আজ
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জুরি বোর্ডের সদস্য হলেন সুচরিতা-নাঈম
টাঙ্গাইলে নিজ ঘরে স্কুল শিক্ষকের আত্মহত্যা
ইসলামি মহাসম্মেলন: সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আলেম-ওলামা ও জনতার ঢল
সাংবাদিক নেতা মোল্লা জালাল গ্রেপ্তার
গাজায় থামছেই না ইসরায়েলি আগ্রাসন, নিহত আরও ৩৩
মোহাম্মদপুরে ডাস্টবিনে মিলল মানুষের খণ্ডিত পা