শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫ | ২৯ ফাল্গুন ১৪৩১
Dhaka Prokash

গণমানুষের সংগঠন আওয়ামী লীগ: সংগ্রাম ও অর্জনের ৭৩ বছর

উপমহাদেশের অন্যতম প্রাচীন এবং ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের ৭৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠায় সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করে, পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে সর্বাত্মক সমর্থন দিয়ে বাঙালি যে রাষ্ট্র পেল তা প্রত্যাশিত পাকিস্তান ছিল না। দুঃশাসন, কোটারি, জুলুম-অত্যাচার, আঞ্চলিক বৈষম্য, জাতিগত নিপীড়ন প্রথমেই জনগণের জীবন অতিষ্ঠ করে তুলল। এ যেন এক শকুনের হাত থেকে অন্য শকুনের হাতে পড়ার মতো। পাকিস্তানের এই স্বাধীনতাকে শেখ মুজিবুর রহমান 'ফাঁকির স্বাধীনতা' বলে আখ্যা দিয়েছিলেন।

১৯৪৭ সালে দুটি আলাদা ভূখণ্ড, ভিন্ন ভাষা, ভিন্ন সংস্কৃতি, ভিন্ন খাদ্যাভ্যাস ও ভিন্ন মানবিক বোধবুদ্ধি নিয়ে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার মাত্র ৪ মাস ২০ দিনের মাথায় বয়সে তরুণ শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি গঠন করেন সরকারবিরোধী ছাত্র সংগঠন পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে মুসলিম লীগে দুটি ধারা বিদ্যমান ছিল। এর একটি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও আবুল হাশিম-এর অনুসারী গণতান্ত্রিক ভাবধারার গণমানুষের সাথে সম্পৃক্ততায় বিশ্বাসী এবং অপরটি খাজা নাজিমুদ্দিনের নেতৃত্বে ড্রইংরুমকেন্দ্রিক রাজনীতির পৃষ্ঠপোষক। হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও আবুল হাশিমের অনুসারী কর্মী শিবিরকেন্দ্রিক অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে বিশ্বাসী অংশটি পরবর্তী সময়ে আওয়ামী মুসলিম লীগ নামক একটি রাজনৈতিক দল গঠন করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেন।

সেই মোতাবেক ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন ঢাকার স্বামীবাগে কে এম দাস লেনের রোজ গার্ডেনে (হুমায়ুন সাহেবের বাড়ি) হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর উদ্যোগে আয়োজিত এক কর্মী সম্মেলনে গঠন করা হয় 'পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ'। মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীকে সভাপতি ও টাঙ্গাইলের শামসুল হককে সেই কমিটির সাধারণ সম্পাদক মনোনীত করা হয়। কারাবন্দি তরুণ নেতা শেখ মুজিবুর রহমান যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক করা হয়। পুরো পাকিস্তানের ক্ষেত্রে সংগঠনটির নাম রাখা হয় নিখিল পাকিস্তান আওয়ামী লীগ। এর সভাপতি হন হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী। ১৯৫৫ সালে দলটি ধর্মনিরপেক্ষতাকে আদর্শ হিসেবে গ্রহণ করে। 'মুসলিম' শব্দটি বাদ দিয়ে দলের নামকরণ হয় ‘পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগ।’

৫২-এর ভাষা আন্দোলন এবং ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্টের নির্বাচন আওয়ামী লীগের ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। আইয়ুব খানের সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলনে আওয়ামী লীগ প্রধান বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করে। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে মুসলিম লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করার লক্ষ্যে অন্যান্য দলকে সঙ্গে নিয়ে যুক্তফ্রন্ট গঠন করতে আওয়ামী মুসলিম লীগ মুখ্য ভূমিকা পালন করে। আওয়ামী লীগের উদ্যোগে ১৯৫৩ সালের ৪ ডিসেম্বর কৃষক শ্রমিক পার্টি, পাকিস্তান গণতন্ত্রী দল ও নেজামে ইসলামের সঙ্গে মিলে যুক্তফ্রন্ট গঠন করা হয়।

১৯৫২ সালে শেখ মুজিবুর রহমান আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান। এর পরের বছর ঢাকার 'মুকুল' প্রেক্ষাগৃহে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগের সম্মেলনে তাকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়। ১৯৬৬ সাল পর্যন্ত ১৩ বছর সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন শেখ মুজিব। পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ ছিল তৎকালীন পাকিস্তানে প্রথম বিরোধী দল।

