রবিবার, ২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ১৯ মাঘ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

অদম্য এক দূরদর্শী রাষ্ট্রনায়ক

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার ৭৬তম জন্মদিন আজ। শেখ হাসিনা এক ফিনিক্স পাখি। তিনি পঞ্চাশোর্ধ বয়সী বাংলাদেশের স্বপ্ন, সম্ভাবনা ও সক্ষমতার প্রোজ্জ্বল প্রতীক। তৃতীয় বিশ্বের একটি দরিদ্র দেশকে তিনি পৌঁছে দিয়েছেন আলোকোজ্জ্বল এক স্বপ্নের সরণিতে। বহু ঘাত-প্রতিঘাতে বিপর্যস্ত জাতির মননে তিনি গেঁথে দিয়েছেন মর্যাদাপূর্ণ এক লক্ষ্যের পানে এগিয়ে যাওয়ার সুতীব্র আকাঙ্ক্ষা।

ধ্বংসস্তুপ থেকে উঠে এসে তিনি তার জীবনকে উৎসর্গ করেছেন এই বাংলার আপামর মানুষের কল্যাণে। সমস্ত জীবন ধরে কণ্টকাকীর্ণ এক দীর্ঘ পথ হেঁটে, সহস্র বাঁধা মাড়িয়ে তিনি আজকের শেখ হাসিনা। এই পথের বাঁকে বাঁকে ছিল জীবনের ঝুঁকি। শত্রুর শ্যেনদৃষ্টি তাকে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রাখে, এটি এদেশের প্রতিটি মানুষই উপলব্ধি করে। দিনে দিনে শেখ হাসিনার জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে গেছে বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য। তার সুদক্ষ ও আন্তরিক নেতৃত্বের কারণে এদেশের মানুষ একটি উন্নত জাতি হিসেবে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে বাঁচবার স্বপ্ন দেখে। কেননা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু তথা ত্রিশ লাখ শহীদের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয় নিয়েই তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেশ পরিচালনা করছেন। এদেশের প্রতিটি মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন ঘটিয়ে সুখি ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার এক প্রত্যয়দীপ্ত নতুন লড়াইয়ে আজ তিনি অবতীর্ণ। সেই নিরিখেই তিনি ঘোষণা করেছেন রূপকল্প ২০৪১। এই লড়াইয়ের প্রতিটি সুচিন্তিত ও সুদূরপ্রসারী পদক্ষেপ বাংলাদেশকে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত রাষ্ট্রের কাতারে নিয়ে যাবে। তারই সুদক্ষ নেতৃত্বের কারণে আমরা আজ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে মধ্যম আয়ের উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি লাভ করেছি। বিশ্ববাসীকে বিস্মিত করে বাংলাদেশ আজ বিশ্বের বুকে উন্নয়নের রোলমডেল হিসেবে স্বীকৃত।

১৯৭৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। বঙ্গবন্ধুর কন্যা হিসেবে রাজনীতি তার রক্তে প্রবহমান। পারিবারিক আবহের কারণেই, পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তার রাজনৈতিক সহকর্মীদের নানা কর্মসূচি নিয়ে আলাপচারিতা ও কর্মতৎপরতা প্রত্যক্ষ করে তার মধ্যে একটি রাজনীতি সচেতন মনন তৈরি হয়ে যায়। এরই প্রভাবে দেশ ও সমাজ নিয়ে ভাবনার এক দুর্নিবার তাড়না তার মননে গেঁথে গিয়েছিল ছোটবেলা থেকেই। সেই চেতনা ও তাড়না থেকে স্বাভাবিক কারণেই, স্কুলজীবন থেকেই তিনি রাজনৈতিক আন্দোলনের সঙ্গে নিজেকে সম্পৃক্ত করেন এবং তখন থেকেই সব গণআন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। তৎকালীন সরকারি ইন্টারমিডিয়েট গার্লস কলেজ (বর্তমানে বদরুন্নেসা কলেজ) শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও পরবর্তীতে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রার্থী হিসেবে তিনি ওই কলেজের ছাত্রী সংসদের ভিপি নির্বাচিত হন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সদস্য এবং রোকেয়া হল শাখার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তিনি। বঙ্গবন্ধুর কন্যা হিসেবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের ধারাবাহিক সংগ্রামের তিনি নিবিড় ও প্রত্যক্ষ সাক্ষী। মুজিব-কন্যা হওয়ার কারণেই পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে বহু ঘাত-প্রতিঘাত ও সংকটময় পরিস্থিতি তাকে পার করতে হয়েছে।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট পরিবারের প্রায় সব সদস্যসহ বঙ্গবন্ধুকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। সেই ক্ষত বাংলাদেশকে বয়ে যেতে হবে চিরকাল। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের ক্ষতি কোনোদিনই পূরণ হবার নয় এবং সেই শোক আমাদের বহন করে যেতে হবে আজীবন।

