ভর্তুকি কৃষির গতিকে তরান্বিত করবে
এবারের বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে আমি একটু ভিন্নভাবে বলতে চাই। সবাই বলছেন যে, সামাজিক নিরাপত্তাখাতে আরও বরাদ্দ বাড়ল না কেন?
এবার ভর্তুকি যেটি যাচ্ছে বড় অংশ,আমাদের কিন্তু একইসঙ্গে সরকারের সক্ষমতার বিষয়টিও খেয়াল করতে হবে। সরকার যে সারে এবং পেট্রোলিয়ামে ভর্তুকি রাখছে, এটি অবশ্যই ভাল একটি দিক এবং আমি মনে করি এটি ধারাবাহিকভাবে করাটা জরুরি। এটি আমাদের কৃষির গতিকে তরান্বিত করবে। আমাদের মনে রাখতে হবে, কৃষিক্ষেত্রে উৎপাদন যদি না বাড়ে তাহলে কিন্তু শুধুমাত্র ভর্তুকি দিয়ে সরকারের পক্ষে এত বড় চাপ সামাল দেওয়া সম্ভব নয়। এমনিতেই বৈশ্বিক অস্থিরতার কারণে আমরা অনেক বেশি চাপের মধ্যে আছি। এখন মূল্যস্ফীতির চাপটি সামাল দেওয়া এখন অনেক বড় একটি চ্যালেঞ্জ।
চালের দাম অনেক বেড়ে যাওয়ার আশংকা আছে। সেজন্যই কৃষিতে আরও বেশি মনযোগ বাড়ানো দরকার। আমদানি নির্ভর না হয়ে বরং কৃষিকে স্বনির্ভর করে তোলা উচিত বলে আমি মনে করি। আরও একটি বিষয় হলো, কৃষককে তার ফলনের দাম দিতে হবে। সে যদি ফসল উৎপাদন করে ন্যায্য দাম না পায় সে তো উৎপাদন করতে চাইবে না। এই বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করতে হবে সরকারকে এবং কৃষকদের স্বার্থরক্ষা বিশেষ করে সার পেট্রোলিয়াম ইত্যাদি সহ ভর্তুকি, সেটির ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে।
কোভিডকালীন আমরা পার হলেও তার একটি প্রভাব কাটিয়ে উঠা এখন অব্ধি আমাদের পক্ষে সম্ভব হয়নি। কোভিডের কারণে দেশের অনেক মানুষই দারিদ্র সীমার নিচে চলে গিয়েছে। বিশেষ করে মধ্যবিত্ত শ্রেণি ও নিম্নমধ্যবিত্ত শ্রেণির কথাই বলছি। অনেকেই নিজ কর্মক্ষেত্রে ফিরে আসতে পারেনি। নতুন কর্মক্ষেত্রে যোগদান করতে পারেনি। তাদের দিকটি ভাবতে হবে।
দেশে তরুণ উদ্যোক্তা বিশেষ করে নারী উদ্যোক্তা তৈরি করার বিষয়ে মনোযোগ দেওয়াটা জরুরি বলে মনে করি।দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে নারীদের ভূমিকাকে বিশেষ অগ্রাধিকার দিতে হবে।বয়স্কভাতা, পেনশনসহ সরকার যেসব জনবান্ধব কর্মসূচির মাধ্যমে সামাজিক নিরাপত্তার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেছে সেগুলিকে আরও সুচারুভাবে অর্থাৎ আমি বলতে চাই ধারাবাহিকভাবে চালনা করা উচিত এবং সবশেষে বলব,বরাদ্দকৃত অর্থের যথাযথ বাস্তবায়ন যেটি অনেকক্ষেত্রেই সম্ভব হয় না। সেদিকটিতে যেন সরকার আরও বেশি তৎপর হয়।
লেখক: অর্থনীতিবিদ