৬৪-এর দাঙ্গার পর সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠায় আওয়ামী লীগ সাংগঠনিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ১৯৬৬ সালে লাহোরে অনুষ্ঠিত বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর এক সম্মেলনে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শেখ মুজিবুর রহমান পূর্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ছয় দফা দাবি পেশ করেন। ছয় দফা দাবির মূল উদ্দেশ্য ছিল। পাকিস্তান হবে একটি যৌথরাষ্ট্র এবং ছয় দফা কর্মসূচির ভিত্তিতে এই যৌথরাষ্ট্রের প্রতিটি অঙ্গরাজ্যকে পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন দিতে হবে। বঙ্গবন্ধুর ওই ছয় দফা মূলত বাঙালির মুক্তির সনদ। ছয় দফার আন্দোলনকে ভিত্তি করে জাতি স্বায়ত্তশাসন থেকে স্বাধিকার ও স্বাধিকার থেকে স্বাধীনতার পথে উজ্জীবিত হয় এবং বাঙালি জাতীয়তাবাদী চেতনায় ঐক্যবদ্ধ হয়।

'৬৯-এর গণ–অভ্যুত্থানে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে এ দেশের মানুষকে সংগঠিত করে আওয়ামী লীগ গণমানুষের সংগঠনে পরিণত হয়। এভাবে ২২ বছরের ধারাবাহিক রাজনৈতিক লড়াইয়ের চূড়ান্ত পর্যায়ে ১৯৭১ সালে তৎকালীন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বাংলার অবিসংবাদিত নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে এই আওয়ামী লীগের হাত ধরেই জাতি মুক্তিযুদ্ধে অবতীর্ণ হয়। ৯ মাসের মহান মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লক্ষ বীর শহীদের রক্ত আর দুই লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত হয় লাল-সবুজ পতাকার বাংলাদেশ। দেশের স্বাধীনতা এনে দেওয়া দলটির ইতিহাস তাই বাংলাদেশের জন্মের ইতিহাসের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িয়ে আছে। সময়ের পরিক্রমায় আওয়ামী লীগ ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান--নাম দুটি এক ও অভিন্ন হয়ে ওঠে। আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বড় অর্জন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদান।

সুদীর্ঘ রাজনৈতিক ইতিহাসে আওয়ামী লীগ ১৯৫৪ সালে (যুক্তফ্রন্ট) এবং ১৯৭১ সালে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকার হিসেবে ক্ষমতায় আসে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সপরিবারে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের স্মরণীয় অধ্যায়ের অবসান ঘটে। আওয়ামী লীগের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে জেলে পোরা হয় এবং তাদের উপর নৃশংস নির্যাতন চালানো হয়। তারপর দীর্ঘ ২১ বছর সামরিক-বেসামরিক অপশাসনের কবলে পড়ে বাংলাদেশ পুনরায় পাকিস্তানি ভাবাদর্শে পেছনের দিকে যেতে থাকে। সামরিক শাসক জেনারেল জিয়াউর রহমান ও জেনারেল এরশাদ এর শাসনামলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিপরীতে দীর্ঘদিন পথ হাঁটে বাংলাদেশ। এ সময় স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকার-আলবদরদের রাজনৈতিকভাবে পুনর্বাসন, বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার রোধ করতে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ নামে কালো আইন পাশ করা হয়। সংবিধানকে কাটাছেঁড়া করে রাষ্ট্রের চার মূল ভিত্তি গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও ধর্মনিরপেক্ষতা থেকে রাস্ট্র সরে আসে। মুক্তিযুদ্ধের মৌল চেতনা অসাম্প্রদায়িকতা থেকে সরে এসে সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম যুক্ত করা হয়।

এরপর ১৯৮১ সালে এক চরম সংকটময় পরিস্থিতিতে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ৬ বছরের নির্বাসিত জীবন কাটিয়ে দেশে ফিরে তিনি একইসঙ্গে সংগঠনকে ঐক্যবদ্ধ করেন এবং স্বৈরশাসন বিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন। ১৯৯৬ সালে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ক্ষমতায় এসে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার কার্য শুরু করে, পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন এবং ভারতের সঙ্গে মুজিব-ইন্দিরা চুক্তি মোতাবেক সীমান্ত সমস্যা সমাধান করে আওয়ামী লীগ সফলতার পরিচয় দেয়।