সৌভাগ্যবশত পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টে বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা এবং শেখ রেহানা জার্মানিতে অবস্থান করছিলেন এবং বেঁচে গিয়েছিলেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতাসহ পরিবারের সব সদস্যকে হারাবার দুঃসহ যন্ত্রণায় দগ্ধ হতে হতে দীর্ঘ ছয় বছর ছোটবোন শেখ রেহানাকে নিয়ে প্রবাসে নির্বাসিত জীবন কাটাতে হয়েছে।

১৯৮১ সালে আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে শেখ হাসিনাকে তার অনুপস্থিতিতেই সর্বসম্মতভাবে দলের সভাপতি নির্বাচিত করা হয় এবং অনেক প্রতিকূল পরিস্থিতিতে সে বছর ১৭ মে তিনি দেশে প্রত্যাবর্তন করেন। আওয়ামী লীগের সেদিনের এই সিদ্ধান্তটি পরবর্তীতে বাংলাদেশের ভাগ্যলিপিকেই বদলে দিয়েছে। একটি অন্ধকার সময় পার করে বস্তুত শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই সম্ভাবনা ও স্বপ্নের পথে হাঁটতে শুরু করেছে বাংলাদেশ। ৯০-এর স্বৈরাচার-বিরোধী আন্দোলনে সামরিক সরকারকে উচ্ছেদ করে রাষ্ট্রপতি পদ্ধতির শাসনব্যবস্থা থেকে সরে এসে সংসদীয় পদ্ধতির মন্ত্রীপরিষদ শাসিত সরকার-ব্যবস্থা প্রবর্তনে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্যমত প্রতিষ্ঠায় তিনি ভূমিকা রাখেন।

১৯৯৬ সালে রাষ্ট্রক্ষমতায় এসে তিনি বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন। পরবর্তীতে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সব ষড়যন্ত্র ও বাধা উপেক্ষা করে তিনি ১৯৭১ সালের মানবতাবিরোধী ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করান। বিশেষ ট্রাইব্যুনালে একাত্তরের মানবতাবিরোধীদের বিচারপ্রক্রিয়া এখনো চলমান।

বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর স্বৈরাচারী সামরিক শাসনের যাতাকলে পিষ্ট বাংলাদেশে পাকিস্তানি ভাবাদর্শ প্রতিষ্ঠার সমস্ত প্রক্রিয়া শুরু হয়। যুদ্ধোত্তর স্বাধীন বাংলাদেশের মানুষ অভিভাবকহীন ও নেতৃত্বশূন্য অবস্থা থেকে উত্তরণের উপায় না পেয়ে অসহায় ও দিশেহারা অবস্থায় নিপতিত হয়। জাতি প্রত্যক্ষ করে, বঙ্গবন্ধু হত্যাকারীদের যেন বিচারের মুখোমুখি দাঁড়াতে না হয়, সে লক্ষ্যে বেঈমান খুনি মোশতাক কর্তৃক ইনডেমিনিটি অধ্যাদেশ জারি করা হয়। পরবর্তীতে সামরিক শাসক জিয়াউর রহমান এই অধ্যাদেশকে পার্লামেন্টের মাধ্যমে বৈধতা প্রদান করে। অধিকন্তু বঙ্গবন্ধুর প্রত্যক্ষ খুনিদেরকে বিভিন্নভাবে পুরস্কৃত করা হয়। তাদের অনেককে রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব দিয়ে পুনর্বাসিত করা হয়। পঁচাত্তর-পরবর্তী সময়ে স্বাধীনতা-বিরোধীদের পুনর্বাসন ও রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতার যে প্রক্রিয়া এদেশে শুরু হয়েছিল, তার বিপরীতে জননেত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। এই কাজটি মোটেও সহজ ছিল না। কিন্তু ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় তার অঙ্গীকার পূরণে তিনি সবসময়ই অটল ও আপসহীন থেকেছেন।

