শিক্ষাক্ষেত্রে যে প্রত্যাশা ছিল তা পূরণ হয়নি
এবারের বাজেটে তিনটি বিষয় লক্ষ্যণীয়। একটি হলো টাকার অঙ্ক কিন্তু বেড়েছে। এখন কথা হচ্ছে অঙ্ক বাড়লেও সেটি কোথায় কিভাবে ব্যয় করা হবে সেটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। টাকার অঙ্ক যেটুকু বেড়েছে, সেখানে বক্তব্যের মধ্যে, বাজেটের দর্শনের মধ্যে যেটি আসছে, সেটি হলো, বৈষম্য দূর করা। শিক্ষাকে সর্বজনীন করে বিলিয়ে দেওয়া এবং বারেবারে একটি কথা এসেছে, সেটি হচ্ছে দক্ষতা বাড়ানো। কারণ দক্ষ জনগোষ্ঠী তৈরি করা দরকার।
আরেকটি বিষয় এখানে উল্লেখ করা উচিত যে, প্রাথমিকে এবং বিশেষ করে কারিগরি শিক্ষার ক্ষেত্রে বাজেট কিন্তু বাড়েনি। অন্য আরেকটি বিষয় হলো, যে চ্যালেঞ্জের মুখে বাজেটটি করা হয়েছে, খাদ্য নিরাপত্তা আইনে, বৈশ্বিক বাস্তবতা, যুদ্ধ বিগ্রহ সবকিছু নিয়েইতো আমরা চলছি। সবকিছু নিয়েইতো চ্যালেঞ্জের মধ্যে বাজেটটি তৈরি হয়েছে। সেক্ষেত্রে সরকার অবশ্যই ধন্যবাদ পেতে পারে। কিন্তু সেটিতে তেমন কোনো দিক নির্দেশনা দেখিনি। ইতোমধ্যেই কিছু ক্ষেত্রে বৈষম্য সৃষ্টি হয়ে গেছে। সেখানেও তা দূরীকরণে তেমন কোনো দিক নির্দেশনা দেখিনি। শিক্ষার্থীর হাতে শিক্ষা সংশ্লিষ্ট প্রয়োজনীয় ইন্সট্রুমেন্ট দেওয়ার বিষয়ে যে ধরনের চিন্তা ভাবনা করা হয়েছে অর্থাৎ যেভাবে করা হয়েছে এখানেও যথেষ্ট ঘাটতি আছে।
অর্থনীতিকে চালু রাখার ব্যাপারে কিছু সিদ্ধান্ত যেগুলো নেওয়ার কথা বলা হচ্ছে, ভালো কথা। তা না হলেতো দেশটা বাঁচবে না। কৃষি গবেষণায় গুরুত্ব দেখেছি, শিক্ষা গবেষণায় গুরুত্ব দেখেছি। কিন্তু সাধারণ শিক্ষা গবেষণায় তেমন কোনো গুরুত্ব আমরা দেখিনি। আরেকটি বিষয় হলো, তথ্য উপাত্তে যথেষ্ট ঘাটতি আছে, যে কারণে পরিকল্পনাটিও যথাযথভাবে করা যায় না। সেখানে আরেকটা বিষয় গুরুত্বপুর্ণ, যেখানে কোভিডকালীন পুনরুদ্ধার পরিকল্পনা করা হচ্ছে বিশেষ করে বাংলাদেশে যে অর্জনগুলো আছে এবং যে ক্ষতিগুলো হয়েছে, সেগুলো পুষিয়ে নেওয়ার জন্য। সেখানে খাদ্য নিরাপত্তার জায়গা থেকে হোক অথবা অন্যান্য ক্ষেত্রেও খুব একটা প্রতিফলন দেখিনি। প্রাথমিকেও দেখিনি। আগে বিশেষ করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর আরোপ করা হয়েছিল, তারপর শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে সেটি স্থিমিত হয়ে গেলেও এবারও কিন্তু বেসরকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর আরোপ করা হয়েছে। এবারও কর আরোপ করার যৌক্তিকতা জানি না। শিক্ষাক্ষেত্রে যে প্রত্যাশা ছিল সেটি যথাযথভাবে পূরণ হয়নি।
লেখক: সাবেক তত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা
আরএ/