২০০১ এবং ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারির পর আরেক দফা বিপর্যয় কাটিয়ে উঠে ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নির্বাচনে তিন-চতুর্থাংশ আসনে বিজয়ী হয়ে আবারো রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পায় আওয়ামী লীগ। পরবর্তী সময়ে ২০১৪ সালের ৫ জানুযারি এবং ২০১৮-এর ৩০ ডিসেম্বর সাধারণ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে বাংলাদেশের ইতিহাসে টানা তিন মেয়াদে সরকার পরিচালনা করছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ ও জননেত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র চলতে থাকে। ২০০৪ সালে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার মাধ্যমে শেখ হাসিনাসহ তৎকালীন বিরোধী দল আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্বকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার এক ভয়াবহ তৎপরতা চালানো হয় কিন্তু সৌভাগ্যক্রমে সে যাত্রায় বেঁচে যান শেখ হাসিনা।

২০০৮ সালের নির্বাচনে অভূতপূর্ব বিজয়ের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে। আওয়ামী লীগের এই সরকারের আমলে যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদের বিচার সম্পন্ন সংঘটিত হয়। আন্তর্জাতিক আদালতে সমুদ্র বিজয়ের মধ্য দিয়ে দেশের ভৌগলিক সীমানা বৃদ্ধি, ছিটমহল বিনিময়ের মাধ্যমে দেশের সীমানা বৃদ্ধি পায় এবং ছিটমহলবাসীর অনেকদিনের নাগরিকত্বের পরিচয়হীন মানবেতর জীবনযাপন অবসান হয়। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণ, নারী উন্নয়ন, মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধি, শিশু ও মাতৃমৃত্যুর রোধ, মাথাপিছু আয়

ডলারে উন্নীত, আশ্রয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে বিপুল সংখ্যক মানুষকে বাসস্থানের ব্যবস্থা করে দেওয়া, বিধবা ভাতা, বয়স্ক ভাতার ব্যবস্থা করাসহ অসংখ্য মানবিক উদ্যোগ আওয়ামী লীগের এই সময়ের সরকারের বড় অর্জন। করোনা পরিস্থিতিতে সারা পৃথিবীব্যাপী যে বিপর্যয় নেমে এসেছিল, তখনো জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সেই পরিস্থিতিকে অত্যন্ত দূরদর্শিতা ও সফলতার সঙ্গে মোকাবিলা করেছে। দেশের সমগ্র জনগোষ্ঠীর জন্য বিনামূল্যে টিকা প্রদানের ব্যবস্থা করা সরকারের সুবিবেচনার বিষয়টি তুলে ধরে। বর্তমানে বাংলাদেশের যোগাযোগ অবকাঠামোর ব্যাপক উন্নয়ন জনসাধারণের জীবনকে গতিশীল করেছে এবং অর্থনীতির ক্ষেত্রে ইতিবাচক অবদান রেখেছে। আওয়ামী লীগের এই সরকারের আমলে ব্যাপক উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের মধ্যে ঢাকা মহানগরীতে যানজট নিরসনকল্পে মেট্রোরেল নির্মাণ ও এক্সপ্রেস হাইওয়ে যুগান্তকারী হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে। সারাদেশে মহাসড়কগুলিকে চার লেন ও ছয় লেনে রূপান্তর করার মধ্য দিয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থায় এক অভূতপূর্ব পরিবর্তন সূচিত হতে চলেছে। কৃষিক্ষেত্রে ভর্তুকি প্রদানের মাধ্যমে কৃষকদের স্বল্প দামে সার ও বীজের যোগান দেওয়া এবং নানাভাবে কৃষিকে উৎসাহিত করার ফলে বাংলাদেশ খাদ্য উৎপাদনে ব্যাপকভাবে সফলতা লাভ করেছে। বর্তমানে আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। সরকারের ইতিবাচক সিদ্ধান্ত এবং এর যথাযথ প্রয়োগের কারণে এটি সম্ভব হয়েছে। রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নের মাধ্যমে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ একটি উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে পৃথিবীর বুকে মাথা তুলে দাঁড়াবে। এই বিশ্বাসের আঙ্গিকে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ দেশ বিনির্মাণে সর্বোচ্চ আন্তরিকতা নিয়ে এবং দূরদর্শী পরিকল্পনা প্রণয়নের মাধ্যমে বিরামহীনভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