শেখ হাসিনার উপর ১৯ বার হত্যাচেষ্টা হয়েছে। ২০০৪ সালে সরাসরি রাষ্ট্রীয় তত্ত্বাবধানে দলীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে যে ন্যাক্কারজনক ও ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা চালানো হয়, এরকম নজির পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ধ্বংস করে দেওয়ার এমন প্রচেষ্টা দেখে সেদিন সমগ্র জাতি স্তম্ভিত হয়ে যায়। বৃষ্টির মতো একের পর এক গ্রেনেড হামলার পরও দলীয় নেতাদের তৈরি মানববর্ম ও আল্লাহর অশেষ রহমতে সৌভাগ্যক্রমে তিনি বেঁচে যান। শেখ হাসিনার সঙ্গে বেঁচে যায় বাংলাদেশ ও এদেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ। সেই হামলায় শ্রদ্ধেয় আইভী রহমানসহ ২৪ জন দলীয় নেতাকর্মী নিহত হন। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মাস্টারমাইন্ড তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার পুত্র সাজাপ্রাপ্ত তারেক রহমান লন্ডনে পলাতক আছেন।

জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথে দুরন্ত গতিতে অগ্রসর হচ্ছে। খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা থেকে শুরু করে বিদ্যুৎ উৎপাদন, যোগাযোগ অবকাঠামোর অভূতপূর্ব উন্নয়ন, তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বৈপ্লবিক সাফল্য, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতে ব্যাপক উন্নয়ন, হাজার হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে জাতীয়করণ, মাতৃমৃত্যু ও শিশুমৃত্যু নিয়ন্ত্রণ, মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধি, নারী উন্নয়ন, সর্বোপরি মানুষের জীবনমান উন্নয়নে তার অতুলনীয় সাফল্য একজন সফল নেতা হিসেবে শেখ হাসিনাকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এক অনন্য উচ্চতায় আসীন করেছে।

জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িকতায় জর্জরিত বাংলাদেশে একটি সভ্য ও মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় তার নিরলস ও আন্তরিক প্রচেষ্টা সার্বক্ষণিক। বঙ্গবন্ধু-কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা স্বপ্ন দেখেন, একদিন একটি উন্নত রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে এদেশের প্রতিটি মানুষ গৌরবের সঙ্গে বিশ্বের কাছে নিজের পরিচয় দেবে। আর সেই লক্ষ্যেই দীর্ঘমেয়াদি নানা উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করে তিনি তার লক্ষ্যের পানে অগ্রসর হচ্ছেন।

শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকারের সময় রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং যোগাযোগ ও অবকাঠামোগত ব্যাপক উন্নয়নের ফলে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহ দেখাচ্ছে। সারাদেশে একশটি অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্ধারণ করে ইপিজেড স্থাপন করার কাজ চলমান আছে। সবগুলো অর্থনৈতিক অঞ্চলে আইসিটি পার্ক নির্মাণের কাজ চলছে। বেশিরভাগ মহাসড়ককে ফোর লেন ও সিক্স লেনে রূপান্তরিত করা হচ্ছে। দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীদের বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু নির্মাণের চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে এর সফল বাস্তবায়ন শেখ হাসিনা সরকারের একটি বিস্ময়কর সাফল্য।

