দুই দফা দাবি না মানলে কর্মবিরতির হুঁশিয়ারি বিচার বিভাগীয় কর্মচারীদের

বিচার বিভাগীয় কর্মচারীদের সংবাদ সম্মেলন। ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস বেতন স্কেলের আলোকে বেতন-ভাতা প্রদান এবং ব্লকপদ বিলুপ্ত করে স্বতন্ত্র নিয়োগবিধি প্রণয়নের দাবিতে দুই দফা দাবি উত্থাপন করেছে বাংলাদেশ বিচার বিভাগীয় কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশন। দাবি না মানলে আগামী ৫ মে থেকে সারা দেশে কর্মবিরতির কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সংগঠনের নেতারা।
শনিবার (১৯ এপ্রিল) জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মসূচির ঘোষণা দেন সংগঠনের সভাপতি মো. রেজোয়ান খন্দকার। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ২০০৭ সালের ১ নভেম্বর নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগ পৃথক হওয়ার পর বিচারকদের জন্য পৃথক পে-স্কেল এবং নিয়োগ বিধিমালা প্রণয়ন করা হলেও সহায়ক কর্মচারীদের সেই স্কেলের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। অথচ তারা একই দপ্তরে বিচারকদের সঙ্গে কাজ করেন, কিন্তু বেতন-ভাতাদি পান জনপ্রশাসনের স্কেল অনুযায়ী।
তিনি অভিযোগ করেন, অনেক কর্মচারী ৩৮ থেকে ৪০ বছর ধরে একই পদে কর্মরত থাকলেও কোনো পদোন্নতি পাননি। এটি অত্যন্ত হতাশাজনক ও বৈষম্যমূলক। সচিবালয়ের একজন অফিস সহায়ক যেমন পদোন্নতি পেয়ে উপসচিব হতে পারেন, তেমনি সুপ্রিম কোর্টে অফিস সহকারী ডেপুটি রেজিস্ট্রার পর্যন্ত পদোন্নতি পান, পুলিশের কনস্টেবলও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হতে পারেন। অথচ অধস্তন আদালতের সহায়ক কর্মচারীরা শতভাগ বৈষম্যের শিকার।
রেজোয়ান খন্দকার বলেন, প্রধান বিচারপতি, আইন উপদেষ্টা ও আইন সচিবের কাছে আমাদের দাবি তুলে ধরা হয়েছে। বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন দাবি যৌক্তিক বলে স্বীকার করলেও তাদের প্রতিবেদনে আমাদের বিষয়ে কোনো সুপারিশ রাখা হয়নি।
দাবি বাস্তবায়নে তিনি জোর দিয়ে বলেন, বিদ্যমান জুডিশিয়াল সার্ভিস বেতন স্কেলের ১ম থেকে ৬ষ্ঠ গ্রেডের পরবর্তী ৭ম থেকে ১২তম গ্রেডভুক্ত করে সব ব্লকপদ বিলুপ্ত করে যোগ্যতা ও জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে পদোন্নতির সুযোগ রেখে স্বতন্ত্র নিয়োগবিধি প্রণয়ন করতে হবে।
তিনি হুঁশিয়ার করে বলেন, আগামী ৫ মের মধ্যে দাবি বাস্তবায়নে দৃশ্যমান অগ্রগতি না হলে সারা দেশের অধস্তন বিচার বিভাগের কর্মচারীরা ওই দিন সকাল ৯টা ৩০ মিনিট থেকে ১১টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত দুই ঘণ্টার সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করবে। এরপরও দাবি না মানলে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কাজী মো. ছালাউদ্দিন, সহসভাপতি মো. নাজিম উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক তারিক আহাম্মেদ রিংকু এবং দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা বিচার বিভাগীয় কর্মচারীরা।