আর মাত্র ১ দিন পর আমাদের প্রিয় নেত্রী প্রধানমন্ত্রী আমাদের স্বপ্নের পদ্মাসেতুর শুভ উদ্বোধন করবেন। এই পদ্মাসেতু আমাদের সক্ষমতার প্রতীক, এই পদ্মাসেতু আমাদের আত্মমর্যাদার প্রতীক। কিছুদিন পূর্বেও এদেশের মানুষ ভাবতে পারেনি যে পদ্মাসেতুর মতো এত বড় একটি মেগাপ্রকল্প কোনোরকম বিদেশি অর্থায়ন ছাড়া বাস্তবায়ন করা সম্ভব। এদেশের অর্থনীতিবিদরা এদেশের বিভিন্ন সংগঠনের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতুর স্বপ্নকে একটি অলীক ও বিলাসী ভাবনা বলে কটাক্ষ করেছিলেন। কিন্তু আমাদের নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা জানতেন তিনি কী করতে পারেন। তিনি স্বপ্ন দেখতে পারেন, স্বপ্ন দেখাতে পারেন। আর সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য তার মেধা, দক্ষতা, সততা ও আন্তরিকতা নিয়ে তিনি এই বাংলার মানুষের জন্য নিজেকে নিবেদন করেছেন। পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য, এই বাংলার মানুষের ভাগ্যের উন্নয়নের জন্য সকল ষড়যন্ত্র ও বাধাবিঘ্ন মোকাবিলা করে, প্রতিমুহূর্ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই দেশের জন্য, এই বাংলার মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। জাতির পিতার আদর্শ এবং আওয়ামী লীগের প্রতিটি নেতাকর্মী ও সমর্থকের ভালোবাসাই শেখ হাসিনার মূল শক্তি। তার সততা, দক্ষতা এবং সুযোগ্য নেতৃত্বে চার দফায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করে আজ বাংলাদেশকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে। জননেত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বের কাছে বাংলাদেশকে দাঁড় করিয়েছেন উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে।

লেখক: আব্দুর রহমান, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ

Header Ad
Header Ad

সেনাবাহিনীর অভিযানে ৩৮৩ ছিনতাইকারী-চাঁদাবাজ গ্রেফতার

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে পরিচালিত যৌথ অভিযানে সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, ডাকাত, ছিনতাইকারী, অপহরণকারী, কিশোর গ্যাং সদস্য এবং মাদক কারবারিসহ মোট ৩৮৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় গত ৬ মার্চ থেকে ১৩ মার্চ পর্যন্ত এসব অভিযান পরিচালনা করা হয়।

শুক্রবার (১৪ মার্চ) আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, দেশের চলমান পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সেনাবাহিনী পেশাদারিত্বের সঙ্গে কাজ করে চলেছে। সেনাবাহিনীর বিভিন্ন পদাতিক ডিভিশন ও স্বতন্ত্র ব্রিগেডের অধীন ইউনিট অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সমন্বয়ে এসব অভিযান পরিচালনা করে।

গ্রেফতার ব্যক্তিদের কাছ থেকে ৩টি পিস্তল, একটি রিভলবার, ২টি শুটার গান, গোলাবারুদ, ককটেল বোমা, মাদকদ্রব্য, সন্ত্রাসী কাজে ব্যবহৃত দেশীয় অস্ত্র, পাসপোর্ট, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পোশাক, এনআইডি, মোবাইল ফোন, সিমকার্ড ও নগদ অর্থ উদ্ধার করা হয়।

আইএসপিআর জানায়, গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ ও আইনি কার্যক্রম শেষে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

এছাড়াও, দেশের বিভিন্ন স্থানে দুর্ঘটনাবশত অগ্নিকাণ্ডে ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর সদস্যরা উদ্ধার কার্যক্রম ও অগ্নি নির্বাপনে অংশ নেয়। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সেনাবাহিনীর এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানানো হয়েছে।

আইএসপিআর সাধারণ জনগণকে যে কোনো সন্দেহজনক কার্যকলাপের বিষয়ে নিকটস্থ সেনা ক্যাম্পে তথ্য দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে।

Header Ad
Header Ad

‘যমুনা রেল সেতু’ উদ্বোধন  ১৮ মার্চ, প্রধান অতিথি রেলপথ সচিব

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে যমুনা নদীর উপর নির্মিত যমুনা সেতুর ৩০০ মিটার উজানে দেশের একমাত্র দীর্ঘতম নবনির্মিত ‘যমুনা রেল সেতু’ ১৮ মার্চ উদ্বোধন করা হবে। এ উপলক্ষে নানা আয়োজনের প্রস্তুতি নিয়েছে রেলপথ বিভাগ।