দেশের বড় বড় অর্থনীতিবিদরা মন্তব্য করেছিলেন, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতুর বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। তাদের ভবিষ্যতবাণীকে ভুল প্রমাণ করার সঙ্গে তিনি প্রমাণ করলেন দেশের অর্থনীতিকে তিনি কতটা মজবুত ভিত্তির উপর দাঁড় করিয়েছেন।

এ ছাড়া রূপপুরে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণ, মাতারবাড়ি বহুমুখি প্রকল্পসহ তার সরকারের গৃহীত দশটি মেগা-প্রকল্প সম্পন্ন হওয়ার পথে। সেগুলো সম্পন্ন হলে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে আরও অনেক বেশি গতি সঞ্চার হবে। করোনার প্রভাবে যখন সারাবিশ্বের অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়েছে, তার সুযোগ্য নেতৃত্বের কারণে সবাইকে অবাক করে বাংলাদেশ তখনো উচ্চ প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় ২৮২৪ ডলার। মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ স্থাপন করে তিনি বাংলাদেশকে প্রথম নিজস্ব স্যাটেলাইট স্থাপনের গৌরব এনে দিয়েছেন।

১৯৯৬ সালে সরকার গঠনের পর পার্বত্য চট্টগ্রামের ২৫ বছরের গৃহযুদ্ধের অবসান ঘটিয়ে শান্তিচুক্তির ব্যবস্থা নেন। এর স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৯৮ সালে ইউনেস্কো তাকে ‘হুপে-বোয়ানি’ শান্তিপদকে ভূষিত করে। ওই সরকারের সময় ভারতের সঙ্গে ৩০ বছর মেয়াদি গঙ্গা নদীর পানিবণ্টন চুক্তি, যমুনা নদীর উপর বঙ্গবন্ধু সেতু নির্মাণ এবং খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেন। পরবর্তীতে শেখ হাসিনার সরকার ভারতের সঙ্গে ৬৮ বছর ধরে বিদ্যমান সীমানা বিরোধ ও ছিটমহল সমস্যার নিষ্পত্তি করে। মায়ানমার ও ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমা নির্ধারণে বাংলাদেশের সাফল্য শেখ হাসিনার দক্ষ নেতৃত্বের কারণেই সম্ভব হয়েছে।

মায়ানমার থেকে নির্যাতিত হয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে তিনি মানবতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তার এই মানবিক ভূমিকার জন্য ব্রিটিশ মিডিয়া ‘মাদার অব হিউম্যানিটি’ বলে আখ্যায়িত করে। পরিবেশ সুরক্ষায় সচেতনতা সৃষ্টি ও সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় শেখ হাসিনাকে জাতিসংঘের পরিবেশ-বিষয়ক সর্বোচ্চ সম্মাননা ‘চ্যাম্পিয়ন অব দ্য আর্থ’ পুরস্কার প্রদান করা হয়। যাদের নেতৃত্ব ও কর্মকাণ্ড একটি টেকসই বিশ্ব নিশ্চিত করতে এবং সবার জন্য মর্যাদাসম্পন্ন জীবন নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে, তাদের এই সম্মান দেওয়া হয়।

এখানে উল্লেখ্য, কার্বন নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণ করতে এবং এর প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে ক্ষতিপূরণ দিতে বিশ্বের শিল্পোন্নত দেশগুলোর প্রতি তিনি সবসময়ই আহ্বান জানিয়ে আসছেন। সদ্য অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে অংশগ্রহণ করে তিনি আবারও বিশ্বের শিল্পোন্নত দেশগুলোর প্রতি জোরালো কণ্ঠে একই আহ্বান রেখেছেন। শান্তির সপক্ষে যুদ্ধমুক্ত বিশ্বব্যবস্থা গড়ে তুলতে বিশ্বের বৃহৎ শক্তিগুলোর প্রতি তিনি উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন।

করোনা ভ্যাকসিন সংগ্রহে বিশ্বের সব দেশ যখন মরিয়া হয়ে ওঠে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কূটনৈতিক দক্ষতা, দূরদর্শিতা ও আন্তরিক প্রচেষ্টার ফলে বাংলাদেশ ভ্যাকসিন সংগ্রহে সবচেয়ে সফল দেশগুলির মধ্যে সামনের সারিতে ছিল। করোনা ভ্যাকসিন আবিষ্কারের সঙ্গে সঙ্গেই বাংলাদেশের অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করেছে। ফলে করোনার প্রভাবে মহামারি ও বিপর্যয় এড়াতে বাংলাদেশ অবিশ্বাস্য সাফল্য দেখাতে সক্ষম হয়। মুজিববর্ষে তিনি ভূমিহীন ও হতদরিদ্র মানুষদের জন্য গৃহীত আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে ২,১৩,২২৭টি পরিবারকে ঘর উপহার দিয়ে পুনর্বাসন করেছেন। সমগ্র বিশ্বে এটি নজিরবিহীন।

শান্তি প্রতিষ্ঠা, গণতন্ত্র ও নারীর ক্ষমতায়ন, মানবাধিকার ও আর্থসামাজিক উন্নয়নের স্বীকৃতিস্বরূপ বিশ্বের অনেকগুলো খ্যাতনামা বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রতিষ্ঠান শেখ হাসিনাকে বিভিন্ন সম্মানসূচক ডিগ্রি ও পুরস্কার প্রদান করেছে। এর সবগুলোর উল্লেখ করতে হলে নিবন্ধের কলেবর বৃদ্ধি পাবে।

তার দূরদর্শী ও বলিষ্ট নেতৃত্বের কারণেই পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশ আজ একটি সম্মানজনক অবস্থান নিশ্চিত করার পথে দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। বিদেশি ঋণের উপর নির্ভরশীলতা কাটিয়ে এখন আমরা ঋণ দিতে শুরু করেছি। আজকের বাংলাদেশের এই সমুদয় অগ্রগতি বঙ্গবন্ধু-কন্যা শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্ব ছাড়া সম্ভব হতো না। তিনি অবিকল্প। বাংলাদেশের আপামর মানুষের অপার ভালোবাসার কারণেই তিনি চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়ে দেশের মানুষের ভাগ্য বিনির্মানে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাষায়—
‘অন্ধকারের সিন্ধুতীরে একলাটি ওই মেয়ে
আলোর নৌকা ভাসিয়ে দিল আকাশপানে চেয়ে।’

প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার শুভ জন্মদিনে তার প্রতি আমার আনত শ্রদ্ধা ও অভিনন্দন। তার সুস্থতা ও দীর্ঘজীবন বাংলাদেশ ও দেশের মানুষের আরও সুন্দর ও নিরাপদ জীবন নিশ্চিত করার জন্য বড় বেশি প্রয়োজন। জয়তু বঙ্গবন্ধু-কন্যা।

লেখক: সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।

আরএ/

Header Ad
Header Ad

প্রতিটি ডলারের পাল্টা জবাব দেওয়া হবে: ট্রাম্প শুল্ক নিয়ে কানাডার প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী  

কানাডার প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী মার্ক কার্নি। ছবিঃ সংগৃহীত

কানাডা থেকে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়া পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর জবাবে তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছেন কানাডার শীর্ষ নেতারা।

বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশটির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী মার্ক কার্নি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই শুল্ক আরোপের বিরুদ্ধে 'ডলার-প্রতি-ডলার পাল্টা জবাব দেওয়া হবে'।

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো পদত্যাগের ঘোষণা দেওয়ার পর তার স্থলাভিষিক্ত হওয়ার জন্য এখন পর্যন্ত পাঁচজন প্রার্থী ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন, যাদের একজন কার্নি। ব্যাংক অব কানাডা এবং ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের সাবেক এই গভর্নর কানাডার ক্ষমতাসীন লিবারেল পার্টির সর্বাধিক এমপির সমর্থন পেয়েছেন।