যমুনা রেল সেতু উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ফাহিমুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি উপস্থিত থাকবেন- বাংলাদেশ নিযুক্ত জাপানি রাষ্ট্রদূত H.E. MR. SAIDA SHINICHI Ges MR. ITO TERUYUKI, DIRECTOR GENERAL SOUTH ASIA DEPARTMENT, JICA প্রমুখ।

এতে স্বাগত বক্তব্য রাখবেন- যমুনা রেলওয়ে সেতু নির্মাণ প্রকল্প পরিচালক আল ফাত্তাহ মো. মাসউদুর রহমান এবং সমাপনী বক্তব্য রাখবেন- মহাপরিচালক, বাংলাদেশ রেলওয়ে (সভাপতি) মো: আফজাল হোসেন।

শুক্রবার (১৩ মার্চ) বিকালে যমুনা রেলওয়ে সেতু নির্মাণ প্রকল্প পরিচালক আল ফাত্তাহ মো. মাসউদুর রহমান ঢাকা প্রকাশকে এ বিষয়টি জানান।

মাসউদুর রহমান বলেন- আগামী ১৮ মার্চ সকাল ১০টায় টাঙ্গাইলের যমুনা রেল সেতুর পূর্ব প্রান্ত ইব্রাহিমাবাদ রেল স্টেশন প্রাঙ্গণে নবনির্মিত যমুনা রেল সেতুর শুভ উদ্বোধনের আয়োজন করা হবে।

এছাড়াও কর্মসূচির মধ্যে যমুনা রেল সেতু পূর্ব ইব্রাহিমাবাদ স্টেশন থেকে বেলা ১১ টা ২০ মিনিটে সিরাজগঞ্জ পশ্চিম প্রান্তে সয়দাবাদ রেল স্টেশন পর্যন্ত উদ্বোধনী ট্রেনে অতিথি ও সংশ্লিষ্টরা যমুনা রেল সেতু পারাপার হবে এবং ১১ টা ৪০ মিনিটে সয়দাবাদ রেল স্টেশনে সংবাদ সম্মেলন করবেন। পরে বেলা ১২ টায় ইব্রাহিমাবাদ রেল স্টেশন পূর্ব প্রান্তে ফেরত আসবে।

তিনি আরও বলেন- উদ্ধোধনের একদিন পর অর্থাৎ ১৯ মার্চ থেকে বাড়তি ভাড়া (রেলের ভাষায় পন্টেজ চার্জ) গুণতে হবে যাত্রীদের।  যা উদ্বোধনের একদিন পর ১৯ মার্চ থেকে নতুন ভাড়া কার্যকর হবে। ৪.৮ কিলোমিটার ডাবল লাইন ডুয়েলগেজ সেতুটি দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলকে ঢাকার সাথে রেলপথের মাধ্যমে সংযুক্ত করবে।

২০১৬ সালের ডিসেম্বরে প্রকল্পের নকশা প্রণয়নসহ সেতুর নির্মাণ ব্যয় প্রথমে ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি ৭ লাখ টাকা ধরা হয়েছিল। পরবর্তীতে ২ বছর বাড়ানো হলে প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৬ লাখ টাকা দাঁড়ায়। যার মধ্যে ২৭ দশমিক ৬০ শতাংশ দেশীয় অর্থয়ান এবং ৭২ দশমিক ৪০ শতাংশ জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) ঋণ দিয়েছে।

১৯৯৮ সালে যমুনা বহুমুখী সেতু চালু হওয়ার পর ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রেল যোগাযোগ স্থাপিত হয়। ২০০৮ সালে সেতুটিতে ফাটল দেখা দেওয়ায় ট্রেনের গতি কমিয়ে দেওয়া হয়। সেতুটি দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ৩৮টি ট্রেন পারাপার হতো। এই সমস্যার সমাধানে সরকার যমুনা নদীর ওপর আলাদা রেল সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়।

২০২০ সালের ২৯ নভেম্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি এই সেতুর নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে। ২০২১ সালের মার্চে পিলার নির্মাণের জন্য পাইলিং কাজ শুরু হয়। ৪.৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই রেল সেতু দেশের দীর্ঘতম প্রথম ডাবল ট্রাকের ডুয়েল গেজের সেতু। এটি ৫০টি পিলারের ওপর ৪৯টি স্প্যানে নির্মিত হয়েছে।