আগামী ৯ মার্চ লিবারেল পার্টির শীর্ষ নেতা নির্বাচিত হবে। আগামী ২০ অক্টোবর বা তার আগেই জাতীয় নির্বাচন হতে পারে।

বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ৫৯ বছর বয়সী কার্নি বলেন, 'প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প হয়তো ভাবছেন কানাডা ভেঙে পড়বে। কিন্তু আমরা এর বিরুদ্ধে দাঁড়াব, পিছু হটব না। ঐক্যবদ্ধ হয়ে আমরা পাল্টা ব্যবস্থা নেব।'

এমন শুল্কের জন্য বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্রের যে সুনাম, তা ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

'এই শুল্ক (যুক্তরাষ্ট্রের) প্রবৃদ্ধিতে আঘাত হানবে। মূল্যস্ফীতি বাড়াবে। সুদের হারও বাড়াবে,' যোগ করেন তিনি।

শুল্ক আরোপের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র 'এক দশকের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো তাদের সবচেয়ে কাছের বাণিজ্যিক অংশীদারের সঙ্গে করা চুক্তি ভঙ্গ করেছে' বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

আরেক প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ডও যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে 'ডলার-প্রতি-ডলার' পাল্টা শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন।

বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো বলেছেন, নতুন শুল্কের বিরুদ্ধে কানাডা 'জোরালো' ও 'তাৎক্ষণিক' জবাব দেবে।

Header Ad
Header Ad

সেই ইমনের ব্যাটে চড়েই কোয়ালিফায়ারে চিটাগাং

ছবিঃ সংগৃহীত

পারভেজ হোসেন ইমনের ঝড়ো ফিফটির পাশাপাশি আগ্রাসী ইনিংস খেললেন হায়দার আলী ও শামিম হোসেন পাটোয়ারী। এতে দুইশ ছাড়ানো বড় পুঁজি মিলল চিটাগং কিংসের। এরপর ডাভিড মালান ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ চেষ্টা করলেও লক্ষ্য থেকে দূরে থামতে হলো ফরচুন বরিশালকে।

শনিবার ( ০১ ফেব্রুয়ারি) মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে বিপিএলের লিগ পর্বের শেষ ম্যাচে চিটাগং জিতেছে ২৪ রানে। টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে ৪ উইকেটে ২০৬ রান করে তারা। জবাবে ৭ উইকেটে ১৮২ রানে থামে আসরের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বরিশাল।

এই জয়ে রংপুর রাইডার্সকে টপকে পয়েন্ট তালিকার দুইয়ে উঠে গেছে চিটাগং। ১২ ম্যাচে দুই দলের পয়েন্ট সমান ১৬ হলেও নেট রান রেটের ব্যবধানে রংপুরের (+০.৫৯৬) চেয়ে এগিয়ে আছে চিটাগং (+১.৩৯৫)। ফলে প্লে-অফ পর্বের প্রথম কোয়ালিফায়ারে জায়গা করে নিয়েছে চিটাগং। সেখানে তাদের প্রতিপক্ষ ১৮ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে থাকা বরিশালই। আগামী সোমবার একই ভেন্যুতে ফের মুখোমুখি হবে দুই দল। জয়ী দল সরাসরি চলে যাবে ফাইনালে। পরাজিত দল আরেকটি সুযোগ পাবে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে খেলে শিরোপা নির্ধারণী মঞ্চে ওঠার।

Header Ad
Header Ad

সুুষ্ঠু নির্বাচনে বাঁধা দিলে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে: জামায়াতের নায়েবে আমির

জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। ছবিঃ ঢাকাপ্রকাশ

আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু হতে হবে, কেউ সুুষ্ঠু নির্বাচনে বাঁধা হলে তাকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের।

শনিবার (০১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে টাঙ্গাইল পৌর শহরের পৌর উদ্যানে আয়োজিত ন্যায় ও ইনসাফ ভিত্তিক সমাজ এবং রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ওয়ার্ড প্রতিনিধি সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, ভারতের চ্যাপ্টার এবার শেষ, আর ভারতের কোন দাসত্ব করা যাবে না। আমরা স্বাধীন, স্বাধীনভাবে চলতে চাই। বাংলাদেশ সীমান্তে ফেলানীর লাশের মত ঝুলিয়ে থাকা অবস্থায় দেখতে চাই না বলে মন্তব্য করেছেন

তিনি আরও বলেন, দেশের মানুষ অনেকের ক্ষমতা দেখেছে, কিন্তু জামায়াতে ইসলামীর ক্ষমতা দেখে নাই। মানুষ এখন মুখে মুখে বলছে জামায়াত এবার জয়ী হবে। গত ৫ আগষ্টের মতো একটা মিরাকেল হয়েও যেতে পারে যদি জামায়াত ক্ষমতায় এসে যায় তাহলে আমরা ইসলামী আইন অনুযায়ী দেশ পরিচালনা করার চেষ্টা করবে। জাতীর স্বার্থে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে থাকতে হবে। যাতে কোন অপশক্তি এই দেশকে অস্থিতিশীল করতে না পারে।

এ সময় প্রতিনিধি সম্মেলনে টাঙ্গাইল জেলা জামায়াতে আমির আহসান হাবীব মাসুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন- প্রধান আলোচক হিসাবে কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য  অধ্যক্ষ মো. ইজ্জতউল্লাহ, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ড. মাওলানা খলিলুর রহমান মাদানী প্রমুখ। 

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

প্রতিটি ডলারের পাল্টা জবাব দেওয়া হবে: ট্রাম্প শুল্ক নিয়ে কানাডার প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী  
সেই ইমনের ব্যাটে চড়েই কোয়ালিফায়ারে চিটাগাং
সুুষ্ঠু নির্বাচনে বাঁধা দিলে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে: জামায়াতের নায়েবে আমির
নওগাঁয় বাড়ি ফেরার পথে সড়কে প্রাণ গেল ২ বন্ধুর
বই ছাপানোর আগে বাংলা একাডেমি পড়তে দেয়া হাস্যকর : ফারুকী    
ঈদ পর্যন্ত মাকে নিজের কাছে রাখতে চান তারেক রহমান  
মোটরসাইকেলে ওড়না পেঁচিয়ে প্রাণ গেল এক তরুনীর দুলাভাই হাসপাতালে  
বিজয়ের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা নেই, জানালো বিসিবি  
ইজতেমায় গেলেন হাসনাত আবদুল্লাহ, কুশল বিনিময় করলেন মামুনুল হক সাথে  
ট্রাম্পের প্রেয়ার ব্রেকফাস্টে যোগ দিতে কাল যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছেন ফখরুল-খসরু  
সাবিনা ইয়াসমীন আইসিইউতে    
ডাস্টবিনে শেখ হাসিনার ‘ঘৃণা স্তম্ভে’র ছবি, ময়লা ফেললেন প্রেসসচিব  
দেশের পুনর্গঠনে একমাত্র বিএনপি সক্ষম: তারেক রহমান  
কুমিল্লায় যুবদল নেতার মৃত্যুর ঘটনায় দ্রুত তদন্তের নির্দেশ সরকারের
যমুনার দুর্গম চরে সুবিধাবঞ্চিতদের ফ্রী স্বাস্থ্যসেবা দিচ্ছে হিউম্যান কনসার্ন
প্লে-অফে খুলনা টাইগার্স কপাল পুড়ল রাজশাহীর
অমর একুশে বইমেলার পর্দা উঠল  
সরকারকে উদ্দেশ্য করে বিএনপি নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বললেন ‘রাষ্ট্র চলছে না’
ফরিদপুরে মন্দিরে সরস্বতীপ্রতিমা ভাঙার অভিযোগে গ্রেপ্তার যুবক
সেন্টমার্টিন দ্বীপকে বাঁচাতে ভ্রমণ বন্ধ রাখা হয়েছে: পরিবেশ উপদেষ্টা