Header Ad
Header Ad

বিশ্বে প্রথমবার স্বর্ণের দাম আউন্সপ্রতি ৩ হাজার ডলার

ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো স্বর্ণের দাম আউন্সপ্রতি তিন হাজার ডলারে পৌঁছেছে। আজ শুক্রবার (১৪ মার্চ) স্বর্ণের দাম ২ দশমিক ৯৪ শতাংশ বেড়ে এই রেকর্ড পরিমাণে পৌঁছায়। চলতি বছরে এ পর্যন্ত ১৩ বার বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম রেকর্ড সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে।

মূলত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতি ও ইউরোপের ওপর নতুন শুল্ক হুমকির কারণে বিশ্ববাজারে এই অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। বৃহস্পতিবার ট্রাম্প ফ্রান্স ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোর ওয়াইন, শ্যাম্পেনসহ অন্যান্য অ্যালকোহলযুক্ত পণ্যের ওপর দুইশ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দেন।

বৈশ্বিক বাণিজ্যে এই অনিশ্চয়তার আশঙ্কায় স্বর্ণের দাম বাড়তে থাকে। ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ মূলত যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদিত হুইস্কির ওপর ইউরোপের শুল্কের প্রতিশোধ হিসেবে নেওয়া হচ্ছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে ট্রাম্প বলেন, যদি ইউরোপের শুল্ক অবিলম্বে প্রত্যাহার না করা হয়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র ফ্রান্স ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্যান্য দেশ থেকে আমদানি করা সব ধরনের ওয়াইন, শ্যাম্পেনসহ অ্যালকোহলযুক্ত পণ্যের ওপর দুইশ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবে।

এর আগে ট্রাম্প সব ধরনের ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানির ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন। এর জবাবে ইউরোপীয় ইউনিয়নও যুক্তরাষ্ট্রের ২৮ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্যের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা করছে বলে বুধবার (১২ মার্চ) জানায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের কমিশন।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

সেনাবাহিনীর অভিযানে ৩৮৩ ছিনতাইকারী-চাঁদাবাজ গ্রেফতার
‘যমুনা রেল সেতু’ উদ্বোধন  ১৮ মার্চ, প্রধান অতিথি রেলপথ সচিব
বিশ্বে প্রথমবার স্বর্ণের দাম আউন্সপ্রতি ৩ হাজার ডলার
আমরা যথেষ্ট ভাগ্যবান, কারণ আমাদের সমুদ্র আছে : প্রধান উপদেষ্টা
রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে ফিরে যেতে চায়: জাতিসংঘ মহাসচিব
আওয়ামী লীগ নেত্রী রূপালি গ্রেফতার
অনলাইনে ট্রেনের টিকিট পেতে আধা ঘণ্টায় ২০ লাখ হিট
দুই বছরের কন্যাকে হারালেন আফগান ক্রিকেটার হজরতউল্লাহ জাজাই
রোহিঙ্গা শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বললেন জাতিসংঘ মহাসচিব
কুমিল্লায় ৩ কোটি টাকার ভারতীয় আতশবাজি জব্দ
সুন্দরবনের গহীন থেকে বৃদ্ধা নারী উদ্ধার
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে আছিয়ার গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত
গাজার ধ্বংসস্তূপ থেকে আরো সাত লাশ উদ্ধার
জাতিসংঘ মহাসচিবকে নিয়ে কক্সবাজারে পৌঁছেছেন ড. ইউনূস
গালি দেয়া সেই উপস্থাপিকার চাকরি ফিরিয়ে দেয়ার আহ্বান হাসনাতের
প্রশাসনের ঢিলেঢালা আচরণে দুষ্কৃতকারীরা আশকারা পাচ্ছে: রিজভী
৬০তম জন্মদিনে নতুন প্রেমিকাকে প্রকাশ্যে আনলেন আমির খান
গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারে বাংলাদেশের পাশে থাকবে জাতিসংঘ: গুতেরেস
আমেরিকান এয়ারলাইনসের ফ্লাইটে ভয়াবহ আগুন, ডানা দিয়ে নামলেন যাত্রীরা
চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর সীমান্তে ৯ লাখ টাকার মাদক ও চোরাচালানি মালামাল জব্দ